Ajker Patrika

ভ্যাট-শুল্ক বৃদ্ধি ও টিসিবির ট্রাক সেল বন্ধের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ নাগরিক কমিটির

অনলাইন ডেস্ক
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্যসচিব আখতার হোসেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্যসচিব আখতার হোসেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

ভ্যাট-শুল্ক বৃদ্ধি ও টিসিবির ট্রাক সেল বন্ধের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক কমিটি। আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর বাংলামোটরের রূপায়ণ টাওয়ারে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রতিবাদ জানানোর পাশাপাশি ৫ দফা প্রস্তাবও করে তারা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনটির সদস্যসচিব আখতার হোসেন।

আখতার হোসেন বলেন, ‘২০২৪ সালে মধ্যবিত্ত, গার্মেন্টস শ্রমিক ও সাধারণ মানুষ অবৈধ সরকারের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে এসেছিল। তাদের প্রত্যাশা ছিল ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচারের পতনের পর ন্যূনতম জীবনযাপনের উপকরণগুলো তাদের জন্য সহজলভ্য হবে, ভেঙে যাবে লুটেরার সিন্ডিকেট, বৃদ্ধি পাবে তাদের ক্রয়ক্ষমতা, ফিরে পাবে তাদের আত্মমর্যাদা।

‘বিগত অবৈধ সরকারের সীমাহীন দুর্নীতি ও বিদেশে অর্থ পাচারের কারণে দেশের অর্থনীতির অবস্থা খুবই ভঙ্গুর ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ তলানিতে। কিন্তু গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সৃষ্ট সরকারের কাছে আমাদের প্রশ্ন- বর্তমান সরকার ঋণের এই শর্ত পুনর্বিবেচনার জন্য আইএমএফকে আহ্বান জানিয়েছে কি? তা আমাদের কাছে স্পষ্ট নয়। গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সৃষ্ট সরকার একটি অবৈধ সরকারের চুক্তির ধারাবাহিকতা বজায় রেখে জনদুর্ভোগ বাড়াতে পারে না।’

সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, ‘বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন প্রতিষ্ঠান টিসিবি (ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ) থেকে গরিব মানুষ যাতে স্বল্পমূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে পারে—তার জন্য ট্রাকে করে তেল, ডাল ও চাল বিক্রয় করে। এটি একটি অবমাননাকর প্রক্রিয়া। আমরা দেখেছি এই দেশের নাগরিক কীভাবে ট্রাকের পেছনে ৫ টাকা ১০ টাকা কমে চাল, ডাল ও তেল কেনার জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকে।

‘এই ধরনের প্রান্তিক মানুষদের রাষ্ট্রের কাছ থেকে ন্যূনতম যে অধিকার, তা-ও ট্রাক সেল বন্ধ ঘোষণার মাধ্যমে কেড়ে নেওয়া হয়েছে। আমরা কল্পনা করতে পারি না, জনগণের প্রতি কতটা দায়হীন অনুভব করলে সরকার এমন সিদ্ধান্ত নিতে পারে!’

অবিলম্বে ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধিসংক্রান্ত অধ্যাদেশসমূহ প্রত্যাহার করতে হবে এবং টিসিবির ট্রাক সেল এই মুহূর্তে চালু করার দাবি জানানোর পাশাপাশি অর্থনীতির পুনরুদ্ধারে বিকল্প হিসেবে ৫ প্রস্তাবনা দেওয়া হয় সংবাদ সম্মেলনে।

দাবিগুলো হচ্ছে— প্রত্যক্ষ করের আওতা বাড়াতে হবে ও কর জাল সম্প্রসারণ করতে হবে, যা সরাসরি সাধারণ মানুষের জীবনমানের ক্ষতি করবে না। আমরা জানি প্রত্যক্ষ কর বাড়ানো সরকারের জন্য চ্যালেঞ্জিং, কিন্তু গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত সরকারকে অবশ্যই সে চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে হবে;

বিদ্যমান কর কাঠামোয় যে সীমাহীন দুর্নীতি হয়, তা বন্ধ করার উদ্যোগ নিলে রাজস্ব আয় বাড়বে; বিগত সরকার ১৫ বছরে বিদেশে ২৩৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার পাচার করেছে বলে শ্বেতপত্র কমিটির প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। সেগুলো দেশে ফেরত আনার জন্য সরকারকে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে;

গত ১৫ বছরে দেশের ব্যাংকগুলোকে দেউলিয়া করে ৯২ হাজার কোটি টাকা লোপাট করা হয়েছে ও খেলাপি ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ২ লাখ কোটি টাকা। এগুলো আদায়ের উদ্যোগ নিতে হবে এবং দেশে বিদ্যমান অর্থঋণ আদালত (২০০৩) সরকারকে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল করার যাবতীয় আইনি সুযোগ দিয়েছে।

সরকার এই সুযোগ ব্যবহার করে দ্রুত একটি ট্রাইব্যুনাল গঠন করে খেলাপি অর্থ আদায় ও অনাদায়ে তাঁদের সম্পত্তি ক্রোক করতে পারে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার, সহমুখপাত্র মুশফিক উস সালেহীন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মো. আলাউদ্দিন, জয়নাল আবেদীন শিশির, সাদ্দাম হোসাইন প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

চকরিয়া থানার ওসিকে প্রত্যাহারের নির্দেশ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার

এনসিপির কর্মীদের ঢাকায় আনতে সরকারের বাস রিকুইজিশন, সমালোচনার ঝড়

নয়াদিল্লিতে নতুন হাইকমিশনার রিয়াজ হামিদুল্লাহ, ৩ মাস সময় নিল ভারত

চাপে পড়ে ৫টি বাস রিকুইজিশন দিয়েছেন পিরোজপুরের ডিসি, সরকারের হস্তক্ষেপ নেই: প্রেস সচিব

রাতে স্বামীর জন্মদিন উদ্‌যাপন, সকালে নদীতে মিলল নববধূর লাশ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত