নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
দেশের অর্থনৈতিক সংকট ক্রমেই জটিল হচ্ছে। এর মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা ব্যাংক খাতে। কিন্তু এই অবস্থা থেকে উত্তরণে রাজনৈতিক নেতৃত্বের সঠিক পদক্ষেপ নেই। বরং ব্যাংক খাতে কীভাবে দুর্নীতি করা যায়, সেটা মাথায় রেখেই করা হচ্ছে নিয়মনীতি।
রাজধানীর ব্র্যাক ইন সেন্টারে গতকাল শনিবার এক সেমিনার বক্তারা এসব কথা বলেছেন। ‘রাজনীতি অর্থনীতি: বাংলাদেশ এখন’ শীর্ষক এ সেমিনারের আয়োজন করে ঢাকা ফোরাম। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
দেশে সার্বিক জবাবদিহিতে ধস নেমেছে মন্তব্য করে অর্থনীতিবিদ ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, ‘দুর্নীতিটা সিস্টেমেটিক পর্যায়ে চলে গেছে। ধরা পড়েছে, কিন্তু কিছু হচ্ছে না।’ ব্যাংকিং খাতের দুর্নীতি নিয়ে তিনি বলেন, ‘আগে দুর্নীতি বলতাম টাকা নেওয়াটা। এখন নীতি তৈরি হচ্ছে দুর্নীতির প্রয়োজনে।’
তবে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী একটা দক্ষতা দেখাচ্ছে বলে মন্তব্য করেন এই অর্থনীতিবিদ। তিনি বলেন, ‘খাদে যেন না পড়ে যায়, সেটার জন্য ব্যবস্থা নিচ্ছে। রিজার্ভে ধস নেমে যাচ্ছিল। তাঁরা আমদানি নিয়ন্ত্রণ করে এটাকে বাঁচিয়েছে।’
অনুষ্ঠানে গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের সম্মানীয় ফেলো অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতিকে অত্যন্ত জটিল আখ্যায়িত করে বলেন, মূল্যস্ফীতির সঙ্গে এই এক বছরে আরও দুটি নতুন উপসর্গ যোগ হয়েছে। প্রথমটি হলো দায়দেনা পরিস্থিতির ঝুঁকি। অপরটি প্রবৃদ্ধির ধারা স্লথ হয়ে যাওয়া। দায়দেনার পরিস্থিতি এখন আরও জটিল হয়েছে। এটা ক্রমান্বয়ে বাড়বে। এটা যে শুধু রাজস্বের ওপর চাপ তৈরি করছে তা নয়; এটা বিনিময় হারের ওপরও চাপ তৈরি করছে। বৈদেশিক মুদ্রার মজুত আরও কমিয়ে দিচ্ছে।
অর্থনীতির সার্বিক এই পরিস্থিতির জন্য রাজনৈতিক জবাবদিহি ও স্বচ্ছতার অভাবকে দায়ী করেন দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, নাগরিকের বদলে নতুন একশ্রেণির স্বার্থসংশ্লিষ্ট গোষ্ঠী, ব্যক্তি ও পরিবারে জন্ম হয়েছে। এরা অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে একধরনের কুপ্রভাব তৈরি করেছে। এ কুপ্রভাবের কারণ হলো, তাদের মোকাবিলা করার জন্য যে রাজনৈতিক শক্তি, গণতান্ত্রিকতা ও জবাবদিহির দরকার পড়ে, সেটা অনুপস্থিত।
এই পরিস্থিতির দায় শুধু বর্তমান সরকার ও ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল ও গোষ্ঠীতন্ত্রের ওপর না দিয়ে নাগরিক সমাজ, উৎপাদক শ্রেণির পাশাপাশি সবচেয়ে বেশি হিসেবে বিকল্প রাজনৈতিক শক্তির ওপর দেন দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। বিএনপিকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘আপনারা মূল্যস্ফীতিকে কীভাবে বের করে নিয়ে আসবেন? ব্যাংকিং খাতে যে সংকট, সরকার করতে গিয়েও পারছে না, মার্জার করতে যেয়েও হচ্ছে না, সুদের হার ঠিক করতে পারে না। কিন্তু আপনি কি পারবেন?’
দলটিকে উদ্দেশ করে দেবপ্রিয় আরও বলেন, ‘যতক্ষণ পর্যন্ত বিকল্প কিছু না দিতে পারবেন, ততক্ষণ পর্যন্ত জনগণ আপনার পক্ষে রাস্তায় নামবে না। জনগণ আগের চেয়ে বেশি সচেতন।’
বিএনপির বারবার নির্বাচন বর্জন করারও সমালোচনা করেন দেবপ্রিয়।
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষক ড. আসিফ নজরুল বলেন, ‘বিরোধী দলের প্রতি জনগণের আস্থা নেই, তাই রাস্তায় নেমে আসে না—এটা সরকারের বয়ান। রাস্তায় নেমে আসে না, এটা আপনি বুঝলেন কীভাবে? রাস্তায় নেমে আসলে কী হয়, সেটা তো দেখেছেন।’ আসিফ নজরুল আরও বলেন, ‘২০২৪ সালের নির্বাচন বিএনপি বর্জন করেছে, নাকি বাধ্য করা হয়েছে।’
যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভর্সিটির অধ্যাপক ড. আলী রিয়াজ বলেন, পলিটিক্যাল এলিটরা এখন খুবই ছোট। তাঁদের আবার নির্ভর করতে হয় একজন ব্যক্তির ওপর। তাঁর ইচ্ছা-অনিচ্ছার সঙ্গে কোনোরকম অসংগতি যদি তৈরি হয়, তাহলে তাঁদেরকে ছিটকে পড়তে হয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা অতীতে এবং বিভিন্ন দেশে দেখেছি যে ব্যক্তিকেন্দ্রিক শাসনে যখন পলিটিক্যাল এলিটের সংখ্যা কমে যায় এবং শুধুমাত্র শক্তি প্রয়োগকারী বাহিনীর ওপর নির্ভর করে, তখন এমন একটা পরিস্থিতি তৈরি হয় যে সেটা ভেঙে পড়তে পারে।’
ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমাদের এখানে সমস্যা হলো, বুদ্ধিজীবীরা ছোটখাটো জিনিস নিয়ে অনেক আলোচনা করেন। ব্লু ইকোনমি থেকে বিলিয়ন ডলার আসবে বাংলাদেশে। ব্লু ইকোনমিতে যে রাজনীতি আছে, সেগুলো কিন্তু আমরা ভুলে যাই। অনেক আলোচনা করি, কিন্তু গভীর আলোচনা না করেই আমরা চট করে লুফে নিই।’
সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার, টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, সাবেক ব্যাংকার আবু নাসের বখতিয়ার প্রমুখ।
দেশের অর্থনৈতিক সংকট ক্রমেই জটিল হচ্ছে। এর মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা ব্যাংক খাতে। কিন্তু এই অবস্থা থেকে উত্তরণে রাজনৈতিক নেতৃত্বের সঠিক পদক্ষেপ নেই। বরং ব্যাংক খাতে কীভাবে দুর্নীতি করা যায়, সেটা মাথায় রেখেই করা হচ্ছে নিয়মনীতি।
রাজধানীর ব্র্যাক ইন সেন্টারে গতকাল শনিবার এক সেমিনার বক্তারা এসব কথা বলেছেন। ‘রাজনীতি অর্থনীতি: বাংলাদেশ এখন’ শীর্ষক এ সেমিনারের আয়োজন করে ঢাকা ফোরাম। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
দেশে সার্বিক জবাবদিহিতে ধস নেমেছে মন্তব্য করে অর্থনীতিবিদ ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, ‘দুর্নীতিটা সিস্টেমেটিক পর্যায়ে চলে গেছে। ধরা পড়েছে, কিন্তু কিছু হচ্ছে না।’ ব্যাংকিং খাতের দুর্নীতি নিয়ে তিনি বলেন, ‘আগে দুর্নীতি বলতাম টাকা নেওয়াটা। এখন নীতি তৈরি হচ্ছে দুর্নীতির প্রয়োজনে।’
তবে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী একটা দক্ষতা দেখাচ্ছে বলে মন্তব্য করেন এই অর্থনীতিবিদ। তিনি বলেন, ‘খাদে যেন না পড়ে যায়, সেটার জন্য ব্যবস্থা নিচ্ছে। রিজার্ভে ধস নেমে যাচ্ছিল। তাঁরা আমদানি নিয়ন্ত্রণ করে এটাকে বাঁচিয়েছে।’
অনুষ্ঠানে গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের সম্মানীয় ফেলো অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতিকে অত্যন্ত জটিল আখ্যায়িত করে বলেন, মূল্যস্ফীতির সঙ্গে এই এক বছরে আরও দুটি নতুন উপসর্গ যোগ হয়েছে। প্রথমটি হলো দায়দেনা পরিস্থিতির ঝুঁকি। অপরটি প্রবৃদ্ধির ধারা স্লথ হয়ে যাওয়া। দায়দেনার পরিস্থিতি এখন আরও জটিল হয়েছে। এটা ক্রমান্বয়ে বাড়বে। এটা যে শুধু রাজস্বের ওপর চাপ তৈরি করছে তা নয়; এটা বিনিময় হারের ওপরও চাপ তৈরি করছে। বৈদেশিক মুদ্রার মজুত আরও কমিয়ে দিচ্ছে।
অর্থনীতির সার্বিক এই পরিস্থিতির জন্য রাজনৈতিক জবাবদিহি ও স্বচ্ছতার অভাবকে দায়ী করেন দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, নাগরিকের বদলে নতুন একশ্রেণির স্বার্থসংশ্লিষ্ট গোষ্ঠী, ব্যক্তি ও পরিবারে জন্ম হয়েছে। এরা অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে একধরনের কুপ্রভাব তৈরি করেছে। এ কুপ্রভাবের কারণ হলো, তাদের মোকাবিলা করার জন্য যে রাজনৈতিক শক্তি, গণতান্ত্রিকতা ও জবাবদিহির দরকার পড়ে, সেটা অনুপস্থিত।
এই পরিস্থিতির দায় শুধু বর্তমান সরকার ও ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল ও গোষ্ঠীতন্ত্রের ওপর না দিয়ে নাগরিক সমাজ, উৎপাদক শ্রেণির পাশাপাশি সবচেয়ে বেশি হিসেবে বিকল্প রাজনৈতিক শক্তির ওপর দেন দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। বিএনপিকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘আপনারা মূল্যস্ফীতিকে কীভাবে বের করে নিয়ে আসবেন? ব্যাংকিং খাতে যে সংকট, সরকার করতে গিয়েও পারছে না, মার্জার করতে যেয়েও হচ্ছে না, সুদের হার ঠিক করতে পারে না। কিন্তু আপনি কি পারবেন?’
দলটিকে উদ্দেশ করে দেবপ্রিয় আরও বলেন, ‘যতক্ষণ পর্যন্ত বিকল্প কিছু না দিতে পারবেন, ততক্ষণ পর্যন্ত জনগণ আপনার পক্ষে রাস্তায় নামবে না। জনগণ আগের চেয়ে বেশি সচেতন।’
বিএনপির বারবার নির্বাচন বর্জন করারও সমালোচনা করেন দেবপ্রিয়।
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষক ড. আসিফ নজরুল বলেন, ‘বিরোধী দলের প্রতি জনগণের আস্থা নেই, তাই রাস্তায় নেমে আসে না—এটা সরকারের বয়ান। রাস্তায় নেমে আসে না, এটা আপনি বুঝলেন কীভাবে? রাস্তায় নেমে আসলে কী হয়, সেটা তো দেখেছেন।’ আসিফ নজরুল আরও বলেন, ‘২০২৪ সালের নির্বাচন বিএনপি বর্জন করেছে, নাকি বাধ্য করা হয়েছে।’
যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভর্সিটির অধ্যাপক ড. আলী রিয়াজ বলেন, পলিটিক্যাল এলিটরা এখন খুবই ছোট। তাঁদের আবার নির্ভর করতে হয় একজন ব্যক্তির ওপর। তাঁর ইচ্ছা-অনিচ্ছার সঙ্গে কোনোরকম অসংগতি যদি তৈরি হয়, তাহলে তাঁদেরকে ছিটকে পড়তে হয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা অতীতে এবং বিভিন্ন দেশে দেখেছি যে ব্যক্তিকেন্দ্রিক শাসনে যখন পলিটিক্যাল এলিটের সংখ্যা কমে যায় এবং শুধুমাত্র শক্তি প্রয়োগকারী বাহিনীর ওপর নির্ভর করে, তখন এমন একটা পরিস্থিতি তৈরি হয় যে সেটা ভেঙে পড়তে পারে।’
ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমাদের এখানে সমস্যা হলো, বুদ্ধিজীবীরা ছোটখাটো জিনিস নিয়ে অনেক আলোচনা করেন। ব্লু ইকোনমি থেকে বিলিয়ন ডলার আসবে বাংলাদেশে। ব্লু ইকোনমিতে যে রাজনীতি আছে, সেগুলো কিন্তু আমরা ভুলে যাই। অনেক আলোচনা করি, কিন্তু গভীর আলোচনা না করেই আমরা চট করে লুফে নিই।’
সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার, টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, সাবেক ব্যাংকার আবু নাসের বখতিয়ার প্রমুখ।
বিগত সরকারের আমলে বঞ্চিত ৭ হাজার ২১৫ কর্মকর্তাকে সুপার নিউমারারি পদোন্নতি দিয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী, অগ্রণী, জনতা ও রূপালী ব্যাংক। একসঙ্গে এত কর্মকর্তার পদোন্নতির বিষয় নিয়ে এবার তদন্ত শুরু করেছে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ (এফআইডি)। এতে পদবিসহ সুযোগ-সুবিধা হারানোর আতঙ্কে রয়েছেন পদোন্নতি পাওয়া...
৫ ঘণ্টা আগেবিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে কোটি কোটি টাকা খরচ করে সম্মেলন করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। অথচ এ দেশে আসা এক জাপানি বিনিয়োগকারী চরম প্রতারণা ও বিচারিক দীর্ঘসূত্রতার শিকার হয়ে বিনিয়োগ গুটিয়ে ফিরে যাওয়ার কথা ভাবছেন...
৬ ঘণ্টা আগেএবি ব্যাংকের ৮১৩তম বোর্ড সভায় বিশিষ্ট ব্যাংকার কাইজার এ. চৌধুরী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। এ. চৌধুরীর বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে সিইও এবং পরিচালনা পর্ষদের সদস্য হিসেবে কাজের দীর্ঘ অভিজ্ঞতা রয়েছে।
৭ ঘণ্টা আগেমালয়েশিয়ার শ্রমবাজার খুলে দেওয়ার আলোচনা শুরুর আগে বাংলাদেশের ‘অভিযোগ প্রত্যাহার’ চেয়ে কূটনৈতিক চাপ বাড়াচ্ছে কুয়ালালামপুর। মানব পাচার সংক্রান্ত যুক্তরাষ্ট্রের র্যাংকিংয়ে উন্নতি আনতে মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রণালয় বাংলাদেশকে প্রেরিত এক চিঠিতে বলেছে, ঢাকা থেকে আসা অনেক অভিযোগ ‘ভিত্তিহীন ও অসমর্থিত’..
৭ ঘণ্টা আগে