Ajker Patrika

পাইপলাইনে চট্টগ্রাম থেকে ঘণ্টায় ৪ লাখ লিটার ডিজেল ঢাকায়, বছরে সাশ্রয় ২৩৬ কোটি টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
পাইপলাইনে চট্টগ্রাম থেকে ঘণ্টায় ৪ লাখ লিটার ডিজেল ঢাকায়, বছরে সাশ্রয় ২৩৬ কোটি টাকা

বন্দরনগরী চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় পাইপলাইনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে জ্বালানি তেল সরবরাহ শুরু হলো আজ। ২০টি নদীর তলদেশ দিয়ে প্রায় ২৫০ কিলোমিটারের বেশি পথ পাড়ি দিয়ে ঢাকায় আসবে তেল। আগে প্রচুর সময় ও পরিবহন ব্যয়ের বিনিময়ে ওয়েল কোস্টার বা ট্যাংকারের করে নদীপথে নারায়ণগঞ্জের ডিপোতে তেল পরিবহন করা হতো। পাইপলাইনের মাধ্যমে ঢাকায় ঘণ্টায় চার লাখ লিটার ডিজেল সরবরাহ করা যাবে; সময়ের পাশাপাশি বছরে সাশ্রয় হবে ২৩৬ কোটি টাকা।

আজ শনিবার (১৬ আগস্ট) সকালে চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় পদ্মা অয়েলের ডেসপাস টার্মিনাল এলাকায় আনুষ্ঠানিকভাবে জ্বালানি তেল সরবরাহ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। তবে গত দেড় মাস ধরেই পরীক্ষামূলকভাবে সরবরাহ চলছে। তাতে কোনো সমস্যা পাওয়া যায়নি।

প্রকল্পের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, চলতি বছরের ২২ জুন পাইপ লাইন দিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে ডিজেল সরবরাহ শুরু হয়। গত ৪ অগাস্ট পর্যন্ত চার কোটি ৮২ লাখ লিটার ডিজেল সরবরাহ করা গেছে।

চট্টগ্রামের পতেঙ্গা থেকে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা পর্যন্ত ২৪৯ দশমিক ৪২ কিলোমিটার পাইপলাইনে মোট ৯ কিলোমিটার বিভিন্ন নদীর ১৮ মিটার নিচ দিয়ে। এ পাইপলাইনের দুটি অংশ রয়েছে— একটি চট্টগ্রাম মহানগরীর পতেঙ্গা থেকে ফেনী, কুমিল্লা, চাঁদপুর, মুন্সীগঞ্জ হয়ে নারায়ণগঞ্জের গোদনাইল ডিপো পর্যন্ত। দ্বিতীয় অংশ গোদনাইল থেকে ফতুল্লা পর্যন্ত। পাইপের ব্যাস চট্টগ্রাম থেকে গোদনাইল ১৬ ইঞ্চি, আর গোদনাইল থেকে ফতুল্লা পর্যন্ত ১০ ইঞ্চি। পাইপলাইন ছাড়াও প্রকল্পের আওতায় বুস্টার পাম্প, ৯টি জেনারেটরসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম রয়েছে।

স্বয়ংক্রিয় পাম্পিং ও কন্ট্রোলিং প্রযুক্তিতে পাইপলাইনের মাধ্যমে পতেঙ্গা ডেসপাস টার্মিনাল থেকে কুমিল্লা ও নারায়ণগঞ্জের গোদনাইল ও ফতুল্লা রিসিভিং টার্মিনালে প্রতি ঘণ্টায় চার লাখ লিটারের বেশি জ্বালানি তেল পরিবহন করা সম্ভব হবে।

বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) পাইপলাইনে তেল সরবরাহের প্রকল্প পরিচালক আমিনুল হক সাংবাদিকদের বলেন, পাইপলাইনে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় বছরে ২৭ লাখ টন ডিজেল সরবরাহ করা যাবে।

জ্বালানি উপদেষ্টা বলেন, পূর্বে জ্বালানি পরিবহনে ‘সিস্টেম লসের’ পরিমাণ ছিল অনেক। এখন এটি কমে যাওয়ায় ৪৮ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে। এছাড়া পরিবহনে খরচ ও দুর্নীতিও কমবে। এতে রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় বাদ দিয়েও প্রায় ২৩৬ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সচিব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ার ইন চিফ মেজর জেনারেল মু. হাসান-উজ-জামান। সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের চেয়ারম্যান মো. আমিন উল আহসান। বক্তব্য দেন বিপিসির পরিচালক ড. এ কে এম আজাদুর রহমান।

উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান বলেন, ‘আগে পেট্রোলিয়াম প্রোডাক্ট আমদানি খাতে চার-পাঁচজন বিড করতে পারত। আমরা এটা পরিবর্তন করেছি, ফলে এখন ১০-১২টি প্রতিষ্ঠান বিড করে। আমরা বছরে ১৪০০-১৫০০ কোটি টাকা সেভ করতে সক্ষম হয়েছি। এভাবে আমি যে তিনটি মন্ত্রণালয় দেখি, সেখানে আমরা ৪৫ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় করতে সক্ষম হয়েছি।

‘আমি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে অভিনন্দিত করতে চাই, দুরূহ প্রকল্পটি সমাপ্ত করেছে। আমি আশা করব, সামনের প্রকল্পগুলোতে তারা প্রকল্প ব্যয় সাশ্রয়ী হবে এবং দ্রুততম সময়ে করবে। দ্রুততম সময়ে করলেই কিন্তু ব্যয় সাশ্রয়ী হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হোলি আর্টিজানের ঘটনায় ‘জঙ্গি সন্দেহে’ আটক ছিলেন অনিন্দ্য, রাজশাহীর সাবেক মেয়র লিটনের চাচাতো ভাই তিনি

‘তেলের ক্রেতা’ হিসেবে ভারতকে আর পাবে না রাশিয়া, জানালেন ডোনাল্ড ট্রাম্প

সমুদ্রে তেল-গ্যাস অনুসন্ধান: ভারতীয় দুই কোম্পানির ব্যাংক গ্যারান্টি প্রত্যাহার করল বাংলাদেশ

রাবির অধ্যাপকের বিরুদ্ধে ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ

বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন নিয়ম ভঙ্গের জন্য ট্রান্স নারী শিক্ষার্থীকে আজীবন বহিষ্কার, জানতে চান ১৬২ নাগরিক

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত