Ajker Patrika

বিধিনিষেধে বাংলাদেশের রপ্তানিতে তেমন প্রভাব দেখছেন না ভারতীয় ব্যবসায়ীরা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২০ মে ২০২৫, ১২: ৩৬
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

ভারত স্থলবন্দর হয়ে দেশটিতে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকসহ বেশ কিছু পণ্য রপ্তানি নিষিদ্ধ করেছে। তৈরি পোশাকের চালান নিয়ে যাওয়া কিছু ট্রাক ভারতে ঢুকতে না পেরে ফিরে আসতে শুরু করেছে। তবে ভারতের শিল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই নিষেধাজ্ঞার ফলে ভারতে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানিতে খুব বেশি প্রভাব পড়বে না।

সাধারণত প্রতিদিন সীমান্তে প্রচুর ট্রাকের ভিড় থাকে। শীতকালে এই সংখ্যা দৈনিক ২০০ ছাড়িয়ে যায়। এর একটি বড় অংশ নেপাল ও ভুটানে শীতের পোশাক বহনকারী ট্রাক। ভারত স্থলবন্দর দিয়ে পোশাক বাণিজ্য বন্ধ করলেও নেপাল ও ভুটানে চালান পাঠানো যাবে।

বাংলাদেশ স্থলবন্দর দিয়ে ভারতীয় সুতা আমদানি বন্ধ করার পর ভারতও পাল্টা ব্যবস্থা নেয়। হিলি ও বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে বাংলাদেশে চাল রপ্তানি বন্ধ করে দেয় ভারত। বাংলাদেশের উচ্চ ট্রানজিট চার্জও দুই দেশের মধ্যে অসন্তোষের কারণ। এর ফলে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলো তাদের উৎপাদিত পণ্য বিক্রি এবং কাঁচামাল সংগ্রহে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে।

তবে সব মিলিয়ে পোশাক খাতে এই বন্দর নিষেধাজ্ঞার প্রভাব স্বল্পমেয়াদী হবে। কারণ, বাংলাদেশ এখনও শুল্কমুক্ত সুবিধায় ভারতে পোশাক রপ্তানি করতে পারে, যেখানে অন্যান্য দেশকে প্রায় ২০ শতাংশ শুল্ক দিতে হয়। ভারতে বাংলাদেশের নির্দিষ্ট কিছু পণ্যের ওপর আমদানি নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও, ভারতীয় ফাস্ট মুভিং কনজ্যুমার গুডস বা এফএমসিজি (যা খুব দ্রুত ও কম দামে বিক্রি হয়) কোম্পানিগুলো জানিয়েছে, তাদের ব্যবসা আগের ‘মতোই’ রয়ে গেছে। এমনকি, যাদের বাংলাদেশে দেশে বিনিয়োগ আছে, তাদের ক্ষেত্রেও।

গ্লোবাল ট্রেড রিসার্চ ইনিশিয়েটিভের প্রতিষ্ঠাতা অজয় শ্রীবাস্তব বলেন, ‘এইচঅ্যান্ডএম, জারা, প্রাইমার্ক, ইউনিক্লো এবং ওয়ালমার্টের মতো শীর্ষস্থানীয় আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডগুলো বাংলাদেশ থেকে পোশাক সংগ্রহ করে, যার কিছু অংশ ভারতের অভ্যন্তরীণ বাজারে প্রবেশ করে। ভারতীয় উৎপাদনকারীরা দীর্ঘদিন ধরে অসম প্রতিযোগিতার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছেন। তারা স্থানীয়ভাবে সংগৃহীত কাপড়ের উপর ৫ শতাংশ জিএসটি (এক ধরনের শুল্ক) দেন, যেখানে বাংলাদেশি সংস্থাগুলো চীন থেকে শুল্কমুক্ত কাপড় আমদানি করে এবং ভারতে বিক্রির জন্য রপ্তানি প্রণোদনা পায়—এতে তারা আনুমানিক ১০-১৫ শতাংশ পর্যন্ত মূল্য কম ধরার সুবিধা পায়।’

ভারতের অ্যাপারেল এক্সপোর্ট প্রোমোশন কাউন্সিলের মহাসচিব মিথিলেশ্বর ঠাকুর বলেন, ‘তবে আসল সমস্যা হল বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়া মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চলের (সাফটার) অধীনে ভারতে শুল্কমুক্ত সুবিধা এবং স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) হিসেবে কম মজুরি ও ভর্তুকি ব্যবস্থার কারণে কম উৎপাদন খরচের সুবিধা পাচ্ছে।’

তবে বাংলাদেশের ওপর এই নিষেধাজ্ঞার কারণে ভারতের তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারকরা, বিশেষ করে ক্ষুদ্র, ছোট এবং মাঝারি উদ্যোগগুলো আসলে লাভবান হতে পারে। ১৭ মে ভারত আরোপিত নিষেধাজ্ঞার আওতায় বাংলাদেশ মুম্বাইয়ের নক সেবা এবং কলকাতার (কিদারপুর ও হলদিয়া) বন্দর ছাড়া আর কোনো স্থল বা সমুদ্রবন্দর দিয়ে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারবে না। ফলে বাংলাদেশকে যদি পোশাক সমুদ্রপথে পাঠাতে হয় তাহলে পরিবহন খরচ বাড়বে এবং ভারতীয় বাজারে বাংলাদেশি পোশাকের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা কমতে পারে। সমুদ্রপথে পরিবহন স্থলপথের চেয়ে ধীরগতির হওয়ায় পণ্য পৌঁছাতে বেশি সময় লাগবে।

এই বিষয়ে মিথিলেশ্বর ঠাকুর বলেন, ‘এর ফলে লিড টাইম বাড়তে পারে এবং ভারতীয় খুচরা বিক্রেতা ও ভোক্তাদের চাহিদা পূরণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সক্ষমতা নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত হতে পারে।’

একই বিষয়ে ক্লথিং ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়ার সভাপতি সন্তোষ কাটারিয়া বলেন, পোশাক আমদানিতে বন্দর নিষেধাজ্ঞাকে আমরা স্বাগত জানাই। কারণ, এটি ‘এখানে (ভারতে) কম দামি পোশাকের অনিয়ন্ত্রিত প্রবাহ নিয়ে শিল্পের দীর্ঘদিনের উদ্বেগ দূর করবে।’ তিনি এই সিদ্ধান্তকে ‘সময়োপযোগী’ আখ্যা দিয়ে বলেন, এটি ‘ভারতের পোশাক উৎপাদনে আত্মনির্ভরশীলতা বাড়াবে।’

বাংলাদেশ থেকে পোশাক আমদানি মূলত কিছু নির্দিষ্ট ক্যাটাগরিতে হয়ে থাকে। যেমন—পুরুষদের কটন ট্রাউজার এবং সিন্থেটিক ফাইবারের জ্যাকেট/ব্লেজার। এগুলো স্থানীয়ভাবে স্টাইল ইউনিয়ন এবং মার্কস অ্যান্ড স্পেন্সার ও জারার মতো অনেক খুচরা চেইন ও ব্র্যান্ডের জন্য আমদানি করা হয়।

২০২৪-২৫ অর্থবছরে ভারতে বাংলাদেশ থেকে মোট পোশাক রপ্তানি করেছে ৬৭৭ দশমিক ৫ মিলিয়ন ডলার, যা ২০২৩-২৪ অর্থবছরের ৫৯৫ দশমিক ৫ মিলিয়ন ডলারের চেয়ে ১৩ দশমিক ৮ শতাংশ বেশি। মিথিলেশ্বরঠাকুর বলেন, ‘এর মধ্যে শুধু পেট্রাপোল স্থলবন্দর দিয়ে আমদানির পরিমাণ ছিল ৫১৫ দশমিক ৩ মিলিয়ন ডলার, যা বাংলাদেশ থেকে ভারতে মোট পোশাক আমদানির প্রায় ৭৬ শতাংশ।’

ফলে স্থলবন্দরের নিষেধাজ্ঞার কারণে ভারতীয় বাজারে বাংলাদেশের পোশাকের প্রবেশাধিকার সীমিত হতে পারে। বিশেষ করে, এর কারণে বাংলাদেশের মাঝারি আকারের পোশাক কারখানাগুলো প্রভাবিত হতে পারে। এই কারখানাগুলো রপ্তানির জন্য স্থলপথের উপর নির্ভরশীল। কারণ, এই পথ পরিবহনের জন্য সস্তা এবং কার্যকর, বিশেষ করে ছোট চালানের জন্য।

তবে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, যেহেতু কলকাতা এবং নব সেবা সমুদ্রবন্দর দিয়ে পোশাক আমদানি এখনও অনুমোদিত, তাই দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব মূলত নির্ভর করবে স্থলবন্দর থেকে তৈরি পোশাক আমদানি কত দ্রুত এবং কী পরিমাণে সমুদ্রবন্দরে স্থানান্তরিত হয় তার উপর।

তবে ভারতের এফএমসিজি কোম্পানিগুলো আমদানি নিষেধাজ্ঞার তাৎক্ষণিক কোনো প্রভাব দেখছে না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি এফএমসিজি কোম্পানির এক ঊর্ধ্বতন নির্বাহী দ্য হিন্দু বিজনেসলাইনকে বলেছেন, ‘দেশের (ভারতের) বেশিরভাগ এফএমসিজি কোম্পানি যারা বিনিয়োগ করেছে, তারা স্থানীয় বাজারের জন্যই উৎপাদন করে। তাই, আমদানি নিষেধাজ্ঞার তাদের কার্যক্রমে প্রভাব ফেলার সম্ভাবনা কম।’

এদিকে, ভারতের নিষেধাজ্ঞার কারণে বাংলাদেশের প্রকল্প/সহযোগিতায় জড়িত ভারতীয় রেলওয়ে সংস্থাগুলো নির্মাণ ও কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার কারণে বিলম্বের সম্মুখীন হতে পারে। রেলওয়ে প্রকল্পের জন্য পণ্য ও উপকরণ চলাচলের সঙ্গে সম্পর্কিত সমস্যা বাড়তে পারে, যা প্রকল্পের সময়সীমাকে প্রভাবিত করতে পারে।

ভারতীয় রেলওয়ের রপ্তানি শাখা রাইটসের ২০২৫ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত ১ হাজার ৩৬০ কোটি রুপির ক্রয়াদেশ ছিল। এর মধ্যে প্রধান আন্তর্জাতিক অর্ডারগুলো হলো—বাংলাদেশের জন্য ৯০০ কোটি রুপির ২০০টি যাত্রীবাহী কোচ, মোজাম্বিকের জন্য ৩০০ কোটি রুপির ১০টি লোকোমোটিভ এবং দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে তিনটি অর্ডার (প্রতিটি ৩টি লোকোমোটিভের জন্য) প্রায় ১৫০ কোটি রুপি।

এই বিষয়ে অবগত এক ব্যক্তি বলেছেন, ‘লোকোমোটিভ ও কোচ উভয় সরবরাহের প্রাথমিক কাজ এরই মধ্যেই শুরু হয়ে গেছে। উপরন্তু, আন্তঃদেশীয় প্রতিনিধি দলের সফর এবং চলমান দ্বিপাক্ষিক আলোচনা প্রকল্প সমন্বয় ও বাস্তবায়নকে আরও শক্তিশালী করছে।’

২০২৫ অর্থবছরে, বাংলাদেশে ভারতীয় ইস্পাত রপ্তানি—মূলত অবকাঠামো প্রকল্পের জন্য—৪২৫ কোটি টাকা বা ৫ লাখ ৬ হাজার টন ছিল। এর মধ্যে ৩ লাখ ৬৩ হাজার টন স্পঞ্জ আয়রন অন্তর্ভুক্ত ছিল। এক ব্যবসায়ী বলেছেন, ‘স্পঞ্জ আয়রন বা বিলেটের নির্বাচিত সরবরাহ ব্যতীত বাংলাদেশ থেকে সাধারণত খুব বেশি ফিনিশড স্টিলের অর্ডার আসে না।’ তবে নিষেধাজ্ঞার কারণে, এই রপ্তানিও প্রভাবিত হতে পারে বলে অনুমান তাঁর।

তথ্যসূত্র: দ্য হিন্দু বিজনেসলাইন ও ফিন্যানসিয়াল এক্সপ্রেস

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জামায়াতে যোগ দিলেন বিএনপি থেকে পাঁচবার বহিষ্কৃত আখতারুজ্জামান

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি

ব্রিটেনে নাগরিকত্ব হারানোর ঝুঁকিতে কোটি মুসলিম, বেশির ভাগই বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তানের

আজকের রাশিফল: চায়ের বিল না দেওয়া বন্ধুদের সাহায্য করুন, সন্ধ্যার দিকে ভালো খবর

মা-বাবাকে নির্যাতন, ছেলেকে কোমর পর্যন্ত মাটিতে পুঁতে রাখল প্রতিবেশীরা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বুয়েটে বাংলাদেশ কম্পিউটার সোসাইটির বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
বুয়েট অডিটরিয়ামে বিসিএসের বার্ষিক সাধারণ সভা ২০২৩ ও ২০২৪ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত
বুয়েট অডিটরিয়ামে বিসিএসের বার্ষিক সাধারণ সভা ২০২৩ ও ২০২৪ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত

আইটি পেশাজীবীদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ কম্পিউটার সোসাইটির (বিসিএস) বার্ষিক সাধারণ সভা ২০২৩ ও ২০২৪ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) অডিটরিয়ামে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় সভাপতিত্ব করেন সোসাইটির প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. প্রকৌশলী মোহাম্মদ সামসুল আরেফিন। বার্ষিক কার্যক্রম ও সার্বিক অগ্রগতি তুলে ধরেন সেক্রেটারি জেনারেল এলিন ববি। ট্রেজারার মোহাম্মদ শাহরিয়ার হোসেন খান ২০২৩ ও ২০২৪ সালের বার্ষিক প্রতিবেদন এবং নিরীক্ষা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন।

সভায় উপস্থিত ছিলেন বিসিএসের ভাইস প্রেসিডেন্ট (অ্যাডমিন) রেজাউল করীম, ভাইস প্রেসিডেন্ট (ফিন্যান্স) অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল বাছেত, ভাইস প্রেসিডেন্ট (একাডেমিক) জয়নাল আবেদীন, জয়েন্ট সেক্রেটারি (অ্যাডমিন) শরিফুল আনোয়ার, জয়েন্ট সেক্রেটারি (ফিন্যান্স) মো. জারাফাত ইসলাম, জয়েন্ট সেক্রেটারি (একাডেমিক) প্রকৌশলী মো. নাজমুল হুদা মাসুদ।

সভা সঞ্চালনা করেন কাউন্সিলর মুহাম্মদ ওমর সিদ্দিক ও মোহাম্মদ হেদায়েতুল হাসান এবং পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন মো. আলমগীর। সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন কাউন্সিলর মো. মেহেদী হাসান, মো. মোজাহারুল ইসলাম, মো. আসাদ-উজ-জামান, এস এম পারভেজ রানা, মো. ওয়াহিদ মুরাদ, এস এম সাজ্জাদ হোসেন, নিমাই চন্দ্র মণ্ডল, আমিমুল ইহসান, মো. মানিরুল ইসলাম, মো. মারুফ হোসেইন, বায়েজীদ হাসান ভূঞাঁ, মো. তানভিদুল ইসলাম, এস কে হুমায়ন কবীর, মো. মাহফুজ ইসলাম, হাসান আল মনসুর, মোহাম্মদ শফিউদ্দিন প্রমুখ। এ ছাড়া সোসাইটির নিয়মিত সদস্যরাও সভায় অংশ নেন।

সভার আলোচ্য বিষয়ের মধ্যে ছিল—

১. ২০২৩ ও ২০২৪ সালের বার্ষিক প্রতিবেদন ও নিরীক্ষা প্রতিবেদন উপস্থাপন ও অনুমোদন।

২. ২০২৫ সালের হিসাব নিরীক্ষার জন্য অডিটর নিয়োগ ও নিরীক্ষা ফি নির্ধারণ।

৩. বাংলাদেশ কম্পিউটার সোসাইটির সংবিধান পরিবর্তন বিষয়ে আলোচনা।

এই সভার মাধ্যমে সোসাইটির ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা, প্রশাসনিক দক্ষতা এবং তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উন্নয়ন নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জামায়াতে যোগ দিলেন বিএনপি থেকে পাঁচবার বহিষ্কৃত আখতারুজ্জামান

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি

ব্রিটেনে নাগরিকত্ব হারানোর ঝুঁকিতে কোটি মুসলিম, বেশির ভাগই বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তানের

আজকের রাশিফল: চায়ের বিল না দেওয়া বন্ধুদের সাহায্য করুন, সন্ধ্যার দিকে ভালো খবর

মা-বাবাকে নির্যাতন, ছেলেকে কোমর পর্যন্ত মাটিতে পুঁতে রাখল প্রতিবেশীরা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

লাইভ বেকারি: গরম গরম পাউরুটিতে স্বাস্থ্যঝুঁকি চরমে

  • রাজধানীতে লাইভ বেকারির সংখ্যা লাফিয়ে বেড়েছে। তবে এর হিসাব নেই কারও কাছে।
  • টাটকা মনে করে ভোক্তা যেসব পণ্য কিনে খাচ্ছে, তা কতটা নিরাপদ তার কোনো তদারকি নেই।
রোকন উদ্দীন, ঢাকা
আপডেট : ১২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ০১
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর অলিগলিতে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়েছে লাইভ বেকারি নামের তাৎক্ষণিক খাদ্যপণ্য উৎপাদন ও বিক্রির দোকান। কিন্তু এগুলোতে মানের বালাই নেই। টাটকা মনে করে ভোক্তা পাউরুটি, বিস্কুট, টোস্ট, কেকসহ যেসব পণ্য কিনে খাচ্ছে, তা স্বাস্থ্যগতভাবে কতটা নিরাপদ, তার কোনো তদারকি নেই।

বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনের (বিএসটিআই) পরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম (সার্টিফিকেশন মার্কস উইং) আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘লাইভ বেকারির সংখ্যা এত দ্রুত বাড়ছে যে আমরা এগুলোর হিসাব রাখতে পারছি না। কোনোরকম একটা ট্রেড লাইসেন্স জোগাড় করেই উৎপাদন শুরু করছে এগুলো। আমরা তাদের সচেতন করার চেষ্টা করছি। এতগুলো প্রতিষ্ঠান তো বন্ধ করে দিতে পারি না। আমাদের লোকবলের সংকট থাকায় যতটা কাজ করার দরকার, তা করতে পারছি না।’

অল্প জায়গায় স্বল্প পুঁজিতে গড়া যায় বলে রাজধানীতে লাইভ বেকারির সংখ্যা লাফিয়ে বেড়েছে। মুগদা থানাধীন পূর্ব মানিকনগরে ঢোকার মুখ থেকে খালপাড় নতুন রাস্তার মোড় পর্যন্ত সাড়ে ৮০০ মিটারের মধ্যে ৫টি লাইভ বেকারি দেখা যায়। শুধু মানিকনগর নয়; রাজধানীর কমলাপুর, মতিঝিল, খিলগাঁও, মালিবাগ, রামপুরা, বনশ্রী, মোহাম্মদপুরসহ প্রায় সব এলাকার বাজার, পাড়া-মহল্লায় গড়ে উঠছে শত শত লাইভ বেকারি।

ছোট একটি দোকানে ওভেন, মিক্সচার মেশিন, ট্রে টেবিল ও কিছু আসবাব বসিয়ে এসব বেকারিতে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি হচ্ছে কেক, বিস্কুট, পাউরুটি, পেটিস, টোস্ট, মিষ্টিসহ নানা খাদ্যপণ্য।

ঝিগাতলার সোনালী ব্যাংকসংলগ্ন ‘বেকার্স বে’ লাইভ বেকারি থেকে দুটি চিজ রোল ও একটি চিকেন রোল কিনে ফিরছিলেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা পলাশ মাহমুদ। কীভাবে মান যাচাই করবেন, তা জানা নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা সব সময় খাদ্যপণ্য কিনি স্বাদ দেখে। আর যে চিজ রোল আমি ৪০ টাকায় কিনলাম, এটি ভালো কোনো দোকানে গেলে ৭০-৮০ টাকা লাগবে।’

পূর্ব মানিকনগরের খালিস বেকারির স্বত্বাধিকারী মো. জুবায়ের বলেন, ‘ভালো লাভের আশা দিয়ে আরেক বেকারির মালিক আমারে এই ব্যবসায় নামিয়েছে। কিছু টাকা দিয়ে সিটি করপোরেশন থেকে ট্রেড লাইসেন্স করেছি। দেড় বছর আগে যখন শুরু করেছিলাম, তখন কিছু কিছু লাভ হতো। কয়েক মাসের মধ্যে আশপাশে বেকারির সংখ্যা দ্রুত বেড়েছে। এখন লোকসানে আছি।’

লাইসেন্স নেই অনেকেরই

প্রথমে ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে কারখানা স্থাপন করতে হয়। তারপর নমুনা পণ্য উৎপাদন করে মান সনদের জন্য বিএসটিআইতে জমা দিতে হয়। এর জন্য হাল নাগাদ ট্রেড লাইসেন্স, শিল্প-নকশা বা ট্রেড মার্ক রেজিস্ট্রেশনের সত্যায়িত ফটোকপি, ভ্যাট সনদ, প্রিমিসেস লাইসেন্স, কর্মচারীর স্বাস্থ্য সনদ, পণ্যের মোড়কের নকশার কাগজসহ বেশ কিছু নথি দরকার হয়। জানাতে হয় কালার, ফ্লেভার, প্রিজারভেটিভ, আর্টিফিশিয়াল সুইটনারসহ পণ্যের উপকরণ। পরীক্ষণের যন্ত্রপাতির তালিকা, কারখানার যন্ত্রপাতির তালিকা, কারখানার লে-আউট ও প্রসেস ফ্লো-চার্ট। এরপর পরিদর্শকেরা কারখানা পরিদর্শন করে সন্তুষ্ট হলে মেলে মান সনদ। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এই প্রক্রিয়া মানা হচ্ছে না। অনেকে ট্রেড লাইসেন্স নিয়েই ব্যবসায় নেমে পড়েন। কারও কারও তা-ও নেই। মানসনদ নেই সিংহভাগের। কারিগরদের নেই প্রাতিষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ, স্যানিটেশন সনদ।

বুয়েটের উদ্যোগে ২০২১ সালে করা এক গবেষণায় দেখা যায়, ঢাকা শহরের ৬৭ শতাংশ পাউরুটির নমুনায় নির্ধারিত মানের চেয়ে বেশি পটাশিয়াম ব্রোমেট রয়েছে। পাউরুটি ফোলাতে এই রাসায়নিকট ব্যবহার হয়। এ ছাড়া বেকারি পণ্যে কাঁচামাল আটার সঙ্গে মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর ট্রান্সফ্যাট, কৃত্রিম রং ও সোডিয়াম সাইক্লোমেট ব্যবহৃত হচ্ছে বলেও ওই গবেষণায় বলা হয়।

রাজধানীতে কতটি লাইভ বেকারি রয়েছে, তার কোনো তথ্য নেই সিটি করপোরেশন, বিএসটিআইসহ সংশ্লিষ্ট কোনো প্রতিষ্ঠানের কাছেই। বিএসটিআইয়ের তথ্য বলছে, শত শত বেকারির মধ্যে মাত্র ২৭টির মান সনদ রয়েছে।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা (উপসচিব) মুহাম্মদ হাবিবুল আলম বলেন, ‘এসব ট্রেড লাইসেন্স করপোরেশনের জোনগুলো থেকে দেওয়া হয়। কতটি লাইসেন্স হয়েছে, আমাদের কাছে সে তথ্য নেই।’

জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক ও কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি শফিকুজ্জামান বলেন, মানহীন এসব পণ্যে সাধারণের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে। যারা আইন মেনে উৎপাদন করবে না, তাদের ব্যবসা বন্ধ করে দেওয়া উচিত। দু-একটি বন্ধ করলে বাকিগুলো ঠিক হয়ে যেত।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জামায়াতে যোগ দিলেন বিএনপি থেকে পাঁচবার বহিষ্কৃত আখতারুজ্জামান

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি

ব্রিটেনে নাগরিকত্ব হারানোর ঝুঁকিতে কোটি মুসলিম, বেশির ভাগই বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তানের

আজকের রাশিফল: চায়ের বিল না দেওয়া বন্ধুদের সাহায্য করুন, সন্ধ্যার দিকে ভালো খবর

মা-বাবাকে নির্যাতন, ছেলেকে কোমর পর্যন্ত মাটিতে পুঁতে রাখল প্রতিবেশীরা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ব্যাংক খাত নিয়ে পিআরআইয়ের আলোচনা

ট্রুথ কমিশন গঠনে জোর

  • উচ্চ খেলাপি ঋণ টেনে ধরছে অর্থনীতিকে।
  • রাজনৈতিক প্রভাব গভর্ন্যান্স সংকট বাড়াচ্ছে।
  • অমানত রূপান্তর হচ্ছে না সঠিক বিনিয়োগে।
  • বদলে গেছে দেশের ব্যবসায়িক মডেল।
  • সময় এখন সুশাসন এবং আস্থানির্ভর সংস্কারের।
‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
রাজধানীর বনানীর একটি হোটেলে পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট আয়োজিত ‘ব্যাংক খাতের সমস্যা ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক আলোচনায় বক্তারা। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাজধানীর বনানীর একটি হোটেলে পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট আয়োজিত ‘ব্যাংক খাতের সমস্যা ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক আলোচনায় বক্তারা। ছবি: আজকের পত্রিকা

ব্যাংক খাত এক ভয়ংকর সংকটের মুখে। খেলাপি ঋণের হার প্রায় ৩৬ শতাংশে পৌঁছেছে, যা দেশের অর্থনীতিতে চার ধরনের নেতিবাচক চক্র তৈরি হয়েছে। যেখানে মূল্যস্ফীতি বাড়ছে, সুদহার ঊর্ধ্বমুখী, বিনিয়োগ কমছে এবং প্রবৃদ্ধি ধীর হয়ে পড়েছে। মূলত আমানত সঠিক বিনিয়োগে রূপান্তর না হওয়া, ঋণখেলাপির পুনর্বহাল এবং সুশাসনের ঘাটতি ব্যাংক ও আর্থিক খাতের আর্থিক স্থিতিশীলতা নষ্ট ও বিনিয়োগ পরিবেশের ওপর ঝুঁকি বাড়িয়েছে। আর এসবের নেপথ্যে শুধু অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনাই নয়, বরং রাজনৈতিক প্রভাব ও দুর্বল গভর্ন্যান্সও দায়ী। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলছেন, এখন সময় এসেছে ধাপে ধাপে সুশাসনভিত্তিক ও আস্থানির্ভর সংস্কারের।

গতকাল রাজধানীর বনানীর একটি হোটেলে পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট (পিআরআই) আয়োজিত ‘ব্যাংক খাতের সমস্যা ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক আলোচনায় বক্তারা এমন মন্তব্য করেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. লুৎফে সিদ্দিকী বলেন, বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতের বর্তমান সংকট কোনো একক কারণে হয়নি। এটি বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট, স্থানীয় বাস্তবতা এবং অতীতের অনিয়মের মিলিত ফল। ২০০৮ সালের বৈশ্বিক আর্থিক সংকট, পরবর্তী সুদহার পরিবর্তন এবং ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের প্রভাব দেশের ব্যবসায়িক মডেলকে বদলে দিয়েছে। ব্যাংকিং খাতও নতুন বাস্তবতায় খাপ খাওয়াতে বাধ্য হয়েছে।

লুৎফে সিদ্দিকী আরও বলেন, ব্যাংকের পরিচালনা ও পুনর্গঠনে রাজনৈতিক প্রভাব মোকাবিলা এখন অপরিহার্য। অনেক ক্ষেত্রে ঋণখেলাপিদের পুনর্বহাল করা হয়, বিশেষ করে যদি ব্যাংকের চেয়ারম্যান রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী ব্যক্তির পরিবারের সদস্য হন। এতে গভর্ন্যান্স সংকট তীব্র হচ্ছে। তাই খেলাপি ঋণ ও আর্থিক অপরাধের কৌশল বিশ্লেষণে একটি ট্রুথ অ্যান্ড রিকনসিলিয়েশন কমিশন গঠনের প্রস্তাব দেন তিনি। মনোবিজ্ঞানী ও আচরণ বিশেষজ্ঞদের অন্তর্ভুক্ত করে পেশাদার প্রতিষ্ঠানকে যুক্ত করার ওপরও জোর দেন, যাতে ব্যাংকিং ব্যবস্থার আচরণগত ও শৃঙ্খলাগত উন্নয়ন সম্ভব হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. আখতার হোসেন সতর্ক করে বলেন, অনিয়ন্ত্রিত ঋণ বিতরণ, দুর্বল তদারকি এবং প্রভাবশালী ঋণগ্রহীতাদের চাপ মিলিয়ে ব্যাংক খাত ভঙ্গুর অবস্থায় পৌঁছেছে। তিনি বলেন, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার দুর্বলতা, মূলধন ঘাটতি এবং বড় খেলাপিদের প্রতি নরম মনোভাব সংকটকে আরও গভীর করেছে। এখন সাহসী কাঠামোগত পদক্ষেপ ছাড়া পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব নয়।

সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসরুর আরেফিন বলেন, সমস্যাগ্রস্ত ব্যাংকগুলোকে পতনের দিকে ছেড়ে দেওয়া যাবে না। উদীয়মান অর্থনীতিতে একটি ব্যাংকের ধস পুরো ব্যবস্থাকে অস্থিতিশীল করতে পারে। তিনি মূল কারণ হিসেবে ব্যাংকের পর্ষদে অনিয়ম এবং ঋণ প্রদানে অস্বচ্ছতার কথা তুলে ধরেন। দেশের পাঁচটি বড় ব্যাংক এখন সংকটে, আরও ৫-১০টি একই পথে রয়েছে। তবে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকলে ব্যাংকগুলো দ্রুত পুনরুজ্জীবিত হতে পারে।

পিআরআইয়ের মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. আশিকুর রহমান প্রতারণাজনিত ও সাধারণ খেলাপি ঋণ আলাদা করে পরিচালনার জন্য একটি পেশাদার অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি (এএমসি) গঠনের পরামর্শ দেন। তিনি স্ট্রেস টেস্টিং, রিকভারি প্ল্যান, ডিপোজিট ইনস্যুরেন্স এবং রেজল্যুশন ফান্ডকে শক্তিশালী করার ওপর জোর দেন।

পিআরআই প্রেসিডেন্ট ড. জায়েদী সাত্তার সতর্ক করে বলেন, উন্নত অর্থনীতিতে ‘টু বিগ টু ফেইল’ ধারণা প্রচলিত হলেও বাংলাদেশে কিছু ব্যাংক এখন ‘টু টক্সিক টু ফেইল’ পর্যায়ে পৌঁছেছে। এই ব্যাংকের পতন সামগ্রিক অর্থনীতিকে বিপর্যয়ের মুখে ফেলতে পারে। তিনি উল্লেখ করেন, দেশের ৫ শতাংশের বেশি জিডিপি প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে হলে আর্থিক খাতে সুশাসন, জবাবদিহি ও শক্তিশালী নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা অপরিহার্য।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জামায়াতে যোগ দিলেন বিএনপি থেকে পাঁচবার বহিষ্কৃত আখতারুজ্জামান

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি

ব্রিটেনে নাগরিকত্ব হারানোর ঝুঁকিতে কোটি মুসলিম, বেশির ভাগই বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তানের

আজকের রাশিফল: চায়ের বিল না দেওয়া বন্ধুদের সাহায্য করুন, সন্ধ্যার দিকে ভালো খবর

মা-বাবাকে নির্যাতন, ছেলেকে কোমর পর্যন্ত মাটিতে পুঁতে রাখল প্রতিবেশীরা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বাজারে নতুন চাল আলু পেঁয়াজ, দাম কমে ক্রেতার কিছুটা স্বস্তি

  • স্থির রয়েছে ডিম-মুরগির বাজার।
  • পর্যাপ্ত সরবরাহে কমেছে সবজির দাম।
  • চালের দামও কমেছে ২-১ টাকা করে।
  • আমদানির পেঁয়াজের চড়া দামে ক্ষোভ ক্রেতার।
‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১২ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯: ২৭
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

সাধারণত শীতের সময় বাজারে আগাম নতুন আলু উঠলে তার দাম কয়েক সপ্তাহ ধরে শতকের ওপরে থাকে। কিন্তু এবার সবজি বিক্রেতারা কয়েক দিনের মধ্যেই নতুন আলুর দাম ৫০ টাকা কেজিতে নামাতে বাধ্য হয়েছেন। চলতি সপ্তাহে আরও কমে ছোট আকারের আলুর দাম ৩৫ টাকা কেজি পর্যন্ত হয়েছে। বিক্রেতারা বলছেন, অতিরিক্ত মজুতের কারণে পুরোনো আলুর দাম এখন ২৫ টাকার মধ্যেই। তাই বেশি দামের আশায় যাঁরা অপরিপক্ব অবস্থায়ই আগাম আলু বাজারে এনেছেন, তাঁরা হতাশ।

আলুর দাম আশানুরূপ না হলেও সবজিচাষি ও ব্যবসায়ীরা নতুন পেঁয়াজের ভালো দাম পাচ্ছেন। বাজারে খুচরায় নতুন পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা কেজির ওপরে। তবে গত সপ্তাহের তুলনায় দাম কিছুটা কমেছে।

বাজারে আমনের নতুন চালও আসতে শুরু করেছে। এতে চালের দাম এক-দুই টাকা কমেছে চলতি সপ্তাহে। এ ছাড়া সবজি, ডিম, মুরগিসহ অন্যান্য পণ্যের বাজারেও স্বস্তি ফিরে এসেছে।

রাজধানীর শান্তিনগর, মালিবাগ, সেগুনবাগিচা, মানিকনগরসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, আগাম নতুন আলুর সরবরাহ বেশ বেড়েছে। পাশাপাশি পুরোনো আলুও বিক্রি হচ্ছে। নতুন আলু মান অনুসারে ৩৫-৪০ টাকা কেজি আর পুরোনো আলু আগের মতোই ২৫ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।

সেগুনবাগিচা বাজারের সবজি বিক্রেতা মো. মিন্টু বলেন, নতুন আলুর বিক্রি শুরু হয় ১০০-১২০ টাকা কেজিতে। কিন্তু সেই দামে মাত্র কয়েক দিন বিক্রি করা গেছে। এক থেকে দেড় সপ্তাহের মধ্যে দাম কমে ৫০-৬০ টাকায় নেমে আসে। এ সপ্তাহে আরও কমেছে। এবার আলু বিক্রি করে কৃষক, ব্যবসায়ী কেউ খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি।

বাজারে এখন তিন ধরনের পেঁয়াজ পাওয়া যাচ্ছে—দেশি নতুন ও পুরোনো এবং আমদানির পেঁয়াজ। বাজারে নতুন আসা দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১১০-১৩০ টাকা কেজি। তবে পুরোনো দেশি পেঁয়াজ আগের মতোই ১৩০-১৪০ টাকা কেজি। আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়।

বিক্রেতারা বলছেন, আগামী সপ্তাহের মধ্যে নতুন পেঁয়াজের সরবরাহ আরও বাড়বে। তখন দাম ১০০ টাকার নিচে নেমে আসবে।

আমদানির পরও পেঁয়াজের দাম ১০০ টাকার ওপরে থাকায় ক্ষোভ জানিয়েছেন ক্রেতারা। মালিবাগ বাজারে আসা ক্রেতা আহমাদুল্লাহ বলেন, ‘পেঁয়াজের দাম কমাতে আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ভারতে পেঁয়াজের দাম শুনেছি ১০-১২ রুপিতে নেমেছে। সেই পেঁয়াজ দেশে এনে ১২০ টাকায় বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা; যা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। যাঁদের আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, তাঁদের নজরদারিতে রাখা উচিত সরকারের।’

ভোজ্যতেলের দাম গত সপ্তাহেই লিটারপ্রতি ৬-৭ টাকা বেড়েছে। বহুল ব্যবহৃত সয়াবিন তেলের দাম বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৯৫ টাকা লিটার। চিনি, আটা, ময়দা, মসুর ডালসহ অন্যান্য পণ্য বিক্রি হচ্ছে গত সপ্তাহের দামেই।

এদিকে চালের দাম কিছুটা কমেছে। বিক্রেতারা বলছেন, আমনের দু-একটি জাতের চাল বাজারে এসেছে। এর মধ্যে রয়েছে গুটি স্বর্ণা ও পাইজাম। তাতে অন্য চালের দামও কিছুটা নিম্নমুখী। আমদানির চালের সরবরাহও রয়েছে বাজারে।

বিভিন্ন খুচরা বাজারে নাজিরশাইল, শম্পা কাটারি, জিরাশাইল, মিনিকেটসহ সরু চালগুলোর দাম কেজিপ্রতি ২ টাকা পর্যন্ত কমে বিক্রি হচ্ছে ৬৮-৭৮ টাকায়। গত সপ্তাহে ছিল ৭০-৮০ টাকা।

নতুন চালে গুটি স্বর্ণার দাম নেমেছে ৫০-৫৫ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ৫২-৫৬ টাকা কেজি। এ ছাড়া পাইজাম, ব্রি-২৮ ও ব্রি-২৯ বিক্রি হচ্ছে ৫৫-৬০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহ পর্যন্ত ৫৬-৬৩ টাকা ছিল।

মানিকনগর বাজারের চাল বিক্রেতা মরিয়ম স্টোরের স্বত্বাধিকারী মো. ইউসুফ বলেন, ‘চালের সরবরাহ ধীরে ধীরে বাড়ছে। এতে দাম অনেকটাই কমতির দিকে। এ সপ্তাহে এক-দুই টাকা কমেছে অনেক আইটেমে। আশা করছি, সামনের সপ্তাহে আরও কমবে।’

ভোক্তার স্বস্তি ফিরছে সবজিতেও। পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকায় দাম কমতে শুরু করেছে পণ্যটির। খুচরা বাজারে মানভেদে প্রতি কেজি শিম বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকায়। গত সপ্তাহে তা ছিল ৮০ থেকে ১০০ টাকা। গত সপ্তাহের তুলনায় কেজিতে ১০ টাকা কমে বরবটি, বেগুন ও করলা বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকায়। ঢ্যাঁড়স ও পটোল বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকা কেজিতে। ফুল ও বাঁধাকপির দাম আরও কমেছে। মাঝারি আকারের ফুল ও বাঁধাকপি প্রতিটি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকায়।

ডিম ও মুরগির বাজারও স্থিতিশীল। ফার্মের ডিম প্রতি ডজন বিক্রি হচ্ছে ১১৫-১২০ টাকায়। কমেছে মুরগির মাংসের দাম। ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫০-১৬০ টাকার মধ্যে। আর সোনালি মুরগির দাম এখন প্রতি কেজি ২৫০-২৭০ টাকার মধ্যে।

পোলট্রি খাতের ব্যবসায়ীরা বলছেন, শীতে সবজির প্রচুর সরবরাহ থাকলে মুরগি ও ডিমের চাহিদা কিছুটা কমে যায়। এ কারণেই দাম কমেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জামায়াতে যোগ দিলেন বিএনপি থেকে পাঁচবার বহিষ্কৃত আখতারুজ্জামান

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি

ব্রিটেনে নাগরিকত্ব হারানোর ঝুঁকিতে কোটি মুসলিম, বেশির ভাগই বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তানের

আজকের রাশিফল: চায়ের বিল না দেওয়া বন্ধুদের সাহায্য করুন, সন্ধ্যার দিকে ভালো খবর

মা-বাবাকে নির্যাতন, ছেলেকে কোমর পর্যন্ত মাটিতে পুঁতে রাখল প্রতিবেশীরা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত