রোকন উদ্দীন, ঢাকা
রাজধানী সেগুনবাগিচা বাজারে গতকাল বৃহস্পতিবার রোজার বাজার করতে গিয়েছিলেন একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরিজীবী মো. মতিউর রহমান। দোকানে গিয়ে হাতে থাকা ফর্দের প্রথম পণ্যটিই পাননি তিনি। অনেকটা হতাশার সুরে এই ক্রেতা বলেন, রোজার বাকি আর মাত্র দু-দিন। নিয়মিত বাজারের সঙ্গে রমজানের কিছু বাড়তি পণ্য যোগ হয়েছে ফর্দে। কিন্তু ফর্দের প্রথম পণ্য ভোজ্যতেলই পাচ্ছি না বাজারে।
মতিউরের মতো অনেকেই গতকাল রমজান মাসের প্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে বাজারে গিয়েছিলেন। এতেই চাহিদা বেড়েছে তেল, চিনি, ডাল, ছোলা, বেসন, মাছ, মাংস ও কিছু তরিতরকারির। বাড়তি চাহিদার কারণে এবারও পুরোনো দৃশ্যপটে ফিরে গেছে রোজার বাজার। দাম বেড়ে গেছে প্রায় সব পণ্যের।
বাজারসংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, গত বছরের তুলনায় এবার চালের দাম বেড়েছে ১৬-১৭ শতাংশ। ছোলাসহ রোজায় চাহিদা বাড়ে এমন পণ্যও গত বছরের তুলনায় এবার ৯-১০ শতাংশ বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। তার ওপর নতুন করে বেড়েছে মুরগি, গরুর মাংস, লেবু, শসা, পেঁয়াজসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম। গত বছরের চেয়ে ১৯-২০ শতাংশ বাড়তি দামে কিনতে হচ্ছে ভোজ্যতেল।
রোজার মাত্র দু-দিন আগেও বাজারে সয়াবিন তেল না পেয়ে ক্রেতার সঙ্গে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন খুচরা বিক্রেতারাও। তাঁরা বলছেন, ‘কাস্টমারের কাছে জবাবদিহি করতে করতে আমরা হয়রান হয়ে যাচ্ছি। সবার একই প্রশ্ন, তেল নেই কেন? বারবার চেয়েও কোম্পানির প্রতিনিধিদের কাছ থেকে তেলের সরবরাহ পাচ্ছি না।’
গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে ও অনেকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে সরকারের সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়ার আশ্বাস, পণ্যের ব্যাপক আমদানি ও সবজির মৌসুম—এসব কারণে এবার সাধারণ ক্রেতারা আশা করেছিলেন রোজায় বাজার স্বাভাবিক থাকবে। কিন্তু ক্রেতার সে আশার গুড়ে বালি। বাজার ঠিকই গরম হয়ে উঠেছে।
৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে ভোজ্যতেলের সংকট কেটে যাবে, ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝিতে এমন আশ্বাস দিয়েছিলেন বাণিজ্য উপদেষ্টা ও মিলমালিকেরা। কেউ তাঁদের কথা রাখেননি। বাজারে সয়াবিন তেলের সরবরাহ নেই বলেই চলে।
গতকাল রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বাজারে গিয়ে দেখা যায়, ছয়টি দোকানের কোনোটিতেই সয়াবিন তেল নেই। প্রায় একই অবস্থা রামপুরা, মালিবাগসহ অন্য বাজারগুলোতেও।
সেগুনবাগিচা বাজারের মুদিদোকানি মোস্তাফিজুর রহমান সিফাত আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বাজারে কারও কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। এত দীর্ঘ সময় তেলের সংকট এর আগে কখনই হয়নি। বিশেষ করে রোজার দু-দিন আগেও কোম্পানিগুলো বাজারে তেল দিচ্ছে না। এ বিষয়ে কারও তেমন কোনো পদক্ষেপও দেখছি না। ভোজ্যতেলের সরবরাহ না থাকায় কাস্টমারদের গালি শুনতে হয় আমাদের।’
শান্তিনগর বাজারের তীর ব্র্যান্ডের ডিলার মো. জিয়া বলেন, ‘তেলের সরবরাহ না দেওয়ায় আমি সয়াবিনের ডিলারশিপ স্থগিত রেখেছি। কারণ তেলের সাপ্লাই নেই, আমার কাস্টমারদের মাল দিতে পারেননি। স্থগিত না করে উপায় নেই।’
বাজারে কিছু খোলা সয়াবিন তেল ও পাম সুপার পাওয়া যায়। কিন্তু তাও সরকারনির্ধারিত দামের চেয়ে অনেক বেশি। গড়ে সব তেলের দামই এখন ১৯০-২০০ টাকা লিটার। অথচ সরকারনির্ধারিত দাম ১৫৭ টাকা লিটার।
১২ ফেব্রুয়ারি বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে আশ্বাস দিয়েছিলেন, ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে ভোজ্যতেলের বাজার স্থিতিশীল হবে। ১৬ ফেব্রুয়ারি এক বিজ্ঞপ্তিতে একই আশ্বাস দিয়েছিল ভোজ্যতেল পরিশোধনকারী কোম্পানিগুলোর সংগঠন বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন।
কাস্টমসের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৫ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত ভোজ্যতেলের আমদানি প্রায় ৩৫ শতাংশ বেড়েছে। ঋণপত্রও (এলসি) বেড়েছে একই হারে। শুধু তা–ই নয়, বিশ্ববাজারেও এখন পণ্যটির মূল্য স্থিতিশীল।
সরকারি ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ টিসিবির হিসাবে, বর্তমানে বাজারে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় খোলা সয়াবিন তেলের দাম ১৯ শতাংশ বেশি।
কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহসভাপতি এস এম নাজের হোসাইন বলেন, ‘এবার পণ্যের কোনো ঘাটতি নেই দেশে। সরকার বিভিন্ন সুযোগ দিয়ে দেশে পণ্যের মজুত বাড়িয়েছে। কিন্তু সমস্যা তৈরি করছেন যাঁরা সরবরাহ করেন, তাঁরা। আর এটি নজরদারি করার মতো প্রশাসনেও তেমন লোক নেই। ফলে যে যেভাবে পারছেন, দাম বাড়াচ্ছেন। অথচ এবার পণ্যের দাম কম থাকবে এবং বাজার স্বাভাবিক থাকবে—এমনটিই আশা ছিল আমাদের। সরকারও সেভাবেই আশ্বাস দিয়েছিল।’
ভোজ্যতেল ছাড়া রমজানে চাহিদা বাড়ে এমন অন্য পণ্যগুলোর মধ্যে ছোলা, চিনি, মসুর ডাল, বেসনের সরবরাহ সংকট নেই। তবে এসব পণ্যের দাম গত বছরের তুলনায় কেজিপ্রতি ১০-১৫ টাকা বেড়েছে। বর্তমানে বাজারে ছোলা বিক্রি হচ্ছে ১১০-১২০, যা গত বছর রোজার আগে বিক্রি হয়েছিল ৯০–১১০ টাকা কেজি। টিসিবি বলছে, ছোলার দাম বেড়েছে ১০ শতাংশ।
ভুট্টার বেসন ১৫০ ও অ্যাংকরের বেসন ১০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। বিক্রেতারা বলছেন, বেসনের দাম প্রতি কেজিতে ১৫-২০ টাকা বেড়েছে। তবে চিনির দাম ১২৫-১৩০ টাকা কেজিতে স্থির রয়েছে।
রোজার ঠিক তিন থেকে চার দিন আগে নতুন করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে অন্যতম চাহিদার পণ্য মুরগি ও গরুর মাংসের বাজার। রাজধানীর বাজারগুলোতে গতকাল ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে ২১০-২২০ টাকা কেজি। আর সোনালি জাতের মুরগি বিক্রি হয়েছে ৩১০-৩২০ টাকা কেজি। অথচ গত মঙ্গলবারও বাজারে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে ১৯০-২০০ টাকা কেজিতে।
গরুর মাংসের দাম কেজিতে ৫০ টাকা করে বেড়ে ৭৮০-৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গরুর মাংসের দাম শবে বরাতের আগে বাড়লেও মাঝখানে কয়েক দিন কিছুটা কমে বিক্রি হয়েছিল। চাহিদা বাড়তে থাকায় আবার দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন বিক্রেতারা।
রাজধানীর মুগদা বাজারের মাংস বিক্রেতা আব্দুস সালাম বলেন, হাট থেকে গরুপ্রতি ৫-৭ হাজার টাকা বাড়িতে দিয়ে কিনতে হচ্ছে। তাই আমাদেরও বাড়তি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।’
রোজায় নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষের ফলের জুস দিয়ে শরবত তৈরির সামর্থ্য নেই। ভিটামিন ‘সি’র ঘাটতি পূরণে মাল্টা বা কমলাও কিনতে পারেন না। এই শ্রেণির রোজাদারের ভরসা হয়ে ওঠে লেবুর শরবত। রোজায় নিম্ন আয়ের মানুষের সবচেয়ে দুশ্চিন্তা থাকে লেবুর দাম নিয়ে। কারণ প্রতিবছর রোজা এলে লেবুর দাম বেড়ে যায়।
এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। রাজধানীর মানিকনগর ও রামপুরাসহ বিভিন্ন বাজারে ছোট আকারে লেবু বিক্রি হয়েছে ৪০-৫০ টাকা হালি, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ২০-৩০ টাকা ছিল। মাঝারি আকারের লেবুর হালি বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকায়, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৪০-৬০ টাকা ও কিছুটা বড় আকারের লেবু কিনতে ক্রেতাকে গুনতে হচ্ছে ১০০-১১০ টাকা হালি, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৬০-৮০ টাকা হালি।
রোজায় চাহিদার বাড়ে বেগুনের। এবার সব ধরনের সবজির দাম যখন একেবারেই কম। তখন ক্রেতার আশা ছিল বেগুনের দামও কম থাকবে। কিন্তু দাম ঠিকই বেড়েছে। সপ্তাহখানেক আগেও বাজারগুলোতে যে বেগুন ৪০ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে, সেই একই মানের বেগুন গতকাল বাজারে ৬০-৭০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। লেবু ও বেগুনের সঙ্গে বেড়েছে শসা ও খিরার দামও। বাজারে খিরা বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকা কেজি, যা সপ্তাহখানেক আগে বিক্রি হয়েছে ৩০-৪০ টাকা কেজিতে।
রাজধানীর মানিকনগর বাজারের সবজি বিক্রেতা মো. মোতালিব বলেন, ‘চৈত্র ও বৈশাখ মাসে লেবুর ভরা মৌসুম। এখন চলছে ফাল্গুন মাস। তার ওপর দীর্ঘদিন বৃষ্টি না হওয়ায় লেবুর উৎপাদন কম। তাই দুই সপ্তাহ ধরেই দাম ক্রমাগত বাড়ছে। এর মধ্যে রোজার জন্য চাহিদা ৭-৮ গুণ বেড়েছে, তাই দাম আরও বেড়েছে।’
চাহিদার কারণে বেগুন ও শসার দামও বেড়েছে বলে এই বিক্রেতা বলেন। তিনি বলেন, প্রতিবছরই রোজা শুরু এবং তারপর এক সপ্তাহ পর্যন্ত বাজার কিছুটা গরম থাকে। এবারও একই অবস্থা হয়েছে। যদিও এবার সবজির দাম তুলনামূলক অনেক কম। রোজা শুরুর এক সপ্তাহ পরই বাজার আবার স্বাভাবিক হয়ে যাবে।
এবার পেঁয়াজের দাম গত বছরের তুলনায় অনেক কম হলেও গত এক সপ্তাহে কেজিপ্রতি ১০ টাকা বেড়েছে দেশে উৎপাদিত এই জরুরি পণ্যটির। গত বছর এ সময় পেঁয়াজের কেজি ছিল ১১০-১২০ টাকা। গতকাল রাজধানীর বাজারগুলোতে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৫০-৫৫ টাকা কেজি, যা এক সপ্তাহ আগে ৪০-৪৫ টাকা ছিল।
রাজধানী সেগুনবাগিচা বাজারে গতকাল বৃহস্পতিবার রোজার বাজার করতে গিয়েছিলেন একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরিজীবী মো. মতিউর রহমান। দোকানে গিয়ে হাতে থাকা ফর্দের প্রথম পণ্যটিই পাননি তিনি। অনেকটা হতাশার সুরে এই ক্রেতা বলেন, রোজার বাকি আর মাত্র দু-দিন। নিয়মিত বাজারের সঙ্গে রমজানের কিছু বাড়তি পণ্য যোগ হয়েছে ফর্দে। কিন্তু ফর্দের প্রথম পণ্য ভোজ্যতেলই পাচ্ছি না বাজারে।
মতিউরের মতো অনেকেই গতকাল রমজান মাসের প্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে বাজারে গিয়েছিলেন। এতেই চাহিদা বেড়েছে তেল, চিনি, ডাল, ছোলা, বেসন, মাছ, মাংস ও কিছু তরিতরকারির। বাড়তি চাহিদার কারণে এবারও পুরোনো দৃশ্যপটে ফিরে গেছে রোজার বাজার। দাম বেড়ে গেছে প্রায় সব পণ্যের।
বাজারসংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, গত বছরের তুলনায় এবার চালের দাম বেড়েছে ১৬-১৭ শতাংশ। ছোলাসহ রোজায় চাহিদা বাড়ে এমন পণ্যও গত বছরের তুলনায় এবার ৯-১০ শতাংশ বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। তার ওপর নতুন করে বেড়েছে মুরগি, গরুর মাংস, লেবু, শসা, পেঁয়াজসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম। গত বছরের চেয়ে ১৯-২০ শতাংশ বাড়তি দামে কিনতে হচ্ছে ভোজ্যতেল।
রোজার মাত্র দু-দিন আগেও বাজারে সয়াবিন তেল না পেয়ে ক্রেতার সঙ্গে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন খুচরা বিক্রেতারাও। তাঁরা বলছেন, ‘কাস্টমারের কাছে জবাবদিহি করতে করতে আমরা হয়রান হয়ে যাচ্ছি। সবার একই প্রশ্ন, তেল নেই কেন? বারবার চেয়েও কোম্পানির প্রতিনিধিদের কাছ থেকে তেলের সরবরাহ পাচ্ছি না।’
গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে ও অনেকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে সরকারের সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়ার আশ্বাস, পণ্যের ব্যাপক আমদানি ও সবজির মৌসুম—এসব কারণে এবার সাধারণ ক্রেতারা আশা করেছিলেন রোজায় বাজার স্বাভাবিক থাকবে। কিন্তু ক্রেতার সে আশার গুড়ে বালি। বাজার ঠিকই গরম হয়ে উঠেছে।
৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে ভোজ্যতেলের সংকট কেটে যাবে, ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝিতে এমন আশ্বাস দিয়েছিলেন বাণিজ্য উপদেষ্টা ও মিলমালিকেরা। কেউ তাঁদের কথা রাখেননি। বাজারে সয়াবিন তেলের সরবরাহ নেই বলেই চলে।
গতকাল রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বাজারে গিয়ে দেখা যায়, ছয়টি দোকানের কোনোটিতেই সয়াবিন তেল নেই। প্রায় একই অবস্থা রামপুরা, মালিবাগসহ অন্য বাজারগুলোতেও।
সেগুনবাগিচা বাজারের মুদিদোকানি মোস্তাফিজুর রহমান সিফাত আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বাজারে কারও কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। এত দীর্ঘ সময় তেলের সংকট এর আগে কখনই হয়নি। বিশেষ করে রোজার দু-দিন আগেও কোম্পানিগুলো বাজারে তেল দিচ্ছে না। এ বিষয়ে কারও তেমন কোনো পদক্ষেপও দেখছি না। ভোজ্যতেলের সরবরাহ না থাকায় কাস্টমারদের গালি শুনতে হয় আমাদের।’
শান্তিনগর বাজারের তীর ব্র্যান্ডের ডিলার মো. জিয়া বলেন, ‘তেলের সরবরাহ না দেওয়ায় আমি সয়াবিনের ডিলারশিপ স্থগিত রেখেছি। কারণ তেলের সাপ্লাই নেই, আমার কাস্টমারদের মাল দিতে পারেননি। স্থগিত না করে উপায় নেই।’
বাজারে কিছু খোলা সয়াবিন তেল ও পাম সুপার পাওয়া যায়। কিন্তু তাও সরকারনির্ধারিত দামের চেয়ে অনেক বেশি। গড়ে সব তেলের দামই এখন ১৯০-২০০ টাকা লিটার। অথচ সরকারনির্ধারিত দাম ১৫৭ টাকা লিটার।
১২ ফেব্রুয়ারি বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে আশ্বাস দিয়েছিলেন, ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে ভোজ্যতেলের বাজার স্থিতিশীল হবে। ১৬ ফেব্রুয়ারি এক বিজ্ঞপ্তিতে একই আশ্বাস দিয়েছিল ভোজ্যতেল পরিশোধনকারী কোম্পানিগুলোর সংগঠন বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন।
কাস্টমসের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৫ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত ভোজ্যতেলের আমদানি প্রায় ৩৫ শতাংশ বেড়েছে। ঋণপত্রও (এলসি) বেড়েছে একই হারে। শুধু তা–ই নয়, বিশ্ববাজারেও এখন পণ্যটির মূল্য স্থিতিশীল।
সরকারি ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ টিসিবির হিসাবে, বর্তমানে বাজারে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় খোলা সয়াবিন তেলের দাম ১৯ শতাংশ বেশি।
কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহসভাপতি এস এম নাজের হোসাইন বলেন, ‘এবার পণ্যের কোনো ঘাটতি নেই দেশে। সরকার বিভিন্ন সুযোগ দিয়ে দেশে পণ্যের মজুত বাড়িয়েছে। কিন্তু সমস্যা তৈরি করছেন যাঁরা সরবরাহ করেন, তাঁরা। আর এটি নজরদারি করার মতো প্রশাসনেও তেমন লোক নেই। ফলে যে যেভাবে পারছেন, দাম বাড়াচ্ছেন। অথচ এবার পণ্যের দাম কম থাকবে এবং বাজার স্বাভাবিক থাকবে—এমনটিই আশা ছিল আমাদের। সরকারও সেভাবেই আশ্বাস দিয়েছিল।’
ভোজ্যতেল ছাড়া রমজানে চাহিদা বাড়ে এমন অন্য পণ্যগুলোর মধ্যে ছোলা, চিনি, মসুর ডাল, বেসনের সরবরাহ সংকট নেই। তবে এসব পণ্যের দাম গত বছরের তুলনায় কেজিপ্রতি ১০-১৫ টাকা বেড়েছে। বর্তমানে বাজারে ছোলা বিক্রি হচ্ছে ১১০-১২০, যা গত বছর রোজার আগে বিক্রি হয়েছিল ৯০–১১০ টাকা কেজি। টিসিবি বলছে, ছোলার দাম বেড়েছে ১০ শতাংশ।
ভুট্টার বেসন ১৫০ ও অ্যাংকরের বেসন ১০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। বিক্রেতারা বলছেন, বেসনের দাম প্রতি কেজিতে ১৫-২০ টাকা বেড়েছে। তবে চিনির দাম ১২৫-১৩০ টাকা কেজিতে স্থির রয়েছে।
রোজার ঠিক তিন থেকে চার দিন আগে নতুন করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে অন্যতম চাহিদার পণ্য মুরগি ও গরুর মাংসের বাজার। রাজধানীর বাজারগুলোতে গতকাল ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে ২১০-২২০ টাকা কেজি। আর সোনালি জাতের মুরগি বিক্রি হয়েছে ৩১০-৩২০ টাকা কেজি। অথচ গত মঙ্গলবারও বাজারে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে ১৯০-২০০ টাকা কেজিতে।
গরুর মাংসের দাম কেজিতে ৫০ টাকা করে বেড়ে ৭৮০-৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গরুর মাংসের দাম শবে বরাতের আগে বাড়লেও মাঝখানে কয়েক দিন কিছুটা কমে বিক্রি হয়েছিল। চাহিদা বাড়তে থাকায় আবার দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন বিক্রেতারা।
রাজধানীর মুগদা বাজারের মাংস বিক্রেতা আব্দুস সালাম বলেন, হাট থেকে গরুপ্রতি ৫-৭ হাজার টাকা বাড়িতে দিয়ে কিনতে হচ্ছে। তাই আমাদেরও বাড়তি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।’
রোজায় নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষের ফলের জুস দিয়ে শরবত তৈরির সামর্থ্য নেই। ভিটামিন ‘সি’র ঘাটতি পূরণে মাল্টা বা কমলাও কিনতে পারেন না। এই শ্রেণির রোজাদারের ভরসা হয়ে ওঠে লেবুর শরবত। রোজায় নিম্ন আয়ের মানুষের সবচেয়ে দুশ্চিন্তা থাকে লেবুর দাম নিয়ে। কারণ প্রতিবছর রোজা এলে লেবুর দাম বেড়ে যায়।
এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। রাজধানীর মানিকনগর ও রামপুরাসহ বিভিন্ন বাজারে ছোট আকারে লেবু বিক্রি হয়েছে ৪০-৫০ টাকা হালি, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ২০-৩০ টাকা ছিল। মাঝারি আকারের লেবুর হালি বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকায়, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৪০-৬০ টাকা ও কিছুটা বড় আকারের লেবু কিনতে ক্রেতাকে গুনতে হচ্ছে ১০০-১১০ টাকা হালি, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৬০-৮০ টাকা হালি।
রোজায় চাহিদার বাড়ে বেগুনের। এবার সব ধরনের সবজির দাম যখন একেবারেই কম। তখন ক্রেতার আশা ছিল বেগুনের দামও কম থাকবে। কিন্তু দাম ঠিকই বেড়েছে। সপ্তাহখানেক আগেও বাজারগুলোতে যে বেগুন ৪০ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে, সেই একই মানের বেগুন গতকাল বাজারে ৬০-৭০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। লেবু ও বেগুনের সঙ্গে বেড়েছে শসা ও খিরার দামও। বাজারে খিরা বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকা কেজি, যা সপ্তাহখানেক আগে বিক্রি হয়েছে ৩০-৪০ টাকা কেজিতে।
রাজধানীর মানিকনগর বাজারের সবজি বিক্রেতা মো. মোতালিব বলেন, ‘চৈত্র ও বৈশাখ মাসে লেবুর ভরা মৌসুম। এখন চলছে ফাল্গুন মাস। তার ওপর দীর্ঘদিন বৃষ্টি না হওয়ায় লেবুর উৎপাদন কম। তাই দুই সপ্তাহ ধরেই দাম ক্রমাগত বাড়ছে। এর মধ্যে রোজার জন্য চাহিদা ৭-৮ গুণ বেড়েছে, তাই দাম আরও বেড়েছে।’
চাহিদার কারণে বেগুন ও শসার দামও বেড়েছে বলে এই বিক্রেতা বলেন। তিনি বলেন, প্রতিবছরই রোজা শুরু এবং তারপর এক সপ্তাহ পর্যন্ত বাজার কিছুটা গরম থাকে। এবারও একই অবস্থা হয়েছে। যদিও এবার সবজির দাম তুলনামূলক অনেক কম। রোজা শুরুর এক সপ্তাহ পরই বাজার আবার স্বাভাবিক হয়ে যাবে।
এবার পেঁয়াজের দাম গত বছরের তুলনায় অনেক কম হলেও গত এক সপ্তাহে কেজিপ্রতি ১০ টাকা বেড়েছে দেশে উৎপাদিত এই জরুরি পণ্যটির। গত বছর এ সময় পেঁয়াজের কেজি ছিল ১১০-১২০ টাকা। গতকাল রাজধানীর বাজারগুলোতে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৫০-৫৫ টাকা কেজি, যা এক সপ্তাহ আগে ৪০-৪৫ টাকা ছিল।
রোকন উদ্দীন, ঢাকা
রাজধানী সেগুনবাগিচা বাজারে গতকাল বৃহস্পতিবার রোজার বাজার করতে গিয়েছিলেন একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরিজীবী মো. মতিউর রহমান। দোকানে গিয়ে হাতে থাকা ফর্দের প্রথম পণ্যটিই পাননি তিনি। অনেকটা হতাশার সুরে এই ক্রেতা বলেন, রোজার বাকি আর মাত্র দু-দিন। নিয়মিত বাজারের সঙ্গে রমজানের কিছু বাড়তি পণ্য যোগ হয়েছে ফর্দে। কিন্তু ফর্দের প্রথম পণ্য ভোজ্যতেলই পাচ্ছি না বাজারে।
মতিউরের মতো অনেকেই গতকাল রমজান মাসের প্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে বাজারে গিয়েছিলেন। এতেই চাহিদা বেড়েছে তেল, চিনি, ডাল, ছোলা, বেসন, মাছ, মাংস ও কিছু তরিতরকারির। বাড়তি চাহিদার কারণে এবারও পুরোনো দৃশ্যপটে ফিরে গেছে রোজার বাজার। দাম বেড়ে গেছে প্রায় সব পণ্যের।
বাজারসংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, গত বছরের তুলনায় এবার চালের দাম বেড়েছে ১৬-১৭ শতাংশ। ছোলাসহ রোজায় চাহিদা বাড়ে এমন পণ্যও গত বছরের তুলনায় এবার ৯-১০ শতাংশ বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। তার ওপর নতুন করে বেড়েছে মুরগি, গরুর মাংস, লেবু, শসা, পেঁয়াজসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম। গত বছরের চেয়ে ১৯-২০ শতাংশ বাড়তি দামে কিনতে হচ্ছে ভোজ্যতেল।
রোজার মাত্র দু-দিন আগেও বাজারে সয়াবিন তেল না পেয়ে ক্রেতার সঙ্গে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন খুচরা বিক্রেতারাও। তাঁরা বলছেন, ‘কাস্টমারের কাছে জবাবদিহি করতে করতে আমরা হয়রান হয়ে যাচ্ছি। সবার একই প্রশ্ন, তেল নেই কেন? বারবার চেয়েও কোম্পানির প্রতিনিধিদের কাছ থেকে তেলের সরবরাহ পাচ্ছি না।’
গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে ও অনেকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে সরকারের সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়ার আশ্বাস, পণ্যের ব্যাপক আমদানি ও সবজির মৌসুম—এসব কারণে এবার সাধারণ ক্রেতারা আশা করেছিলেন রোজায় বাজার স্বাভাবিক থাকবে। কিন্তু ক্রেতার সে আশার গুড়ে বালি। বাজার ঠিকই গরম হয়ে উঠেছে।
৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে ভোজ্যতেলের সংকট কেটে যাবে, ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝিতে এমন আশ্বাস দিয়েছিলেন বাণিজ্য উপদেষ্টা ও মিলমালিকেরা। কেউ তাঁদের কথা রাখেননি। বাজারে সয়াবিন তেলের সরবরাহ নেই বলেই চলে।
গতকাল রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বাজারে গিয়ে দেখা যায়, ছয়টি দোকানের কোনোটিতেই সয়াবিন তেল নেই। প্রায় একই অবস্থা রামপুরা, মালিবাগসহ অন্য বাজারগুলোতেও।
সেগুনবাগিচা বাজারের মুদিদোকানি মোস্তাফিজুর রহমান সিফাত আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বাজারে কারও কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। এত দীর্ঘ সময় তেলের সংকট এর আগে কখনই হয়নি। বিশেষ করে রোজার দু-দিন আগেও কোম্পানিগুলো বাজারে তেল দিচ্ছে না। এ বিষয়ে কারও তেমন কোনো পদক্ষেপও দেখছি না। ভোজ্যতেলের সরবরাহ না থাকায় কাস্টমারদের গালি শুনতে হয় আমাদের।’
শান্তিনগর বাজারের তীর ব্র্যান্ডের ডিলার মো. জিয়া বলেন, ‘তেলের সরবরাহ না দেওয়ায় আমি সয়াবিনের ডিলারশিপ স্থগিত রেখেছি। কারণ তেলের সাপ্লাই নেই, আমার কাস্টমারদের মাল দিতে পারেননি। স্থগিত না করে উপায় নেই।’
বাজারে কিছু খোলা সয়াবিন তেল ও পাম সুপার পাওয়া যায়। কিন্তু তাও সরকারনির্ধারিত দামের চেয়ে অনেক বেশি। গড়ে সব তেলের দামই এখন ১৯০-২০০ টাকা লিটার। অথচ সরকারনির্ধারিত দাম ১৫৭ টাকা লিটার।
১২ ফেব্রুয়ারি বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে আশ্বাস দিয়েছিলেন, ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে ভোজ্যতেলের বাজার স্থিতিশীল হবে। ১৬ ফেব্রুয়ারি এক বিজ্ঞপ্তিতে একই আশ্বাস দিয়েছিল ভোজ্যতেল পরিশোধনকারী কোম্পানিগুলোর সংগঠন বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন।
কাস্টমসের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৫ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত ভোজ্যতেলের আমদানি প্রায় ৩৫ শতাংশ বেড়েছে। ঋণপত্রও (এলসি) বেড়েছে একই হারে। শুধু তা–ই নয়, বিশ্ববাজারেও এখন পণ্যটির মূল্য স্থিতিশীল।
সরকারি ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ টিসিবির হিসাবে, বর্তমানে বাজারে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় খোলা সয়াবিন তেলের দাম ১৯ শতাংশ বেশি।
কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহসভাপতি এস এম নাজের হোসাইন বলেন, ‘এবার পণ্যের কোনো ঘাটতি নেই দেশে। সরকার বিভিন্ন সুযোগ দিয়ে দেশে পণ্যের মজুত বাড়িয়েছে। কিন্তু সমস্যা তৈরি করছেন যাঁরা সরবরাহ করেন, তাঁরা। আর এটি নজরদারি করার মতো প্রশাসনেও তেমন লোক নেই। ফলে যে যেভাবে পারছেন, দাম বাড়াচ্ছেন। অথচ এবার পণ্যের দাম কম থাকবে এবং বাজার স্বাভাবিক থাকবে—এমনটিই আশা ছিল আমাদের। সরকারও সেভাবেই আশ্বাস দিয়েছিল।’
ভোজ্যতেল ছাড়া রমজানে চাহিদা বাড়ে এমন অন্য পণ্যগুলোর মধ্যে ছোলা, চিনি, মসুর ডাল, বেসনের সরবরাহ সংকট নেই। তবে এসব পণ্যের দাম গত বছরের তুলনায় কেজিপ্রতি ১০-১৫ টাকা বেড়েছে। বর্তমানে বাজারে ছোলা বিক্রি হচ্ছে ১১০-১২০, যা গত বছর রোজার আগে বিক্রি হয়েছিল ৯০–১১০ টাকা কেজি। টিসিবি বলছে, ছোলার দাম বেড়েছে ১০ শতাংশ।
ভুট্টার বেসন ১৫০ ও অ্যাংকরের বেসন ১০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। বিক্রেতারা বলছেন, বেসনের দাম প্রতি কেজিতে ১৫-২০ টাকা বেড়েছে। তবে চিনির দাম ১২৫-১৩০ টাকা কেজিতে স্থির রয়েছে।
রোজার ঠিক তিন থেকে চার দিন আগে নতুন করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে অন্যতম চাহিদার পণ্য মুরগি ও গরুর মাংসের বাজার। রাজধানীর বাজারগুলোতে গতকাল ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে ২১০-২২০ টাকা কেজি। আর সোনালি জাতের মুরগি বিক্রি হয়েছে ৩১০-৩২০ টাকা কেজি। অথচ গত মঙ্গলবারও বাজারে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে ১৯০-২০০ টাকা কেজিতে।
গরুর মাংসের দাম কেজিতে ৫০ টাকা করে বেড়ে ৭৮০-৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গরুর মাংসের দাম শবে বরাতের আগে বাড়লেও মাঝখানে কয়েক দিন কিছুটা কমে বিক্রি হয়েছিল। চাহিদা বাড়তে থাকায় আবার দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন বিক্রেতারা।
রাজধানীর মুগদা বাজারের মাংস বিক্রেতা আব্দুস সালাম বলেন, হাট থেকে গরুপ্রতি ৫-৭ হাজার টাকা বাড়িতে দিয়ে কিনতে হচ্ছে। তাই আমাদেরও বাড়তি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।’
রোজায় নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষের ফলের জুস দিয়ে শরবত তৈরির সামর্থ্য নেই। ভিটামিন ‘সি’র ঘাটতি পূরণে মাল্টা বা কমলাও কিনতে পারেন না। এই শ্রেণির রোজাদারের ভরসা হয়ে ওঠে লেবুর শরবত। রোজায় নিম্ন আয়ের মানুষের সবচেয়ে দুশ্চিন্তা থাকে লেবুর দাম নিয়ে। কারণ প্রতিবছর রোজা এলে লেবুর দাম বেড়ে যায়।
এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। রাজধানীর মানিকনগর ও রামপুরাসহ বিভিন্ন বাজারে ছোট আকারে লেবু বিক্রি হয়েছে ৪০-৫০ টাকা হালি, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ২০-৩০ টাকা ছিল। মাঝারি আকারের লেবুর হালি বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকায়, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৪০-৬০ টাকা ও কিছুটা বড় আকারের লেবু কিনতে ক্রেতাকে গুনতে হচ্ছে ১০০-১১০ টাকা হালি, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৬০-৮০ টাকা হালি।
রোজায় চাহিদার বাড়ে বেগুনের। এবার সব ধরনের সবজির দাম যখন একেবারেই কম। তখন ক্রেতার আশা ছিল বেগুনের দামও কম থাকবে। কিন্তু দাম ঠিকই বেড়েছে। সপ্তাহখানেক আগেও বাজারগুলোতে যে বেগুন ৪০ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে, সেই একই মানের বেগুন গতকাল বাজারে ৬০-৭০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। লেবু ও বেগুনের সঙ্গে বেড়েছে শসা ও খিরার দামও। বাজারে খিরা বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকা কেজি, যা সপ্তাহখানেক আগে বিক্রি হয়েছে ৩০-৪০ টাকা কেজিতে।
রাজধানীর মানিকনগর বাজারের সবজি বিক্রেতা মো. মোতালিব বলেন, ‘চৈত্র ও বৈশাখ মাসে লেবুর ভরা মৌসুম। এখন চলছে ফাল্গুন মাস। তার ওপর দীর্ঘদিন বৃষ্টি না হওয়ায় লেবুর উৎপাদন কম। তাই দুই সপ্তাহ ধরেই দাম ক্রমাগত বাড়ছে। এর মধ্যে রোজার জন্য চাহিদা ৭-৮ গুণ বেড়েছে, তাই দাম আরও বেড়েছে।’
চাহিদার কারণে বেগুন ও শসার দামও বেড়েছে বলে এই বিক্রেতা বলেন। তিনি বলেন, প্রতিবছরই রোজা শুরু এবং তারপর এক সপ্তাহ পর্যন্ত বাজার কিছুটা গরম থাকে। এবারও একই অবস্থা হয়েছে। যদিও এবার সবজির দাম তুলনামূলক অনেক কম। রোজা শুরুর এক সপ্তাহ পরই বাজার আবার স্বাভাবিক হয়ে যাবে।
এবার পেঁয়াজের দাম গত বছরের তুলনায় অনেক কম হলেও গত এক সপ্তাহে কেজিপ্রতি ১০ টাকা বেড়েছে দেশে উৎপাদিত এই জরুরি পণ্যটির। গত বছর এ সময় পেঁয়াজের কেজি ছিল ১১০-১২০ টাকা। গতকাল রাজধানীর বাজারগুলোতে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৫০-৫৫ টাকা কেজি, যা এক সপ্তাহ আগে ৪০-৪৫ টাকা ছিল।
রাজধানী সেগুনবাগিচা বাজারে গতকাল বৃহস্পতিবার রোজার বাজার করতে গিয়েছিলেন একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরিজীবী মো. মতিউর রহমান। দোকানে গিয়ে হাতে থাকা ফর্দের প্রথম পণ্যটিই পাননি তিনি। অনেকটা হতাশার সুরে এই ক্রেতা বলেন, রোজার বাকি আর মাত্র দু-দিন। নিয়মিত বাজারের সঙ্গে রমজানের কিছু বাড়তি পণ্য যোগ হয়েছে ফর্দে। কিন্তু ফর্দের প্রথম পণ্য ভোজ্যতেলই পাচ্ছি না বাজারে।
মতিউরের মতো অনেকেই গতকাল রমজান মাসের প্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে বাজারে গিয়েছিলেন। এতেই চাহিদা বেড়েছে তেল, চিনি, ডাল, ছোলা, বেসন, মাছ, মাংস ও কিছু তরিতরকারির। বাড়তি চাহিদার কারণে এবারও পুরোনো দৃশ্যপটে ফিরে গেছে রোজার বাজার। দাম বেড়ে গেছে প্রায় সব পণ্যের।
বাজারসংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, গত বছরের তুলনায় এবার চালের দাম বেড়েছে ১৬-১৭ শতাংশ। ছোলাসহ রোজায় চাহিদা বাড়ে এমন পণ্যও গত বছরের তুলনায় এবার ৯-১০ শতাংশ বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। তার ওপর নতুন করে বেড়েছে মুরগি, গরুর মাংস, লেবু, শসা, পেঁয়াজসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম। গত বছরের চেয়ে ১৯-২০ শতাংশ বাড়তি দামে কিনতে হচ্ছে ভোজ্যতেল।
রোজার মাত্র দু-দিন আগেও বাজারে সয়াবিন তেল না পেয়ে ক্রেতার সঙ্গে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন খুচরা বিক্রেতারাও। তাঁরা বলছেন, ‘কাস্টমারের কাছে জবাবদিহি করতে করতে আমরা হয়রান হয়ে যাচ্ছি। সবার একই প্রশ্ন, তেল নেই কেন? বারবার চেয়েও কোম্পানির প্রতিনিধিদের কাছ থেকে তেলের সরবরাহ পাচ্ছি না।’
গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে ও অনেকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে সরকারের সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়ার আশ্বাস, পণ্যের ব্যাপক আমদানি ও সবজির মৌসুম—এসব কারণে এবার সাধারণ ক্রেতারা আশা করেছিলেন রোজায় বাজার স্বাভাবিক থাকবে। কিন্তু ক্রেতার সে আশার গুড়ে বালি। বাজার ঠিকই গরম হয়ে উঠেছে।
৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে ভোজ্যতেলের সংকট কেটে যাবে, ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝিতে এমন আশ্বাস দিয়েছিলেন বাণিজ্য উপদেষ্টা ও মিলমালিকেরা। কেউ তাঁদের কথা রাখেননি। বাজারে সয়াবিন তেলের সরবরাহ নেই বলেই চলে।
গতকাল রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বাজারে গিয়ে দেখা যায়, ছয়টি দোকানের কোনোটিতেই সয়াবিন তেল নেই। প্রায় একই অবস্থা রামপুরা, মালিবাগসহ অন্য বাজারগুলোতেও।
সেগুনবাগিচা বাজারের মুদিদোকানি মোস্তাফিজুর রহমান সিফাত আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বাজারে কারও কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। এত দীর্ঘ সময় তেলের সংকট এর আগে কখনই হয়নি। বিশেষ করে রোজার দু-দিন আগেও কোম্পানিগুলো বাজারে তেল দিচ্ছে না। এ বিষয়ে কারও তেমন কোনো পদক্ষেপও দেখছি না। ভোজ্যতেলের সরবরাহ না থাকায় কাস্টমারদের গালি শুনতে হয় আমাদের।’
শান্তিনগর বাজারের তীর ব্র্যান্ডের ডিলার মো. জিয়া বলেন, ‘তেলের সরবরাহ না দেওয়ায় আমি সয়াবিনের ডিলারশিপ স্থগিত রেখেছি। কারণ তেলের সাপ্লাই নেই, আমার কাস্টমারদের মাল দিতে পারেননি। স্থগিত না করে উপায় নেই।’
বাজারে কিছু খোলা সয়াবিন তেল ও পাম সুপার পাওয়া যায়। কিন্তু তাও সরকারনির্ধারিত দামের চেয়ে অনেক বেশি। গড়ে সব তেলের দামই এখন ১৯০-২০০ টাকা লিটার। অথচ সরকারনির্ধারিত দাম ১৫৭ টাকা লিটার।
১২ ফেব্রুয়ারি বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে আশ্বাস দিয়েছিলেন, ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে ভোজ্যতেলের বাজার স্থিতিশীল হবে। ১৬ ফেব্রুয়ারি এক বিজ্ঞপ্তিতে একই আশ্বাস দিয়েছিল ভোজ্যতেল পরিশোধনকারী কোম্পানিগুলোর সংগঠন বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন।
কাস্টমসের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৫ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত ভোজ্যতেলের আমদানি প্রায় ৩৫ শতাংশ বেড়েছে। ঋণপত্রও (এলসি) বেড়েছে একই হারে। শুধু তা–ই নয়, বিশ্ববাজারেও এখন পণ্যটির মূল্য স্থিতিশীল।
সরকারি ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ টিসিবির হিসাবে, বর্তমানে বাজারে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় খোলা সয়াবিন তেলের দাম ১৯ শতাংশ বেশি।
কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহসভাপতি এস এম নাজের হোসাইন বলেন, ‘এবার পণ্যের কোনো ঘাটতি নেই দেশে। সরকার বিভিন্ন সুযোগ দিয়ে দেশে পণ্যের মজুত বাড়িয়েছে। কিন্তু সমস্যা তৈরি করছেন যাঁরা সরবরাহ করেন, তাঁরা। আর এটি নজরদারি করার মতো প্রশাসনেও তেমন লোক নেই। ফলে যে যেভাবে পারছেন, দাম বাড়াচ্ছেন। অথচ এবার পণ্যের দাম কম থাকবে এবং বাজার স্বাভাবিক থাকবে—এমনটিই আশা ছিল আমাদের। সরকারও সেভাবেই আশ্বাস দিয়েছিল।’
ভোজ্যতেল ছাড়া রমজানে চাহিদা বাড়ে এমন অন্য পণ্যগুলোর মধ্যে ছোলা, চিনি, মসুর ডাল, বেসনের সরবরাহ সংকট নেই। তবে এসব পণ্যের দাম গত বছরের তুলনায় কেজিপ্রতি ১০-১৫ টাকা বেড়েছে। বর্তমানে বাজারে ছোলা বিক্রি হচ্ছে ১১০-১২০, যা গত বছর রোজার আগে বিক্রি হয়েছিল ৯০–১১০ টাকা কেজি। টিসিবি বলছে, ছোলার দাম বেড়েছে ১০ শতাংশ।
ভুট্টার বেসন ১৫০ ও অ্যাংকরের বেসন ১০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। বিক্রেতারা বলছেন, বেসনের দাম প্রতি কেজিতে ১৫-২০ টাকা বেড়েছে। তবে চিনির দাম ১২৫-১৩০ টাকা কেজিতে স্থির রয়েছে।
রোজার ঠিক তিন থেকে চার দিন আগে নতুন করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে অন্যতম চাহিদার পণ্য মুরগি ও গরুর মাংসের বাজার। রাজধানীর বাজারগুলোতে গতকাল ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে ২১০-২২০ টাকা কেজি। আর সোনালি জাতের মুরগি বিক্রি হয়েছে ৩১০-৩২০ টাকা কেজি। অথচ গত মঙ্গলবারও বাজারে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে ১৯০-২০০ টাকা কেজিতে।
গরুর মাংসের দাম কেজিতে ৫০ টাকা করে বেড়ে ৭৮০-৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গরুর মাংসের দাম শবে বরাতের আগে বাড়লেও মাঝখানে কয়েক দিন কিছুটা কমে বিক্রি হয়েছিল। চাহিদা বাড়তে থাকায় আবার দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন বিক্রেতারা।
রাজধানীর মুগদা বাজারের মাংস বিক্রেতা আব্দুস সালাম বলেন, হাট থেকে গরুপ্রতি ৫-৭ হাজার টাকা বাড়িতে দিয়ে কিনতে হচ্ছে। তাই আমাদেরও বাড়তি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।’
রোজায় নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষের ফলের জুস দিয়ে শরবত তৈরির সামর্থ্য নেই। ভিটামিন ‘সি’র ঘাটতি পূরণে মাল্টা বা কমলাও কিনতে পারেন না। এই শ্রেণির রোজাদারের ভরসা হয়ে ওঠে লেবুর শরবত। রোজায় নিম্ন আয়ের মানুষের সবচেয়ে দুশ্চিন্তা থাকে লেবুর দাম নিয়ে। কারণ প্রতিবছর রোজা এলে লেবুর দাম বেড়ে যায়।
এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। রাজধানীর মানিকনগর ও রামপুরাসহ বিভিন্ন বাজারে ছোট আকারে লেবু বিক্রি হয়েছে ৪০-৫০ টাকা হালি, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ২০-৩০ টাকা ছিল। মাঝারি আকারের লেবুর হালি বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকায়, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৪০-৬০ টাকা ও কিছুটা বড় আকারের লেবু কিনতে ক্রেতাকে গুনতে হচ্ছে ১০০-১১০ টাকা হালি, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৬০-৮০ টাকা হালি।
রোজায় চাহিদার বাড়ে বেগুনের। এবার সব ধরনের সবজির দাম যখন একেবারেই কম। তখন ক্রেতার আশা ছিল বেগুনের দামও কম থাকবে। কিন্তু দাম ঠিকই বেড়েছে। সপ্তাহখানেক আগেও বাজারগুলোতে যে বেগুন ৪০ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে, সেই একই মানের বেগুন গতকাল বাজারে ৬০-৭০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। লেবু ও বেগুনের সঙ্গে বেড়েছে শসা ও খিরার দামও। বাজারে খিরা বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকা কেজি, যা সপ্তাহখানেক আগে বিক্রি হয়েছে ৩০-৪০ টাকা কেজিতে।
রাজধানীর মানিকনগর বাজারের সবজি বিক্রেতা মো. মোতালিব বলেন, ‘চৈত্র ও বৈশাখ মাসে লেবুর ভরা মৌসুম। এখন চলছে ফাল্গুন মাস। তার ওপর দীর্ঘদিন বৃষ্টি না হওয়ায় লেবুর উৎপাদন কম। তাই দুই সপ্তাহ ধরেই দাম ক্রমাগত বাড়ছে। এর মধ্যে রোজার জন্য চাহিদা ৭-৮ গুণ বেড়েছে, তাই দাম আরও বেড়েছে।’
চাহিদার কারণে বেগুন ও শসার দামও বেড়েছে বলে এই বিক্রেতা বলেন। তিনি বলেন, প্রতিবছরই রোজা শুরু এবং তারপর এক সপ্তাহ পর্যন্ত বাজার কিছুটা গরম থাকে। এবারও একই অবস্থা হয়েছে। যদিও এবার সবজির দাম তুলনামূলক অনেক কম। রোজা শুরুর এক সপ্তাহ পরই বাজার আবার স্বাভাবিক হয়ে যাবে।
এবার পেঁয়াজের দাম গত বছরের তুলনায় অনেক কম হলেও গত এক সপ্তাহে কেজিপ্রতি ১০ টাকা বেড়েছে দেশে উৎপাদিত এই জরুরি পণ্যটির। গত বছর এ সময় পেঁয়াজের কেজি ছিল ১১০-১২০ টাকা। গতকাল রাজধানীর বাজারগুলোতে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৫০-৫৫ টাকা কেজি, যা এক সপ্তাহ আগে ৪০-৪৫ টাকা ছিল।
শিক্ষার খরচ মেটাতে কিংবা একটু একটু করে নিজের টাকায় কিছু করার স্বপ্নে খুদে শিক্ষার্থীরা এখন ব্যাংকের সঙ্গী। আগে যেখানে সঞ্চয়ের মানে ছিল মাটির ব্যাংকে কয়েন জমানো, এখন সেটি ডিজিটাল পর্দায় ব্যালেন্স হিসাবে দেখা যায়। দেশের ব্যাংকগুলো এখন শিশু-কিশোরদের সেই হাতেখড়ির জায়গা হয়ে উঠেছে।
৫ ঘণ্টা আগেচালের দাম কিছুটা কমায় খাদ্য মূল্যস্ফীতিতে স্বস্তি এসেছে। একই সঙ্গে রিজার্ভ ও আমানত প্রবৃদ্ধি হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) প্রকাশিত অর্থনৈতিক হালনাগাদ প্রতিবেদনে এই চিত্র উঠেছে। সংস্থাটির হালনাগাদ ও পূর্বাভাস প্রতিবেদনে দেশের অর্থনীতিতে আগামী...
৫ ঘণ্টা আগেমার্কিন সুদের হার কমানোর সম্ভাবনা ও নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে সোনার চাহিদা বেড়ে রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছানোর পর মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) বিনিয়োগকারীরা মুনাফা তুলে নিতে শুরু করেছেন। এতে সোনার দাম পাঁচ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় দৈনিক দরপতনের পথে রয়েছে।
৭ ঘণ্টা আগেমিউচুয়াল ফান্ডের অর্থ বিধিবহির্ভূতভাবে লোকসানি কোম্পানিতে বিনিয়োগের ঘটনায় এলআর গ্লোবাল বাংলাদেশ অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রিয়াজ ইসলামসহ ছয় পরিচালককে ১ কোটি টাকা করে ৬ কোটিসহ মোট ৯ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে ৯ কোটি ২১ লাখ টাকা জরিমানা করেছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলা
১০ ঘণ্টা আগেজয়নাল আবেদীন খান, ঢাকা
শিক্ষার খরচ মেটাতে কিংবা একটু একটু করে নিজের টাকায় কিছু করার স্বপ্নে খুদে শিক্ষার্থীরা এখন ব্যাংকের সঙ্গী। আগে যেখানে সঞ্চয়ের মানে ছিল মাটির ব্যাংকে কয়েন জমানো, এখন সেটি ডিজিটাল পর্দায় ব্যালেন্স হিসাবে দেখা যায়। দেশের ব্যাংকগুলো এখন শিশু-কিশোরদের সেই হাতেখড়ির জায়গা হয়ে উঠেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্যে দেখা যায়, চলতি বছরের জুলাই পর্যন্ত স্কুল ব্যাংকিংয়ের আওতায় হিসাবের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৫ লাখ ১৫ হাজার ২৫টি। এর মধ্যে ২৩ লাখ ছেলে, আর ২২ লাখের বেশি মেয়ে শিক্ষার্থীর নামে হিসাব খোলা হয়েছে। গ্রামে এই উদ্যোগের বিস্তার আরও বড়—২৩ লাখ ৯১ হাজার শিক্ষার্থীর হিসাব গ্রামাঞ্চলে, শহরে ২১ লাখ ২৩ হাজার।
এখন পর্যন্ত এসব খুদে সঞ্চয়কারীর ব্যাংকে জমা স্থিতি দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ১০৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে শহরের শিক্ষার্থীদের ১ হাজার ৪৪৫ কোটি, গ্রামের শিক্ষার্থীদের ৬৬৩ কোটি টাকা। অর্থাৎ সংখ্যা অনুযায়ী গ্রাম এগিয়ে থাকলেও সঞ্চয়ের অঙ্কে পিছিয়ে তারা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, এই পুরো উদ্যোগই মূলত আর্থিক অন্তর্ভুক্তির একটি নতুন দরজা খুলে দিয়েছে। করোনাকালে কিছুটা ভাটা পড়লেও এখন আবার উল্টো স্রোত—স্কুল ব্যাংকিং দ্রুত জনপ্রিয় হচ্ছে। এর পেছনে বড় কারণ, ব্যাংকগুলোর ডিজিটাল সেবা। এখন অনেক স্কুলেই ব্যাংক প্রতিনিধি গিয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ সঞ্চয় হিসাব খুলে দেন। তাতে স্কুলের ফি, বৃত্তি বা উপবৃত্তির টাকা সহজে জমা বা উত্তোলন করা যায়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর এ বিষয়ে বলেন, ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনীতির কোনো জাদুকরি যন্ত্র নেই। প্রত্যেক স্কুলশিক্ষার্থীর ব্যাংক হিসাব নিশ্চিত করা গেলে সেটাই হবে শিক্ষায় অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনীতি গড়ার ভিত্তি।’
২০১১ সালে মাত্র ১০০ টাকা জমা দিয়ে ১১ থেকে ১৭ বছর বয়সীদের জন্য শুরু হয় স্কুল ব্যাংকিং কার্যক্রম। সে সময় কয়েকটি ব্যাংকে সীমিতভাবে হিসাব খোলা হতো। এখন দেশের ৬১ ব্যাংকের মধ্যে ৫৯টিতেই রয়েছে স্কুল ব্যাংকিং এবং এর ৭১ শতাংশ হিসাব বেসরকারি ব্যাংকে। শুধু বেসরকারি ব্যাংকগুলোতেই শিক্ষার্থীদের আমানত পৌঁছেছে ১ হাজার ৭২৮ কোটিতে। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর ভাগে এসেছে ৩৮০ কোটি টাকা।
সবচেয়ে সক্রিয় ব্যাংকগুলোর তালিকায় রয়েছে ডাচ্-বাংলা, ইসলামী, অগ্রণী, সোনালী ও রূপালী ব্যাংক। বিশেষ করে ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের ডিজিটাল স্কুল ব্যাংকিং সেবা সবচেয়ে বেশি শিক্ষার্থীর নাগাল পেয়েছে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. মইনুল ইসলাম বলেন, ‘এই উদ্যোগ শুধু সঞ্চয় নয়, শিক্ষার্থীদের অর্থনীতির ধারায় যুক্ত করছে। এতে অভিভাবকের ওপর চাপ কমে, আর ব্যাংকও দীর্ঘমেয়াদি আমানতের ভিত্তি পায়। এই খুদে আমানতই পরোক্ষভাবে জাতীয় বিনিয়োগের জ্বালানি।’
অন্যদিকে, জনতা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মজিবর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘স্কুল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে শিশুরা এখন থেকেই টাকা ব্যবস্থাপনার কৌশল শিখছে। এতে সঞ্চয়ের সঙ্গে শিক্ষাবিমা, বৃত্তি গ্রহণ বা স্কুল ফি পরিশোধের সুবিধাও পাচ্ছে তারা।’
মতিঝিল সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয়ের ছাত্র আইমান জানায়, ‘উৎসবে পাওয়া টাকা আর টিফিনের কিছু অংশ ব্যাংকে রাখি। পরীক্ষার সময় সেই টাকা তুলে খরচ করেছি। ভালো লাগছে; কারণ, বাবার ওপর চাপ পড়েনি।’
বাংলাদেশ ব্যাংক এখন এই উদ্যোগকে আরও বিস্তৃত করতে মাঠে নেমেছে। চলতি বছরের মার্চে একটি নির্দেশনা জারি করে বলা হয়, প্রতিটি ব্যাংকের শাখা অন্তত একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্কুল ব্যাংকিং চালু করবে। এতে একদিকে শিক্ষার্থীরা ব্যাংকিং জগতে হাতে-কলমে অভিজ্ঞতা পাবে, অন্যদিকে দেশের চার লাখের বেশি স্কুল হয়ে উঠবে আর্থিক শিক্ষার মাঠ।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বলেন, ‘এই উদ্যোগে সবাই লাভবান হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা সঞ্চয় করছে, অভিভাবকেরা স্বস্তি পাচ্ছেন, ব্যাংকও আমানত বাড়াচ্ছে। সব মিলিয়ে অর্থনীতিতে খুদে শিক্ষার্থীরাও এখন অবদান রাখছে।’
শিক্ষার খরচ মেটাতে কিংবা একটু একটু করে নিজের টাকায় কিছু করার স্বপ্নে খুদে শিক্ষার্থীরা এখন ব্যাংকের সঙ্গী। আগে যেখানে সঞ্চয়ের মানে ছিল মাটির ব্যাংকে কয়েন জমানো, এখন সেটি ডিজিটাল পর্দায় ব্যালেন্স হিসাবে দেখা যায়। দেশের ব্যাংকগুলো এখন শিশু-কিশোরদের সেই হাতেখড়ির জায়গা হয়ে উঠেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্যে দেখা যায়, চলতি বছরের জুলাই পর্যন্ত স্কুল ব্যাংকিংয়ের আওতায় হিসাবের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৫ লাখ ১৫ হাজার ২৫টি। এর মধ্যে ২৩ লাখ ছেলে, আর ২২ লাখের বেশি মেয়ে শিক্ষার্থীর নামে হিসাব খোলা হয়েছে। গ্রামে এই উদ্যোগের বিস্তার আরও বড়—২৩ লাখ ৯১ হাজার শিক্ষার্থীর হিসাব গ্রামাঞ্চলে, শহরে ২১ লাখ ২৩ হাজার।
এখন পর্যন্ত এসব খুদে সঞ্চয়কারীর ব্যাংকে জমা স্থিতি দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ১০৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে শহরের শিক্ষার্থীদের ১ হাজার ৪৪৫ কোটি, গ্রামের শিক্ষার্থীদের ৬৬৩ কোটি টাকা। অর্থাৎ সংখ্যা অনুযায়ী গ্রাম এগিয়ে থাকলেও সঞ্চয়ের অঙ্কে পিছিয়ে তারা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, এই পুরো উদ্যোগই মূলত আর্থিক অন্তর্ভুক্তির একটি নতুন দরজা খুলে দিয়েছে। করোনাকালে কিছুটা ভাটা পড়লেও এখন আবার উল্টো স্রোত—স্কুল ব্যাংকিং দ্রুত জনপ্রিয় হচ্ছে। এর পেছনে বড় কারণ, ব্যাংকগুলোর ডিজিটাল সেবা। এখন অনেক স্কুলেই ব্যাংক প্রতিনিধি গিয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ সঞ্চয় হিসাব খুলে দেন। তাতে স্কুলের ফি, বৃত্তি বা উপবৃত্তির টাকা সহজে জমা বা উত্তোলন করা যায়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর এ বিষয়ে বলেন, ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনীতির কোনো জাদুকরি যন্ত্র নেই। প্রত্যেক স্কুলশিক্ষার্থীর ব্যাংক হিসাব নিশ্চিত করা গেলে সেটাই হবে শিক্ষায় অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনীতি গড়ার ভিত্তি।’
২০১১ সালে মাত্র ১০০ টাকা জমা দিয়ে ১১ থেকে ১৭ বছর বয়সীদের জন্য শুরু হয় স্কুল ব্যাংকিং কার্যক্রম। সে সময় কয়েকটি ব্যাংকে সীমিতভাবে হিসাব খোলা হতো। এখন দেশের ৬১ ব্যাংকের মধ্যে ৫৯টিতেই রয়েছে স্কুল ব্যাংকিং এবং এর ৭১ শতাংশ হিসাব বেসরকারি ব্যাংকে। শুধু বেসরকারি ব্যাংকগুলোতেই শিক্ষার্থীদের আমানত পৌঁছেছে ১ হাজার ৭২৮ কোটিতে। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর ভাগে এসেছে ৩৮০ কোটি টাকা।
সবচেয়ে সক্রিয় ব্যাংকগুলোর তালিকায় রয়েছে ডাচ্-বাংলা, ইসলামী, অগ্রণী, সোনালী ও রূপালী ব্যাংক। বিশেষ করে ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের ডিজিটাল স্কুল ব্যাংকিং সেবা সবচেয়ে বেশি শিক্ষার্থীর নাগাল পেয়েছে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. মইনুল ইসলাম বলেন, ‘এই উদ্যোগ শুধু সঞ্চয় নয়, শিক্ষার্থীদের অর্থনীতির ধারায় যুক্ত করছে। এতে অভিভাবকের ওপর চাপ কমে, আর ব্যাংকও দীর্ঘমেয়াদি আমানতের ভিত্তি পায়। এই খুদে আমানতই পরোক্ষভাবে জাতীয় বিনিয়োগের জ্বালানি।’
অন্যদিকে, জনতা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মজিবর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘স্কুল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে শিশুরা এখন থেকেই টাকা ব্যবস্থাপনার কৌশল শিখছে। এতে সঞ্চয়ের সঙ্গে শিক্ষাবিমা, বৃত্তি গ্রহণ বা স্কুল ফি পরিশোধের সুবিধাও পাচ্ছে তারা।’
মতিঝিল সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয়ের ছাত্র আইমান জানায়, ‘উৎসবে পাওয়া টাকা আর টিফিনের কিছু অংশ ব্যাংকে রাখি। পরীক্ষার সময় সেই টাকা তুলে খরচ করেছি। ভালো লাগছে; কারণ, বাবার ওপর চাপ পড়েনি।’
বাংলাদেশ ব্যাংক এখন এই উদ্যোগকে আরও বিস্তৃত করতে মাঠে নেমেছে। চলতি বছরের মার্চে একটি নির্দেশনা জারি করে বলা হয়, প্রতিটি ব্যাংকের শাখা অন্তত একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্কুল ব্যাংকিং চালু করবে। এতে একদিকে শিক্ষার্থীরা ব্যাংকিং জগতে হাতে-কলমে অভিজ্ঞতা পাবে, অন্যদিকে দেশের চার লাখের বেশি স্কুল হয়ে উঠবে আর্থিক শিক্ষার মাঠ।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বলেন, ‘এই উদ্যোগে সবাই লাভবান হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা সঞ্চয় করছে, অভিভাবকেরা স্বস্তি পাচ্ছেন, ব্যাংকও আমানত বাড়াচ্ছে। সব মিলিয়ে অর্থনীতিতে খুদে শিক্ষার্থীরাও এখন অবদান রাখছে।’
রাজধানী সেগুনবাগিচা বাজারে গতকাল বৃহস্পতিবার রোজার বাজার করতে গিয়েছিলেন একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরিজীবী মো. মতিউর রহমান। দোকানে গিয়ে হাতে থাকা ফর্দের প্রথম পণ্যটিই পাননি তিনি। অনেকটা হতাশার সুরে এই ক্রেতা বলেন, রোজার বাকি আর মাত্র দু-দিন। নিয়মিত বাজারের সঙ্গে রমজানের কিছু বাড়তি পণ্য যোগ হয়েছে...
২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫চালের দাম কিছুটা কমায় খাদ্য মূল্যস্ফীতিতে স্বস্তি এসেছে। একই সঙ্গে রিজার্ভ ও আমানত প্রবৃদ্ধি হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) প্রকাশিত অর্থনৈতিক হালনাগাদ প্রতিবেদনে এই চিত্র উঠেছে। সংস্থাটির হালনাগাদ ও পূর্বাভাস প্রতিবেদনে দেশের অর্থনীতিতে আগামী...
৫ ঘণ্টা আগেমার্কিন সুদের হার কমানোর সম্ভাবনা ও নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে সোনার চাহিদা বেড়ে রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছানোর পর মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) বিনিয়োগকারীরা মুনাফা তুলে নিতে শুরু করেছেন। এতে সোনার দাম পাঁচ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় দৈনিক দরপতনের পথে রয়েছে।
৭ ঘণ্টা আগেমিউচুয়াল ফান্ডের অর্থ বিধিবহির্ভূতভাবে লোকসানি কোম্পানিতে বিনিয়োগের ঘটনায় এলআর গ্লোবাল বাংলাদেশ অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রিয়াজ ইসলামসহ ছয় পরিচালককে ১ কোটি টাকা করে ৬ কোটিসহ মোট ৯ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে ৯ কোটি ২১ লাখ টাকা জরিমানা করেছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলা
১০ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
চালের দাম কিছুটা কমায় খাদ্য মূল্যস্ফীতিতে স্বস্তি এসেছে। একই সঙ্গে রিজার্ভ ও আমানত প্রবৃদ্ধি হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) প্রকাশিত অর্থনৈতিক হালনাগাদ প্রতিবেদনে এই চিত্র উঠেছে। সংস্থাটির হালনাগাদ ও পূর্বাভাস প্রতিবেদনে দেশের অর্থনীতিতে আগামী মাসগুলোর জন্য সতর্ক আশাবাদের ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে।
জিইডির বিশ্লেষণে বলা হয়, জাতীয় সঞ্চয়পত্রে সুদের হার কমানো, ই-মানি ও এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ডিজিটাল আর্থিক অন্তর্ভুক্তি বৃদ্ধি এবং সরকারি অর্থ ব্যাংকের মাধ্যমে বিতরণের মতো পদক্ষেপ আমানত বৃদ্ধিতে ভূমিকা রেখেছে। প্রবাসী আয়ও এই প্রবণতাকে জোরদার করেছে। আগামী জাতীয় নির্বাচন ঘিরে অর্থনৈতিক কার্যক্রম সাময়িকভাবে বাড়বে, যা বিনিয়োগকারীদের মনোভাবেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সেপ্টেম্বরে মূল্যস্ফীতি সামান্য বেড়ে ৮ দশমিক ৩৬ শতাংশে দাঁড়িয়েছে, যা আগস্টে ছিল ৮ দশমিক ২৯ শতাংশ। খাদ্য ও খাদ্যবহির্ভূত উভয় খাতেই সামান্য বৃদ্ধি দেখা গেছে। ২০২২ সালের আগস্ট থেকে গড় মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৫৬ শতাংশে স্থির রয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে তেলের দাম ৫০ শতাংশের বেশি বাড়ায় মূল্যস্ফীতির ওপর দীর্ঘস্থায়ী চাপ তৈরি হয়েছে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, চালের দাম কিছুটা কমায় খাদ্য মূল্যস্ফীতিতে স্বস্তি এসেছে। আগস্টে যেখানে চালের অবদান ছিল ৪৮ দশমিক ৩৭ শতাংশ, সেপ্টেম্বরে তা কমে ৪৫ শতাংশে নেমেছে। সেপ্টেম্বরে সব ধরনের চালের দাম গড়ে প্রায় ১ শতাংশ কমেছে। আলু ও পেঁয়াজের দাম কমায় সাধারণ ভোক্তা কিছুটা স্বস্তি পেয়েছে।
এদিকে খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকার অক্টোবরের শুরুতে ভারতের কাছ থেকে ৫০ হাজার টন চাল এবং যুক্তরাষ্ট্র থেকে ২ লাখ ২০ হাজার টন গম আমদানির অনুমোদন দিয়েছে। নভেম্বরে আরও ৪ লাখ টন খাদ্যশস্য আসবে বলে আশা করা হচ্ছে। বর্তমানে সরকারি গুদামে খাদ্যশস্যের মজুত ১৫ লাখ ৫ হাজার টন, যা গত বছরের তুলনায় ২৪ শতাংশ বেশি।
রিজার্ভে উন্নতি, রপ্তানিতে সাময়িক ধাক্কা
দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ স্থিতিশীলভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। মার্চের ২৫ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার থেকে সেপ্টেম্বরে বেড়ে ৩১ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার হয়েছে। বিএমপি-৬ মানদণ্ডে রিজার্ভ ২০ দশমিক ৪ বিলিয়ন থেকে বেড়ে ২৬ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। তবে সেপ্টেম্বরে রপ্তানি আয় কিছুটা কমে ৩ দশমিক ৬৩ বিলিয়ন ডলারে হয়েছে। আগস্টে ছিল রপ্তানি আয় ছিল ৩ দশমিক ৯২ বিলিয়ন ও জুলাইয়ে ৪ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন ডলার। মৌসুমি প্রভাব ও তৈরি পোশাক রপ্তানি হ্রাসই এর প্রধান কারণ। তবে পাটজাত পণ্য, চামড়া ও হালকা প্রকৌশল পণ্যের রপ্তানি স্থিতিশীল রয়েছে।
চলতি বছরের জুলাই-আগস্টে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ৫৪ হাজার ৪২৩ কোটি টাকা রাজস্ব সংগ্রহ করেছে, যা আগের বছরের তুলনায় ২১ শতাংশ বেশি। ভ্যাট আদায় বেড়েছে ৩৩ দশমিক ৮ শতাংশ এবং আয়কর ২৪ শতাংশ।
চালের দাম কিছুটা কমায় খাদ্য মূল্যস্ফীতিতে স্বস্তি এসেছে। একই সঙ্গে রিজার্ভ ও আমানত প্রবৃদ্ধি হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) প্রকাশিত অর্থনৈতিক হালনাগাদ প্রতিবেদনে এই চিত্র উঠেছে। সংস্থাটির হালনাগাদ ও পূর্বাভাস প্রতিবেদনে দেশের অর্থনীতিতে আগামী মাসগুলোর জন্য সতর্ক আশাবাদের ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে।
জিইডির বিশ্লেষণে বলা হয়, জাতীয় সঞ্চয়পত্রে সুদের হার কমানো, ই-মানি ও এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ডিজিটাল আর্থিক অন্তর্ভুক্তি বৃদ্ধি এবং সরকারি অর্থ ব্যাংকের মাধ্যমে বিতরণের মতো পদক্ষেপ আমানত বৃদ্ধিতে ভূমিকা রেখেছে। প্রবাসী আয়ও এই প্রবণতাকে জোরদার করেছে। আগামী জাতীয় নির্বাচন ঘিরে অর্থনৈতিক কার্যক্রম সাময়িকভাবে বাড়বে, যা বিনিয়োগকারীদের মনোভাবেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সেপ্টেম্বরে মূল্যস্ফীতি সামান্য বেড়ে ৮ দশমিক ৩৬ শতাংশে দাঁড়িয়েছে, যা আগস্টে ছিল ৮ দশমিক ২৯ শতাংশ। খাদ্য ও খাদ্যবহির্ভূত উভয় খাতেই সামান্য বৃদ্ধি দেখা গেছে। ২০২২ সালের আগস্ট থেকে গড় মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৫৬ শতাংশে স্থির রয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে তেলের দাম ৫০ শতাংশের বেশি বাড়ায় মূল্যস্ফীতির ওপর দীর্ঘস্থায়ী চাপ তৈরি হয়েছে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, চালের দাম কিছুটা কমায় খাদ্য মূল্যস্ফীতিতে স্বস্তি এসেছে। আগস্টে যেখানে চালের অবদান ছিল ৪৮ দশমিক ৩৭ শতাংশ, সেপ্টেম্বরে তা কমে ৪৫ শতাংশে নেমেছে। সেপ্টেম্বরে সব ধরনের চালের দাম গড়ে প্রায় ১ শতাংশ কমেছে। আলু ও পেঁয়াজের দাম কমায় সাধারণ ভোক্তা কিছুটা স্বস্তি পেয়েছে।
এদিকে খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকার অক্টোবরের শুরুতে ভারতের কাছ থেকে ৫০ হাজার টন চাল এবং যুক্তরাষ্ট্র থেকে ২ লাখ ২০ হাজার টন গম আমদানির অনুমোদন দিয়েছে। নভেম্বরে আরও ৪ লাখ টন খাদ্যশস্য আসবে বলে আশা করা হচ্ছে। বর্তমানে সরকারি গুদামে খাদ্যশস্যের মজুত ১৫ লাখ ৫ হাজার টন, যা গত বছরের তুলনায় ২৪ শতাংশ বেশি।
রিজার্ভে উন্নতি, রপ্তানিতে সাময়িক ধাক্কা
দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ স্থিতিশীলভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। মার্চের ২৫ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার থেকে সেপ্টেম্বরে বেড়ে ৩১ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার হয়েছে। বিএমপি-৬ মানদণ্ডে রিজার্ভ ২০ দশমিক ৪ বিলিয়ন থেকে বেড়ে ২৬ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। তবে সেপ্টেম্বরে রপ্তানি আয় কিছুটা কমে ৩ দশমিক ৬৩ বিলিয়ন ডলারে হয়েছে। আগস্টে ছিল রপ্তানি আয় ছিল ৩ দশমিক ৯২ বিলিয়ন ও জুলাইয়ে ৪ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন ডলার। মৌসুমি প্রভাব ও তৈরি পোশাক রপ্তানি হ্রাসই এর প্রধান কারণ। তবে পাটজাত পণ্য, চামড়া ও হালকা প্রকৌশল পণ্যের রপ্তানি স্থিতিশীল রয়েছে।
চলতি বছরের জুলাই-আগস্টে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ৫৪ হাজার ৪২৩ কোটি টাকা রাজস্ব সংগ্রহ করেছে, যা আগের বছরের তুলনায় ২১ শতাংশ বেশি। ভ্যাট আদায় বেড়েছে ৩৩ দশমিক ৮ শতাংশ এবং আয়কর ২৪ শতাংশ।
রাজধানী সেগুনবাগিচা বাজারে গতকাল বৃহস্পতিবার রোজার বাজার করতে গিয়েছিলেন একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরিজীবী মো. মতিউর রহমান। দোকানে গিয়ে হাতে থাকা ফর্দের প্রথম পণ্যটিই পাননি তিনি। অনেকটা হতাশার সুরে এই ক্রেতা বলেন, রোজার বাকি আর মাত্র দু-দিন। নিয়মিত বাজারের সঙ্গে রমজানের কিছু বাড়তি পণ্য যোগ হয়েছে...
২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫শিক্ষার খরচ মেটাতে কিংবা একটু একটু করে নিজের টাকায় কিছু করার স্বপ্নে খুদে শিক্ষার্থীরা এখন ব্যাংকের সঙ্গী। আগে যেখানে সঞ্চয়ের মানে ছিল মাটির ব্যাংকে কয়েন জমানো, এখন সেটি ডিজিটাল পর্দায় ব্যালেন্স হিসাবে দেখা যায়। দেশের ব্যাংকগুলো এখন শিশু-কিশোরদের সেই হাতেখড়ির জায়গা হয়ে উঠেছে।
৫ ঘণ্টা আগেমার্কিন সুদের হার কমানোর সম্ভাবনা ও নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে সোনার চাহিদা বেড়ে রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছানোর পর মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) বিনিয়োগকারীরা মুনাফা তুলে নিতে শুরু করেছেন। এতে সোনার দাম পাঁচ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় দৈনিক দরপতনের পথে রয়েছে।
৭ ঘণ্টা আগেমিউচুয়াল ফান্ডের অর্থ বিধিবহির্ভূতভাবে লোকসানি কোম্পানিতে বিনিয়োগের ঘটনায় এলআর গ্লোবাল বাংলাদেশ অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রিয়াজ ইসলামসহ ছয় পরিচালককে ১ কোটি টাকা করে ৬ কোটিসহ মোট ৯ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে ৯ কোটি ২১ লাখ টাকা জরিমানা করেছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলা
১০ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক
মার্কিন সুদের হার কমানোর সম্ভাবনা ও নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে সোনার চাহিদা বেড়ে রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছানোর পর মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) বিনিয়োগকারীরা মুনাফা তুলে নিতে শুরু করেছেন। এতে সোনার দাম পাঁচ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় দৈনিক দরপতনের পথে রয়েছে।
মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের সময় সকাল ১টা ৪৫ মিনিটে স্পট গোল্ডের দাম প্রতি আউন্সে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ কমে এক সপ্তাহের মধ্যে সর্বনিম্ন ৪ হাজার ১১৫ দশমিক ২৬ ডলারে দাঁড়ায়, যা ২০২০ সালের আগস্টের পর সবচেয়ে বড় দৈনিক পতন।
এর আগের দিন সোমবার সোনার দাম ইতিহাসের সর্বোচ্চ ৪ হাজার ৩৮১ দশমিক ২১ ডলারে উঠেছিল। এ বছর এখন পর্যন্ত সোনার দাম প্রায় ৬০ শতাংশ বেড়েছে, যা মূলত ভূরাজনৈতিক অস্থিরতা, অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা, সুদের হার কমার সম্ভাবনা এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর ক্রমাগত সোনা কেনার কারণে সম্ভব হয়েছে।
সোনা-রুপা ব্যবসায়ী তাই ওয়ং রয়টার্সকে বলেন, ‘দরপতন শুরুর পর গতকাল পর্যন্তও ক্রেতারা সোনা কিনছিলেন, কিন্তু এখন বাজারে দরপতনের অতি অস্থিরতা সতর্কবার্তা দিচ্ছে। অনেক বিনিয়োগকারী স্বল্প মেয়াদে মুনাফা তুলতে উৎসাহিত হচ্ছেন।’
ডলার সূচক ০ দশমিক ৪ শতাংশ বাড়ায় অন্য মুদ্রাধারীদের জন্য সোনা কেনা আরও ব্যয়বহুল হয়ে উঠেছে। কিটকো মেটালসের সিনিয়র বিশ্লেষক জিম উইকফ এক নোটে লিখেছেন, সপ্তাহের শুরুতে বাজারে ঝুঁকি নেওয়ার মানসিকতা বাড়ায় নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে সোনা ও রুপার চাহিদা কিছুটা কমেছে।
সিটি ব্যাংকের বিশ্লেষকেরা এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছেন, চলমান মার্কিন সরকারের অচলাবস্থা (শাটডাউন) শেষ হওয়া এবং যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্য চুক্তি ঘোষণার ফলে আগামী দুই থেকে তিন সপ্তাহে সোনার দাম স্থিতিশীল অবস্থায় যেতে পারে।
এদিকে স্পট সিলভার বা রুপার দাম ৭ দশমিক ৬ শতাংশ কমে প্রতি আউন্সে ৪৮ দশমিক ৪৯ ডলারে নেমে গেছে।
তাই ওয়ং বলেন, আজ রুপা ভয়াবহভাবে হোঁচট খেয়েছে এবং পুরো বাজারকেই নিচে নামিয়েছে। স্বল্প মেয়াদে রুপার দাম রেকর্ড ৫৪ ডলারে পৌঁছেছিল, আর এখন ৫০ ডলারের নিচে। তাই সোনার দাম স্থিতিশীল থাকলে রুপার বাজারেও বড় ধরনের অস্থিরতা চলমান থাকবে।
অন্যদিকে, প্লাটিনামের দাম ৫ দশমিক ৯ শতাংশ কমে ১ হাজার ৫৪১ দশমিক ৮৫ ডলার এবং প্যালাডিয়ামের দাম ৫ দশমিক ৩ শতাংশ কমে ১ হাজার ৪১৭ দশমিক ২৫ ডলারে দাঁড়িয়েছে।
বিনিয়োগকারীরা এখন অপেক্ষা করছেন শুক্রবার প্রকাশিতব্য সেপ্টেম্বরের মার্কিন ভোক্তা মূল্যসূচকের (সিপিআই) জন্য। মার্কিন সরকার অচল থাকায় এটি প্রকাশে বিলম্বিত হয়েছে। প্রতিবেদনটিতে বার্ষিক ৩ দশমিক ১ শতাংশ মূল্যবৃদ্ধি দেখানোর সম্ভাবনা রয়েছে।
বাজার বিশ্লেষকদের ধারণা, ফেডারেল রিজার্ভ আগামী সপ্তাহের নীতিনির্ধারণী বৈঠকে সুদের হার শূন্য দশমিক ২৫ শতাংশ বা ২৫ বেসিস পয়েন্ট কমাতে পারে।
মার্কিন সুদের হার কমানোর সম্ভাবনা ও নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে সোনার চাহিদা বেড়ে রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছানোর পর মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) বিনিয়োগকারীরা মুনাফা তুলে নিতে শুরু করেছেন। এতে সোনার দাম পাঁচ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় দৈনিক দরপতনের পথে রয়েছে।
মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের সময় সকাল ১টা ৪৫ মিনিটে স্পট গোল্ডের দাম প্রতি আউন্সে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ কমে এক সপ্তাহের মধ্যে সর্বনিম্ন ৪ হাজার ১১৫ দশমিক ২৬ ডলারে দাঁড়ায়, যা ২০২০ সালের আগস্টের পর সবচেয়ে বড় দৈনিক পতন।
এর আগের দিন সোমবার সোনার দাম ইতিহাসের সর্বোচ্চ ৪ হাজার ৩৮১ দশমিক ২১ ডলারে উঠেছিল। এ বছর এখন পর্যন্ত সোনার দাম প্রায় ৬০ শতাংশ বেড়েছে, যা মূলত ভূরাজনৈতিক অস্থিরতা, অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা, সুদের হার কমার সম্ভাবনা এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর ক্রমাগত সোনা কেনার কারণে সম্ভব হয়েছে।
সোনা-রুপা ব্যবসায়ী তাই ওয়ং রয়টার্সকে বলেন, ‘দরপতন শুরুর পর গতকাল পর্যন্তও ক্রেতারা সোনা কিনছিলেন, কিন্তু এখন বাজারে দরপতনের অতি অস্থিরতা সতর্কবার্তা দিচ্ছে। অনেক বিনিয়োগকারী স্বল্প মেয়াদে মুনাফা তুলতে উৎসাহিত হচ্ছেন।’
ডলার সূচক ০ দশমিক ৪ শতাংশ বাড়ায় অন্য মুদ্রাধারীদের জন্য সোনা কেনা আরও ব্যয়বহুল হয়ে উঠেছে। কিটকো মেটালসের সিনিয়র বিশ্লেষক জিম উইকফ এক নোটে লিখেছেন, সপ্তাহের শুরুতে বাজারে ঝুঁকি নেওয়ার মানসিকতা বাড়ায় নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে সোনা ও রুপার চাহিদা কিছুটা কমেছে।
সিটি ব্যাংকের বিশ্লেষকেরা এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছেন, চলমান মার্কিন সরকারের অচলাবস্থা (শাটডাউন) শেষ হওয়া এবং যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্য চুক্তি ঘোষণার ফলে আগামী দুই থেকে তিন সপ্তাহে সোনার দাম স্থিতিশীল অবস্থায় যেতে পারে।
এদিকে স্পট সিলভার বা রুপার দাম ৭ দশমিক ৬ শতাংশ কমে প্রতি আউন্সে ৪৮ দশমিক ৪৯ ডলারে নেমে গেছে।
তাই ওয়ং বলেন, আজ রুপা ভয়াবহভাবে হোঁচট খেয়েছে এবং পুরো বাজারকেই নিচে নামিয়েছে। স্বল্প মেয়াদে রুপার দাম রেকর্ড ৫৪ ডলারে পৌঁছেছিল, আর এখন ৫০ ডলারের নিচে। তাই সোনার দাম স্থিতিশীল থাকলে রুপার বাজারেও বড় ধরনের অস্থিরতা চলমান থাকবে।
অন্যদিকে, প্লাটিনামের দাম ৫ দশমিক ৯ শতাংশ কমে ১ হাজার ৫৪১ দশমিক ৮৫ ডলার এবং প্যালাডিয়ামের দাম ৫ দশমিক ৩ শতাংশ কমে ১ হাজার ৪১৭ দশমিক ২৫ ডলারে দাঁড়িয়েছে।
বিনিয়োগকারীরা এখন অপেক্ষা করছেন শুক্রবার প্রকাশিতব্য সেপ্টেম্বরের মার্কিন ভোক্তা মূল্যসূচকের (সিপিআই) জন্য। মার্কিন সরকার অচল থাকায় এটি প্রকাশে বিলম্বিত হয়েছে। প্রতিবেদনটিতে বার্ষিক ৩ দশমিক ১ শতাংশ মূল্যবৃদ্ধি দেখানোর সম্ভাবনা রয়েছে।
বাজার বিশ্লেষকদের ধারণা, ফেডারেল রিজার্ভ আগামী সপ্তাহের নীতিনির্ধারণী বৈঠকে সুদের হার শূন্য দশমিক ২৫ শতাংশ বা ২৫ বেসিস পয়েন্ট কমাতে পারে।
রাজধানী সেগুনবাগিচা বাজারে গতকাল বৃহস্পতিবার রোজার বাজার করতে গিয়েছিলেন একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরিজীবী মো. মতিউর রহমান। দোকানে গিয়ে হাতে থাকা ফর্দের প্রথম পণ্যটিই পাননি তিনি। অনেকটা হতাশার সুরে এই ক্রেতা বলেন, রোজার বাকি আর মাত্র দু-দিন। নিয়মিত বাজারের সঙ্গে রমজানের কিছু বাড়তি পণ্য যোগ হয়েছে...
২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫শিক্ষার খরচ মেটাতে কিংবা একটু একটু করে নিজের টাকায় কিছু করার স্বপ্নে খুদে শিক্ষার্থীরা এখন ব্যাংকের সঙ্গী। আগে যেখানে সঞ্চয়ের মানে ছিল মাটির ব্যাংকে কয়েন জমানো, এখন সেটি ডিজিটাল পর্দায় ব্যালেন্স হিসাবে দেখা যায়। দেশের ব্যাংকগুলো এখন শিশু-কিশোরদের সেই হাতেখড়ির জায়গা হয়ে উঠেছে।
৫ ঘণ্টা আগেচালের দাম কিছুটা কমায় খাদ্য মূল্যস্ফীতিতে স্বস্তি এসেছে। একই সঙ্গে রিজার্ভ ও আমানত প্রবৃদ্ধি হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) প্রকাশিত অর্থনৈতিক হালনাগাদ প্রতিবেদনে এই চিত্র উঠেছে। সংস্থাটির হালনাগাদ ও পূর্বাভাস প্রতিবেদনে দেশের অর্থনীতিতে আগামী...
৫ ঘণ্টা আগেমিউচুয়াল ফান্ডের অর্থ বিধিবহির্ভূতভাবে লোকসানি কোম্পানিতে বিনিয়োগের ঘটনায় এলআর গ্লোবাল বাংলাদেশ অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রিয়াজ ইসলামসহ ছয় পরিচালককে ১ কোটি টাকা করে ৬ কোটিসহ মোট ৯ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে ৯ কোটি ২১ লাখ টাকা জরিমানা করেছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলা
১০ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
মিউচুয়াল ফান্ডের অর্থ বিধিবহির্ভূতভাবে লোকসানি কোম্পানিতে বিনিয়োগের ঘটনায় এলআর গ্লোবাল বাংলাদেশ অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রিয়াজ ইসলামসহ ছয় পরিচালককে ১ কোটি টাকা করে ৬ কোটিসহ মোট ৯ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে ৯ কোটি ২১ লাখ টাকা জরিমানা করেছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
ওই বিনিয়োগের অর্থ ফেরাতে ব্যর্থ হলে সংশ্লিষ্টদের ১০০ কোটি টাকা জরিমানা গুণতে হবে। একই সঙ্গে বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম ও রিয়াজ ইসলামকে পুঁজিবাজারের কার্যক্রম থেকে আজীবন নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) বিএসইসি চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কমিশনের ৯৭৮তম সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভা শেষে সংস্থার পরিচালক ও মুখপাত্র মো. আবুল কালাম এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান।
বিএসইসি জানায়, এলআর গ্লোবাল বাংলাদেশ অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি পরিচালিত ছয়টি মিউচুয়াল ফান্ডের টাকা স্টক এক্সচেঞ্জের মূল বোর্ড থেকে তালিকাচ্যুত পদ্মা প্রিন্টার্স অ্যান্ড কালার লিমিটেডের (বর্তমানে কোয়েস্ট বিডিসি লিমিটেড) ৫১ শতাংশ শেয়ার ক্রয়ের মাধ্যমে ২৩ কোটি ৬২ লাখ টাকা বিনিয়োগ করে। প্রতিটি শেয়ার ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের হলেও ২৮৯ টাকা ৪৮ পয়সা দরে কেনা হয়।
বিনিয়োগের সময় প্রতিষ্ঠানটির ব্যবসায়িক কার্যক্রম বন্ধ ছিল। কোম্পানির প্রতি শেয়ারের নিট সম্পদ মূল্য (এনএভি) ছিল ঋণাত্মক ২ টাকা ৭৪ পয়সা এবং রিটেইন আর্নিংস ঋণাত্মক ২ কোটি ৩৫ লাখ টাকা (৩০ জুন ২০২২ পর্যন্ত)। ওই সময় ডিএসইর ওটিসি প্ল্যাটফর্মে কোম্পানির প্রতিটি শেয়ারের দাম ছিল মাত্র ১৩ টাকা ৬০ পয়সা।
১ কোটি টাকা করে জরিমানা
বিএসইসি বলেছে, বিনিয়োগপ্রক্রিয়ায় প্রাইস সেনসেটিভ ইনফরমেশন প্রকাশ না করা, বিশেষ সাধারণ সভা (ইজিএম) না করা ও প্রাইভেট প্লেসমেন্টের মাধ্যমে ইস্যু করা শেয়ার লক–ইন না করা—এসব সিকিউরিটিজ আইন লঙ্ঘনের কারণে কোয়েস্ট বিডিসি লিমিটেডের তৎকালীন ছয় পরিচালককে ১ কোটি টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।
জরিমানা দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন ডিবিএইচ ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ডের প্রতিনিধি পরিচালক রিয়াজ ইসলাম, চেয়ারম্যান ও গ্রিন ডেল্টা মিউচুয়াল ফান্ডের প্রতিনিধি পরিচালক রেজাউর রহমান সোহাগ, তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও এআইবিএল ফার্স্ট ইসলামিক মিউচুয়াল ফান্ডের প্রতিনিধি পরিচালক অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শরীফ আহসান, এমবিএল ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ডের প্রতিনিধি পরিচালক মেদিনা আলী, এলআর গ্লোবাল বাংলাদেশ মিউচুয়াল ফান্ড–ওয়ানের প্রতিনিধি পরিচালক সৈয়দ কামরুল হুদা এবং এনসিসিবিএল মিউচুয়াল ফান্ড–ওয়ানের প্রতিনিধি পরিচালক মো. ওমর সোব চৌধুরী।
বিনিয়োগ ফেরাতে ব্যর্থ হলে শতকোটি টাকা জরিমানা
বিএসইসি জানিয়েছে, এই ছয় ফান্ড থেকে বিনিয়োগ করা ৬৮ কোটি ৬৪ লাখ টাকা সুদসহ মোট ৯০ কোটি টাকা ৩০ দিনের মধ্যে ফান্ডগুলোতে ফেরত আনতে হবে। এই অর্থ ফেরতের জন্য এলআর গ্লোবাল বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রিয়াজ ইসলামকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অর্থ ফেরত না এলে রিয়াজ ইসলামকে ৯৮ কোটি টাকা, পরিচালক জর্জ এম স্টক থ্রিকে ১ কোটি টাকা, পরিচালক রেজাউর রহমান সোহাগকে ১ কোটি টাকা অতিরিক্ত জরিমানা দিতে হবে। অর্থাৎ মোট জরিমানা ধার্য করা হবে ১০০ কোটি টাকা।
এ ছাড়া বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (মিউচুয়াল ফান্ড) বিধিমালা, ২০০১-এর বিধান লঙ্ঘন করে লোকসানি ও নিষ্ক্রিয় কোম্পানিতে বিনিয়োগের ফলে ইউনিটহোল্ডারদের স্বার্থ ক্ষুণ্ন হওয়ায় জনস্বার্থে ছয়টি ফান্ডের সম্পদ ব্যবস্থাপক হিসেবে এলআর গ্লোবাল বাংলাদেশের নিয়োগ বাতিলের প্রক্রিয়া শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএসইসি।
ফান্ডগুলোর যথাযথ তদারকিতে ব্যর্থ হওয়ায় বাংলাদেশ জেনারেল ইনস্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডকে (বিজিআইসি) ৩ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এ ছাড়া কোয়েস্ট বিডিসি লিমিটেডের ৩০ জুন ২০২৩ তারিখে সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা প্রতিবেদনে যথাযথ দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতার অভিযোগে শফিক বসাক অ্যান্ড কোম্পানি, চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টসের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বিষয়টি ফাইন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিলে (এফআরসি) পাঠানো হয়েছে।
এ ছাড়া মিথ্যা তথ্য প্রদানের কারণে কোয়েস্ট বিডিসি লিমিটেডের তৎকালীন চেয়ারম্যান রেজাউর রহমান সোহাগকে ১০ লাখ টাকা এবং একই সময়ে তিন প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব পালন করে স্বার্থের সংঘাত (কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট) তৈরি করার কারণে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শরীফ আহসানকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
বিএসইসি জানায়, কোয়েস্ট বিডিসি লিমিটেড ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের প্রতিটি শেয়ার ৫২ টাকা ২৫ পয়সা দরে মোট ২৪ কোটি ৯৫ লাখ টাকা থাইরোকেয়ার বাংলাদেশ লিমিটেডে বিনিয়োগ করে। এই বিনিয়োগের শেয়ার মূল্যায়ন করেছে সিটি ব্যাংক ক্যাপিটাল রিসোর্সেস লিমিটেড।
তদন্তে দেখা গেছে, এর তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক এরশাদ হোসেন ও রিয়াজ ইসলামের মধ্যে যোগসাজশের ভিত্তিতে শেয়ার মূল্যায়ন করা হয়। এর মাধ্যমে মানি লন্ডারিং সংঘটিত হয়েছে বলে প্রতীয়মান হওয়ায় বিষয়টি অধিকতর তদন্তের জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) পাঠানো হয়েছে।
মিউচুয়াল ফান্ডের অর্থ বিধিবহির্ভূতভাবে লোকসানি কোম্পানিতে বিনিয়োগের ঘটনায় এলআর গ্লোবাল বাংলাদেশ অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রিয়াজ ইসলামসহ ছয় পরিচালককে ১ কোটি টাকা করে ৬ কোটিসহ মোট ৯ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে ৯ কোটি ২১ লাখ টাকা জরিমানা করেছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
ওই বিনিয়োগের অর্থ ফেরাতে ব্যর্থ হলে সংশ্লিষ্টদের ১০০ কোটি টাকা জরিমানা গুণতে হবে। একই সঙ্গে বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম ও রিয়াজ ইসলামকে পুঁজিবাজারের কার্যক্রম থেকে আজীবন নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) বিএসইসি চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কমিশনের ৯৭৮তম সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভা শেষে সংস্থার পরিচালক ও মুখপাত্র মো. আবুল কালাম এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান।
বিএসইসি জানায়, এলআর গ্লোবাল বাংলাদেশ অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি পরিচালিত ছয়টি মিউচুয়াল ফান্ডের টাকা স্টক এক্সচেঞ্জের মূল বোর্ড থেকে তালিকাচ্যুত পদ্মা প্রিন্টার্স অ্যান্ড কালার লিমিটেডের (বর্তমানে কোয়েস্ট বিডিসি লিমিটেড) ৫১ শতাংশ শেয়ার ক্রয়ের মাধ্যমে ২৩ কোটি ৬২ লাখ টাকা বিনিয়োগ করে। প্রতিটি শেয়ার ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের হলেও ২৮৯ টাকা ৪৮ পয়সা দরে কেনা হয়।
বিনিয়োগের সময় প্রতিষ্ঠানটির ব্যবসায়িক কার্যক্রম বন্ধ ছিল। কোম্পানির প্রতি শেয়ারের নিট সম্পদ মূল্য (এনএভি) ছিল ঋণাত্মক ২ টাকা ৭৪ পয়সা এবং রিটেইন আর্নিংস ঋণাত্মক ২ কোটি ৩৫ লাখ টাকা (৩০ জুন ২০২২ পর্যন্ত)। ওই সময় ডিএসইর ওটিসি প্ল্যাটফর্মে কোম্পানির প্রতিটি শেয়ারের দাম ছিল মাত্র ১৩ টাকা ৬০ পয়সা।
১ কোটি টাকা করে জরিমানা
বিএসইসি বলেছে, বিনিয়োগপ্রক্রিয়ায় প্রাইস সেনসেটিভ ইনফরমেশন প্রকাশ না করা, বিশেষ সাধারণ সভা (ইজিএম) না করা ও প্রাইভেট প্লেসমেন্টের মাধ্যমে ইস্যু করা শেয়ার লক–ইন না করা—এসব সিকিউরিটিজ আইন লঙ্ঘনের কারণে কোয়েস্ট বিডিসি লিমিটেডের তৎকালীন ছয় পরিচালককে ১ কোটি টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।
জরিমানা দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন ডিবিএইচ ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ডের প্রতিনিধি পরিচালক রিয়াজ ইসলাম, চেয়ারম্যান ও গ্রিন ডেল্টা মিউচুয়াল ফান্ডের প্রতিনিধি পরিচালক রেজাউর রহমান সোহাগ, তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও এআইবিএল ফার্স্ট ইসলামিক মিউচুয়াল ফান্ডের প্রতিনিধি পরিচালক অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শরীফ আহসান, এমবিএল ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ডের প্রতিনিধি পরিচালক মেদিনা আলী, এলআর গ্লোবাল বাংলাদেশ মিউচুয়াল ফান্ড–ওয়ানের প্রতিনিধি পরিচালক সৈয়দ কামরুল হুদা এবং এনসিসিবিএল মিউচুয়াল ফান্ড–ওয়ানের প্রতিনিধি পরিচালক মো. ওমর সোব চৌধুরী।
বিনিয়োগ ফেরাতে ব্যর্থ হলে শতকোটি টাকা জরিমানা
বিএসইসি জানিয়েছে, এই ছয় ফান্ড থেকে বিনিয়োগ করা ৬৮ কোটি ৬৪ লাখ টাকা সুদসহ মোট ৯০ কোটি টাকা ৩০ দিনের মধ্যে ফান্ডগুলোতে ফেরত আনতে হবে। এই অর্থ ফেরতের জন্য এলআর গ্লোবাল বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রিয়াজ ইসলামকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অর্থ ফেরত না এলে রিয়াজ ইসলামকে ৯৮ কোটি টাকা, পরিচালক জর্জ এম স্টক থ্রিকে ১ কোটি টাকা, পরিচালক রেজাউর রহমান সোহাগকে ১ কোটি টাকা অতিরিক্ত জরিমানা দিতে হবে। অর্থাৎ মোট জরিমানা ধার্য করা হবে ১০০ কোটি টাকা।
এ ছাড়া বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (মিউচুয়াল ফান্ড) বিধিমালা, ২০০১-এর বিধান লঙ্ঘন করে লোকসানি ও নিষ্ক্রিয় কোম্পানিতে বিনিয়োগের ফলে ইউনিটহোল্ডারদের স্বার্থ ক্ষুণ্ন হওয়ায় জনস্বার্থে ছয়টি ফান্ডের সম্পদ ব্যবস্থাপক হিসেবে এলআর গ্লোবাল বাংলাদেশের নিয়োগ বাতিলের প্রক্রিয়া শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএসইসি।
ফান্ডগুলোর যথাযথ তদারকিতে ব্যর্থ হওয়ায় বাংলাদেশ জেনারেল ইনস্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডকে (বিজিআইসি) ৩ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এ ছাড়া কোয়েস্ট বিডিসি লিমিটেডের ৩০ জুন ২০২৩ তারিখে সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা প্রতিবেদনে যথাযথ দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতার অভিযোগে শফিক বসাক অ্যান্ড কোম্পানি, চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টসের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বিষয়টি ফাইন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিলে (এফআরসি) পাঠানো হয়েছে।
এ ছাড়া মিথ্যা তথ্য প্রদানের কারণে কোয়েস্ট বিডিসি লিমিটেডের তৎকালীন চেয়ারম্যান রেজাউর রহমান সোহাগকে ১০ লাখ টাকা এবং একই সময়ে তিন প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব পালন করে স্বার্থের সংঘাত (কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট) তৈরি করার কারণে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শরীফ আহসানকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
বিএসইসি জানায়, কোয়েস্ট বিডিসি লিমিটেড ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের প্রতিটি শেয়ার ৫২ টাকা ২৫ পয়সা দরে মোট ২৪ কোটি ৯৫ লাখ টাকা থাইরোকেয়ার বাংলাদেশ লিমিটেডে বিনিয়োগ করে। এই বিনিয়োগের শেয়ার মূল্যায়ন করেছে সিটি ব্যাংক ক্যাপিটাল রিসোর্সেস লিমিটেড।
তদন্তে দেখা গেছে, এর তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক এরশাদ হোসেন ও রিয়াজ ইসলামের মধ্যে যোগসাজশের ভিত্তিতে শেয়ার মূল্যায়ন করা হয়। এর মাধ্যমে মানি লন্ডারিং সংঘটিত হয়েছে বলে প্রতীয়মান হওয়ায় বিষয়টি অধিকতর তদন্তের জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) পাঠানো হয়েছে।
রাজধানী সেগুনবাগিচা বাজারে গতকাল বৃহস্পতিবার রোজার বাজার করতে গিয়েছিলেন একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরিজীবী মো. মতিউর রহমান। দোকানে গিয়ে হাতে থাকা ফর্দের প্রথম পণ্যটিই পাননি তিনি। অনেকটা হতাশার সুরে এই ক্রেতা বলেন, রোজার বাকি আর মাত্র দু-দিন। নিয়মিত বাজারের সঙ্গে রমজানের কিছু বাড়তি পণ্য যোগ হয়েছে...
২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫শিক্ষার খরচ মেটাতে কিংবা একটু একটু করে নিজের টাকায় কিছু করার স্বপ্নে খুদে শিক্ষার্থীরা এখন ব্যাংকের সঙ্গী। আগে যেখানে সঞ্চয়ের মানে ছিল মাটির ব্যাংকে কয়েন জমানো, এখন সেটি ডিজিটাল পর্দায় ব্যালেন্স হিসাবে দেখা যায়। দেশের ব্যাংকগুলো এখন শিশু-কিশোরদের সেই হাতেখড়ির জায়গা হয়ে উঠেছে।
৫ ঘণ্টা আগেচালের দাম কিছুটা কমায় খাদ্য মূল্যস্ফীতিতে স্বস্তি এসেছে। একই সঙ্গে রিজার্ভ ও আমানত প্রবৃদ্ধি হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) প্রকাশিত অর্থনৈতিক হালনাগাদ প্রতিবেদনে এই চিত্র উঠেছে। সংস্থাটির হালনাগাদ ও পূর্বাভাস প্রতিবেদনে দেশের অর্থনীতিতে আগামী...
৫ ঘণ্টা আগেমার্কিন সুদের হার কমানোর সম্ভাবনা ও নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে সোনার চাহিদা বেড়ে রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছানোর পর মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) বিনিয়োগকারীরা মুনাফা তুলে নিতে শুরু করেছেন। এতে সোনার দাম পাঁচ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় দৈনিক দরপতনের পথে রয়েছে।
৭ ঘণ্টা আগে