আসাদুজ্জামান নূর, ঢাকা
কালের গহ্বরে বিলীন হলো আরেকটি বছর। নতুন বছরের সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে ভবিষ্যতের সমৃদ্ধি গড়ে উঠবে। নতুন বছরে আসতে পারে এমন চ্যালেঞ্জ এবং তা মোকাবিলায় কী পদক্ষেপ নেওয়া উচিত—এ বিষয়ে কথা বলেছেন নীতিনির্ধারক, অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীরা। তাঁদের দৃষ্টিভঙ্গি জানুন আজকের পত্রিকায়, রোকন উদ্দীন ও আসাদুজ্জামান নূর-এর প্রতিবেদনে।
আছে ৬ চ্যালেঞ্জ থাকছে সুযোগও
ড. আব্দুর রাজ্জাক, চেয়ারম্যান, রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্ট (র্যাপিড)
নতুন বছর বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় বড় চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে। মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ শক্তিশালীকরণ এবং ব্যাংকিং খাতের স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা হবে প্রধান অগ্রাধিকার। অনেক ব্যাংক বর্তমানে তারল্যসংকট, পরিচালন দুর্বলতা ও আস্থার সংকটে ভুগছে। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে দ্রুত ও দৃঢ় নীতিগত পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি।
এ ছাড়া আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি ২০২৫ সালে বাংলাদেশের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে থাকবে। চীন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাণিজ্য সংঘাত রপ্তানি খাতের জন্য ঝুঁকি তৈরি করছে এবং যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক পরিবর্তনে এ সংকট আরও বাড়তে পারে, যা সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনাকে আরও জটিল করবে।
রাজস্ব সংগ্রহ বৃদ্ধি দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য জরুরি। আয় না বাড়ালে আর্থিক পরিসর সংকুচিত হয়ে উন্নয়ন কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি হতে পারে। এ জন্য রাজস্বনীতি এমনভাবে প্রণয়ন করতে হবে, যা বৈষম্য হ্রাস ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করে।
পরবর্তী জাতীয় বাজেট একটি বড় পরীক্ষা হবে। আর্থিক ব্যবস্থাপনায় বিশ্বাসযোগ্যতা ফিরিয়ে আনতে স্পষ্ট নীতি ও স্বচ্ছতা প্রয়োজন। শ্বেতপত্রে উঠে আসা সমস্যা মাথায় রেখে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক সুরক্ষার খাতে ব্যয়ের ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে।
পবিত্র রমজানে বাজার স্থিতিশীল রাখতে কার্যকর পদক্ষেপ জরুরি, যাতে নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত শ্রেণি সুরক্ষিত থাকে এবং ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠী বিশেষ সহায়তা পায়।
২০২৫ সাল অর্থনৈতিক সংস্কার ও জনগণের আস্থা পুনঃস্থাপনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ, যেখানে আর্থিক ব্যবস্থায় জবাবদিহি নিশ্চিত করা হবে। অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে জনগণ এ ক্ষেত্রে উদ্ভাবনী নীতি ও বাজেট বাস্তবায়নে দায়িত্বশীলতা প্রত্যাশা করছে। সবশেষে ২০২৫ সালটি চ্যালেঞ্জের হলেও সঠিক পরিকল্পনা ও কার্যকর বাস্তবায়নের মাধ্যমে তা মোকাবিলা সম্ভব। সেখানে সরকারের দৃঢ় পদক্ষেপ ও জনমুখী নীতি অগ্রগতির পথ সুগম করবে।
উৎপাদন খরচ নিয়ন্ত্রণে আনার বিকল্প নেই
ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, কৃষি অর্থনীতিবিদ
কোভিড-১৯-পরবর্তী রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে বৈশ্বিক সরবরাহব্যবস্থা ভেঙে পড়ে, যা বিশ্বব্যাপী মুদ্রাস্ফীতি সৃষ্টি করে। এর প্রভাবে বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কৃষি উপকরণ, কৃষিভিত্তিক শিল্পপণ্য, জ্বালানি তেল ও খাদ্যপণ্য। যদিও বেশির ভাগ দেশ মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে ফিরেছে, বাংলাদেশে তা ক্রমেই বাড়ছে। আমদানিনির্ভরতা, ডলারের মূল্যবৃদ্ধি, এলসি খোলার বিলম্ব, আমদানি-রপ্তানি বিঘ্ন এবং রাজনৈতিক অস্থিরতা কৃষিপণ্যের উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি ও সরবরাহে বিঘ্ন ঘটাচ্ছে, যা মুদ্রাস্ফীতিকে আরও উসকে দিয়েছে।
বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার এবং পূর্ববর্তী সরকারের গ্রহণ করা নীতি, যেমন ক্রলিং পেগ, সুদহার পরিবর্তন, এসবের মাধ্যমে অর্থনীতিতে হস্তক্ষেপ সত্ত্বেও তা কার্যকর হয়নি। পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক বাজারে মুদ্রা সরবরাহের কারণে মুদ্রাস্ফীতি আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।
বাংলাদেশের মুদ্রাস্ফীতির মূল কারণ হচ্ছে কস্ট-পুশ বা উৎপাদন খরচ বৃদ্ধিজনিত মুদ্রাস্ফীতি। এটি নিয়ন্ত্রণে উৎপাদন খরচ কমিয়ে অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বৃদ্ধি করতে হবে। দীর্ঘ মেয়াদে উদ্ভাবনী নীতি এবং সহায়তার মাধ্যমে উৎপাদন খরচ কমানো সম্ভব। বিশেষ করে স্বল্পকালীন কৌশল হিসেবে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ সরবরাহ বাড়ানো এবং খাদ্যপণ্যের দাম মনিটরিং নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের দাম মনিটরিং ও এন্ট্রি-হোর্ডিং রেগুলেশনের বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে, যাতে কেউ কোনোভাবে কৃত্রিম সরবরাহ সংকট তৈরি করে খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি করতে না পারে। আমদানি শুল্ক কমানোর পাশাপাশি ঋণপত্র খোলাতে সহযোগিতা ও সময়মতো পণ্যের ডেলিভারি নিশ্চিত করতে হবে। দীর্ঘ মেয়াদে কৃষিপণ্যের উৎপাদন, সংরক্ষণ ও বাজারব্যবস্থা উন্নয়নে অবকাঠামোতে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। এর মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে এবং আমদানি নির্ভরতা কমে আসবে; যা আমাদের পণ্যের সরবরাহ এবং ডলারের রিজার্ভ বাড়াবে। উৎপাদন কার্যক্রম ও বাজারব্যবস্থা যাতে নিরবচ্ছিন্ন গতিতে চলতে পারে, সেই রকম আইনশৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে না পারলে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা অসম্ভব হয়ে যাবে।
বড় চাওয়া আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি
তাসকীন আহমেদ, সভাপতি, ডিসিসিআই
বাংলাদেশে ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে কয়েকটি বড় চ্যালেঞ্জ বিদ্যমান, যেগুলো দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং স্থিতিশীলতার জন্য প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়িয়েছে। অস্থিতিশীল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ব্যবসায়িক কার্যক্রমে নিরাপত্তাহীনতা সৃষ্টি করছে, কলকারখানার মধ্যে বিভিন্ন ধরনের জটিলতা উৎপাদন ও বাণিজ্যিক কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটাচ্ছে। এ ছাড়া অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা, ব্যাংকিং খাতে উচ্চ সুদের হার, অর্থায়নের অভাব এবং জ্বালানির সরবরাহ সংকট ব্যবসায়ীদের জন্য বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রশাসনিক জটিলতা ও দীর্ঘসূত্রতাও ব্যবসায়িক পরিবেশে অসুবিধা সৃষ্টি করছে, ফলে উৎপাদন খরচ বেড়ে গেছে, ব্যবসার আয় কমছে এবং অর্থনৈতিক অগ্রগতি ব্যাহত হচ্ছে।
নতুন বছরে ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য আমাদের প্রধান প্রত্যাশা হলো আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি, যা বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধি করবে। একটি স্থিতিশীল আইনশৃঙ্খলার পরিবেশ বিনিয়োগকে উৎসাহিত করবে এবং নতুন বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টি করবে। একইভাবে ব্যবসায়িক খাতে যথাযথ অর্থায়ন নিশ্চিত করা জরুরি, বিশেষ করে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের প্রসারের জন্য। এই খাতে আর্থিক সহায়তা বাড়ানোর মাধ্যমে উৎপাদনশীলতা ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধি সম্ভব হবে।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রত্যাশা হলো নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করা। জ্বালানির অনিশ্চিত সরবরাহ উৎপাদন খাতে বড় সমস্যা তৈরি করছে, যা ব্যবসার গতিকে বাধাগ্রস্ত করছে। এই পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে জ্বালানির সুষ্ঠু ও নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি প্রশাসনিক জটিলতা দূর করা অত্যন্ত জরুরি। প্রশাসনিক প্রক্রিয়ার সহজীকরণ ব্যবসায়ীদের খরচ কমাবে।
অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আমাদের এই প্রত্যাশা থাকবে যে তারা ব্যবসায়ীদের জন্য নীতিগত সহায়তা প্রদান করবে এবং নীতিমালা বাস্তবায়নে জটিলতা দূর করবে। বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরি, শিল্পে অর্থায়নের সুযোগ বৃদ্ধি এবং প্রশাসনিক প্রক্রিয়া সহজ করার মাধ্যমে ব্যবসা-বাণিজ্য আরও গতিশীল হবে এবং দেশের অর্থনীতি শক্তিশালী হবে। এসব পদক্ষেপ গ্রহণ করলে বাংলাদেশে ব্যবসা-বাণিজ্য আরও উন্নত হবে এবং অর্থনীতি আরও গতিশীল হবে।
উদ্বেগ কাটাতে চাই ৩ সমস্যার সমাধান
মহিউদ্দিন রুবেল, সাবেক পরিচালক, বিজিএমইএ
২০২৪ সালে পোশাকশিল্প নানা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছিল, যার কারণে কাঙ্ক্ষিত রপ্তানি আয় অর্জন সম্ভব হয়নি। তবে ২০২৫ সালে আমরা বিশ্ব অর্থনীতি এবং পোশাকশিল্পের পুনরুদ্ধারের প্রতি গভীর আশাবাদী। এর জন্য রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা, শিল্প সম্পর্কের উন্নয়ন এবং ব্যাংকিং খাতের সমস্যা সমাধান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে পোশাক খাতের টেকসই বৃদ্ধি নিশ্চিত করতে এই পদক্ষেপগুলো অত্যাবশ্যক। আমরা আশা করি, অন্তর্বর্তী সরকার এই বিষয়গুলো অগ্রাধিকার দিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
২০২৪ সালে ৫০ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ হলেও জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত রপ্তানি আয় ছিল ৩৪.৭১ বিলিয়ন ডলার। ২০২৩ সালের তুলনায় ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হলেও ন্যূনতম মজুরি বৃদ্ধি ও কারখানা বন্ধের মতো অভ্যন্তরীণ চ্যালেঞ্জ শিল্পে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে মজুরি ৫৬ শতাংশ বাড়ানো হলেও জাতীয় নির্বাচনের সময়ে এটি বাস্তবায়নে কিছু জটিলতা সৃষ্টি হয়।
শিল্পটি আরও চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়, যখন সরকার ফেব্রুয়ারিতে রপ্তানি প্রণোদনা ৬০ শতাংশ কমিয়ে দেয়। এদিকে বৈশ্বিক সংঘাত ও অর্থনৈতিক অস্থিরতা ভোক্তাদের ক্রয়ক্ষমতার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। ২০২৪ সালের শেষে আঙ্কটাড বৈশ্বিক পোশাক বাণিজ্যে ৫ শতাংশ হ্রাসের পূর্বাভাস দিয়েছে। মজুরি বৃদ্ধির পরেও পোশাকের ইউনিট মূল্য হ্রাস পেয়েছে।
গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পরিবহন খরচের বৃদ্ধি এবং উচ্চ ব্যাংক সুদের কারণে পোশাকশিল্পের উৎপাদন ব্যয় বেড়েছে, যা বিশেষ করে ছোট ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। জুলাই মাসের আন্দোলনের ফলে কিছু অস্থিরতা তৈরি হলেও পরবর্তী সময়ে রপ্তানিতে সামান্য প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে। অক্টোবর মাসে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানি কিছুটা পুনরুদ্ধার হয়েছে। তবে এসব চ্যালেঞ্জের মধ্যেও পোশাক খাত টেকসই উন্নয়নের দিকে এগিয়েছে, যেমন লিড সনদপ্রাপ্ত কারখানার সংখ্যা বৃদ্ধি এবং অ্যাকটিভ ওয়্যারের মতো নতুন পণ্যের বৈচিত্র্য।
কালের গহ্বরে বিলীন হলো আরেকটি বছর। নতুন বছরের সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে ভবিষ্যতের সমৃদ্ধি গড়ে উঠবে। নতুন বছরে আসতে পারে এমন চ্যালেঞ্জ এবং তা মোকাবিলায় কী পদক্ষেপ নেওয়া উচিত—এ বিষয়ে কথা বলেছেন নীতিনির্ধারক, অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীরা। তাঁদের দৃষ্টিভঙ্গি জানুন আজকের পত্রিকায়, রোকন উদ্দীন ও আসাদুজ্জামান নূর-এর প্রতিবেদনে।
আছে ৬ চ্যালেঞ্জ থাকছে সুযোগও
ড. আব্দুর রাজ্জাক, চেয়ারম্যান, রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্ট (র্যাপিড)
নতুন বছর বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় বড় চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে। মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ শক্তিশালীকরণ এবং ব্যাংকিং খাতের স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা হবে প্রধান অগ্রাধিকার। অনেক ব্যাংক বর্তমানে তারল্যসংকট, পরিচালন দুর্বলতা ও আস্থার সংকটে ভুগছে। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে দ্রুত ও দৃঢ় নীতিগত পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি।
এ ছাড়া আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি ২০২৫ সালে বাংলাদেশের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে থাকবে। চীন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাণিজ্য সংঘাত রপ্তানি খাতের জন্য ঝুঁকি তৈরি করছে এবং যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক পরিবর্তনে এ সংকট আরও বাড়তে পারে, যা সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনাকে আরও জটিল করবে।
রাজস্ব সংগ্রহ বৃদ্ধি দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য জরুরি। আয় না বাড়ালে আর্থিক পরিসর সংকুচিত হয়ে উন্নয়ন কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি হতে পারে। এ জন্য রাজস্বনীতি এমনভাবে প্রণয়ন করতে হবে, যা বৈষম্য হ্রাস ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করে।
পরবর্তী জাতীয় বাজেট একটি বড় পরীক্ষা হবে। আর্থিক ব্যবস্থাপনায় বিশ্বাসযোগ্যতা ফিরিয়ে আনতে স্পষ্ট নীতি ও স্বচ্ছতা প্রয়োজন। শ্বেতপত্রে উঠে আসা সমস্যা মাথায় রেখে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক সুরক্ষার খাতে ব্যয়ের ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে।
পবিত্র রমজানে বাজার স্থিতিশীল রাখতে কার্যকর পদক্ষেপ জরুরি, যাতে নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত শ্রেণি সুরক্ষিত থাকে এবং ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠী বিশেষ সহায়তা পায়।
২০২৫ সাল অর্থনৈতিক সংস্কার ও জনগণের আস্থা পুনঃস্থাপনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ, যেখানে আর্থিক ব্যবস্থায় জবাবদিহি নিশ্চিত করা হবে। অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে জনগণ এ ক্ষেত্রে উদ্ভাবনী নীতি ও বাজেট বাস্তবায়নে দায়িত্বশীলতা প্রত্যাশা করছে। সবশেষে ২০২৫ সালটি চ্যালেঞ্জের হলেও সঠিক পরিকল্পনা ও কার্যকর বাস্তবায়নের মাধ্যমে তা মোকাবিলা সম্ভব। সেখানে সরকারের দৃঢ় পদক্ষেপ ও জনমুখী নীতি অগ্রগতির পথ সুগম করবে।
উৎপাদন খরচ নিয়ন্ত্রণে আনার বিকল্প নেই
ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, কৃষি অর্থনীতিবিদ
কোভিড-১৯-পরবর্তী রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে বৈশ্বিক সরবরাহব্যবস্থা ভেঙে পড়ে, যা বিশ্বব্যাপী মুদ্রাস্ফীতি সৃষ্টি করে। এর প্রভাবে বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কৃষি উপকরণ, কৃষিভিত্তিক শিল্পপণ্য, জ্বালানি তেল ও খাদ্যপণ্য। যদিও বেশির ভাগ দেশ মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে ফিরেছে, বাংলাদেশে তা ক্রমেই বাড়ছে। আমদানিনির্ভরতা, ডলারের মূল্যবৃদ্ধি, এলসি খোলার বিলম্ব, আমদানি-রপ্তানি বিঘ্ন এবং রাজনৈতিক অস্থিরতা কৃষিপণ্যের উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি ও সরবরাহে বিঘ্ন ঘটাচ্ছে, যা মুদ্রাস্ফীতিকে আরও উসকে দিয়েছে।
বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার এবং পূর্ববর্তী সরকারের গ্রহণ করা নীতি, যেমন ক্রলিং পেগ, সুদহার পরিবর্তন, এসবের মাধ্যমে অর্থনীতিতে হস্তক্ষেপ সত্ত্বেও তা কার্যকর হয়নি। পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক বাজারে মুদ্রা সরবরাহের কারণে মুদ্রাস্ফীতি আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।
বাংলাদেশের মুদ্রাস্ফীতির মূল কারণ হচ্ছে কস্ট-পুশ বা উৎপাদন খরচ বৃদ্ধিজনিত মুদ্রাস্ফীতি। এটি নিয়ন্ত্রণে উৎপাদন খরচ কমিয়ে অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বৃদ্ধি করতে হবে। দীর্ঘ মেয়াদে উদ্ভাবনী নীতি এবং সহায়তার মাধ্যমে উৎপাদন খরচ কমানো সম্ভব। বিশেষ করে স্বল্পকালীন কৌশল হিসেবে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ সরবরাহ বাড়ানো এবং খাদ্যপণ্যের দাম মনিটরিং নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের দাম মনিটরিং ও এন্ট্রি-হোর্ডিং রেগুলেশনের বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে, যাতে কেউ কোনোভাবে কৃত্রিম সরবরাহ সংকট তৈরি করে খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি করতে না পারে। আমদানি শুল্ক কমানোর পাশাপাশি ঋণপত্র খোলাতে সহযোগিতা ও সময়মতো পণ্যের ডেলিভারি নিশ্চিত করতে হবে। দীর্ঘ মেয়াদে কৃষিপণ্যের উৎপাদন, সংরক্ষণ ও বাজারব্যবস্থা উন্নয়নে অবকাঠামোতে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। এর মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে এবং আমদানি নির্ভরতা কমে আসবে; যা আমাদের পণ্যের সরবরাহ এবং ডলারের রিজার্ভ বাড়াবে। উৎপাদন কার্যক্রম ও বাজারব্যবস্থা যাতে নিরবচ্ছিন্ন গতিতে চলতে পারে, সেই রকম আইনশৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে না পারলে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা অসম্ভব হয়ে যাবে।
বড় চাওয়া আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি
তাসকীন আহমেদ, সভাপতি, ডিসিসিআই
বাংলাদেশে ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে কয়েকটি বড় চ্যালেঞ্জ বিদ্যমান, যেগুলো দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং স্থিতিশীলতার জন্য প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়িয়েছে। অস্থিতিশীল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ব্যবসায়িক কার্যক্রমে নিরাপত্তাহীনতা সৃষ্টি করছে, কলকারখানার মধ্যে বিভিন্ন ধরনের জটিলতা উৎপাদন ও বাণিজ্যিক কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটাচ্ছে। এ ছাড়া অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা, ব্যাংকিং খাতে উচ্চ সুদের হার, অর্থায়নের অভাব এবং জ্বালানির সরবরাহ সংকট ব্যবসায়ীদের জন্য বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রশাসনিক জটিলতা ও দীর্ঘসূত্রতাও ব্যবসায়িক পরিবেশে অসুবিধা সৃষ্টি করছে, ফলে উৎপাদন খরচ বেড়ে গেছে, ব্যবসার আয় কমছে এবং অর্থনৈতিক অগ্রগতি ব্যাহত হচ্ছে।
নতুন বছরে ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য আমাদের প্রধান প্রত্যাশা হলো আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি, যা বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধি করবে। একটি স্থিতিশীল আইনশৃঙ্খলার পরিবেশ বিনিয়োগকে উৎসাহিত করবে এবং নতুন বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টি করবে। একইভাবে ব্যবসায়িক খাতে যথাযথ অর্থায়ন নিশ্চিত করা জরুরি, বিশেষ করে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের প্রসারের জন্য। এই খাতে আর্থিক সহায়তা বাড়ানোর মাধ্যমে উৎপাদনশীলতা ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধি সম্ভব হবে।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রত্যাশা হলো নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করা। জ্বালানির অনিশ্চিত সরবরাহ উৎপাদন খাতে বড় সমস্যা তৈরি করছে, যা ব্যবসার গতিকে বাধাগ্রস্ত করছে। এই পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে জ্বালানির সুষ্ঠু ও নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি প্রশাসনিক জটিলতা দূর করা অত্যন্ত জরুরি। প্রশাসনিক প্রক্রিয়ার সহজীকরণ ব্যবসায়ীদের খরচ কমাবে।
অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আমাদের এই প্রত্যাশা থাকবে যে তারা ব্যবসায়ীদের জন্য নীতিগত সহায়তা প্রদান করবে এবং নীতিমালা বাস্তবায়নে জটিলতা দূর করবে। বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরি, শিল্পে অর্থায়নের সুযোগ বৃদ্ধি এবং প্রশাসনিক প্রক্রিয়া সহজ করার মাধ্যমে ব্যবসা-বাণিজ্য আরও গতিশীল হবে এবং দেশের অর্থনীতি শক্তিশালী হবে। এসব পদক্ষেপ গ্রহণ করলে বাংলাদেশে ব্যবসা-বাণিজ্য আরও উন্নত হবে এবং অর্থনীতি আরও গতিশীল হবে।
উদ্বেগ কাটাতে চাই ৩ সমস্যার সমাধান
মহিউদ্দিন রুবেল, সাবেক পরিচালক, বিজিএমইএ
২০২৪ সালে পোশাকশিল্প নানা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছিল, যার কারণে কাঙ্ক্ষিত রপ্তানি আয় অর্জন সম্ভব হয়নি। তবে ২০২৫ সালে আমরা বিশ্ব অর্থনীতি এবং পোশাকশিল্পের পুনরুদ্ধারের প্রতি গভীর আশাবাদী। এর জন্য রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা, শিল্প সম্পর্কের উন্নয়ন এবং ব্যাংকিং খাতের সমস্যা সমাধান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে পোশাক খাতের টেকসই বৃদ্ধি নিশ্চিত করতে এই পদক্ষেপগুলো অত্যাবশ্যক। আমরা আশা করি, অন্তর্বর্তী সরকার এই বিষয়গুলো অগ্রাধিকার দিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
২০২৪ সালে ৫০ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ হলেও জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত রপ্তানি আয় ছিল ৩৪.৭১ বিলিয়ন ডলার। ২০২৩ সালের তুলনায় ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হলেও ন্যূনতম মজুরি বৃদ্ধি ও কারখানা বন্ধের মতো অভ্যন্তরীণ চ্যালেঞ্জ শিল্পে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে মজুরি ৫৬ শতাংশ বাড়ানো হলেও জাতীয় নির্বাচনের সময়ে এটি বাস্তবায়নে কিছু জটিলতা সৃষ্টি হয়।
শিল্পটি আরও চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়, যখন সরকার ফেব্রুয়ারিতে রপ্তানি প্রণোদনা ৬০ শতাংশ কমিয়ে দেয়। এদিকে বৈশ্বিক সংঘাত ও অর্থনৈতিক অস্থিরতা ভোক্তাদের ক্রয়ক্ষমতার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। ২০২৪ সালের শেষে আঙ্কটাড বৈশ্বিক পোশাক বাণিজ্যে ৫ শতাংশ হ্রাসের পূর্বাভাস দিয়েছে। মজুরি বৃদ্ধির পরেও পোশাকের ইউনিট মূল্য হ্রাস পেয়েছে।
গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পরিবহন খরচের বৃদ্ধি এবং উচ্চ ব্যাংক সুদের কারণে পোশাকশিল্পের উৎপাদন ব্যয় বেড়েছে, যা বিশেষ করে ছোট ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। জুলাই মাসের আন্দোলনের ফলে কিছু অস্থিরতা তৈরি হলেও পরবর্তী সময়ে রপ্তানিতে সামান্য প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে। অক্টোবর মাসে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানি কিছুটা পুনরুদ্ধার হয়েছে। তবে এসব চ্যালেঞ্জের মধ্যেও পোশাক খাত টেকসই উন্নয়নের দিকে এগিয়েছে, যেমন লিড সনদপ্রাপ্ত কারখানার সংখ্যা বৃদ্ধি এবং অ্যাকটিভ ওয়্যারের মতো নতুন পণ্যের বৈচিত্র্য।
আসাদুজ্জামান নূর, ঢাকা
কালের গহ্বরে বিলীন হলো আরেকটি বছর। নতুন বছরের সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে ভবিষ্যতের সমৃদ্ধি গড়ে উঠবে। নতুন বছরে আসতে পারে এমন চ্যালেঞ্জ এবং তা মোকাবিলায় কী পদক্ষেপ নেওয়া উচিত—এ বিষয়ে কথা বলেছেন নীতিনির্ধারক, অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীরা। তাঁদের দৃষ্টিভঙ্গি জানুন আজকের পত্রিকায়, রোকন উদ্দীন ও আসাদুজ্জামান নূর-এর প্রতিবেদনে।
আছে ৬ চ্যালেঞ্জ থাকছে সুযোগও
ড. আব্দুর রাজ্জাক, চেয়ারম্যান, রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্ট (র্যাপিড)
নতুন বছর বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় বড় চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে। মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ শক্তিশালীকরণ এবং ব্যাংকিং খাতের স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা হবে প্রধান অগ্রাধিকার। অনেক ব্যাংক বর্তমানে তারল্যসংকট, পরিচালন দুর্বলতা ও আস্থার সংকটে ভুগছে। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে দ্রুত ও দৃঢ় নীতিগত পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি।
এ ছাড়া আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি ২০২৫ সালে বাংলাদেশের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে থাকবে। চীন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাণিজ্য সংঘাত রপ্তানি খাতের জন্য ঝুঁকি তৈরি করছে এবং যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক পরিবর্তনে এ সংকট আরও বাড়তে পারে, যা সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনাকে আরও জটিল করবে।
রাজস্ব সংগ্রহ বৃদ্ধি দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য জরুরি। আয় না বাড়ালে আর্থিক পরিসর সংকুচিত হয়ে উন্নয়ন কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি হতে পারে। এ জন্য রাজস্বনীতি এমনভাবে প্রণয়ন করতে হবে, যা বৈষম্য হ্রাস ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করে।
পরবর্তী জাতীয় বাজেট একটি বড় পরীক্ষা হবে। আর্থিক ব্যবস্থাপনায় বিশ্বাসযোগ্যতা ফিরিয়ে আনতে স্পষ্ট নীতি ও স্বচ্ছতা প্রয়োজন। শ্বেতপত্রে উঠে আসা সমস্যা মাথায় রেখে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক সুরক্ষার খাতে ব্যয়ের ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে।
পবিত্র রমজানে বাজার স্থিতিশীল রাখতে কার্যকর পদক্ষেপ জরুরি, যাতে নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত শ্রেণি সুরক্ষিত থাকে এবং ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠী বিশেষ সহায়তা পায়।
২০২৫ সাল অর্থনৈতিক সংস্কার ও জনগণের আস্থা পুনঃস্থাপনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ, যেখানে আর্থিক ব্যবস্থায় জবাবদিহি নিশ্চিত করা হবে। অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে জনগণ এ ক্ষেত্রে উদ্ভাবনী নীতি ও বাজেট বাস্তবায়নে দায়িত্বশীলতা প্রত্যাশা করছে। সবশেষে ২০২৫ সালটি চ্যালেঞ্জের হলেও সঠিক পরিকল্পনা ও কার্যকর বাস্তবায়নের মাধ্যমে তা মোকাবিলা সম্ভব। সেখানে সরকারের দৃঢ় পদক্ষেপ ও জনমুখী নীতি অগ্রগতির পথ সুগম করবে।
উৎপাদন খরচ নিয়ন্ত্রণে আনার বিকল্প নেই
ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, কৃষি অর্থনীতিবিদ
কোভিড-১৯-পরবর্তী রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে বৈশ্বিক সরবরাহব্যবস্থা ভেঙে পড়ে, যা বিশ্বব্যাপী মুদ্রাস্ফীতি সৃষ্টি করে। এর প্রভাবে বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কৃষি উপকরণ, কৃষিভিত্তিক শিল্পপণ্য, জ্বালানি তেল ও খাদ্যপণ্য। যদিও বেশির ভাগ দেশ মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে ফিরেছে, বাংলাদেশে তা ক্রমেই বাড়ছে। আমদানিনির্ভরতা, ডলারের মূল্যবৃদ্ধি, এলসি খোলার বিলম্ব, আমদানি-রপ্তানি বিঘ্ন এবং রাজনৈতিক অস্থিরতা কৃষিপণ্যের উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি ও সরবরাহে বিঘ্ন ঘটাচ্ছে, যা মুদ্রাস্ফীতিকে আরও উসকে দিয়েছে।
বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার এবং পূর্ববর্তী সরকারের গ্রহণ করা নীতি, যেমন ক্রলিং পেগ, সুদহার পরিবর্তন, এসবের মাধ্যমে অর্থনীতিতে হস্তক্ষেপ সত্ত্বেও তা কার্যকর হয়নি। পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক বাজারে মুদ্রা সরবরাহের কারণে মুদ্রাস্ফীতি আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।
বাংলাদেশের মুদ্রাস্ফীতির মূল কারণ হচ্ছে কস্ট-পুশ বা উৎপাদন খরচ বৃদ্ধিজনিত মুদ্রাস্ফীতি। এটি নিয়ন্ত্রণে উৎপাদন খরচ কমিয়ে অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বৃদ্ধি করতে হবে। দীর্ঘ মেয়াদে উদ্ভাবনী নীতি এবং সহায়তার মাধ্যমে উৎপাদন খরচ কমানো সম্ভব। বিশেষ করে স্বল্পকালীন কৌশল হিসেবে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ সরবরাহ বাড়ানো এবং খাদ্যপণ্যের দাম মনিটরিং নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের দাম মনিটরিং ও এন্ট্রি-হোর্ডিং রেগুলেশনের বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে, যাতে কেউ কোনোভাবে কৃত্রিম সরবরাহ সংকট তৈরি করে খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি করতে না পারে। আমদানি শুল্ক কমানোর পাশাপাশি ঋণপত্র খোলাতে সহযোগিতা ও সময়মতো পণ্যের ডেলিভারি নিশ্চিত করতে হবে। দীর্ঘ মেয়াদে কৃষিপণ্যের উৎপাদন, সংরক্ষণ ও বাজারব্যবস্থা উন্নয়নে অবকাঠামোতে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। এর মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে এবং আমদানি নির্ভরতা কমে আসবে; যা আমাদের পণ্যের সরবরাহ এবং ডলারের রিজার্ভ বাড়াবে। উৎপাদন কার্যক্রম ও বাজারব্যবস্থা যাতে নিরবচ্ছিন্ন গতিতে চলতে পারে, সেই রকম আইনশৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে না পারলে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা অসম্ভব হয়ে যাবে।
বড় চাওয়া আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি
তাসকীন আহমেদ, সভাপতি, ডিসিসিআই
বাংলাদেশে ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে কয়েকটি বড় চ্যালেঞ্জ বিদ্যমান, যেগুলো দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং স্থিতিশীলতার জন্য প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়িয়েছে। অস্থিতিশীল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ব্যবসায়িক কার্যক্রমে নিরাপত্তাহীনতা সৃষ্টি করছে, কলকারখানার মধ্যে বিভিন্ন ধরনের জটিলতা উৎপাদন ও বাণিজ্যিক কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটাচ্ছে। এ ছাড়া অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা, ব্যাংকিং খাতে উচ্চ সুদের হার, অর্থায়নের অভাব এবং জ্বালানির সরবরাহ সংকট ব্যবসায়ীদের জন্য বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রশাসনিক জটিলতা ও দীর্ঘসূত্রতাও ব্যবসায়িক পরিবেশে অসুবিধা সৃষ্টি করছে, ফলে উৎপাদন খরচ বেড়ে গেছে, ব্যবসার আয় কমছে এবং অর্থনৈতিক অগ্রগতি ব্যাহত হচ্ছে।
নতুন বছরে ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য আমাদের প্রধান প্রত্যাশা হলো আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি, যা বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধি করবে। একটি স্থিতিশীল আইনশৃঙ্খলার পরিবেশ বিনিয়োগকে উৎসাহিত করবে এবং নতুন বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টি করবে। একইভাবে ব্যবসায়িক খাতে যথাযথ অর্থায়ন নিশ্চিত করা জরুরি, বিশেষ করে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের প্রসারের জন্য। এই খাতে আর্থিক সহায়তা বাড়ানোর মাধ্যমে উৎপাদনশীলতা ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধি সম্ভব হবে।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রত্যাশা হলো নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করা। জ্বালানির অনিশ্চিত সরবরাহ উৎপাদন খাতে বড় সমস্যা তৈরি করছে, যা ব্যবসার গতিকে বাধাগ্রস্ত করছে। এই পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে জ্বালানির সুষ্ঠু ও নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি প্রশাসনিক জটিলতা দূর করা অত্যন্ত জরুরি। প্রশাসনিক প্রক্রিয়ার সহজীকরণ ব্যবসায়ীদের খরচ কমাবে।
অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আমাদের এই প্রত্যাশা থাকবে যে তারা ব্যবসায়ীদের জন্য নীতিগত সহায়তা প্রদান করবে এবং নীতিমালা বাস্তবায়নে জটিলতা দূর করবে। বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরি, শিল্পে অর্থায়নের সুযোগ বৃদ্ধি এবং প্রশাসনিক প্রক্রিয়া সহজ করার মাধ্যমে ব্যবসা-বাণিজ্য আরও গতিশীল হবে এবং দেশের অর্থনীতি শক্তিশালী হবে। এসব পদক্ষেপ গ্রহণ করলে বাংলাদেশে ব্যবসা-বাণিজ্য আরও উন্নত হবে এবং অর্থনীতি আরও গতিশীল হবে।
উদ্বেগ কাটাতে চাই ৩ সমস্যার সমাধান
মহিউদ্দিন রুবেল, সাবেক পরিচালক, বিজিএমইএ
২০২৪ সালে পোশাকশিল্প নানা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছিল, যার কারণে কাঙ্ক্ষিত রপ্তানি আয় অর্জন সম্ভব হয়নি। তবে ২০২৫ সালে আমরা বিশ্ব অর্থনীতি এবং পোশাকশিল্পের পুনরুদ্ধারের প্রতি গভীর আশাবাদী। এর জন্য রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা, শিল্প সম্পর্কের উন্নয়ন এবং ব্যাংকিং খাতের সমস্যা সমাধান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে পোশাক খাতের টেকসই বৃদ্ধি নিশ্চিত করতে এই পদক্ষেপগুলো অত্যাবশ্যক। আমরা আশা করি, অন্তর্বর্তী সরকার এই বিষয়গুলো অগ্রাধিকার দিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
২০২৪ সালে ৫০ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ হলেও জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত রপ্তানি আয় ছিল ৩৪.৭১ বিলিয়ন ডলার। ২০২৩ সালের তুলনায় ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হলেও ন্যূনতম মজুরি বৃদ্ধি ও কারখানা বন্ধের মতো অভ্যন্তরীণ চ্যালেঞ্জ শিল্পে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে মজুরি ৫৬ শতাংশ বাড়ানো হলেও জাতীয় নির্বাচনের সময়ে এটি বাস্তবায়নে কিছু জটিলতা সৃষ্টি হয়।
শিল্পটি আরও চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়, যখন সরকার ফেব্রুয়ারিতে রপ্তানি প্রণোদনা ৬০ শতাংশ কমিয়ে দেয়। এদিকে বৈশ্বিক সংঘাত ও অর্থনৈতিক অস্থিরতা ভোক্তাদের ক্রয়ক্ষমতার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। ২০২৪ সালের শেষে আঙ্কটাড বৈশ্বিক পোশাক বাণিজ্যে ৫ শতাংশ হ্রাসের পূর্বাভাস দিয়েছে। মজুরি বৃদ্ধির পরেও পোশাকের ইউনিট মূল্য হ্রাস পেয়েছে।
গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পরিবহন খরচের বৃদ্ধি এবং উচ্চ ব্যাংক সুদের কারণে পোশাকশিল্পের উৎপাদন ব্যয় বেড়েছে, যা বিশেষ করে ছোট ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। জুলাই মাসের আন্দোলনের ফলে কিছু অস্থিরতা তৈরি হলেও পরবর্তী সময়ে রপ্তানিতে সামান্য প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে। অক্টোবর মাসে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানি কিছুটা পুনরুদ্ধার হয়েছে। তবে এসব চ্যালেঞ্জের মধ্যেও পোশাক খাত টেকসই উন্নয়নের দিকে এগিয়েছে, যেমন লিড সনদপ্রাপ্ত কারখানার সংখ্যা বৃদ্ধি এবং অ্যাকটিভ ওয়্যারের মতো নতুন পণ্যের বৈচিত্র্য।
কালের গহ্বরে বিলীন হলো আরেকটি বছর। নতুন বছরের সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে ভবিষ্যতের সমৃদ্ধি গড়ে উঠবে। নতুন বছরে আসতে পারে এমন চ্যালেঞ্জ এবং তা মোকাবিলায় কী পদক্ষেপ নেওয়া উচিত—এ বিষয়ে কথা বলেছেন নীতিনির্ধারক, অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীরা। তাঁদের দৃষ্টিভঙ্গি জানুন আজকের পত্রিকায়, রোকন উদ্দীন ও আসাদুজ্জামান নূর-এর প্রতিবেদনে।
আছে ৬ চ্যালেঞ্জ থাকছে সুযোগও
ড. আব্দুর রাজ্জাক, চেয়ারম্যান, রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্ট (র্যাপিড)
নতুন বছর বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় বড় চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে। মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ শক্তিশালীকরণ এবং ব্যাংকিং খাতের স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা হবে প্রধান অগ্রাধিকার। অনেক ব্যাংক বর্তমানে তারল্যসংকট, পরিচালন দুর্বলতা ও আস্থার সংকটে ভুগছে। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে দ্রুত ও দৃঢ় নীতিগত পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি।
এ ছাড়া আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি ২০২৫ সালে বাংলাদেশের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে থাকবে। চীন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাণিজ্য সংঘাত রপ্তানি খাতের জন্য ঝুঁকি তৈরি করছে এবং যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক পরিবর্তনে এ সংকট আরও বাড়তে পারে, যা সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনাকে আরও জটিল করবে।
রাজস্ব সংগ্রহ বৃদ্ধি দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য জরুরি। আয় না বাড়ালে আর্থিক পরিসর সংকুচিত হয়ে উন্নয়ন কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি হতে পারে। এ জন্য রাজস্বনীতি এমনভাবে প্রণয়ন করতে হবে, যা বৈষম্য হ্রাস ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করে।
পরবর্তী জাতীয় বাজেট একটি বড় পরীক্ষা হবে। আর্থিক ব্যবস্থাপনায় বিশ্বাসযোগ্যতা ফিরিয়ে আনতে স্পষ্ট নীতি ও স্বচ্ছতা প্রয়োজন। শ্বেতপত্রে উঠে আসা সমস্যা মাথায় রেখে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক সুরক্ষার খাতে ব্যয়ের ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে।
পবিত্র রমজানে বাজার স্থিতিশীল রাখতে কার্যকর পদক্ষেপ জরুরি, যাতে নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত শ্রেণি সুরক্ষিত থাকে এবং ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠী বিশেষ সহায়তা পায়।
২০২৫ সাল অর্থনৈতিক সংস্কার ও জনগণের আস্থা পুনঃস্থাপনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ, যেখানে আর্থিক ব্যবস্থায় জবাবদিহি নিশ্চিত করা হবে। অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে জনগণ এ ক্ষেত্রে উদ্ভাবনী নীতি ও বাজেট বাস্তবায়নে দায়িত্বশীলতা প্রত্যাশা করছে। সবশেষে ২০২৫ সালটি চ্যালেঞ্জের হলেও সঠিক পরিকল্পনা ও কার্যকর বাস্তবায়নের মাধ্যমে তা মোকাবিলা সম্ভব। সেখানে সরকারের দৃঢ় পদক্ষেপ ও জনমুখী নীতি অগ্রগতির পথ সুগম করবে।
উৎপাদন খরচ নিয়ন্ত্রণে আনার বিকল্প নেই
ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, কৃষি অর্থনীতিবিদ
কোভিড-১৯-পরবর্তী রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে বৈশ্বিক সরবরাহব্যবস্থা ভেঙে পড়ে, যা বিশ্বব্যাপী মুদ্রাস্ফীতি সৃষ্টি করে। এর প্রভাবে বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কৃষি উপকরণ, কৃষিভিত্তিক শিল্পপণ্য, জ্বালানি তেল ও খাদ্যপণ্য। যদিও বেশির ভাগ দেশ মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে ফিরেছে, বাংলাদেশে তা ক্রমেই বাড়ছে। আমদানিনির্ভরতা, ডলারের মূল্যবৃদ্ধি, এলসি খোলার বিলম্ব, আমদানি-রপ্তানি বিঘ্ন এবং রাজনৈতিক অস্থিরতা কৃষিপণ্যের উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি ও সরবরাহে বিঘ্ন ঘটাচ্ছে, যা মুদ্রাস্ফীতিকে আরও উসকে দিয়েছে।
বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার এবং পূর্ববর্তী সরকারের গ্রহণ করা নীতি, যেমন ক্রলিং পেগ, সুদহার পরিবর্তন, এসবের মাধ্যমে অর্থনীতিতে হস্তক্ষেপ সত্ত্বেও তা কার্যকর হয়নি। পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক বাজারে মুদ্রা সরবরাহের কারণে মুদ্রাস্ফীতি আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।
বাংলাদেশের মুদ্রাস্ফীতির মূল কারণ হচ্ছে কস্ট-পুশ বা উৎপাদন খরচ বৃদ্ধিজনিত মুদ্রাস্ফীতি। এটি নিয়ন্ত্রণে উৎপাদন খরচ কমিয়ে অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বৃদ্ধি করতে হবে। দীর্ঘ মেয়াদে উদ্ভাবনী নীতি এবং সহায়তার মাধ্যমে উৎপাদন খরচ কমানো সম্ভব। বিশেষ করে স্বল্পকালীন কৌশল হিসেবে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ সরবরাহ বাড়ানো এবং খাদ্যপণ্যের দাম মনিটরিং নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের দাম মনিটরিং ও এন্ট্রি-হোর্ডিং রেগুলেশনের বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে, যাতে কেউ কোনোভাবে কৃত্রিম সরবরাহ সংকট তৈরি করে খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি করতে না পারে। আমদানি শুল্ক কমানোর পাশাপাশি ঋণপত্র খোলাতে সহযোগিতা ও সময়মতো পণ্যের ডেলিভারি নিশ্চিত করতে হবে। দীর্ঘ মেয়াদে কৃষিপণ্যের উৎপাদন, সংরক্ষণ ও বাজারব্যবস্থা উন্নয়নে অবকাঠামোতে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। এর মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে এবং আমদানি নির্ভরতা কমে আসবে; যা আমাদের পণ্যের সরবরাহ এবং ডলারের রিজার্ভ বাড়াবে। উৎপাদন কার্যক্রম ও বাজারব্যবস্থা যাতে নিরবচ্ছিন্ন গতিতে চলতে পারে, সেই রকম আইনশৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে না পারলে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা অসম্ভব হয়ে যাবে।
বড় চাওয়া আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি
তাসকীন আহমেদ, সভাপতি, ডিসিসিআই
বাংলাদেশে ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে কয়েকটি বড় চ্যালেঞ্জ বিদ্যমান, যেগুলো দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং স্থিতিশীলতার জন্য প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়িয়েছে। অস্থিতিশীল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ব্যবসায়িক কার্যক্রমে নিরাপত্তাহীনতা সৃষ্টি করছে, কলকারখানার মধ্যে বিভিন্ন ধরনের জটিলতা উৎপাদন ও বাণিজ্যিক কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটাচ্ছে। এ ছাড়া অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা, ব্যাংকিং খাতে উচ্চ সুদের হার, অর্থায়নের অভাব এবং জ্বালানির সরবরাহ সংকট ব্যবসায়ীদের জন্য বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রশাসনিক জটিলতা ও দীর্ঘসূত্রতাও ব্যবসায়িক পরিবেশে অসুবিধা সৃষ্টি করছে, ফলে উৎপাদন খরচ বেড়ে গেছে, ব্যবসার আয় কমছে এবং অর্থনৈতিক অগ্রগতি ব্যাহত হচ্ছে।
নতুন বছরে ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য আমাদের প্রধান প্রত্যাশা হলো আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি, যা বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধি করবে। একটি স্থিতিশীল আইনশৃঙ্খলার পরিবেশ বিনিয়োগকে উৎসাহিত করবে এবং নতুন বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টি করবে। একইভাবে ব্যবসায়িক খাতে যথাযথ অর্থায়ন নিশ্চিত করা জরুরি, বিশেষ করে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের প্রসারের জন্য। এই খাতে আর্থিক সহায়তা বাড়ানোর মাধ্যমে উৎপাদনশীলতা ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধি সম্ভব হবে।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রত্যাশা হলো নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করা। জ্বালানির অনিশ্চিত সরবরাহ উৎপাদন খাতে বড় সমস্যা তৈরি করছে, যা ব্যবসার গতিকে বাধাগ্রস্ত করছে। এই পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে জ্বালানির সুষ্ঠু ও নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি প্রশাসনিক জটিলতা দূর করা অত্যন্ত জরুরি। প্রশাসনিক প্রক্রিয়ার সহজীকরণ ব্যবসায়ীদের খরচ কমাবে।
অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আমাদের এই প্রত্যাশা থাকবে যে তারা ব্যবসায়ীদের জন্য নীতিগত সহায়তা প্রদান করবে এবং নীতিমালা বাস্তবায়নে জটিলতা দূর করবে। বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরি, শিল্পে অর্থায়নের সুযোগ বৃদ্ধি এবং প্রশাসনিক প্রক্রিয়া সহজ করার মাধ্যমে ব্যবসা-বাণিজ্য আরও গতিশীল হবে এবং দেশের অর্থনীতি শক্তিশালী হবে। এসব পদক্ষেপ গ্রহণ করলে বাংলাদেশে ব্যবসা-বাণিজ্য আরও উন্নত হবে এবং অর্থনীতি আরও গতিশীল হবে।
উদ্বেগ কাটাতে চাই ৩ সমস্যার সমাধান
মহিউদ্দিন রুবেল, সাবেক পরিচালক, বিজিএমইএ
২০২৪ সালে পোশাকশিল্প নানা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছিল, যার কারণে কাঙ্ক্ষিত রপ্তানি আয় অর্জন সম্ভব হয়নি। তবে ২০২৫ সালে আমরা বিশ্ব অর্থনীতি এবং পোশাকশিল্পের পুনরুদ্ধারের প্রতি গভীর আশাবাদী। এর জন্য রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা, শিল্প সম্পর্কের উন্নয়ন এবং ব্যাংকিং খাতের সমস্যা সমাধান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে পোশাক খাতের টেকসই বৃদ্ধি নিশ্চিত করতে এই পদক্ষেপগুলো অত্যাবশ্যক। আমরা আশা করি, অন্তর্বর্তী সরকার এই বিষয়গুলো অগ্রাধিকার দিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
২০২৪ সালে ৫০ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ হলেও জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত রপ্তানি আয় ছিল ৩৪.৭১ বিলিয়ন ডলার। ২০২৩ সালের তুলনায় ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হলেও ন্যূনতম মজুরি বৃদ্ধি ও কারখানা বন্ধের মতো অভ্যন্তরীণ চ্যালেঞ্জ শিল্পে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে মজুরি ৫৬ শতাংশ বাড়ানো হলেও জাতীয় নির্বাচনের সময়ে এটি বাস্তবায়নে কিছু জটিলতা সৃষ্টি হয়।
শিল্পটি আরও চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়, যখন সরকার ফেব্রুয়ারিতে রপ্তানি প্রণোদনা ৬০ শতাংশ কমিয়ে দেয়। এদিকে বৈশ্বিক সংঘাত ও অর্থনৈতিক অস্থিরতা ভোক্তাদের ক্রয়ক্ষমতার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। ২০২৪ সালের শেষে আঙ্কটাড বৈশ্বিক পোশাক বাণিজ্যে ৫ শতাংশ হ্রাসের পূর্বাভাস দিয়েছে। মজুরি বৃদ্ধির পরেও পোশাকের ইউনিট মূল্য হ্রাস পেয়েছে।
গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পরিবহন খরচের বৃদ্ধি এবং উচ্চ ব্যাংক সুদের কারণে পোশাকশিল্পের উৎপাদন ব্যয় বেড়েছে, যা বিশেষ করে ছোট ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। জুলাই মাসের আন্দোলনের ফলে কিছু অস্থিরতা তৈরি হলেও পরবর্তী সময়ে রপ্তানিতে সামান্য প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে। অক্টোবর মাসে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানি কিছুটা পুনরুদ্ধার হয়েছে। তবে এসব চ্যালেঞ্জের মধ্যেও পোশাক খাত টেকসই উন্নয়নের দিকে এগিয়েছে, যেমন লিড সনদপ্রাপ্ত কারখানার সংখ্যা বৃদ্ধি এবং অ্যাকটিভ ওয়্যারের মতো নতুন পণ্যের বৈচিত্র্য।
বিশ্ববাজারে সোনার বড় দরপতনের পরদিন দেশের বাজারেও বেশ বড় অঙ্কে সোনার দাম কমিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। টানা আট দফা বাড়ানোর পর সোনার দাম ভরিতে একলাফে ৮ হাজার ৩৮৬ টাকা কমানো হয়েছে।
৪ ঘণ্টা আগেগ্রাহকদের আর্থিক লেনদেন আরও সহজ ও দ্রুততর করতে নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়ায় অবস্থিত বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের ( বিকেএমইএ) প্রাঙ্গণে এটিএম বুথ স্থাপন করেছে আইএফআইসি ব্যাংক।
৪ ঘণ্টা আগেনতুন করে আতপ ও সেদ্ধ চাল, সার, পাঠ্যবই, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও ই-পাসপোর্টের মালামাল কেনার পাশাপাশি চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে জাতীয় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের প্রবেশপথ নির্মাণের সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেছে সরকার। এতে ব্যয় হবে ৩ হাজার ৫৯৫ কোটি টাকার বেশি। আজ বুধবার অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ
৪ ঘণ্টা আগেবাংলাদেশের নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে আলোচনা শেষে পরবর্তী কিস্তি ছাড়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। ডিসেম্বরে নির্ধারিত ৫৫০ কোটি ডলারের ঋণ প্যাকেজের পঞ্চম কিস্তি ছাড়ের আগে সংস্থাটি এ সিদ্ধান্ত জানিয়েছে।
৪ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক
বিশ্ববাজারে সোনার বড় দরপতনের পরদিন দেশের বাজারেও বেশ বড় অঙ্কে সোনার দাম কমিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। টানা আট দফা বাড়ানোর পর সোনার দাম ভরিতে একলাফে ৮ হাজার ৩৮৬ টাকা কমানো হয়েছে।
আগামীকাল বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) থেকে ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম হবে ২ লাখ ৮ হাজার ৯৯৬ টাকা। আজ বুধবার রাতে এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে বাজুস।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি সোনার (পিওর গোল্ড) মূল্য কমেছে। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় সোনার নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।
নতুন দাম অনুযায়ী, দেশের বাজারে প্রতি ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) ২২ ক্যারেটের সোনার দাম পড়বে ২ লাখ ৮ হাজার ৯৯৬ টাকা। এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৯৯ হাজার ৫০১, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৭০ হাজার ৯৯৪ ও সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনার দাম ১ লাখ ৪২ হাজার ২১৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বাজুস আরও জানায়, সোনার বিক্রয়মূল্যের সঙ্গে আবশ্যিকভাবে সরকার-নির্ধারিত ৫ শতাংশ ভ্যাট ও বাজুস-নির্ধারিত ন্যূনতম মজুরি ৬ শতাংশ যুক্ত করতে হবে। তবে গয়নার ডিজাইন ও মানভেদে মজুরির তারতম্য হতে পারে।
সর্বশেষ গত রোববার (১৯ অক্টোবর) দেশের বাজারে সোনার দাম বাড়িয়েছিল বাজুস। সেদিন ভরিতে ১ হাজার ৫০ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ২ লাখ ১৭ হাজার ৩৮২ টাকা নির্ধারণ করেছিল সংগঠনটি।
এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ লাখ ৭ হাজার ৫০৩, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৭৭ হাজার ৮৫৩ ও সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনার দাম ১ লাখ ৪৮ হাজার ৭৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল, যা কার্যকর হয়েছিল পরদিন ২০ অক্টোবর থেকে।
চলতি বছর মোট ৬৭ বার দেশের বাজারে সমন্বয় করা হলো সোনার দাম। দাম বাড়ানো হয়েছে ৪৮ বার আর কমেছে মাত্র ১৯ বার। আর ২০২৪ সালে দেশের বাজারে মোট ৬২ বার সোনার দাম সমন্বয় করা হয়েছিল। তখন ৩৫ বার দাম বাড়ানো হয়েছিল আর কমানো হয়েছিল ২৭ বার।
এদিকে গতকাল মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) বিশ্ববাজারে সোনার দামে পাঁচ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় পতন হয়। মার্কিন সুদের হার কমানোর সম্ভাবনা ও নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে সোনার চাহিদা বেড়ে রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছানোর পর বিনিয়োগকারীরা মুনাফা তুলে নেওয়া শুরু করায় এই দরপতন দেখা যায়।
যুক্তরাষ্ট্রের গতকাল দুপুরে স্পট গোল্ডের দাম প্রতি আউন্সে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ কমে এক সপ্তাহের মধ্যে সর্বনিম্ন ৪ হাজার ১১৫ দশমিক ২৬ ডলারে দাঁড়ায়, যা ২০২০ সালের আগস্টের পর সবচেয়ে বড় দৈনিক পতন।
অথচ আগের দিন সোমবার সোনার দাম ইতিহাসের সর্বোচ্চ ৪ হাজার ৩৮১ দশমিক ২১ ডলারে উঠেছিল। এ বছর এখন পর্যন্ত সোনার দাম প্রায় ৬০ শতাংশ বেড়েছে, যা মূলত ভূরাজনৈতিক অস্থিরতা, অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা, সুদের হার কমার সম্ভাবনা এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর ক্রমাগত সোনা কেনার কারণে সম্ভব হয়েছে।
বাংলাদেশের সোনার বাজারের সঙ্গে সরাসরি বিশ্ববাজারের সম্পৃক্ততা নেই। তবে বাজুসের দাম সমন্বয়ে বিশ্ববাজারের গতি অনুসরণের প্রবণতা দেখা যায়।
বিশ্ববাজারে সোনার বড় দরপতনের পরদিন দেশের বাজারেও বেশ বড় অঙ্কে সোনার দাম কমিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। টানা আট দফা বাড়ানোর পর সোনার দাম ভরিতে একলাফে ৮ হাজার ৩৮৬ টাকা কমানো হয়েছে।
আগামীকাল বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) থেকে ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম হবে ২ লাখ ৮ হাজার ৯৯৬ টাকা। আজ বুধবার রাতে এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে বাজুস।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি সোনার (পিওর গোল্ড) মূল্য কমেছে। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় সোনার নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।
নতুন দাম অনুযায়ী, দেশের বাজারে প্রতি ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) ২২ ক্যারেটের সোনার দাম পড়বে ২ লাখ ৮ হাজার ৯৯৬ টাকা। এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৯৯ হাজার ৫০১, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৭০ হাজার ৯৯৪ ও সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনার দাম ১ লাখ ৪২ হাজার ২১৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বাজুস আরও জানায়, সোনার বিক্রয়মূল্যের সঙ্গে আবশ্যিকভাবে সরকার-নির্ধারিত ৫ শতাংশ ভ্যাট ও বাজুস-নির্ধারিত ন্যূনতম মজুরি ৬ শতাংশ যুক্ত করতে হবে। তবে গয়নার ডিজাইন ও মানভেদে মজুরির তারতম্য হতে পারে।
সর্বশেষ গত রোববার (১৯ অক্টোবর) দেশের বাজারে সোনার দাম বাড়িয়েছিল বাজুস। সেদিন ভরিতে ১ হাজার ৫০ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ২ লাখ ১৭ হাজার ৩৮২ টাকা নির্ধারণ করেছিল সংগঠনটি।
এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ লাখ ৭ হাজার ৫০৩, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৭৭ হাজার ৮৫৩ ও সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনার দাম ১ লাখ ৪৮ হাজার ৭৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল, যা কার্যকর হয়েছিল পরদিন ২০ অক্টোবর থেকে।
চলতি বছর মোট ৬৭ বার দেশের বাজারে সমন্বয় করা হলো সোনার দাম। দাম বাড়ানো হয়েছে ৪৮ বার আর কমেছে মাত্র ১৯ বার। আর ২০২৪ সালে দেশের বাজারে মোট ৬২ বার সোনার দাম সমন্বয় করা হয়েছিল। তখন ৩৫ বার দাম বাড়ানো হয়েছিল আর কমানো হয়েছিল ২৭ বার।
এদিকে গতকাল মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) বিশ্ববাজারে সোনার দামে পাঁচ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় পতন হয়। মার্কিন সুদের হার কমানোর সম্ভাবনা ও নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে সোনার চাহিদা বেড়ে রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছানোর পর বিনিয়োগকারীরা মুনাফা তুলে নেওয়া শুরু করায় এই দরপতন দেখা যায়।
যুক্তরাষ্ট্রের গতকাল দুপুরে স্পট গোল্ডের দাম প্রতি আউন্সে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ কমে এক সপ্তাহের মধ্যে সর্বনিম্ন ৪ হাজার ১১৫ দশমিক ২৬ ডলারে দাঁড়ায়, যা ২০২০ সালের আগস্টের পর সবচেয়ে বড় দৈনিক পতন।
অথচ আগের দিন সোমবার সোনার দাম ইতিহাসের সর্বোচ্চ ৪ হাজার ৩৮১ দশমিক ২১ ডলারে উঠেছিল। এ বছর এখন পর্যন্ত সোনার দাম প্রায় ৬০ শতাংশ বেড়েছে, যা মূলত ভূরাজনৈতিক অস্থিরতা, অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা, সুদের হার কমার সম্ভাবনা এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর ক্রমাগত সোনা কেনার কারণে সম্ভব হয়েছে।
বাংলাদেশের সোনার বাজারের সঙ্গে সরাসরি বিশ্ববাজারের সম্পৃক্ততা নেই। তবে বাজুসের দাম সমন্বয়ে বিশ্ববাজারের গতি অনুসরণের প্রবণতা দেখা যায়।
কালের গহ্বরে বিলীন হলো আরেকটি বছর। নতুন বছরের সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে ভবিষ্যতের সমৃদ্ধি গড়ে উঠবে। নতুন বছরে আসতে পারে এমন চ্যালেঞ্জ এবং তা মোকাবিলায় কী পদক্ষেপ নেওয়া উচিত—এ বিষয়ে কথা বলেছেন নীতিনির্ধারক, অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীরা। তাঁদের দৃষ্টিভঙ্গি জানুন আজকের পত্রিকা
০১ জানুয়ারি ২০২৫গ্রাহকদের আর্থিক লেনদেন আরও সহজ ও দ্রুততর করতে নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়ায় অবস্থিত বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের ( বিকেএমইএ) প্রাঙ্গণে এটিএম বুথ স্থাপন করেছে আইএফআইসি ব্যাংক।
৪ ঘণ্টা আগেনতুন করে আতপ ও সেদ্ধ চাল, সার, পাঠ্যবই, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও ই-পাসপোর্টের মালামাল কেনার পাশাপাশি চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে জাতীয় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের প্রবেশপথ নির্মাণের সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেছে সরকার। এতে ব্যয় হবে ৩ হাজার ৫৯৫ কোটি টাকার বেশি। আজ বুধবার অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ
৪ ঘণ্টা আগেবাংলাদেশের নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে আলোচনা শেষে পরবর্তী কিস্তি ছাড়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। ডিসেম্বরে নির্ধারিত ৫৫০ কোটি ডলারের ঋণ প্যাকেজের পঞ্চম কিস্তি ছাড়ের আগে সংস্থাটি এ সিদ্ধান্ত জানিয়েছে।
৪ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক
গ্রাহকদের আর্থিক লেনদেন আরও সহজ ও দ্রুততর করতে নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়ায় অবস্থিত বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) প্রাঙ্গণে এটিএম বুথ স্থাপন করেছে আইএফআইসি ব্যাংক।
আজ বুধবার বুথটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন ব্যাংকের চেয়ারম্যান মো. মেহমুদ হোসেন এবং বিকেএমইএ প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ হাতেম।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আইএফআইসি ব্যাংকের পক্ষে আরও উপস্থিত ছিলেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মনসুর মোস্তফা; ডিএমডি, সিআইও ও সিআরও মো. মনিতুর রহমান; হেড অব অপারেশনস হেলাল আহমেদ এবং নারায়ণগঞ্জ ব্র্যাঞ্চের চিফ ম্যানেজার আব্দুর রহমান।
অন্যদিকে বিকেএমইএর পক্ষে উপস্থিত ছিলেন এক্সিকিউটিভ প্রেসিডেন্ট ফজলে শামীম এহসান, সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট অমল পোদ্দার, ভাইস প্রেসিডেন্ট (ফাইন্যান্স) মো. মোরশেদ সারোয়ার ও ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ রাশেদ। এ ছাড়া আইএফআইসি ব্যাংক ও বিকেএমইএ প্রতিষ্ঠানের অন্য কর্মকর্তারা এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
বুথটির মাধ্যমে আইএফআইসি ব্যাংকের গ্রাহকেরা সহজে বিভিন্ন সেবা নিতে পারবেন। এর মধ্যে রয়েছে টাকা উত্তোলন, আইএফআইসি বা অন্য ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট ও কার্ডে ফান্ড ট্রান্সফার, ব্যালন্স চেক ও মিনি স্টেটমেন্ট, কার্ড অ্যাকটিভ, পিন পরিবর্তনসহ অন্যান্য এটিএম-সংক্রান্ত বিভিন্ন সেবা।
আইএফআইসি ব্যাংক জানিয়েছে, তারা এ ধরনের পদক্ষেপের মাধ্যমে গ্রাহকদের সুবিধা দেওয়া ও দেশের আর্থিক খাতে ডিজিটাল রূপান্তরের প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
গ্রাহকদের আর্থিক লেনদেন আরও সহজ ও দ্রুততর করতে নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়ায় অবস্থিত বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) প্রাঙ্গণে এটিএম বুথ স্থাপন করেছে আইএফআইসি ব্যাংক।
আজ বুধবার বুথটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন ব্যাংকের চেয়ারম্যান মো. মেহমুদ হোসেন এবং বিকেএমইএ প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ হাতেম।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আইএফআইসি ব্যাংকের পক্ষে আরও উপস্থিত ছিলেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মনসুর মোস্তফা; ডিএমডি, সিআইও ও সিআরও মো. মনিতুর রহমান; হেড অব অপারেশনস হেলাল আহমেদ এবং নারায়ণগঞ্জ ব্র্যাঞ্চের চিফ ম্যানেজার আব্দুর রহমান।
অন্যদিকে বিকেএমইএর পক্ষে উপস্থিত ছিলেন এক্সিকিউটিভ প্রেসিডেন্ট ফজলে শামীম এহসান, সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট অমল পোদ্দার, ভাইস প্রেসিডেন্ট (ফাইন্যান্স) মো. মোরশেদ সারোয়ার ও ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ রাশেদ। এ ছাড়া আইএফআইসি ব্যাংক ও বিকেএমইএ প্রতিষ্ঠানের অন্য কর্মকর্তারা এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
বুথটির মাধ্যমে আইএফআইসি ব্যাংকের গ্রাহকেরা সহজে বিভিন্ন সেবা নিতে পারবেন। এর মধ্যে রয়েছে টাকা উত্তোলন, আইএফআইসি বা অন্য ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট ও কার্ডে ফান্ড ট্রান্সফার, ব্যালন্স চেক ও মিনি স্টেটমেন্ট, কার্ড অ্যাকটিভ, পিন পরিবর্তনসহ অন্যান্য এটিএম-সংক্রান্ত বিভিন্ন সেবা।
আইএফআইসি ব্যাংক জানিয়েছে, তারা এ ধরনের পদক্ষেপের মাধ্যমে গ্রাহকদের সুবিধা দেওয়া ও দেশের আর্থিক খাতে ডিজিটাল রূপান্তরের প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
কালের গহ্বরে বিলীন হলো আরেকটি বছর। নতুন বছরের সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে ভবিষ্যতের সমৃদ্ধি গড়ে উঠবে। নতুন বছরে আসতে পারে এমন চ্যালেঞ্জ এবং তা মোকাবিলায় কী পদক্ষেপ নেওয়া উচিত—এ বিষয়ে কথা বলেছেন নীতিনির্ধারক, অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীরা। তাঁদের দৃষ্টিভঙ্গি জানুন আজকের পত্রিকা
০১ জানুয়ারি ২০২৫বিশ্ববাজারে সোনার বড় দরপতনের পরদিন দেশের বাজারেও বেশ বড় অঙ্কে সোনার দাম কমিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। টানা আট দফা বাড়ানোর পর সোনার দাম ভরিতে একলাফে ৮ হাজার ৩৮৬ টাকা কমানো হয়েছে।
৪ ঘণ্টা আগেনতুন করে আতপ ও সেদ্ধ চাল, সার, পাঠ্যবই, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও ই-পাসপোর্টের মালামাল কেনার পাশাপাশি চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে জাতীয় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের প্রবেশপথ নির্মাণের সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেছে সরকার। এতে ব্যয় হবে ৩ হাজার ৫৯৫ কোটি টাকার বেশি। আজ বুধবার অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ
৪ ঘণ্টা আগেবাংলাদেশের নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে আলোচনা শেষে পরবর্তী কিস্তি ছাড়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। ডিসেম্বরে নির্ধারিত ৫৫০ কোটি ডলারের ঋণ প্যাকেজের পঞ্চম কিস্তি ছাড়ের আগে সংস্থাটি এ সিদ্ধান্ত জানিয়েছে।
৪ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
নতুন করে আতপ ও সেদ্ধ চাল, সার, পাঠ্যবই, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও ই-পাসপোর্টের মালামাল কেনার পাশাপাশি চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে জাতীয় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের প্রবেশপথ নির্মাণের সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেছে সরকার। এতে ব্যয় হবে ৩ হাজার ৫৯৫ কোটি টাকার বেশি। আজ বুধবার অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি ও অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির সভায় এই অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
চাল ও সার আমদানি
আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্র ও জিটুজি চুক্তির মাধ্যমে দুবাই ও মিয়ানমার থেকে এক লাখ টন চাল আমদানি করবে সরকার। এতে ব্যয় হবে ৪৪৬ কোটি ২৩ লাখ টাকা। এর মধ্যে ৫০ হাজার টন আতপ চাল এবং ৫০ হাজার টন বাসমতী ছাড়া অন্য সেদ্ধ চাল।
এ ছাড়া রাশিয়া, মরক্কো ও সৌদি আরব থেকে এক লাখ পাঁচ হাজার টন সার কেনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ইউরিয়া, ডিএপি ও এমওপি সার ক্রয়ে ব্যয় ধরা হয়েছে মোট ৬৬৪ কোটি ৪০ লাখ টাকা।
মাধ্যমিকে সাড়ে ১২ কোটি বই
২০২৬ শিক্ষাবর্ষের মাধ্যমিক (বাংলা ও ইংরেজি ভার্সন), দাখিল ও কারিগরির ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির ১২ কোটি ৫৪ লাখ ৭৫ হাজার ৯৭১টি পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ, বাঁধাই ও সরবরাহের ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি। এতে ব্যয় হবে ৪৪৪ কোটি ৮০ লাখ ৮৭ হাজার ৬৬১ টাকা।
বাফার গুদাম নির্মাণ
বরগুনায় ৫১ কোটি ৭৩ লাখ টাকায় ১০ হাজার টন ধারণক্ষমতাসম্পন্ন বাফার গুদাম নির্মাণকাজের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে যৌথভাবে এমবিএল ও আরএফএল কোম্পানিকে।
দরপত্র ছাড়া জ্বালানি তেল ও ই-পাসপোর্ট ক্রয়
অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির আরেক বৈঠকে ২০২৬ সালে ২৮ লাখ ৫ হাজার টন পরিশোধিত জ্বালানি তেল সরাসরি ক্রয় (দরপত্র ছাড়া) পদ্ধতিতে আমদানি করার নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। জিটুজি ভিত্তিতে আট দেশের ১০ প্রতিষ্ঠান থেকে বিভিন্ন ধরনের তেল আমদানি হবে।
একই বৈঠকে এক কোটি ই-পাসপোর্ট কাঁচামাল ও ৫৭ লাখ ই-পাসপোর্ট বুকলেট সরাসরি জার্মানির ভেরিডোস জিএমবিএইচ কোম্পানি থেকে ক্রয় করারও অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৬৯২ কোটি ৩২ লাখ টাকা।
মিরসরাইয়ে অবকাঠামো উন্নয়ন
চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে জাতীয় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের প্রবেশপথ নির্মাণে ২০৮ কোটি ৯৯ লাখ টাকা ব্যয় অনুমোদন করা হয়েছে। বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) বাস্তবায়িত ‘জাতীয় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল উন্নয়ন প্রকল্পের মিরসরাই-২-এ ও ২বি অর্থনৈতিক অঞ্চল, প্যাকেজ-৩-এর আওতায় প্রবেশপথ নির্মাণে এই অর্থ ব্যয় হবে। উন্মুক্ত দরপত্রে অংশ নেওয়া সাতটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে কারিগরি ও আর্থিকভাবে সর্বনিম্ন দরদাতা মনিকো লিমিটেডকে কাজটি দেওয়ার সুপারিশ করে টেন্ডার ইভালুয়েশন কমিটি (টিইসি)। পরে উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি প্রস্তাবটি অনুমোদন দেয়।
বিদ্যুৎ খাতে বিনিয়োগ
খুলনা বিভাগে পাঁচটি নতুন জিআইএস টাইপ উপকেন্দ্র নির্মাণে ১৪০ কোটি ৭৭ লাখ টাকার ব্যয় অনুমোদন পেয়েছে।
নতুন করে আতপ ও সেদ্ধ চাল, সার, পাঠ্যবই, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও ই-পাসপোর্টের মালামাল কেনার পাশাপাশি চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে জাতীয় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের প্রবেশপথ নির্মাণের সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেছে সরকার। এতে ব্যয় হবে ৩ হাজার ৫৯৫ কোটি টাকার বেশি। আজ বুধবার অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি ও অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির সভায় এই অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
চাল ও সার আমদানি
আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্র ও জিটুজি চুক্তির মাধ্যমে দুবাই ও মিয়ানমার থেকে এক লাখ টন চাল আমদানি করবে সরকার। এতে ব্যয় হবে ৪৪৬ কোটি ২৩ লাখ টাকা। এর মধ্যে ৫০ হাজার টন আতপ চাল এবং ৫০ হাজার টন বাসমতী ছাড়া অন্য সেদ্ধ চাল।
এ ছাড়া রাশিয়া, মরক্কো ও সৌদি আরব থেকে এক লাখ পাঁচ হাজার টন সার কেনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ইউরিয়া, ডিএপি ও এমওপি সার ক্রয়ে ব্যয় ধরা হয়েছে মোট ৬৬৪ কোটি ৪০ লাখ টাকা।
মাধ্যমিকে সাড়ে ১২ কোটি বই
২০২৬ শিক্ষাবর্ষের মাধ্যমিক (বাংলা ও ইংরেজি ভার্সন), দাখিল ও কারিগরির ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির ১২ কোটি ৫৪ লাখ ৭৫ হাজার ৯৭১টি পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ, বাঁধাই ও সরবরাহের ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি। এতে ব্যয় হবে ৪৪৪ কোটি ৮০ লাখ ৮৭ হাজার ৬৬১ টাকা।
বাফার গুদাম নির্মাণ
বরগুনায় ৫১ কোটি ৭৩ লাখ টাকায় ১০ হাজার টন ধারণক্ষমতাসম্পন্ন বাফার গুদাম নির্মাণকাজের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে যৌথভাবে এমবিএল ও আরএফএল কোম্পানিকে।
দরপত্র ছাড়া জ্বালানি তেল ও ই-পাসপোর্ট ক্রয়
অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির আরেক বৈঠকে ২০২৬ সালে ২৮ লাখ ৫ হাজার টন পরিশোধিত জ্বালানি তেল সরাসরি ক্রয় (দরপত্র ছাড়া) পদ্ধতিতে আমদানি করার নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। জিটুজি ভিত্তিতে আট দেশের ১০ প্রতিষ্ঠান থেকে বিভিন্ন ধরনের তেল আমদানি হবে।
একই বৈঠকে এক কোটি ই-পাসপোর্ট কাঁচামাল ও ৫৭ লাখ ই-পাসপোর্ট বুকলেট সরাসরি জার্মানির ভেরিডোস জিএমবিএইচ কোম্পানি থেকে ক্রয় করারও অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৬৯২ কোটি ৩২ লাখ টাকা।
মিরসরাইয়ে অবকাঠামো উন্নয়ন
চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে জাতীয় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের প্রবেশপথ নির্মাণে ২০৮ কোটি ৯৯ লাখ টাকা ব্যয় অনুমোদন করা হয়েছে। বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) বাস্তবায়িত ‘জাতীয় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল উন্নয়ন প্রকল্পের মিরসরাই-২-এ ও ২বি অর্থনৈতিক অঞ্চল, প্যাকেজ-৩-এর আওতায় প্রবেশপথ নির্মাণে এই অর্থ ব্যয় হবে। উন্মুক্ত দরপত্রে অংশ নেওয়া সাতটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে কারিগরি ও আর্থিকভাবে সর্বনিম্ন দরদাতা মনিকো লিমিটেডকে কাজটি দেওয়ার সুপারিশ করে টেন্ডার ইভালুয়েশন কমিটি (টিইসি)। পরে উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি প্রস্তাবটি অনুমোদন দেয়।
বিদ্যুৎ খাতে বিনিয়োগ
খুলনা বিভাগে পাঁচটি নতুন জিআইএস টাইপ উপকেন্দ্র নির্মাণে ১৪০ কোটি ৭৭ লাখ টাকার ব্যয় অনুমোদন পেয়েছে।
কালের গহ্বরে বিলীন হলো আরেকটি বছর। নতুন বছরের সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে ভবিষ্যতের সমৃদ্ধি গড়ে উঠবে। নতুন বছরে আসতে পারে এমন চ্যালেঞ্জ এবং তা মোকাবিলায় কী পদক্ষেপ নেওয়া উচিত—এ বিষয়ে কথা বলেছেন নীতিনির্ধারক, অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীরা। তাঁদের দৃষ্টিভঙ্গি জানুন আজকের পত্রিকা
০১ জানুয়ারি ২০২৫বিশ্ববাজারে সোনার বড় দরপতনের পরদিন দেশের বাজারেও বেশ বড় অঙ্কে সোনার দাম কমিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। টানা আট দফা বাড়ানোর পর সোনার দাম ভরিতে একলাফে ৮ হাজার ৩৮৬ টাকা কমানো হয়েছে।
৪ ঘণ্টা আগেগ্রাহকদের আর্থিক লেনদেন আরও সহজ ও দ্রুততর করতে নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়ায় অবস্থিত বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের ( বিকেএমইএ) প্রাঙ্গণে এটিএম বুথ স্থাপন করেছে আইএফআইসি ব্যাংক।
৪ ঘণ্টা আগেবাংলাদেশের নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে আলোচনা শেষে পরবর্তী কিস্তি ছাড়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। ডিসেম্বরে নির্ধারিত ৫৫০ কোটি ডলারের ঋণ প্যাকেজের পঞ্চম কিস্তি ছাড়ের আগে সংস্থাটি এ সিদ্ধান্ত জানিয়েছে।
৪ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
বাংলাদেশের নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে আলোচনা শেষে পরবর্তী কিস্তি ছাড়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। ডিসেম্বরে নির্ধারিত ৫৫০ কোটি ডলারের ঋণ প্যাকেজের পঞ্চম কিস্তি ছাড়ের আগে সংস্থাটি এ সিদ্ধান্ত জানিয়েছে।
ওয়াশিংটনে আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংকের বার্ষিক সভায় অংশ নিতে সেখানে অবস্থান করছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। তিনি গতকাল বুধবার গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আইএমএফ চায় নির্বাচনের পর গঠিত নতুন সরকারের সঙ্গে পরামর্শ করে পরবর্তী কিস্তি ছাড়ের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে। বাংলাদেশ এ বিষয়ে এখনো সম্মতি বা আপত্তি কোনোটি জানায়নি। আমাদের তেমন আর্থিক চাপ নেই, তাই এটি কোনো সমস্যা নয়।’
গভর্নর আরও বলেন, ‘অর্থ ছাড়ের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো পর্যালোচনা (রিভিউ) প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা। আমরা চাই নীতির ধারাবাহিকতা বজায় থাকুক। সে কারণেই আলোচনা চলছে। নির্বাচন সামনে থাকায় এখন পূর্ণাঙ্গ রিভিউ করা যৌক্তিক নয়। কারণ, রিভিউয়ের সঙ্গে আইএমএফের আর্টিকেল-৪ মিশনও সম্পৃক্ত থাকে। সংস্থাটি চায় নতুন সরকার গঠনের পর তাদের সঙ্গে পরামর্শ করে চূড়ান্ত রিভিউ সম্পন্ন করতে।’
আহসান এইচ মনসুর বলেন, আইএমএফের আর্টিকেল-৪ মিশন অক্টোবরেই আসবে। তারা আংশিকভাবে ঋণ প্যাকেজের অগ্রগতি মূল্যায়ন করবে, তবে চূড়ান্ত রিভিউ হবে না। ফেব্রুয়ারিতে বোর্ডের সভায় সেটি উপস্থাপন করা হবে, তখন জাতীয় নির্বাচনও শেষ হয়ে যাবে।
আইএমএফের ৫৫০ কোটি ডলারের ঋণ প্রতিশ্রুতির মধ্যে বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত প্রায় ৩৬০ কোটি ডলার পেয়েছে। ডিসেম্বর মাসে পঞ্চম কিস্তি ছাড়ের কথা রয়েছে, আর ষষ্ঠ কিস্তি নির্ধারিত আছে আগামী বছরের জুনে। সাধারণত প্রতিটি কিস্তি ছাড়ের আগে আইএমএফ দুই সপ্তাহব্যাপী মূল্যায়ন মিশন পাঠায়, যাতে সংস্কার কার্যক্রমের অগ্রগতি যাচাই করা হয়। সে অনুযায়ী, পঞ্চম কিস্তির মূল্যায়ন কার্যক্রম শুরু করতে ২৯ অক্টোবর ঢাকায় আসছে আইএমএফ মিশন।
বাংলাদেশের নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে আলোচনা শেষে পরবর্তী কিস্তি ছাড়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। ডিসেম্বরে নির্ধারিত ৫৫০ কোটি ডলারের ঋণ প্যাকেজের পঞ্চম কিস্তি ছাড়ের আগে সংস্থাটি এ সিদ্ধান্ত জানিয়েছে।
ওয়াশিংটনে আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংকের বার্ষিক সভায় অংশ নিতে সেখানে অবস্থান করছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। তিনি গতকাল বুধবার গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আইএমএফ চায় নির্বাচনের পর গঠিত নতুন সরকারের সঙ্গে পরামর্শ করে পরবর্তী কিস্তি ছাড়ের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে। বাংলাদেশ এ বিষয়ে এখনো সম্মতি বা আপত্তি কোনোটি জানায়নি। আমাদের তেমন আর্থিক চাপ নেই, তাই এটি কোনো সমস্যা নয়।’
গভর্নর আরও বলেন, ‘অর্থ ছাড়ের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো পর্যালোচনা (রিভিউ) প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা। আমরা চাই নীতির ধারাবাহিকতা বজায় থাকুক। সে কারণেই আলোচনা চলছে। নির্বাচন সামনে থাকায় এখন পূর্ণাঙ্গ রিভিউ করা যৌক্তিক নয়। কারণ, রিভিউয়ের সঙ্গে আইএমএফের আর্টিকেল-৪ মিশনও সম্পৃক্ত থাকে। সংস্থাটি চায় নতুন সরকার গঠনের পর তাদের সঙ্গে পরামর্শ করে চূড়ান্ত রিভিউ সম্পন্ন করতে।’
আহসান এইচ মনসুর বলেন, আইএমএফের আর্টিকেল-৪ মিশন অক্টোবরেই আসবে। তারা আংশিকভাবে ঋণ প্যাকেজের অগ্রগতি মূল্যায়ন করবে, তবে চূড়ান্ত রিভিউ হবে না। ফেব্রুয়ারিতে বোর্ডের সভায় সেটি উপস্থাপন করা হবে, তখন জাতীয় নির্বাচনও শেষ হয়ে যাবে।
আইএমএফের ৫৫০ কোটি ডলারের ঋণ প্রতিশ্রুতির মধ্যে বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত প্রায় ৩৬০ কোটি ডলার পেয়েছে। ডিসেম্বর মাসে পঞ্চম কিস্তি ছাড়ের কথা রয়েছে, আর ষষ্ঠ কিস্তি নির্ধারিত আছে আগামী বছরের জুনে। সাধারণত প্রতিটি কিস্তি ছাড়ের আগে আইএমএফ দুই সপ্তাহব্যাপী মূল্যায়ন মিশন পাঠায়, যাতে সংস্কার কার্যক্রমের অগ্রগতি যাচাই করা হয়। সে অনুযায়ী, পঞ্চম কিস্তির মূল্যায়ন কার্যক্রম শুরু করতে ২৯ অক্টোবর ঢাকায় আসছে আইএমএফ মিশন।
কালের গহ্বরে বিলীন হলো আরেকটি বছর। নতুন বছরের সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে ভবিষ্যতের সমৃদ্ধি গড়ে উঠবে। নতুন বছরে আসতে পারে এমন চ্যালেঞ্জ এবং তা মোকাবিলায় কী পদক্ষেপ নেওয়া উচিত—এ বিষয়ে কথা বলেছেন নীতিনির্ধারক, অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীরা। তাঁদের দৃষ্টিভঙ্গি জানুন আজকের পত্রিকা
০১ জানুয়ারি ২০২৫বিশ্ববাজারে সোনার বড় দরপতনের পরদিন দেশের বাজারেও বেশ বড় অঙ্কে সোনার দাম কমিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। টানা আট দফা বাড়ানোর পর সোনার দাম ভরিতে একলাফে ৮ হাজার ৩৮৬ টাকা কমানো হয়েছে।
৪ ঘণ্টা আগেগ্রাহকদের আর্থিক লেনদেন আরও সহজ ও দ্রুততর করতে নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়ায় অবস্থিত বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের ( বিকেএমইএ) প্রাঙ্গণে এটিএম বুথ স্থাপন করেছে আইএফআইসি ব্যাংক।
৪ ঘণ্টা আগেনতুন করে আতপ ও সেদ্ধ চাল, সার, পাঠ্যবই, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও ই-পাসপোর্টের মালামাল কেনার পাশাপাশি চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে জাতীয় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের প্রবেশপথ নির্মাণের সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেছে সরকার। এতে ব্যয় হবে ৩ হাজার ৫৯৫ কোটি টাকার বেশি। আজ বুধবার অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ
৪ ঘণ্টা আগে