Ajker Patrika

১০ ব্যবসায়ী গ্রুপের অর্থ পাচার অনুসন্ধান করবে এনবিআর

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩: ১৯
Thumbnail image

দেশের শীর্ষ ১০ ব্যবসায়ী গ্রুপ এবং তাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ওঠা অর্থ পাচারের অভিযোগ তদন্তে যৌথ অনুসন্ধান ও তদন্ত দল গঠন করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এই টিম আন্তসংস্থা টাস্কফোর্সের অধীনে কাজ করবে। অভিযোগ ওঠা গ্রুপগুলো হলো এস আলম, বেক্সিমকো, নাবিল, সামিট, ওরিয়ন, জেমকন, নাসা, সিকদার ও আরামিট গ্রুপ। এনবিআরের আয়কর বিভাগের ১০ জন কর পরিদর্শক এবং কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের ১০ জন সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তাকে এ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তাঁরা কর ফাঁকি, অর্থ পাচার এবং মানিলন্ডারিং আইনের অধীন অপরাধগুলো তদন্ত করবেন।

ইতিমধ্যে গঠিত যৌথ অনুসন্ধান ও তদন্ত দল বা জয়েন্ট ইনভেস্টিগেশন টিম (জেআইটি) বিদেশে পাচার হওয়া সম্পদ দেশে ফেরাতে কাজ শুরু করেছে। এই টিমে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি), এনবিআরের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেল (সিআইসি) এবং কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর (সিআইআইডি) অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

এনবিআরের দুটি পৃথক আদেশ সূত্রে জানা গেছে, জেমকন গ্রুপ ও এর স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের অনুসন্ধান ও তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছেন কর অঞ্চল-২০-এর কর পরিদর্শক মো. নাসিরউদ্দিন এবং কাস্টমস মূল্যায়ন ও অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা কমিশনারেট ঢাকার সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মোছা. সিরাজুম মনিরা।

সামিট গ্রুপ ও এর স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের অনুসন্ধান ও তদন্ত করবেন আয়কর গোয়েন্দা ও তদন্ত ইউনিটের (আইটিআইআইইউ) কর পরিদর্শক মো. আবদুল্লাহ আল মামুন এবং কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেলের (সিআইসি) সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মো. গোলাম মোস্তফা।

ওরিয়ন গ্রুপ ও এর স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের অনুসন্ধান ও তদন্ত করবেন সিআইসির কর পরিদর্শক কাজী নুরুল ইসলাম মুকুল এবং কাস্টম হাউস ঢাকার সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মো. আতিকুল ইসলাম।

নাসা গ্রুপের স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের অনুসন্ধান ও তদন্ত করবেন সিআইসির কর পরিদর্শক মো. মঞ্জুর হাসান এবং কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের (সিআইআইডি) সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মোসাম্মৎ ফেরদৌসী আক্তার।

শিকদার গ্রুপের স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের অনুসন্ধান ও তদন্ত করবেন উৎসে কর ব্যবস্থাপনা ইউনিটের কর পরিদর্শক নাজমুল হোসাইন এবং কাস্টমস রিস্ক ম্যানেজমেন্ট কমিশনারেটের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মো. শাহাবুল হক।

বেক্সিমকো গ্রুপ ও এর স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের অনুসন্ধান ও তদন্ত করবেন বৃহৎ করদাতা ইউনিটের (এলটিইউ) কর পরিদর্শক মো. সিরাজুল ইসলাম খান এবং সিআইসির সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মো. শাহজাহান মিয়া।

নাবিল গ্রুপ ও এর স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের অনুসন্ধান ও তদন্ত করবেন কর অঞ্চল-৭-এর কর পরিদর্শক মো. ইয়াছিন আলী এবং মূল্য সংযোজন কর (মূসক) নিরীক্ষা, গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা এস এম খালেদুর রহমান।

এস আলম গ্রুপ ও এর স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের অনুসন্ধান ও তদন্ত করবেন কর অঞ্চল-১০-এর কর পরিদর্শক নূরুচ্ছাদাৎ তপু এবং কাস্টম হাউস ঢাকার সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মো. ফাহাদ চৌধুরী।

সাইফুজ্জামান চৌধুরী ও তাঁর স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের অনুসন্ধান ও তদন্ত করবেন আয়কর গোয়েন্দা ও তদন্ত ইউনিটের কর পরিদর্শক মো. রেহানুল হক এবং কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট ঢাকার সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা এস এম সায়েম।

এর মধ্যে সিআইডি তদন্ত করছে এস আলম, বেক্সিমকো, নাবিল ও জেমকন গ্রুপের আর্থিক অনিয়ম ও অর্থ পাচারের বিষয়ে। বাকি ছয়টির তদন্তে নেতৃত্ব দিচ্ছে দুদক।

এ বিষয়ে এনবিআরের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, প্রথম কাজ হলো, দেশের বাইরে টাকা পাচারের যে অভিযোগ, সেটি প্রমাণ করা। অর্থাৎ, এসব অর্থ বাংলাদেশ থেকেই নিয়ে গিয়ে তাঁরা বিদেশে সম্পদ গড়েছেন, সেটি প্রমাণ করা। এসব টাকা এলসির মাধ্যমে গেছে নাকি টিটির মাধ্যমে, অর্থাৎ, কোন চ্যানেলে গেছে, সেটি প্রমাণ করা। এর জন্য ব্যাংক ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠান থেকে তথ্য সংগ্রহ করবেন অনুসন্ধান কর্মকর্তারা। তারপর কর ফাঁকিসহ অন্যান্য বিষয় আসবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত