Ajker Patrika

সুদ বাড়ার ধাক্কা কর্মসংস্থানে

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৯ আগস্ট ২০২৪, ০৯: ০৪
Thumbnail image

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সরকার এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের বড় কৌশল ছিল সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি বাস্তবায়ন। এ লক্ষ্যে ৯-৬ স্তরের সুদহার তুলে দিয়ে বাজারভিত্তিক সুদহার নীতি বেছে নেওয়া হয়। এর মাধ্যমে সুদহারের সীমা তুলে দেওয়ায় বেসরকারি খাতে কমে যায় ঋণের প্রবাহ। সেই সঙ্গে ডলারের দাম বাড়া ও সরবরাহ সংকটে মূলধনি যন্ত্রপাতি এবং জ্বালানির আমদানিও বাধাগ্রস্ত হয়েছে। আবার সব মিলে ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় ব্যবসায়ীরা বড় বিনিয়োগে যাচ্ছেন না। এতে নতুন প্রকল্প গ্রহণ কিংবা ব্যবসায়িক উদ্যোগে তৈরি হয়েছে বড় ধরনের স্থবিরতা, যার প্রভাব পড়েছে সার্বিক কর্মসংস্থানে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথমার্ধের মুদ্রানীতিতে সুদের হারের সর্বোচ্চ সীমা ৯ শতাংশ তুলে দিয়ে স্মার্ট পদ্ধতিতে সুদের হার নির্ধারণের ভিত্তি ধরা হয় নীতি সুদহার। গত জুলাই মাসে ব্যাংকের সুদের হার ছিল ১০ দশমিক ১০ শতাংশ, যা আগস্ট মাসে এসে দাঁড়িয়েছে ১৫-১৮ শতাংশ। গত এক বছরে সুদের হার বেড়েছে প্রায় কমপক্ষে ৮ শতাংশ। আর আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে তা প্রায় ১০ শতাংশ। এমন অবস্থায় দেশে একদিকে নতুন বিনিয়োগ কমছে, অন্যদিকে বন্ধ হয়ে গেছে অনেক শিল্পকারখানা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, ময়মনসিংহসহ বিভিন্ন পোশাক কারখানা এলাকায় গত ছয় মাসে কমপক্ষে ৩০০ কারখানা বন্ধ হয়েছে। অনেক কারখানা কোনো নোটিশ ছাড়াই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আর কিছু কারখানা বন্ধের কারণ দেখানো হয়েছে, নতুন অর্ডার কমে আসা, বিনিয়োগ কমে যাওয়া এবং উচ্চ সুদের কারণে ব্যবসায় ক্ষতিসাধনের বিষয়টি।

বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম আজকের পত্রিকাকে বলেন, সুদের হার হুহু করে বাড়ছে। এর সীমা আমরা জানি না। আবার পোশাকের অর্ডার কমে যাচ্ছে। ব্যাংকগুলো বকেয়া ঋণ আদায়ে উঠেপড়ে লেগেছে। এমন পরিস্থিতিতে ব্যবসা করা কঠিন। এ জন্য নতুন বিনিয়োগে যেতে চায় না অনেকে। আবার কেউ কেউ কোম্পানি বন্ধ করে অবসায়ন চাচ্ছে। এতে বেকারত্ব বাড়ছে। নতুন কর্মসংস্থানও হচ্ছে না।

এদিকে গত অর্থবছরের জুলাইতে মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬ শতাংশ। যদিও ডিসেম্বরে মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৪১ শতাংশ। দ্বিতীয়ার্ধের মুদ্রানীতিতে মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত ছিল সাড়ে ৭ শতাংশ। কিন্তু অর্থবছর শেষে জুনে মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৭৪ শতাংশ। আর সদ্য বিদায়ী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের গড় মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৭৩ শতাংশ, যা গত ১৩ বছরের সর্বোচ্চ রেকর্ড।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি আশরাফ আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘উচ্চ সুদে ঋণ নিয়ে ব্যবসা করা কঠিন। বিনিয়োগ না বাড়লে ব্যবসা বাধাগ্রস্ত হবে। আর ব্যবসা না চললে কর্মসংস্থান বাধাগ্রস্ত হবে। বিষয়টি আমরা গভর্নরের সঙ্গে দেখা করে বলেছি। আশা করি একটা নতুন নির্দেশনা আসবে।’
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো মেজবাউল হক বলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ ব্যাংক তার সব টুলসই ব্যবহার করেছে। কিন্তু এখনো মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রার কাছাকাছি আসতে পারেনি। মূলত সুদের হার নিয়ন্ত্রণ বাড়িয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এবং টাকার সরবরাহ কমিয়ে পণ্যের দাম কমিয়ে আনার কোনো নীতিই কাজ করছে না। সিন্ডিকেট, ডলারের বিপরীতের টাকার অবমূল্যায়ন এবং বিশ্ববাজারের অনেক বিষয়ের সঙ্গে বাজার নিয়ন্ত্রণ নির্ভর করে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক একা মূল্যস্ফীতি কমাতে পারে না। এ জন্য সবার সহযোগিতা দরকার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নারীদের খেলায় আর নাক গলাবে না, দেশ ও বিশ্ববাসীর কাছে ক্ষমা চাইল ভাঙচুরকারীরা

বিয়ে করলেন সারজিস আলম

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে লড়ছে শ্রীলঙ্কা, ভারত-ইংল্যান্ড ম্যাচ কোথায় দেখবেন

ইতালি নেওয়ার কথা বলে লিবিয়ায় ফরিদপুরের ২ জনকে গুলি করে হত্যা

সাবেক শিক্ষার্থীর প্রাইভেট কারে ধাক্কা, জাবিতে ১২ বাস আটকে ক্ষতিপূরণ আদায় ছাত্রদলের

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত