Ajker Patrika

আড়াই মাসে মুরগির বাচ্চায় ৭২০ কোটি টাকা লোপাট: পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশন

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১: ১৬
Thumbnail image

সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি মূল্য মুরগির বাচ্চা বিক্রি করে ৭২০ কোটি টাকা লোপাট করেছে করপোরেট সিন্ডিকেট বলে অভিযোগ করেছে বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ)। বিগত আড়াই মাসে করপোরেট সিন্ডিকেট মুরগির বাচ্চা বিক্রি করে ছোট খামারিদের কাছ থেকে এই অর্থ লোপাট করেছে।

আজ বৃহস্পতিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এই অভিযোগ করেছে সংগঠনটি।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দেশে প্রতিদিন সব ধরনের মুরগির বাচ্চা উৎপাদন হয় ৩০ লাখ পিছ। কোম্পানিগুলো বাচ্চাপ্রতি গড়ে ৩০ টাকা বেশি নিয়ে থাকে তাহলে দিনে ৯ কোটি টাকা অতিরিক্ত নেয় করপোরেট চক্র। এভাবে গত আড়াই মাসে (৮০ দিনে) খামারিদের কাছ থেকে ৭২০ কোটি টাকা লোপাট করে নেয় চক্রটি। তাতে মারাত্মকভাবে ক্ষতিকর সম্মুখীন হয়েছেন খামারিরা।

বিপিএ সভাপতি সুমন হাওলাদার বলেন, পোলট্রি ফিড এবং বাচ্চা উৎপাদনকারী করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে কখনো ঘণ্টায়, কখনো মিনিটে দাম বাড়িয়ে অতিরিক্ত মুনাফা আদায় করেছে। এসব অসাধু কার্যক্রম প্রান্তিক খামারিদের ওপর গুরুতর চাপ তৈরি করেছে, যার ফলে অনেক খামারি ব্যবসা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছে। বাচ্চার এবং ফিডের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির কারণে প্রান্তিক খামারিরা তাদের পুঁজি হারাচ্ছেন। অনেক খামারি লাভজনক না হওয়ায় তাদের ব্যবসা বন্ধ করতে বাধ্য হচ্ছেন, যার ফলে শিক্ষিত নারী, বেকার যুবক উদ্যোক্তাদের প্রায় ৫০ লাখ লোকের কর্মসংস্থান হুমকিতে পড়েছে এবং খাদ্য উৎপাদন প্রক্রিয়া বিপর্যস্ত হয়েছে। মুরগি ও ডিমের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় সাধারণ জনগণের দৈনন্দিন জীবনযাত্রার খরচ বেড়ে গেছে। এটির সরাসরি প্রভাব দেশের অর্থনীতিতে পড়েছে, যেখানে উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ার কারণে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমে গেছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মুরগির বাচ্চা ও পোলট্রি ফিড পশু খাদ্য উৎপাদনের শীর্ষে রয়েছে–নাহার অ্যাগ্রো পোলট্রি অ্যান্ড হ্যাচারি, কাজী ফার্মস পোল্ট্রি অ্যান্ড হ্যাচারি, প্যারাগন পোলট্রি অ্যান্ড হ্যাচারি, সিপি বাংলাদেশ, নারিশ পোলট্রি অ্যান্ড হ্যাচারি, পিপলস পোলট্রি অ্যান্ড হ্যাচারি, ডায়মন্ড পোলট্রি অ্যান্ড পথচারীসহ আরও ৮ থেকে ১০টি কোম্পানি। এর মধ্যে গুটি কয়েক করপোরেট কোম্পানির সিন্ডিকেট এবং ফিড ও মুরগির বাচ্চার বাজার নিয়ন্ত্রণের কারণে গত আড়াই মাসে মুরগির বাচ্চার দাম ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পায়। গত ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত স্বাভাবিক বাজার দরে একটি বাচ্চার দাম ৩০-৩৫ টাকা থাকলেও তা ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে মুরগির বাচ্চার দাম বেড়ে ৬০-১০০ টাকায় পৌঁছায়। যা গত ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত মুরগির বাচ্চায় সিন্ডিকেট চলমান ছিল।

সরকারের পদক্ষেপের ফলে দাম কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে উল্লেখ্য করে বলা হয়, পোলট্রি বাজারে স্থিতিশীলতা ফিরে এসেছে এবং খামারিরা কিছুটা স্বস্তি লাভ করেছেন। তবে, এবার সরকারের দৃষ্টি পোলট্রি ফিডের দিকে দিতে হবে। পোলট্রি ফিডের দাম কমানো হলে ডিম মুরগির উৎপাদন খরচ আরও কমানো সম্ভব। ফলে ডিম ও মুরগির দামও সাশ্রয়ী হবে এবং ভোক্তাদের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে থাকবে; যা সাধারণ মানুষের জন্য গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত