ফারুক মেহেদী, ঢাকা
রাজস্ব খাতে বড় ধরনের পরিবর্তন নিয়ে আসছে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট। নতুন বাজেটে কালোটাকা সাদা করার ক্ষেত্র আরও সম্প্রসারিত হচ্ছে। এত দিন ব্যক্তিপর্যায়ে কালোটাকা সাদা করার সুযোগ ছিল। আসছে বাজেটে প্রথমবারের মতো প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্যও এই সুযোগ দিচ্ছ আসছেন অর্থমন্ত্রী। এ ছাড়া ধনীদের ওপর কর বাড়ানো এবং সংসদ সদস্যদের (এমপি) আমদানি করা গাড়িতে শুল্ক বসানোর মতো সাহসী পদক্ষেপ যেমন নেওয়া হচ্ছে, তেমনি শিল্পের কাঁচামাল আমদানিতে ১ শতাংশ শুল্ক বসানোর মতো ঝুঁকিপূর্ণ সিদ্ধান্তও থাকছে এই বাজেটে।
আগামীকাল বৃহস্পতিবার (৬ জুন) অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী জাতীয় সংসদে নতুন বাজেট উপস্থাপন করবেন। তার আগে আজ বুধবার শুরু হচ্ছে সংসদের বাজেট অধিবেশন। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, অর্থমন্ত্রী তাঁর বাজেট বক্তৃতায় করছাড় বাবদ অন্তত ১ লাখ ৪৬ হাজার ৮৯৭ কোটি টাকার রাজস্ব ক্ষতির প্রক্ষেপণ তুলে ধরে করছাড় কমিয়ে আনার ব্যাপারে কঠোর অবস্থান জানান দেবেন সংসদে।
নতুন বাজেট ঘিরে শুল্ক খাত নিয়ে যে পরিকল্পনা করা হয়েছে, তাতে দেশীয় শিল্প ও দেশে উৎপাদিত বিভিন্ন পণ্যকে সুরক্ষা প্রদানের চেষ্টা আছে। শুল্ক হ্রাস-বৃদ্ধির প্রভাবে বেশ কিছু পণ্যের দামে পরিবর্তনের আভাস মিলতে পারে নতুন বাজেটে। শুল্ক বাড়ানোর ফলে দাম বাড়তে পারে এয়ারকন্ডিশনার, পানি বিশুদ্ধকরণ যন্ত্র, মোটরসাইকেল, এটিএম, সিসি ক্যামেরা, জেনারেটর, এলইডি লাইটের। তবে শুল্ক কমানোর প্রস্তাবে কমতে পারে ল্যাপটপ, কিডনি ডায়ালাইসিস ফিল্টার, আমদানি করা প্যাকেটজাত গুঁড়া দুধ, কৃত্রিম আঁশের কার্পেট, চকলেট, চিলারসহ বেশ কিছু পণ্যের দাম।
নতুন বাজেট নিয়ে রাজস্ব বিশ্লেষক ও এনবিআরের সাবেক সদস্য ড. সৈয়দ আমিনুল করিম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বাজেটে যেসব প্রস্তাব করা হচ্ছে বলে শোনা যাচ্ছে, এগুলোর বেশির ভাগই ভালো প্রস্তাব; বিশেষ করে ধনীদের ওপর বাড়তি করারোপ করার প্রস্তাবটি ভালো। যাঁদের বেশি আয় থাকবে, তাঁরা বেশি কর দেবেন।’ তিনি কালোটাকা সাদা করার বিষয়টি ইতিবাচক আখ্যায়িত করে বলেন, ‘এ সুযোগও ভালো পদক্ষেপ। এতে রাজস্ব আয় বাড়বে। তবে আইসিটির ১৩টি খাতকে ক্যাশলেস করলে তিন বছরের করছাড় সুবিধার শর্তটি বাস্তবায়িত হবে না। কেউই এ সময়ে পুরো ক্যাশলেস হতে পারবে না।’
আয়কর খাতে যেসব পরিবর্তন আসতে পারে
বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী রাজস্ব খাতে বেশ কিছু সাহসী সিদ্ধান্ত জানাতে পারেন। এগুলোর মধ্যে আয়কর খাতে নতুন করে একটি করের স্তর ঘোষণার সম্ভাবনা আছে। বছরে ২০ লাখ টাকার বেশি আয় করেন এমন স্বাভাবিক ব্যক্তি ও ফার্মকে ২৫ শতাংশের পরিবর্তে ৩০ শতাংশ হারে কর দিতে হতে পারে নতুন অর্থবছরে। এ ছাড়া ব্যক্তির করমুক্ত আয়ের সীমা সাড়ে ৩ লাখ টাকায় অপরিবর্তিত থাকছে।
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কিছু কোম্পানির করপোরেট কর শর্ত সাপেক্ষে সাড়ে ২২ শতাংশ থেকে ২০ শতাংশ করার প্রস্তাব থাকছে। তবে যেকোনো সমিতি, ট্রাস্ট, সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানের সুদ আয়ে ১৫ শতাংশের সঙ্গে আরও ৫ শতাংশ বেশি কর আরোপ হবে। এ ছাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সুদ আয় বাবদ দিতে হবে ১০ শতাংশ কর।
বাজেটে ধান, গম, আলু, পেঁয়াজ, রসুন, ডালসহ বিভিন্ন মসলা ও নিত্যপণ্যের এলসি খোলায় উৎসে কর কমানো হতে পারে। এতে এসব পণ্যের আমদানি খরচ কমতে পারে।
অনেক সমালোচনার পরেও কালোটাকা সাদা করার সুযোগ রেখে দিচ্ছে সরকার। শুধু তা-ই নয়, ১৫ শতাংশ হারে কর দিলে এবার ব্যক্তির পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানও কালোটাকা বৈধ করতে পারবে।
স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে সহায়তা হিসেবে আইসিটির সঙ্গে জড়িত ১৩টি খাতের সব কার্যক্রম যদি ক্যাশলেস করতে পারে, তবে তাদেরকে পরবর্তী ৩ বছরের জন্য করছাড় দেওয়ার ঘোষণা থাকবে। জনস্বার্থের ক্ষতি বিবেচনায় মিষ্টি পানীয়ের টার্নওভার কর শূন্য দশমিক ৬ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩ শতাংশ করার প্রস্তাব থাকবে। তবে করছাড় সুবিধা পাবে এতিমখানা বা আশ্রমের কেনা গাড়ির অগ্রিম কর, উত্তরাধিকার, উইল, অছিয়তের সম্পদ। আর এনজিও ব্যুরোর অনুমোদিত যেকোনো ব্যক্তির দানও করমুক্ত থাকবে। সব রিটার্ন স্বনির্ধারণী ব্যবস্থায় দাখিলের ঘোষণার পাশাপাশি এনবিআরকে রিটার্ন দাখিলের সময়সীমা এক মাস বৃদ্ধির ক্ষমতা দেওয়া হতে পারে নতুন বাজেটে।
শুল্ক খাতে যেসব পরিবর্তন আসতে পারে
মেইড ইন বাংলাদেশ গড়ে তোলার স্লোগান সামনে রেখে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে শুল্ক আরোপের প্রস্তাব করবেন অর্থমন্ত্রী। বড় সিদ্ধান্তটি হতে পারে এমপিদের গাড়ি আমদানিতে ২৫ শতাংশ শুল্ক ও ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপের বিষয়টি। শেষ পর্যন্ত এটি বাস্তবায়ন করা গেলে এমপিদের গাড়ি আমদানিতে ৪০ শতাংশ শুল্ক-কর দিতে হবে। নতুন বাজেটে দেশে উৎপাদিত বাদামশিল্পকে সুরক্ষা দিতে কাজুবাদাম আমদানিতে ৫ শতাংশের পরিবর্তে ১০ শতাংশ শুল্ক বসতে পারে। ওষুধশিল্পের কাঁচামালে রেয়াতি শুল্ক সুবিধা অব্যাহত রাখা হবে। কিডনি ডায়ালাইসিসের ফিল্টার ও সার্কিট আমদানির শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১ শতাংশ করা হতে পারে। নতুন করে ডেঙ্গুর কিট আমদানিতে রেয়াতি সুবিধা দেওয়া হবে আসছে বাজেটে। তবে রেফারেল হাসপাতাল নামে পরিচিত দেশের কয়েকটি বিলাসবহুল হাসপাতালের পণ্য আমদানিতে ১ শতাংশ শুল্ক সুবিধা তুলে দিয়ে ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা থাকবে। আড়াই কেজির প্যাকেটজাত গুঁড়া দুধে বিদ্যমান ২০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক তুলে দেওয়া হতে পারে। রড উৎপাদনে ব্যবহৃত ফেরো ম্যাঙ্গানিজের শুল্ক কমিয়ে ১০ শতাংশ থেকে ৫ শতাংশ করার ঘোষণা থাকতে পারে বাজেটে।
এয়ারকন্ডিশনার তৈরিতে ব্যবহৃত স্টিল শিটের শুল্ক ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশ এবং পানি বিশুদ্ধকরণ যন্ত্র বা পিউরিফায়ারে শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হতে পারে। দেশে উৎপাদিত মোবাইল ফোনের বিভিন্ন কাঁচামালের শুল্ক রেয়াতের মেয়াদ ২০২৪ সালে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তা ২০২৬ সাল পর্যন্ত বাড়ানোর ঘোষণা থাকবে নতুন বাজেটে। এ ছাড়া ২৫০ সিসির বেশি ইঞ্জিনের মোটরসাইকেলের যন্ত্রপাতি আমদানিতে শুল্ক ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করার প্রস্তাব থাকবে।
বাজেটে এটিএম ও সিসি ক্যামেরার আমদানি শুল্কও বাড়িয়ে ১ শতাংশ থেকে ৫ শতাংশ করা হতে পারে। এ ছাড়া জেনারেটর সংযোজন পণ্যে ১ শতাংশ, এলইডি, এনার্জি সেভিং ল্যাম্পে ১ শতাংশ শুল্ক আরোপের প্রস্তাব থাকবে। চকলেটের বিদ্যমান সম্পূরক শুল্ক ৪৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশ করার প্রস্তাব থাকবে বাজেটে। ল্যাপটপ আমদানিতে শুল্ক বাড়ানো হতে পারে ৫ থেকে ১০ শতাংশ।
তবে এ ক্ষেত্রে ভ্যাট প্রত্যাহার করা হবে। ফলে মোট করভার ৩১ শতাংশ থেকে কমে ২০ দশমিক ৫ শতাংশ হবে। প্রিপেইড ইলেকট্রিক মিটারের শুল্ক ১৫ শতাংশ থেকে ২৫ শতাংশ এবং বিভিন্ন ইলেকট্রিক মিটারের যন্ত্রাংশের শুল্ক ১০ থেকে ১৫ শতাংশ হতে পারে।
বাজেটে অর্থমন্ত্রী সব স্তরে শুল্ক অব্যাহতি অবসানের অংশ হিসেবে শিল্পের কাঁচামালে শূন্য শুল্কের পরিবর্তে ১ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিতে পারেন। এটি হলে শিল্প খাতের খরচ বাড়ার ঝুঁকি নিয়ে এরই মধ্যে উদ্যোক্তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। শুল্ক ৫ থেকে ১০ শতাংশ করায় খরচ বাড়বে প্রি-ফ্যাব্রিকেটেড স্ট্রাকচারে। সিএনজি, এলপিজি স্টেশনের যন্ত্রপাতি ও যন্ত্রাংশের শুল্ক ৩ থেকে ৫ শতাংশ করার ঘোষণায় খরচ বাড়তে পারে এসব উদ্যোগে। বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল, হাই-টেক পার্কে শিল্পের যন্ত্রপাতি, যন্ত্রাংশ ও গাড়ি আমদানিও শূন্য শুল্কে হবে না। নতুন বাজেটে এসব ক্ষেত্রেও ১ শতাংশ শুল্ক আরোপের প্রস্তাব থাকবে।
ব্যাগেজ রুলসের আওতায় স্বর্ণ আমদানিতে কড়াকড়ি থাকছে। আর মোবাইল ফোন আমদানিও সীমিত করা হচ্ছে। আসছে বছরে কোনো যাত্রী একটির বেশি মোবাইল ফোন বিনা শুল্কে আনতে পারবেন না। আগে দুটি ফোন আনা যেত।
রাজস্ব খাতে বড় ধরনের পরিবর্তন নিয়ে আসছে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট। নতুন বাজেটে কালোটাকা সাদা করার ক্ষেত্র আরও সম্প্রসারিত হচ্ছে। এত দিন ব্যক্তিপর্যায়ে কালোটাকা সাদা করার সুযোগ ছিল। আসছে বাজেটে প্রথমবারের মতো প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্যও এই সুযোগ দিচ্ছ আসছেন অর্থমন্ত্রী। এ ছাড়া ধনীদের ওপর কর বাড়ানো এবং সংসদ সদস্যদের (এমপি) আমদানি করা গাড়িতে শুল্ক বসানোর মতো সাহসী পদক্ষেপ যেমন নেওয়া হচ্ছে, তেমনি শিল্পের কাঁচামাল আমদানিতে ১ শতাংশ শুল্ক বসানোর মতো ঝুঁকিপূর্ণ সিদ্ধান্তও থাকছে এই বাজেটে।
আগামীকাল বৃহস্পতিবার (৬ জুন) অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী জাতীয় সংসদে নতুন বাজেট উপস্থাপন করবেন। তার আগে আজ বুধবার শুরু হচ্ছে সংসদের বাজেট অধিবেশন। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, অর্থমন্ত্রী তাঁর বাজেট বক্তৃতায় করছাড় বাবদ অন্তত ১ লাখ ৪৬ হাজার ৮৯৭ কোটি টাকার রাজস্ব ক্ষতির প্রক্ষেপণ তুলে ধরে করছাড় কমিয়ে আনার ব্যাপারে কঠোর অবস্থান জানান দেবেন সংসদে।
নতুন বাজেট ঘিরে শুল্ক খাত নিয়ে যে পরিকল্পনা করা হয়েছে, তাতে দেশীয় শিল্প ও দেশে উৎপাদিত বিভিন্ন পণ্যকে সুরক্ষা প্রদানের চেষ্টা আছে। শুল্ক হ্রাস-বৃদ্ধির প্রভাবে বেশ কিছু পণ্যের দামে পরিবর্তনের আভাস মিলতে পারে নতুন বাজেটে। শুল্ক বাড়ানোর ফলে দাম বাড়তে পারে এয়ারকন্ডিশনার, পানি বিশুদ্ধকরণ যন্ত্র, মোটরসাইকেল, এটিএম, সিসি ক্যামেরা, জেনারেটর, এলইডি লাইটের। তবে শুল্ক কমানোর প্রস্তাবে কমতে পারে ল্যাপটপ, কিডনি ডায়ালাইসিস ফিল্টার, আমদানি করা প্যাকেটজাত গুঁড়া দুধ, কৃত্রিম আঁশের কার্পেট, চকলেট, চিলারসহ বেশ কিছু পণ্যের দাম।
নতুন বাজেট নিয়ে রাজস্ব বিশ্লেষক ও এনবিআরের সাবেক সদস্য ড. সৈয়দ আমিনুল করিম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বাজেটে যেসব প্রস্তাব করা হচ্ছে বলে শোনা যাচ্ছে, এগুলোর বেশির ভাগই ভালো প্রস্তাব; বিশেষ করে ধনীদের ওপর বাড়তি করারোপ করার প্রস্তাবটি ভালো। যাঁদের বেশি আয় থাকবে, তাঁরা বেশি কর দেবেন।’ তিনি কালোটাকা সাদা করার বিষয়টি ইতিবাচক আখ্যায়িত করে বলেন, ‘এ সুযোগও ভালো পদক্ষেপ। এতে রাজস্ব আয় বাড়বে। তবে আইসিটির ১৩টি খাতকে ক্যাশলেস করলে তিন বছরের করছাড় সুবিধার শর্তটি বাস্তবায়িত হবে না। কেউই এ সময়ে পুরো ক্যাশলেস হতে পারবে না।’
আয়কর খাতে যেসব পরিবর্তন আসতে পারে
বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী রাজস্ব খাতে বেশ কিছু সাহসী সিদ্ধান্ত জানাতে পারেন। এগুলোর মধ্যে আয়কর খাতে নতুন করে একটি করের স্তর ঘোষণার সম্ভাবনা আছে। বছরে ২০ লাখ টাকার বেশি আয় করেন এমন স্বাভাবিক ব্যক্তি ও ফার্মকে ২৫ শতাংশের পরিবর্তে ৩০ শতাংশ হারে কর দিতে হতে পারে নতুন অর্থবছরে। এ ছাড়া ব্যক্তির করমুক্ত আয়ের সীমা সাড়ে ৩ লাখ টাকায় অপরিবর্তিত থাকছে।
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কিছু কোম্পানির করপোরেট কর শর্ত সাপেক্ষে সাড়ে ২২ শতাংশ থেকে ২০ শতাংশ করার প্রস্তাব থাকছে। তবে যেকোনো সমিতি, ট্রাস্ট, সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানের সুদ আয়ে ১৫ শতাংশের সঙ্গে আরও ৫ শতাংশ বেশি কর আরোপ হবে। এ ছাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সুদ আয় বাবদ দিতে হবে ১০ শতাংশ কর।
বাজেটে ধান, গম, আলু, পেঁয়াজ, রসুন, ডালসহ বিভিন্ন মসলা ও নিত্যপণ্যের এলসি খোলায় উৎসে কর কমানো হতে পারে। এতে এসব পণ্যের আমদানি খরচ কমতে পারে।
অনেক সমালোচনার পরেও কালোটাকা সাদা করার সুযোগ রেখে দিচ্ছে সরকার। শুধু তা-ই নয়, ১৫ শতাংশ হারে কর দিলে এবার ব্যক্তির পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানও কালোটাকা বৈধ করতে পারবে।
স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে সহায়তা হিসেবে আইসিটির সঙ্গে জড়িত ১৩টি খাতের সব কার্যক্রম যদি ক্যাশলেস করতে পারে, তবে তাদেরকে পরবর্তী ৩ বছরের জন্য করছাড় দেওয়ার ঘোষণা থাকবে। জনস্বার্থের ক্ষতি বিবেচনায় মিষ্টি পানীয়ের টার্নওভার কর শূন্য দশমিক ৬ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩ শতাংশ করার প্রস্তাব থাকবে। তবে করছাড় সুবিধা পাবে এতিমখানা বা আশ্রমের কেনা গাড়ির অগ্রিম কর, উত্তরাধিকার, উইল, অছিয়তের সম্পদ। আর এনজিও ব্যুরোর অনুমোদিত যেকোনো ব্যক্তির দানও করমুক্ত থাকবে। সব রিটার্ন স্বনির্ধারণী ব্যবস্থায় দাখিলের ঘোষণার পাশাপাশি এনবিআরকে রিটার্ন দাখিলের সময়সীমা এক মাস বৃদ্ধির ক্ষমতা দেওয়া হতে পারে নতুন বাজেটে।
শুল্ক খাতে যেসব পরিবর্তন আসতে পারে
মেইড ইন বাংলাদেশ গড়ে তোলার স্লোগান সামনে রেখে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে শুল্ক আরোপের প্রস্তাব করবেন অর্থমন্ত্রী। বড় সিদ্ধান্তটি হতে পারে এমপিদের গাড়ি আমদানিতে ২৫ শতাংশ শুল্ক ও ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপের বিষয়টি। শেষ পর্যন্ত এটি বাস্তবায়ন করা গেলে এমপিদের গাড়ি আমদানিতে ৪০ শতাংশ শুল্ক-কর দিতে হবে। নতুন বাজেটে দেশে উৎপাদিত বাদামশিল্পকে সুরক্ষা দিতে কাজুবাদাম আমদানিতে ৫ শতাংশের পরিবর্তে ১০ শতাংশ শুল্ক বসতে পারে। ওষুধশিল্পের কাঁচামালে রেয়াতি শুল্ক সুবিধা অব্যাহত রাখা হবে। কিডনি ডায়ালাইসিসের ফিল্টার ও সার্কিট আমদানির শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১ শতাংশ করা হতে পারে। নতুন করে ডেঙ্গুর কিট আমদানিতে রেয়াতি সুবিধা দেওয়া হবে আসছে বাজেটে। তবে রেফারেল হাসপাতাল নামে পরিচিত দেশের কয়েকটি বিলাসবহুল হাসপাতালের পণ্য আমদানিতে ১ শতাংশ শুল্ক সুবিধা তুলে দিয়ে ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা থাকবে। আড়াই কেজির প্যাকেটজাত গুঁড়া দুধে বিদ্যমান ২০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক তুলে দেওয়া হতে পারে। রড উৎপাদনে ব্যবহৃত ফেরো ম্যাঙ্গানিজের শুল্ক কমিয়ে ১০ শতাংশ থেকে ৫ শতাংশ করার ঘোষণা থাকতে পারে বাজেটে।
এয়ারকন্ডিশনার তৈরিতে ব্যবহৃত স্টিল শিটের শুল্ক ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশ এবং পানি বিশুদ্ধকরণ যন্ত্র বা পিউরিফায়ারে শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হতে পারে। দেশে উৎপাদিত মোবাইল ফোনের বিভিন্ন কাঁচামালের শুল্ক রেয়াতের মেয়াদ ২০২৪ সালে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তা ২০২৬ সাল পর্যন্ত বাড়ানোর ঘোষণা থাকবে নতুন বাজেটে। এ ছাড়া ২৫০ সিসির বেশি ইঞ্জিনের মোটরসাইকেলের যন্ত্রপাতি আমদানিতে শুল্ক ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করার প্রস্তাব থাকবে।
বাজেটে এটিএম ও সিসি ক্যামেরার আমদানি শুল্কও বাড়িয়ে ১ শতাংশ থেকে ৫ শতাংশ করা হতে পারে। এ ছাড়া জেনারেটর সংযোজন পণ্যে ১ শতাংশ, এলইডি, এনার্জি সেভিং ল্যাম্পে ১ শতাংশ শুল্ক আরোপের প্রস্তাব থাকবে। চকলেটের বিদ্যমান সম্পূরক শুল্ক ৪৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশ করার প্রস্তাব থাকবে বাজেটে। ল্যাপটপ আমদানিতে শুল্ক বাড়ানো হতে পারে ৫ থেকে ১০ শতাংশ।
তবে এ ক্ষেত্রে ভ্যাট প্রত্যাহার করা হবে। ফলে মোট করভার ৩১ শতাংশ থেকে কমে ২০ দশমিক ৫ শতাংশ হবে। প্রিপেইড ইলেকট্রিক মিটারের শুল্ক ১৫ শতাংশ থেকে ২৫ শতাংশ এবং বিভিন্ন ইলেকট্রিক মিটারের যন্ত্রাংশের শুল্ক ১০ থেকে ১৫ শতাংশ হতে পারে।
বাজেটে অর্থমন্ত্রী সব স্তরে শুল্ক অব্যাহতি অবসানের অংশ হিসেবে শিল্পের কাঁচামালে শূন্য শুল্কের পরিবর্তে ১ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিতে পারেন। এটি হলে শিল্প খাতের খরচ বাড়ার ঝুঁকি নিয়ে এরই মধ্যে উদ্যোক্তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। শুল্ক ৫ থেকে ১০ শতাংশ করায় খরচ বাড়বে প্রি-ফ্যাব্রিকেটেড স্ট্রাকচারে। সিএনজি, এলপিজি স্টেশনের যন্ত্রপাতি ও যন্ত্রাংশের শুল্ক ৩ থেকে ৫ শতাংশ করার ঘোষণায় খরচ বাড়তে পারে এসব উদ্যোগে। বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল, হাই-টেক পার্কে শিল্পের যন্ত্রপাতি, যন্ত্রাংশ ও গাড়ি আমদানিও শূন্য শুল্কে হবে না। নতুন বাজেটে এসব ক্ষেত্রেও ১ শতাংশ শুল্ক আরোপের প্রস্তাব থাকবে।
ব্যাগেজ রুলসের আওতায় স্বর্ণ আমদানিতে কড়াকড়ি থাকছে। আর মোবাইল ফোন আমদানিও সীমিত করা হচ্ছে। আসছে বছরে কোনো যাত্রী একটির বেশি মোবাইল ফোন বিনা শুল্কে আনতে পারবেন না। আগে দুটি ফোন আনা যেত।
দেশে খাদ্যে মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমে এসেছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য বলছে, চলতি বছরের জানুয়ারিতে খাদ্যে মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ১০.৭২ শতাংশ, যা আগের মাস ডিসেম্বরে ছিল ১২ দশমিক ৯২। সেই হিসাবে এক মাসের ব্যবধানে খাদ্যে মূল্যস্ফীতি কমেছে ২.২ শতাংশ।
৫ মিনিট আগেভারতের চ্যাংড়াবান্ধা স্থলবন্দরের পাথর রপ্তানিকারকেরা পাথর রপ্তানির মূল্য কমাতে না রাজি হওয়ায় বাংলাদেশের লালমনিরহাটের পাটগ্রামের বুড়িমারী স্থলবন্দরের আমদানিকারকেরা ১ ফেব্রুয়ারি থেকে পাথর আমদানি বন্ধ রেখেছেন। এর ফলে চার দিন ধরে ভারতের ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশ থেকে কোনো রপ্তানি পণ্য গ্রহণ...
১ ঘণ্টা আগেদীর্ঘ ১৫ বছর পর বাংলাদেশ হোসিয়ারি অ্যাসোসিয়েশন পরিচালনা পর্ষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এত দিন ধরে ওসমান পরিবার জোর করে এই সংগঠনটি দখল করে রেখেছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর ভোটের মাধ্যমে প্রতিনিধি নির্বাচন করতে পেরে উচ্ছ্বসিত ভোটাররা।
১ ঘণ্টা আগেদুই বছর ধরে সিইও (মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা) ছাড়া কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে ড্রাগন গ্রুপের প্রয়াত কর্ণধার মোস্তফা গোলাম কুদ্দুসের (ওসি কুদ্দুস) মালিকানাধীন রূপালী ইনস্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড। ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাস থেকে সিইও পদটি শূন্য রয়েছে, যা বিমা আইন, ২০১০-এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
৬ ঘণ্টা আগে