নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
দীর্ঘদিন ধরে দেশের ব্যাংক খাত এক গভীর সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। উচ্চ খেলাপি ঋণের প্রবাহ ব্যাংকগুলোর আর্থিক স্বাস্থ্যকে নাজুক করে তুলছে, আর তারই প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে নিরাপত্তা সঞ্চিতির ঘাটতিতে। ঋণের বিপরীতে নির্দিষ্ট পরিমাণ প্রভিশন রাখা বাধ্যতামূলক হলেও লাগামহীন খেলাপি ঋণ বৃদ্ধির কারণে অনেক ব্যাংকই প্রয়োজনীয় সঞ্চিতি গঠন করতে পারছে না। এ ঘাটতি শুধু ব্যাংক খাতের স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি নয়; বরং সামগ্রিক অর্থনীতির জন্যও এক অশনিসংকেত।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে এমনই এক ভয়াবহ চিত্র উঠে এসেছে। ২০২৪ সালের ডিসেম্বর শেষে ব্যাংকিং খাতে প্রভিশন ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৬ হাজার ১৩০ কোটি টাকা, যা মাত্র তিন মাস আগেও সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে ছিল ৫৫ হাজার ৩৭৮ কোটি টাকা। তিন মাসের ব্যবধানে এ ঘাটতি বেড়েছে ৫০ হাজার ৭৫২ কোটি টাকা, বৃদ্ধির হার ৪৭ দশমিক ৮২ শতাংশ।
বিশ্লেষকদের মতে, খেলাপি ঋণের লাগাম টানতে না পারলে এ সংকট আরও প্রকট হবে। ঋণ অনুমোদনের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক ও প্রভাবশালী গোষ্ঠীর হস্তক্ষেপ, অব্যবস্থাপনা এবং অনিয়মের কারণে ব্যাংকগুলো ক্রমাগত দুর্বল হয়ে পড়ছে।
ব্যাংকিং নিয়ম অনুযায়ী, ভালো ও মন্দ ঋণের বিপরীতে নির্দিষ্ট হারে প্রভিশন রাখতে হয়। সাধারণ ক্যাটাগরির ঋণের বিপরীতে ০.৫ থেকে ৫ শতাংশ, নিম্নমানের ঋণের ক্ষেত্রে ২০ শতাংশ, সন্দেহজনক ঋণের ক্ষেত্রে ৫০ শতাংশ এবং মন্দ ঋণের ক্ষেত্রে ১০০ শতাংশ প্রভিশন সংরক্ষণ করা বাধ্যতামূলক। তবে বাস্তবতা হচ্ছে, ব্যাংকগুলো এ বাধ্যবাধকতা পূরণ করতে পারছে না। ফলস্বরূপ দিন দিন বাড়ছে ঘাটতির পরিমাণ।
কেবল প্রভিশন ঘাটতিই নয়, খেলাপি ঋণের আকারও ভয়াবহভাবে বেড়েছে। ডিসেম্বর শেষে ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৪৫ হাজার ৭৬৫ কোটি, যা তিন মাস আগেও ছিল ২ লাখ ৮৫ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ, মাত্র এক প্রান্তিকের ব্যবধানে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৬০ হাজার ৭৬৫ কোটি টাকা, বৃদ্ধির হার ১৭ দশমিক ৫৭ শতাংশ।
বিশেষত রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো সবচেয়ে বেশি সমস্যায় রয়েছে। এই ব্যাংকগুলোর প্রভিশন ঘাটতি তিন মাসের ব্যবধানে ৩০ দশমিক ৬৪ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৭ হাজার ৯৬৬ কোটি টাকা। বেসরকারি ব্যাংকগুলোর ক্ষেত্রেও চিত্র খুব একটা ভালো নয়; এ খাতে প্রভিশন ঘাটতি বেড়ে হয়েছে ৪৮ হাজার ৮৮৩ কোটি টাকা, যা সেপ্টেম্বরের তুলনায় ৬৭ দশমিক ৬১ শতাংশ বেশি।
তবে আশার আলো দেখা যাচ্ছে বিদেশি এবং বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর ক্ষেত্রে। ডিসেম্বর শেষে বিদেশি ব্যাংকগুলোর প্রভিশন উদ্বৃত্ত ৪৬৩ কোটি এবং বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর উদ্বৃত্ত রয়েছে ২৫৫ কোটি টাকা। এ থেকেই বোঝা যায়, সমস্যাটি মূলত দেশীয় ব্যাংকগুলোতেই প্রকট আকার ধারণ করেছে।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, দেড় দশক ধরে রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায়ায় নানা অনিয়ম এবং প্রভাবশালী ঋণগ্রহীতাদের অবাধ সুযোগ দেওয়ার ফলেই আজকের এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। সাবেক গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার ও ফজলে কবিরের সময় গৃহীত ছাড়নীতি এ সংকটকে আরও গভীর করেছে। সরকার পরিবর্তনের পর বাংলাদেশ ব্যাংক আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে খেলাপি ঋণের সংজ্ঞা কঠোরভাবে প্রয়োগ করছে, যা পরিস্থিতিকে বাস্তবসম্মত করে তুললেও ব্যাংক খাতের দুর্বলতাকে আরও স্পষ্টভাবে সামনে এনেছে।
বর্তমানে ব্যাংক খাতে বিতরণ করা ১৭ লাখ ১১ হাজার ৪০২ কোটি টাকার ঋণের মধ্যে খেলাপির হার ২০ দশমিক ২ শতাংশ। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকে এটি ৪২ দশমিক ৮৩ শতাংশ, আর বেসরকারি ব্যাংকে ১৫ দশমিক ৬০ শতাংশে পৌঁছেছে। সংকট সমাধানে বিশেষজ্ঞরা রাজনৈতিক হস্তক্ষেপমুক্ত ঋণ অনুমোদন, দক্ষ ব্যবস্থাপনা ও খেলাপি ঋণ পুনরুদ্ধারের ওপর জোর দিচ্ছেন।
দীর্ঘদিন ধরে দেশের ব্যাংক খাত এক গভীর সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। উচ্চ খেলাপি ঋণের প্রবাহ ব্যাংকগুলোর আর্থিক স্বাস্থ্যকে নাজুক করে তুলছে, আর তারই প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে নিরাপত্তা সঞ্চিতির ঘাটতিতে। ঋণের বিপরীতে নির্দিষ্ট পরিমাণ প্রভিশন রাখা বাধ্যতামূলক হলেও লাগামহীন খেলাপি ঋণ বৃদ্ধির কারণে অনেক ব্যাংকই প্রয়োজনীয় সঞ্চিতি গঠন করতে পারছে না। এ ঘাটতি শুধু ব্যাংক খাতের স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি নয়; বরং সামগ্রিক অর্থনীতির জন্যও এক অশনিসংকেত।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে এমনই এক ভয়াবহ চিত্র উঠে এসেছে। ২০২৪ সালের ডিসেম্বর শেষে ব্যাংকিং খাতে প্রভিশন ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৬ হাজার ১৩০ কোটি টাকা, যা মাত্র তিন মাস আগেও সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে ছিল ৫৫ হাজার ৩৭৮ কোটি টাকা। তিন মাসের ব্যবধানে এ ঘাটতি বেড়েছে ৫০ হাজার ৭৫২ কোটি টাকা, বৃদ্ধির হার ৪৭ দশমিক ৮২ শতাংশ।
বিশ্লেষকদের মতে, খেলাপি ঋণের লাগাম টানতে না পারলে এ সংকট আরও প্রকট হবে। ঋণ অনুমোদনের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক ও প্রভাবশালী গোষ্ঠীর হস্তক্ষেপ, অব্যবস্থাপনা এবং অনিয়মের কারণে ব্যাংকগুলো ক্রমাগত দুর্বল হয়ে পড়ছে।
ব্যাংকিং নিয়ম অনুযায়ী, ভালো ও মন্দ ঋণের বিপরীতে নির্দিষ্ট হারে প্রভিশন রাখতে হয়। সাধারণ ক্যাটাগরির ঋণের বিপরীতে ০.৫ থেকে ৫ শতাংশ, নিম্নমানের ঋণের ক্ষেত্রে ২০ শতাংশ, সন্দেহজনক ঋণের ক্ষেত্রে ৫০ শতাংশ এবং মন্দ ঋণের ক্ষেত্রে ১০০ শতাংশ প্রভিশন সংরক্ষণ করা বাধ্যতামূলক। তবে বাস্তবতা হচ্ছে, ব্যাংকগুলো এ বাধ্যবাধকতা পূরণ করতে পারছে না। ফলস্বরূপ দিন দিন বাড়ছে ঘাটতির পরিমাণ।
কেবল প্রভিশন ঘাটতিই নয়, খেলাপি ঋণের আকারও ভয়াবহভাবে বেড়েছে। ডিসেম্বর শেষে ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৪৫ হাজার ৭৬৫ কোটি, যা তিন মাস আগেও ছিল ২ লাখ ৮৫ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ, মাত্র এক প্রান্তিকের ব্যবধানে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৬০ হাজার ৭৬৫ কোটি টাকা, বৃদ্ধির হার ১৭ দশমিক ৫৭ শতাংশ।
বিশেষত রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো সবচেয়ে বেশি সমস্যায় রয়েছে। এই ব্যাংকগুলোর প্রভিশন ঘাটতি তিন মাসের ব্যবধানে ৩০ দশমিক ৬৪ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৭ হাজার ৯৬৬ কোটি টাকা। বেসরকারি ব্যাংকগুলোর ক্ষেত্রেও চিত্র খুব একটা ভালো নয়; এ খাতে প্রভিশন ঘাটতি বেড়ে হয়েছে ৪৮ হাজার ৮৮৩ কোটি টাকা, যা সেপ্টেম্বরের তুলনায় ৬৭ দশমিক ৬১ শতাংশ বেশি।
তবে আশার আলো দেখা যাচ্ছে বিদেশি এবং বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর ক্ষেত্রে। ডিসেম্বর শেষে বিদেশি ব্যাংকগুলোর প্রভিশন উদ্বৃত্ত ৪৬৩ কোটি এবং বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর উদ্বৃত্ত রয়েছে ২৫৫ কোটি টাকা। এ থেকেই বোঝা যায়, সমস্যাটি মূলত দেশীয় ব্যাংকগুলোতেই প্রকট আকার ধারণ করেছে।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, দেড় দশক ধরে রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায়ায় নানা অনিয়ম এবং প্রভাবশালী ঋণগ্রহীতাদের অবাধ সুযোগ দেওয়ার ফলেই আজকের এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। সাবেক গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার ও ফজলে কবিরের সময় গৃহীত ছাড়নীতি এ সংকটকে আরও গভীর করেছে। সরকার পরিবর্তনের পর বাংলাদেশ ব্যাংক আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে খেলাপি ঋণের সংজ্ঞা কঠোরভাবে প্রয়োগ করছে, যা পরিস্থিতিকে বাস্তবসম্মত করে তুললেও ব্যাংক খাতের দুর্বলতাকে আরও স্পষ্টভাবে সামনে এনেছে।
বর্তমানে ব্যাংক খাতে বিতরণ করা ১৭ লাখ ১১ হাজার ৪০২ কোটি টাকার ঋণের মধ্যে খেলাপির হার ২০ দশমিক ২ শতাংশ। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকে এটি ৪২ দশমিক ৮৩ শতাংশ, আর বেসরকারি ব্যাংকে ১৫ দশমিক ৬০ শতাংশে পৌঁছেছে। সংকট সমাধানে বিশেষজ্ঞরা রাজনৈতিক হস্তক্ষেপমুক্ত ঋণ অনুমোদন, দক্ষ ব্যবস্থাপনা ও খেলাপি ঋণ পুনরুদ্ধারের ওপর জোর দিচ্ছেন।
ঈদুল ফিতরের আগে ১৫ রমজানের মধ্যে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের (মার্চ পর্যন্ত) বস্ত্র খাতসহ অন্যান্য রপ্তানি খাতের জন্য বরাদ্দ ৭ হাজার কোটি টাকা ছাড়ের আবেদন করেছে নিট পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিকেএমইএ)।
৪ ঘণ্টা আগেবাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান প্রাভা হেলথ মোহাম্মদ আব্দুল মতিন ইমনকে কোম্পানির নতুন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) হিসেবে নিযুক্ত করেছে। তিনি প্রাভার প্রতিষ্ঠাতা ও বর্তমান সিইও সিলভানা কাদের সিনহার স্থলাভিষিক্ত হলেন, যিনি প্রাভা হেলথ বোর্ডের চেয়ার হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।
৪ ঘণ্টা আগেচলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম আট মাসে (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) পণ্য রপ্তানি থেকে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার আয় দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ২৯৪ কোটি ২৬ লাখ ডলার, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১০ দশমিক ৫৩ শতাংশ বেশি। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের একই সময়ে এ আয় ছিল ২ হাজার ৯৮০ কোটি ৫০ লাখ ডলার।
৬ ঘণ্টা আগেকোম্পানির করহারের ক্ষেত্রে নগদ লেনদেনের শর্ত বাতিলের দাবি তুলেছে মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই)। চেম্বারের অভিযোগ, সরকারের নগদ লেনদেনের সীমা নির্ধারণের ফলে ব্যবসায়ীরা করপোরেট কর হ্রাসের (ট্যাক্স কাট) সুবিধা নিতে পারছেন না।
৬ ঘণ্টা আগে