Ajker Patrika

দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় আদানির বিদ্যুৎ কিনছে না শ্রীলঙ্কা

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ২৪ জানুয়ারি ২০২৫, ২১: ০৪
Thumbnail image
শ্রীলঙ্কার জাফনায় বায়ুবিদ্যুৎ প্রকল্প। ছবি: এক্স

গত বছর আদানি গ্রিন এনার্জির সঙ্গে করা বিদ্যুৎ ক্রয়ের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করেছে শ্রীলঙ্কা। ভারতে প্রস্তাবিত বায়ুবিদ্যুৎ প্ল্যান্ট নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পর এ সিদ্ধান্ত নিল দ্বীপ দেশটির সরকার।

আজ শুক্রবার (২৩ জানুয়ারি) ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

শ্রীলঙ্কার জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার বরাতে এএফপি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সরকার বিদ্যুৎ ক্রয়ের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করেছে, তবে প্রকল্পটি বাতিল করা হয়নি। পুরো প্রকল্পটি পর্যালোচনার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।

এ বিষয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু শ্রীলঙ্কার বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের মন্তব্য জানতে চাইলে তারা সাড়া দেয়নি।

শ্রীলঙ্কার বর্তমান প্রেসিডেন্ট অনুঢ়া কুমার দিশানায়েকে নির্বাচনের আগে আদানির প্রকল্প বাতিলের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। গত সেপ্টেম্বর ‘দ্য হিন্দু’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, ‘আমরা বেসরকারি খাতে বিদেশি বিনিয়োগকে স্বাগত জানাই। তবে সব বিনিয়োগ ন্যায্য দরপত্র প্রক্রিয়ার মাধ্যমে হতে হবে। (পূর্ববর্তী) সরকার যদি ন্যায্য দরপত্র প্রক্রিয়ায় যেত, তাহলে আমরা এটি অর্ধেক দামে পেতে পারতাম।’

চুক্তি বাতিলের বিষয়ে আদানি গ্রুপের একজন মুখপাত্র দ্য হিন্দুকে বলেন, ‘২০২৫ সালের ২ জানুয়ারি শ্রীলঙ্কার মন্ত্রিসভা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটি ২০২৪ সালে তৎকালীন সরকারের আমলে গৃহীত ট্যারিফ নীতি ও শর্ত নতুন সরকারের অগ্রাধিকার ও জ্বালানি নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ কিনা তা পুনর্বিবেচনার একটি প্রক্রিয়া মাত্র। আদানি শ্রীলঙ্কার সবুজ জ্বালানি খাতে ১০০ কোটি মার্কিন ডলার বিনিয়োগে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যা নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করবে।’

উল্লেখ্য, শ্রীলঙ্কার উত্তরাঞ্চলের মান্নার ও পুনরিয়নে প্রস্তাবিত ৪৪ কোটি ২০ লাখ ডলারের এই বায়ুবিদ্যুৎ প্রকল্পটি শুরু থেকেই বিতর্কিত। ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে রনিল বিক্রমাসিংহের প্রশাসন এটির অনুমোদন দেয়। পরে ২০২৪ সালের মে মাসে মন্ত্রিসভা আদানি গ্রিন এনার্জির কাছ থেকে প্রতি কিলোওয়াট বিদ্যুৎ ৮ দশমিক ২৬ সেন্টে (শূন্য দশমিক ০৮২৬ ডলার) কেনার প্রস্তাব অনুমোদন করে। তবে এ সিদ্ধান্ত পরিবেশবাদী, অর্থনীতিবিদ ও দুর্নীতিবিরোধী কর্মীরা তীব্র বিরোধিতার মুখে পড়ে।

পরিবেশবাদীরা অভিযোগ করেন, প্রকল্পটি গুরুত্বপূর্ণ উড়োজাহাজ চলাচল করিডরে বাধা সৃষ্টি করবে। অর্থনীতিবিদেরা বিদ্যুতের দামের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। আর দুর্নীতিবিরোধী কর্মীরা ন্যায্য দরপত্র ছাড়াই প্রকল্প অনুমোদনের বিষয়টি সামনে আনেন।

শ্রীলঙ্কার তৎকালীন প্রধান বিরোধী দল আদানি গ্রুপকে জ্বালানি খাতে ‘পেছনের দরজা দিয়ে প্রবেশ’ করার সুযোগ দেওয়ার অভিযোগ তোলে। প্রকল্পটি নিয়ে শ্রীলঙ্কার সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ করা হয়। ২০২৪ সালের অক্টোবরে দিশানায়েকে সরকার জানায়, প্রকল্পটি পুনর্মূল্যায়নের আগে বাস্তবায়ন করা হবে না।

এরই মধ্যে প্রকল্পের আইনি ও পরিবেশগত দিক পর্যালোচনার জন্য একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করেছে দিশানায়েকে সরকার। মামলাটি আগামী মার্চে পরবর্তী শুনানির জন্য অপেক্ষমাণ।

সর্বশেষ ২০২৪ সালের ডিসেম্বর প্রেসিডেন্ট দিশানায়েকের ভারত সফরের সময় নয়াদিল্লি–কলম্বো যৌথ বিবৃতিতে এই প্রকল্পের উল্লেখ ছিল না।

আরও পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত