Ajker Patrika

পণ্যমূল্যের চাপে সরকার

ফারুক মেহেদী, ঢাকা
আপডেট : ১৪ অক্টোবর ২০২১, ১১: ৫২
পণ্যমূল্যের চাপে সরকার

নিত্যপণ্যের অব্যাহত ঊর্ধ্বগতিতে মূল্যস্ফীতি সামাল দেওয়ার চাপে রয়েছে সরকার। এ পরিস্থিতিতে করোনায় অর্থনীতির বিভিন্ন খাত ক্ষতিগ্রস্ত হলেও সরকার আপাতত আর কোনো প্রণোদনা দেওয়ার কথা ভাবছে না। প্রণোদনার চেয়ে বরং মূল্যস্ফীতির চাপ কমানোই সরকারের জন্য এখন বড় চ্যালেঞ্জ।

এ বিষয়ে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম জানান, প্রণোদনা দিলে অর্থনীতিতে আরও চাপ বাড়বে। আর অর্থনীতিবিদেরা মনে করেন, বিদ্যমান পরিস্থিতিতে সরকারের অর্থনৈতিক কৌশল পর্যালোচনা করতে হবে।

করোনায় গত দেড় বছরে সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশের অর্থনীতিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিশেষ করে এসএমই, পর্যটন, পরিবহনসহ বেশ কয়েকটি সেবা খাতের ক্ষতি হয়েছে অপূরণীয়। তাই ব্যবসায়ী ও বিভিন্ন উদ্যোক্তা মহলের পক্ষ থেকে আবারও ক্ষতিগ্রস্ত খাত চিহ্নিত করে প্রণোদনা দেওয়ার দাবি উঠেছে। ক্ষতিগ্রস্ত খাত চিহ্নিত করা এবং কোন কোন খাত কী রকম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তা খুঁজে বের করতে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) একটি জরিপ পরিচালনা করছে। এরই মধ্যে মাঠ পর্যায়ে জরিপের কাজ শেষ হয়েছে। তবে ফলাফল এখনো চূড়ান্ত করা হয়নি।

এদিকে, করোনা কিছুটা সহনীয় হয়ে আসায় প্রায় সব অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড খুলে দেওয়া হয়েছে। সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে আসার পর নতুন করে বিপত্তি তৈরি করছে নিত্যপণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি।

কিছুদিন ধরে প্রায় সবকটি নিত্যপণ্যের দামই অব্যাহতভাবে বাড়ছে। সরকারি সংস্থা টিসিবির হিসাবেই গত এক মাসে পেঁয়াজ, চিনি, ভোজ্যতেল, ডাল, আটাসহ প্রায় সব নিত্যপণ্যের দামই কেজিতে বেড়েছে ২ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত। বাস্তবে এই বৃদ্ধি আরও বেশি। এতে সাধারণ মধ্যবিত্ত মানুষ সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছে। এ অবস্থায় সরকার মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এরই মধ্যে পেঁয়াজ ও চিনির শুল্ক কমানোর উদ্যোগ নিয়েছে।

এমন পরিস্থিতিতে নতুন করে প্রণোদনা দেওয়ার কথা সরকার আর ভাবছে না বলে জানান পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম। মূল্যস্ফীতি নিয়ে সরকারের উদ্বেগের কথা জানিয়ে আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, আর কোনো প্রণোদনা দেওয়ার প্রয়োজন আছে বলে মনে হয় না। কারণ, অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। এ ছাড়া আগের প্রণোদনাই এখনো ঠিকমতো বাস্তবায়ন করা হয়নি। আগেরটির বাস্তবায়ন দরকার। তিনি মনে করেন, পণ্যমূল্য যেভাবে বাড়ছে, এখন প্রণোদনা দেওয়া মানে আরও কয়েক হাজার কোটি টাকা বাজারে ছাড়া। এর ফলে মূল্যস্ফীতিকে উসকে দেওয়ার কোনো মানে নেই। প্রণোদনার চেয়ে বরং মূল্যস্ফীতির চাপ সামলানোই সরকারের জন্য চ্যালেঞ্জ বলে জানান তিনি।

 বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সর্বশেষ মূল্যস্ফীতির হিসাবে দেখা যায়, দেশের সার্বিক মূল্যস্ফীতি জুলাই মাসের তুলনায় আগস্ট মাসে বেড়েছে। গত জুলাইয়ে যেখানে মূল্যস্ফীতি ছিল ৫ দশমিক ৩৬ শতাংশ, সেখানে আগস্ট মাসের মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ৫৪ শতাংশে। একই সময়ের ব্যবধানে খাদ্যপণ্য এবং খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতিও বেড়েছে। তবে গত এক মাসে নিত্যপণ্যের দাম যেহেতু অনেক বেড়েছে, ফলে সেপ্টেম্বর মাসের হিসাবেও মূল্যস্ফীতির হার আরও বাড়বে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।

এ ব্যাপারে অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর  বলেন, ‘বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলসহ আমদানিযোগ্য প্রায় সব পণ্যের দাম বাড়ছে। এর প্রভাব পড়ছে দেশের বাজারে। ফলে এখানে মূল্যস্ফীতিও বেড়ে যাচ্ছে। এটা সার্বিক অর্থনীতিতে চাপ তৈরি করছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আ. লীগ নির্বাচনে অংশ নেবে কি না, তারাই সিদ্ধান্ত নেবে: বিবিসিকে প্রধান উপদেষ্টা

এনআইডির তথ্য ফাঁস করে ২০ হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ জিয়াউলের বিরুদ্ধে

‘মবের হাত থেকে বাঁচাতে’ পলকের বাড়ি হয়ে গেল অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প

স্বাধীনতা পদক পাচ্ছেন এম এ জি ওসমানীসহ ৮ জন

কনের বাড়িতে প্রবেশের আগমুহূর্তে হৃদ্‌রোগে বরের মৃত্যু

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত