Ajker Patrika

নিরুদ্দেশ থেকে বাড়ি ফিরে বাবাকে খুন, ছেলের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

নোয়াখালী প্রতিনিধি
আপডেট : ০৭ জুন ২০২৩, ১৮: ২৬
নিরুদ্দেশ থেকে বাড়ি ফিরে বাবাকে খুন, ছেলের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

প্রায় এক বছর ঘরছাড়া ছিলেন ইসমাইল হোসেন নামের এক যুবক। এর মধ্যে পরিবারের কারও সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ ছিল না। হঠাৎ বাড়িতে ফিরে বাবার কাছে জমিজমার ভাগ চেয়ে বসেন তিনি। এ নিয়ে বাবার সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডার একপর্যায়ে বাবাকে শাবল দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেন ছেলে।

২০১৮ সালে নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার চর মহিউদ্দিন গ্রামে ঘটে যাওয়া এ ঘটনায় হত্যা মামলার রায় দিয়েছেন আদালত। অভিযুক্ত ওই যুবককে আদালত যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের দিয়েছেন। একই সঙ্গে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিকে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

আজ বুধবার বিকেলে এ রায় দেন সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ নিলুফার সুলতানা। রায় ঘোষণার সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) গুলজার আহমেদ জুয়েল।

দণ্ডপ্রাপ্ত আসামির নাম ইসমাইল হোসেন। তিনি সুবর্ণচর উপজেলার দক্ষিণ চর মহিউদ্দিন গ্রামের মৃত নজির আহম্মদের ছেলে। 

আদালত সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার আগে প্রায় এক বছর বাড়িঘর ছেড়ে নিরুদ্দেশ ছিলেন ইসমাইল হোসেন। ওই এক বছর পরিবারের লোকজনের সঙ্গে তাঁর কোনো রকম যোগাযোগ ছিল না। ঘটনার ১০-১৫ দিন আগে হঠাৎই গভীর রাতে বাড়িতে ফেরেন ইসমাইল। ২০১৮ সালের ১০ আগস্ট সকালে বাড়ির পার্শ্ববর্তী খেতে কৃষিকাজ করছিলেন তাঁর বাবা নজির আহম্মদ। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ওই খেতে গিয়ে নজির আহম্মদের কাছে জমির ভাগ চান ইসমাইল। এ নিয়ে বাবা-ছেলের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। এরই একপর্যায়ে নজির আহম্মদের হাতে থাকা কাজ করার লোহার শাবল (খন্তা) কেড়ে নিয়ে মাথায় এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকেন ইসমাইল। মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত ও রক্তক্ষরণ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন নজির আহম্মদ। 

পরে স্থানীয়রা তাঁকে উদ্ধার করে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে বেলা ১টার দিকে মারা যান নজির আহম্মদ। পরে এ ঘটনায় নিহতের মেয়ে আমেনা খাতুন বাদী হয়ে ইসমাইলকে আসামি করে চরজব্বার থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। 

ঘটনাস্থল থেকে গ্রেপ্তারকৃত আসামি ইসমাইলকে ঘটনার পরদিন আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। মামলাটি তদন্ত শেষে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। আদালতে ১৬৪ ধারায় নিজের অপরাধ স্বীকার করে জবানবন্দি দেন আসামি ইসমাইল। 

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) গুলজার আহমেদ জুয়েল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ঘটনাটি যেহেতু হত্যা, আমরা আসামির মৃত্যুদণ্ড আশা করেছিলাম। রায় ঘোষণার পর আসামিকে আদালত থেকে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’ 
 
মামলায় আসামিপক্ষে কোনো আইনজীবী না থাকায় সরকারের পক্ষ থেকে মামলা পরিচালনা করেন আইনজীবী শিব নাথ ভৌমিক।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত