আসাদুজ্জামান নূর, ঢাকা

মসলাজাতীয় একটি প্রাচীনতম ফসল আদা; যা বাণিজ্যিকভাবে প্রথম মসলাজাতীয় পণ্য হিসেবে এশিয়া থেকে ইউরোপে রপ্তানি হয়েছিল। প্রাচীন গ্রিস এবং রোমানরা এটি ব্যবহার করত। মুখরোচক রান্নায় আদার জুড়ি মেলা ভার। তাই তো প্রায় চার হাজার বছর আগে থেকে রান্নায় আদার ব্যবহার হয়ে আসছে। এর ভেষজ গুণও উপেক্ষার নয়। চিকিৎসার অন্যতম উপকরণ হিসেবে চীনে আদার প্রচলন ঘটে দুই হাজার বছর আগে।
এখন সময় বদলেছে। বিজ্ঞানের প্রসার ঘটেছে। আগের অনেক কিছু হারিয়ে গেলেও টিকে আছে আদার প্রচলন। বরং আধুনিকতার এই সময়ে আদার ব্যবহার, ক্ষেত্র এবং ভোক্তা আগের চেয়ে বহুগুণ বেড়েছে। এ কারণে বিশ্বজুড়ে রান্নার উপকরণের বাইরেও আদার ব্যবহার রূপান্তর হচ্ছে। আচার, পানীয় তৈরিসহ খাদ্য প্রক্রিয়াজাত শিল্পে এর হরেক ব্যবহারের পাশাপাশি ওষুধ এবং সুগন্ধিশিল্পেও অপরিহার্য হয়ে উঠেছে আদা।
দেশীয় বাস্তবতা
বৈশ্বিক বাস্তবতার ছাপ দেশেও পরিলক্ষিত হচ্ছে। তাই আদার ব্যবহার এবং ভোগ—উভয়ই বেড়েছে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) মতে, বিশ্বের আদা উৎপাদনকারী দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান সপ্তম। অন্যদিকে কৃষি অধিদপ্তরের তথ্যমতে, আদার জেনেরিক নাম জিঙ্গিবার, যা মসলার সংস্কৃত নাম সিঙ্গাবেরা এবং গ্রিক জিঙ্গিবেরিস থেকে উদ্ভূত। দেশে এই মসলাজাতীয় পণ্যের চাহিদা বছরে ৪ লাখ ৮০ হাজার টন, কিন্তু উৎপাদিত হয় তার অর্ধেক। আবার উৎপাদন পর্যায়ে মাটিবাহিত রোগ এবং উৎপাদন-পরবর্তী সংরক্ষণের অভাবে ১৫ থেকে ১৮ শতাংশই নষ্ট হয়ে যায়। সব মিলিয়ে প্রতিবছর চাহিদার ঘাটতি পড়ে ৬০ শতাংশের মতো; যা বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা খরচ করে বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানির মাধ্যমে পূরণ করতে হয়; যার ৬০ শতাংশই আসে চীন থেকে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (ডিএই) উদ্ভিদ সংগনিরোধ উইংয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত চার অর্থবছরের হিসাবে চাহিদা পূরণে প্রতিবছর গড়ে ১ লাখ ৩৮ হাজার টন আদা আমদানি করতে হয়েছে। এর মধ্যে ২০২০-২১ অর্থবছরে ১ লাখ ৫৫ হাজার টন, ২০২১-২২ অর্থবছরে ১ লাখ ৬৬ হাজার টন, ২০২২-২৩ অর্থবছরে ১ লাখ ৪১ হাজার টন এবং ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৯১ হাজার টন আদা আমদানি হয়েছে। গত রোববার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রতি কেজি আদা বিক্রি হয়েছে ২৬০ থেকে ৩০০ টাকায়। সারা বছর এর প্রতি কেজির গড় মূল্য ২০০ টাকা বিবেচনায় নেওয়া হলে অভ্যন্তরীণ উৎপাদন এবং আমদানি মিলিয়ে দেশে চাহিদার ৪ লাখ ৮০ হাজার টন আদার বাজারমূল্য ৯ হাজার ৬০০ কোটি টাকা।
বাধা যেখানে
দেশে আদার ঘাটতির অন্যতম কারণ হচ্ছে উৎপাদন কম। অভাব রয়েছে আদা চাষের উপযোগী জমিরও। এটি দীর্ঘমেয়াদি ফসল। প্রায় ১০ মাস সময় লাগে। এত সময় ধরে আদা চাষে অনাগ্রহী কৃষক। তাঁরা একই সময় ওই জমিতে ৩-৪টি অন্য ফসল ফলাতে পারেন, যা লাভজনক। অন্যদিকে তদুপরি দেশীয় প্রেক্ষাপটে জমিতে আদার কন্দপচা রোগের ব্যাপক প্রাদুর্ভাব। এর কারণে কোনো কোনো বছর আদার ফলন ৫০-৮০ ভাগ পর্যন্ত কমে যায়। তখন স্থানীয় বাজারে সরবরাহে বড় ঘাটতি তৈরি হয় এবং দাম চলে যায় সাধারণের নাগালের বাইরে।
আছে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়ার সুযোগ
এসব সমস্যা মোকাবিলা ও ঘাটতি পূরণের লক্ষ্যে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মসলা গবেষণা কেন্দ্রের বিজ্ঞানীরা উদ্ভাবন করেছেন বারি-১, বারি-২, ও বারি-৩ নামে তিনটি উচ্চফলনশীল আদার জাত; যার প্রতি হেক্টরে ফলন ৩০-৩৯ টন। গবেষকেরা বলছেন, বস্তায় আদা চাষের সুবিধা হলো, আবাদি জমির প্রয়োজন হবে না। যেকোনো পতিত জায়গায় চাষ করা যাবে। যেমন বাড়ির আনাচে-কানাচে, রাস্তার পাশে, অফিসে, যেখানে নতুন বাগান হচ্ছে, যেখানে ছায়া কম, সেসব জায়গায় চাষ করা যাবে। জুন-জলাই মাস আদা চাষের উপযুক্ত সময়। ফলনও পাওয়া যাবে চাষের ৭ থেকে ৮ মাসের মধ্যে। প্রাকৃতিক যেকোনো বিপর্যয়ে বস্তা এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় সরিয়ে নেওয়া যায়। এ পদ্ধতিতে একই জায়গায় বারবার মাটির মিশ্রণ তৈরি করে আদাবীজ রোপণ করা যায়। শুধু বস্তা কিনতে হবে। চার-পাঁচ টাকা দাম। বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক ও জৈব সার, ছাই ব্যবহার করে মিশ্রণ করা যেতে পারে।
বস্তায় আদা চাষের সুবিধা সম্পর্কে বগুড়ায় অবস্থিত শিবগঞ্জের মসলা গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আশিকুল ইসলাম নিরু বলেন, ‘মাটিতে আদা চাষে বিদ্যমান অসুবিধার সমাধান মিলেছে বস্তায় আদা চাষে। এই অভিনব পদ্ধতি দেখাচ্ছে ঘাটতি পূরণের সম্ভাবনা। দিচ্ছে স্বনির্ভরতা অর্জনের হাতছানি। দেশে সাড়ে তিন কোটির মতো বসতবাড়ি রয়েছে। এসব বাড়িতে ১০ বস্তা করে আদা চাষ করা হলেও সাড়ে ৩৫ কোটি বস্তা হবে। প্রতি বস্তায় ১ কেজি আদা উৎপাদিত হলেও আমাদের চাহিদা মিটে যাবে; যা প্রতিবছর সাশ্রয় করতে পারে কয়েক হাজার কোটি টাকার আমদানি ব্যয়।’
বাড়ছে জনপ্রিয়তা
বেশ কয়েক বছর ধরে দেশে অনানুষ্ঠানিক ও স্বল্প পরিসরে বস্তায় আদার চাষ শুরু হলেও বছর দুয়েক হলো এর জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এরই মধ্যে বস্তায় আদা চাষে উদ্বুদ্ধ করতে নেওয়া হয়েছে সরকারি প্রকল্প। দেওয়া হচ্ছে প্রশিক্ষণ, বস্তা, বীজ, সার ইত্যাদি। এ ছাড়া কম খরচে অধিক মুনাফা হওয়ায় ব্যক্তি উদ্যোগেও এখন বস্তায় আদা চাষে ঝুঁকছেন অনেকে। ফেসবুক, ইউটিউবসহ বিভিন্ন অনলাইন মাধ্যমে এ পদ্ধতিতে আদার চাষ শিখছেন অনেক তরুণ। যার মাধ্যমে এর চাষাবাদ পদ্ধতি ছড়িয়ে গেছে দেশের সর্বত্র। বাড়ছে আগ্রহ। উৎপাদনে কমছে জমিনির্ভরতা।
এ প্রসঙ্গে মসলার উন্নত জাত ও প্রযুক্তি সম্প্রসারণ প্রকল্পের পরিচালক রাসেল আহমেদ আজকের পত্রিকাকে জানান, প্রকল্পের অধীনে এ নিয়ে দুই বছর বস্তায় আদা চাষ হয়েছে। এ বছর প্রকল্প ও ব্যক্তি উদ্যোগ মিলিয়ে প্রায় ১ কোটি ৮ লাখ বস্তায় আদা চাষ হয়েছে; যা থেকে প্রায় ১০ হাজার টন আদা উৎপাদিত হবে। এটি কেবল সরকারি হিসাব। এর বাইরে ব্যক্তিগত উদ্যোগেও অনেকে বস্তায় আদা চাষ করছেন। আগে এ-সম্পর্কিত কোনো জরিপ করা হয়নি। তবে পরিসংখ্যান না থাকলেও সন্দেহাতীতভাবে বলা যায়, উৎপাদন ছিল অনেক কম; যা এখন সারা দেশে ক্রমবর্ধমান হারে বাড়ছে।
এ পদ্ধতির চর্চা অব্যাহত থাকলে ভবিষ্যতে জমির ওপর চাপ কমিয়ে স্থানীয় আদার চাহিদা পূরণ সম্ভব হবে বলেও জানান তিনি।
খরচ কম, মুনাফা বেশি
মসলার গবেষক ড. আশিকুল ইসলাম নিরু বলেন, বস্তায় আদা চাষে উৎপাদন খরচ অনেক কম। এক বস্তায় ৫০-৬০ গ্রাম বীজ হলেই হয়, আর চাষের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত এক বস্তায় খরচ ৫০ থেকে ৬০ টাকা। কিন্তু আদার ফলন যদি প্রতি বস্তায় এক কেজি হলেও কৃষক ন্যূনতম ২০০ টাকায় তা বিক্রি করতে পারবেন। অর্থাৎ মুনাফা ১৫০ টাকা। আর ১৫০ টাকায় বিক্রি করলেও ১০০ টাকা লাভ হবে।
সফলতার গল্প
ছোটবেলা থেকে শখের বশে পশুপাখি লালনপালনসহ কৃষিকাজে বেশ মনোযোগী সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার রানীগঞ্জ ইউনিয়নের গন্ধর্বপুর গ্রামের তরুণ ফখরুল ইসলাম। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘ইউটিউবে ভিডিও দেখে আগ্রহী হই। পরে উপজেলা কৃষি কার্যালয়ের সহযোগিতায় প্রথমবার বাড়ির আঙিনায় ২৬০টি বস্তায় আদা চাষ করেছি। প্রতি বস্তায় ৩০ টাকা হিসাবে প্রায় ৮ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। বর্তমানে আদাগাছের যে ফলন দেখা যাচ্ছে, তাতে মনে হচ্ছে, প্রতি বস্তায় দেড় কেজি আদা পাওয়া যাবে। উৎপাদিত হবে প্রায় ৪০০ কেজি। স্থানীয় বাজারে বর্তমানে আদার দাম কেজিতে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা। আশা করছি, এতে প্রায় ৭০ হাজার টাকার বেশি লাভ হবে।’
৪৫০ বস্তায় ১৫ কেজি আদা রোপণ করেছেন রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার জয়নগর ইউনিয়নের মাড়িয়া গ্রামের উজ্জ্বল শেখ। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, এখন ২ ফুটের বেশি লম্বা হয়েছে গাছ। প্রতি বস্তায় ১ কেজি হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
সিরাজগঞ্জের কামারখন্দে ১২টি ব্লকে ২৫ জন কৃষক প্রায় দেড় হাজার বস্তায় আদা চাষ করেছেন। প্রতি বস্তায় দুই কেজির বেশি আদার ফলন হতে পারে। এতে প্রায় তিন হাজার কেজি আদা উৎপাদিত হবে।
ফুলজোড় নদীর নুরনগর তালপট্টি চরের কৃষক লিটন আলী শেখ আজকের পত্রিকাকে বলেন, একদিকে জমিতে ভিন্ন ফসল এবং খালি পড়ে থাকা জায়গায় বস্তায় আদা চাষ করায় বাড়তি আয়ের সুযোগ তৈরি হয়েছে।
আদার পুষ্টিগুণ এবং ঔষধি ব্যবহার
আদায় রয়েছে পটাশিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, সোডিয়াম, জিংক, ম্যাঙ্গানিজ, ভিটামিন এ, বি৬, ই ও সি এবং অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এজেন্ট ও অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি এজেন্ট। এ ছাড়া প্রতি ১০০ গ্রাম আদায় রয়েছে ক্যালরি ৮০, প্রোটিন ১.৮২ গ্রাম, কার্বোহাইড্রেট ১৭.৮ গ্রাম (ডায়েটারি ফাইবার ২ গ্রাম), টোটাল ফ্যাট ০.৭৫ গ্রাম, মিনারেল ৭৮.৯ গ্রাম। এসব কারণে সব বয়সী মানুষ আদা খেতে পারেন, বিশেষ করে শিশুদের জন্য আদা-মধু-পানি সুস্থ দেহ ও সতেজ মনের জন্য খুবই কার্যকর। অন্যদিকে ভেষজ ওষুধ হিসেবে দেশে আদার বহুল ব্যবহার রয়েছে। মুখের রুচি বাড়াতে ও বদহজম রোধে আদা শুকিয়ে চিবিয়ে খাওয়া হয়। এ ছাড়া সর্দি, কাশি, আমাশয়, জন্ডিস, পেট ফাঁপায় আদা চিবিয়ে বা রস করে খাওয়া হয়। হৃদ্যন্ত্রের কার্যকারিতা বজায় রাখার পাশাপাশি অনেক গোপন সমস্যা দূর করতেও সহায়ক আদা।
[প্রতিবেদনে সহযোগিতা করেছেন জগন্নাথপুর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি ও কামারখন্দ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি।]

মসলাজাতীয় একটি প্রাচীনতম ফসল আদা; যা বাণিজ্যিকভাবে প্রথম মসলাজাতীয় পণ্য হিসেবে এশিয়া থেকে ইউরোপে রপ্তানি হয়েছিল। প্রাচীন গ্রিস এবং রোমানরা এটি ব্যবহার করত। মুখরোচক রান্নায় আদার জুড়ি মেলা ভার। তাই তো প্রায় চার হাজার বছর আগে থেকে রান্নায় আদার ব্যবহার হয়ে আসছে। এর ভেষজ গুণও উপেক্ষার নয়। চিকিৎসার অন্যতম উপকরণ হিসেবে চীনে আদার প্রচলন ঘটে দুই হাজার বছর আগে।
এখন সময় বদলেছে। বিজ্ঞানের প্রসার ঘটেছে। আগের অনেক কিছু হারিয়ে গেলেও টিকে আছে আদার প্রচলন। বরং আধুনিকতার এই সময়ে আদার ব্যবহার, ক্ষেত্র এবং ভোক্তা আগের চেয়ে বহুগুণ বেড়েছে। এ কারণে বিশ্বজুড়ে রান্নার উপকরণের বাইরেও আদার ব্যবহার রূপান্তর হচ্ছে। আচার, পানীয় তৈরিসহ খাদ্য প্রক্রিয়াজাত শিল্পে এর হরেক ব্যবহারের পাশাপাশি ওষুধ এবং সুগন্ধিশিল্পেও অপরিহার্য হয়ে উঠেছে আদা।
দেশীয় বাস্তবতা
বৈশ্বিক বাস্তবতার ছাপ দেশেও পরিলক্ষিত হচ্ছে। তাই আদার ব্যবহার এবং ভোগ—উভয়ই বেড়েছে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) মতে, বিশ্বের আদা উৎপাদনকারী দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান সপ্তম। অন্যদিকে কৃষি অধিদপ্তরের তথ্যমতে, আদার জেনেরিক নাম জিঙ্গিবার, যা মসলার সংস্কৃত নাম সিঙ্গাবেরা এবং গ্রিক জিঙ্গিবেরিস থেকে উদ্ভূত। দেশে এই মসলাজাতীয় পণ্যের চাহিদা বছরে ৪ লাখ ৮০ হাজার টন, কিন্তু উৎপাদিত হয় তার অর্ধেক। আবার উৎপাদন পর্যায়ে মাটিবাহিত রোগ এবং উৎপাদন-পরবর্তী সংরক্ষণের অভাবে ১৫ থেকে ১৮ শতাংশই নষ্ট হয়ে যায়। সব মিলিয়ে প্রতিবছর চাহিদার ঘাটতি পড়ে ৬০ শতাংশের মতো; যা বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা খরচ করে বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানির মাধ্যমে পূরণ করতে হয়; যার ৬০ শতাংশই আসে চীন থেকে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (ডিএই) উদ্ভিদ সংগনিরোধ উইংয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত চার অর্থবছরের হিসাবে চাহিদা পূরণে প্রতিবছর গড়ে ১ লাখ ৩৮ হাজার টন আদা আমদানি করতে হয়েছে। এর মধ্যে ২০২০-২১ অর্থবছরে ১ লাখ ৫৫ হাজার টন, ২০২১-২২ অর্থবছরে ১ লাখ ৬৬ হাজার টন, ২০২২-২৩ অর্থবছরে ১ লাখ ৪১ হাজার টন এবং ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৯১ হাজার টন আদা আমদানি হয়েছে। গত রোববার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রতি কেজি আদা বিক্রি হয়েছে ২৬০ থেকে ৩০০ টাকায়। সারা বছর এর প্রতি কেজির গড় মূল্য ২০০ টাকা বিবেচনায় নেওয়া হলে অভ্যন্তরীণ উৎপাদন এবং আমদানি মিলিয়ে দেশে চাহিদার ৪ লাখ ৮০ হাজার টন আদার বাজারমূল্য ৯ হাজার ৬০০ কোটি টাকা।
বাধা যেখানে
দেশে আদার ঘাটতির অন্যতম কারণ হচ্ছে উৎপাদন কম। অভাব রয়েছে আদা চাষের উপযোগী জমিরও। এটি দীর্ঘমেয়াদি ফসল। প্রায় ১০ মাস সময় লাগে। এত সময় ধরে আদা চাষে অনাগ্রহী কৃষক। তাঁরা একই সময় ওই জমিতে ৩-৪টি অন্য ফসল ফলাতে পারেন, যা লাভজনক। অন্যদিকে তদুপরি দেশীয় প্রেক্ষাপটে জমিতে আদার কন্দপচা রোগের ব্যাপক প্রাদুর্ভাব। এর কারণে কোনো কোনো বছর আদার ফলন ৫০-৮০ ভাগ পর্যন্ত কমে যায়। তখন স্থানীয় বাজারে সরবরাহে বড় ঘাটতি তৈরি হয় এবং দাম চলে যায় সাধারণের নাগালের বাইরে।
আছে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়ার সুযোগ
এসব সমস্যা মোকাবিলা ও ঘাটতি পূরণের লক্ষ্যে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মসলা গবেষণা কেন্দ্রের বিজ্ঞানীরা উদ্ভাবন করেছেন বারি-১, বারি-২, ও বারি-৩ নামে তিনটি উচ্চফলনশীল আদার জাত; যার প্রতি হেক্টরে ফলন ৩০-৩৯ টন। গবেষকেরা বলছেন, বস্তায় আদা চাষের সুবিধা হলো, আবাদি জমির প্রয়োজন হবে না। যেকোনো পতিত জায়গায় চাষ করা যাবে। যেমন বাড়ির আনাচে-কানাচে, রাস্তার পাশে, অফিসে, যেখানে নতুন বাগান হচ্ছে, যেখানে ছায়া কম, সেসব জায়গায় চাষ করা যাবে। জুন-জলাই মাস আদা চাষের উপযুক্ত সময়। ফলনও পাওয়া যাবে চাষের ৭ থেকে ৮ মাসের মধ্যে। প্রাকৃতিক যেকোনো বিপর্যয়ে বস্তা এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় সরিয়ে নেওয়া যায়। এ পদ্ধতিতে একই জায়গায় বারবার মাটির মিশ্রণ তৈরি করে আদাবীজ রোপণ করা যায়। শুধু বস্তা কিনতে হবে। চার-পাঁচ টাকা দাম। বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক ও জৈব সার, ছাই ব্যবহার করে মিশ্রণ করা যেতে পারে।
বস্তায় আদা চাষের সুবিধা সম্পর্কে বগুড়ায় অবস্থিত শিবগঞ্জের মসলা গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আশিকুল ইসলাম নিরু বলেন, ‘মাটিতে আদা চাষে বিদ্যমান অসুবিধার সমাধান মিলেছে বস্তায় আদা চাষে। এই অভিনব পদ্ধতি দেখাচ্ছে ঘাটতি পূরণের সম্ভাবনা। দিচ্ছে স্বনির্ভরতা অর্জনের হাতছানি। দেশে সাড়ে তিন কোটির মতো বসতবাড়ি রয়েছে। এসব বাড়িতে ১০ বস্তা করে আদা চাষ করা হলেও সাড়ে ৩৫ কোটি বস্তা হবে। প্রতি বস্তায় ১ কেজি আদা উৎপাদিত হলেও আমাদের চাহিদা মিটে যাবে; যা প্রতিবছর সাশ্রয় করতে পারে কয়েক হাজার কোটি টাকার আমদানি ব্যয়।’
বাড়ছে জনপ্রিয়তা
বেশ কয়েক বছর ধরে দেশে অনানুষ্ঠানিক ও স্বল্প পরিসরে বস্তায় আদার চাষ শুরু হলেও বছর দুয়েক হলো এর জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এরই মধ্যে বস্তায় আদা চাষে উদ্বুদ্ধ করতে নেওয়া হয়েছে সরকারি প্রকল্প। দেওয়া হচ্ছে প্রশিক্ষণ, বস্তা, বীজ, সার ইত্যাদি। এ ছাড়া কম খরচে অধিক মুনাফা হওয়ায় ব্যক্তি উদ্যোগেও এখন বস্তায় আদা চাষে ঝুঁকছেন অনেকে। ফেসবুক, ইউটিউবসহ বিভিন্ন অনলাইন মাধ্যমে এ পদ্ধতিতে আদার চাষ শিখছেন অনেক তরুণ। যার মাধ্যমে এর চাষাবাদ পদ্ধতি ছড়িয়ে গেছে দেশের সর্বত্র। বাড়ছে আগ্রহ। উৎপাদনে কমছে জমিনির্ভরতা।
এ প্রসঙ্গে মসলার উন্নত জাত ও প্রযুক্তি সম্প্রসারণ প্রকল্পের পরিচালক রাসেল আহমেদ আজকের পত্রিকাকে জানান, প্রকল্পের অধীনে এ নিয়ে দুই বছর বস্তায় আদা চাষ হয়েছে। এ বছর প্রকল্প ও ব্যক্তি উদ্যোগ মিলিয়ে প্রায় ১ কোটি ৮ লাখ বস্তায় আদা চাষ হয়েছে; যা থেকে প্রায় ১০ হাজার টন আদা উৎপাদিত হবে। এটি কেবল সরকারি হিসাব। এর বাইরে ব্যক্তিগত উদ্যোগেও অনেকে বস্তায় আদা চাষ করছেন। আগে এ-সম্পর্কিত কোনো জরিপ করা হয়নি। তবে পরিসংখ্যান না থাকলেও সন্দেহাতীতভাবে বলা যায়, উৎপাদন ছিল অনেক কম; যা এখন সারা দেশে ক্রমবর্ধমান হারে বাড়ছে।
এ পদ্ধতির চর্চা অব্যাহত থাকলে ভবিষ্যতে জমির ওপর চাপ কমিয়ে স্থানীয় আদার চাহিদা পূরণ সম্ভব হবে বলেও জানান তিনি।
খরচ কম, মুনাফা বেশি
মসলার গবেষক ড. আশিকুল ইসলাম নিরু বলেন, বস্তায় আদা চাষে উৎপাদন খরচ অনেক কম। এক বস্তায় ৫০-৬০ গ্রাম বীজ হলেই হয়, আর চাষের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত এক বস্তায় খরচ ৫০ থেকে ৬০ টাকা। কিন্তু আদার ফলন যদি প্রতি বস্তায় এক কেজি হলেও কৃষক ন্যূনতম ২০০ টাকায় তা বিক্রি করতে পারবেন। অর্থাৎ মুনাফা ১৫০ টাকা। আর ১৫০ টাকায় বিক্রি করলেও ১০০ টাকা লাভ হবে।
সফলতার গল্প
ছোটবেলা থেকে শখের বশে পশুপাখি লালনপালনসহ কৃষিকাজে বেশ মনোযোগী সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার রানীগঞ্জ ইউনিয়নের গন্ধর্বপুর গ্রামের তরুণ ফখরুল ইসলাম। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘ইউটিউবে ভিডিও দেখে আগ্রহী হই। পরে উপজেলা কৃষি কার্যালয়ের সহযোগিতায় প্রথমবার বাড়ির আঙিনায় ২৬০টি বস্তায় আদা চাষ করেছি। প্রতি বস্তায় ৩০ টাকা হিসাবে প্রায় ৮ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। বর্তমানে আদাগাছের যে ফলন দেখা যাচ্ছে, তাতে মনে হচ্ছে, প্রতি বস্তায় দেড় কেজি আদা পাওয়া যাবে। উৎপাদিত হবে প্রায় ৪০০ কেজি। স্থানীয় বাজারে বর্তমানে আদার দাম কেজিতে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা। আশা করছি, এতে প্রায় ৭০ হাজার টাকার বেশি লাভ হবে।’
৪৫০ বস্তায় ১৫ কেজি আদা রোপণ করেছেন রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার জয়নগর ইউনিয়নের মাড়িয়া গ্রামের উজ্জ্বল শেখ। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, এখন ২ ফুটের বেশি লম্বা হয়েছে গাছ। প্রতি বস্তায় ১ কেজি হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
সিরাজগঞ্জের কামারখন্দে ১২টি ব্লকে ২৫ জন কৃষক প্রায় দেড় হাজার বস্তায় আদা চাষ করেছেন। প্রতি বস্তায় দুই কেজির বেশি আদার ফলন হতে পারে। এতে প্রায় তিন হাজার কেজি আদা উৎপাদিত হবে।
ফুলজোড় নদীর নুরনগর তালপট্টি চরের কৃষক লিটন আলী শেখ আজকের পত্রিকাকে বলেন, একদিকে জমিতে ভিন্ন ফসল এবং খালি পড়ে থাকা জায়গায় বস্তায় আদা চাষ করায় বাড়তি আয়ের সুযোগ তৈরি হয়েছে।
আদার পুষ্টিগুণ এবং ঔষধি ব্যবহার
আদায় রয়েছে পটাশিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, সোডিয়াম, জিংক, ম্যাঙ্গানিজ, ভিটামিন এ, বি৬, ই ও সি এবং অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এজেন্ট ও অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি এজেন্ট। এ ছাড়া প্রতি ১০০ গ্রাম আদায় রয়েছে ক্যালরি ৮০, প্রোটিন ১.৮২ গ্রাম, কার্বোহাইড্রেট ১৭.৮ গ্রাম (ডায়েটারি ফাইবার ২ গ্রাম), টোটাল ফ্যাট ০.৭৫ গ্রাম, মিনারেল ৭৮.৯ গ্রাম। এসব কারণে সব বয়সী মানুষ আদা খেতে পারেন, বিশেষ করে শিশুদের জন্য আদা-মধু-পানি সুস্থ দেহ ও সতেজ মনের জন্য খুবই কার্যকর। অন্যদিকে ভেষজ ওষুধ হিসেবে দেশে আদার বহুল ব্যবহার রয়েছে। মুখের রুচি বাড়াতে ও বদহজম রোধে আদা শুকিয়ে চিবিয়ে খাওয়া হয়। এ ছাড়া সর্দি, কাশি, আমাশয়, জন্ডিস, পেট ফাঁপায় আদা চিবিয়ে বা রস করে খাওয়া হয়। হৃদ্যন্ত্রের কার্যকারিতা বজায় রাখার পাশাপাশি অনেক গোপন সমস্যা দূর করতেও সহায়ক আদা।
[প্রতিবেদনে সহযোগিতা করেছেন জগন্নাথপুর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি ও কামারখন্দ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি।]
আসাদুজ্জামান নূর, ঢাকা

মসলাজাতীয় একটি প্রাচীনতম ফসল আদা; যা বাণিজ্যিকভাবে প্রথম মসলাজাতীয় পণ্য হিসেবে এশিয়া থেকে ইউরোপে রপ্তানি হয়েছিল। প্রাচীন গ্রিস এবং রোমানরা এটি ব্যবহার করত। মুখরোচক রান্নায় আদার জুড়ি মেলা ভার। তাই তো প্রায় চার হাজার বছর আগে থেকে রান্নায় আদার ব্যবহার হয়ে আসছে। এর ভেষজ গুণও উপেক্ষার নয়। চিকিৎসার অন্যতম উপকরণ হিসেবে চীনে আদার প্রচলন ঘটে দুই হাজার বছর আগে।
এখন সময় বদলেছে। বিজ্ঞানের প্রসার ঘটেছে। আগের অনেক কিছু হারিয়ে গেলেও টিকে আছে আদার প্রচলন। বরং আধুনিকতার এই সময়ে আদার ব্যবহার, ক্ষেত্র এবং ভোক্তা আগের চেয়ে বহুগুণ বেড়েছে। এ কারণে বিশ্বজুড়ে রান্নার উপকরণের বাইরেও আদার ব্যবহার রূপান্তর হচ্ছে। আচার, পানীয় তৈরিসহ খাদ্য প্রক্রিয়াজাত শিল্পে এর হরেক ব্যবহারের পাশাপাশি ওষুধ এবং সুগন্ধিশিল্পেও অপরিহার্য হয়ে উঠেছে আদা।
দেশীয় বাস্তবতা
বৈশ্বিক বাস্তবতার ছাপ দেশেও পরিলক্ষিত হচ্ছে। তাই আদার ব্যবহার এবং ভোগ—উভয়ই বেড়েছে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) মতে, বিশ্বের আদা উৎপাদনকারী দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান সপ্তম। অন্যদিকে কৃষি অধিদপ্তরের তথ্যমতে, আদার জেনেরিক নাম জিঙ্গিবার, যা মসলার সংস্কৃত নাম সিঙ্গাবেরা এবং গ্রিক জিঙ্গিবেরিস থেকে উদ্ভূত। দেশে এই মসলাজাতীয় পণ্যের চাহিদা বছরে ৪ লাখ ৮০ হাজার টন, কিন্তু উৎপাদিত হয় তার অর্ধেক। আবার উৎপাদন পর্যায়ে মাটিবাহিত রোগ এবং উৎপাদন-পরবর্তী সংরক্ষণের অভাবে ১৫ থেকে ১৮ শতাংশই নষ্ট হয়ে যায়। সব মিলিয়ে প্রতিবছর চাহিদার ঘাটতি পড়ে ৬০ শতাংশের মতো; যা বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা খরচ করে বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানির মাধ্যমে পূরণ করতে হয়; যার ৬০ শতাংশই আসে চীন থেকে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (ডিএই) উদ্ভিদ সংগনিরোধ উইংয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত চার অর্থবছরের হিসাবে চাহিদা পূরণে প্রতিবছর গড়ে ১ লাখ ৩৮ হাজার টন আদা আমদানি করতে হয়েছে। এর মধ্যে ২০২০-২১ অর্থবছরে ১ লাখ ৫৫ হাজার টন, ২০২১-২২ অর্থবছরে ১ লাখ ৬৬ হাজার টন, ২০২২-২৩ অর্থবছরে ১ লাখ ৪১ হাজার টন এবং ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৯১ হাজার টন আদা আমদানি হয়েছে। গত রোববার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রতি কেজি আদা বিক্রি হয়েছে ২৬০ থেকে ৩০০ টাকায়। সারা বছর এর প্রতি কেজির গড় মূল্য ২০০ টাকা বিবেচনায় নেওয়া হলে অভ্যন্তরীণ উৎপাদন এবং আমদানি মিলিয়ে দেশে চাহিদার ৪ লাখ ৮০ হাজার টন আদার বাজারমূল্য ৯ হাজার ৬০০ কোটি টাকা।
বাধা যেখানে
দেশে আদার ঘাটতির অন্যতম কারণ হচ্ছে উৎপাদন কম। অভাব রয়েছে আদা চাষের উপযোগী জমিরও। এটি দীর্ঘমেয়াদি ফসল। প্রায় ১০ মাস সময় লাগে। এত সময় ধরে আদা চাষে অনাগ্রহী কৃষক। তাঁরা একই সময় ওই জমিতে ৩-৪টি অন্য ফসল ফলাতে পারেন, যা লাভজনক। অন্যদিকে তদুপরি দেশীয় প্রেক্ষাপটে জমিতে আদার কন্দপচা রোগের ব্যাপক প্রাদুর্ভাব। এর কারণে কোনো কোনো বছর আদার ফলন ৫০-৮০ ভাগ পর্যন্ত কমে যায়। তখন স্থানীয় বাজারে সরবরাহে বড় ঘাটতি তৈরি হয় এবং দাম চলে যায় সাধারণের নাগালের বাইরে।
আছে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়ার সুযোগ
এসব সমস্যা মোকাবিলা ও ঘাটতি পূরণের লক্ষ্যে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মসলা গবেষণা কেন্দ্রের বিজ্ঞানীরা উদ্ভাবন করেছেন বারি-১, বারি-২, ও বারি-৩ নামে তিনটি উচ্চফলনশীল আদার জাত; যার প্রতি হেক্টরে ফলন ৩০-৩৯ টন। গবেষকেরা বলছেন, বস্তায় আদা চাষের সুবিধা হলো, আবাদি জমির প্রয়োজন হবে না। যেকোনো পতিত জায়গায় চাষ করা যাবে। যেমন বাড়ির আনাচে-কানাচে, রাস্তার পাশে, অফিসে, যেখানে নতুন বাগান হচ্ছে, যেখানে ছায়া কম, সেসব জায়গায় চাষ করা যাবে। জুন-জলাই মাস আদা চাষের উপযুক্ত সময়। ফলনও পাওয়া যাবে চাষের ৭ থেকে ৮ মাসের মধ্যে। প্রাকৃতিক যেকোনো বিপর্যয়ে বস্তা এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় সরিয়ে নেওয়া যায়। এ পদ্ধতিতে একই জায়গায় বারবার মাটির মিশ্রণ তৈরি করে আদাবীজ রোপণ করা যায়। শুধু বস্তা কিনতে হবে। চার-পাঁচ টাকা দাম। বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক ও জৈব সার, ছাই ব্যবহার করে মিশ্রণ করা যেতে পারে।
বস্তায় আদা চাষের সুবিধা সম্পর্কে বগুড়ায় অবস্থিত শিবগঞ্জের মসলা গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আশিকুল ইসলাম নিরু বলেন, ‘মাটিতে আদা চাষে বিদ্যমান অসুবিধার সমাধান মিলেছে বস্তায় আদা চাষে। এই অভিনব পদ্ধতি দেখাচ্ছে ঘাটতি পূরণের সম্ভাবনা। দিচ্ছে স্বনির্ভরতা অর্জনের হাতছানি। দেশে সাড়ে তিন কোটির মতো বসতবাড়ি রয়েছে। এসব বাড়িতে ১০ বস্তা করে আদা চাষ করা হলেও সাড়ে ৩৫ কোটি বস্তা হবে। প্রতি বস্তায় ১ কেজি আদা উৎপাদিত হলেও আমাদের চাহিদা মিটে যাবে; যা প্রতিবছর সাশ্রয় করতে পারে কয়েক হাজার কোটি টাকার আমদানি ব্যয়।’
বাড়ছে জনপ্রিয়তা
বেশ কয়েক বছর ধরে দেশে অনানুষ্ঠানিক ও স্বল্প পরিসরে বস্তায় আদার চাষ শুরু হলেও বছর দুয়েক হলো এর জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এরই মধ্যে বস্তায় আদা চাষে উদ্বুদ্ধ করতে নেওয়া হয়েছে সরকারি প্রকল্প। দেওয়া হচ্ছে প্রশিক্ষণ, বস্তা, বীজ, সার ইত্যাদি। এ ছাড়া কম খরচে অধিক মুনাফা হওয়ায় ব্যক্তি উদ্যোগেও এখন বস্তায় আদা চাষে ঝুঁকছেন অনেকে। ফেসবুক, ইউটিউবসহ বিভিন্ন অনলাইন মাধ্যমে এ পদ্ধতিতে আদার চাষ শিখছেন অনেক তরুণ। যার মাধ্যমে এর চাষাবাদ পদ্ধতি ছড়িয়ে গেছে দেশের সর্বত্র। বাড়ছে আগ্রহ। উৎপাদনে কমছে জমিনির্ভরতা।
এ প্রসঙ্গে মসলার উন্নত জাত ও প্রযুক্তি সম্প্রসারণ প্রকল্পের পরিচালক রাসেল আহমেদ আজকের পত্রিকাকে জানান, প্রকল্পের অধীনে এ নিয়ে দুই বছর বস্তায় আদা চাষ হয়েছে। এ বছর প্রকল্প ও ব্যক্তি উদ্যোগ মিলিয়ে প্রায় ১ কোটি ৮ লাখ বস্তায় আদা চাষ হয়েছে; যা থেকে প্রায় ১০ হাজার টন আদা উৎপাদিত হবে। এটি কেবল সরকারি হিসাব। এর বাইরে ব্যক্তিগত উদ্যোগেও অনেকে বস্তায় আদা চাষ করছেন। আগে এ-সম্পর্কিত কোনো জরিপ করা হয়নি। তবে পরিসংখ্যান না থাকলেও সন্দেহাতীতভাবে বলা যায়, উৎপাদন ছিল অনেক কম; যা এখন সারা দেশে ক্রমবর্ধমান হারে বাড়ছে।
এ পদ্ধতির চর্চা অব্যাহত থাকলে ভবিষ্যতে জমির ওপর চাপ কমিয়ে স্থানীয় আদার চাহিদা পূরণ সম্ভব হবে বলেও জানান তিনি।
খরচ কম, মুনাফা বেশি
মসলার গবেষক ড. আশিকুল ইসলাম নিরু বলেন, বস্তায় আদা চাষে উৎপাদন খরচ অনেক কম। এক বস্তায় ৫০-৬০ গ্রাম বীজ হলেই হয়, আর চাষের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত এক বস্তায় খরচ ৫০ থেকে ৬০ টাকা। কিন্তু আদার ফলন যদি প্রতি বস্তায় এক কেজি হলেও কৃষক ন্যূনতম ২০০ টাকায় তা বিক্রি করতে পারবেন। অর্থাৎ মুনাফা ১৫০ টাকা। আর ১৫০ টাকায় বিক্রি করলেও ১০০ টাকা লাভ হবে।
সফলতার গল্প
ছোটবেলা থেকে শখের বশে পশুপাখি লালনপালনসহ কৃষিকাজে বেশ মনোযোগী সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার রানীগঞ্জ ইউনিয়নের গন্ধর্বপুর গ্রামের তরুণ ফখরুল ইসলাম। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘ইউটিউবে ভিডিও দেখে আগ্রহী হই। পরে উপজেলা কৃষি কার্যালয়ের সহযোগিতায় প্রথমবার বাড়ির আঙিনায় ২৬০টি বস্তায় আদা চাষ করেছি। প্রতি বস্তায় ৩০ টাকা হিসাবে প্রায় ৮ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। বর্তমানে আদাগাছের যে ফলন দেখা যাচ্ছে, তাতে মনে হচ্ছে, প্রতি বস্তায় দেড় কেজি আদা পাওয়া যাবে। উৎপাদিত হবে প্রায় ৪০০ কেজি। স্থানীয় বাজারে বর্তমানে আদার দাম কেজিতে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা। আশা করছি, এতে প্রায় ৭০ হাজার টাকার বেশি লাভ হবে।’
৪৫০ বস্তায় ১৫ কেজি আদা রোপণ করেছেন রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার জয়নগর ইউনিয়নের মাড়িয়া গ্রামের উজ্জ্বল শেখ। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, এখন ২ ফুটের বেশি লম্বা হয়েছে গাছ। প্রতি বস্তায় ১ কেজি হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
সিরাজগঞ্জের কামারখন্দে ১২টি ব্লকে ২৫ জন কৃষক প্রায় দেড় হাজার বস্তায় আদা চাষ করেছেন। প্রতি বস্তায় দুই কেজির বেশি আদার ফলন হতে পারে। এতে প্রায় তিন হাজার কেজি আদা উৎপাদিত হবে।
ফুলজোড় নদীর নুরনগর তালপট্টি চরের কৃষক লিটন আলী শেখ আজকের পত্রিকাকে বলেন, একদিকে জমিতে ভিন্ন ফসল এবং খালি পড়ে থাকা জায়গায় বস্তায় আদা চাষ করায় বাড়তি আয়ের সুযোগ তৈরি হয়েছে।
আদার পুষ্টিগুণ এবং ঔষধি ব্যবহার
আদায় রয়েছে পটাশিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, সোডিয়াম, জিংক, ম্যাঙ্গানিজ, ভিটামিন এ, বি৬, ই ও সি এবং অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এজেন্ট ও অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি এজেন্ট। এ ছাড়া প্রতি ১০০ গ্রাম আদায় রয়েছে ক্যালরি ৮০, প্রোটিন ১.৮২ গ্রাম, কার্বোহাইড্রেট ১৭.৮ গ্রাম (ডায়েটারি ফাইবার ২ গ্রাম), টোটাল ফ্যাট ০.৭৫ গ্রাম, মিনারেল ৭৮.৯ গ্রাম। এসব কারণে সব বয়সী মানুষ আদা খেতে পারেন, বিশেষ করে শিশুদের জন্য আদা-মধু-পানি সুস্থ দেহ ও সতেজ মনের জন্য খুবই কার্যকর। অন্যদিকে ভেষজ ওষুধ হিসেবে দেশে আদার বহুল ব্যবহার রয়েছে। মুখের রুচি বাড়াতে ও বদহজম রোধে আদা শুকিয়ে চিবিয়ে খাওয়া হয়। এ ছাড়া সর্দি, কাশি, আমাশয়, জন্ডিস, পেট ফাঁপায় আদা চিবিয়ে বা রস করে খাওয়া হয়। হৃদ্যন্ত্রের কার্যকারিতা বজায় রাখার পাশাপাশি অনেক গোপন সমস্যা দূর করতেও সহায়ক আদা।
[প্রতিবেদনে সহযোগিতা করেছেন জগন্নাথপুর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি ও কামারখন্দ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি।]

মসলাজাতীয় একটি প্রাচীনতম ফসল আদা; যা বাণিজ্যিকভাবে প্রথম মসলাজাতীয় পণ্য হিসেবে এশিয়া থেকে ইউরোপে রপ্তানি হয়েছিল। প্রাচীন গ্রিস এবং রোমানরা এটি ব্যবহার করত। মুখরোচক রান্নায় আদার জুড়ি মেলা ভার। তাই তো প্রায় চার হাজার বছর আগে থেকে রান্নায় আদার ব্যবহার হয়ে আসছে। এর ভেষজ গুণও উপেক্ষার নয়। চিকিৎসার অন্যতম উপকরণ হিসেবে চীনে আদার প্রচলন ঘটে দুই হাজার বছর আগে।
এখন সময় বদলেছে। বিজ্ঞানের প্রসার ঘটেছে। আগের অনেক কিছু হারিয়ে গেলেও টিকে আছে আদার প্রচলন। বরং আধুনিকতার এই সময়ে আদার ব্যবহার, ক্ষেত্র এবং ভোক্তা আগের চেয়ে বহুগুণ বেড়েছে। এ কারণে বিশ্বজুড়ে রান্নার উপকরণের বাইরেও আদার ব্যবহার রূপান্তর হচ্ছে। আচার, পানীয় তৈরিসহ খাদ্য প্রক্রিয়াজাত শিল্পে এর হরেক ব্যবহারের পাশাপাশি ওষুধ এবং সুগন্ধিশিল্পেও অপরিহার্য হয়ে উঠেছে আদা।
দেশীয় বাস্তবতা
বৈশ্বিক বাস্তবতার ছাপ দেশেও পরিলক্ষিত হচ্ছে। তাই আদার ব্যবহার এবং ভোগ—উভয়ই বেড়েছে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) মতে, বিশ্বের আদা উৎপাদনকারী দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান সপ্তম। অন্যদিকে কৃষি অধিদপ্তরের তথ্যমতে, আদার জেনেরিক নাম জিঙ্গিবার, যা মসলার সংস্কৃত নাম সিঙ্গাবেরা এবং গ্রিক জিঙ্গিবেরিস থেকে উদ্ভূত। দেশে এই মসলাজাতীয় পণ্যের চাহিদা বছরে ৪ লাখ ৮০ হাজার টন, কিন্তু উৎপাদিত হয় তার অর্ধেক। আবার উৎপাদন পর্যায়ে মাটিবাহিত রোগ এবং উৎপাদন-পরবর্তী সংরক্ষণের অভাবে ১৫ থেকে ১৮ শতাংশই নষ্ট হয়ে যায়। সব মিলিয়ে প্রতিবছর চাহিদার ঘাটতি পড়ে ৬০ শতাংশের মতো; যা বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা খরচ করে বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানির মাধ্যমে পূরণ করতে হয়; যার ৬০ শতাংশই আসে চীন থেকে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (ডিএই) উদ্ভিদ সংগনিরোধ উইংয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত চার অর্থবছরের হিসাবে চাহিদা পূরণে প্রতিবছর গড়ে ১ লাখ ৩৮ হাজার টন আদা আমদানি করতে হয়েছে। এর মধ্যে ২০২০-২১ অর্থবছরে ১ লাখ ৫৫ হাজার টন, ২০২১-২২ অর্থবছরে ১ লাখ ৬৬ হাজার টন, ২০২২-২৩ অর্থবছরে ১ লাখ ৪১ হাজার টন এবং ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৯১ হাজার টন আদা আমদানি হয়েছে। গত রোববার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রতি কেজি আদা বিক্রি হয়েছে ২৬০ থেকে ৩০০ টাকায়। সারা বছর এর প্রতি কেজির গড় মূল্য ২০০ টাকা বিবেচনায় নেওয়া হলে অভ্যন্তরীণ উৎপাদন এবং আমদানি মিলিয়ে দেশে চাহিদার ৪ লাখ ৮০ হাজার টন আদার বাজারমূল্য ৯ হাজার ৬০০ কোটি টাকা।
বাধা যেখানে
দেশে আদার ঘাটতির অন্যতম কারণ হচ্ছে উৎপাদন কম। অভাব রয়েছে আদা চাষের উপযোগী জমিরও। এটি দীর্ঘমেয়াদি ফসল। প্রায় ১০ মাস সময় লাগে। এত সময় ধরে আদা চাষে অনাগ্রহী কৃষক। তাঁরা একই সময় ওই জমিতে ৩-৪টি অন্য ফসল ফলাতে পারেন, যা লাভজনক। অন্যদিকে তদুপরি দেশীয় প্রেক্ষাপটে জমিতে আদার কন্দপচা রোগের ব্যাপক প্রাদুর্ভাব। এর কারণে কোনো কোনো বছর আদার ফলন ৫০-৮০ ভাগ পর্যন্ত কমে যায়। তখন স্থানীয় বাজারে সরবরাহে বড় ঘাটতি তৈরি হয় এবং দাম চলে যায় সাধারণের নাগালের বাইরে।
আছে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়ার সুযোগ
এসব সমস্যা মোকাবিলা ও ঘাটতি পূরণের লক্ষ্যে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মসলা গবেষণা কেন্দ্রের বিজ্ঞানীরা উদ্ভাবন করেছেন বারি-১, বারি-২, ও বারি-৩ নামে তিনটি উচ্চফলনশীল আদার জাত; যার প্রতি হেক্টরে ফলন ৩০-৩৯ টন। গবেষকেরা বলছেন, বস্তায় আদা চাষের সুবিধা হলো, আবাদি জমির প্রয়োজন হবে না। যেকোনো পতিত জায়গায় চাষ করা যাবে। যেমন বাড়ির আনাচে-কানাচে, রাস্তার পাশে, অফিসে, যেখানে নতুন বাগান হচ্ছে, যেখানে ছায়া কম, সেসব জায়গায় চাষ করা যাবে। জুন-জলাই মাস আদা চাষের উপযুক্ত সময়। ফলনও পাওয়া যাবে চাষের ৭ থেকে ৮ মাসের মধ্যে। প্রাকৃতিক যেকোনো বিপর্যয়ে বস্তা এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় সরিয়ে নেওয়া যায়। এ পদ্ধতিতে একই জায়গায় বারবার মাটির মিশ্রণ তৈরি করে আদাবীজ রোপণ করা যায়। শুধু বস্তা কিনতে হবে। চার-পাঁচ টাকা দাম। বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক ও জৈব সার, ছাই ব্যবহার করে মিশ্রণ করা যেতে পারে।
বস্তায় আদা চাষের সুবিধা সম্পর্কে বগুড়ায় অবস্থিত শিবগঞ্জের মসলা গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আশিকুল ইসলাম নিরু বলেন, ‘মাটিতে আদা চাষে বিদ্যমান অসুবিধার সমাধান মিলেছে বস্তায় আদা চাষে। এই অভিনব পদ্ধতি দেখাচ্ছে ঘাটতি পূরণের সম্ভাবনা। দিচ্ছে স্বনির্ভরতা অর্জনের হাতছানি। দেশে সাড়ে তিন কোটির মতো বসতবাড়ি রয়েছে। এসব বাড়িতে ১০ বস্তা করে আদা চাষ করা হলেও সাড়ে ৩৫ কোটি বস্তা হবে। প্রতি বস্তায় ১ কেজি আদা উৎপাদিত হলেও আমাদের চাহিদা মিটে যাবে; যা প্রতিবছর সাশ্রয় করতে পারে কয়েক হাজার কোটি টাকার আমদানি ব্যয়।’
বাড়ছে জনপ্রিয়তা
বেশ কয়েক বছর ধরে দেশে অনানুষ্ঠানিক ও স্বল্প পরিসরে বস্তায় আদার চাষ শুরু হলেও বছর দুয়েক হলো এর জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এরই মধ্যে বস্তায় আদা চাষে উদ্বুদ্ধ করতে নেওয়া হয়েছে সরকারি প্রকল্প। দেওয়া হচ্ছে প্রশিক্ষণ, বস্তা, বীজ, সার ইত্যাদি। এ ছাড়া কম খরচে অধিক মুনাফা হওয়ায় ব্যক্তি উদ্যোগেও এখন বস্তায় আদা চাষে ঝুঁকছেন অনেকে। ফেসবুক, ইউটিউবসহ বিভিন্ন অনলাইন মাধ্যমে এ পদ্ধতিতে আদার চাষ শিখছেন অনেক তরুণ। যার মাধ্যমে এর চাষাবাদ পদ্ধতি ছড়িয়ে গেছে দেশের সর্বত্র। বাড়ছে আগ্রহ। উৎপাদনে কমছে জমিনির্ভরতা।
এ প্রসঙ্গে মসলার উন্নত জাত ও প্রযুক্তি সম্প্রসারণ প্রকল্পের পরিচালক রাসেল আহমেদ আজকের পত্রিকাকে জানান, প্রকল্পের অধীনে এ নিয়ে দুই বছর বস্তায় আদা চাষ হয়েছে। এ বছর প্রকল্প ও ব্যক্তি উদ্যোগ মিলিয়ে প্রায় ১ কোটি ৮ লাখ বস্তায় আদা চাষ হয়েছে; যা থেকে প্রায় ১০ হাজার টন আদা উৎপাদিত হবে। এটি কেবল সরকারি হিসাব। এর বাইরে ব্যক্তিগত উদ্যোগেও অনেকে বস্তায় আদা চাষ করছেন। আগে এ-সম্পর্কিত কোনো জরিপ করা হয়নি। তবে পরিসংখ্যান না থাকলেও সন্দেহাতীতভাবে বলা যায়, উৎপাদন ছিল অনেক কম; যা এখন সারা দেশে ক্রমবর্ধমান হারে বাড়ছে।
এ পদ্ধতির চর্চা অব্যাহত থাকলে ভবিষ্যতে জমির ওপর চাপ কমিয়ে স্থানীয় আদার চাহিদা পূরণ সম্ভব হবে বলেও জানান তিনি।
খরচ কম, মুনাফা বেশি
মসলার গবেষক ড. আশিকুল ইসলাম নিরু বলেন, বস্তায় আদা চাষে উৎপাদন খরচ অনেক কম। এক বস্তায় ৫০-৬০ গ্রাম বীজ হলেই হয়, আর চাষের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত এক বস্তায় খরচ ৫০ থেকে ৬০ টাকা। কিন্তু আদার ফলন যদি প্রতি বস্তায় এক কেজি হলেও কৃষক ন্যূনতম ২০০ টাকায় তা বিক্রি করতে পারবেন। অর্থাৎ মুনাফা ১৫০ টাকা। আর ১৫০ টাকায় বিক্রি করলেও ১০০ টাকা লাভ হবে।
সফলতার গল্প
ছোটবেলা থেকে শখের বশে পশুপাখি লালনপালনসহ কৃষিকাজে বেশ মনোযোগী সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার রানীগঞ্জ ইউনিয়নের গন্ধর্বপুর গ্রামের তরুণ ফখরুল ইসলাম। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘ইউটিউবে ভিডিও দেখে আগ্রহী হই। পরে উপজেলা কৃষি কার্যালয়ের সহযোগিতায় প্রথমবার বাড়ির আঙিনায় ২৬০টি বস্তায় আদা চাষ করেছি। প্রতি বস্তায় ৩০ টাকা হিসাবে প্রায় ৮ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। বর্তমানে আদাগাছের যে ফলন দেখা যাচ্ছে, তাতে মনে হচ্ছে, প্রতি বস্তায় দেড় কেজি আদা পাওয়া যাবে। উৎপাদিত হবে প্রায় ৪০০ কেজি। স্থানীয় বাজারে বর্তমানে আদার দাম কেজিতে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা। আশা করছি, এতে প্রায় ৭০ হাজার টাকার বেশি লাভ হবে।’
৪৫০ বস্তায় ১৫ কেজি আদা রোপণ করেছেন রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার জয়নগর ইউনিয়নের মাড়িয়া গ্রামের উজ্জ্বল শেখ। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, এখন ২ ফুটের বেশি লম্বা হয়েছে গাছ। প্রতি বস্তায় ১ কেজি হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
সিরাজগঞ্জের কামারখন্দে ১২টি ব্লকে ২৫ জন কৃষক প্রায় দেড় হাজার বস্তায় আদা চাষ করেছেন। প্রতি বস্তায় দুই কেজির বেশি আদার ফলন হতে পারে। এতে প্রায় তিন হাজার কেজি আদা উৎপাদিত হবে।
ফুলজোড় নদীর নুরনগর তালপট্টি চরের কৃষক লিটন আলী শেখ আজকের পত্রিকাকে বলেন, একদিকে জমিতে ভিন্ন ফসল এবং খালি পড়ে থাকা জায়গায় বস্তায় আদা চাষ করায় বাড়তি আয়ের সুযোগ তৈরি হয়েছে।
আদার পুষ্টিগুণ এবং ঔষধি ব্যবহার
আদায় রয়েছে পটাশিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, সোডিয়াম, জিংক, ম্যাঙ্গানিজ, ভিটামিন এ, বি৬, ই ও সি এবং অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এজেন্ট ও অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি এজেন্ট। এ ছাড়া প্রতি ১০০ গ্রাম আদায় রয়েছে ক্যালরি ৮০, প্রোটিন ১.৮২ গ্রাম, কার্বোহাইড্রেট ১৭.৮ গ্রাম (ডায়েটারি ফাইবার ২ গ্রাম), টোটাল ফ্যাট ০.৭৫ গ্রাম, মিনারেল ৭৮.৯ গ্রাম। এসব কারণে সব বয়সী মানুষ আদা খেতে পারেন, বিশেষ করে শিশুদের জন্য আদা-মধু-পানি সুস্থ দেহ ও সতেজ মনের জন্য খুবই কার্যকর। অন্যদিকে ভেষজ ওষুধ হিসেবে দেশে আদার বহুল ব্যবহার রয়েছে। মুখের রুচি বাড়াতে ও বদহজম রোধে আদা শুকিয়ে চিবিয়ে খাওয়া হয়। এ ছাড়া সর্দি, কাশি, আমাশয়, জন্ডিস, পেট ফাঁপায় আদা চিবিয়ে বা রস করে খাওয়া হয়। হৃদ্যন্ত্রের কার্যকারিতা বজায় রাখার পাশাপাশি অনেক গোপন সমস্যা দূর করতেও সহায়ক আদা।
[প্রতিবেদনে সহযোগিতা করেছেন জগন্নাথপুর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি ও কামারখন্দ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি।]

ব্যবসায়ীরা বলেন, উচ্চ সুদহার, পণ্য পরিবহনব্যবস্থার উন্নতি, গ্যাস-বিদুৎ সমস্যাসহ সব সমস্যা সমাধান করে প্রস্তুতি শেষ হলে আগামী বছরই গ্র্যাজুয়েশনে রাজি তাঁরা।
২ ঘণ্টা আগে
চট্টগ্রাম বন্দরে দীর্ঘদিন ধরে পড়ে থাকা ১৯টি বিপজ্জনক (ডেঞ্জারাস গুডস) কনটেইনার পরিবেশসম্মত উপায়ে ধ্বংস করা হয়েছে। নিলাম অযোগ্য ও বিপজ্জনক এসব পণ্য ধ্বংসের কাজ ২৫ ও ২৬ অক্টোবর দিনব্যাপী সম্পন্ন হয়। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সোমবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
২ ঘণ্টা আগে
এবারের মেলায় অংশ নিচ্ছে ১২টি দেশ; যার মধ্যে রয়েছে পাকিস্তান, নেপাল, ভুটান, মালদ্বীপ, চীন, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশের সরকারি ও বেসরকারি পর্যটন সংস্থা এবং ট্যুর অপারেটররা।
৩ ঘণ্টা আগে
এমন পরিস্থিতে ভারতীয় কিছু শোধনাগার জরুরি চাহিদা মেটাতে স্পট মার্কেট বা অস্থায়ী বাজার থেকে তেল কেনার চেষ্টা করছে। রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ইন্ডিয়ান অয়েল করপোরেশন (আইওসি) ইতিমধ্যে নতুন করে তেল আমদানির টেন্ডার আহ্বান করেছে। অন্যদিকে, ভারতের সবচেয়ে বড় বেসরকারি শোধনাগার রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ স্পট মার্কে
৩ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

শ্রমিকের সংজ্ঞা, ট্রেড ইউনিয়নে শ্রমিকের সংখ্যা ও দ্বৈত প্রভিডেন্ট ফান্ড—শ্রম আইনের এই তিন ধারায় আপত্তি জানিয়েছেন কারখানামালিকেরা।
সংশোধিত শ্রম আইন, ২০২৫ পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর বিজিএমইএ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এই আহ্বান জানায়।
এ সময় প্রস্তুতির জন্য এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন তিন বছর পেছানো ও বন্দরের বাড়তি মাশুল প্রত্যাহারের দাবি জানান ব্যবসায়ীরা।
ব্যবসায়ীরা বলেন, উচ্চ সুদহার, পণ্য পরিবহনব্যবস্থার উন্নতি, গ্যাস-বিদুৎ সমস্যাসহ সব সমস্যা সমাধান করে প্রস্তুতি শেষ হলে আগামী বছরই গ্র্যাজুয়েশনে রাজি তাঁরা।
সংবাদ সম্মেলনে দেশের ব্যবসায়ীদের চেয়ে ‘সরকার বিদেশিদের কথা শুনতেই বেশি আগ্রহী’ বলে অভিযোগ করা হয়।
বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘বিদেশিদের পরামর্শে শ্রম আইন সংশোধন করছে সরকার। আমরা চার মাস ধরে সময় চেয়েও প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষাৎ পাইনি। ১০০ মিলিয়ন ডলারের স্টারলিংকের ভাইস চেয়ারম্যানকে তিনি সময় দেন, অথচ ৪০ বিলিয়ন ডলারের প্রতিনিধিকে সময় দেন না।’
সরকারের উদ্দেশে মাহমুদ হাসান খান বলেন, শিল্প, শ্রমিক ও অর্থনীতির বাস্তব চাহিদা বিবেচনায় এমন একটি নতুন আইন প্রণয়ন করতে হবে, যা দেশের শিল্প খাতের প্রতিযোগিতামূলক সক্ষমতা নষ্ট না করে বরং টেকসই উন্নয়নকে সহায়তা করবে।
বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের রপ্তানিমুখী শিল্প খাত নানা চ্যালেঞ্জের মুখে। শ্রম আইন সংস্কার অবশ্যই প্রয়োজন, তবে তা যেন বাস্তবতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়। আইন এমনভাবে প্রণয়ন করতে হবে, যাতে এটি শিল্পের টেকসই বৃদ্ধি ও আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় দেশের অবস্থানকে শক্তিশালী করে। এলডিসি থেকে উত্তরণের পর বাংলাদেশের শিল্প খাতকে টিকে থাকতে হলে সরকারকে অবশ্যই একটি ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।
মাহমুদ হাসান খান সরকারের প্রতি গ্যাস-সংকটের দ্রুত সমাধান, কাস্টমস ও এনবিআর প্রক্রিয়ার সহজীকরণ, অবকাঠামো ও লজিস্টিক উন্নয়ন এবং স্বল্প ব্যয়ে অর্থায়নের ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান।
বিজিএমইএর সভাপতি বলেন, ‘আমাদের প্রতিযোগী সক্ষমতা ধরে রাখতে হলে এবং এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের পথ মসৃণ করতে হলে সরকারকে সময়োপযোগী উদ্যোগ নিতে হবে। আমরা অনুরোধ করছি, রপ্তানিমুখী শিল্প খাতের প্রস্তুতি সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত এলডিসি উত্তরণের সময়সীমা অন্তত তিন বছর পিছিয়ে দেওয়া হোক।’
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও তাঁর উপদেষ্টা পরিষদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে মাহমুদ হাসান খান বলেন, ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে একটি স্থিতিশীল ও উন্নত অর্থনীতি উপহার দিতে হলে উৎপাদনমুখী শিল্পের বাস্তব চাহিদা ও আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার বাস্তবতা বিবেচনা করে দ্রুত, ইতিবাচক ও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।
সংবাদ সম্মেলনে বিজিএমইএ নেতারা উল্লেখ করেন, শ্রম আইন সংশোধন প্রক্রিয়ায় শিল্পের অংশীদারদের মতামত যথাযথভাবে প্রতিফলিত না হলে তা বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
তাঁরা সরকারের সঙ্গে গঠনমূলক সংলাপের মাধ্যমে একটি ভারসাম্যপূর্ণ সমাধান খুঁজে বের করার আহ্বান জানান।
এ সময় বক্তব্য দেন বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম।
বিকেএমইএর সভাপতি বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে আলোচনায় শ্রম আইনে ট্রেড ইউনিয়নের বিষয়ে যেভাবে চূড়ান্ত হয়েছি, এভাবে—“শ্রম আইনে প্রতিষ্ঠানে বা শিল্পে সরাসরিভাবে বা কোনো ঠিকাদার, যে নামেই অভিহিত হোক না কেন, ইহার মাধ্যমে মজুরি বা অর্থের বিনিময়ে কোনো দক্ষ, অদক্ষ, কায়িক, কারিগরি, ব্যবসা উন্নয়নমূলক অথবা করণিক কাজে নিযুক্ত কর্মকর্তা/কর্মচারী হিসেবে কোনো ব্যক্তি যে নামেই অভিহিত হোক না কেন, তবে ২(৪৯)(খ) নিযুক্ত ব্যক্তি ব্যতীত সকল ব্যক্তি ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে।” কিন্তু ‘‘কোনো ব্যক্তি’’-এর বদলে নতুন সংজ্ঞায় ‘‘কর্মকর্তা-কর্মচারী’’ যোগ করা হয়।’
চট্টগ্রাম বন্দরের কনটেইনার ব্যবস্থাপনা বিদেশি প্রতিষ্ঠানের আওতায় দিতে সরকার চুক্তি করতে যাচ্ছে চলতি মাসে। আগামী ডিসেম্বরে বিদেশি প্রতিষ্ঠানের কাছে চট্টগ্রামসহ তিনটি বন্দরের কনটেইনার ব্যবস্থাপনা চলে যাচ্ছে। এ জন্য ১৯৮০ সাল থেকে চলে আসা একই মাশুল ফি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
এতে চট্টগ্রাম বন্দরের মাশুল ফি ৪১ শতাংশ বাড়ানো হচ্ছে দাবি করে মাহমুদ হাসান খান বলেন, ‘আমরা বলেছি, আগে কনটেইনার ব্যবস্থাপনা সক্ষমতা বাড়ানো হোক। আমরা উপকারটি আগে পাই, তারপরে চার্জ বাড়ানো যেতে পারে। একসঙ্গে না বাড়িয়ে ধারবাহিকভাবে ১০ শতাংশ হারে বাড়ানো যেতে পারে। চট্টগ্রাম বন্দর গত বছরে দুই হাজার কোটি টাকার মতো মুনাফা করেছে। সেবাধর্মী প্রতিষ্ঠান তো মুনাফায় আছে। তাহলে কেন চার্জ বাড়ানোর প্রয়োজন?’
সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়, চট্টগ্রাম বন্দর সেবা ফি নেওয়া হয় ডলারে। ১৯৮৬-৮৭ অর্থবছরে প্রতি ডলারের বিনিময় হার ছিল ২৯ দশমিক ৮৯ টাকা। বর্তমানে তা ১২২ টাকার বেশি হওয়ায় গত ৪০ বছর ধরে টাকার অঙ্কে ৩০৮ শতাংশ বেড়েছে বলে বক্তব্য তুলে ধরেন বিজিএমইএ সভাপতি।
এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন আরও তিন বছর পিছিয়ে দেওয়ার দাবি করে বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, ‘প্রতিযোগী দেশের সঙ্গে ব্যবসায় টিকে থাকতে হলে টিকফা, এফটিএর মতো কয়েকটি চুক্তি করতে হবে। এগুলো করা হোক, নইলে আমরা পিছিয়ে পড়ব। এ জন্য তিন বছর পিছিয়ে দেওয়ার দাবি করছি।’
তিন বছর পিছিয়ে দিলে বাংলাদেশ প্রস্তুতি নিতে আরও সাত বছর সময় পাবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
গত এক বছরে পোশাক খাতে ২৫৮টি কারখানা বন্ধ হওয়ার তথ্য দিয়ে মাহমুদ হাসান খান বলেন, নানা কারণে তা বন্ধ হয়েছে। এটি চলমান প্রসেস, এটি হয়। কারখানাওয়াইজ বিশ্লেষণ করে বলা যাবে কারণগুলো কী।
যে তিন বিষয়ে আপত্তি—
১. ট্রেড ইউনিয়ন গঠন: ভারসাম্যহীন ও অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত
টিসিসি ও ওয়ার্কিং কমিটিতে দীর্ঘ আলোচনার মাধ্যমে ট্রেড ইউনিয়ন গঠনে ধাপে ধাপে শ্রমিকের সংখ্যা নির্ধারণে একটি ভারসাম্যপূর্ণ প্রস্তাব গৃহীত হয়েছিল—যেখানে প্রথম ধাপে ৫০ থেকে ৫০০ শ্রমিকের কারখানায় ন্যূনতম ৫০ জন শ্রমিকের সম্মতিতে ইউনিয়ন গঠনের সুযোগ ছিল, কিন্তু পরে উপদেষ্টা পরিষদের সভায় একতরফাভাবে সেটি পরিবর্তন করে ২০–৩০০ শ্রমিক নির্ধারণ করা হয়েছে এবং ধাপ করা হয়েছে পাঁচটি।
এ সিদ্ধান্ত বাস্তবতাবিবর্জিত। কারণ, মাত্র ২০ জন শ্রমিক দিয়ে একটি ইউনিয়ন গঠন করা হলে কারখানাগুলোতে এমন ব্যক্তিরা ট্রেড ইউনিয়ন করবেন, যাঁরা ওই শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নন। এটি অন্তর্দ্বন্দ্ব ও শিল্পে অস্থিতিশীলতা তৈরি করবে এবং উৎপাদন ব্যাহত করবে। এতে বিনিয়োগকারীদের আস্থা কমবে এবং উদ্যোক্তারা নতুন প্রতিষ্ঠান স্থাপন বা পরিচালনায় নিরুৎসাহিত হবেন।
২. ভবিষ্যৎ তহবিল ও সর্বজনীন পেনশন প্রগতি—দ্বৈত জটিলতা
টিসিসির আলোচনায় সিদ্ধান্ত হয়েছিল—একটি প্রতিষ্ঠান চাইলে ‘ভবিষ্যৎ তহবিল’ বা ‘প্রগতি’—যেকোনো একটি স্কিম বেছে নিতে পারবে।
কিন্তু উপদেষ্টা পরিষদ অনুমোদন দিয়েছে, শ্রমিক চাইলে দুটি পদ্ধতিতেই অংশ নিতে পারবে—যা উদ্যোক্তাকে দুটি ভিন্ন আর্থিক ব্যবস্থাপনা সমান্তরালে চালাতে বাধ্য করবে। এতে প্রশাসনিক জটিলতা, ব্যয় বৃদ্ধি ও তহবিল ব্যবস্থাপনায় বিশৃঙ্খলা দেখা দেবে।
৩. শ্রমিকের সংজ্ঞায় অস্পষ্টতা ও প্রশাসনিক ঝুঁকি
নতুন সংশোধনীতে শ্রমিকের সংজ্ঞায় ‘কর্মচারী/কর্মকর্তা’ যুক্ত করায় প্রতিষ্ঠানের প্রশাসনিক স্তর ও শ্রমিক স্তরের মধ্যে বিভাজন ভেঙে যাবে। এর ফলে সিদ্ধান্ত গ্রহণে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে, দায়িত্ব বণ্টনে বিভ্রান্তি তৈরি হবে এবং প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় মারাত্মক সমস্যা দেখা দেবে।

শ্রমিকের সংজ্ঞা, ট্রেড ইউনিয়নে শ্রমিকের সংখ্যা ও দ্বৈত প্রভিডেন্ট ফান্ড—শ্রম আইনের এই তিন ধারায় আপত্তি জানিয়েছেন কারখানামালিকেরা।
সংশোধিত শ্রম আইন, ২০২৫ পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর বিজিএমইএ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এই আহ্বান জানায়।
এ সময় প্রস্তুতির জন্য এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন তিন বছর পেছানো ও বন্দরের বাড়তি মাশুল প্রত্যাহারের দাবি জানান ব্যবসায়ীরা।
ব্যবসায়ীরা বলেন, উচ্চ সুদহার, পণ্য পরিবহনব্যবস্থার উন্নতি, গ্যাস-বিদুৎ সমস্যাসহ সব সমস্যা সমাধান করে প্রস্তুতি শেষ হলে আগামী বছরই গ্র্যাজুয়েশনে রাজি তাঁরা।
সংবাদ সম্মেলনে দেশের ব্যবসায়ীদের চেয়ে ‘সরকার বিদেশিদের কথা শুনতেই বেশি আগ্রহী’ বলে অভিযোগ করা হয়।
বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘বিদেশিদের পরামর্শে শ্রম আইন সংশোধন করছে সরকার। আমরা চার মাস ধরে সময় চেয়েও প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষাৎ পাইনি। ১০০ মিলিয়ন ডলারের স্টারলিংকের ভাইস চেয়ারম্যানকে তিনি সময় দেন, অথচ ৪০ বিলিয়ন ডলারের প্রতিনিধিকে সময় দেন না।’
সরকারের উদ্দেশে মাহমুদ হাসান খান বলেন, শিল্প, শ্রমিক ও অর্থনীতির বাস্তব চাহিদা বিবেচনায় এমন একটি নতুন আইন প্রণয়ন করতে হবে, যা দেশের শিল্প খাতের প্রতিযোগিতামূলক সক্ষমতা নষ্ট না করে বরং টেকসই উন্নয়নকে সহায়তা করবে।
বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের রপ্তানিমুখী শিল্প খাত নানা চ্যালেঞ্জের মুখে। শ্রম আইন সংস্কার অবশ্যই প্রয়োজন, তবে তা যেন বাস্তবতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়। আইন এমনভাবে প্রণয়ন করতে হবে, যাতে এটি শিল্পের টেকসই বৃদ্ধি ও আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় দেশের অবস্থানকে শক্তিশালী করে। এলডিসি থেকে উত্তরণের পর বাংলাদেশের শিল্প খাতকে টিকে থাকতে হলে সরকারকে অবশ্যই একটি ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।
মাহমুদ হাসান খান সরকারের প্রতি গ্যাস-সংকটের দ্রুত সমাধান, কাস্টমস ও এনবিআর প্রক্রিয়ার সহজীকরণ, অবকাঠামো ও লজিস্টিক উন্নয়ন এবং স্বল্প ব্যয়ে অর্থায়নের ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান।
বিজিএমইএর সভাপতি বলেন, ‘আমাদের প্রতিযোগী সক্ষমতা ধরে রাখতে হলে এবং এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের পথ মসৃণ করতে হলে সরকারকে সময়োপযোগী উদ্যোগ নিতে হবে। আমরা অনুরোধ করছি, রপ্তানিমুখী শিল্প খাতের প্রস্তুতি সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত এলডিসি উত্তরণের সময়সীমা অন্তত তিন বছর পিছিয়ে দেওয়া হোক।’
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও তাঁর উপদেষ্টা পরিষদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে মাহমুদ হাসান খান বলেন, ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে একটি স্থিতিশীল ও উন্নত অর্থনীতি উপহার দিতে হলে উৎপাদনমুখী শিল্পের বাস্তব চাহিদা ও আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার বাস্তবতা বিবেচনা করে দ্রুত, ইতিবাচক ও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।
সংবাদ সম্মেলনে বিজিএমইএ নেতারা উল্লেখ করেন, শ্রম আইন সংশোধন প্রক্রিয়ায় শিল্পের অংশীদারদের মতামত যথাযথভাবে প্রতিফলিত না হলে তা বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
তাঁরা সরকারের সঙ্গে গঠনমূলক সংলাপের মাধ্যমে একটি ভারসাম্যপূর্ণ সমাধান খুঁজে বের করার আহ্বান জানান।
এ সময় বক্তব্য দেন বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম।
বিকেএমইএর সভাপতি বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে আলোচনায় শ্রম আইনে ট্রেড ইউনিয়নের বিষয়ে যেভাবে চূড়ান্ত হয়েছি, এভাবে—“শ্রম আইনে প্রতিষ্ঠানে বা শিল্পে সরাসরিভাবে বা কোনো ঠিকাদার, যে নামেই অভিহিত হোক না কেন, ইহার মাধ্যমে মজুরি বা অর্থের বিনিময়ে কোনো দক্ষ, অদক্ষ, কায়িক, কারিগরি, ব্যবসা উন্নয়নমূলক অথবা করণিক কাজে নিযুক্ত কর্মকর্তা/কর্মচারী হিসেবে কোনো ব্যক্তি যে নামেই অভিহিত হোক না কেন, তবে ২(৪৯)(খ) নিযুক্ত ব্যক্তি ব্যতীত সকল ব্যক্তি ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে।” কিন্তু ‘‘কোনো ব্যক্তি’’-এর বদলে নতুন সংজ্ঞায় ‘‘কর্মকর্তা-কর্মচারী’’ যোগ করা হয়।’
চট্টগ্রাম বন্দরের কনটেইনার ব্যবস্থাপনা বিদেশি প্রতিষ্ঠানের আওতায় দিতে সরকার চুক্তি করতে যাচ্ছে চলতি মাসে। আগামী ডিসেম্বরে বিদেশি প্রতিষ্ঠানের কাছে চট্টগ্রামসহ তিনটি বন্দরের কনটেইনার ব্যবস্থাপনা চলে যাচ্ছে। এ জন্য ১৯৮০ সাল থেকে চলে আসা একই মাশুল ফি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
এতে চট্টগ্রাম বন্দরের মাশুল ফি ৪১ শতাংশ বাড়ানো হচ্ছে দাবি করে মাহমুদ হাসান খান বলেন, ‘আমরা বলেছি, আগে কনটেইনার ব্যবস্থাপনা সক্ষমতা বাড়ানো হোক। আমরা উপকারটি আগে পাই, তারপরে চার্জ বাড়ানো যেতে পারে। একসঙ্গে না বাড়িয়ে ধারবাহিকভাবে ১০ শতাংশ হারে বাড়ানো যেতে পারে। চট্টগ্রাম বন্দর গত বছরে দুই হাজার কোটি টাকার মতো মুনাফা করেছে। সেবাধর্মী প্রতিষ্ঠান তো মুনাফায় আছে। তাহলে কেন চার্জ বাড়ানোর প্রয়োজন?’
সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়, চট্টগ্রাম বন্দর সেবা ফি নেওয়া হয় ডলারে। ১৯৮৬-৮৭ অর্থবছরে প্রতি ডলারের বিনিময় হার ছিল ২৯ দশমিক ৮৯ টাকা। বর্তমানে তা ১২২ টাকার বেশি হওয়ায় গত ৪০ বছর ধরে টাকার অঙ্কে ৩০৮ শতাংশ বেড়েছে বলে বক্তব্য তুলে ধরেন বিজিএমইএ সভাপতি।
এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন আরও তিন বছর পিছিয়ে দেওয়ার দাবি করে বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, ‘প্রতিযোগী দেশের সঙ্গে ব্যবসায় টিকে থাকতে হলে টিকফা, এফটিএর মতো কয়েকটি চুক্তি করতে হবে। এগুলো করা হোক, নইলে আমরা পিছিয়ে পড়ব। এ জন্য তিন বছর পিছিয়ে দেওয়ার দাবি করছি।’
তিন বছর পিছিয়ে দিলে বাংলাদেশ প্রস্তুতি নিতে আরও সাত বছর সময় পাবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
গত এক বছরে পোশাক খাতে ২৫৮টি কারখানা বন্ধ হওয়ার তথ্য দিয়ে মাহমুদ হাসান খান বলেন, নানা কারণে তা বন্ধ হয়েছে। এটি চলমান প্রসেস, এটি হয়। কারখানাওয়াইজ বিশ্লেষণ করে বলা যাবে কারণগুলো কী।
যে তিন বিষয়ে আপত্তি—
১. ট্রেড ইউনিয়ন গঠন: ভারসাম্যহীন ও অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত
টিসিসি ও ওয়ার্কিং কমিটিতে দীর্ঘ আলোচনার মাধ্যমে ট্রেড ইউনিয়ন গঠনে ধাপে ধাপে শ্রমিকের সংখ্যা নির্ধারণে একটি ভারসাম্যপূর্ণ প্রস্তাব গৃহীত হয়েছিল—যেখানে প্রথম ধাপে ৫০ থেকে ৫০০ শ্রমিকের কারখানায় ন্যূনতম ৫০ জন শ্রমিকের সম্মতিতে ইউনিয়ন গঠনের সুযোগ ছিল, কিন্তু পরে উপদেষ্টা পরিষদের সভায় একতরফাভাবে সেটি পরিবর্তন করে ২০–৩০০ শ্রমিক নির্ধারণ করা হয়েছে এবং ধাপ করা হয়েছে পাঁচটি।
এ সিদ্ধান্ত বাস্তবতাবিবর্জিত। কারণ, মাত্র ২০ জন শ্রমিক দিয়ে একটি ইউনিয়ন গঠন করা হলে কারখানাগুলোতে এমন ব্যক্তিরা ট্রেড ইউনিয়ন করবেন, যাঁরা ওই শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নন। এটি অন্তর্দ্বন্দ্ব ও শিল্পে অস্থিতিশীলতা তৈরি করবে এবং উৎপাদন ব্যাহত করবে। এতে বিনিয়োগকারীদের আস্থা কমবে এবং উদ্যোক্তারা নতুন প্রতিষ্ঠান স্থাপন বা পরিচালনায় নিরুৎসাহিত হবেন।
২. ভবিষ্যৎ তহবিল ও সর্বজনীন পেনশন প্রগতি—দ্বৈত জটিলতা
টিসিসির আলোচনায় সিদ্ধান্ত হয়েছিল—একটি প্রতিষ্ঠান চাইলে ‘ভবিষ্যৎ তহবিল’ বা ‘প্রগতি’—যেকোনো একটি স্কিম বেছে নিতে পারবে।
কিন্তু উপদেষ্টা পরিষদ অনুমোদন দিয়েছে, শ্রমিক চাইলে দুটি পদ্ধতিতেই অংশ নিতে পারবে—যা উদ্যোক্তাকে দুটি ভিন্ন আর্থিক ব্যবস্থাপনা সমান্তরালে চালাতে বাধ্য করবে। এতে প্রশাসনিক জটিলতা, ব্যয় বৃদ্ধি ও তহবিল ব্যবস্থাপনায় বিশৃঙ্খলা দেখা দেবে।
৩. শ্রমিকের সংজ্ঞায় অস্পষ্টতা ও প্রশাসনিক ঝুঁকি
নতুন সংশোধনীতে শ্রমিকের সংজ্ঞায় ‘কর্মচারী/কর্মকর্তা’ যুক্ত করায় প্রতিষ্ঠানের প্রশাসনিক স্তর ও শ্রমিক স্তরের মধ্যে বিভাজন ভেঙে যাবে। এর ফলে সিদ্ধান্ত গ্রহণে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে, দায়িত্ব বণ্টনে বিভ্রান্তি তৈরি হবে এবং প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় মারাত্মক সমস্যা দেখা দেবে।

মসলাজাতীয় একটি প্রাচীনতম ফসল আদা; যা বাণিজ্যিকভাবে প্রথম মসলাজাতীয় পণ্য হিসেবে এশিয়া থেকে ইউরোপে রপ্তানি হয়েছিল। প্রাচীন গ্রিস এবং রোমানরা এটি ব্যবহার করত। মুখরোচক রান্নায় আদার জুড়ি মেলা ভার। তাই তো প্রায় চার হাজার বছর আগে থেকে রান্নায় আদার ব্যবহার হয়ে আসছে। এর ভেষজ গুণও উপেক্ষার নয়। চিকিৎসার অন্যতম
১০ নভেম্বর ২০২৪
চট্টগ্রাম বন্দরে দীর্ঘদিন ধরে পড়ে থাকা ১৯টি বিপজ্জনক (ডেঞ্জারাস গুডস) কনটেইনার পরিবেশসম্মত উপায়ে ধ্বংস করা হয়েছে। নিলাম অযোগ্য ও বিপজ্জনক এসব পণ্য ধ্বংসের কাজ ২৫ ও ২৬ অক্টোবর দিনব্যাপী সম্পন্ন হয়। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সোমবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
২ ঘণ্টা আগে
এবারের মেলায় অংশ নিচ্ছে ১২টি দেশ; যার মধ্যে রয়েছে পাকিস্তান, নেপাল, ভুটান, মালদ্বীপ, চীন, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশের সরকারি ও বেসরকারি পর্যটন সংস্থা এবং ট্যুর অপারেটররা।
৩ ঘণ্টা আগে
এমন পরিস্থিতে ভারতীয় কিছু শোধনাগার জরুরি চাহিদা মেটাতে স্পট মার্কেট বা অস্থায়ী বাজার থেকে তেল কেনার চেষ্টা করছে। রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ইন্ডিয়ান অয়েল করপোরেশন (আইওসি) ইতিমধ্যে নতুন করে তেল আমদানির টেন্ডার আহ্বান করেছে। অন্যদিকে, ভারতের সবচেয়ে বড় বেসরকারি শোধনাগার রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ স্পট মার্কে
৩ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

চট্টগ্রাম বন্দরে দীর্ঘদিন ধরে পড়ে থাকা ১৯টি বিপজ্জনক (ডেঞ্জারাস গুডস) কনটেইনার পরিবেশসম্মত উপায়ে ধ্বংস করা হয়েছে। নিলাম অযোগ্য ও বিপজ্জনক এসব পণ্য ধ্বংসের কাজ ২৫ ও ২৬ অক্টোবর দিনব্যাপী সম্পন্ন হয়।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সোমবার (২৭ অক্টোবর) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
এনবিআর জানায়, নিলাম অযোগ্য বিপজ্জনক ও ধ্বংসযোগ্য পণ্য বিনষ্টকরণের লক্ষ্যে গঠিত আন্তসংস্থা কমিটির আহ্বায়ক চট্টগ্রাম বিভাগের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) মোহাম্মদ নূরুল্লাহ নূরীর নেতৃত্বে এই ধ্বংস কার্যক্রম পরিচালিত হয়। এতে পরিবেশ অধিদপ্তর, বিস্ফোরক পরিদপ্তর, ডিজিএফআই, এনএসআই, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ ও চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত শনিবার সকাল ৯টা থেকে শুরু করে রোববার রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্নভাবে ধ্বংসের কাজ চলে। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, আনসার এবং স্থানীয় বন্দর থানার পুলিশ সদস্যরা নিরাপত্তা ও সার্বিক সহায়তা দেন।
ধ্বংসকৃত পণ্যগুলোর মধ্যে ছিল আনকোটেড ক্যালসিয়াম কার্বোনেটের ১৬টি কনটেইনার, অরেঞ্জ ইমালশন, সুইট হুই পাউডার এবং স্কিমড মিল্ক পাউডারের একটি করে কনটেইনার। দীর্ঘদিন ধরে বন্দর এলাকায় পড়ে থাকায় এসব পণ্য পরিবেশ ও নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকি তৈরি করেছিল।
গত বছরও চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস ও চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের যৌথ উদ্যোগে ১৪ বছর ধরে পড়ে থাকা চারটি অতি দাহ্য হ্যাজার্ডাস কার্গো কনটেইনার অপসারণ ও পরিবেশসম্মত উপায়ে ধ্বংস করা হয়।
এনবিআর জানিয়েছে, চট্টগ্রাম বন্দরের কনটেইনার জট কমাতে প্রায় ৬ হাজার ৬৯টি কনটেইনারের (প্রায় ১০ হাজার টিইইউ) ইনভেনটরি সম্পন্ন করা হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ কনটেইনারের নিলাম প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। বাকি নিলাম দ্রুত সম্পন্ন হলে বন্দর এলাকার কনটেইনার জট কমাতে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস বড় ভূমিকা রাখতে পারবে বলে আশা করছে এনবিআর।
চট্টগ্রাম বন্দরের নিরাপত্তার স্বার্থে দীর্ঘদিন ধরে পড়ে থাকা বিপজ্জনক পণ্যগুলো ধ্বংসের কাজ পর্যায়ক্রমে অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে রাজস্ব বোর্ড।

চট্টগ্রাম বন্দরে দীর্ঘদিন ধরে পড়ে থাকা ১৯টি বিপজ্জনক (ডেঞ্জারাস গুডস) কনটেইনার পরিবেশসম্মত উপায়ে ধ্বংস করা হয়েছে। নিলাম অযোগ্য ও বিপজ্জনক এসব পণ্য ধ্বংসের কাজ ২৫ ও ২৬ অক্টোবর দিনব্যাপী সম্পন্ন হয়।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সোমবার (২৭ অক্টোবর) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
এনবিআর জানায়, নিলাম অযোগ্য বিপজ্জনক ও ধ্বংসযোগ্য পণ্য বিনষ্টকরণের লক্ষ্যে গঠিত আন্তসংস্থা কমিটির আহ্বায়ক চট্টগ্রাম বিভাগের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) মোহাম্মদ নূরুল্লাহ নূরীর নেতৃত্বে এই ধ্বংস কার্যক্রম পরিচালিত হয়। এতে পরিবেশ অধিদপ্তর, বিস্ফোরক পরিদপ্তর, ডিজিএফআই, এনএসআই, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ ও চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত শনিবার সকাল ৯টা থেকে শুরু করে রোববার রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্নভাবে ধ্বংসের কাজ চলে। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, আনসার এবং স্থানীয় বন্দর থানার পুলিশ সদস্যরা নিরাপত্তা ও সার্বিক সহায়তা দেন।
ধ্বংসকৃত পণ্যগুলোর মধ্যে ছিল আনকোটেড ক্যালসিয়াম কার্বোনেটের ১৬টি কনটেইনার, অরেঞ্জ ইমালশন, সুইট হুই পাউডার এবং স্কিমড মিল্ক পাউডারের একটি করে কনটেইনার। দীর্ঘদিন ধরে বন্দর এলাকায় পড়ে থাকায় এসব পণ্য পরিবেশ ও নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকি তৈরি করেছিল।
গত বছরও চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস ও চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের যৌথ উদ্যোগে ১৪ বছর ধরে পড়ে থাকা চারটি অতি দাহ্য হ্যাজার্ডাস কার্গো কনটেইনার অপসারণ ও পরিবেশসম্মত উপায়ে ধ্বংস করা হয়।
এনবিআর জানিয়েছে, চট্টগ্রাম বন্দরের কনটেইনার জট কমাতে প্রায় ৬ হাজার ৬৯টি কনটেইনারের (প্রায় ১০ হাজার টিইইউ) ইনভেনটরি সম্পন্ন করা হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ কনটেইনারের নিলাম প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। বাকি নিলাম দ্রুত সম্পন্ন হলে বন্দর এলাকার কনটেইনার জট কমাতে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস বড় ভূমিকা রাখতে পারবে বলে আশা করছে এনবিআর।
চট্টগ্রাম বন্দরের নিরাপত্তার স্বার্থে দীর্ঘদিন ধরে পড়ে থাকা বিপজ্জনক পণ্যগুলো ধ্বংসের কাজ পর্যায়ক্রমে অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে রাজস্ব বোর্ড।

মসলাজাতীয় একটি প্রাচীনতম ফসল আদা; যা বাণিজ্যিকভাবে প্রথম মসলাজাতীয় পণ্য হিসেবে এশিয়া থেকে ইউরোপে রপ্তানি হয়েছিল। প্রাচীন গ্রিস এবং রোমানরা এটি ব্যবহার করত। মুখরোচক রান্নায় আদার জুড়ি মেলা ভার। তাই তো প্রায় চার হাজার বছর আগে থেকে রান্নায় আদার ব্যবহার হয়ে আসছে। এর ভেষজ গুণও উপেক্ষার নয়। চিকিৎসার অন্যতম
১০ নভেম্বর ২০২৪
ব্যবসায়ীরা বলেন, উচ্চ সুদহার, পণ্য পরিবহনব্যবস্থার উন্নতি, গ্যাস-বিদুৎ সমস্যাসহ সব সমস্যা সমাধান করে প্রস্তুতি শেষ হলে আগামী বছরই গ্র্যাজুয়েশনে রাজি তাঁরা।
২ ঘণ্টা আগে
এবারের মেলায় অংশ নিচ্ছে ১২টি দেশ; যার মধ্যে রয়েছে পাকিস্তান, নেপাল, ভুটান, মালদ্বীপ, চীন, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশের সরকারি ও বেসরকারি পর্যটন সংস্থা এবং ট্যুর অপারেটররা।
৩ ঘণ্টা আগে
এমন পরিস্থিতে ভারতীয় কিছু শোধনাগার জরুরি চাহিদা মেটাতে স্পট মার্কেট বা অস্থায়ী বাজার থেকে তেল কেনার চেষ্টা করছে। রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ইন্ডিয়ান অয়েল করপোরেশন (আইওসি) ইতিমধ্যে নতুন করে তেল আমদানির টেন্ডার আহ্বান করেছে। অন্যদিকে, ভারতের সবচেয়ে বড় বেসরকারি শোধনাগার রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ স্পট মার্কে
৩ ঘণ্টা আগেবিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা

দেশে পর্যটন খাতের সর্ববৃহৎ আয়োজন বাংলাদেশ ট্রাভেল অ্যান্ড টুরিজম ফেয়ার (বিটিটিএফ)-২০২৫ আগামী ৩০ অক্টোবর থেকে শুরু হচ্ছে। রাজধানীর বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে তিন দিনব্যাপী এই আন্তর্জাতিক মেলার আয়োজন করছে ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (টোয়াব)।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান টোয়াবের পরিচালক (বাণিজ্য ও মেলা) তাসলিম আমিন শোভন।
তিনি জানান, এবারের মেলায় অংশ নিচ্ছে ১২টি দেশ; যার মধ্যে রয়েছে পাকিস্তান, নেপাল, ভুটান, মালদ্বীপ, চীন, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশের সরকারি ও বেসরকারি পর্যটন সংস্থা এবং ট্যুর অপারেটররা।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস থাকছে মেলার টাইটেল স্পনসর হিসেবে, আর বিকাশ থাকছে পেমেন্ট পার্টনার।
তাসলিম আমিন শোভন বলেন, এবারের আয়োজন আগের চেয়ে আরও জাঁকজমকপূর্ণ ও আকর্ষণীয় হবে। দেশের পর্যটন সম্ভাবনা তুলে ধরতে এই মেলা দেশি-বিদেশি অংশগ্রহণকারীদের সংযোগের এক অনন্য প্ল্যাটফর্ম হয়ে উঠবে।
মেলার সার্বিক সহযোগিতা দিচ্ছে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ টুরিজম বোর্ড, বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন এবং টুরিস্ট পুলিশ।
বিটিটিএফ-২০২৫-এ থাকবে ৪টি হলে ২০টি প্যাভিলিয়ন ও ২২০টি স্টল। এ ছাড়া আয়োজন করা হয়েছে বি-টু-বি সেশন, সেমিনার, কান্ট্রি প্রেজেন্টেশন, প্রতিদিন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও দেশের পর্যটন গন্তব্যভিত্তিক প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনী।
দর্শনার্থীদের জন্য থাকবে আকর্ষণীয় র্যাফেল ড্র, যেখানে অংশ নিতে হলে বিটিটিএফ অ্যাপ ব্যবহার করে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত মেলা সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। প্রবেশমূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০ টাকা। তবে ছাত্রছাত্রী, মুক্তিযোদ্ধা ও জ্যেষ্ঠ নাগরিকদের জন্য প্রবেশ ফ্রি।
টোয়াব জানায়, ২০০৭ সাল থেকে নিয়মিতভাবে আয়োজিত বিটিটিএফ এখন বাংলাদেশের পর্যটন খাতের সবচেয়ে বড় আন্তর্জাতিক মেলায় পরিণত হয়েছে। এই আয়োজন কেবল ব্যবসায়ী ও ট্যুর অপারেটরদের নয়, সাধারণ মানুষকেও ভ্রমণ প্রবণ ও পর্যটনবান্ধব করে তুলছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন টোয়াবের সভাপতি মো. রাফেউজ্জামান, ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকার জেনারেল ম্যানেজার অশ্বিনী নায়ার, রিজেন্সি হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট লিমিটেডের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর শাহিদ হামিদ, টোয়াবের প্রথম সহসভাপতি আবুল কালাম আজাদ, সহসভাপতি মো. আনোয়ার হোসেন এবং টোয়াবের সাবেক সভাপতি শিবলুল আজম কোরেশী।

দেশে পর্যটন খাতের সর্ববৃহৎ আয়োজন বাংলাদেশ ট্রাভেল অ্যান্ড টুরিজম ফেয়ার (বিটিটিএফ)-২০২৫ আগামী ৩০ অক্টোবর থেকে শুরু হচ্ছে। রাজধানীর বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে তিন দিনব্যাপী এই আন্তর্জাতিক মেলার আয়োজন করছে ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (টোয়াব)।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান টোয়াবের পরিচালক (বাণিজ্য ও মেলা) তাসলিম আমিন শোভন।
তিনি জানান, এবারের মেলায় অংশ নিচ্ছে ১২টি দেশ; যার মধ্যে রয়েছে পাকিস্তান, নেপাল, ভুটান, মালদ্বীপ, চীন, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশের সরকারি ও বেসরকারি পর্যটন সংস্থা এবং ট্যুর অপারেটররা।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস থাকছে মেলার টাইটেল স্পনসর হিসেবে, আর বিকাশ থাকছে পেমেন্ট পার্টনার।
তাসলিম আমিন শোভন বলেন, এবারের আয়োজন আগের চেয়ে আরও জাঁকজমকপূর্ণ ও আকর্ষণীয় হবে। দেশের পর্যটন সম্ভাবনা তুলে ধরতে এই মেলা দেশি-বিদেশি অংশগ্রহণকারীদের সংযোগের এক অনন্য প্ল্যাটফর্ম হয়ে উঠবে।
মেলার সার্বিক সহযোগিতা দিচ্ছে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ টুরিজম বোর্ড, বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন এবং টুরিস্ট পুলিশ।
বিটিটিএফ-২০২৫-এ থাকবে ৪টি হলে ২০টি প্যাভিলিয়ন ও ২২০টি স্টল। এ ছাড়া আয়োজন করা হয়েছে বি-টু-বি সেশন, সেমিনার, কান্ট্রি প্রেজেন্টেশন, প্রতিদিন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও দেশের পর্যটন গন্তব্যভিত্তিক প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনী।
দর্শনার্থীদের জন্য থাকবে আকর্ষণীয় র্যাফেল ড্র, যেখানে অংশ নিতে হলে বিটিটিএফ অ্যাপ ব্যবহার করে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত মেলা সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। প্রবেশমূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০ টাকা। তবে ছাত্রছাত্রী, মুক্তিযোদ্ধা ও জ্যেষ্ঠ নাগরিকদের জন্য প্রবেশ ফ্রি।
টোয়াব জানায়, ২০০৭ সাল থেকে নিয়মিতভাবে আয়োজিত বিটিটিএফ এখন বাংলাদেশের পর্যটন খাতের সবচেয়ে বড় আন্তর্জাতিক মেলায় পরিণত হয়েছে। এই আয়োজন কেবল ব্যবসায়ী ও ট্যুর অপারেটরদের নয়, সাধারণ মানুষকেও ভ্রমণ প্রবণ ও পর্যটনবান্ধব করে তুলছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন টোয়াবের সভাপতি মো. রাফেউজ্জামান, ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকার জেনারেল ম্যানেজার অশ্বিনী নায়ার, রিজেন্সি হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট লিমিটেডের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর শাহিদ হামিদ, টোয়াবের প্রথম সহসভাপতি আবুল কালাম আজাদ, সহসভাপতি মো. আনোয়ার হোসেন এবং টোয়াবের সাবেক সভাপতি শিবলুল আজম কোরেশী।

মসলাজাতীয় একটি প্রাচীনতম ফসল আদা; যা বাণিজ্যিকভাবে প্রথম মসলাজাতীয় পণ্য হিসেবে এশিয়া থেকে ইউরোপে রপ্তানি হয়েছিল। প্রাচীন গ্রিস এবং রোমানরা এটি ব্যবহার করত। মুখরোচক রান্নায় আদার জুড়ি মেলা ভার। তাই তো প্রায় চার হাজার বছর আগে থেকে রান্নায় আদার ব্যবহার হয়ে আসছে। এর ভেষজ গুণও উপেক্ষার নয়। চিকিৎসার অন্যতম
১০ নভেম্বর ২০২৪
ব্যবসায়ীরা বলেন, উচ্চ সুদহার, পণ্য পরিবহনব্যবস্থার উন্নতি, গ্যাস-বিদুৎ সমস্যাসহ সব সমস্যা সমাধান করে প্রস্তুতি শেষ হলে আগামী বছরই গ্র্যাজুয়েশনে রাজি তাঁরা।
২ ঘণ্টা আগে
চট্টগ্রাম বন্দরে দীর্ঘদিন ধরে পড়ে থাকা ১৯টি বিপজ্জনক (ডেঞ্জারাস গুডস) কনটেইনার পরিবেশসম্মত উপায়ে ধ্বংস করা হয়েছে। নিলাম অযোগ্য ও বিপজ্জনক এসব পণ্য ধ্বংসের কাজ ২৫ ও ২৬ অক্টোবর দিনব্যাপী সম্পন্ন হয়। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সোমবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
২ ঘণ্টা আগে
এমন পরিস্থিতে ভারতীয় কিছু শোধনাগার জরুরি চাহিদা মেটাতে স্পট মার্কেট বা অস্থায়ী বাজার থেকে তেল কেনার চেষ্টা করছে। রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ইন্ডিয়ান অয়েল করপোরেশন (আইওসি) ইতিমধ্যে নতুন করে তেল আমদানির টেন্ডার আহ্বান করেছে। অন্যদিকে, ভারতের সবচেয়ে বড় বেসরকারি শোধনাগার রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ স্পট মার্কে
৩ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

ট্রাম্প প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞার পর ভারতীয় শোধনাগারগুলো রাশিয়া থেকে নতুন করে অপরিশোধিত তেল কেনা স্থগিত করে দিয়েছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, মার্কিন নিষেধাজ্ঞার ফলে অর্থ প্রদানের অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। তাই ভারতীয় শোধনাগারগুলো সরকার ও সরবরাহকারীদের কাছ থেকে পরবর্তী নির্দেশনার অপেক্ষায় আছেন। যত দিন সরকার বা সরবরাহকারীদের থেকে অর্থ লেনদেনের বিষয়ে স্পষ্ট নির্দেশনা না আসবে, তত দিন রাশিয়ার তেল কেনা স্থগিত থাকবে।
রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এমন পরিস্থিতে ভারতীয় কিছু শোধনাগার জরুরি চাহিদা মেটাতে স্পট মার্কেট বা অস্থায়ী বাজার থেকে তেল কেনার চেষ্টা করছে। রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ইন্ডিয়ান অয়েল করপোরেশন (আইওসি) ইতিমধ্যে নতুন করে তেল আমদানির টেন্ডার আহ্বান করেছে। অন্যদিকে, ভারতের সবচেয়ে বড় বেসরকারি শোধনাগার রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ স্পট মার্কেটে তেল কেনা বৃদ্ধি করেছে।
গত সপ্তাহে রাশিয়ার সবচেয়ে বড় দুই তেল কোম্পানি—লুকঅয়েল ও রসনেফটের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ট্রাম্প প্রশাসন। ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও যুক্তরাজ্য আগেই ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে এসব কোম্পানির বিরুদ্ধে একই ধরনের বিধিনিষেধ আরোপ করেছিল।
নতুন নিষেধাজ্ঞা ভারতীয় ক্রেতাদের তেল সরবরাহ ও অর্থ প্রদানের প্রক্রিয়া পুনর্মূল্যায়ন করতে বাধ্য করেছে। সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, নিষিদ্ধ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত ব্যবসায়ীদের বেশ কিছু চালান ইতিমধ্যে বাতিল করা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যাংকগুলোও কালো তালিকাভুক্ত কোম্পানির সঙ্গে লেনদেন না করায় কেউ ঝুঁকি নিতে চাইছে না।
ভারতীয় একটি শোধনাগারের নির্বাহী কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানান, তাঁরা এখন পর্যবেক্ষণ করছেন, নিষেধাজ্ঞাবিহীন মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে তেল কেনা সম্ভব কি না। তিনি বলেন, ‘সরকার ও সরবরাহকারীদের কাছ থেকে স্পষ্টতা না পাওয়া পর্যন্ত আমরা নতুন কোনো অর্ডার দিচ্ছি না।’
২০২২ সাল থেকে ভারতের সবচেয়ে বড় রুশ তেল আমদানিকারক রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ। এই প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, তারা সব ধরনের আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা মেনে চলবে এবং বিদ্যমান সরবরাহকারীদের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখবে। তবে সংস্থাটি ইতিমধ্যে তাদের প্রধান রুশ অংশীদার রসনেফট থেকে তেল আমদানি বন্ধ করেছে বলে জানা গেছে।
আন্তর্জাতিক জ্বালানি সংস্থার (আইইএ) তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের প্রথম ৯ মাসে ভারত দৈনিক প্রায় ১৯ লাখ ব্যারেল রুশ অপরিশোধিত তেল আমদানি করেছে, যা রাশিয়ার মোট রপ্তানির প্রায় ৪০ শতাংশ। তবে ছাড় কমে যাওয়া এবং সরবরাহ-সংকটের কারণে আমদানির প্রবাহ সম্প্রতি ধীর হয়ে পড়ে। এর ফলে চলতি বছরের এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে ভারতের রুশ তেল আমদানি আগের বছরের তুলনায় ৮ দশমিক ৪ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। এই সময়ে ভারত, মধ্যপ্রাচ্য ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে তেল কেনা বাড়িয়েছে বলেও জানা গেছে।

ট্রাম্প প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞার পর ভারতীয় শোধনাগারগুলো রাশিয়া থেকে নতুন করে অপরিশোধিত তেল কেনা স্থগিত করে দিয়েছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, মার্কিন নিষেধাজ্ঞার ফলে অর্থ প্রদানের অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। তাই ভারতীয় শোধনাগারগুলো সরকার ও সরবরাহকারীদের কাছ থেকে পরবর্তী নির্দেশনার অপেক্ষায় আছেন। যত দিন সরকার বা সরবরাহকারীদের থেকে অর্থ লেনদেনের বিষয়ে স্পষ্ট নির্দেশনা না আসবে, তত দিন রাশিয়ার তেল কেনা স্থগিত থাকবে।
রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এমন পরিস্থিতে ভারতীয় কিছু শোধনাগার জরুরি চাহিদা মেটাতে স্পট মার্কেট বা অস্থায়ী বাজার থেকে তেল কেনার চেষ্টা করছে। রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ইন্ডিয়ান অয়েল করপোরেশন (আইওসি) ইতিমধ্যে নতুন করে তেল আমদানির টেন্ডার আহ্বান করেছে। অন্যদিকে, ভারতের সবচেয়ে বড় বেসরকারি শোধনাগার রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ স্পট মার্কেটে তেল কেনা বৃদ্ধি করেছে।
গত সপ্তাহে রাশিয়ার সবচেয়ে বড় দুই তেল কোম্পানি—লুকঅয়েল ও রসনেফটের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ট্রাম্প প্রশাসন। ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও যুক্তরাজ্য আগেই ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে এসব কোম্পানির বিরুদ্ধে একই ধরনের বিধিনিষেধ আরোপ করেছিল।
নতুন নিষেধাজ্ঞা ভারতীয় ক্রেতাদের তেল সরবরাহ ও অর্থ প্রদানের প্রক্রিয়া পুনর্মূল্যায়ন করতে বাধ্য করেছে। সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, নিষিদ্ধ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত ব্যবসায়ীদের বেশ কিছু চালান ইতিমধ্যে বাতিল করা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যাংকগুলোও কালো তালিকাভুক্ত কোম্পানির সঙ্গে লেনদেন না করায় কেউ ঝুঁকি নিতে চাইছে না।
ভারতীয় একটি শোধনাগারের নির্বাহী কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানান, তাঁরা এখন পর্যবেক্ষণ করছেন, নিষেধাজ্ঞাবিহীন মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে তেল কেনা সম্ভব কি না। তিনি বলেন, ‘সরকার ও সরবরাহকারীদের কাছ থেকে স্পষ্টতা না পাওয়া পর্যন্ত আমরা নতুন কোনো অর্ডার দিচ্ছি না।’
২০২২ সাল থেকে ভারতের সবচেয়ে বড় রুশ তেল আমদানিকারক রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ। এই প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, তারা সব ধরনের আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা মেনে চলবে এবং বিদ্যমান সরবরাহকারীদের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখবে। তবে সংস্থাটি ইতিমধ্যে তাদের প্রধান রুশ অংশীদার রসনেফট থেকে তেল আমদানি বন্ধ করেছে বলে জানা গেছে।
আন্তর্জাতিক জ্বালানি সংস্থার (আইইএ) তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের প্রথম ৯ মাসে ভারত দৈনিক প্রায় ১৯ লাখ ব্যারেল রুশ অপরিশোধিত তেল আমদানি করেছে, যা রাশিয়ার মোট রপ্তানির প্রায় ৪০ শতাংশ। তবে ছাড় কমে যাওয়া এবং সরবরাহ-সংকটের কারণে আমদানির প্রবাহ সম্প্রতি ধীর হয়ে পড়ে। এর ফলে চলতি বছরের এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে ভারতের রুশ তেল আমদানি আগের বছরের তুলনায় ৮ দশমিক ৪ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। এই সময়ে ভারত, মধ্যপ্রাচ্য ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে তেল কেনা বাড়িয়েছে বলেও জানা গেছে।

মসলাজাতীয় একটি প্রাচীনতম ফসল আদা; যা বাণিজ্যিকভাবে প্রথম মসলাজাতীয় পণ্য হিসেবে এশিয়া থেকে ইউরোপে রপ্তানি হয়েছিল। প্রাচীন গ্রিস এবং রোমানরা এটি ব্যবহার করত। মুখরোচক রান্নায় আদার জুড়ি মেলা ভার। তাই তো প্রায় চার হাজার বছর আগে থেকে রান্নায় আদার ব্যবহার হয়ে আসছে। এর ভেষজ গুণও উপেক্ষার নয়। চিকিৎসার অন্যতম
১০ নভেম্বর ২০২৪
ব্যবসায়ীরা বলেন, উচ্চ সুদহার, পণ্য পরিবহনব্যবস্থার উন্নতি, গ্যাস-বিদুৎ সমস্যাসহ সব সমস্যা সমাধান করে প্রস্তুতি শেষ হলে আগামী বছরই গ্র্যাজুয়েশনে রাজি তাঁরা।
২ ঘণ্টা আগে
চট্টগ্রাম বন্দরে দীর্ঘদিন ধরে পড়ে থাকা ১৯টি বিপজ্জনক (ডেঞ্জারাস গুডস) কনটেইনার পরিবেশসম্মত উপায়ে ধ্বংস করা হয়েছে। নিলাম অযোগ্য ও বিপজ্জনক এসব পণ্য ধ্বংসের কাজ ২৫ ও ২৬ অক্টোবর দিনব্যাপী সম্পন্ন হয়। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সোমবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
২ ঘণ্টা আগে
এবারের মেলায় অংশ নিচ্ছে ১২টি দেশ; যার মধ্যে রয়েছে পাকিস্তান, নেপাল, ভুটান, মালদ্বীপ, চীন, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশের সরকারি ও বেসরকারি পর্যটন সংস্থা এবং ট্যুর অপারেটররা।
৩ ঘণ্টা আগে