Ajker Patrika

রোজার বাজারে পুরোনো দৃশ্য

রোকন উদ্দীন, ঢাকা
আপডেট : ১৮ মার্চ ২০২৫, ১৫: ৩৪
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

রাজধানী সেগুনবাগিচা বাজারে গতকাল বৃহস্পতিবার রোজার বাজার করতে গিয়েছিলেন একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরিজীবী মো. মতিউর রহমান। দোকানে গিয়ে হাতে থাকা ফর্দের প্রথম পণ্যটিই পাননি তিনি। অনেকটা হতাশার সুরে এই ক্রেতা বলেন, রোজার বাকি আর মাত্র দু-দিন। নিয়মিত বাজারের সঙ্গে রমজানের কিছু বাড়তি পণ্য যোগ হয়েছে ফর্দে। কিন্তু ফর্দের প্রথম পণ্য ভোজ্যতেলই পাচ্ছি না বাজারে।

মতিউরের মতো অনেকেই গতকাল রমজান মাসের প্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে বাজারে গিয়েছিলেন। এতেই চাহিদা বেড়েছে তেল, চিনি, ডাল, ছোলা, বেসন, মাছ, মাংস ও কিছু তরিতরকারির। বাড়তি চাহিদার কারণে এবারও পুরোনো দৃশ্যপটে ফিরে গেছে রোজার বাজার। দাম বেড়ে গেছে প্রায় সব পণ্যের।

বাজারসংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, গত বছরের তুলনায় এবার চালের দাম বেড়েছে ১৬-১৭ শতাংশ। ছোলাসহ রোজায় চাহিদা বাড়ে এমন পণ্যও গত বছরের তুলনায় এবার ৯-১০ শতাংশ বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। তার ওপর নতুন করে বেড়েছে মুরগি, গরুর মাংস, লেবু, শসা, পেঁয়াজসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম। গত বছরের চেয়ে ১৯-২০ শতাংশ বাড়তি দামে কিনতে হচ্ছে ভোজ্যতেল।

রোজার মাত্র দু-দিন আগেও বাজারে সয়াবিন তেল না পেয়ে ক্রেতার সঙ্গে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন খুচরা বিক্রেতারাও। তাঁরা বলছেন, ‘কাস্টমারের কাছে জবাবদিহি করতে করতে আমরা হয়রান হয়ে যাচ্ছি। সবার একই প্রশ্ন, তেল নেই কেন? বারবার চেয়েও কোম্পানির প্রতিনিধিদের কাছ থেকে তেলের সরবরাহ পাচ্ছি না।’

গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে ও অনেকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে সরকারের সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়ার আশ্বাস, পণ্যের ব্যাপক আমদানি ও সবজির মৌসুম—এসব কারণে এবার সাধারণ ক্রেতারা আশা করেছিলেন রোজায় বাজার স্বাভাবিক থাকবে। কিন্তু ক্রেতার সে আশার গুড়ে বালি। বাজার ঠিকই গরম হয়ে উঠেছে।

৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে ভোজ্যতেলের সংকট কেটে যাবে, ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝিতে এমন আশ্বাস দিয়েছিলেন বাণিজ্য উপদেষ্টা ও মিলমালিকেরা। কেউ তাঁদের কথা রাখেননি। বাজারে সয়াবিন তেলের সরবরাহ নেই বলেই চলে।

গতকাল রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বাজারে গিয়ে দেখা যায়, ছয়টি দোকানের কোনোটিতেই সয়াবিন তেল নেই। প্রায় একই অবস্থা রামপুরা, মালিবাগসহ অন্য বাজারগুলোতেও।

সেগুনবাগিচা বাজারের মুদিদোকানি মোস্তাফিজুর রহমান সিফাত আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বাজারে কারও কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। এত দীর্ঘ সময় তেলের সংকট এর আগে কখনই হয়নি। বিশেষ করে রোজার দু-দিন আগেও কোম্পানিগুলো বাজারে তেল দিচ্ছে না। এ বিষয়ে কারও তেমন কোনো পদক্ষেপও দেখছি না। ভোজ্যতেলের সরবরাহ না থাকায় কাস্টমারদের গালি শুনতে হয় আমাদের।’

শান্তিনগর বাজারের তীর ব্র্যান্ডের ডিলার মো. জিয়া বলেন, ‘তেলের সরবরাহ না দেওয়ায় আমি সয়াবিনের ডিলারশিপ স্থগিত রেখেছি। কারণ তেলের সাপ্লাই নেই, আমার কাস্টমারদের মাল দিতে পারেননি। স্থগিত না করে উপায় নেই।’

বাজারে কিছু খোলা সয়াবিন তেল ও পাম সুপার পাওয়া যায়। কিন্তু তাও সরকারনির্ধারিত দামের চেয়ে অনেক বেশি। গড়ে সব তেলের দামই এখন ১৯০-২০০ টাকা লিটার। অথচ সরকারনির্ধারিত দাম ১৫৭ টাকা লিটার।

রোজার-বাজার-২৭

১২ ফেব্রুয়ারি বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে আশ্বাস দিয়েছিলেন, ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে ভোজ্যতেলের বাজার স্থিতিশীল হবে। ১৬ ফেব্রুয়ারি এক বিজ্ঞপ্তিতে একই আশ্বাস দিয়েছিল ভোজ্যতেল পরিশোধনকারী কোম্পানিগুলোর সংগঠন বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন।

কাস্টমসের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৫ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত ভোজ্যতেলের আমদানি প্রায় ৩৫ শতাংশ বেড়েছে। ঋণপত্রও (এলসি) বেড়েছে একই হারে। শুধু তা–ই নয়, বিশ্ববাজারেও এখন পণ্যটির মূল্য স্থিতিশীল।

সরকারি ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ টিসিবির হিসাবে, বর্তমানে বাজারে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় খোলা সয়াবিন তেলের দাম ১৯ শতাংশ বেশি।

কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহসভাপতি এস এম নাজের হোসাইন বলেন, ‘এবার পণ্যের কোনো ঘাটতি নেই দেশে। সরকার বিভিন্ন সুযোগ দিয়ে দেশে পণ্যের মজুত বাড়িয়েছে। কিন্তু সমস্যা তৈরি করছেন যাঁরা সরবরাহ করেন, তাঁরা। আর এটি নজরদারি করার মতো প্রশাসনেও তেমন লোক নেই। ফলে যে যেভাবে পারছেন, দাম বাড়াচ্ছেন। অথচ এবার পণ্যের দাম কম থাকবে এবং বাজার স্বাভাবিক থাকবে—এমনটিই আশা ছিল আমাদের। সরকারও সেভাবেই আশ্বাস দিয়েছিল।’

ভোজ্যতেল ছাড়া রমজানে চাহিদা বাড়ে এমন অন্য পণ্যগুলোর মধ্যে ছোলা, চিনি, মসুর ডাল, বেসনের সরবরাহ সংকট নেই। তবে এসব পণ্যের দাম গত বছরের তুলনায় কেজিপ্রতি ১০-১৫ টাকা বেড়েছে। বর্তমানে বাজারে ছোলা বিক্রি হচ্ছে ১১০-১২০, যা গত বছর রোজার আগে বিক্রি হয়েছিল ৯০–১১০ টাকা কেজি। টিসিবি বলছে, ছোলার দাম বেড়েছে ১০ শতাংশ।

ভুট্টার বেসন ১৫০ ও অ্যাংকরের বেসন ১০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। বিক্রেতারা বলছেন, বেসনের দাম প্রতি কেজিতে ১৫-২০ টাকা বেড়েছে। তবে চিনির দাম ১২৫-১৩০ টাকা কেজিতে স্থির রয়েছে।

রোজার ঠিক তিন থেকে চার দিন আগে নতুন করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে অন্যতম চাহিদার পণ্য মুরগি ও গরুর মাংসের বাজার। রাজধানীর বাজারগুলোতে গতকাল ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে ২১০-২২০ টাকা কেজি। আর সোনালি জাতের মুরগি বিক্রি হয়েছে ৩১০-৩২০ টাকা কেজি। অথচ গত মঙ্গলবারও বাজারে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে ১৯০-২০০ টাকা কেজিতে।

গরুর মাংসের দাম কেজিতে ৫০ টাকা করে বেড়ে ৭৮০-৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গরুর মাংসের দাম শবে বরাতের আগে বাড়লেও মাঝখানে কয়েক দিন কিছুটা কমে বিক্রি হয়েছিল। চাহিদা বাড়তে থাকায় আবার দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন বিক্রেতারা।

রাজধানীর মুগদা বাজারের মাংস বিক্রেতা আব্দুস সালাম বলেন, হাট থেকে গরুপ্রতি ৫-৭ হাজার টাকা বাড়িতে দিয়ে কিনতে হচ্ছে। তাই আমাদেরও বাড়তি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।’

রোজায় নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষের ফলের জুস দিয়ে শরবত তৈরির সামর্থ্য নেই। ভিটামিন ‘সি’র ঘাটতি পূরণে মাল্টা বা কমলাও কিনতে পারেন না। এই শ্রেণির রোজাদারের ভরসা হয়ে ওঠে লেবুর শরবত। রোজায় নিম্ন আয়ের মানুষের সবচেয়ে দুশ্চিন্তা থাকে লেবুর দাম নিয়ে। কারণ প্রতিবছর রোজা এলে লেবুর দাম বেড়ে যায়।

এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। রাজধানীর মানিকনগর ও রামপুরাসহ বিভিন্ন বাজারে ছোট আকারে লেবু বিক্রি হয়েছে ৪০-৫০ টাকা হালি, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ২০-৩০ টাকা ছিল। মাঝারি আকারের লেবুর হালি বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকায়, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৪০-৬০ টাকা ও কিছুটা বড় আকারের লেবু কিনতে ক্রেতাকে গুনতে হচ্ছে ১০০-১১০ টাকা হালি, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৬০-৮০ টাকা হালি।

রোজায় চাহিদার বাড়ে বেগুনের। এবার সব ধরনের সবজির দাম যখন একেবারেই কম। তখন ক্রেতার আশা ছিল বেগুনের দামও কম থাকবে। কিন্তু দাম ঠিকই বেড়েছে। সপ্তাহখানেক আগেও বাজারগুলোতে যে বেগুন ৪০ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে, সেই একই মানের বেগুন গতকাল বাজারে ৬০-৭০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। লেবু ও বেগুনের সঙ্গে বেড়েছে শসা ও খিরার দামও। বাজারে খিরা বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকা কেজি, যা সপ্তাহখানেক আগে বিক্রি হয়েছে ৩০-৪০ টাকা কেজিতে।

রাজধানীর মানিকনগর বাজারের সবজি বিক্রেতা মো. মোতালিব বলেন, ‘চৈত্র ও বৈশাখ মাসে লেবুর ভরা মৌসুম। এখন চলছে ফাল্গুন মাস। তার ওপর দীর্ঘদিন বৃষ্টি না হওয়ায় লেবুর উৎপাদন কম। তাই দুই সপ্তাহ ধরেই দাম ক্রমাগত বাড়ছে। এর মধ্যে রোজার জন্য চাহিদা ৭-৮ গুণ বেড়েছে, তাই দাম আরও বেড়েছে।’

চাহিদার কারণে বেগুন ও শসার দামও বেড়েছে বলে এই বিক্রেতা বলেন। তিনি বলেন, প্রতিবছরই রোজা শুরু এবং তারপর এক সপ্তাহ পর্যন্ত বাজার কিছুটা গরম থাকে। এবারও একই অবস্থা হয়েছে। যদিও এবার সবজির দাম তুলনামূলক অনেক কম। রোজা শুরুর এক সপ্তাহ পরই বাজার আবার স্বাভাবিক হয়ে যাবে।

এবার পেঁয়াজের দাম গত বছরের তুলনায় অনেক কম হলেও গত এক সপ্তাহে কেজিপ্রতি ১০ টাকা বেড়েছে দেশে উৎপাদিত এই জরুরি পণ্যটির। গত বছর এ সময় পেঁয়াজের কেজি ছিল ১১০-১২০ টাকা। গতকাল রাজধানীর বাজারগুলোতে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৫০-৫৫ টাকা কেজি, যা এক সপ্তাহ আগে ৪০-৪৫ টাকা ছিল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তর্কে জড়ানো চিকিৎসককে বরখাস্তের নির্দেশ ডিজির

খালেদা জিয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত, মেডিকেল বোর্ডের সবুজসংকেতের অপেক্ষা

সবকিছু প্রস্তুত হচ্ছে, তারেক রহমান ফিরবেন যেকোনো সময়: আমীর খসরু

মুর্শিদাবাদে ‘বাবরি মসজিদ’: সৌদি আলেমদের আমন্ত্রণ, ৪০ হাজার মানুষের জন্য রান্না হচ্ছে বিরিয়ানি

আজকের রাশিফল: ভার্চুয়াল হাতাহাতি থেকে দূরে থাকুন, সিদ্ধান্ত ভাগ্যের ওপর ছেড়ে দিন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভারতীয় রুপি এশিয়ার সবচেয়ে দুর্বল মুদ্রায় পরিণত হলো যেভাবে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭: ৫৯
ভারতীয় রুপি ও মার্কিন ডলার। ছবি: সংগৃহিত
ভারতীয় রুপি ও মার্কিন ডলার। ছবি: সংগৃহিত

মার্কিন ডলারের বিপরীতে ভারতীয় রুপির মূল্য এখন ইতিহাসের সর্বনিম্ন অবস্থানে আছে। এই মুদ্রামান আরও নিম্নমুখী হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বছর ধরেই রুপির দরপতন অব্যাহত ছিল। এখন এর মান কমেছে ৫ শতাংশেরও বেশি। যা এই মুদ্রাকে এশিয়ার সবচেয়ে দুর্বল মুদ্রায় পরিণত করেছে।

আর রুপির দরপতনে সবচেয়ে বড় আঘাতটি এসেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৫০ শতাংশ শুল্ক থেকে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি হলে রুপির এই পতন ঠেকানোর একটি সম্ভাবনা ছিল কিন্তু সেই চুক্তিও অধরা রয়ে গেছে।

তবে এর প্রধান কারণ হলো ভারতের শেয়ারবাজার। ১৯৯৩ সালের পর থেকে ইন্ডিয়ান স্টক মার্কেট অন্যান্য বাজারগুলোর তুলনায় সবচেয়ে বেশি পিছিয়ে রয়েছে। এই বছর এমএসসিআই ইন্ডিয়া সূচকের ডলার রিটার্ন ছিল মাত্র ২.৫ শতাংশ, যেখানে বৃহত্তর উদীয়মান বাজার ইনডেক্সের রিটার্ন দাঁড়িয়েছে ২৭.৭ শতাংশে।

এই ব্যবধানের ফলে বিদেশি পোর্টফোলিও বিনিয়োগকারীরা দেশের বাজার থেকে তুলে নিয়েছে ১৬ বিলিয়ন ডলার। আর সেগুলো বিনিয়োগ করেছে ভালো পারফর্ম করা বাজারগুলোতে।

রুপির নিম্নমুখী অবস্থানে যারা কিছুটা হলেও লাভবান হয়েছেন তাদের মধ্যে রয়েছেন রপ্তানিকারকেরা। মার্কিন চড়া শুল্কের কারণে তারা ক্ষতির মুখে পড়েছিলেন। রুপির দরপতন তাদের কিছুটা স্বস্তি দিয়েছে।

ভারতের প্রযুক্তিখাতের শেয়ার কয়েকটি ত্রৈমাসিক ধরে একটি সীমিত পরিসরে আটকে ছিল। তা এই সপ্তাহে সামান্য ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে। এছাড়া আর কোনো ইতিবাচক দিক চোখে পড়ে না।

গত সপ্তাহে প্রকাশিত তথ্য বলছে, ভারতের চলতি হিসাবের ঘাটতি কিছুটা কমলেও পণ্য বাণিজ্যের ঘাটতি অক্টোবর মাসে দাঁড়িয়েছে রেকর্ড ৪১.৭ বিলিয়ন ডলারে, যা এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ। রুপি আরও নিচে নামতে থাকায় জ্বালানি আমদানি ব্যয় বাড়বে; পাশাপাশি বাড়বে বিদেশি ঋণের খরচও। আর এর প্রভাব পড়বে বিমান, ইলেকট্রনিকস ও অটোমোবাইলের মতো বিভিন্ন খাতের উৎপাদন ব্যয়ে।

এ অবস্থায় বিদেশ ভ্রমণ ও বিদেশে শিক্ষার খরচও ক্রমেই বেড়ে যাচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে ভারতের প্রধান অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ভি আনন্দ নাগেশ্বরন বলেন, রুপির দরপতন নিয়ে তিনি ‘নিদ্রাহীন রাত’ কাটাচ্ছেন না। স্বল্প মুদ্রাস্ফীতি ও প্রত্যাশার চেয়ে বেশি জিডিপি প্রবৃদ্ধি তাঁকে চিন্তামুক্ত রাখছে। রুপির দুর্বলতা ছিল নরেন্দ্র মোদির প্রথমবারের প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থিতার সময় বড় প্রচারণা–ইস্যুগুলোর একটি। ২০১৩ সালে মোদি যখন প্রচার চালাচ্ছিলেন, তখন রুপির বিনিময়মূল্য ছিল ডলারের বিপরীতে ৬০.৫; আর তিনি দায়িত্ব গ্রহণের বছর তা ছিল ৬১। তবে ক্ষমতায় আসার পর মুদ্রার অবমূল্যায়নের অর্থনৈতিক প্রভাবকে তেমন গুরুত্ব দেয়নি মোদি সরকার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তর্কে জড়ানো চিকিৎসককে বরখাস্তের নির্দেশ ডিজির

খালেদা জিয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত, মেডিকেল বোর্ডের সবুজসংকেতের অপেক্ষা

সবকিছু প্রস্তুত হচ্ছে, তারেক রহমান ফিরবেন যেকোনো সময়: আমীর খসরু

মুর্শিদাবাদে ‘বাবরি মসজিদ’: সৌদি আলেমদের আমন্ত্রণ, ৪০ হাজার মানুষের জন্য রান্না হচ্ছে বিরিয়ানি

আজকের রাশিফল: ভার্চুয়াল হাতাহাতি থেকে দূরে থাকুন, সিদ্ধান্ত ভাগ্যের ওপর ছেড়ে দিন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাশিয়া-ভেনেজুয়েলাকে মার্কিন হুমকি, সরবরাহ কমার শঙ্কায় ঊর্ধ্বমুখী তেলের দাম

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬: ৩৫
রাশিয়া ও ভেনেজুয়েলার তেল উৎপাদনেও নজর রেখেছেন বিনিয়োগকারীরা। ছবি: মার্কেটস ডট কম
রাশিয়া ও ভেনেজুয়েলার তেল উৎপাদনেও নজর রেখেছেন বিনিয়োগকারীরা। ছবি: মার্কেটস ডট কম

অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও জ্বালানি চাহিদা বাড়াতে আগামী সপ্তাহে সুদের হার কমাতে পারে মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভ। এ সম্ভাবনা থেকে তেলের দাম ১ শতাংশ বেড়ে গত দুই সপ্তাহের মধ্যে সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছেছে। পাশাপাশি, মার্কিন নিষেধাজ্ঞা ও হস্তক্ষেপের কারণে রাশিয়া ও ভেনেজুয়েলা থেকে সরবরাহ সীমিত হয়ে আসতে পারে এ উদ্বেগও রয়েছে।

রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ব্রেন্ট ফিউচার ৪৯ সেন্ট বা ০.৮% বেড়ে ব্যারেলপ্রতি ৬৩.৭৫ ডলারে স্থির হয়েছে। একই সময়ে, যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (WTI) অপরিশোধিত তেল (ক্রুড) ৪১ সেন্ট বা ০.৭% বৃদ্ধি পেয়ে ব্যারেলপ্রতি ৬০.০৮ ডলারে স্থির হয়েছে। এই দুটিই হলো ১৮ নভেম্বরের পর অপরিশোধিত তেলের জন্য সর্বোচ্চ সমাপনী দর।

সাপ্তাহিক হিসাবে, ব্রেন্ট প্রায় ১% এবং WTI প্রায় ৩% বেড়েছে, যা উভয় চুক্তির জন্য ধারাবাহিক দ্বিতীয় সপ্তাহের লাভ নির্দেশ করছে।

যুক্তরাষ্ট্রের মুদ্রাস্ফীতি প্রতিবেদন মূল্যায়ন করে ৯-১০ ডিসেম্বর ফেডের হার কমানোর সম্ভাবনার ওপর নতুন করে প্রত্যাশা জানিয়েছেন বিনিয়োগকারীরা।

তিন মাসের ধারাবাহিক শক্তিশালী বৃদ্ধির পর মার্কিন ভোক্তা ব্যয় গত সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝিতে পরিমিতভাবে বেড়েছে। এ থেকে বোঝা যায় তৃতীয় ত্রৈমাসিকের শেষে অর্থনীতিতে গতি কমেছে, কারণ দুর্বল শ্রমবাজার এবং জীবনযাত্রার ক্রমবর্ধমান ব্যয় চাহিদা হ্রাস করেছে।

বিশ্বের বৃহত্তম আর্থিক ডেরিভেটিভস এক্সচেঞ্জ অপারেটর সিএমই গ্রুপের ফেডওয়াচ টুল অনুসারে, ব্যবসায়ীরা আগামী সপ্তাহে ফেড ২৫ বেসিস পয়েন্ট হারে সুদের হার কমানোর সম্ভাবনা ৮৭ শতাংশ হতে পারে বলে মনে করছেন।

এদিকে গতকাল শুক্রবার শীর্ষ চীনা ও যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা ফোনালাপের মাধ্যমে বাণিজ্যবিষয়ক আলোচনা করেছেন, যার মধ্যে তাদের বাণিজ্যযুদ্ধের সমাধানে একটি চুক্তি বাস্তবায়নের চলমান প্রচেষ্টা অন্তর্ভুক্ত ছিল।

অন্য বাণিজ্য-সংক্রান্ত খবর অনুযায়ী, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন যে তিনি মেক্সিকো ও কানাডার নেতাদের সঙ্গে গতকাল বাণিজ্যবিষয়ক আলোচনা করবেন, যাঁদের সঙ্গে তাঁরা ২০২৬ বিশ্বকাপ ড্রয়ের জন্য ওয়াশিংটনে একত্রিত হবেন।

যুক্তরাষ্ট্র ও অন্য দেশের মধ্যে যেকোনো আলোচনার মাধ্যমে বাণিজ্য চাপ কমানো হলে তা অর্থনৈতিক বৃদ্ধি এবং জ্বালানি চাহিদা বাড়াতে সাহায্য করতে পারে।

রাশিয়া ও ভেনেজুয়েলার তেল উৎপাদনেও নজর রেখেছেন বিনিয়োগকারীরা। এই দুটি নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্ত ওপেক প্লাসের সদস্য দেশ থেকে তেলের সরবরাহ ভবিষ্যতে বাড়বে নাকি কমবে, তা নিয়ে চিন্তায় আছেন তাঁরা।

এই সপ্তাহে তেলের দাম বাড়ার পেছনে আরেকটি কারণ হলো ইউক্রেনে যুদ্ধ নিয়ে মস্কোতে যুক্তরাষ্ট্রের আলোচনার কোনো গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি না হওয়া।

পিভিএমের তেল বাজার বিশ্লেষক তামাস ভার্গাস বলেছেন, ‘ইউক্রেনীয় শান্তি আলোচনায় অগ্রগতির অভাব একটি তেজি মনোভাব সৃষ্টি করছে, কিন্তু অন্যদিকে, ওপেকের স্থিতিশীল উৎপাদন একটি মন্দার সীমা তৈরি করছে। এই দুটি বিপরীত শক্তি ট্রেডিংকে আপাতদৃষ্টিতে শান্ত করে তুলছে।’

ছয়টি সূত্রের বরাতে রয়টার্স জানায়, রাশিয়াকে ইউক্রেন যুদ্ধে অর্থায়নে সাহায্য করে এমন তেলের রাজস্ব কমাতে গ্রুপ অব সেভেন দেশ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন রাশিয়ান তেল রপ্তানিতে মূল্যসীমার পরিবর্তে সম্পূর্ণ সামুদ্রিক পরিষেবা নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়ে আলোচনা করছে।

তেল রপ্তানিকারী ওপেক প্লাসের সদস্য দেশগুলোর সংস্থা এবং রাশিয়ার মতো মিত্র দেশগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করে। কোনো চুক্তি যা রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে দিতে পারে বিশ্ববাজারে তেলের সরবরাহ বাড়াতে পারে।

এদিকে গতকাল দিল্লি সফরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে অব্যাহত জ্বালানি সরবরাহের প্রস্তাব দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। দুই দেশই বাণিজ্য ও প্রতিরক্ষা সম্পর্ক সম্প্রসারণে সম্মত হলেও ভারতের কাছ থেকে সতর্ক প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে।

বাণিজ্য-সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, মূল্যের ছাড়ের পরিমাণ বাড়ায় রাষ্ট্রায়ত্ত তেল খাতের প্রতিষ্ঠান ইন্ডিয়ান অয়েল কর্প এবং ভারত পেট্রোলিয়াম কর্প নিষিদ্ধ নয়—এমন সরবরাহকারীদের কাছ থেকে রাশিয়ার তেল লোড করার জন্য জানুয়ারির অর্ডার দিয়েছে।

অন্যদিকে ভেনেজুয়েলার মাদক পাচারকারীদের থামাতে সামরিক হস্তক্ষেপের ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যার প্রভাবও পড়ছে বৈশ্বিক তেল বাজারে।

তেল ও গ্যাস বিশ্লেষণ নিয়ে কাজ করা একটি প্রতিষ্ঠান রাইস্টার্ড এনার্জি জানিয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্টের এমন পদক্ষেপ ভেনেজুয়েলার দৈনিক ১১ লাখ ব্যারেল ক্রুড তেল উৎপাদনের জন্য ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে। এই ক্রুড অয়েলের বেশির ভাগই চীনে পাঠানো হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তর্কে জড়ানো চিকিৎসককে বরখাস্তের নির্দেশ ডিজির

খালেদা জিয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত, মেডিকেল বোর্ডের সবুজসংকেতের অপেক্ষা

সবকিছু প্রস্তুত হচ্ছে, তারেক রহমান ফিরবেন যেকোনো সময়: আমীর খসরু

মুর্শিদাবাদে ‘বাবরি মসজিদ’: সৌদি আলেমদের আমন্ত্রণ, ৪০ হাজার মানুষের জন্য রান্না হচ্ছে বিরিয়ানি

আজকের রাশিফল: ভার্চুয়াল হাতাহাতি থেকে দূরে থাকুন, সিদ্ধান্ত ভাগ্যের ওপর ছেড়ে দিন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পাকিস্তানে ২৫০ বিলিয়ন ডলারের ক্রিপ্টো ব্যবসা, দায়মুক্তির সুযোগ দিচ্ছে সরকার

পাকিস্তানের ২৫০ বিলিয়ন ডলারের ক্রিপ্টো ব্যবসায় দায়মুক্তির সুযোগ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭: ৩১
সভাটি যৌথভাবে পরিচালনা করেন পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী মোহাম্মদ আওরঙ্গজেব এবং পাকিস্তান ভার্চুয়াল অ্যাসেটস রেগুলেটরি অথরিটির (পিভিএআরএ) চেয়ারম্যান বিলাল বিন সাকিব। ছবি: পাকিস্তানের অর্থ মন্ত্রণালয়
সভাটি যৌথভাবে পরিচালনা করেন পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী মোহাম্মদ আওরঙ্গজেব এবং পাকিস্তান ভার্চুয়াল অ্যাসেটস রেগুলেটরি অথরিটির (পিভিএআরএ) চেয়ারম্যান বিলাল বিন সাকিব। ছবি: পাকিস্তানের অর্থ মন্ত্রণালয়

পাকিস্তান সরকার গতকাল শুক্রবার জানিয়েছে, স্থানীয় ব্যাংকগুলো ঝুঁকি ও কমপ্লায়েন্স নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করায় বছরে ২৫০ বিলিয়ন ডলারের বেশি ক্রিপ্টো লেনদেনকারী পাকিস্তানি ব্যবহারকারীদের নির্দিষ্ট সময়ের জন্য দায়মুক্তির সুযোগ দেওয়ার বিষয়ে বিবেচনা করা হচ্ছে।

এক শীর্ষ বৈশ্বিক ক্রিপ্টোকারেন্সি এক্সচেঞ্জের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, ভার্চুয়াল অ্যাসেট পাকিস্তানের জিডিপি বাড়াতে সহায়তা করতে পারে। এরপরই এক উচ্চপর্যায়ের পরামর্শ সভায় এ ধারণা উত্থাপিত হয়।

এই ভার্চুয়াল সম্পদগুলোকে তরল মুদ্রা সরবরাহের (এম-১) অংশ হিসেবে বিবেচনা করা উচিত। ভার্চুয়াল অ্যাসেটকে জামানত হিসেবে ব্যবহারের সুযোগ এম-১ বৃদ্ধি করবে—সভায় এমনই মন্তব্য করেন বাইন্যান্সের এক সদস্য।

সভাটি যৌথভাবে পরিচালনা করেন পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী মোহাম্মদ আওরঙ্গজেব এবং পাকিস্তান ভার্চুয়াল অ্যাসেটস রেগুলেটরি অথরিটির (পিভিএআরএ) চেয়ারম্যান বিলাল বিন সাকিব।

সরকারি এক বিবৃতিতে বলা হয়, সভাটি পাকিস্তানের ন্যাশনাল ডিজিটাল অ্যাসেট ফ্রেমওয়ার্ক নিয়ে আলোচনা ও অগ্রগতি নিশ্চিত করতে আয়োজন করা হয়েছিল। সভায় পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংক স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তানের (এসবিপি) গভর্নরও উপস্থিত ছিলেন। পাশাপাশি দেশের প্রধান বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রধানেরা, বাইন্যান্সের শীর্ষ কর্মকর্তারা এবং এর বৈশ্বিক প্রধান নির্বাহী রিচার্ড টেংও অংশ নেন।

সভায় সার্বভৌম ঋণকে টোকেনাইজ করে তারল্য বৃদ্ধি, বিনিয়োগকারীদের জন্য প্রবেশাধিকার বিস্তৃত করা এবং ব্লকচেইনভিত্তিক বিধিবদ্ধ আর্থিক উপকরণে পাকিস্তানকে আঞ্চলিক অগ্রদূত হিসেবে প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনা যাচাই করা হয়।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, কর ও কমপ্লায়েন্স কাঠামোর জন্য বাস্তবসম্মত নীতিমালা প্রণয়ন, যার মধ্যে লাইসেন্সপ্রাপ্ত এক্সচেঞ্জগুলোকে প্রধান তদারকিতে আনা, স্থিতিশীলতা রক্ষায় ধাপে ধাপে মূলধনি মুনাফা কাঠামো তৈরি এবং নির্দিষ্ট সময়ের জন্য দায়মুক্তির সুযোগ দেওয়ার মাধ্যমে ব্যবহারকারীদের সম্পদ নিয়ন্ত্রিত প্ল্যাটফর্মে স্থানান্তরে উৎসাহ দেওয়া—এসব বিষয় নীতিতেই উল্লেখ করা হয়েছে।

ডনকে জানানো সূত্র বলছে, বাইন্যান্স দল জানিয়েছে, বর্তমানে প্রায় ১ কোটি ৭৫ লাখ পাকিস্তানি বাইন্যান্সে নিবন্ধিত ট্রেডার, যার মধ্যে ৪০ লাখ সক্রিয়। শুধু বাইন্যান্সেই তাঁরা প্রায় ৫ বিলিয়ন ডলারের ভার্চুয়াল সম্পদ ধরে রেখেছেন আর তাঁদের বার্ষিক লেনদেনের পরিমাণ প্রায় ২৫০ বিলিয়ন ডলার।

অন্যান্য ক্রিপ্টো কোম্পানির পাকিস্তানি ব্যবহারকারীরা এই হিসাবের অন্তর্ভুক্ত নয়। বাইন্যান্সের বিশ্বব্যাপী সক্রিয় ব্যবহারকারী ৩০ কোটির বেশি, মূলত ২২টি দেশে।

বাইন্যান্সের এক কর্মকর্তা বলেন, এর ফলে পাকিস্তানি ব্যবহারকারীদের হাতে থাকা ৫ বিলিয়ন ডলারের সম্পদ পাকিস্তানি রুপিতে পুনরায় অর্থনীতিতে বিনিয়োগের সুযোগ তৈরি হবে। ব্যাংকগুলো স্টেবলকয়েন উত্তোলন সুবিধাও দিতে পারবে।

বাইন্যান্স আরও জানিয়েছে, স্বয়ংক্রিয় লেনদেনের জন্য ব্যবহৃত অ্যাপ্লিকেশন প্রোগ্রামিং ইন্টারফেস (এপিআই) ব্যবহার করে ব্যবহারকারীর ব্যাংকের কাছে সর্বোচ্চ ঋণ দায় নির্ধারণ করা হবে, যা পাকিস্তানি ব্যবহারকারীদের ঋণখেলাপি হওয়ার ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে কমাবে বলেও দাবি করেন ওই কর্মকর্তা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তর্কে জড়ানো চিকিৎসককে বরখাস্তের নির্দেশ ডিজির

খালেদা জিয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত, মেডিকেল বোর্ডের সবুজসংকেতের অপেক্ষা

সবকিছু প্রস্তুত হচ্ছে, তারেক রহমান ফিরবেন যেকোনো সময়: আমীর খসরু

মুর্শিদাবাদে ‘বাবরি মসজিদ’: সৌদি আলেমদের আমন্ত্রণ, ৪০ হাজার মানুষের জন্য রান্না হচ্ছে বিরিয়ানি

আজকের রাশিফল: ভার্চুয়াল হাতাহাতি থেকে দূরে থাকুন, সিদ্ধান্ত ভাগ্যের ওপর ছেড়ে দিন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বেনাপোলে দুই মাস ধরে আটকা সুপারিবাহী ১৫০ ট্রাক, দৈনিক লোকসান ৩ লাখ টাকা

বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি  
বেনাপোল বন্দরে প্রায় ১০০ কোটি টাকা মূল্যের সুপারির রপ্তানি আটকা। ছবি: আজকের পত্রিকা
বেনাপোল বন্দরে প্রায় ১০০ কোটি টাকা মূল্যের সুপারির রপ্তানি আটকা। ছবি: আজকের পত্রিকা

দেশের অন্যতম প্রধান স্থলবন্দর বেনাপোলে প্রায় দুই মাস ধরে আটকে আছে ১০০ কোটি টাকা মূল্যের দেড় শতাধিক রপ্তানিমুখী সুপারির ট্রাক। দীর্ঘ এই অচলাবস্থার কারণে রপ্তানিকারকদের প্রতিদিন ট্রাক প্রতি ২ হাজার টাকা হিসেবে প্রায় ৩ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা ভাড়া গুনতে হচ্ছে। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, ভারতের পেট্রাপোল বন্দরে পণ্যের মান নির্ণয় ও কৃত্রিম জটিলতা সৃষ্টির ফলেই এই রপ্তানি বাণিজ্য ব্যাহত হচ্ছে। দ্রুত পদক্ষেপ না নেওয়া হলে বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়ার আশঙ্কা করছেন তারা।

বিশ্বে সুপারি উৎপাদনে বাংলাদেশ দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে এবং গুণগত মানের কারণে ভারতে এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বছরে প্রায় ৭০০ কোটি টাকার সুপারি ভারতে রপ্তানি হয়। তথ্য বলছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ভারতের সুপারি আমদানিতে বাংলাদেশের অংশীদারত্ব বেড়ে হয়েছে ৩৭ শতাংশ, যা আগের অর্থবছরের তুলনায় প্রায় চার গুণ। এমন রমরমা বাণিজ্যের মধ্যেই দেড় শতাধিক সুপারির ট্রাক প্রায় দুই মাস ধরে বেনাপোল বন্দরে দাঁড়িয়ে আছে।

দীর্ঘদিন বন্দরে আটকে থাকায় পণ্যজট সৃষ্টি হয়েছে এবং ট্রাক চালকদেরও নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে।

আটকে থাকা সুপারি বহনকারী ট্রাক চালক মমিন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘১ মাস ২৭ দিন ধরে এখানে আটকে থেকে নানা সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে। ওপারের ব্যবসায়ীরা সুপারির বাজার নিয়ন্ত্রণে সিন্ডিকেট করে ইচ্ছাকৃতভাবে এসব ট্রাক দেরিতে নিচ্ছেন বলে আমাদের সন্দেহ।’

রপ্তানিকারক পণ্য ছাড়কারী প্রতিষ্ঠান আউলিয়া এন্টারপ্রাইজের প্রতিনিধি আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘ওপারে পেট্রাপোল বন্দরে পরীক্ষাসহ নানা কারণ দেখিয়ে তারা পণ্য নিতে দেরি করছে। আমরা দ্রুত এই পণ্য খালাসের জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’

ব্যবসায়ীরা জানান, গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ভারত সরকার রপ্তানি বাণিজ্যে একের পর এক নিষেধাজ্ঞা ও নানা শর্ত আরোপের ফলে বর্তমানে রপ্তানির পরিমাণ ৩০ শতাংশে নেমে এসেছে।

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের দপ্তর সম্পাদক মোস্তাফিজ্জোহা সেলিম বলেন, বাণিজ্যে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হলে তা দুই দেশের জন্যই ক্ষতিকর। এ অবস্থা কাটাতে দ্রুত দুই দেশের সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে। তিনি উল্লেখ করেন, ভারত সরকারের নিষেধাজ্ঞার কারণে বর্তমানে বেনাপোল বন্দর দিয়ে পাট ও পাটজাত পণ্য, গার্মেন্টস, তৈরি পোশাক, কাঠের আসবাবপত্র, ফলের জুসসহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পণ্য সড়ক পথে রপ্তানি বন্ধ রয়েছে।

তবে বন্দর সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা এই সংকটের ভিন্ন ব্যাখ্যা দিয়েছেন। বেনাপোল বন্দর উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ কেন্দ্রের উপপরিচালক আবু তালহা জানান, ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথম ৫ মাসে বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারতে ১০ হাজার ৬৫০ টন সুপারি রপ্তানি হয়েছে। তিনি বলেন, ‘যে সমস্যার কারণে বন্দরে সে সব ট্রাক দাঁড়িয়ে আছে শুনেছি, সেটা ব্যবসায়ীদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। যে সব ট্রাকের কাগজপত্র আমাদের কাছে আসছে, সেগুলো ভারতে ঢুকছে।’

তিনি আরও জানান, যেসব সুপারির ট্রাকের কাগজ হাতে পেলে দ্রুত ছাড়করণে সহযোগিতা করা হবে। তবে রপ্তানিকারকেরা বলছেন, এই বিপুল আর্থিক ক্ষতির মুখে দ্রুত সরকারি হস্তক্ষেপ ছাড়া এই সংকট কাটানো সম্ভব নয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তর্কে জড়ানো চিকিৎসককে বরখাস্তের নির্দেশ ডিজির

খালেদা জিয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত, মেডিকেল বোর্ডের সবুজসংকেতের অপেক্ষা

সবকিছু প্রস্তুত হচ্ছে, তারেক রহমান ফিরবেন যেকোনো সময়: আমীর খসরু

মুর্শিদাবাদে ‘বাবরি মসজিদ’: সৌদি আলেমদের আমন্ত্রণ, ৪০ হাজার মানুষের জন্য রান্না হচ্ছে বিরিয়ানি

আজকের রাশিফল: ভার্চুয়াল হাতাহাতি থেকে দূরে থাকুন, সিদ্ধান্ত ভাগ্যের ওপর ছেড়ে দিন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত