Ajker Patrika

সরকারি কোম্পানির শেয়ার বাজারে আনতে করণীয় নিয়ে বিআইসিএমের সেমিনার

আপডেট : ০৭ জানুয়ারি ২০২৩, ২০: ২৮
সরকারি কোম্পানির শেয়ার বাজারে আনতে করণীয় নিয়ে বিআইসিএমের সেমিনার

সরকারি কোম্পানিগুলোকে শেয়ার বাজারে আনতে করণীয় নিয়ে সেমিনার করেছে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ক্যাপিটাল মার্কেট (বিআইসিএম)। ‘সরকারি মালিকানার কোম্পানিগুলোর তালিকাভুক্তি: বর্তমান অবস্থা ও করণীয়’ শীর্ষক এই সেমিনার আজ শুক্রবার (৬ জানুয়ারি) বিকেল সাড়ে চারটার দিকে রাজধানীর ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (আইডিইবি) মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিআইসিএমের সহযোগী অধ্যাপক ড. নাছির উদ্দিন। বিআইসিএমের নির্বাহী সভাপতি অধ্যাপক ড. মাহমুদা আক্তারের সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কমিশনার ড. রুমানা ইসলাম।

প্যানেল আলোচক ছিলেন বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মাদ রেজাউল করিম, বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট মো. ছায়েদুর রহমান, দৈনিক প্রথম আলোর বিশেষ প্রতিনিধি ফখরুল ইসলাম।

সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএসইসির কমিশনার ড. রুমানা ইসলাম বলেন, ‘আমাদের দেশের কোম্পানিগুলো কস্ট ও কমপ্লায়েন্সের কারণে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হতে চায় না। তারা চায়, কম আইন মেনে কীভাবে বেশি মুনাফা করা যায়। পুঁজিবাজার খুবই সেনসিটিভ জায়গা। পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বিশেষায়িত জ্ঞান দরকার, আমরা বিনিয়োগকারীদের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করে যাচ্ছি।’

ড. রুমানা ইসলাম আরও বলেন, ‘যেসব বিষয় অর্থনীতিকে প্রভাবিত করে, তা পুঁজিবাজারকেও প্রভাবিত করে। কোভিড-১৯ অতিমারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ যেমন বিশ্বের অর্থনৈতিক পরাশক্তিগুলোকে প্রভাবিত করেছে, তেমনি আমাদের অর্থনীতিকেও প্রভাবিত করেছে। এসব পরিস্থিতি উত্তরণে কিছুটা সময় লাগবে। তারপরও আমাদের দেশের অর্থনীতি এগিয়ে যাচ্ছে।’

আলোচনায় অংশ নিয়ে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মাদ রেজাউল করিম বলেন, ‘বর্তমান কমিশন প্রাতিষ্ঠানিক সুশাসন নিশ্চিতে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। ফলে কোম্পানিগুলোর নন-কমপ্লায়েন্স অনেকাংশে কমেছে। কমিশন কমপ্লায়েন্সের ক্ষেত্রে কোনো ধরনের ছাড় দিচ্ছে না। তবে এ ক্ষেত্রে জনবলস্বল্পতার কারণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে কিছুটা সময় লেগে যাচ্ছে।’

বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট মো. ছায়েদুর রহমান বলেন, ‘সরকারি কোম্পানিগুলো বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যুক্ত থাকার কারণে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা হয়। এ কারণে পুঁজিবাজারে আসতে বেগ পেতে হয়। এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় উদ্যোগী হলে কোম্পানিগুলোও পুঁজিবাজারে আসতে উৎসাহিত হবে।’

মো. ছায়েদুর রহমান আরও বলেন, ‘পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হলে কমপ্লায়েন্স করতে হবে বিধায় অনেক সরকারি কোম্পানি পুঁজিবাজারে আসতে চায় না। তবে সরকারি কোম্পানি পুঁজিবাজারে এলে তাদের কমপ্লায়েন্স বেড়ে যাবে; সেখানে সুশাসন নিশ্চিত হবে। সরকারি কোম্পানিকে পুঁজি সংগ্রহের ক্ষেত্রে ব্যাংক থেকে প্রণোদনা না দিয়ে বরং পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তিতে উৎসাহিত করতে হবে।’

বিআইসিএমের নির্বাহী সভাপতি অধ্যাপক ড. মাহমুদা আক্তার বলেন, ‘সাধারণ মানুষকে সঠিক বিনিয়োগের শিক্ষা দিতে বিআইসিএম নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বিআইসিএম বিনিয়োগকারীদের তাত্ত্বিক জ্ঞানের পাশাপাশি প্রায়োগিক শিক্ষা দিয়ে থাকে। বৃহৎ অর্থায়নের জন্য পুঁজিবাজার অপরিহার্য। সরকারি বৃহৎ কোম্পানি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ করতে পারে।’

অনলাইন বিজনেস নিউজ পোর্টাল অর্থসূচক আয়োজিত তিন দিনব্যাপী ‘ক্যাপিটাল মার্কেট এক্সপো-২০২৩’ শীর্ষক পুঁজিবাজার মেলার দ্বিতীয় দিনে এই সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হঠাৎ পদত্যাগ করলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার

‘মোন্থা’ প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে, আঘাত হানবে কোথায়

দুশ্চিন্তা, হতাশা দূর হবে হাদিসে বর্ণিত এই চার দোয়ায়

গায়ে থুতু পড়া নিয়ে ড্যাফোডিল ও সিটি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের রাতভর সংঘর্ষ, অগ্নিসংযোগ

নির্বাচনে যেতে চায় জাপার একাংশ, কৌশল তুলে ধরবে জাতির সামনে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

অগ্নিকাণ্ডের ক্ষতি পোষাতে শাহজালাল বিমানবন্দরে নিজেরাই গুদাম বানাচ্ছেন পোশাক রপ্তানিকারকেরা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
রাজধানীর শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল। ফাইল ছবি
রাজধানীর শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল। ফাইল ছবি

১৮ অক্টোবর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের আমদানি কার্গো ভিলেজে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের কারণে আমদানি শেডটি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে ব্যবহার অনুপযোগী হওয়ায় পোশাকশিল্পের আমদানি কার্যক্রম সাময়িকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এটি দেশের রপ্তানি কার্যক্রমে প্রভাব ফেলছে। এমন পরিস্থিতিতে রপ্তানি কার্যক্রম নির্বিঘ্ন ও সচল রাখতে নিজেরাই উদ্যোগ নিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।

জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় টার্মিনাল-৩-এ একটি অস্থায়ী গুদাম তৈরি করছে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) এবং বাংলাদেশ নিটওয়্যার প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিকেএমইএ)।

আজ সোমবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় সংগঠন দুটি।

এতে বলা হয়, যৌথ উদ্যোগের অংশ হিসেবে আমদানি করা মূল্যবান কাঁচামাল ও অন্যান্য পণ্যের দ্রুত সুরক্ষার জন্য নবনির্মিত টার্মিনাল-৩-এ (যা বর্তমানে পণ্য সংরক্ষণের জন্য প্রস্তুত নয়) দ্রুততম সময়ের মধ্যে একটি অস্থায়ী সমাধান হিসেবে অস্থায়ী গুদাম (রাব হল) স্থাপন করা হবে। এরই মধ্যে বিজিএমইএ এই ‘রাব হল’ স্থাপনের জন্য একটি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দিয়েছে। স্বল্পতম সময়ের মধ্যে এর বাস্তবায়ন সম্পন্ন হবে।

জানা যায়, ২০ অক্টোবর বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান, বিকেএমইএ সভাপতি মোহাম্মদ হাতেমসহ দুই সংগঠনের জ্যেষ্ঠ নেতারা এবং বাণিজ্য ও বেসরকারি বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন একটি বৈঠকে মিলিত হন। সেই বৈঠকেই কার্গো ভিলেজের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে ও শিল্পের স্বার্থে আমদানি পণ্য সুরক্ষার জন্য উপরোক্ত যৌথ উদ্যোগের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বিজিএমইএ সরকারের সর্বাত্মক সহযোগিতা নিয়ে যেকোনো পরিস্থিতিতে শিল্পের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম নিরবচ্ছিন্ন রাখতে দৃঢ়ভাবে অঙ্গীকারবদ্ধ। এই যৌথ উদ্যোগ আমদানি পণ্যের সুরক্ষায় কার্যকর ভূমিকা রেখে দেশের সামগ্রিক রপ্তানি-বাণিজ্যকে সচল রাখতে গুরুত্বপূর্ণ সহায়তা দেবে বলে বিজিএমইএ বিশ্বাস করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হঠাৎ পদত্যাগ করলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার

‘মোন্থা’ প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে, আঘাত হানবে কোথায়

দুশ্চিন্তা, হতাশা দূর হবে হাদিসে বর্ণিত এই চার দোয়ায়

গায়ে থুতু পড়া নিয়ে ড্যাফোডিল ও সিটি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের রাতভর সংঘর্ষ, অগ্নিসংযোগ

নির্বাচনে যেতে চায় জাপার একাংশ, কৌশল তুলে ধরবে জাতির সামনে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বাইক রাইডারদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও সুস্থতায় কমিউনিটি ওয়েলবিইং রাইড

ফিচার ডেস্ক
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ঢাকার বাইকচালক কমিউনিটিকে সহযোগিতায় বিশেষ এক উদ্যোগ গ্রহণ করেছে ফ্রান্সের পারফরমেন্স লুব্রিকেন্ট ব্র্যান্ড ইএলএফ লুব্রিকেন্টস। তারা সম্প্রতি কমিউনিটি ওয়েলবিইং রাইড আয়োজন করে।

‘ইএলএফ মর্নিং রাইড’ শীর্ষক এ আয়োজন শুরু হয় তেজগাঁওয়ের জাপান পার্টস শোরুম থেকে এবং শেষ হয় ৩০০ ফিটের কাঞ্চন ব্রিজ এলাকায়। এ রাইডে পাঠাও রাইডার, কমিউনিটি রাইডার, গণমাধ্যমকর্মী এবং ইএলএফের ক্রেতারাসহ অন্য অংশীদারেরাও অংশগ্রহণ করেন।

যৌথভাবে এ রাইডের আয়োজন করে রাইড শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম পাঠাও ও ইএলএফ। আয়োজনে মেডিকেল সহায়তা প্রদান করে হেলথকেয়ার পার্টনার আরোগ্য। ঢাকাকে প্রতিদিন যাঁরা সচল রাখেন, তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানানোর পাশাপাশি রাইডারদের নিরাপত্তা ও সার্বিক সুস্থতার ওপর গুরুত্বারোপ করতে এ উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়।

ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

উদ্যোগের অংশ হিসেবে আরোগ্যর সহায়তায় ১০০ পাঠাও রাইডার বিনা খরচে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানোর সুযোগ পান। যার মধ্যে ছিল পাঁচটি মূল মেডিকেল টেস্ট। নিয়মিত চিকিৎসাসেবার বাইরে থাকা রাইডারদের জন্য আয়োজনটি ছিল বিশেষ সুযোগ।

এ উদ্যোগ নিয়ে ইএলএফ বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক দেওয়ান সাজেদুর রহমান বলেন, ‘বাইকচালকেরা এ শহরের যাতায়াত কার্যক্রমের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তাঁদের প্রতি সম্মান জানাতেই আমরা আজ ‘ইএলএফ মর্নিং রাইড’ আয়োজন করেছি। এ উদ্যোগ তাঁদের স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা ও জীবিকার সঙ্গে সম্পর্কিত। পাঠাও রাইডারদের জন্য বিনা মূল্যে স্বাস্থ্য পরীক্ষা আয়োজন করতে পেরে আমরা গর্বিত। এ আয়োজনের মাধ্যমে প্রতিদিন যাঁরা ঢাকাকে সচল রাখেন, তাঁদের পাশে আমরা দাঁড়াতে পেরেছি। এটা শুধু একটি আয়োজনই নয়, এ উদ্যোগ আমাদের ইএলএফ লাইফস্টাইলের অংশ।’

অনুষ্ঠানে রাইডারেরা নিজেদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন, স্বাস্থ্য নিয়ে আলোচনা করেন এবং একে অন্যের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশে সময় কাটান।

ইএলএফ বাংলাদেশের পরিচালক কোসুকে ইয়োশিদা বলেন, ‘এই রাইডের মূল বার্তা হলো কমিউনিটি ও যত্ন। বন্ধুত্বপূর্ণ রাইড ও বিনা মূল্যে স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার মাধ্যমে আমাদের চেষ্টা ছিল নিজেদের নিষ্ঠা ও অঙ্গীকারকে সবার সঙ্গে ভাগাভাগি করে নেওয়া।’

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন টোটাল এনার্জিস বাংলাদেশের কমার্শিয়াল সেলস ডিরেক্টর টেরি হায়াশি। তিনি রাইডে অংশ নেন এবং অংশগ্রহণকারীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হঠাৎ পদত্যাগ করলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার

‘মোন্থা’ প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে, আঘাত হানবে কোথায়

দুশ্চিন্তা, হতাশা দূর হবে হাদিসে বর্ণিত এই চার দোয়ায়

গায়ে থুতু পড়া নিয়ে ড্যাফোডিল ও সিটি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের রাতভর সংঘর্ষ, অগ্নিসংযোগ

নির্বাচনে যেতে চায় জাপার একাংশ, কৌশল তুলে ধরবে জাতির সামনে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ডলারের মান বৃদ্ধি ও চীন-যুক্তরাষ্ট্র উত্তেজনা প্রশমনের দিনে কমল সোনার দাম

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৭ অক্টোবর ২০২৫, ১৫: ১৩
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

বৈশ্বিক লেনদেনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম ও মার্কিন মুদ্রা ডলারের মান শক্তিশালী হয়েছে এবং চীন-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে উত্তেজনা থিতিয়ে আসতে শুরু করেছে। এরই প্রেক্ষাপটে আন্তর্জাতিক বাজারে সোনার দাম কিছুটা কমেছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আজ সোমবার আন্তর্জাতিক বাজারে স্বর্ণের দাম কমেছে। ডলারের মান শক্তিশালী হওয়া এবং যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্য উত্তেজনা কিছুটা কমে আসার ইঙ্গিত মেলার কারণে নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে পরিচিত ধাতুটির চাহিদা কমে গেছে। এদিকে সপ্তাহের শেষভাগে বিশ্বের বড় কয়েকটি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিনির্ধারণী বৈঠককে ঘিরে দিকনির্দেশনার অপেক্ষায় রয়েছে বিনিয়োগকারীরা।

গ্রিনউইচ মান সময় সকাল ৬টা ৫৫ মিনিট পর্যন্ত স্পট গোল্ড, অর্থাৎ তাৎক্ষণিকভাবে যেসব সোনা বিক্রি হবে তার দাম দশমিক ৮ শতাংশ কমে আউন্সপ্রতি ৪ হাজার ৭৭ দশমিক ১১ ডলারে দাঁড়ায়। ফিউচার গোল্ড, অর্থাৎ অদূর ভবিষ্যতে যেসব সোনা সরবরাহ করা হবে কিন্তু ক্রয়-বিক্রয় এখনই সম্পন্ন হবে—সেগুলোর দামও কিছুটা কমেছে। আগামী ডিসেম্বর সরবরাহের জন্য সোনার দাম ১ দশমিক ১ শতাংশ কমে আউন্সপ্রতি ৪ হাজার ৯০ দশমিক ৯০ ডলারে দাঁড়িয়েছে।

ডলারের মান জাপানি মুদ্রা ইয়েনের বিপরীতে দুই সপ্তাহেরও বেশি সময়ের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে উঠে গেছে, ফলে অন্য মুদ্রাধারীদের জন্য স্বর্ণ আরও ব্যয়বহুল হয়ে পড়েছে।

এদিকে, গতকাল রোববার যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের শীর্ষ অর্থনৈতিক কর্মকর্তারা এক বৈঠকে সম্ভাব্য বাণিজ্য চুক্তির একটি খসড়া কাঠামো নিয়ে ঐকমত্যে পৌঁছেছেন। চলতি সপ্তাহের শেষের দিকে বা আগামী সপ্তাহের শুরুর দিকে এ চুক্তি নিয়ে শেষ সিদ্ধান্ত নেবেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং।

ক্যাপিটাল ডটকমের বিশ্লেষক কাইল রডা বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র-চীনের সম্ভাব্য এই বাণিজ্য চুক্তির খবরটা বেশ আকস্মিকভাবে এসেছে, তবে বাজারের জন্য এটি এক ইতিবাচক চমক। তবে এর উল্টো দিক হলো, এই পরিস্থিতি সোনার বাজারের জন্য নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাজার এখন কিছুটা স্থিতিশীল অবস্থায় ফিরে এসেছে এবং বিনিয়োগকারীদের মনোভাবও স্বাভাবিক হচ্ছে। ভবিষ্যতে শিথিল আর্থিক ও মুদ্রানীতি অব্যাহত থাকবে—এই প্রত্যাশাই স্বর্ণকে এখনো টিকিয়ে রেখেছে। যদি সেটি বজায় থাকে, স্বর্ণের ঊর্ধ্বমুখী ধারা অব্যাহত থাকবে।’

ফেডারেল রিজার্ভের এই সপ্তাহের বৈঠকে সুদহার এক-চতুর্থাংশ শতাংশ কমানোর সম্ভাবনাই সবচেয়ে প্রবল। শুক্রবার প্রকাশিত প্রত্যাশার চেয়ে দুর্বল মুদ্রাস্ফীতি প্রতিবেদনের পর এ অনুমান আরও জোরদার হয়েছে। তবে এই হার কমানো বাজারে আগেই মূল্যায়িত হয়েছে। এখন বিনিয়োগকারীরা ফেড চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েলের ভবিষ্যৎমুখী মন্তব্যের দিকেই তাকিয়ে আছেন।

সুদবিহীন সম্পদ হিসেবে স্বর্ণ সাধারণত নিম্ন সুদের পরিবেশে লাভবান হয়। বিশ্বের সবচেয়ে বড় স্বর্ণ এক্সচেঞ্জ—ট্রেডেড ফান্ড (ইটিএফ) এসপিডিআর গোল্ড ট্রাস্ট জানিয়েছে, শুক্রবার এর মজুত ১ হাজার ৫২ দশমিক ৩৭ টন থেকে কমে ১ হাজার ৪৬ দশমিক ৯৩ টনে নেমেছে, অর্থাৎ দশমিক ৫২ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।

অন্যদিকে, স্পট সিলভারের দাম দশমিক ৬ শতাংশ কমে আউন্সপ্রতি ৪৮ দশমিক ৩১ ডলার হয়। প্লাটিনামের দাম দশমিক ৭ শতাংশ বেড়ে আউন্সপ্রতি ১ হাজার ৬১৬ দশমিক ৩০ ডলারে দাঁড়িয়েছে। প্যালাডিয়ামের দাম দশমিক ৫ শতাংশ বেড়ে আউন্সপ্রতি ১ হাজার ৪৩৫ দশমিক ৭৫ ডলারে উঠেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হঠাৎ পদত্যাগ করলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার

‘মোন্থা’ প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে, আঘাত হানবে কোথায়

দুশ্চিন্তা, হতাশা দূর হবে হাদিসে বর্ণিত এই চার দোয়ায়

গায়ে থুতু পড়া নিয়ে ড্যাফোডিল ও সিটি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের রাতভর সংঘর্ষ, অগ্নিসংযোগ

নির্বাচনে যেতে চায় জাপার একাংশ, কৌশল তুলে ধরবে জাতির সামনে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গ্যাস অনুসন্ধান ও উৎপাদন: দুই বড় প্রকল্পে সরকারের ব্যয় হবে ২,১৩২ কোটি

  • ‘২০০০ হর্স পাওয়ার রিগ ক্রয়’ প্রকল্প।
  • চারটি মূল্যায়ন ও উন্নয়ন কূপসহ শাহবাজপুর নর্থ-ইস্ট-১ অনুসন্ধান কূপ প্রকল্প।
  • লক্ষ্য দেশে গ্যাস অনুসন্ধান ও উৎপাদন বৃদ্ধি।
  • দেশে গ্যাসের দৈনিক চাহিদা প্রায় ৪ হাজার মিলিয়ন ঘনফুট।
  • সরবরাহ হচ্ছে সর্বোচ্চ ২ হাজার ৭০০ মিলিয়ন ঘনফুট।
মাহফুজুল ইসলাম, ঢাকা
আপডেট : ২৭ অক্টোবর ২০২৫, ১৮: ২৪
গ্যাস অনুসন্ধান ও উৎপাদন: দুই বড় প্রকল্পে সরকারের ব্যয় হবে ২,১৩২ কোটি

দেশে গ্যাস অনুসন্ধান ও উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকার বাপেক্সের সক্ষমতা বাড়াতে দুটি বড় প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এর মধ্যে একটি হলো ‘২০০০ হর্স পাওয়ার রিগ ক্রয়’ এবং অন্যটি চারটি মূল্যায়ন ও উন্নয়ন কূপসহ শাহবাজপুর নর্থ-ইস্ট-১ অনুসন্ধান কূপ। দুটি প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য মোট বাজেট ধরা হয়েছে ২ হাজার ১৩২ কোটি টাকা।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবিত এই প্রকল্পগুলো ইতিমধ্যে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) সভায় অনুমোদন পেয়েছে। মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, দেশে গ্যাসের দৈনিক চাহিদা প্রায় ৩ হাজার ৮০০ থেকে ৪ হাজার মিলিয়ন ঘনফুট, কিন্তু সরবরাহ করা হচ্ছে সর্বোচ্চ ২ হাজার ৭০০ মিলিয়ন ঘনফুট। এ ব্যবধানের কারণে শিল্প, বিদ্যুৎকেন্দ্র ও গৃহস্থালি ব্যবহারকারীরা প্রায়ই সংকটে পড়ছেন।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে দেশের গ্যাস অনুসন্ধান ও উৎপাদনে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক মো. শামসুল আলম আজকের পত্রিকা'কে বলেন, ‘প্রকল্প নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু সেগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন নিশ্চিত করার দিকেও মনোযোগী হওয়া উচিত। আগে দেখা গেছে, প্রকল্প শুরু হলেও সময়মতো শেষ হয় না। এমনটি যেন আর না ঘটে। তবে এর জন্য পরিকল্পনা কমিশন ও জ্বালানি বিভাগের আরও সক্রিয় নজরদারি জরুরি।’

২০০০ হর্স পাওয়ার রিগ ক্রয় প্রকল্প

প্রথম প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৭৭ কোটি ২৩ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকার দেবে ৫২০ কোটি, বাপেক্স নিজস্ব অর্থায়ন করবে ৫৭ কোটি ২৩ লাখ টাকা। প্রকল্পের মেয়াদ শুরু হয়েছে চলতি বছরের জুলাই থেকে, যার বাস্তবায়নের সময়সীমা ২০২৭ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। এই রিগ কেনার মাধ্যমে বাপেক্স নতুন গ্যাস কূপ খননের সক্ষমতা বাড়াবে। বর্তমানে পুরোনো রিগের কারণে খনন কার্যক্রমে নানা ধরনের জটিলতা তৈরি হয়। এ ধরনের প্রতিবন্ধকতা দূরীকরণের জন্যই নতুন প্রকল্প।

ভোলা ও শাহবাজপুরে পাঁচটি কূপ খনন

দ্বিতীয় প্রকল্পের আওতায় ভোলা অঞ্চলে চারটি মূল্যায়ন ও উন্নয়ন কূপ (শাহবাজপুর-৫ ও ৭, ভোলা নর্থ-৩ ও ৪) এবং একটি অনুসন্ধান কূপ (শাহবাজপুর নর্থ-ইস্ট-১) খনন করা হবে। এ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৫৫৫ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। এ ক্ষেত্রে সরকার দেবে ১ হাজার ২৪৪ কোটি ৮০ লাখ, আর বাপেক্সের নিজস্ব অর্থায়ন ৩১০ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৮ সালের জুন পর্যন্ত।

পরিকল্পনা কমিশনের নথি অনুযায়ী, কূপ খননের পাশাপাশি সংযোগ সড়ক নির্মাণ, কূপ পরীক্ষণ, উন্নয়নমূলক কাজ, সিমুলেশন সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যার ক্রয়সহ অন্যান্য কার্যক্রম সম্পন্ন হবে। বাপেক্সের এমডি প্রকৌশলী মো. ফজলুল হক জানান, কূপগুলোর মাধ্যমে নতুন গ্যাসের মজুত আবিষ্কারের সম্ভাবনা রয়েছে। পরীক্ষণ সফল হলে জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ বাড়ানো সম্ভব হবে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে গ্যাস আমদানির ওপর নির্ভরতা কমবে। ভোলা অঞ্চলের নতুন গ্যাসক্ষেত্র বাণিজ্যিকভাবে কাজে লাগানো সম্ভব হবে।’

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, ২০২৫-২৬ অর্থবছরে এই দুটি প্রকল্পের পাশাপাশি সিলেটে ১২নং কূপ খনন এবং হবিগঞ্জ, বাখরাবাদ ও মেঘনা ফিল্ডে ৩ডি সাইসমিক জরিপের জন্য অর্থ বরাদ্দ রাখা হয়েছে। যদিও প্রকল্পগুলো শুরু হওয়ার কথা চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে, তবে এখনো তা একনেক সভায় আনুষ্ঠানিক অনুমোদন পায়নি।

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হঠাৎ পদত্যাগ করলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার

‘মোন্থা’ প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে, আঘাত হানবে কোথায়

দুশ্চিন্তা, হতাশা দূর হবে হাদিসে বর্ণিত এই চার দোয়ায়

গায়ে থুতু পড়া নিয়ে ড্যাফোডিল ও সিটি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের রাতভর সংঘর্ষ, অগ্নিসংযোগ

নির্বাচনে যেতে চায় জাপার একাংশ, কৌশল তুলে ধরবে জাতির সামনে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত