কামরুল হাসান

চিত্রনায়ক সালমান শাহর সঙ্গে আমার কোনো কালে কোনো জানাশোনা ছিল না। সেটা হওয়ার কথাও নয়। তবে তাঁর সঙ্গে মাত্র একবার দেখা হয়েছিল, কথাও হয়েছিল। সেটা এফডিসিতে কী একটি অপ্রীতিকর ঘটনার সময়। এটা ঠিক যে, তাঁর মতো নক্ষত্রের সঙ্গে আমার মতো উটকো লোকের আলাপ কখনো কখনো হয়তো হয়, কিন্তু তার আয়ু খুব বেশি স্থায়ী হয় না। তার পরও সালমান শাহকে এভাবে দেখব, সেটা একেবারে মাথায় ছিল না।
শুক্রবারের সকাল মানেই রিপোর্টারদের বিশ্রামের দিন, এদিন অ্যাসাইনমেন্ট কম থাকে। ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর দিনের প্রথম ভাগে বিশ্রামেই ছিলাম। দুপুরের ঠিক আগে খবর এল চিত্রনায়ক সালমান শাহ খুন হয়েছেন। লাশ হলি ফ্যামিলি হাসপাতালে। আমার সিদ্ধেশ্বরীর বাসা থেকে হলি ফ্যামিলি হাসপাতাল পায়ে হাঁটা দূরে। দিলাম দৌড়। গিয়ে শুনি লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। হলি ফ্যামিলির জরুরি বিভাগে একজন ডাক্তার বসে ছিলেন। বললেন, ‘গলায় ফাঁসির দাগ আছে, আত্মহত্যা হতে পারে।’
ঢাকা মেডিকেলে গিয়ে দেখি শত শত মানুষের ভিড়। বেশির ভাগই সিনেমার লোকজন। সবাই চুপচাপ, কেউ কিছু বলছেন না। কী হয়েছে, তা-ও কেউ জানেন না।
নায়ক সালমান তাঁর স্ত্রী সামিরা হক ওয়াইজকে নিয়ে থাকতেন দিলু রোডের উল্টো দিকের ইস্কাটন প্লাজায়। গেলাম সেখানে। কেউ কিছু বলেন না। বিকেলের দিকে তাঁর বাবা কমর উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী এলেন রমনা থানায় মামলা করতে।
সালমান শাহরা ছিলেন দুই ভাই। তাঁর মা নিলুফার জামান চৌধুরী, যিনি নীলা চৌধুরী নামে পরিচিতি পেয়েছিলেন এরশাদের রাজনীতি করার সুবাদে। সালমানের বাবা কমর উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী ছিলেন নিরীহ প্রকৃতির। ১৯৯২ সালে চট্টগ্রামে একটি শো করতে গিয়ে সাবেক ক্রিকেটার শফিকুল হক হীরার মেয়ে সামিরার সঙ্গে সালমানের পরিচয় হয়। পরে মায়ের অমতে সালমান তাঁকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর সালমান মায়ের বাসা থেকে ইস্কাটনে এসে থাকতে শুরু করেন। সালমানের সঙ্গে তাঁর মায়ের তেমন কোনো কথা হতো না। বাসায় আসতেন শুধু তাঁর বাবা কমর উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী।
রমনা থানায় এসে কমর উদ্দিন বললেন, সেদিন তাঁদের সিলেটে যাওয়ার কথা ছিল। সকালে তিনি ছেলের সঙ্গে দেখা করতে ইস্কাটনের বাসায় যান। বাসার নিচে দারোয়ান তাঁকে ভেতরে ঢুকতে দেয়নি। জোর করে তিনি ওপরে গেলে সালমানের স্ত্রী সামিরা তাঁকে বলেন, সালমান ঘুমাচ্ছে। এ কথা শুনে তিনি বাড়ি ফিরে যান। এরপর বেলা ১১টার দিকে সেলিম নামে চলচ্চিত্রের এক কর্মী নীলা চৌধুরীকে ফোন দিয়ে দ্রুত সালমানের বাসায় আসতে বলেন। নীলা চৌধুরী ছোট ছেলে চৌধুরী মো. শাহরান বিল্টুকে নিয়ে ইস্কাটনের বাসায় এসে দেখেন কয়েকজন নারী সালমানের পায়ে তেল মালিশ করছেন। তাঁর শরীর নীল হয়ে গেছে। বাদল খন্দকার নামের একজন চলচ্চিত্রকার তখন সেখানে ছিলেন। এরপর সবাই সালমানকে ধরাধরি করে হলি ফ্যামিলি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানকার ডাক্তার বলেন, হাসপাতালে আনার আগেই তিনি মারা গেছেন।
কমর উদ্দিন আহমেদ চৌধুরীর এই মামলা অপমৃত্যুর মামলা হিসেবে রেকর্ড করে রমনা থানা। ময়নাতদন্ত শেষে পরদিন লাশ নেওয়া হলো এফডিসিতে। হাজার হাজার মানুষ সেখানে। সবাই বললেন, এটা পরিষ্কার হত্যাকাণ্ড। সেদিনই সালমানের লাশ সিলেটে নিয়ে হজরত শাহজালাল (রহ.)-এর মাজারের কবরস্থানে দাফন করা হলো। সব কাগজে এই মৃত্যু নিয়ে রহস্যের খবর ছাপা হলো।
দেশজুড়ে তখন সালমানের অসংখ্য ভক্ত। কয়েকজন তরুণী এই মৃত্যু মেনে নিতে না পেরে আত্মহত্যাও করলেন। আকস্মিক এই মৃত্যুতে স্তম্ভিত গোটা দেশ। সালমানভক্তদের মধ্যে তৈরি হলো নানা প্রশ্ন। এ অবস্থায় পরিবারের দাবির মুখে আবার লাশ তুলে দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্ত হলো সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজে। ভিসেরা পরীক্ষাও হয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এর জন্য উচ্চপর্যায়ের একটি বোর্ড গঠন করে দেয়। তাঁদের সম্মিলিত সিদ্ধান্ত হয়, সালমান শাহর গলায় ফাঁস ছিল ‘এনটিই মর্টেম’ বা মৃত্যুপূর্ব।
মারা যাওয়ার সময় সালমানের পকেটে একটি সুইসাইড নোট পাওয়া যায়। তাতে লেখা ছিল—‘সুস্থ মস্তিষ্কে আমি আত্মহত্যা করছি’। সেই নোট পাঠানো হয় সিআইডিতে। সিআইডির হস্তরেখাবিদ সমীর কুমার মুখার্জি এটা পরীক্ষা করেন। তিনি একদিন আমাকে বলেছিলেন, দুটো লেখা হুবহু মিলে গেলেই ধরে নিতে হয় একটি জাল। বড় খবরের আশায় একদিন আমি তাঁর কাছে গেলাম। বললেন, সুইসাইড নোট ঠিক আছে। এটা সালমানের হাতের লেখা। বড় খবরের আশা উবে গেল।
প্রথমে এই মামলা তদন্ত করল রমনা থানার পুলিশ, তারপর এল ডিবি এবং সিআইডিতে। সবাই বললেন, এটা আত্মহত্যা। সিআইডির রিপোর্টের ব্যাপারে নারাজি দিলেন সালমানের বাবা। তিনি বিচার বিভাগীয় তদন্ত চাইলেন। ম্যাজিস্ট্রেট ইমদাদুল হক বিচার বিভাগীয় তদন্ত করলেন। সালমানের বাবা সেই তদন্তেও নারাজি দেন। তাঁর দাবি, সালমানকে চেতনানাশক ইনজেকশন দিয়ে গলায় বিদ্যুতের তার পেঁচিয়ে হত্যা করা হয়। সর্বশেষ আদালত পিবিআইকে তদন্তের দায়িত্ব দেন। পিবিআই এ ঘটনাকে ‘আত্মহত্যা’ বলে প্রতিবেদন দেয়। সালমানের বাবা মারা যাওয়ায় (২০০০ সালের ১১ মে) এবার নারাজি দেন তাঁর মা নীলা চৌধুরী।
এই তদন্তের মাঝে একটি ঘটনা ঘটে। সালমানের মৃত্যুর বছরখানেক পর রেজভী আহমেদ নামে এক যুবক সালমানের মায়ের বাড়িতে গিয়ে অস্বাভাবিক আচরণ করলে তাঁকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। তিনি ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়ে বলেন, সালমানকে তাঁর স্ত্রী, শাশুড়ি, আজিজ মোহাম্মদ ভাইসহ কয়েকজন মিলে খুন করেছেন। পরে আবার সিআইডির কাছে তিনি বলেন, তাঁর এই জবানবন্দি ছিল সাজানো। ক্যান্টনমেন্ট থানার পুলিশ তাঁকে মারধর করে এই জবানবন্দি দিতে বাধ্য করেছিল।
অনেক বছর ধরে এ ঘটনার ফলোআপ করেছি। বিভিন্ন সময় যেসব তথ্য পেয়েছি, তা নিয়ে আমার মনেও অনেক প্রশ্ন। সালমানের ঘনিষ্ঠ বন্ধু আশরাফুল হক ডন, তাঁর গৃহকর্মী, বন্ধুসহ আরও অনেকে আমাকে বলেছিলেন, সালমানের মৃত্যুর নেপথ্যে ছিল নায়িকা শাবনূরের সঙ্গে তাঁর গভীর সম্পর্ক। শাবনূরের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ার বিষয়টি সামিরা জেনে যান।
সালমান একবার শাবনূরের সঙ্গে ভারতেও গিয়েছিলেন। তা ছাড়া, সামিরা ঢাকার বাইরে গেলেই শাবনূর এসে সালমানের বাসায় রাত কাটাতেন। সামিরা একবার এফডিসিতে তাঁদের দুজনকে অন্তরঙ্গ অবস্থায় দেখেও ফেলেন। সালমানের ঘনিষ্ঠরা বলেছিলেন, সন্তান না হওয়ায় সালমান খুব বিপর্যস্ত ছিলেন। তিনি কাজের মেয়ে ডলির সন্তানকে দত্তক নিতে চেয়েছিলেন।
সালমান চেয়েছিলেন, সামিরা থাকবেন, আবার তিনি শাবনূরকেও বিয়ে করবেন। তাঁর মায়ের বোধ হয় এতে সম্মতি ছিল। ডনের ধারণা, এর পরই সবকিছু জটিল হয়ে যায়। সালমান আত্মহত্যার পথ বেছে নেন।
সালমান ছিলেন ঢাকাই ফিল্মের ‘হার্টথ্রব’ নায়ক। আজকের দিনে বসে এটা একেবারেই ভাবা কঠিন যে তিনি কতটা জনপ্রিয় ছিলেন। তাঁর পোশাকপরিচ্ছদ, সংলাপ বলার ধরন, অভিনয়দক্ষতা—সবকিছু মিলিয়ে রোমান্টিক হিরোর পরিচিতি পেয়ে যান। সালমান শাহ মাত্র চার বছর অভিনয় করেন। এ সময় তিনি ২৭টি সিনেমায় অভিনয় করেন। বেশির ভাগই সিনেমা ছিল আলোচিত এবং ব্যবসাসফল। যখন তিনি মারা যান, তাঁর পেছনে প্রযোজকদের লগ্নি ছিল আড়াই শ কোটি টাকা।
সালমান শাহর মৃত্যুসংবাদ দর্শকের মনে এতটাই দাগ কেটেছিল যে দুই দশকের বেশি সময় পরেও তাঁকে নিয়ে আলোচনা থামেনি। এখনো অনেক ভক্তের কাছে তাঁর এই মৃত্যু রহস্যে ঘেরা। আমার কাছে তো বটেই।

চিত্রনায়ক সালমান শাহর সঙ্গে আমার কোনো কালে কোনো জানাশোনা ছিল না। সেটা হওয়ার কথাও নয়। তবে তাঁর সঙ্গে মাত্র একবার দেখা হয়েছিল, কথাও হয়েছিল। সেটা এফডিসিতে কী একটি অপ্রীতিকর ঘটনার সময়। এটা ঠিক যে, তাঁর মতো নক্ষত্রের সঙ্গে আমার মতো উটকো লোকের আলাপ কখনো কখনো হয়তো হয়, কিন্তু তার আয়ু খুব বেশি স্থায়ী হয় না। তার পরও সালমান শাহকে এভাবে দেখব, সেটা একেবারে মাথায় ছিল না।
শুক্রবারের সকাল মানেই রিপোর্টারদের বিশ্রামের দিন, এদিন অ্যাসাইনমেন্ট কম থাকে। ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর দিনের প্রথম ভাগে বিশ্রামেই ছিলাম। দুপুরের ঠিক আগে খবর এল চিত্রনায়ক সালমান শাহ খুন হয়েছেন। লাশ হলি ফ্যামিলি হাসপাতালে। আমার সিদ্ধেশ্বরীর বাসা থেকে হলি ফ্যামিলি হাসপাতাল পায়ে হাঁটা দূরে। দিলাম দৌড়। গিয়ে শুনি লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। হলি ফ্যামিলির জরুরি বিভাগে একজন ডাক্তার বসে ছিলেন। বললেন, ‘গলায় ফাঁসির দাগ আছে, আত্মহত্যা হতে পারে।’
ঢাকা মেডিকেলে গিয়ে দেখি শত শত মানুষের ভিড়। বেশির ভাগই সিনেমার লোকজন। সবাই চুপচাপ, কেউ কিছু বলছেন না। কী হয়েছে, তা-ও কেউ জানেন না।
নায়ক সালমান তাঁর স্ত্রী সামিরা হক ওয়াইজকে নিয়ে থাকতেন দিলু রোডের উল্টো দিকের ইস্কাটন প্লাজায়। গেলাম সেখানে। কেউ কিছু বলেন না। বিকেলের দিকে তাঁর বাবা কমর উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী এলেন রমনা থানায় মামলা করতে।
সালমান শাহরা ছিলেন দুই ভাই। তাঁর মা নিলুফার জামান চৌধুরী, যিনি নীলা চৌধুরী নামে পরিচিতি পেয়েছিলেন এরশাদের রাজনীতি করার সুবাদে। সালমানের বাবা কমর উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী ছিলেন নিরীহ প্রকৃতির। ১৯৯২ সালে চট্টগ্রামে একটি শো করতে গিয়ে সাবেক ক্রিকেটার শফিকুল হক হীরার মেয়ে সামিরার সঙ্গে সালমানের পরিচয় হয়। পরে মায়ের অমতে সালমান তাঁকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর সালমান মায়ের বাসা থেকে ইস্কাটনে এসে থাকতে শুরু করেন। সালমানের সঙ্গে তাঁর মায়ের তেমন কোনো কথা হতো না। বাসায় আসতেন শুধু তাঁর বাবা কমর উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী।
রমনা থানায় এসে কমর উদ্দিন বললেন, সেদিন তাঁদের সিলেটে যাওয়ার কথা ছিল। সকালে তিনি ছেলের সঙ্গে দেখা করতে ইস্কাটনের বাসায় যান। বাসার নিচে দারোয়ান তাঁকে ভেতরে ঢুকতে দেয়নি। জোর করে তিনি ওপরে গেলে সালমানের স্ত্রী সামিরা তাঁকে বলেন, সালমান ঘুমাচ্ছে। এ কথা শুনে তিনি বাড়ি ফিরে যান। এরপর বেলা ১১টার দিকে সেলিম নামে চলচ্চিত্রের এক কর্মী নীলা চৌধুরীকে ফোন দিয়ে দ্রুত সালমানের বাসায় আসতে বলেন। নীলা চৌধুরী ছোট ছেলে চৌধুরী মো. শাহরান বিল্টুকে নিয়ে ইস্কাটনের বাসায় এসে দেখেন কয়েকজন নারী সালমানের পায়ে তেল মালিশ করছেন। তাঁর শরীর নীল হয়ে গেছে। বাদল খন্দকার নামের একজন চলচ্চিত্রকার তখন সেখানে ছিলেন। এরপর সবাই সালমানকে ধরাধরি করে হলি ফ্যামিলি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানকার ডাক্তার বলেন, হাসপাতালে আনার আগেই তিনি মারা গেছেন।
কমর উদ্দিন আহমেদ চৌধুরীর এই মামলা অপমৃত্যুর মামলা হিসেবে রেকর্ড করে রমনা থানা। ময়নাতদন্ত শেষে পরদিন লাশ নেওয়া হলো এফডিসিতে। হাজার হাজার মানুষ সেখানে। সবাই বললেন, এটা পরিষ্কার হত্যাকাণ্ড। সেদিনই সালমানের লাশ সিলেটে নিয়ে হজরত শাহজালাল (রহ.)-এর মাজারের কবরস্থানে দাফন করা হলো। সব কাগজে এই মৃত্যু নিয়ে রহস্যের খবর ছাপা হলো।
দেশজুড়ে তখন সালমানের অসংখ্য ভক্ত। কয়েকজন তরুণী এই মৃত্যু মেনে নিতে না পেরে আত্মহত্যাও করলেন। আকস্মিক এই মৃত্যুতে স্তম্ভিত গোটা দেশ। সালমানভক্তদের মধ্যে তৈরি হলো নানা প্রশ্ন। এ অবস্থায় পরিবারের দাবির মুখে আবার লাশ তুলে দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্ত হলো সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজে। ভিসেরা পরীক্ষাও হয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এর জন্য উচ্চপর্যায়ের একটি বোর্ড গঠন করে দেয়। তাঁদের সম্মিলিত সিদ্ধান্ত হয়, সালমান শাহর গলায় ফাঁস ছিল ‘এনটিই মর্টেম’ বা মৃত্যুপূর্ব।
মারা যাওয়ার সময় সালমানের পকেটে একটি সুইসাইড নোট পাওয়া যায়। তাতে লেখা ছিল—‘সুস্থ মস্তিষ্কে আমি আত্মহত্যা করছি’। সেই নোট পাঠানো হয় সিআইডিতে। সিআইডির হস্তরেখাবিদ সমীর কুমার মুখার্জি এটা পরীক্ষা করেন। তিনি একদিন আমাকে বলেছিলেন, দুটো লেখা হুবহু মিলে গেলেই ধরে নিতে হয় একটি জাল। বড় খবরের আশায় একদিন আমি তাঁর কাছে গেলাম। বললেন, সুইসাইড নোট ঠিক আছে। এটা সালমানের হাতের লেখা। বড় খবরের আশা উবে গেল।
প্রথমে এই মামলা তদন্ত করল রমনা থানার পুলিশ, তারপর এল ডিবি এবং সিআইডিতে। সবাই বললেন, এটা আত্মহত্যা। সিআইডির রিপোর্টের ব্যাপারে নারাজি দিলেন সালমানের বাবা। তিনি বিচার বিভাগীয় তদন্ত চাইলেন। ম্যাজিস্ট্রেট ইমদাদুল হক বিচার বিভাগীয় তদন্ত করলেন। সালমানের বাবা সেই তদন্তেও নারাজি দেন। তাঁর দাবি, সালমানকে চেতনানাশক ইনজেকশন দিয়ে গলায় বিদ্যুতের তার পেঁচিয়ে হত্যা করা হয়। সর্বশেষ আদালত পিবিআইকে তদন্তের দায়িত্ব দেন। পিবিআই এ ঘটনাকে ‘আত্মহত্যা’ বলে প্রতিবেদন দেয়। সালমানের বাবা মারা যাওয়ায় (২০০০ সালের ১১ মে) এবার নারাজি দেন তাঁর মা নীলা চৌধুরী।
এই তদন্তের মাঝে একটি ঘটনা ঘটে। সালমানের মৃত্যুর বছরখানেক পর রেজভী আহমেদ নামে এক যুবক সালমানের মায়ের বাড়িতে গিয়ে অস্বাভাবিক আচরণ করলে তাঁকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। তিনি ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়ে বলেন, সালমানকে তাঁর স্ত্রী, শাশুড়ি, আজিজ মোহাম্মদ ভাইসহ কয়েকজন মিলে খুন করেছেন। পরে আবার সিআইডির কাছে তিনি বলেন, তাঁর এই জবানবন্দি ছিল সাজানো। ক্যান্টনমেন্ট থানার পুলিশ তাঁকে মারধর করে এই জবানবন্দি দিতে বাধ্য করেছিল।
অনেক বছর ধরে এ ঘটনার ফলোআপ করেছি। বিভিন্ন সময় যেসব তথ্য পেয়েছি, তা নিয়ে আমার মনেও অনেক প্রশ্ন। সালমানের ঘনিষ্ঠ বন্ধু আশরাফুল হক ডন, তাঁর গৃহকর্মী, বন্ধুসহ আরও অনেকে আমাকে বলেছিলেন, সালমানের মৃত্যুর নেপথ্যে ছিল নায়িকা শাবনূরের সঙ্গে তাঁর গভীর সম্পর্ক। শাবনূরের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ার বিষয়টি সামিরা জেনে যান।
সালমান একবার শাবনূরের সঙ্গে ভারতেও গিয়েছিলেন। তা ছাড়া, সামিরা ঢাকার বাইরে গেলেই শাবনূর এসে সালমানের বাসায় রাত কাটাতেন। সামিরা একবার এফডিসিতে তাঁদের দুজনকে অন্তরঙ্গ অবস্থায় দেখেও ফেলেন। সালমানের ঘনিষ্ঠরা বলেছিলেন, সন্তান না হওয়ায় সালমান খুব বিপর্যস্ত ছিলেন। তিনি কাজের মেয়ে ডলির সন্তানকে দত্তক নিতে চেয়েছিলেন।
সালমান চেয়েছিলেন, সামিরা থাকবেন, আবার তিনি শাবনূরকেও বিয়ে করবেন। তাঁর মায়ের বোধ হয় এতে সম্মতি ছিল। ডনের ধারণা, এর পরই সবকিছু জটিল হয়ে যায়। সালমান আত্মহত্যার পথ বেছে নেন।
সালমান ছিলেন ঢাকাই ফিল্মের ‘হার্টথ্রব’ নায়ক। আজকের দিনে বসে এটা একেবারেই ভাবা কঠিন যে তিনি কতটা জনপ্রিয় ছিলেন। তাঁর পোশাকপরিচ্ছদ, সংলাপ বলার ধরন, অভিনয়দক্ষতা—সবকিছু মিলিয়ে রোমান্টিক হিরোর পরিচিতি পেয়ে যান। সালমান শাহ মাত্র চার বছর অভিনয় করেন। এ সময় তিনি ২৭টি সিনেমায় অভিনয় করেন। বেশির ভাগই সিনেমা ছিল আলোচিত এবং ব্যবসাসফল। যখন তিনি মারা যান, তাঁর পেছনে প্রযোজকদের লগ্নি ছিল আড়াই শ কোটি টাকা।
সালমান শাহর মৃত্যুসংবাদ দর্শকের মনে এতটাই দাগ কেটেছিল যে দুই দশকের বেশি সময় পরেও তাঁকে নিয়ে আলোচনা থামেনি। এখনো অনেক ভক্তের কাছে তাঁর এই মৃত্যু রহস্যে ঘেরা। আমার কাছে তো বটেই।
কামরুল হাসান

চিত্রনায়ক সালমান শাহর সঙ্গে আমার কোনো কালে কোনো জানাশোনা ছিল না। সেটা হওয়ার কথাও নয়। তবে তাঁর সঙ্গে মাত্র একবার দেখা হয়েছিল, কথাও হয়েছিল। সেটা এফডিসিতে কী একটি অপ্রীতিকর ঘটনার সময়। এটা ঠিক যে, তাঁর মতো নক্ষত্রের সঙ্গে আমার মতো উটকো লোকের আলাপ কখনো কখনো হয়তো হয়, কিন্তু তার আয়ু খুব বেশি স্থায়ী হয় না। তার পরও সালমান শাহকে এভাবে দেখব, সেটা একেবারে মাথায় ছিল না।
শুক্রবারের সকাল মানেই রিপোর্টারদের বিশ্রামের দিন, এদিন অ্যাসাইনমেন্ট কম থাকে। ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর দিনের প্রথম ভাগে বিশ্রামেই ছিলাম। দুপুরের ঠিক আগে খবর এল চিত্রনায়ক সালমান শাহ খুন হয়েছেন। লাশ হলি ফ্যামিলি হাসপাতালে। আমার সিদ্ধেশ্বরীর বাসা থেকে হলি ফ্যামিলি হাসপাতাল পায়ে হাঁটা দূরে। দিলাম দৌড়। গিয়ে শুনি লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। হলি ফ্যামিলির জরুরি বিভাগে একজন ডাক্তার বসে ছিলেন। বললেন, ‘গলায় ফাঁসির দাগ আছে, আত্মহত্যা হতে পারে।’
ঢাকা মেডিকেলে গিয়ে দেখি শত শত মানুষের ভিড়। বেশির ভাগই সিনেমার লোকজন। সবাই চুপচাপ, কেউ কিছু বলছেন না। কী হয়েছে, তা-ও কেউ জানেন না।
নায়ক সালমান তাঁর স্ত্রী সামিরা হক ওয়াইজকে নিয়ে থাকতেন দিলু রোডের উল্টো দিকের ইস্কাটন প্লাজায়। গেলাম সেখানে। কেউ কিছু বলেন না। বিকেলের দিকে তাঁর বাবা কমর উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী এলেন রমনা থানায় মামলা করতে।
সালমান শাহরা ছিলেন দুই ভাই। তাঁর মা নিলুফার জামান চৌধুরী, যিনি নীলা চৌধুরী নামে পরিচিতি পেয়েছিলেন এরশাদের রাজনীতি করার সুবাদে। সালমানের বাবা কমর উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী ছিলেন নিরীহ প্রকৃতির। ১৯৯২ সালে চট্টগ্রামে একটি শো করতে গিয়ে সাবেক ক্রিকেটার শফিকুল হক হীরার মেয়ে সামিরার সঙ্গে সালমানের পরিচয় হয়। পরে মায়ের অমতে সালমান তাঁকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর সালমান মায়ের বাসা থেকে ইস্কাটনে এসে থাকতে শুরু করেন। সালমানের সঙ্গে তাঁর মায়ের তেমন কোনো কথা হতো না। বাসায় আসতেন শুধু তাঁর বাবা কমর উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী।
রমনা থানায় এসে কমর উদ্দিন বললেন, সেদিন তাঁদের সিলেটে যাওয়ার কথা ছিল। সকালে তিনি ছেলের সঙ্গে দেখা করতে ইস্কাটনের বাসায় যান। বাসার নিচে দারোয়ান তাঁকে ভেতরে ঢুকতে দেয়নি। জোর করে তিনি ওপরে গেলে সালমানের স্ত্রী সামিরা তাঁকে বলেন, সালমান ঘুমাচ্ছে। এ কথা শুনে তিনি বাড়ি ফিরে যান। এরপর বেলা ১১টার দিকে সেলিম নামে চলচ্চিত্রের এক কর্মী নীলা চৌধুরীকে ফোন দিয়ে দ্রুত সালমানের বাসায় আসতে বলেন। নীলা চৌধুরী ছোট ছেলে চৌধুরী মো. শাহরান বিল্টুকে নিয়ে ইস্কাটনের বাসায় এসে দেখেন কয়েকজন নারী সালমানের পায়ে তেল মালিশ করছেন। তাঁর শরীর নীল হয়ে গেছে। বাদল খন্দকার নামের একজন চলচ্চিত্রকার তখন সেখানে ছিলেন। এরপর সবাই সালমানকে ধরাধরি করে হলি ফ্যামিলি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানকার ডাক্তার বলেন, হাসপাতালে আনার আগেই তিনি মারা গেছেন।
কমর উদ্দিন আহমেদ চৌধুরীর এই মামলা অপমৃত্যুর মামলা হিসেবে রেকর্ড করে রমনা থানা। ময়নাতদন্ত শেষে পরদিন লাশ নেওয়া হলো এফডিসিতে। হাজার হাজার মানুষ সেখানে। সবাই বললেন, এটা পরিষ্কার হত্যাকাণ্ড। সেদিনই সালমানের লাশ সিলেটে নিয়ে হজরত শাহজালাল (রহ.)-এর মাজারের কবরস্থানে দাফন করা হলো। সব কাগজে এই মৃত্যু নিয়ে রহস্যের খবর ছাপা হলো।
দেশজুড়ে তখন সালমানের অসংখ্য ভক্ত। কয়েকজন তরুণী এই মৃত্যু মেনে নিতে না পেরে আত্মহত্যাও করলেন। আকস্মিক এই মৃত্যুতে স্তম্ভিত গোটা দেশ। সালমানভক্তদের মধ্যে তৈরি হলো নানা প্রশ্ন। এ অবস্থায় পরিবারের দাবির মুখে আবার লাশ তুলে দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্ত হলো সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজে। ভিসেরা পরীক্ষাও হয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এর জন্য উচ্চপর্যায়ের একটি বোর্ড গঠন করে দেয়। তাঁদের সম্মিলিত সিদ্ধান্ত হয়, সালমান শাহর গলায় ফাঁস ছিল ‘এনটিই মর্টেম’ বা মৃত্যুপূর্ব।
মারা যাওয়ার সময় সালমানের পকেটে একটি সুইসাইড নোট পাওয়া যায়। তাতে লেখা ছিল—‘সুস্থ মস্তিষ্কে আমি আত্মহত্যা করছি’। সেই নোট পাঠানো হয় সিআইডিতে। সিআইডির হস্তরেখাবিদ সমীর কুমার মুখার্জি এটা পরীক্ষা করেন। তিনি একদিন আমাকে বলেছিলেন, দুটো লেখা হুবহু মিলে গেলেই ধরে নিতে হয় একটি জাল। বড় খবরের আশায় একদিন আমি তাঁর কাছে গেলাম। বললেন, সুইসাইড নোট ঠিক আছে। এটা সালমানের হাতের লেখা। বড় খবরের আশা উবে গেল।
প্রথমে এই মামলা তদন্ত করল রমনা থানার পুলিশ, তারপর এল ডিবি এবং সিআইডিতে। সবাই বললেন, এটা আত্মহত্যা। সিআইডির রিপোর্টের ব্যাপারে নারাজি দিলেন সালমানের বাবা। তিনি বিচার বিভাগীয় তদন্ত চাইলেন। ম্যাজিস্ট্রেট ইমদাদুল হক বিচার বিভাগীয় তদন্ত করলেন। সালমানের বাবা সেই তদন্তেও নারাজি দেন। তাঁর দাবি, সালমানকে চেতনানাশক ইনজেকশন দিয়ে গলায় বিদ্যুতের তার পেঁচিয়ে হত্যা করা হয়। সর্বশেষ আদালত পিবিআইকে তদন্তের দায়িত্ব দেন। পিবিআই এ ঘটনাকে ‘আত্মহত্যা’ বলে প্রতিবেদন দেয়। সালমানের বাবা মারা যাওয়ায় (২০০০ সালের ১১ মে) এবার নারাজি দেন তাঁর মা নীলা চৌধুরী।
এই তদন্তের মাঝে একটি ঘটনা ঘটে। সালমানের মৃত্যুর বছরখানেক পর রেজভী আহমেদ নামে এক যুবক সালমানের মায়ের বাড়িতে গিয়ে অস্বাভাবিক আচরণ করলে তাঁকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। তিনি ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়ে বলেন, সালমানকে তাঁর স্ত্রী, শাশুড়ি, আজিজ মোহাম্মদ ভাইসহ কয়েকজন মিলে খুন করেছেন। পরে আবার সিআইডির কাছে তিনি বলেন, তাঁর এই জবানবন্দি ছিল সাজানো। ক্যান্টনমেন্ট থানার পুলিশ তাঁকে মারধর করে এই জবানবন্দি দিতে বাধ্য করেছিল।
অনেক বছর ধরে এ ঘটনার ফলোআপ করেছি। বিভিন্ন সময় যেসব তথ্য পেয়েছি, তা নিয়ে আমার মনেও অনেক প্রশ্ন। সালমানের ঘনিষ্ঠ বন্ধু আশরাফুল হক ডন, তাঁর গৃহকর্মী, বন্ধুসহ আরও অনেকে আমাকে বলেছিলেন, সালমানের মৃত্যুর নেপথ্যে ছিল নায়িকা শাবনূরের সঙ্গে তাঁর গভীর সম্পর্ক। শাবনূরের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ার বিষয়টি সামিরা জেনে যান।
সালমান একবার শাবনূরের সঙ্গে ভারতেও গিয়েছিলেন। তা ছাড়া, সামিরা ঢাকার বাইরে গেলেই শাবনূর এসে সালমানের বাসায় রাত কাটাতেন। সামিরা একবার এফডিসিতে তাঁদের দুজনকে অন্তরঙ্গ অবস্থায় দেখেও ফেলেন। সালমানের ঘনিষ্ঠরা বলেছিলেন, সন্তান না হওয়ায় সালমান খুব বিপর্যস্ত ছিলেন। তিনি কাজের মেয়ে ডলির সন্তানকে দত্তক নিতে চেয়েছিলেন।
সালমান চেয়েছিলেন, সামিরা থাকবেন, আবার তিনি শাবনূরকেও বিয়ে করবেন। তাঁর মায়ের বোধ হয় এতে সম্মতি ছিল। ডনের ধারণা, এর পরই সবকিছু জটিল হয়ে যায়। সালমান আত্মহত্যার পথ বেছে নেন।
সালমান ছিলেন ঢাকাই ফিল্মের ‘হার্টথ্রব’ নায়ক। আজকের দিনে বসে এটা একেবারেই ভাবা কঠিন যে তিনি কতটা জনপ্রিয় ছিলেন। তাঁর পোশাকপরিচ্ছদ, সংলাপ বলার ধরন, অভিনয়দক্ষতা—সবকিছু মিলিয়ে রোমান্টিক হিরোর পরিচিতি পেয়ে যান। সালমান শাহ মাত্র চার বছর অভিনয় করেন। এ সময় তিনি ২৭টি সিনেমায় অভিনয় করেন। বেশির ভাগই সিনেমা ছিল আলোচিত এবং ব্যবসাসফল। যখন তিনি মারা যান, তাঁর পেছনে প্রযোজকদের লগ্নি ছিল আড়াই শ কোটি টাকা।
সালমান শাহর মৃত্যুসংবাদ দর্শকের মনে এতটাই দাগ কেটেছিল যে দুই দশকের বেশি সময় পরেও তাঁকে নিয়ে আলোচনা থামেনি। এখনো অনেক ভক্তের কাছে তাঁর এই মৃত্যু রহস্যে ঘেরা। আমার কাছে তো বটেই।

চিত্রনায়ক সালমান শাহর সঙ্গে আমার কোনো কালে কোনো জানাশোনা ছিল না। সেটা হওয়ার কথাও নয়। তবে তাঁর সঙ্গে মাত্র একবার দেখা হয়েছিল, কথাও হয়েছিল। সেটা এফডিসিতে কী একটি অপ্রীতিকর ঘটনার সময়। এটা ঠিক যে, তাঁর মতো নক্ষত্রের সঙ্গে আমার মতো উটকো লোকের আলাপ কখনো কখনো হয়তো হয়, কিন্তু তার আয়ু খুব বেশি স্থায়ী হয় না। তার পরও সালমান শাহকে এভাবে দেখব, সেটা একেবারে মাথায় ছিল না।
শুক্রবারের সকাল মানেই রিপোর্টারদের বিশ্রামের দিন, এদিন অ্যাসাইনমেন্ট কম থাকে। ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর দিনের প্রথম ভাগে বিশ্রামেই ছিলাম। দুপুরের ঠিক আগে খবর এল চিত্রনায়ক সালমান শাহ খুন হয়েছেন। লাশ হলি ফ্যামিলি হাসপাতালে। আমার সিদ্ধেশ্বরীর বাসা থেকে হলি ফ্যামিলি হাসপাতাল পায়ে হাঁটা দূরে। দিলাম দৌড়। গিয়ে শুনি লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। হলি ফ্যামিলির জরুরি বিভাগে একজন ডাক্তার বসে ছিলেন। বললেন, ‘গলায় ফাঁসির দাগ আছে, আত্মহত্যা হতে পারে।’
ঢাকা মেডিকেলে গিয়ে দেখি শত শত মানুষের ভিড়। বেশির ভাগই সিনেমার লোকজন। সবাই চুপচাপ, কেউ কিছু বলছেন না। কী হয়েছে, তা-ও কেউ জানেন না।
নায়ক সালমান তাঁর স্ত্রী সামিরা হক ওয়াইজকে নিয়ে থাকতেন দিলু রোডের উল্টো দিকের ইস্কাটন প্লাজায়। গেলাম সেখানে। কেউ কিছু বলেন না। বিকেলের দিকে তাঁর বাবা কমর উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী এলেন রমনা থানায় মামলা করতে।
সালমান শাহরা ছিলেন দুই ভাই। তাঁর মা নিলুফার জামান চৌধুরী, যিনি নীলা চৌধুরী নামে পরিচিতি পেয়েছিলেন এরশাদের রাজনীতি করার সুবাদে। সালমানের বাবা কমর উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী ছিলেন নিরীহ প্রকৃতির। ১৯৯২ সালে চট্টগ্রামে একটি শো করতে গিয়ে সাবেক ক্রিকেটার শফিকুল হক হীরার মেয়ে সামিরার সঙ্গে সালমানের পরিচয় হয়। পরে মায়ের অমতে সালমান তাঁকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর সালমান মায়ের বাসা থেকে ইস্কাটনে এসে থাকতে শুরু করেন। সালমানের সঙ্গে তাঁর মায়ের তেমন কোনো কথা হতো না। বাসায় আসতেন শুধু তাঁর বাবা কমর উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী।
রমনা থানায় এসে কমর উদ্দিন বললেন, সেদিন তাঁদের সিলেটে যাওয়ার কথা ছিল। সকালে তিনি ছেলের সঙ্গে দেখা করতে ইস্কাটনের বাসায় যান। বাসার নিচে দারোয়ান তাঁকে ভেতরে ঢুকতে দেয়নি। জোর করে তিনি ওপরে গেলে সালমানের স্ত্রী সামিরা তাঁকে বলেন, সালমান ঘুমাচ্ছে। এ কথা শুনে তিনি বাড়ি ফিরে যান। এরপর বেলা ১১টার দিকে সেলিম নামে চলচ্চিত্রের এক কর্মী নীলা চৌধুরীকে ফোন দিয়ে দ্রুত সালমানের বাসায় আসতে বলেন। নীলা চৌধুরী ছোট ছেলে চৌধুরী মো. শাহরান বিল্টুকে নিয়ে ইস্কাটনের বাসায় এসে দেখেন কয়েকজন নারী সালমানের পায়ে তেল মালিশ করছেন। তাঁর শরীর নীল হয়ে গেছে। বাদল খন্দকার নামের একজন চলচ্চিত্রকার তখন সেখানে ছিলেন। এরপর সবাই সালমানকে ধরাধরি করে হলি ফ্যামিলি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানকার ডাক্তার বলেন, হাসপাতালে আনার আগেই তিনি মারা গেছেন।
কমর উদ্দিন আহমেদ চৌধুরীর এই মামলা অপমৃত্যুর মামলা হিসেবে রেকর্ড করে রমনা থানা। ময়নাতদন্ত শেষে পরদিন লাশ নেওয়া হলো এফডিসিতে। হাজার হাজার মানুষ সেখানে। সবাই বললেন, এটা পরিষ্কার হত্যাকাণ্ড। সেদিনই সালমানের লাশ সিলেটে নিয়ে হজরত শাহজালাল (রহ.)-এর মাজারের কবরস্থানে দাফন করা হলো। সব কাগজে এই মৃত্যু নিয়ে রহস্যের খবর ছাপা হলো।
দেশজুড়ে তখন সালমানের অসংখ্য ভক্ত। কয়েকজন তরুণী এই মৃত্যু মেনে নিতে না পেরে আত্মহত্যাও করলেন। আকস্মিক এই মৃত্যুতে স্তম্ভিত গোটা দেশ। সালমানভক্তদের মধ্যে তৈরি হলো নানা প্রশ্ন। এ অবস্থায় পরিবারের দাবির মুখে আবার লাশ তুলে দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্ত হলো সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজে। ভিসেরা পরীক্ষাও হয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এর জন্য উচ্চপর্যায়ের একটি বোর্ড গঠন করে দেয়। তাঁদের সম্মিলিত সিদ্ধান্ত হয়, সালমান শাহর গলায় ফাঁস ছিল ‘এনটিই মর্টেম’ বা মৃত্যুপূর্ব।
মারা যাওয়ার সময় সালমানের পকেটে একটি সুইসাইড নোট পাওয়া যায়। তাতে লেখা ছিল—‘সুস্থ মস্তিষ্কে আমি আত্মহত্যা করছি’। সেই নোট পাঠানো হয় সিআইডিতে। সিআইডির হস্তরেখাবিদ সমীর কুমার মুখার্জি এটা পরীক্ষা করেন। তিনি একদিন আমাকে বলেছিলেন, দুটো লেখা হুবহু মিলে গেলেই ধরে নিতে হয় একটি জাল। বড় খবরের আশায় একদিন আমি তাঁর কাছে গেলাম। বললেন, সুইসাইড নোট ঠিক আছে। এটা সালমানের হাতের লেখা। বড় খবরের আশা উবে গেল।
প্রথমে এই মামলা তদন্ত করল রমনা থানার পুলিশ, তারপর এল ডিবি এবং সিআইডিতে। সবাই বললেন, এটা আত্মহত্যা। সিআইডির রিপোর্টের ব্যাপারে নারাজি দিলেন সালমানের বাবা। তিনি বিচার বিভাগীয় তদন্ত চাইলেন। ম্যাজিস্ট্রেট ইমদাদুল হক বিচার বিভাগীয় তদন্ত করলেন। সালমানের বাবা সেই তদন্তেও নারাজি দেন। তাঁর দাবি, সালমানকে চেতনানাশক ইনজেকশন দিয়ে গলায় বিদ্যুতের তার পেঁচিয়ে হত্যা করা হয়। সর্বশেষ আদালত পিবিআইকে তদন্তের দায়িত্ব দেন। পিবিআই এ ঘটনাকে ‘আত্মহত্যা’ বলে প্রতিবেদন দেয়। সালমানের বাবা মারা যাওয়ায় (২০০০ সালের ১১ মে) এবার নারাজি দেন তাঁর মা নীলা চৌধুরী।
এই তদন্তের মাঝে একটি ঘটনা ঘটে। সালমানের মৃত্যুর বছরখানেক পর রেজভী আহমেদ নামে এক যুবক সালমানের মায়ের বাড়িতে গিয়ে অস্বাভাবিক আচরণ করলে তাঁকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। তিনি ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়ে বলেন, সালমানকে তাঁর স্ত্রী, শাশুড়ি, আজিজ মোহাম্মদ ভাইসহ কয়েকজন মিলে খুন করেছেন। পরে আবার সিআইডির কাছে তিনি বলেন, তাঁর এই জবানবন্দি ছিল সাজানো। ক্যান্টনমেন্ট থানার পুলিশ তাঁকে মারধর করে এই জবানবন্দি দিতে বাধ্য করেছিল।
অনেক বছর ধরে এ ঘটনার ফলোআপ করেছি। বিভিন্ন সময় যেসব তথ্য পেয়েছি, তা নিয়ে আমার মনেও অনেক প্রশ্ন। সালমানের ঘনিষ্ঠ বন্ধু আশরাফুল হক ডন, তাঁর গৃহকর্মী, বন্ধুসহ আরও অনেকে আমাকে বলেছিলেন, সালমানের মৃত্যুর নেপথ্যে ছিল নায়িকা শাবনূরের সঙ্গে তাঁর গভীর সম্পর্ক। শাবনূরের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ার বিষয়টি সামিরা জেনে যান।
সালমান একবার শাবনূরের সঙ্গে ভারতেও গিয়েছিলেন। তা ছাড়া, সামিরা ঢাকার বাইরে গেলেই শাবনূর এসে সালমানের বাসায় রাত কাটাতেন। সামিরা একবার এফডিসিতে তাঁদের দুজনকে অন্তরঙ্গ অবস্থায় দেখেও ফেলেন। সালমানের ঘনিষ্ঠরা বলেছিলেন, সন্তান না হওয়ায় সালমান খুব বিপর্যস্ত ছিলেন। তিনি কাজের মেয়ে ডলির সন্তানকে দত্তক নিতে চেয়েছিলেন।
সালমান চেয়েছিলেন, সামিরা থাকবেন, আবার তিনি শাবনূরকেও বিয়ে করবেন। তাঁর মায়ের বোধ হয় এতে সম্মতি ছিল। ডনের ধারণা, এর পরই সবকিছু জটিল হয়ে যায়। সালমান আত্মহত্যার পথ বেছে নেন।
সালমান ছিলেন ঢাকাই ফিল্মের ‘হার্টথ্রব’ নায়ক। আজকের দিনে বসে এটা একেবারেই ভাবা কঠিন যে তিনি কতটা জনপ্রিয় ছিলেন। তাঁর পোশাকপরিচ্ছদ, সংলাপ বলার ধরন, অভিনয়দক্ষতা—সবকিছু মিলিয়ে রোমান্টিক হিরোর পরিচিতি পেয়ে যান। সালমান শাহ মাত্র চার বছর অভিনয় করেন। এ সময় তিনি ২৭টি সিনেমায় অভিনয় করেন। বেশির ভাগই সিনেমা ছিল আলোচিত এবং ব্যবসাসফল। যখন তিনি মারা যান, তাঁর পেছনে প্রযোজকদের লগ্নি ছিল আড়াই শ কোটি টাকা।
সালমান শাহর মৃত্যুসংবাদ দর্শকের মনে এতটাই দাগ কেটেছিল যে দুই দশকের বেশি সময় পরেও তাঁকে নিয়ে আলোচনা থামেনি। এখনো অনেক ভক্তের কাছে তাঁর এই মৃত্যু রহস্যে ঘেরা। আমার কাছে তো বটেই।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
২ দিন আগে
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৫ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৫ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
৬ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত বুধবার ভোররাতে দুই গ্রুপ মাদক কারবারির সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ (২০)। পরিবারের দাবি, দুপক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে জাহিদের পায়ের কাছে ককটেল বিস্ফোরণ হয়। এ সময় স্প্লিন্টার তাঁর ঘাড় ও পিঠে বিদ্ধ হয়। আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। সংঘর্ষের পর ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালনা করে র্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনী। অভিযানে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও তিনটি তাজা গুলিসহ বিপুল পরিমাণ দেশি অস্ত্র ও পেট্রলবোমা উদ্ধার করা হয়।
জাহিদের ভগ্নিপতি মো. উজ্জ্বল জানান, রাজধানীর কল্যাণপুরে মিজান টাওয়ারে একটি মোবাইল ফোন সার্ভিসিংয়ের দোকানে কাজ করতেন জাহিদ। বুধবার রাতে বন্ধুদের সঙ্গে রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়ার সময় তাঁরা সংঘর্ষের মধ্যে পড়েন। পরে হাসপাতালে জাহিদের মৃত্যু হয়।
তবে পুলিশ বলছে, ককটেল তৈরির সময় বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত বুধবার ভোররাতে দুই গ্রুপ মাদক কারবারির সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ (২০)। পরিবারের দাবি, দুপক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে জাহিদের পায়ের কাছে ককটেল বিস্ফোরণ হয়। এ সময় স্প্লিন্টার তাঁর ঘাড় ও পিঠে বিদ্ধ হয়। আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। সংঘর্ষের পর ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালনা করে র্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনী। অভিযানে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও তিনটি তাজা গুলিসহ বিপুল পরিমাণ দেশি অস্ত্র ও পেট্রলবোমা উদ্ধার করা হয়।
জাহিদের ভগ্নিপতি মো. উজ্জ্বল জানান, রাজধানীর কল্যাণপুরে মিজান টাওয়ারে একটি মোবাইল ফোন সার্ভিসিংয়ের দোকানে কাজ করতেন জাহিদ। বুধবার রাতে বন্ধুদের সঙ্গে রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়ার সময় তাঁরা সংঘর্ষের মধ্যে পড়েন। পরে হাসপাতালে জাহিদের মৃত্যু হয়।
তবে পুলিশ বলছে, ককটেল তৈরির সময় বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ।

চিত্রনায়ক সালমান শাহর সঙ্গে আমার কোনো কালে কোনো জানাশোনা ছিল না। সেটা হওয়ার কথাও নয়। তবে তাঁর সঙ্গে মাত্র একবার দেখা হয়েছিল, কথাও হয়েছিল।
০৬ নভেম্বর ২০২১
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৫ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৫ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
৬ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

বিদেশ থেকে পার্সেল এসেছে—এমন দাবি করে কাস্টমস থেকে তা ছাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের কুনিপাড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ওই তরুণের নাম মো. নূরে আলম ওরফে তুহিন (২৪)।
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
পরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অজুহাতে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে বিকাশ ও ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা আদায় করেন নূরে আলম। টাকা পাওয়ার পর নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেন তিনি।
ভুক্তভোগী আদালতের শরণাপন্ন হলে রামপুরা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার। পরে নূরে আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডি জানায়, প্রতারক চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

বিদেশ থেকে পার্সেল এসেছে—এমন দাবি করে কাস্টমস থেকে তা ছাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের কুনিপাড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ওই তরুণের নাম মো. নূরে আলম ওরফে তুহিন (২৪)।
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
পরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অজুহাতে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে বিকাশ ও ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা আদায় করেন নূরে আলম। টাকা পাওয়ার পর নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেন তিনি।
ভুক্তভোগী আদালতের শরণাপন্ন হলে রামপুরা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার। পরে নূরে আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডি জানায়, প্রতারক চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

চিত্রনায়ক সালমান শাহর সঙ্গে আমার কোনো কালে কোনো জানাশোনা ছিল না। সেটা হওয়ার কথাও নয়। তবে তাঁর সঙ্গে মাত্র একবার দেখা হয়েছিল, কথাও হয়েছিল।
০৬ নভেম্বর ২০২১
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
২ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৫ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
৬ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জুয়া ও প্রতারণায় জড়িত থাকায় ৫০ হাজারের বেশি এমএফএস (মোবাইলভিত্তিক আর্থিক লেনদেন সেবা) অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ (স্থগিত) করেছে বিএফআইইউ (বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট)। ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি মাস পর্যন্ত এই নম্বরগুলো স্থগিত করা হয়।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে ‘অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক সভায় বিএফআইইউর প্রতিনিধি এ তথ্য জানান।
সভায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, ডিজিএফআই (ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স), এনএসআই (ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স), এনটিএমসি (ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার), সিআইডি (ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট), বিএফআইইউ, এমএফএস ও মোবাইল অপারেটরদের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত) করা হয়েছে, সেগুলো থেকে কোথায় কোথায় টাকা লেনদেন করা হয়েছে, তা বিশ্লেষণ করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
ডিজিএফআই প্রতিনিধি জানান, অনলাইন জুয়ার মতো আর্থিক নানা প্রতারণায় বেনামি সিম ব্যবহার করা হচ্ছে। সংঘবদ্ধ চক্র ভুয়া সিম বিক্রি করছে। মানুষের আঙুলের ছাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। বিকাশের অ্যাপ নকল করা হয়েছে। নাগরিকদের ডেটাবেইস ডার্ক ওয়েবে পাওয়া যাচ্ছে। এটা নিয়ে নানা অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।
সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, সরকার সতর্ক করার পরও অনেক গণমাধ্যমের অনলাইন পোর্টালে এখনো জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। এ ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচার করলে যেকোনো মুহূর্তে বিনা নোটিশে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমের পোর্টাল বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্রায় সব কটি মিডিয়ার পোর্টালে এখনো অনিরাপদ কনটেন্ট আসে। জুয়ার বিজ্ঞাপন আসে। এখান থেকে তারা টাকা পায়।
১৯ অক্টোবর পর্যন্ত জুয়ার বিজ্ঞাপন বন্ধে সময় দেওয়া হয়েছিল। তবে গণমাধ্যমগুলো তা মানছে না বলে অভিযোগ করেন বিশেষ সহকারী। তিনি বলেন, বেশ কিছু অনলাইন পোর্টাল জুয়ার বিজ্ঞাপন ও অনিরাপদ কনটেন্ট বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘আমরা যেকোনো মুহূর্তে বন্ধ করে দেব। যেহেতু একাধিক নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আমরা পাবলিকলি কোনো নোটিশ দেব না।’
অনলাইন জুয়া বন্ধে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি জানান, সরকারের হিসাবে গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৮২০টি এমএফএস নম্বর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ১ হাজার ৩৩১টি ওয়েব পোর্টালের লিংক পাওয়া গেছে।
সরকারের চ্যালেঞ্জ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, যখনই একটা নম্বর ব্লক করা হয়, তখন এর চেয়ে বেশিসংখ্যক বা সমসংখ্যক নম্বর ব্যবহার করে সিগন্যাল-হোয়াটসঅ্যাপের মতো গ্রুপগুলোয় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। আইপি পরিবর্তন করে ওয়েবসাইটের নাম একটু পরিবর্তন করা হয়। এভাবে নতুন ওয়েবসাইট বানিয়ে আবার শুরু করা হয়। এমএফএস, ওয়েব লিংক বন্ধ করার পর এ চক্রগুলো আবার অ্যাপ তৈরি ফেলে। অ্যাপগুলো অনেক ক্ষেত্রেই পাবলিশড নয়, এপিকে হিসেবে ব্যবহার করে।

জুয়া ও প্রতারণায় জড়িত থাকায় ৫০ হাজারের বেশি এমএফএস (মোবাইলভিত্তিক আর্থিক লেনদেন সেবা) অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ (স্থগিত) করেছে বিএফআইইউ (বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট)। ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি মাস পর্যন্ত এই নম্বরগুলো স্থগিত করা হয়।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে ‘অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক সভায় বিএফআইইউর প্রতিনিধি এ তথ্য জানান।
সভায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, ডিজিএফআই (ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স), এনএসআই (ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স), এনটিএমসি (ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার), সিআইডি (ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট), বিএফআইইউ, এমএফএস ও মোবাইল অপারেটরদের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত) করা হয়েছে, সেগুলো থেকে কোথায় কোথায় টাকা লেনদেন করা হয়েছে, তা বিশ্লেষণ করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
ডিজিএফআই প্রতিনিধি জানান, অনলাইন জুয়ার মতো আর্থিক নানা প্রতারণায় বেনামি সিম ব্যবহার করা হচ্ছে। সংঘবদ্ধ চক্র ভুয়া সিম বিক্রি করছে। মানুষের আঙুলের ছাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। বিকাশের অ্যাপ নকল করা হয়েছে। নাগরিকদের ডেটাবেইস ডার্ক ওয়েবে পাওয়া যাচ্ছে। এটা নিয়ে নানা অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।
সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, সরকার সতর্ক করার পরও অনেক গণমাধ্যমের অনলাইন পোর্টালে এখনো জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। এ ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচার করলে যেকোনো মুহূর্তে বিনা নোটিশে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমের পোর্টাল বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্রায় সব কটি মিডিয়ার পোর্টালে এখনো অনিরাপদ কনটেন্ট আসে। জুয়ার বিজ্ঞাপন আসে। এখান থেকে তারা টাকা পায়।
১৯ অক্টোবর পর্যন্ত জুয়ার বিজ্ঞাপন বন্ধে সময় দেওয়া হয়েছিল। তবে গণমাধ্যমগুলো তা মানছে না বলে অভিযোগ করেন বিশেষ সহকারী। তিনি বলেন, বেশ কিছু অনলাইন পোর্টাল জুয়ার বিজ্ঞাপন ও অনিরাপদ কনটেন্ট বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘আমরা যেকোনো মুহূর্তে বন্ধ করে দেব। যেহেতু একাধিক নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আমরা পাবলিকলি কোনো নোটিশ দেব না।’
অনলাইন জুয়া বন্ধে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি জানান, সরকারের হিসাবে গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৮২০টি এমএফএস নম্বর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ১ হাজার ৩৩১টি ওয়েব পোর্টালের লিংক পাওয়া গেছে।
সরকারের চ্যালেঞ্জ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, যখনই একটা নম্বর ব্লক করা হয়, তখন এর চেয়ে বেশিসংখ্যক বা সমসংখ্যক নম্বর ব্যবহার করে সিগন্যাল-হোয়াটসঅ্যাপের মতো গ্রুপগুলোয় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। আইপি পরিবর্তন করে ওয়েবসাইটের নাম একটু পরিবর্তন করা হয়। এভাবে নতুন ওয়েবসাইট বানিয়ে আবার শুরু করা হয়। এমএফএস, ওয়েব লিংক বন্ধ করার পর এ চক্রগুলো আবার অ্যাপ তৈরি ফেলে। অ্যাপগুলো অনেক ক্ষেত্রেই পাবলিশড নয়, এপিকে হিসেবে ব্যবহার করে।

চিত্রনায়ক সালমান শাহর সঙ্গে আমার কোনো কালে কোনো জানাশোনা ছিল না। সেটা হওয়ার কথাও নয়। তবে তাঁর সঙ্গে মাত্র একবার দেখা হয়েছিল, কথাও হয়েছিল।
০৬ নভেম্বর ২০২১
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
২ দিন আগে
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৫ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
৬ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
আজ সোমবার ভোরে বান্দরবান সদর উপজেলার হাজীপাড়ার বালাঘাটা এলাকা থেকে সিআইডির এলআইসি ও সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি) ইউনিটের সদস্যরা এই যুগলকে গ্রেপ্তার করেন। গ্রেপ্তার হওয়া যুগল হলেন মুহাম্মদ আজিম (২৮) ও তাঁর স্ত্রী বৃষ্টি (২৮)। আজ বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় সিআইডি।
গ্রেপ্তার আজিমের বাড়ি চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বুরুমছড়া গ্রামে এবং বৃষ্টির বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার আন্ধারমানিক (খালপাড়) গ্রামে।
সিআইডির প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এই যুগল ২০২৪ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক এক পর্নো সাইটে প্রথম ভিডিও আপলোড করেন। এরপর এক বছরের মধ্যে তাঁরা ১১২টি ভিডিও আপলোড করেছেন, যেগুলো বিশ্বব্যাপী ২ কোটি ৬৭ লাখের বেশিবার দেখা হয়েছে।
এই যুগল এতটাই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন যে, ২০২৫ সালের অক্টোবর মাসে আন্তর্জাতিক পারফর্মার র্যাঙ্কিংয়ে তাঁদের অবস্থান উঠে আসে অষ্টম স্থানে। ভিডিও আপলোড ছাড়াও তাঁরা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম—বিশেষ করে, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও টেলিগ্রামের মাধ্যমে নিজেদের কর্মকাণ্ডের প্রচারণা চালাতেন। এসব প্ল্যাটফর্মে নতুনদের এ কাজে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানানো হতো।
তদন্তকারীরা বলছেন, আগ্রহীদের ‘ক্রিয়েটর’ হিসেবে যুক্ত করতে তাঁরা টেলিগ্রাম চ্যানেলে নানা প্রলোভন দেখিয়ে বিজ্ঞাপন দিতেন। নতুন কেউ যুক্ত হলে তাঁকে নগদ অর্থ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হতো। কেউ যোগাযোগ করলে তাঁদের ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে উৎসাহিত করতেন আজিম ও বৃষ্টি।
সিআইডির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই যুগল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরোতে পারেননি। তবে অনলাইনে তাঁদের বিলাসবহুল জীবনধারার নানা ছবি পাওয়া যায়, যা সমাজে নেতিবাচক বার্তা দিচ্ছে। এসব কার্যক্রম সামাজিক ও নৈতিকভাবে যেমন উদ্বেগজনক, তেমনি দেশের প্রচলিত আইনেরও লঙ্ঘন।
অভিযানের সময় তাঁদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন, সিম কার্ড, ক্যামেরা, ট্রাইপডসহ ভিডিও ধারণের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি জব্দ করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। একই সঙ্গে আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছে সিআইডি।
সিআইডির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পর্নোগ্রাফি ছড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে যুক্ত অন্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।

দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
আজ সোমবার ভোরে বান্দরবান সদর উপজেলার হাজীপাড়ার বালাঘাটা এলাকা থেকে সিআইডির এলআইসি ও সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি) ইউনিটের সদস্যরা এই যুগলকে গ্রেপ্তার করেন। গ্রেপ্তার হওয়া যুগল হলেন মুহাম্মদ আজিম (২৮) ও তাঁর স্ত্রী বৃষ্টি (২৮)। আজ বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় সিআইডি।
গ্রেপ্তার আজিমের বাড়ি চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বুরুমছড়া গ্রামে এবং বৃষ্টির বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার আন্ধারমানিক (খালপাড়) গ্রামে।
সিআইডির প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এই যুগল ২০২৪ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক এক পর্নো সাইটে প্রথম ভিডিও আপলোড করেন। এরপর এক বছরের মধ্যে তাঁরা ১১২টি ভিডিও আপলোড করেছেন, যেগুলো বিশ্বব্যাপী ২ কোটি ৬৭ লাখের বেশিবার দেখা হয়েছে।
এই যুগল এতটাই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন যে, ২০২৫ সালের অক্টোবর মাসে আন্তর্জাতিক পারফর্মার র্যাঙ্কিংয়ে তাঁদের অবস্থান উঠে আসে অষ্টম স্থানে। ভিডিও আপলোড ছাড়াও তাঁরা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম—বিশেষ করে, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও টেলিগ্রামের মাধ্যমে নিজেদের কর্মকাণ্ডের প্রচারণা চালাতেন। এসব প্ল্যাটফর্মে নতুনদের এ কাজে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানানো হতো।
তদন্তকারীরা বলছেন, আগ্রহীদের ‘ক্রিয়েটর’ হিসেবে যুক্ত করতে তাঁরা টেলিগ্রাম চ্যানেলে নানা প্রলোভন দেখিয়ে বিজ্ঞাপন দিতেন। নতুন কেউ যুক্ত হলে তাঁকে নগদ অর্থ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হতো। কেউ যোগাযোগ করলে তাঁদের ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে উৎসাহিত করতেন আজিম ও বৃষ্টি।
সিআইডির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই যুগল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরোতে পারেননি। তবে অনলাইনে তাঁদের বিলাসবহুল জীবনধারার নানা ছবি পাওয়া যায়, যা সমাজে নেতিবাচক বার্তা দিচ্ছে। এসব কার্যক্রম সামাজিক ও নৈতিকভাবে যেমন উদ্বেগজনক, তেমনি দেশের প্রচলিত আইনেরও লঙ্ঘন।
অভিযানের সময় তাঁদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন, সিম কার্ড, ক্যামেরা, ট্রাইপডসহ ভিডিও ধারণের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি জব্দ করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। একই সঙ্গে আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছে সিআইডি।
সিআইডির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পর্নোগ্রাফি ছড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে যুক্ত অন্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।

চিত্রনায়ক সালমান শাহর সঙ্গে আমার কোনো কালে কোনো জানাশোনা ছিল না। সেটা হওয়ার কথাও নয়। তবে তাঁর সঙ্গে মাত্র একবার দেখা হয়েছিল, কথাও হয়েছিল।
০৬ নভেম্বর ২০২১
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
২ দিন আগে
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৫ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৫ দিন আগে