Ajker Patrika

চিৎকার করায় মাদ্রাসাছাত্রকে ফেলে গেলেন অপহরণকারীরা

মিরসরাই (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
Thumbnail image

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে অপহরণের পর চিৎকার করায় এক মাদ্রাসা ছাত্রকে ফেলে গেলেন অপহরণকারীরা। মঙ্গলবার (১ নভেম্বর) উজেলার বামুনসুন্দর বাজারের পাশে এই ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী ওই শিশুর নাম মেসবাহ উদ্দিন (১০)। সে মাদবারহাট এলাকার সাইফুল সওদাগরের ছেলে এবং কাজীগ্রাম মহিউচ্চন্নাহ হাফেজিয়া মাদ্রাসার হেফজ বিভাগের ছাত্র।

অপহরণের পর শিশুটির চিৎকার চেঁচামেচির কারনে ধরা পড়ার আশঙ্কায় বামুনসুন্দর বাজারের পাশে ফেলে যায়। 

ভুক্তভোগী ও স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার (১ নভেম্বর) ফজরের নামাজের পর সকাল আনুমানিক ৬টার দিকে মেসবাহ উদ্দিন (১০) ফজরের নামাজ শেষ করে বাথরুমে যাওয়ার জন্য বের হয়। এ সময় চারজন বোরকা পরা নারী শিশুটির মুখে কাপড় চেপে ধরে কালো মাইক্রবাসে (হাইস) তোলে। এরপর তার নাকে-মুখে স্পে করলে সে অজ্ঞান হয়ে যায়। কিছুদূর যাওয়ার পর জ্ঞান ফিরে আসলে তার চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু করে। ধরা পড়ার আশঙ্কায় তাকে গাড়ি থেকে ফেলে দিয়ে দ্রুত চলে যায় অপহরণকারীরা।

শিশুটি জানায়, গাড়িতে এ সময় আরও কয়েকজন শিশু অজ্ঞান অবস্থায় ছিল।

এই বিষয়ে কাজীগ্রাম মহিউচ্চন্নাহ হাফেজিয়া মাদ্রাসার পরিচালক হাফেজ মাওলানা মো. নুরুল হক বলেন, ‘আমাদের মাদ্রাসার নিয়ম অনুযায়ী ফজর নামাযের পর খতমে ইয়াসিন, খতমে খাজেগান শেষ করে ছাত্রদেরকে নিয়ে দোয়া করি। দোয়া শেষ করে আমরা মেসবাহ উদ্দিনকে না পেয়ে চারিদিকে খোঁজাখুঁজি শুরু করি। ছেলেটির বাড়িতেও ফোন করি। এরই মধ্যে বামুনসুন্দর বাজার থেকে একজন লোক ফোন করে জানায় আপনাদের মাদ্রাসার এক ছাত্রকে পাওয়া গেছে। তখন মেসবাহ উদ্দিনের বাবাসহ আমরা তাকে নিয়ে আসি।’

মো. নুরুল হক আরও বলেন, ‘এরপর তার মুখে অপহরণের ঘটনার বিবরণ শুনে আমরা চমকে উঠি। এটা সকল হেফজ মাদ্রাসার জন্য সতর্ক বার্তা। কোনো অশুভ চক্র মাদ্রাসার কোমলমতি সহজ-সরল ছেলেদের টার্গেট করে এসব করছে। আমরা মেসবাহ উদ্দিনকে পেয়ে আল্লাহর শোকর আদায় করছি।’

মাদ্রাসার এই শিক্ষক আরও বলেন, ‘আমি মিরসরাইসহ সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে সতর্ক থাকার অনুরোধ করছি।’ 

আল জামেয়া আল ইসলামিয়া ওবায়দিয়া নানুপুর মাদ্রাসার শিক্ষক মাওলানা আকতার হোসাইন জিহাদি বলেন, ‘পাঁচ দিন আগে আমার ছেলে হাফেজ মোহাম্মদ আইমানকে একটি চক্র অপহরণের কথা বলে চাঁদা দাবি করে। পরে তাকে মুক্তিপণ ছাড়া প্রশাসনের সহায়তায় উদ্ধার করি।’ 

সবাইকে সতর্ক থাকার অনুরোধ জানিয়ে এই শিক্ষক বলেন, ‘মাদ্রাসার ছাত্রদেরকে একা বাড়িতে যেতে দিবেন না এবং মাদ্রাসা থেকে যেন পালিয়ে না যায় সে জন্য সতর্ক থাকতে হবে। না হয় যে কোনো দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। মাদ্রাসার ছাত্রদের নিয়ে ভয়ংকর ষড়যন্ত্র চলছে। ইদানিং দেখা যাচ্ছে বেশিরভাগ মাদ্রাসার ছাত্র অপহরণ এবং কিডনাপের শিকার হচ্ছে। মাদ্রাসার ছাত্ররা বাড়ি যাচ্ছে অথবা পালিয়ে যাচ্ছে এই সুযোগে একটি চক্র তাদের অপহরণ করে অভিভাবকের ফোন নম্বর নিয়ে মুক্তিপণ দাবি করছে।’

জোরারগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুর হোসেন মামুন রাতে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এ ধরনের ঘটনা আমাদের জানা নেই। কেউ থানায় অপহরণ সংক্রান্ত অভিযোগ করেনি। আমরা বিষয়টি আইনগতভাবে তদন্ত করে দেখব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত