Ajker Patrika

মুশকিল আসানের নামে অর্ধশত মানুষের সঙ্গে প্রতারণা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
মুশকিল আসানের নামে অর্ধশত মানুষের সঙ্গে প্রতারণা

‘দাম্পত্য জীবনের সমস্যা, বিয়ে না হওয়া, প্রেমে ব্যর্থতা, বশীকরণ’ সবকিছুরই সমাধানের তাবিজ পাওয়া যেত কবিরাজ ওয়াস কুরুনীর কাছে। সমস্যার সমাধানের নামে প্রায় ৩ বছর ধরে প্রতারণা করে আসছিলেন কথিত এই কবিরাজ। নানাভাবে প্রতারণার মাধ্যমে অর্ধশতাধিক মানুষের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন লাখ লাখ টাকা। গতকাল মঙ্গলবার মুন্সিগঞ্জ থেকে কবিরাজির আড়ালে মানুষকে ঠকিয়ে আসা এই প্রতারককে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব-৩। 

গ্রেপ্তারের সময় ওয়াস কুরুনীর কাছ থেকে সাপ, বিভিন্ন মন্ত্ৰ লেখা কাগজ, তাবিজের খোসা, বনাজি কাঠের লাঠি, হরিণের চামড়া, হাড়ের টুকরা ও প্রতারণায় ব্যবহৃত মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। বুধবার দুপুরে রাজধানীর মতিঝিলের টিকাটুলি এলাকায় র‍্যাব-৩ এর প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র‍্যাব-৩ অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ। 

আরিফ মহিউদ্দিন জানান, ওয়াস কুরুনীর কবিরাজ আলী আশরাফ, তান্ত্রিক কবিরাজ এবং হুমায়ুন আহমেদ নামে তিনটি বেনামি ফেসবুক আইডি আছে। এগুলো ব্যবহার করে মানুষের দৈনন্দিন জীবন যাপনের চিরাচরিত সমস্যা সমাধানের উল্লেখ করে বিভিন্ন পোস্ট দেওয়া হতো। কথিত এই কবিরাজের ২০ থেকে ২২ জনের দালাল চক্র রয়েছে। যাদের কাজ হলো এ সকল পোস্ট বারবার শেয়ারের মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া এবং আগ্রহীদের প্রতারণার শিকার বানিয়ে তাদের কাছ থেকে কৌশলে মোটা অঙ্কের টাকা এবং হাদিয়া হিসেবে স্বর্ণালংকার হাতিয়ে নেওয়া। কবিরাজ ও তার চক্রের সদস্যরা বিকাশ নম্বরে অর্থের লেনদেন করে থাকে এবং কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভিকটিমদের নিকট হতে স্বর্ণালংকার হাতিয়ে নিত। 

র‍্যাব-৩ অধিনায়ক জানান, টার্গেটকৃত নারী ও পুরুষদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চ্যাটিং ও ভয়েস কলের মাধ্যমে সম্পর্ক গড়ে তোলে এবং তাদেরকে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেয়। প্রাথমিকভাবে সে জ্বীন চালানের মাধ্যমে ওষুধ প্রদান এবং গায়েবি চিকিৎসা শুরু করার জন্য দুর্লভ কিছু উপাদান যেমন, কচি কবুতরের রক্ত, ইঁদুরের মাংস, বানরের লোম, বাদুড়ের পা, গভীর রাতে শ্মশানঘাট হতে মাটির কলসিতে পানি সংগ্রহ করা সহ দুষ্প্রাপ্য জিনিস সংগ্রহ করতে বলত। তখন ভিকটিমরা জানায় এসব জিনিস তাদের পক্ষে সংগ্রহ করা সম্ভব নয়। তখন সে এসব জিনিস সংগ্রহ করার বদলে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করত। তখন ভিকটিমরা বাধ্য হয়ে তাকে বিকাশের মাধ্যমে টাকা প্রদান করত। 

আরিফ মহিউদ্দিন আরও জানান, কথিত কবিরাজ ওয়াস কুরুনী মাদ্রাসা থেকে হেফজ খানা পর্যন্ত পড়ালেখা করেছে। সে ১৫-১৬ বছর বয়স থেকে কবিরাজি পেশা শুরু করে। প্রথমে যাত্রীবাহী বাসে তাবিজসহ বিভিন্ন কবিরাজি বই বিক্রি করত। এরপর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেনামি অ্যাকাউন্ট পরিচালনা করে এবং বিভিন্ন অ্যাপস এর মাধ্যমে বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলে প্রতারণা করে অর্থ ও স্বর্ণালংকার আত্মসাৎ করত। গত চার বছর আগে মুন্সিগঞ্জ জেলার লৌহজং এলাকায় বসবাস করছে সে। প্রতারণার কাজে তাঁর স্ত্রীও তাঁকে সহায়তা করত। গ্রেপ্তারকৃত আসামির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান এ কর্মকর্তা। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারতীয় বিমানবন্দরে ১১ দিন ধরে পড়ে আছে ব্রিটিশ এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান, ঘনাচ্ছে রহস্য

ইরানের ‘দানবীয় ক্ষেপণাস্ত্রের’ সামনে উন্মুক্ত ইসরায়েলের ‘অ্যাকিলিস হিল’

জোহরান মামদানি শতভাগ কমিউনিস্ট উন্মাদ, চেহারা বাজে ও বুদ্ধি কম: ট্রাম্প

সারজিস আলমের পোস্ট: সেই সাবরেজিস্ট্রারের অফিসে দুদকের অভিযান

সমীক্ষা-সম্ভাব্যতা যাচাই ছাড়াই ২০ হাজার কোটির দুই প্রকল্প

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত