আজকের পত্রিকা ডেস্ক

দেশের চলমান অর্থনৈতিক সংকট ও ভঙ্গুর অবস্থার মূলে রয়েছে স্বেচ্ছাচারী রাজনীতি। স্বৈরাচারী রাজনীতির অবশ্যম্ভাবী পরিণতি হচ্ছে আজকের বিকলাঙ্গ অর্থনীতি। এর পেছনে ছিলেন রাজনীতিবিদ, আমলা এবং ব্যবসায়ীদের নেক্সাস। তারা মেগা প্রকল্পে মেগা চুরির মাধ্যমে নিজেদের পকেট ভরেছে। একই সঙ্গে ওই নেক্সাস একটি সংস্কারবিরোধী জোট গঠন করেছিল, যারা নিজেদের স্বার্থে সংস্কারকে বিভিন্ন সময় বাধাগ্রস্ত করেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার অর্থনৈতিক সাংবাদিকদের সংগঠন ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) সঙ্গে শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির মতবিনিময় সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে পরিকল্পনা কমিশনের নাজিয়া-সালমা সম্মেলনকক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান ও বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপিডির বিশেষ ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, দেশের অর্থনৈতিক সংকটের মূলে রয়েছে রাজনৈতিক বিবেচনায় গ্রহণ করা মেগা প্রকল্প, যা বাস্তবায়নে মেগা চুরি হয়েছে।
বিগত সরকারের সময়ে অনাচারী অর্থনীতিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার জন্য স্বেচ্ছাচারী অর্থনীতি সৃষ্টি করা হয়েছিল জানিয়ে দেবপ্রিয় বলেন, অনাচারী অর্থনীতির প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর মধ্যে উর্দি ছাড়া ও উর্দি পরা উভয় আমলারা, রাজনীতিবিদ এবং ব্যবসায়ী গোষ্ঠী যুক্ত ছিল। এই তিন মিলে প্রতিষ্ঠানগুলোকে কুক্ষিগত করেছিল।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য আরও বলেন, দেশের চার খাতে সবচেয়ে বড় দুর্নীতি হয়েছে। এগুলো হলো ব্যাংক, জ্বালানি, ভৌত অবকাঠামো এবং আইসিটি খাত। এসব খাতের প্রকল্পগুলোয় অতিমূল্যায়ন, অনিয়ম, অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প তৈরি এবং বড় বড় চুরির ঘটনা ঘটেছে।
ব্যাংক, জ্বালানি, ভৌত অবকাঠামো এবং আইসিটি খাতে সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি হয়েছে। ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান
শ্বেতপত্র কমিটির সদস্য ও বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সানেমের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ড. সেলিম রায়হান বলেন, ‘যেকোনো সরকারের ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য তার রাজনৈতিক বৈধতা দরকার। সবচেয়ে ত্রুটিপূর্ণ নির্বাচন হয় ২০১৪ সালে। ১৫৫টি আসনে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়নি। এতে রাজনৈতিক বৈধতার বড় ধরনের সংকট তৈরি হয়। তখনই উন্নয়নের বয়ান আরও শক্তিশালীভাবে আমরা শুনতে পেলাম।’ তিনি বলেন, ‘উন্নয়নের বয়ান বা উন্নয়ন বৈধতার চেষ্টায় ক্রনি ক্যাপিটালিজমের (চামচা পুঁজিবাদ) একটা বড় রকমের উল্লম্ফন হয়। এর কেন্দ্রে ছিলেন ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক এলিট। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আমলাদের একটা অংশ। আমলা বলতে সামরিক, বেসামরিক দুই আমলাই। সঙ্গে ব্যবসায়ীদের একটা অংশ। তারা মিলে একটা অ্যালায়েন্স তৈরি করেছিল, সেই জোট এই উন্নয়ন বয়ানকে স্থায়ী রূপ দেওয়ার চেষ্টা করেছে। তারা প্রতি পদে পদে সংস্কারের ক্ষেত্রে বাধা দিয়েছে।’
শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির সদস্য ও বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন বলেন, ‘ইদানীং তথ্য সাজানোর ব্যাপারটা লক্ষ করা গেছে। তবে সেটা সুনির্দিষ্টভাবে বলা সম্ভব নয়। তবে আমরা হয়তো একটা ধারণা দিতে পারব।’
কমিটির সদস্য ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক ম. তামিম বলেন, বেশির ভাগ দুর্নীতি হয়েছে প্রকল্পভিত্তিক। প্রকল্প দীর্ঘায়িত করা হয়েছে। প্রকল্পের পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে। দিনের পর দিন এটা করা হয়েছে। যত বড় প্রকল্প, তত বেশি চুরি।
গত ১৫ বছরে প্রকল্পে যেসব দুর্নীতি হয়েছে, সেগুলো প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের বাইরে হয়নি।অধ্যাপক ম তামিম, শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির সদস্য
ম. তামিম আরও বলেন, পলিটিক্যাল কানেকশন ছাড়া কিছুই হয়নি। এগুলো সবই হয়েছে পিএমও অফিসে। ক্ষমতা কেন্দ্রীকরণের এমন পর্যায়ে গিয়েছিল যে রাষ্ট্রের এমন কোনো ক্ষেত্রে নেই, যেটা প্রধানমন্ত্রীর অফিসের অনুমোদন ছাড়া হয়েছে।
কমিটির সদস্য ও সিপিডির বিশেষ ফেলো অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, মেগা প্রকল্পের প্রথম কথা হলো অস্বচ্ছ। কেউ ডিপিপি (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা) দেখেননি, রিভাইজড ডিপিপি দেখেননি, কেউ ফিজিবিলিটি দেখেননি। অথচ এসব প্রকল্পে হাজার হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ রয়েছে, যা জনগণের টাকা, করদাতাদের টাকা।
ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজনেস অনুষদের ডিন এ কে এনামুল হক বলেন, আইএমইডির (বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ) এবং মহাহিসাব নিরীক্ষকের প্রতিবেদনে লাখ লাখ কোটি টাকার আপত্তি আছে। এতগুলো প্রতিবেদন আসার পরেও দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কোনো অ্যাকশন নেয়নি।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ আবু ইউসুফ বলেন, করজাল বাড়ানোর জন্য যে উদ্যোগ দরকার, সেগুলো এনবিআরের হাতে নেই। এটা অর্থ বিভাগ বা সরকারের হাতে। ভ্যাট ও ট্যাক্স মিলিয়ে সরকার থেকে ৬ শতাংশের মতো করছাড় (এক্সেম্পশন) আছে। কিন্তু এনবিআরের হাতে কোনো ক্ষমতা নেই। তারা জানতেও পারে না, কোন জায়গায় ছাড় দেওয়া হচ্ছে।
কমিটির সদস্য ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক শরমিন্দ নীলোর্মি বলেন, ‘স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে যে বিনিয়োগ, অবকাঠামো তৈরি হয়েছে, সেগুলো অনেক বছর ধরে নিয়ে যেতে হবে। ফলে সামনে কীভাবে এসব আরও উন্নত করতে পারব, সে জায়গাতে দৃষ্টি দেওয়া দরকার।’

দেশের চলমান অর্থনৈতিক সংকট ও ভঙ্গুর অবস্থার মূলে রয়েছে স্বেচ্ছাচারী রাজনীতি। স্বৈরাচারী রাজনীতির অবশ্যম্ভাবী পরিণতি হচ্ছে আজকের বিকলাঙ্গ অর্থনীতি। এর পেছনে ছিলেন রাজনীতিবিদ, আমলা এবং ব্যবসায়ীদের নেক্সাস। তারা মেগা প্রকল্পে মেগা চুরির মাধ্যমে নিজেদের পকেট ভরেছে। একই সঙ্গে ওই নেক্সাস একটি সংস্কারবিরোধী জোট গঠন করেছিল, যারা নিজেদের স্বার্থে সংস্কারকে বিভিন্ন সময় বাধাগ্রস্ত করেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার অর্থনৈতিক সাংবাদিকদের সংগঠন ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) সঙ্গে শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির মতবিনিময় সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে পরিকল্পনা কমিশনের নাজিয়া-সালমা সম্মেলনকক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান ও বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপিডির বিশেষ ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, দেশের অর্থনৈতিক সংকটের মূলে রয়েছে রাজনৈতিক বিবেচনায় গ্রহণ করা মেগা প্রকল্প, যা বাস্তবায়নে মেগা চুরি হয়েছে।
বিগত সরকারের সময়ে অনাচারী অর্থনীতিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার জন্য স্বেচ্ছাচারী অর্থনীতি সৃষ্টি করা হয়েছিল জানিয়ে দেবপ্রিয় বলেন, অনাচারী অর্থনীতির প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর মধ্যে উর্দি ছাড়া ও উর্দি পরা উভয় আমলারা, রাজনীতিবিদ এবং ব্যবসায়ী গোষ্ঠী যুক্ত ছিল। এই তিন মিলে প্রতিষ্ঠানগুলোকে কুক্ষিগত করেছিল।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য আরও বলেন, দেশের চার খাতে সবচেয়ে বড় দুর্নীতি হয়েছে। এগুলো হলো ব্যাংক, জ্বালানি, ভৌত অবকাঠামো এবং আইসিটি খাত। এসব খাতের প্রকল্পগুলোয় অতিমূল্যায়ন, অনিয়ম, অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প তৈরি এবং বড় বড় চুরির ঘটনা ঘটেছে।
ব্যাংক, জ্বালানি, ভৌত অবকাঠামো এবং আইসিটি খাতে সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি হয়েছে। ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান
শ্বেতপত্র কমিটির সদস্য ও বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সানেমের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ড. সেলিম রায়হান বলেন, ‘যেকোনো সরকারের ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য তার রাজনৈতিক বৈধতা দরকার। সবচেয়ে ত্রুটিপূর্ণ নির্বাচন হয় ২০১৪ সালে। ১৫৫টি আসনে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়নি। এতে রাজনৈতিক বৈধতার বড় ধরনের সংকট তৈরি হয়। তখনই উন্নয়নের বয়ান আরও শক্তিশালীভাবে আমরা শুনতে পেলাম।’ তিনি বলেন, ‘উন্নয়নের বয়ান বা উন্নয়ন বৈধতার চেষ্টায় ক্রনি ক্যাপিটালিজমের (চামচা পুঁজিবাদ) একটা বড় রকমের উল্লম্ফন হয়। এর কেন্দ্রে ছিলেন ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক এলিট। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আমলাদের একটা অংশ। আমলা বলতে সামরিক, বেসামরিক দুই আমলাই। সঙ্গে ব্যবসায়ীদের একটা অংশ। তারা মিলে একটা অ্যালায়েন্স তৈরি করেছিল, সেই জোট এই উন্নয়ন বয়ানকে স্থায়ী রূপ দেওয়ার চেষ্টা করেছে। তারা প্রতি পদে পদে সংস্কারের ক্ষেত্রে বাধা দিয়েছে।’
শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির সদস্য ও বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন বলেন, ‘ইদানীং তথ্য সাজানোর ব্যাপারটা লক্ষ করা গেছে। তবে সেটা সুনির্দিষ্টভাবে বলা সম্ভব নয়। তবে আমরা হয়তো একটা ধারণা দিতে পারব।’
কমিটির সদস্য ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক ম. তামিম বলেন, বেশির ভাগ দুর্নীতি হয়েছে প্রকল্পভিত্তিক। প্রকল্প দীর্ঘায়িত করা হয়েছে। প্রকল্পের পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে। দিনের পর দিন এটা করা হয়েছে। যত বড় প্রকল্প, তত বেশি চুরি।
গত ১৫ বছরে প্রকল্পে যেসব দুর্নীতি হয়েছে, সেগুলো প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের বাইরে হয়নি।অধ্যাপক ম তামিম, শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির সদস্য
ম. তামিম আরও বলেন, পলিটিক্যাল কানেকশন ছাড়া কিছুই হয়নি। এগুলো সবই হয়েছে পিএমও অফিসে। ক্ষমতা কেন্দ্রীকরণের এমন পর্যায়ে গিয়েছিল যে রাষ্ট্রের এমন কোনো ক্ষেত্রে নেই, যেটা প্রধানমন্ত্রীর অফিসের অনুমোদন ছাড়া হয়েছে।
কমিটির সদস্য ও সিপিডির বিশেষ ফেলো অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, মেগা প্রকল্পের প্রথম কথা হলো অস্বচ্ছ। কেউ ডিপিপি (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা) দেখেননি, রিভাইজড ডিপিপি দেখেননি, কেউ ফিজিবিলিটি দেখেননি। অথচ এসব প্রকল্পে হাজার হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ রয়েছে, যা জনগণের টাকা, করদাতাদের টাকা।
ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজনেস অনুষদের ডিন এ কে এনামুল হক বলেন, আইএমইডির (বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ) এবং মহাহিসাব নিরীক্ষকের প্রতিবেদনে লাখ লাখ কোটি টাকার আপত্তি আছে। এতগুলো প্রতিবেদন আসার পরেও দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কোনো অ্যাকশন নেয়নি।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ আবু ইউসুফ বলেন, করজাল বাড়ানোর জন্য যে উদ্যোগ দরকার, সেগুলো এনবিআরের হাতে নেই। এটা অর্থ বিভাগ বা সরকারের হাতে। ভ্যাট ও ট্যাক্স মিলিয়ে সরকার থেকে ৬ শতাংশের মতো করছাড় (এক্সেম্পশন) আছে। কিন্তু এনবিআরের হাতে কোনো ক্ষমতা নেই। তারা জানতেও পারে না, কোন জায়গায় ছাড় দেওয়া হচ্ছে।
কমিটির সদস্য ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক শরমিন্দ নীলোর্মি বলেন, ‘স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে যে বিনিয়োগ, অবকাঠামো তৈরি হয়েছে, সেগুলো অনেক বছর ধরে নিয়ে যেতে হবে। ফলে সামনে কীভাবে এসব আরও উন্নত করতে পারব, সে জায়গাতে দৃষ্টি দেওয়া দরকার।’
আজকের পত্রিকা ডেস্ক

দেশের চলমান অর্থনৈতিক সংকট ও ভঙ্গুর অবস্থার মূলে রয়েছে স্বেচ্ছাচারী রাজনীতি। স্বৈরাচারী রাজনীতির অবশ্যম্ভাবী পরিণতি হচ্ছে আজকের বিকলাঙ্গ অর্থনীতি। এর পেছনে ছিলেন রাজনীতিবিদ, আমলা এবং ব্যবসায়ীদের নেক্সাস। তারা মেগা প্রকল্পে মেগা চুরির মাধ্যমে নিজেদের পকেট ভরেছে। একই সঙ্গে ওই নেক্সাস একটি সংস্কারবিরোধী জোট গঠন করেছিল, যারা নিজেদের স্বার্থে সংস্কারকে বিভিন্ন সময় বাধাগ্রস্ত করেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার অর্থনৈতিক সাংবাদিকদের সংগঠন ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) সঙ্গে শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির মতবিনিময় সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে পরিকল্পনা কমিশনের নাজিয়া-সালমা সম্মেলনকক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান ও বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপিডির বিশেষ ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, দেশের অর্থনৈতিক সংকটের মূলে রয়েছে রাজনৈতিক বিবেচনায় গ্রহণ করা মেগা প্রকল্প, যা বাস্তবায়নে মেগা চুরি হয়েছে।
বিগত সরকারের সময়ে অনাচারী অর্থনীতিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার জন্য স্বেচ্ছাচারী অর্থনীতি সৃষ্টি করা হয়েছিল জানিয়ে দেবপ্রিয় বলেন, অনাচারী অর্থনীতির প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর মধ্যে উর্দি ছাড়া ও উর্দি পরা উভয় আমলারা, রাজনীতিবিদ এবং ব্যবসায়ী গোষ্ঠী যুক্ত ছিল। এই তিন মিলে প্রতিষ্ঠানগুলোকে কুক্ষিগত করেছিল।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য আরও বলেন, দেশের চার খাতে সবচেয়ে বড় দুর্নীতি হয়েছে। এগুলো হলো ব্যাংক, জ্বালানি, ভৌত অবকাঠামো এবং আইসিটি খাত। এসব খাতের প্রকল্পগুলোয় অতিমূল্যায়ন, অনিয়ম, অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প তৈরি এবং বড় বড় চুরির ঘটনা ঘটেছে।
ব্যাংক, জ্বালানি, ভৌত অবকাঠামো এবং আইসিটি খাতে সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি হয়েছে। ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান
শ্বেতপত্র কমিটির সদস্য ও বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সানেমের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ড. সেলিম রায়হান বলেন, ‘যেকোনো সরকারের ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য তার রাজনৈতিক বৈধতা দরকার। সবচেয়ে ত্রুটিপূর্ণ নির্বাচন হয় ২০১৪ সালে। ১৫৫টি আসনে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়নি। এতে রাজনৈতিক বৈধতার বড় ধরনের সংকট তৈরি হয়। তখনই উন্নয়নের বয়ান আরও শক্তিশালীভাবে আমরা শুনতে পেলাম।’ তিনি বলেন, ‘উন্নয়নের বয়ান বা উন্নয়ন বৈধতার চেষ্টায় ক্রনি ক্যাপিটালিজমের (চামচা পুঁজিবাদ) একটা বড় রকমের উল্লম্ফন হয়। এর কেন্দ্রে ছিলেন ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক এলিট। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আমলাদের একটা অংশ। আমলা বলতে সামরিক, বেসামরিক দুই আমলাই। সঙ্গে ব্যবসায়ীদের একটা অংশ। তারা মিলে একটা অ্যালায়েন্স তৈরি করেছিল, সেই জোট এই উন্নয়ন বয়ানকে স্থায়ী রূপ দেওয়ার চেষ্টা করেছে। তারা প্রতি পদে পদে সংস্কারের ক্ষেত্রে বাধা দিয়েছে।’
শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির সদস্য ও বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন বলেন, ‘ইদানীং তথ্য সাজানোর ব্যাপারটা লক্ষ করা গেছে। তবে সেটা সুনির্দিষ্টভাবে বলা সম্ভব নয়। তবে আমরা হয়তো একটা ধারণা দিতে পারব।’
কমিটির সদস্য ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক ম. তামিম বলেন, বেশির ভাগ দুর্নীতি হয়েছে প্রকল্পভিত্তিক। প্রকল্প দীর্ঘায়িত করা হয়েছে। প্রকল্পের পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে। দিনের পর দিন এটা করা হয়েছে। যত বড় প্রকল্প, তত বেশি চুরি।
গত ১৫ বছরে প্রকল্পে যেসব দুর্নীতি হয়েছে, সেগুলো প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের বাইরে হয়নি।অধ্যাপক ম তামিম, শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির সদস্য
ম. তামিম আরও বলেন, পলিটিক্যাল কানেকশন ছাড়া কিছুই হয়নি। এগুলো সবই হয়েছে পিএমও অফিসে। ক্ষমতা কেন্দ্রীকরণের এমন পর্যায়ে গিয়েছিল যে রাষ্ট্রের এমন কোনো ক্ষেত্রে নেই, যেটা প্রধানমন্ত্রীর অফিসের অনুমোদন ছাড়া হয়েছে।
কমিটির সদস্য ও সিপিডির বিশেষ ফেলো অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, মেগা প্রকল্পের প্রথম কথা হলো অস্বচ্ছ। কেউ ডিপিপি (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা) দেখেননি, রিভাইজড ডিপিপি দেখেননি, কেউ ফিজিবিলিটি দেখেননি। অথচ এসব প্রকল্পে হাজার হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ রয়েছে, যা জনগণের টাকা, করদাতাদের টাকা।
ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজনেস অনুষদের ডিন এ কে এনামুল হক বলেন, আইএমইডির (বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ) এবং মহাহিসাব নিরীক্ষকের প্রতিবেদনে লাখ লাখ কোটি টাকার আপত্তি আছে। এতগুলো প্রতিবেদন আসার পরেও দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কোনো অ্যাকশন নেয়নি।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ আবু ইউসুফ বলেন, করজাল বাড়ানোর জন্য যে উদ্যোগ দরকার, সেগুলো এনবিআরের হাতে নেই। এটা অর্থ বিভাগ বা সরকারের হাতে। ভ্যাট ও ট্যাক্স মিলিয়ে সরকার থেকে ৬ শতাংশের মতো করছাড় (এক্সেম্পশন) আছে। কিন্তু এনবিআরের হাতে কোনো ক্ষমতা নেই। তারা জানতেও পারে না, কোন জায়গায় ছাড় দেওয়া হচ্ছে।
কমিটির সদস্য ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক শরমিন্দ নীলোর্মি বলেন, ‘স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে যে বিনিয়োগ, অবকাঠামো তৈরি হয়েছে, সেগুলো অনেক বছর ধরে নিয়ে যেতে হবে। ফলে সামনে কীভাবে এসব আরও উন্নত করতে পারব, সে জায়গাতে দৃষ্টি দেওয়া দরকার।’

দেশের চলমান অর্থনৈতিক সংকট ও ভঙ্গুর অবস্থার মূলে রয়েছে স্বেচ্ছাচারী রাজনীতি। স্বৈরাচারী রাজনীতির অবশ্যম্ভাবী পরিণতি হচ্ছে আজকের বিকলাঙ্গ অর্থনীতি। এর পেছনে ছিলেন রাজনীতিবিদ, আমলা এবং ব্যবসায়ীদের নেক্সাস। তারা মেগা প্রকল্পে মেগা চুরির মাধ্যমে নিজেদের পকেট ভরেছে। একই সঙ্গে ওই নেক্সাস একটি সংস্কারবিরোধী জোট গঠন করেছিল, যারা নিজেদের স্বার্থে সংস্কারকে বিভিন্ন সময় বাধাগ্রস্ত করেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার অর্থনৈতিক সাংবাদিকদের সংগঠন ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) সঙ্গে শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির মতবিনিময় সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে পরিকল্পনা কমিশনের নাজিয়া-সালমা সম্মেলনকক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান ও বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপিডির বিশেষ ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, দেশের অর্থনৈতিক সংকটের মূলে রয়েছে রাজনৈতিক বিবেচনায় গ্রহণ করা মেগা প্রকল্প, যা বাস্তবায়নে মেগা চুরি হয়েছে।
বিগত সরকারের সময়ে অনাচারী অর্থনীতিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার জন্য স্বেচ্ছাচারী অর্থনীতি সৃষ্টি করা হয়েছিল জানিয়ে দেবপ্রিয় বলেন, অনাচারী অর্থনীতির প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর মধ্যে উর্দি ছাড়া ও উর্দি পরা উভয় আমলারা, রাজনীতিবিদ এবং ব্যবসায়ী গোষ্ঠী যুক্ত ছিল। এই তিন মিলে প্রতিষ্ঠানগুলোকে কুক্ষিগত করেছিল।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য আরও বলেন, দেশের চার খাতে সবচেয়ে বড় দুর্নীতি হয়েছে। এগুলো হলো ব্যাংক, জ্বালানি, ভৌত অবকাঠামো এবং আইসিটি খাত। এসব খাতের প্রকল্পগুলোয় অতিমূল্যায়ন, অনিয়ম, অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প তৈরি এবং বড় বড় চুরির ঘটনা ঘটেছে।
ব্যাংক, জ্বালানি, ভৌত অবকাঠামো এবং আইসিটি খাতে সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি হয়েছে। ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান
শ্বেতপত্র কমিটির সদস্য ও বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সানেমের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ড. সেলিম রায়হান বলেন, ‘যেকোনো সরকারের ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য তার রাজনৈতিক বৈধতা দরকার। সবচেয়ে ত্রুটিপূর্ণ নির্বাচন হয় ২০১৪ সালে। ১৫৫টি আসনে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়নি। এতে রাজনৈতিক বৈধতার বড় ধরনের সংকট তৈরি হয়। তখনই উন্নয়নের বয়ান আরও শক্তিশালীভাবে আমরা শুনতে পেলাম।’ তিনি বলেন, ‘উন্নয়নের বয়ান বা উন্নয়ন বৈধতার চেষ্টায় ক্রনি ক্যাপিটালিজমের (চামচা পুঁজিবাদ) একটা বড় রকমের উল্লম্ফন হয়। এর কেন্দ্রে ছিলেন ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক এলিট। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আমলাদের একটা অংশ। আমলা বলতে সামরিক, বেসামরিক দুই আমলাই। সঙ্গে ব্যবসায়ীদের একটা অংশ। তারা মিলে একটা অ্যালায়েন্স তৈরি করেছিল, সেই জোট এই উন্নয়ন বয়ানকে স্থায়ী রূপ দেওয়ার চেষ্টা করেছে। তারা প্রতি পদে পদে সংস্কারের ক্ষেত্রে বাধা দিয়েছে।’
শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির সদস্য ও বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন বলেন, ‘ইদানীং তথ্য সাজানোর ব্যাপারটা লক্ষ করা গেছে। তবে সেটা সুনির্দিষ্টভাবে বলা সম্ভব নয়। তবে আমরা হয়তো একটা ধারণা দিতে পারব।’
কমিটির সদস্য ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক ম. তামিম বলেন, বেশির ভাগ দুর্নীতি হয়েছে প্রকল্পভিত্তিক। প্রকল্প দীর্ঘায়িত করা হয়েছে। প্রকল্পের পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে। দিনের পর দিন এটা করা হয়েছে। যত বড় প্রকল্প, তত বেশি চুরি।
গত ১৫ বছরে প্রকল্পে যেসব দুর্নীতি হয়েছে, সেগুলো প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের বাইরে হয়নি।অধ্যাপক ম তামিম, শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির সদস্য
ম. তামিম আরও বলেন, পলিটিক্যাল কানেকশন ছাড়া কিছুই হয়নি। এগুলো সবই হয়েছে পিএমও অফিসে। ক্ষমতা কেন্দ্রীকরণের এমন পর্যায়ে গিয়েছিল যে রাষ্ট্রের এমন কোনো ক্ষেত্রে নেই, যেটা প্রধানমন্ত্রীর অফিসের অনুমোদন ছাড়া হয়েছে।
কমিটির সদস্য ও সিপিডির বিশেষ ফেলো অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, মেগা প্রকল্পের প্রথম কথা হলো অস্বচ্ছ। কেউ ডিপিপি (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা) দেখেননি, রিভাইজড ডিপিপি দেখেননি, কেউ ফিজিবিলিটি দেখেননি। অথচ এসব প্রকল্পে হাজার হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ রয়েছে, যা জনগণের টাকা, করদাতাদের টাকা।
ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজনেস অনুষদের ডিন এ কে এনামুল হক বলেন, আইএমইডির (বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ) এবং মহাহিসাব নিরীক্ষকের প্রতিবেদনে লাখ লাখ কোটি টাকার আপত্তি আছে। এতগুলো প্রতিবেদন আসার পরেও দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কোনো অ্যাকশন নেয়নি।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ আবু ইউসুফ বলেন, করজাল বাড়ানোর জন্য যে উদ্যোগ দরকার, সেগুলো এনবিআরের হাতে নেই। এটা অর্থ বিভাগ বা সরকারের হাতে। ভ্যাট ও ট্যাক্স মিলিয়ে সরকার থেকে ৬ শতাংশের মতো করছাড় (এক্সেম্পশন) আছে। কিন্তু এনবিআরের হাতে কোনো ক্ষমতা নেই। তারা জানতেও পারে না, কোন জায়গায় ছাড় দেওয়া হচ্ছে।
কমিটির সদস্য ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক শরমিন্দ নীলোর্মি বলেন, ‘স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে যে বিনিয়োগ, অবকাঠামো তৈরি হয়েছে, সেগুলো অনেক বছর ধরে নিয়ে যেতে হবে। ফলে সামনে কীভাবে এসব আরও উন্নত করতে পারব, সে জায়গাতে দৃষ্টি দেওয়া দরকার।’

আইটি পেশাজীবীদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ কম্পিউটার সোসাইটির (বিসিএস) বার্ষিক সাধারণ সভা ২০২৩ ও ২০২৪ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) অডিটরিয়ামে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
২০ ঘণ্টা আগে
রাজধানীর অলিগলিতে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়েছে লাইভ বেকারি নামের তাৎক্ষণিক খাদ্যপণ্য উৎপাদন ও বিক্রির দোকান। কিন্তু এগুলোতে মানের বালাই নেই। টাটকা মনে করে ভোক্তা পাউরুটি, বিস্কুট, টোস্ট, কেকসহ যেসব পণ্য কিনে খাচ্ছে, তা স্বাস্থ্যগতভাবে কতটা নিরাপদ, তার কোনো তদারকি নেই।
২ দিন আগে
ব্যাংক খাত এক ভয়ংকর সংকটের মুখে। খেলাপি ঋণের হার প্রায় ৩৬ শতাংশে পৌঁছেছে, যা দেশের অর্থনীতিতে চার ধরনের নেতিবাচক চক্র তৈরি হয়েছে। যেখানে মূল্যস্ফীতি বাড়ছে, সুদহার ঊর্ধ্বমুখী, বিনিয়োগ কমছে এবং প্রবৃদ্ধি ধীর হয়ে পড়েছে। মূলত আমানত সঠিক বিনিয়োগে রূপান্তর না হওয়া, ঋণখেলাপির পুনর্বহাল...
২ দিন আগে
সাধারণত শীতের সময় বাজারে আগাম নতুন আলু উঠলে তার দাম কয়েক সপ্তাহ ধরে শতকের ওপরে থাকে। কিন্তু এবার সবজি বিক্রেতারা কয়েক দিনের মধ্যেই নতুন আলুর দাম ৫০ টাকা কেজিতে নামাতে বাধ্য হয়েছেন। চলতি সপ্তাহে আরও কমে ছোট আকারের আলুর দাম ৩৫ টাকা কেজি পর্যন্ত হয়েছে।
২ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

আইটি পেশাজীবীদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ কম্পিউটার সোসাইটির (বিসিএস) বার্ষিক সাধারণ সভা ২০২৩ ও ২০২৪ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) অডিটরিয়ামে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় সভাপতিত্ব করেন সোসাইটির প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. প্রকৌশলী মোহাম্মদ সামসুল আরেফিন। বার্ষিক কার্যক্রম ও সার্বিক অগ্রগতি তুলে ধরেন সেক্রেটারি জেনারেল এলিন ববি। ট্রেজারার মোহাম্মদ শাহরিয়ার হোসেন খান ২০২৩ ও ২০২৪ সালের বার্ষিক প্রতিবেদন এবং নিরীক্ষা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন।
সভায় উপস্থিত ছিলেন বিসিএসের ভাইস প্রেসিডেন্ট (অ্যাডমিন) রেজাউল করীম, ভাইস প্রেসিডেন্ট (ফিন্যান্স) অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল বাছেত, ভাইস প্রেসিডেন্ট (একাডেমিক) জয়নাল আবেদীন, জয়েন্ট সেক্রেটারি (অ্যাডমিন) শরিফুল আনোয়ার, জয়েন্ট সেক্রেটারি (ফিন্যান্স) মো. জারাফাত ইসলাম, জয়েন্ট সেক্রেটারি (একাডেমিক) প্রকৌশলী মো. নাজমুল হুদা মাসুদ।
সভা সঞ্চালনা করেন কাউন্সিলর মুহাম্মদ ওমর সিদ্দিক ও মোহাম্মদ হেদায়েতুল হাসান এবং পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন মো. আলমগীর। সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন কাউন্সিলর মো. মেহেদী হাসান, মো. মোজাহারুল ইসলাম, মো. আসাদ-উজ-জামান, এস এম পারভেজ রানা, মো. ওয়াহিদ মুরাদ, এস এম সাজ্জাদ হোসেন, নিমাই চন্দ্র মণ্ডল, আমিমুল ইহসান, মো. মানিরুল ইসলাম, মো. মারুফ হোসেইন, বায়েজীদ হাসান ভূঞাঁ, মো. তানভিদুল ইসলাম, এস কে হুমায়ন কবীর, মো. মাহফুজ ইসলাম, হাসান আল মনসুর, মোহাম্মদ শফিউদ্দিন প্রমুখ। এ ছাড়া সোসাইটির নিয়মিত সদস্যরাও সভায় অংশ নেন।
সভার আলোচ্য বিষয়ের মধ্যে ছিল—
১. ২০২৩ ও ২০২৪ সালের বার্ষিক প্রতিবেদন ও নিরীক্ষা প্রতিবেদন উপস্থাপন ও অনুমোদন।
২. ২০২৫ সালের হিসাব নিরীক্ষার জন্য অডিটর নিয়োগ ও নিরীক্ষা ফি নির্ধারণ।
৩. বাংলাদেশ কম্পিউটার সোসাইটির সংবিধান পরিবর্তন বিষয়ে আলোচনা।
এই সভার মাধ্যমে সোসাইটির ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা, প্রশাসনিক দক্ষতা এবং তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উন্নয়ন নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

আইটি পেশাজীবীদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ কম্পিউটার সোসাইটির (বিসিএস) বার্ষিক সাধারণ সভা ২০২৩ ও ২০২৪ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) অডিটরিয়ামে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় সভাপতিত্ব করেন সোসাইটির প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. প্রকৌশলী মোহাম্মদ সামসুল আরেফিন। বার্ষিক কার্যক্রম ও সার্বিক অগ্রগতি তুলে ধরেন সেক্রেটারি জেনারেল এলিন ববি। ট্রেজারার মোহাম্মদ শাহরিয়ার হোসেন খান ২০২৩ ও ২০২৪ সালের বার্ষিক প্রতিবেদন এবং নিরীক্ষা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন।
সভায় উপস্থিত ছিলেন বিসিএসের ভাইস প্রেসিডেন্ট (অ্যাডমিন) রেজাউল করীম, ভাইস প্রেসিডেন্ট (ফিন্যান্স) অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল বাছেত, ভাইস প্রেসিডেন্ট (একাডেমিক) জয়নাল আবেদীন, জয়েন্ট সেক্রেটারি (অ্যাডমিন) শরিফুল আনোয়ার, জয়েন্ট সেক্রেটারি (ফিন্যান্স) মো. জারাফাত ইসলাম, জয়েন্ট সেক্রেটারি (একাডেমিক) প্রকৌশলী মো. নাজমুল হুদা মাসুদ।
সভা সঞ্চালনা করেন কাউন্সিলর মুহাম্মদ ওমর সিদ্দিক ও মোহাম্মদ হেদায়েতুল হাসান এবং পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন মো. আলমগীর। সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন কাউন্সিলর মো. মেহেদী হাসান, মো. মোজাহারুল ইসলাম, মো. আসাদ-উজ-জামান, এস এম পারভেজ রানা, মো. ওয়াহিদ মুরাদ, এস এম সাজ্জাদ হোসেন, নিমাই চন্দ্র মণ্ডল, আমিমুল ইহসান, মো. মানিরুল ইসলাম, মো. মারুফ হোসেইন, বায়েজীদ হাসান ভূঞাঁ, মো. তানভিদুল ইসলাম, এস কে হুমায়ন কবীর, মো. মাহফুজ ইসলাম, হাসান আল মনসুর, মোহাম্মদ শফিউদ্দিন প্রমুখ। এ ছাড়া সোসাইটির নিয়মিত সদস্যরাও সভায় অংশ নেন।
সভার আলোচ্য বিষয়ের মধ্যে ছিল—
১. ২০২৩ ও ২০২৪ সালের বার্ষিক প্রতিবেদন ও নিরীক্ষা প্রতিবেদন উপস্থাপন ও অনুমোদন।
২. ২০২৫ সালের হিসাব নিরীক্ষার জন্য অডিটর নিয়োগ ও নিরীক্ষা ফি নির্ধারণ।
৩. বাংলাদেশ কম্পিউটার সোসাইটির সংবিধান পরিবর্তন বিষয়ে আলোচনা।
এই সভার মাধ্যমে সোসাইটির ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা, প্রশাসনিক দক্ষতা এবং তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উন্নয়ন নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

দেশের চলমান অর্থনৈতিক সংকট ও ভঙ্গুর অবস্থার মূলে রয়েছে স্বেচ্ছাচারী রাজনীতি। স্বৈরাচারী রাজনীতির অবশ্যম্ভাবী পরিণতি হচ্ছে আজকের বিকলাঙ্গ অর্থনীতি। এর পেছনে ছিলেন রাজনীতিবিদ, আমলা এবং ব্যবসায়ীদের নেক্সাস। তারা মেগা প্রকল্পে মেগা চুরির মাধ্যমে নিজেদের পকেট ভরেছে। একই সঙ্গে ওই নেক্সাস একটি সংস্কারবিরোধ
০১ নভেম্বর ২০২৪
রাজধানীর অলিগলিতে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়েছে লাইভ বেকারি নামের তাৎক্ষণিক খাদ্যপণ্য উৎপাদন ও বিক্রির দোকান। কিন্তু এগুলোতে মানের বালাই নেই। টাটকা মনে করে ভোক্তা পাউরুটি, বিস্কুট, টোস্ট, কেকসহ যেসব পণ্য কিনে খাচ্ছে, তা স্বাস্থ্যগতভাবে কতটা নিরাপদ, তার কোনো তদারকি নেই।
২ দিন আগে
ব্যাংক খাত এক ভয়ংকর সংকটের মুখে। খেলাপি ঋণের হার প্রায় ৩৬ শতাংশে পৌঁছেছে, যা দেশের অর্থনীতিতে চার ধরনের নেতিবাচক চক্র তৈরি হয়েছে। যেখানে মূল্যস্ফীতি বাড়ছে, সুদহার ঊর্ধ্বমুখী, বিনিয়োগ কমছে এবং প্রবৃদ্ধি ধীর হয়ে পড়েছে। মূলত আমানত সঠিক বিনিয়োগে রূপান্তর না হওয়া, ঋণখেলাপির পুনর্বহাল...
২ দিন আগে
সাধারণত শীতের সময় বাজারে আগাম নতুন আলু উঠলে তার দাম কয়েক সপ্তাহ ধরে শতকের ওপরে থাকে। কিন্তু এবার সবজি বিক্রেতারা কয়েক দিনের মধ্যেই নতুন আলুর দাম ৫০ টাকা কেজিতে নামাতে বাধ্য হয়েছেন। চলতি সপ্তাহে আরও কমে ছোট আকারের আলুর দাম ৩৫ টাকা কেজি পর্যন্ত হয়েছে।
২ দিন আগেরোকন উদ্দীন, ঢাকা

রাজধানীর অলিগলিতে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়েছে লাইভ বেকারি নামের তাৎক্ষণিক খাদ্যপণ্য উৎপাদন ও বিক্রির দোকান। কিন্তু এগুলোতে মানের বালাই নেই। টাটকা মনে করে ভোক্তা পাউরুটি, বিস্কুট, টোস্ট, কেকসহ যেসব পণ্য কিনে খাচ্ছে, তা স্বাস্থ্যগতভাবে কতটা নিরাপদ, তার কোনো তদারকি নেই।
বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনের (বিএসটিআই) পরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম (সার্টিফিকেশন মার্কস উইং) আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘লাইভ বেকারির সংখ্যা এত দ্রুত বাড়ছে যে আমরা এগুলোর হিসাব রাখতে পারছি না। কোনোরকম একটা ট্রেড লাইসেন্স জোগাড় করেই উৎপাদন শুরু করছে এগুলো। আমরা তাদের সচেতন করার চেষ্টা করছি। এতগুলো প্রতিষ্ঠান তো বন্ধ করে দিতে পারি না। আমাদের লোকবলের সংকট থাকায় যতটা কাজ করার দরকার, তা করতে পারছি না।’
অল্প জায়গায় স্বল্প পুঁজিতে গড়া যায় বলে রাজধানীতে লাইভ বেকারির সংখ্যা লাফিয়ে বেড়েছে। মুগদা থানাধীন পূর্ব মানিকনগরে ঢোকার মুখ থেকে খালপাড় নতুন রাস্তার মোড় পর্যন্ত সাড়ে ৮০০ মিটারের মধ্যে ৫টি লাইভ বেকারি দেখা যায়। শুধু মানিকনগর নয়; রাজধানীর কমলাপুর, মতিঝিল, খিলগাঁও, মালিবাগ, রামপুরা, বনশ্রী, মোহাম্মদপুরসহ প্রায় সব এলাকার বাজার, পাড়া-মহল্লায় গড়ে উঠছে শত শত লাইভ বেকারি।
ছোট একটি দোকানে ওভেন, মিক্সচার মেশিন, ট্রে টেবিল ও কিছু আসবাব বসিয়ে এসব বেকারিতে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি হচ্ছে কেক, বিস্কুট, পাউরুটি, পেটিস, টোস্ট, মিষ্টিসহ নানা খাদ্যপণ্য।
ঝিগাতলার সোনালী ব্যাংকসংলগ্ন ‘বেকার্স বে’ লাইভ বেকারি থেকে দুটি চিজ রোল ও একটি চিকেন রোল কিনে ফিরছিলেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা পলাশ মাহমুদ। কীভাবে মান যাচাই করবেন, তা জানা নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা সব সময় খাদ্যপণ্য কিনি স্বাদ দেখে। আর যে চিজ রোল আমি ৪০ টাকায় কিনলাম, এটি ভালো কোনো দোকানে গেলে ৭০-৮০ টাকা লাগবে।’
পূর্ব মানিকনগরের খালিস বেকারির স্বত্বাধিকারী মো. জুবায়ের বলেন, ‘ভালো লাভের আশা দিয়ে আরেক বেকারির মালিক আমারে এই ব্যবসায় নামিয়েছে। কিছু টাকা দিয়ে সিটি করপোরেশন থেকে ট্রেড লাইসেন্স করেছি। দেড় বছর আগে যখন শুরু করেছিলাম, তখন কিছু কিছু লাভ হতো। কয়েক মাসের মধ্যে আশপাশে বেকারির সংখ্যা দ্রুত বেড়েছে। এখন লোকসানে আছি।’
লাইসেন্স নেই অনেকেরই
প্রথমে ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে কারখানা স্থাপন করতে হয়। তারপর নমুনা পণ্য উৎপাদন করে মান সনদের জন্য বিএসটিআইতে জমা দিতে হয়। এর জন্য হাল নাগাদ ট্রেড লাইসেন্স, শিল্প-নকশা বা ট্রেড মার্ক রেজিস্ট্রেশনের সত্যায়িত ফটোকপি, ভ্যাট সনদ, প্রিমিসেস লাইসেন্স, কর্মচারীর স্বাস্থ্য সনদ, পণ্যের মোড়কের নকশার কাগজসহ বেশ কিছু নথি দরকার হয়। জানাতে হয় কালার, ফ্লেভার, প্রিজারভেটিভ, আর্টিফিশিয়াল সুইটনারসহ পণ্যের উপকরণ। পরীক্ষণের যন্ত্রপাতির তালিকা, কারখানার যন্ত্রপাতির তালিকা, কারখানার লে-আউট ও প্রসেস ফ্লো-চার্ট। এরপর পরিদর্শকেরা কারখানা পরিদর্শন করে সন্তুষ্ট হলে মেলে মান সনদ। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এই প্রক্রিয়া মানা হচ্ছে না। অনেকে ট্রেড লাইসেন্স নিয়েই ব্যবসায় নেমে পড়েন। কারও কারও তা-ও নেই। মানসনদ নেই সিংহভাগের। কারিগরদের নেই প্রাতিষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ, স্যানিটেশন সনদ।
বুয়েটের উদ্যোগে ২০২১ সালে করা এক গবেষণায় দেখা যায়, ঢাকা শহরের ৬৭ শতাংশ পাউরুটির নমুনায় নির্ধারিত মানের চেয়ে বেশি পটাশিয়াম ব্রোমেট রয়েছে। পাউরুটি ফোলাতে এই রাসায়নিকট ব্যবহার হয়। এ ছাড়া বেকারি পণ্যে কাঁচামাল আটার সঙ্গে মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর ট্রান্সফ্যাট, কৃত্রিম রং ও সোডিয়াম সাইক্লোমেট ব্যবহৃত হচ্ছে বলেও ওই গবেষণায় বলা হয়।
রাজধানীতে কতটি লাইভ বেকারি রয়েছে, তার কোনো তথ্য নেই সিটি করপোরেশন, বিএসটিআইসহ সংশ্লিষ্ট কোনো প্রতিষ্ঠানের কাছেই। বিএসটিআইয়ের তথ্য বলছে, শত শত বেকারির মধ্যে মাত্র ২৭টির মান সনদ রয়েছে।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা (উপসচিব) মুহাম্মদ হাবিবুল আলম বলেন, ‘এসব ট্রেড লাইসেন্স করপোরেশনের জোনগুলো থেকে দেওয়া হয়। কতটি লাইসেন্স হয়েছে, আমাদের কাছে সে তথ্য নেই।’
জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক ও কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি শফিকুজ্জামান বলেন, মানহীন এসব পণ্যে সাধারণের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে। যারা আইন মেনে উৎপাদন করবে না, তাদের ব্যবসা বন্ধ করে দেওয়া উচিত। দু-একটি বন্ধ করলে বাকিগুলো ঠিক হয়ে যেত।

রাজধানীর অলিগলিতে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়েছে লাইভ বেকারি নামের তাৎক্ষণিক খাদ্যপণ্য উৎপাদন ও বিক্রির দোকান। কিন্তু এগুলোতে মানের বালাই নেই। টাটকা মনে করে ভোক্তা পাউরুটি, বিস্কুট, টোস্ট, কেকসহ যেসব পণ্য কিনে খাচ্ছে, তা স্বাস্থ্যগতভাবে কতটা নিরাপদ, তার কোনো তদারকি নেই।
বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনের (বিএসটিআই) পরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম (সার্টিফিকেশন মার্কস উইং) আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘লাইভ বেকারির সংখ্যা এত দ্রুত বাড়ছে যে আমরা এগুলোর হিসাব রাখতে পারছি না। কোনোরকম একটা ট্রেড লাইসেন্স জোগাড় করেই উৎপাদন শুরু করছে এগুলো। আমরা তাদের সচেতন করার চেষ্টা করছি। এতগুলো প্রতিষ্ঠান তো বন্ধ করে দিতে পারি না। আমাদের লোকবলের সংকট থাকায় যতটা কাজ করার দরকার, তা করতে পারছি না।’
অল্প জায়গায় স্বল্প পুঁজিতে গড়া যায় বলে রাজধানীতে লাইভ বেকারির সংখ্যা লাফিয়ে বেড়েছে। মুগদা থানাধীন পূর্ব মানিকনগরে ঢোকার মুখ থেকে খালপাড় নতুন রাস্তার মোড় পর্যন্ত সাড়ে ৮০০ মিটারের মধ্যে ৫টি লাইভ বেকারি দেখা যায়। শুধু মানিকনগর নয়; রাজধানীর কমলাপুর, মতিঝিল, খিলগাঁও, মালিবাগ, রামপুরা, বনশ্রী, মোহাম্মদপুরসহ প্রায় সব এলাকার বাজার, পাড়া-মহল্লায় গড়ে উঠছে শত শত লাইভ বেকারি।
ছোট একটি দোকানে ওভেন, মিক্সচার মেশিন, ট্রে টেবিল ও কিছু আসবাব বসিয়ে এসব বেকারিতে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি হচ্ছে কেক, বিস্কুট, পাউরুটি, পেটিস, টোস্ট, মিষ্টিসহ নানা খাদ্যপণ্য।
ঝিগাতলার সোনালী ব্যাংকসংলগ্ন ‘বেকার্স বে’ লাইভ বেকারি থেকে দুটি চিজ রোল ও একটি চিকেন রোল কিনে ফিরছিলেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা পলাশ মাহমুদ। কীভাবে মান যাচাই করবেন, তা জানা নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা সব সময় খাদ্যপণ্য কিনি স্বাদ দেখে। আর যে চিজ রোল আমি ৪০ টাকায় কিনলাম, এটি ভালো কোনো দোকানে গেলে ৭০-৮০ টাকা লাগবে।’
পূর্ব মানিকনগরের খালিস বেকারির স্বত্বাধিকারী মো. জুবায়ের বলেন, ‘ভালো লাভের আশা দিয়ে আরেক বেকারির মালিক আমারে এই ব্যবসায় নামিয়েছে। কিছু টাকা দিয়ে সিটি করপোরেশন থেকে ট্রেড লাইসেন্স করেছি। দেড় বছর আগে যখন শুরু করেছিলাম, তখন কিছু কিছু লাভ হতো। কয়েক মাসের মধ্যে আশপাশে বেকারির সংখ্যা দ্রুত বেড়েছে। এখন লোকসানে আছি।’
লাইসেন্স নেই অনেকেরই
প্রথমে ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে কারখানা স্থাপন করতে হয়। তারপর নমুনা পণ্য উৎপাদন করে মান সনদের জন্য বিএসটিআইতে জমা দিতে হয়। এর জন্য হাল নাগাদ ট্রেড লাইসেন্স, শিল্প-নকশা বা ট্রেড মার্ক রেজিস্ট্রেশনের সত্যায়িত ফটোকপি, ভ্যাট সনদ, প্রিমিসেস লাইসেন্স, কর্মচারীর স্বাস্থ্য সনদ, পণ্যের মোড়কের নকশার কাগজসহ বেশ কিছু নথি দরকার হয়। জানাতে হয় কালার, ফ্লেভার, প্রিজারভেটিভ, আর্টিফিশিয়াল সুইটনারসহ পণ্যের উপকরণ। পরীক্ষণের যন্ত্রপাতির তালিকা, কারখানার যন্ত্রপাতির তালিকা, কারখানার লে-আউট ও প্রসেস ফ্লো-চার্ট। এরপর পরিদর্শকেরা কারখানা পরিদর্শন করে সন্তুষ্ট হলে মেলে মান সনদ। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এই প্রক্রিয়া মানা হচ্ছে না। অনেকে ট্রেড লাইসেন্স নিয়েই ব্যবসায় নেমে পড়েন। কারও কারও তা-ও নেই। মানসনদ নেই সিংহভাগের। কারিগরদের নেই প্রাতিষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ, স্যানিটেশন সনদ।
বুয়েটের উদ্যোগে ২০২১ সালে করা এক গবেষণায় দেখা যায়, ঢাকা শহরের ৬৭ শতাংশ পাউরুটির নমুনায় নির্ধারিত মানের চেয়ে বেশি পটাশিয়াম ব্রোমেট রয়েছে। পাউরুটি ফোলাতে এই রাসায়নিকট ব্যবহার হয়। এ ছাড়া বেকারি পণ্যে কাঁচামাল আটার সঙ্গে মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর ট্রান্সফ্যাট, কৃত্রিম রং ও সোডিয়াম সাইক্লোমেট ব্যবহৃত হচ্ছে বলেও ওই গবেষণায় বলা হয়।
রাজধানীতে কতটি লাইভ বেকারি রয়েছে, তার কোনো তথ্য নেই সিটি করপোরেশন, বিএসটিআইসহ সংশ্লিষ্ট কোনো প্রতিষ্ঠানের কাছেই। বিএসটিআইয়ের তথ্য বলছে, শত শত বেকারির মধ্যে মাত্র ২৭টির মান সনদ রয়েছে।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা (উপসচিব) মুহাম্মদ হাবিবুল আলম বলেন, ‘এসব ট্রেড লাইসেন্স করপোরেশনের জোনগুলো থেকে দেওয়া হয়। কতটি লাইসেন্স হয়েছে, আমাদের কাছে সে তথ্য নেই।’
জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক ও কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি শফিকুজ্জামান বলেন, মানহীন এসব পণ্যে সাধারণের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে। যারা আইন মেনে উৎপাদন করবে না, তাদের ব্যবসা বন্ধ করে দেওয়া উচিত। দু-একটি বন্ধ করলে বাকিগুলো ঠিক হয়ে যেত।

দেশের চলমান অর্থনৈতিক সংকট ও ভঙ্গুর অবস্থার মূলে রয়েছে স্বেচ্ছাচারী রাজনীতি। স্বৈরাচারী রাজনীতির অবশ্যম্ভাবী পরিণতি হচ্ছে আজকের বিকলাঙ্গ অর্থনীতি। এর পেছনে ছিলেন রাজনীতিবিদ, আমলা এবং ব্যবসায়ীদের নেক্সাস। তারা মেগা প্রকল্পে মেগা চুরির মাধ্যমে নিজেদের পকেট ভরেছে। একই সঙ্গে ওই নেক্সাস একটি সংস্কারবিরোধ
০১ নভেম্বর ২০২৪
আইটি পেশাজীবীদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ কম্পিউটার সোসাইটির (বিসিএস) বার্ষিক সাধারণ সভা ২০২৩ ও ২০২৪ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) অডিটরিয়ামে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
২০ ঘণ্টা আগে
ব্যাংক খাত এক ভয়ংকর সংকটের মুখে। খেলাপি ঋণের হার প্রায় ৩৬ শতাংশে পৌঁছেছে, যা দেশের অর্থনীতিতে চার ধরনের নেতিবাচক চক্র তৈরি হয়েছে। যেখানে মূল্যস্ফীতি বাড়ছে, সুদহার ঊর্ধ্বমুখী, বিনিয়োগ কমছে এবং প্রবৃদ্ধি ধীর হয়ে পড়েছে। মূলত আমানত সঠিক বিনিয়োগে রূপান্তর না হওয়া, ঋণখেলাপির পুনর্বহাল...
২ দিন আগে
সাধারণত শীতের সময় বাজারে আগাম নতুন আলু উঠলে তার দাম কয়েক সপ্তাহ ধরে শতকের ওপরে থাকে। কিন্তু এবার সবজি বিক্রেতারা কয়েক দিনের মধ্যেই নতুন আলুর দাম ৫০ টাকা কেজিতে নামাতে বাধ্য হয়েছেন। চলতি সপ্তাহে আরও কমে ছোট আকারের আলুর দাম ৩৫ টাকা কেজি পর্যন্ত হয়েছে।
২ দিন আগেব্যাংক খাত নিয়ে পিআরআইয়ের আলোচনা
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ব্যাংক খাত এক ভয়ংকর সংকটের মুখে। খেলাপি ঋণের হার প্রায় ৩৬ শতাংশে পৌঁছেছে, যা দেশের অর্থনীতিতে চার ধরনের নেতিবাচক চক্র তৈরি হয়েছে। যেখানে মূল্যস্ফীতি বাড়ছে, সুদহার ঊর্ধ্বমুখী, বিনিয়োগ কমছে এবং প্রবৃদ্ধি ধীর হয়ে পড়েছে। মূলত আমানত সঠিক বিনিয়োগে রূপান্তর না হওয়া, ঋণখেলাপির পুনর্বহাল এবং সুশাসনের ঘাটতি ব্যাংক ও আর্থিক খাতের আর্থিক স্থিতিশীলতা নষ্ট ও বিনিয়োগ পরিবেশের ওপর ঝুঁকি বাড়িয়েছে। আর এসবের নেপথ্যে শুধু অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনাই নয়, বরং রাজনৈতিক প্রভাব ও দুর্বল গভর্ন্যান্সও দায়ী। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলছেন, এখন সময় এসেছে ধাপে ধাপে সুশাসনভিত্তিক ও আস্থানির্ভর সংস্কারের।
গতকাল রাজধানীর বনানীর একটি হোটেলে পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট (পিআরআই) আয়োজিত ‘ব্যাংক খাতের সমস্যা ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক আলোচনায় বক্তারা এমন মন্তব্য করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. লুৎফে সিদ্দিকী বলেন, বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতের বর্তমান সংকট কোনো একক কারণে হয়নি। এটি বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট, স্থানীয় বাস্তবতা এবং অতীতের অনিয়মের মিলিত ফল। ২০০৮ সালের বৈশ্বিক আর্থিক সংকট, পরবর্তী সুদহার পরিবর্তন এবং ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের প্রভাব দেশের ব্যবসায়িক মডেলকে বদলে দিয়েছে। ব্যাংকিং খাতও নতুন বাস্তবতায় খাপ খাওয়াতে বাধ্য হয়েছে।
লুৎফে সিদ্দিকী আরও বলেন, ব্যাংকের পরিচালনা ও পুনর্গঠনে রাজনৈতিক প্রভাব মোকাবিলা এখন অপরিহার্য। অনেক ক্ষেত্রে ঋণখেলাপিদের পুনর্বহাল করা হয়, বিশেষ করে যদি ব্যাংকের চেয়ারম্যান রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী ব্যক্তির পরিবারের সদস্য হন। এতে গভর্ন্যান্স সংকট তীব্র হচ্ছে। তাই খেলাপি ঋণ ও আর্থিক অপরাধের কৌশল বিশ্লেষণে একটি ট্রুথ অ্যান্ড রিকনসিলিয়েশন কমিশন গঠনের প্রস্তাব দেন তিনি। মনোবিজ্ঞানী ও আচরণ বিশেষজ্ঞদের অন্তর্ভুক্ত করে পেশাদার প্রতিষ্ঠানকে যুক্ত করার ওপরও জোর দেন, যাতে ব্যাংকিং ব্যবস্থার আচরণগত ও শৃঙ্খলাগত উন্নয়ন সম্ভব হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. আখতার হোসেন সতর্ক করে বলেন, অনিয়ন্ত্রিত ঋণ বিতরণ, দুর্বল তদারকি এবং প্রভাবশালী ঋণগ্রহীতাদের চাপ মিলিয়ে ব্যাংক খাত ভঙ্গুর অবস্থায় পৌঁছেছে। তিনি বলেন, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার দুর্বলতা, মূলধন ঘাটতি এবং বড় খেলাপিদের প্রতি নরম মনোভাব সংকটকে আরও গভীর করেছে। এখন সাহসী কাঠামোগত পদক্ষেপ ছাড়া পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব নয়।
সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসরুর আরেফিন বলেন, সমস্যাগ্রস্ত ব্যাংকগুলোকে পতনের দিকে ছেড়ে দেওয়া যাবে না। উদীয়মান অর্থনীতিতে একটি ব্যাংকের ধস পুরো ব্যবস্থাকে অস্থিতিশীল করতে পারে। তিনি মূল কারণ হিসেবে ব্যাংকের পর্ষদে অনিয়ম এবং ঋণ প্রদানে অস্বচ্ছতার কথা তুলে ধরেন। দেশের পাঁচটি বড় ব্যাংক এখন সংকটে, আরও ৫-১০টি একই পথে রয়েছে। তবে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকলে ব্যাংকগুলো দ্রুত পুনরুজ্জীবিত হতে পারে।
পিআরআইয়ের মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. আশিকুর রহমান প্রতারণাজনিত ও সাধারণ খেলাপি ঋণ আলাদা করে পরিচালনার জন্য একটি পেশাদার অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি (এএমসি) গঠনের পরামর্শ দেন। তিনি স্ট্রেস টেস্টিং, রিকভারি প্ল্যান, ডিপোজিট ইনস্যুরেন্স এবং রেজল্যুশন ফান্ডকে শক্তিশালী করার ওপর জোর দেন।
পিআরআই প্রেসিডেন্ট ড. জায়েদী সাত্তার সতর্ক করে বলেন, উন্নত অর্থনীতিতে ‘টু বিগ টু ফেইল’ ধারণা প্রচলিত হলেও বাংলাদেশে কিছু ব্যাংক এখন ‘টু টক্সিক টু ফেইল’ পর্যায়ে পৌঁছেছে। এই ব্যাংকের পতন সামগ্রিক অর্থনীতিকে বিপর্যয়ের মুখে ফেলতে পারে। তিনি উল্লেখ করেন, দেশের ৫ শতাংশের বেশি জিডিপি প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে হলে আর্থিক খাতে সুশাসন, জবাবদিহি ও শক্তিশালী নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা অপরিহার্য।

ব্যাংক খাত এক ভয়ংকর সংকটের মুখে। খেলাপি ঋণের হার প্রায় ৩৬ শতাংশে পৌঁছেছে, যা দেশের অর্থনীতিতে চার ধরনের নেতিবাচক চক্র তৈরি হয়েছে। যেখানে মূল্যস্ফীতি বাড়ছে, সুদহার ঊর্ধ্বমুখী, বিনিয়োগ কমছে এবং প্রবৃদ্ধি ধীর হয়ে পড়েছে। মূলত আমানত সঠিক বিনিয়োগে রূপান্তর না হওয়া, ঋণখেলাপির পুনর্বহাল এবং সুশাসনের ঘাটতি ব্যাংক ও আর্থিক খাতের আর্থিক স্থিতিশীলতা নষ্ট ও বিনিয়োগ পরিবেশের ওপর ঝুঁকি বাড়িয়েছে। আর এসবের নেপথ্যে শুধু অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনাই নয়, বরং রাজনৈতিক প্রভাব ও দুর্বল গভর্ন্যান্সও দায়ী। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলছেন, এখন সময় এসেছে ধাপে ধাপে সুশাসনভিত্তিক ও আস্থানির্ভর সংস্কারের।
গতকাল রাজধানীর বনানীর একটি হোটেলে পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট (পিআরআই) আয়োজিত ‘ব্যাংক খাতের সমস্যা ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক আলোচনায় বক্তারা এমন মন্তব্য করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. লুৎফে সিদ্দিকী বলেন, বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতের বর্তমান সংকট কোনো একক কারণে হয়নি। এটি বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট, স্থানীয় বাস্তবতা এবং অতীতের অনিয়মের মিলিত ফল। ২০০৮ সালের বৈশ্বিক আর্থিক সংকট, পরবর্তী সুদহার পরিবর্তন এবং ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের প্রভাব দেশের ব্যবসায়িক মডেলকে বদলে দিয়েছে। ব্যাংকিং খাতও নতুন বাস্তবতায় খাপ খাওয়াতে বাধ্য হয়েছে।
লুৎফে সিদ্দিকী আরও বলেন, ব্যাংকের পরিচালনা ও পুনর্গঠনে রাজনৈতিক প্রভাব মোকাবিলা এখন অপরিহার্য। অনেক ক্ষেত্রে ঋণখেলাপিদের পুনর্বহাল করা হয়, বিশেষ করে যদি ব্যাংকের চেয়ারম্যান রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী ব্যক্তির পরিবারের সদস্য হন। এতে গভর্ন্যান্স সংকট তীব্র হচ্ছে। তাই খেলাপি ঋণ ও আর্থিক অপরাধের কৌশল বিশ্লেষণে একটি ট্রুথ অ্যান্ড রিকনসিলিয়েশন কমিশন গঠনের প্রস্তাব দেন তিনি। মনোবিজ্ঞানী ও আচরণ বিশেষজ্ঞদের অন্তর্ভুক্ত করে পেশাদার প্রতিষ্ঠানকে যুক্ত করার ওপরও জোর দেন, যাতে ব্যাংকিং ব্যবস্থার আচরণগত ও শৃঙ্খলাগত উন্নয়ন সম্ভব হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. আখতার হোসেন সতর্ক করে বলেন, অনিয়ন্ত্রিত ঋণ বিতরণ, দুর্বল তদারকি এবং প্রভাবশালী ঋণগ্রহীতাদের চাপ মিলিয়ে ব্যাংক খাত ভঙ্গুর অবস্থায় পৌঁছেছে। তিনি বলেন, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার দুর্বলতা, মূলধন ঘাটতি এবং বড় খেলাপিদের প্রতি নরম মনোভাব সংকটকে আরও গভীর করেছে। এখন সাহসী কাঠামোগত পদক্ষেপ ছাড়া পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব নয়।
সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসরুর আরেফিন বলেন, সমস্যাগ্রস্ত ব্যাংকগুলোকে পতনের দিকে ছেড়ে দেওয়া যাবে না। উদীয়মান অর্থনীতিতে একটি ব্যাংকের ধস পুরো ব্যবস্থাকে অস্থিতিশীল করতে পারে। তিনি মূল কারণ হিসেবে ব্যাংকের পর্ষদে অনিয়ম এবং ঋণ প্রদানে অস্বচ্ছতার কথা তুলে ধরেন। দেশের পাঁচটি বড় ব্যাংক এখন সংকটে, আরও ৫-১০টি একই পথে রয়েছে। তবে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকলে ব্যাংকগুলো দ্রুত পুনরুজ্জীবিত হতে পারে।
পিআরআইয়ের মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. আশিকুর রহমান প্রতারণাজনিত ও সাধারণ খেলাপি ঋণ আলাদা করে পরিচালনার জন্য একটি পেশাদার অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি (এএমসি) গঠনের পরামর্শ দেন। তিনি স্ট্রেস টেস্টিং, রিকভারি প্ল্যান, ডিপোজিট ইনস্যুরেন্স এবং রেজল্যুশন ফান্ডকে শক্তিশালী করার ওপর জোর দেন।
পিআরআই প্রেসিডেন্ট ড. জায়েদী সাত্তার সতর্ক করে বলেন, উন্নত অর্থনীতিতে ‘টু বিগ টু ফেইল’ ধারণা প্রচলিত হলেও বাংলাদেশে কিছু ব্যাংক এখন ‘টু টক্সিক টু ফেইল’ পর্যায়ে পৌঁছেছে। এই ব্যাংকের পতন সামগ্রিক অর্থনীতিকে বিপর্যয়ের মুখে ফেলতে পারে। তিনি উল্লেখ করেন, দেশের ৫ শতাংশের বেশি জিডিপি প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে হলে আর্থিক খাতে সুশাসন, জবাবদিহি ও শক্তিশালী নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা অপরিহার্য।

দেশের চলমান অর্থনৈতিক সংকট ও ভঙ্গুর অবস্থার মূলে রয়েছে স্বেচ্ছাচারী রাজনীতি। স্বৈরাচারী রাজনীতির অবশ্যম্ভাবী পরিণতি হচ্ছে আজকের বিকলাঙ্গ অর্থনীতি। এর পেছনে ছিলেন রাজনীতিবিদ, আমলা এবং ব্যবসায়ীদের নেক্সাস। তারা মেগা প্রকল্পে মেগা চুরির মাধ্যমে নিজেদের পকেট ভরেছে। একই সঙ্গে ওই নেক্সাস একটি সংস্কারবিরোধ
০১ নভেম্বর ২০২৪
আইটি পেশাজীবীদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ কম্পিউটার সোসাইটির (বিসিএস) বার্ষিক সাধারণ সভা ২০২৩ ও ২০২৪ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) অডিটরিয়ামে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
২০ ঘণ্টা আগে
রাজধানীর অলিগলিতে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়েছে লাইভ বেকারি নামের তাৎক্ষণিক খাদ্যপণ্য উৎপাদন ও বিক্রির দোকান। কিন্তু এগুলোতে মানের বালাই নেই। টাটকা মনে করে ভোক্তা পাউরুটি, বিস্কুট, টোস্ট, কেকসহ যেসব পণ্য কিনে খাচ্ছে, তা স্বাস্থ্যগতভাবে কতটা নিরাপদ, তার কোনো তদারকি নেই।
২ দিন আগে
সাধারণত শীতের সময় বাজারে আগাম নতুন আলু উঠলে তার দাম কয়েক সপ্তাহ ধরে শতকের ওপরে থাকে। কিন্তু এবার সবজি বিক্রেতারা কয়েক দিনের মধ্যেই নতুন আলুর দাম ৫০ টাকা কেজিতে নামাতে বাধ্য হয়েছেন। চলতি সপ্তাহে আরও কমে ছোট আকারের আলুর দাম ৩৫ টাকা কেজি পর্যন্ত হয়েছে।
২ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

সাধারণত শীতের সময় বাজারে আগাম নতুন আলু উঠলে তার দাম কয়েক সপ্তাহ ধরে শতকের ওপরে থাকে। কিন্তু এবার সবজি বিক্রেতারা কয়েক দিনের মধ্যেই নতুন আলুর দাম ৫০ টাকা কেজিতে নামাতে বাধ্য হয়েছেন। চলতি সপ্তাহে আরও কমে ছোট আকারের আলুর দাম ৩৫ টাকা কেজি পর্যন্ত হয়েছে। বিক্রেতারা বলছেন, অতিরিক্ত মজুতের কারণে পুরোনো আলুর দাম এখন ২৫ টাকার মধ্যেই। তাই বেশি দামের আশায় যাঁরা অপরিপক্ব অবস্থায়ই আগাম আলু বাজারে এনেছেন, তাঁরা হতাশ।
আলুর দাম আশানুরূপ না হলেও সবজিচাষি ও ব্যবসায়ীরা নতুন পেঁয়াজের ভালো দাম পাচ্ছেন। বাজারে খুচরায় নতুন পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা কেজির ওপরে। তবে গত সপ্তাহের তুলনায় দাম কিছুটা কমেছে।
বাজারে আমনের নতুন চালও আসতে শুরু করেছে। এতে চালের দাম এক-দুই টাকা কমেছে চলতি সপ্তাহে। এ ছাড়া সবজি, ডিম, মুরগিসহ অন্যান্য পণ্যের বাজারেও স্বস্তি ফিরে এসেছে।
রাজধানীর শান্তিনগর, মালিবাগ, সেগুনবাগিচা, মানিকনগরসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, আগাম নতুন আলুর সরবরাহ বেশ বেড়েছে। পাশাপাশি পুরোনো আলুও বিক্রি হচ্ছে। নতুন আলু মান অনুসারে ৩৫-৪০ টাকা কেজি আর পুরোনো আলু আগের মতোই ২৫ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।
সেগুনবাগিচা বাজারের সবজি বিক্রেতা মো. মিন্টু বলেন, নতুন আলুর বিক্রি শুরু হয় ১০০-১২০ টাকা কেজিতে। কিন্তু সেই দামে মাত্র কয়েক দিন বিক্রি করা গেছে। এক থেকে দেড় সপ্তাহের মধ্যে দাম কমে ৫০-৬০ টাকায় নেমে আসে। এ সপ্তাহে আরও কমেছে। এবার আলু বিক্রি করে কৃষক, ব্যবসায়ী কেউ খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি।
বাজারে এখন তিন ধরনের পেঁয়াজ পাওয়া যাচ্ছে—দেশি নতুন ও পুরোনো এবং আমদানির পেঁয়াজ। বাজারে নতুন আসা দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১১০-১৩০ টাকা কেজি। তবে পুরোনো দেশি পেঁয়াজ আগের মতোই ১৩০-১৪০ টাকা কেজি। আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়।
বিক্রেতারা বলছেন, আগামী সপ্তাহের মধ্যে নতুন পেঁয়াজের সরবরাহ আরও বাড়বে। তখন দাম ১০০ টাকার নিচে নেমে আসবে।
আমদানির পরও পেঁয়াজের দাম ১০০ টাকার ওপরে থাকায় ক্ষোভ জানিয়েছেন ক্রেতারা। মালিবাগ বাজারে আসা ক্রেতা আহমাদুল্লাহ বলেন, ‘পেঁয়াজের দাম কমাতে আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ভারতে পেঁয়াজের দাম শুনেছি ১০-১২ রুপিতে নেমেছে। সেই পেঁয়াজ দেশে এনে ১২০ টাকায় বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা; যা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। যাঁদের আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, তাঁদের নজরদারিতে রাখা উচিত সরকারের।’
ভোজ্যতেলের দাম গত সপ্তাহেই লিটারপ্রতি ৬-৭ টাকা বেড়েছে। বহুল ব্যবহৃত সয়াবিন তেলের দাম বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৯৫ টাকা লিটার। চিনি, আটা, ময়দা, মসুর ডালসহ অন্যান্য পণ্য বিক্রি হচ্ছে গত সপ্তাহের দামেই।
এদিকে চালের দাম কিছুটা কমেছে। বিক্রেতারা বলছেন, আমনের দু-একটি জাতের চাল বাজারে এসেছে। এর মধ্যে রয়েছে গুটি স্বর্ণা ও পাইজাম। তাতে অন্য চালের দামও কিছুটা নিম্নমুখী। আমদানির চালের সরবরাহও রয়েছে বাজারে।
বিভিন্ন খুচরা বাজারে নাজিরশাইল, শম্পা কাটারি, জিরাশাইল, মিনিকেটসহ সরু চালগুলোর দাম কেজিপ্রতি ২ টাকা পর্যন্ত কমে বিক্রি হচ্ছে ৬৮-৭৮ টাকায়। গত সপ্তাহে ছিল ৭০-৮০ টাকা।
নতুন চালে গুটি স্বর্ণার দাম নেমেছে ৫০-৫৫ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ৫২-৫৬ টাকা কেজি। এ ছাড়া পাইজাম, ব্রি-২৮ ও ব্রি-২৯ বিক্রি হচ্ছে ৫৫-৬০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহ পর্যন্ত ৫৬-৬৩ টাকা ছিল।
মানিকনগর বাজারের চাল বিক্রেতা মরিয়ম স্টোরের স্বত্বাধিকারী মো. ইউসুফ বলেন, ‘চালের সরবরাহ ধীরে ধীরে বাড়ছে। এতে দাম অনেকটাই কমতির দিকে। এ সপ্তাহে এক-দুই টাকা কমেছে অনেক আইটেমে। আশা করছি, সামনের সপ্তাহে আরও কমবে।’
ভোক্তার স্বস্তি ফিরছে সবজিতেও। পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকায় দাম কমতে শুরু করেছে পণ্যটির। খুচরা বাজারে মানভেদে প্রতি কেজি শিম বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকায়। গত সপ্তাহে তা ছিল ৮০ থেকে ১০০ টাকা। গত সপ্তাহের তুলনায় কেজিতে ১০ টাকা কমে বরবটি, বেগুন ও করলা বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকায়। ঢ্যাঁড়স ও পটোল বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকা কেজিতে। ফুল ও বাঁধাকপির দাম আরও কমেছে। মাঝারি আকারের ফুল ও বাঁধাকপি প্রতিটি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকায়।
ডিম ও মুরগির বাজারও স্থিতিশীল। ফার্মের ডিম প্রতি ডজন বিক্রি হচ্ছে ১১৫-১২০ টাকায়। কমেছে মুরগির মাংসের দাম। ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫০-১৬০ টাকার মধ্যে। আর সোনালি মুরগির দাম এখন প্রতি কেজি ২৫০-২৭০ টাকার মধ্যে।
পোলট্রি খাতের ব্যবসায়ীরা বলছেন, শীতে সবজির প্রচুর সরবরাহ থাকলে মুরগি ও ডিমের চাহিদা কিছুটা কমে যায়। এ কারণেই দাম কমেছে।

সাধারণত শীতের সময় বাজারে আগাম নতুন আলু উঠলে তার দাম কয়েক সপ্তাহ ধরে শতকের ওপরে থাকে। কিন্তু এবার সবজি বিক্রেতারা কয়েক দিনের মধ্যেই নতুন আলুর দাম ৫০ টাকা কেজিতে নামাতে বাধ্য হয়েছেন। চলতি সপ্তাহে আরও কমে ছোট আকারের আলুর দাম ৩৫ টাকা কেজি পর্যন্ত হয়েছে। বিক্রেতারা বলছেন, অতিরিক্ত মজুতের কারণে পুরোনো আলুর দাম এখন ২৫ টাকার মধ্যেই। তাই বেশি দামের আশায় যাঁরা অপরিপক্ব অবস্থায়ই আগাম আলু বাজারে এনেছেন, তাঁরা হতাশ।
আলুর দাম আশানুরূপ না হলেও সবজিচাষি ও ব্যবসায়ীরা নতুন পেঁয়াজের ভালো দাম পাচ্ছেন। বাজারে খুচরায় নতুন পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা কেজির ওপরে। তবে গত সপ্তাহের তুলনায় দাম কিছুটা কমেছে।
বাজারে আমনের নতুন চালও আসতে শুরু করেছে। এতে চালের দাম এক-দুই টাকা কমেছে চলতি সপ্তাহে। এ ছাড়া সবজি, ডিম, মুরগিসহ অন্যান্য পণ্যের বাজারেও স্বস্তি ফিরে এসেছে।
রাজধানীর শান্তিনগর, মালিবাগ, সেগুনবাগিচা, মানিকনগরসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, আগাম নতুন আলুর সরবরাহ বেশ বেড়েছে। পাশাপাশি পুরোনো আলুও বিক্রি হচ্ছে। নতুন আলু মান অনুসারে ৩৫-৪০ টাকা কেজি আর পুরোনো আলু আগের মতোই ২৫ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।
সেগুনবাগিচা বাজারের সবজি বিক্রেতা মো. মিন্টু বলেন, নতুন আলুর বিক্রি শুরু হয় ১০০-১২০ টাকা কেজিতে। কিন্তু সেই দামে মাত্র কয়েক দিন বিক্রি করা গেছে। এক থেকে দেড় সপ্তাহের মধ্যে দাম কমে ৫০-৬০ টাকায় নেমে আসে। এ সপ্তাহে আরও কমেছে। এবার আলু বিক্রি করে কৃষক, ব্যবসায়ী কেউ খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি।
বাজারে এখন তিন ধরনের পেঁয়াজ পাওয়া যাচ্ছে—দেশি নতুন ও পুরোনো এবং আমদানির পেঁয়াজ। বাজারে নতুন আসা দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১১০-১৩০ টাকা কেজি। তবে পুরোনো দেশি পেঁয়াজ আগের মতোই ১৩০-১৪০ টাকা কেজি। আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়।
বিক্রেতারা বলছেন, আগামী সপ্তাহের মধ্যে নতুন পেঁয়াজের সরবরাহ আরও বাড়বে। তখন দাম ১০০ টাকার নিচে নেমে আসবে।
আমদানির পরও পেঁয়াজের দাম ১০০ টাকার ওপরে থাকায় ক্ষোভ জানিয়েছেন ক্রেতারা। মালিবাগ বাজারে আসা ক্রেতা আহমাদুল্লাহ বলেন, ‘পেঁয়াজের দাম কমাতে আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ভারতে পেঁয়াজের দাম শুনেছি ১০-১২ রুপিতে নেমেছে। সেই পেঁয়াজ দেশে এনে ১২০ টাকায় বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা; যা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। যাঁদের আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, তাঁদের নজরদারিতে রাখা উচিত সরকারের।’
ভোজ্যতেলের দাম গত সপ্তাহেই লিটারপ্রতি ৬-৭ টাকা বেড়েছে। বহুল ব্যবহৃত সয়াবিন তেলের দাম বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৯৫ টাকা লিটার। চিনি, আটা, ময়দা, মসুর ডালসহ অন্যান্য পণ্য বিক্রি হচ্ছে গত সপ্তাহের দামেই।
এদিকে চালের দাম কিছুটা কমেছে। বিক্রেতারা বলছেন, আমনের দু-একটি জাতের চাল বাজারে এসেছে। এর মধ্যে রয়েছে গুটি স্বর্ণা ও পাইজাম। তাতে অন্য চালের দামও কিছুটা নিম্নমুখী। আমদানির চালের সরবরাহও রয়েছে বাজারে।
বিভিন্ন খুচরা বাজারে নাজিরশাইল, শম্পা কাটারি, জিরাশাইল, মিনিকেটসহ সরু চালগুলোর দাম কেজিপ্রতি ২ টাকা পর্যন্ত কমে বিক্রি হচ্ছে ৬৮-৭৮ টাকায়। গত সপ্তাহে ছিল ৭০-৮০ টাকা।
নতুন চালে গুটি স্বর্ণার দাম নেমেছে ৫০-৫৫ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ৫২-৫৬ টাকা কেজি। এ ছাড়া পাইজাম, ব্রি-২৮ ও ব্রি-২৯ বিক্রি হচ্ছে ৫৫-৬০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহ পর্যন্ত ৫৬-৬৩ টাকা ছিল।
মানিকনগর বাজারের চাল বিক্রেতা মরিয়ম স্টোরের স্বত্বাধিকারী মো. ইউসুফ বলেন, ‘চালের সরবরাহ ধীরে ধীরে বাড়ছে। এতে দাম অনেকটাই কমতির দিকে। এ সপ্তাহে এক-দুই টাকা কমেছে অনেক আইটেমে। আশা করছি, সামনের সপ্তাহে আরও কমবে।’
ভোক্তার স্বস্তি ফিরছে সবজিতেও। পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকায় দাম কমতে শুরু করেছে পণ্যটির। খুচরা বাজারে মানভেদে প্রতি কেজি শিম বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকায়। গত সপ্তাহে তা ছিল ৮০ থেকে ১০০ টাকা। গত সপ্তাহের তুলনায় কেজিতে ১০ টাকা কমে বরবটি, বেগুন ও করলা বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকায়। ঢ্যাঁড়স ও পটোল বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকা কেজিতে। ফুল ও বাঁধাকপির দাম আরও কমেছে। মাঝারি আকারের ফুল ও বাঁধাকপি প্রতিটি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকায়।
ডিম ও মুরগির বাজারও স্থিতিশীল। ফার্মের ডিম প্রতি ডজন বিক্রি হচ্ছে ১১৫-১২০ টাকায়। কমেছে মুরগির মাংসের দাম। ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫০-১৬০ টাকার মধ্যে। আর সোনালি মুরগির দাম এখন প্রতি কেজি ২৫০-২৭০ টাকার মধ্যে।
পোলট্রি খাতের ব্যবসায়ীরা বলছেন, শীতে সবজির প্রচুর সরবরাহ থাকলে মুরগি ও ডিমের চাহিদা কিছুটা কমে যায়। এ কারণেই দাম কমেছে।

দেশের চলমান অর্থনৈতিক সংকট ও ভঙ্গুর অবস্থার মূলে রয়েছে স্বেচ্ছাচারী রাজনীতি। স্বৈরাচারী রাজনীতির অবশ্যম্ভাবী পরিণতি হচ্ছে আজকের বিকলাঙ্গ অর্থনীতি। এর পেছনে ছিলেন রাজনীতিবিদ, আমলা এবং ব্যবসায়ীদের নেক্সাস। তারা মেগা প্রকল্পে মেগা চুরির মাধ্যমে নিজেদের পকেট ভরেছে। একই সঙ্গে ওই নেক্সাস একটি সংস্কারবিরোধ
০১ নভেম্বর ২০২৪
আইটি পেশাজীবীদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ কম্পিউটার সোসাইটির (বিসিএস) বার্ষিক সাধারণ সভা ২০২৩ ও ২০২৪ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) অডিটরিয়ামে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
২০ ঘণ্টা আগে
রাজধানীর অলিগলিতে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়েছে লাইভ বেকারি নামের তাৎক্ষণিক খাদ্যপণ্য উৎপাদন ও বিক্রির দোকান। কিন্তু এগুলোতে মানের বালাই নেই। টাটকা মনে করে ভোক্তা পাউরুটি, বিস্কুট, টোস্ট, কেকসহ যেসব পণ্য কিনে খাচ্ছে, তা স্বাস্থ্যগতভাবে কতটা নিরাপদ, তার কোনো তদারকি নেই।
২ দিন আগে
ব্যাংক খাত এক ভয়ংকর সংকটের মুখে। খেলাপি ঋণের হার প্রায় ৩৬ শতাংশে পৌঁছেছে, যা দেশের অর্থনীতিতে চার ধরনের নেতিবাচক চক্র তৈরি হয়েছে। যেখানে মূল্যস্ফীতি বাড়ছে, সুদহার ঊর্ধ্বমুখী, বিনিয়োগ কমছে এবং প্রবৃদ্ধি ধীর হয়ে পড়েছে। মূলত আমানত সঠিক বিনিয়োগে রূপান্তর না হওয়া, ঋণখেলাপির পুনর্বহাল...
২ দিন আগে