মাহফুজুল ইসলাম, ঢাকা
অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে বিমা খাতের অবস্থা এমনিতেই বেহাল। সেই সংকটের মাত্রা আরও গভীর হয়েছে দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পরে বিমা খাতের প্রায় অর্ধেক কোম্পানির শতাধিক পরিচালক পলাতক কিংবা জেলে। তাঁদের অনুপস্থিতিতে অনিয়ম-নৈরাজ্যের জেরে প্রতিষ্ঠানগুলোর আর্থিক মেরুদণ্ড ভেঙে পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।
বিমা খাতের পলাতক ও কারাবন্দী কর্তাব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন ২৭ জন সাবেক মন্ত্রী, মেয়র ও সংসদ সদস্য (এমপি)। সশরীর উপস্থিত হতে না পারায় তাঁদের অনেকে নিয়মবহির্ভূতভাবে ভার্চুয়ালভাবে (অনলাইনে) পর্ষদ সভায় অংশগ্রহণ করছেন। নিয়মিত নিচ্ছেন বেতন-ভাতা ও বিভিন্ন খরচের অর্থ।
বিমা বিশ্লেষক ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, চেয়ারম্যান ও পরিচালকেরা মাসের পর মাস অনুপস্থিত থাকায় কোম্পানি ও গ্রাহকেরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। কোম্পানির কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। অনিয়ম ও দলাদলি জেঁকে বসেছে। বর্তমান পরিচালক, নির্বাহীসহ প্রভাবশালী ব্যক্তিরা বিভিন্ন খাতে খরচের নামে অর্থ লোপাটের ছক কষছেন। এতে গ্রাহকদের বিমার অর্থের দাবি পূরণ না হওয়ার শঙ্কা বাড়ছে। শেয়ারহোল্ডাররা বঞ্চিত হচ্ছেন মুনাফা থেকে।
বিমা খাতের পর্যবেক্ষকেরা বলছেন, সংশ্লিষ্ট কোম্পানির নিরীক্ষকেরা এসব অসংগতি তুলে ধরছেন না। নিয়ন্ত্রক সংস্থাও দায়িত্বশীল আচরণ করছে না। যথাযথ নজরদারি না থাকায় কোম্পানিগুলোর শীর্ষ নির্বাহীরা লাগামছাড়া হয়ে উঠছেন।
সরকারি দুটিসহ দেশে ৮২টি বিমা কোম্পানি রয়েছে। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেই ৬০টি বিমা কোম্পানিকে লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, এর একটি বড় অংশ অনুমোদন পেয়েছিল রাজনৈতিক বিবেচনায়। ৫ আগস্টের পটপরিবর্তনের আগে ৭০টি কোম্পানির নিয়ন্ত্রণ ছিল আওয়ামী লীগের নেতাদের হাতে। এসব কোম্পানির পরিচালক ও চেয়ারম্যান পদে ছিলেন তাঁরা। পটপরিবর্তনের পর এর মধ্যে ৬০টি কোম্পানির পরিচালক বা চেয়ারম্যানরা পদ ছেড়ে দিয়ে আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব বা ব্যবসায়িক অংশীদারদের বসিয়ে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ ঠিক রেখেছেন। তবে ১০ কোম্পানির চেয়ারম্যানসহ ৩৬টি কোম্পানির ১১২ জন পরিচালক এখনো পদ ছাড়েননি। তাঁরা দেশ-বিদেশে পলাতক বা কারাগারে থাকলেও পদে বহাল রয়েছেন।
পলাতক চেয়ারম্যান সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সূত্রে জানা গেছে, এক বছরের বেশি সময় ধরে পলাতক রয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ইসলামী ইনস্যুরেন্স বাংলাদেশের চেয়ারম্যান সাঈদ খোকন। একইভাবে পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চাচা সোনার বাংলা ইনস্যুরেন্সের চেয়ারম্যান শেখ কবির হোসেন। আরও পলাতক রয়েছেন সাবেক এমপি ও রূপালী লাইফের মাহফুজুর রহমান, আলফা ইসলামী লাইফের আলমগীর শামসুল আলামিন, এনআরবি ইসলামী লাইফের কিবরিয়া গোলাম মোহাম্মদ, ট্রাস্ট ইসলামী লাইফের আতাউর রহমান ভূঁইয়া মানিক এবং সন্ধানী লাইফ ইনস্যুরেন্স ও পূরবী জেনারেল ইনস্যুরেন্স লিমিটেডের চেয়ারম্যান মজিবুল ইসলাম পান্না। সাবেক এমপি ও ন্যাশনাল লাইফ ইনস্যুরেন্সের চেয়ারম্যান মোরশেদ আলম কারাগারে।
কর্মকর্তারা বলছেন, কোম্পানিগুলোতে চেয়ারম্যানরা সশরীর উপস্থিত না হলেও তাঁদের গাড়ির খরচ, জ্বালানি খরচ এমনকি চালকের বেতন দেওয়া হচ্ছে প্রতিষ্ঠান থেকে। নেওয়া হচ্ছে মোবাইল ফোনের বিলও। একই অবস্থা পরিচালকদের ক্ষেত্রেও।
সম্প্রতি রাজধানীর পুরানা পল্টনের ডিআর টাওয়ারে সাঈদ খোকনের ইসলামী ইনস্যুরেন্সের প্রধান কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, অভ্যর্থনা কক্ষে একের পর এক আসছেন বিমার দাবি না মেটা গ্রাহক। তাঁদের কাউকে বলা হচ্ছে, কাগজপত্র দিয়ে যেতে, কর্মকর্তাদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে। কাউকে বলা হচ্ছে, এখন কোম্পানির অবস্থা ভালো নেই, টাকা পেতে দেরি হবে। এসব কথা শুনে গ্রাহকেরা ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।
সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে এ বিষয়ে জানতে ইসলামী ইনস্যুরেন্সের সিইওর সঙ্গে দেখা করতে চাইলে অভ্যর্থনা কক্ষ থেকে বলা হয়, ‘স্যার কারও সঙ্গে কথা বলেন না।’ জনসংযোগ বিভাগের প্রধান বলেন, ‘৫ আগস্টের পর থেকে চেয়ারম্যান ও পরিচালক স্যার নিয়মিত আসছেন না। তাই সব কাজ করা যাচ্ছে না।’
পরে ফোনে কথা হলে সিইও আব্দুল খালেক মিয়া বলেন, ‘চেয়ারম্যান পলাতক। তিনি জুমে (অনলাইনে) পর্ষদের সভা করেন। কোম্পানি নিয়ন্ত্রণ করছেন ভাইস চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ। আর কিছু বলতে পারব না।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক কর্মকর্তা বলেন, কোম্পানিতে এখন দুটি গ্রুপ হয়েছে। পৃথক গ্রুপ দুটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন ভাইস চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ ও সিইও আব্দুল খালেক মিয়া। দুর্নীতির অভিযোগে সম্প্রতি সিইওকে চাকরিচ্যুত করেছেন ভাইস চেয়ারম্যান। তবে নিয়মবহির্ভূতভাবে হওয়ায় এই চাকরিচ্যুতির আবেদন নামঞ্জুর করেছে বিমার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)।
রূপালী লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানির চেয়ারম্যান চট্টগ্রামের সন্দ্বীপের সাবেক এমপি মাহফুজুর রহমান। তিনি পলাতক থাকায় সিইও গোলাম কিবরিয়া কয়েকজন পরিচালকের সঙ্গে মিলে বিপুল অঙ্কের অর্থ আত্মসাৎ করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ছাড়া কোম্পানিটিতে একাধিক গ্রুপ তৈরি হয়েছে।
এ বিষয়ে রূপালী লাইফ ইনস্যুরেন্সের সচিব আমিরুল ইসলাম বলেন, ‘চেয়ারম্যান নিয়মিত অফিস করেন না, প্রয়োজনে আসেন, আবার চলে যান।’ তবে ডিএমডি জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘চেয়ারম্যান পলাতক। তিনি পর্ষদ সভা করেন জুমে। মিটিংয়ের নামে টাকা নিচ্ছেন। তিনি অফিসে না আসায় মিটিংয়ের নামে গ্রাহকদের অর্থ লোপাট চলছে।’
ন্যাশনাল লাইফ ইনস্যুরেন্সের সিইও কাজিম উদ্দিন পরিস্থিতি নিয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, দৈনন্দিন কাজ চলছে। এক বছর ধরে চেয়ারম্যান অনুপস্থিত থাকায় গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে না।
পলাতক পরিচালকেরা পলাতক হিসেবে বিবেচিত পরিচালকদের মধ্যে রয়েছেন ইসলামী ইনস্যুরেন্সের চেয়ারম্যান সাঈদ খোকনের স্ত্রী ফারহানা সাঈদ, মা শাহানা হানিফ, মেয়ে রাইফা নানজিবা সাঈদ, আয়েশা নিভরাশ সাঈদ এবং ফাতিমা নওশিন মাইয়া সাঈদ অরোরা ও শ্যালিকা রিজওয়ানা হোসেন।
সন্ধানী লাইফ ইনস্যুরেন্স ও পূরবী জেনারেল ইনস্যুরেন্স এই দুই বিমা কোম্পানি আওয়ামী লীগ নেতা হাজী মকবুল হোসেনের। তাঁর মৃত্যুর পর সন্ধানী লাইফ ইনস্যুরেন্সের উপদেষ্টা হন সাবেক বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু। পরিচালক হিসেবে রয়েছেন তাঁর মা গোলাম ফাতেমা তাহেরা খানম। এ ছাড়া পূরবী জেনারেলের উদ্যোক্তা পরিচালক হিসেবে রয়েছেন সাবেক এমপি নজরুল ইসলাম চৌধুরী। তাঁরা সবাই পলাতক।
পলাতক রয়েছেন আলফা লাইফের পরিচালক ইন্তেখাবুল হামিদ অপুসহ আরও তিনজন। অপু সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুর ভাই।
সাবেক দুই মন্ত্রী গাজী গোলাম দস্তগীর ও ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের কোম্পানি যমুনা লাইফ ইনস্যুরেন্স। তাঁরা উভয়ে কারাগারে। কোম্পানির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন গাজী গ্রুপের সাবেক কর্মকর্তা বদরুল আলম খান। পলাতক পরিচালকদের মধ্যে রয়েছেন মোশাররফ হোসেনের স্ত্রী আয়েশা সুলতানা, মেয়ে মেহেনাজ তাবাসসুম, ছেলের বউ ফারহানা ফেরদৌসি ইমতিয়াজ।
পলাতক রয়েছেন বেস্ট লাইফ ইনস্যুরেন্সের চেয়ারম্যান সাবেক এমপি আব্দুল হাফিজ মল্লিক ও পরিচালক ড. নাদিয়া বিনতে আমিন, ট্রাস্ট ইসলামী লাইফ ইনস্যুরেন্সের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান ভূঁইয়া মানিক।
পলাতক রয়েছেন সাবেক এমপি ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুনের এশিয়া ইনস্যুরেন্স পিএলসির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মোস্তফা হায়দার। সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামালের কোম্পানি এশিয়া প্যাসিফিক জেনারেল ইনস্যুরেন্স। তাঁর স্ত্রী কাশমেরী কামাল এর চেয়ারম্যান এবং মেয়ে নাফিসা কামাল পরিচালক ছিলেন। তাঁরা সবাই পলাতক।
সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের প্রতিষ্ঠান জনতা ইনস্যুরেন্স। এই কোম্পানির চেয়ারম্যান মন্ত্রীর মামা জাফরুল ইসলাম চৌধুরী, ভাইস প্রেসিডেন্ট তাঁর আত্মীয় ফারহানা জামান এবং তাঁর মেয়ে জেবা জামান পলাতক রয়েছেন। লক্ষ্মীপুরের সাবেক এমপি তাকাফুল ইসলামী লাইফের পরিচালক ড. আনোয়ার হোসেন খানও পলাতক।
ট্রাস্ট ইসলামী লাইফের সিইও মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন বলেন, ৫ আগস্টের পর থেকে চেয়ারম্যান দেশের বাইরে রয়েছেন। কিছুদিন ভার্চুয়াল মিটিং হয়েছে। কোম্পানির স্বার্থে সর্বশেষ সভায় নতুন চেয়ারম্যান নির্বাচন করা হয়েছে।
পলাতক রয়েছেন সাবেক এমপি নিটল ইনস্যুরেন্সের চেয়ারম্যান সেলিমা আহমাদ। সেলিমার পদে বসেছেন তাঁর ভাই এ কে এম মনিরুল হক। পলাতক রয়েছেন বেঙ্গল ইসলামী লাইফের পরিচালক সাবেক এমপি জেসমিন আখতার।
সব মিলিয়ে ১৯টি জীবনবিমা এবং ১৭টি সাধারণ বিমাসহ ৩৬টি প্রতিষ্ঠানের শতাধিক পরিচালক পলাতক রয়েছেন।
বিশেষজ্ঞ ও নিয়ন্ত্রক যা বলেন
বিমা বিশেষজ্ঞ ও চার্টার্ড লাইফ ইনস্যুরেন্সের সাবেক মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) এস এম জিয়াউল হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইডিআরএ রেগুলেটরি দুর্বলতার সুযোগ নিচ্ছে কোম্পানিগুলো। এর ফলে গ্রাহকেরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। আর বিমা খাত রুগ্ণ হচ্ছে।’
নিয়ন্ত্রক সংস্থা বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) পরামর্শক সাইফুন্নাহার সুমি বলেন, ‘জুমে পর্ষদ সভা করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ, এটা করা যাবে না। এখন পর্যন্ত কোনো কোম্পানির বিষয়ে অভিযোগ আসেনি, তাই বিষয়টি খতিয়ে দেখা হয়নি। নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে আমাদের কাজ বিমা কোম্পানির ওপর নজরদারি করা। কিন্তু লোকবলের অভাবে তা যথাযথভাবে করা সম্ভব হচ্ছে না। আবার অনিয়ম পেলেও কোম্পানির পর্ষদ পুনর্গঠন করা কিংবা নতুন বোর্ড গঠনের ক্ষমতা আইডিআরএর নেই।
অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে বিমা খাতের অবস্থা এমনিতেই বেহাল। সেই সংকটের মাত্রা আরও গভীর হয়েছে দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পরে বিমা খাতের প্রায় অর্ধেক কোম্পানির শতাধিক পরিচালক পলাতক কিংবা জেলে। তাঁদের অনুপস্থিতিতে অনিয়ম-নৈরাজ্যের জেরে প্রতিষ্ঠানগুলোর আর্থিক মেরুদণ্ড ভেঙে পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।
বিমা খাতের পলাতক ও কারাবন্দী কর্তাব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন ২৭ জন সাবেক মন্ত্রী, মেয়র ও সংসদ সদস্য (এমপি)। সশরীর উপস্থিত হতে না পারায় তাঁদের অনেকে নিয়মবহির্ভূতভাবে ভার্চুয়ালভাবে (অনলাইনে) পর্ষদ সভায় অংশগ্রহণ করছেন। নিয়মিত নিচ্ছেন বেতন-ভাতা ও বিভিন্ন খরচের অর্থ।
বিমা বিশ্লেষক ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, চেয়ারম্যান ও পরিচালকেরা মাসের পর মাস অনুপস্থিত থাকায় কোম্পানি ও গ্রাহকেরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। কোম্পানির কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। অনিয়ম ও দলাদলি জেঁকে বসেছে। বর্তমান পরিচালক, নির্বাহীসহ প্রভাবশালী ব্যক্তিরা বিভিন্ন খাতে খরচের নামে অর্থ লোপাটের ছক কষছেন। এতে গ্রাহকদের বিমার অর্থের দাবি পূরণ না হওয়ার শঙ্কা বাড়ছে। শেয়ারহোল্ডাররা বঞ্চিত হচ্ছেন মুনাফা থেকে।
বিমা খাতের পর্যবেক্ষকেরা বলছেন, সংশ্লিষ্ট কোম্পানির নিরীক্ষকেরা এসব অসংগতি তুলে ধরছেন না। নিয়ন্ত্রক সংস্থাও দায়িত্বশীল আচরণ করছে না। যথাযথ নজরদারি না থাকায় কোম্পানিগুলোর শীর্ষ নির্বাহীরা লাগামছাড়া হয়ে উঠছেন।
সরকারি দুটিসহ দেশে ৮২টি বিমা কোম্পানি রয়েছে। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেই ৬০টি বিমা কোম্পানিকে লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, এর একটি বড় অংশ অনুমোদন পেয়েছিল রাজনৈতিক বিবেচনায়। ৫ আগস্টের পটপরিবর্তনের আগে ৭০টি কোম্পানির নিয়ন্ত্রণ ছিল আওয়ামী লীগের নেতাদের হাতে। এসব কোম্পানির পরিচালক ও চেয়ারম্যান পদে ছিলেন তাঁরা। পটপরিবর্তনের পর এর মধ্যে ৬০টি কোম্পানির পরিচালক বা চেয়ারম্যানরা পদ ছেড়ে দিয়ে আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব বা ব্যবসায়িক অংশীদারদের বসিয়ে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ ঠিক রেখেছেন। তবে ১০ কোম্পানির চেয়ারম্যানসহ ৩৬টি কোম্পানির ১১২ জন পরিচালক এখনো পদ ছাড়েননি। তাঁরা দেশ-বিদেশে পলাতক বা কারাগারে থাকলেও পদে বহাল রয়েছেন।
পলাতক চেয়ারম্যান সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সূত্রে জানা গেছে, এক বছরের বেশি সময় ধরে পলাতক রয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ইসলামী ইনস্যুরেন্স বাংলাদেশের চেয়ারম্যান সাঈদ খোকন। একইভাবে পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চাচা সোনার বাংলা ইনস্যুরেন্সের চেয়ারম্যান শেখ কবির হোসেন। আরও পলাতক রয়েছেন সাবেক এমপি ও রূপালী লাইফের মাহফুজুর রহমান, আলফা ইসলামী লাইফের আলমগীর শামসুল আলামিন, এনআরবি ইসলামী লাইফের কিবরিয়া গোলাম মোহাম্মদ, ট্রাস্ট ইসলামী লাইফের আতাউর রহমান ভূঁইয়া মানিক এবং সন্ধানী লাইফ ইনস্যুরেন্স ও পূরবী জেনারেল ইনস্যুরেন্স লিমিটেডের চেয়ারম্যান মজিবুল ইসলাম পান্না। সাবেক এমপি ও ন্যাশনাল লাইফ ইনস্যুরেন্সের চেয়ারম্যান মোরশেদ আলম কারাগারে।
কর্মকর্তারা বলছেন, কোম্পানিগুলোতে চেয়ারম্যানরা সশরীর উপস্থিত না হলেও তাঁদের গাড়ির খরচ, জ্বালানি খরচ এমনকি চালকের বেতন দেওয়া হচ্ছে প্রতিষ্ঠান থেকে। নেওয়া হচ্ছে মোবাইল ফোনের বিলও। একই অবস্থা পরিচালকদের ক্ষেত্রেও।
সম্প্রতি রাজধানীর পুরানা পল্টনের ডিআর টাওয়ারে সাঈদ খোকনের ইসলামী ইনস্যুরেন্সের প্রধান কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, অভ্যর্থনা কক্ষে একের পর এক আসছেন বিমার দাবি না মেটা গ্রাহক। তাঁদের কাউকে বলা হচ্ছে, কাগজপত্র দিয়ে যেতে, কর্মকর্তাদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে। কাউকে বলা হচ্ছে, এখন কোম্পানির অবস্থা ভালো নেই, টাকা পেতে দেরি হবে। এসব কথা শুনে গ্রাহকেরা ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।
সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে এ বিষয়ে জানতে ইসলামী ইনস্যুরেন্সের সিইওর সঙ্গে দেখা করতে চাইলে অভ্যর্থনা কক্ষ থেকে বলা হয়, ‘স্যার কারও সঙ্গে কথা বলেন না।’ জনসংযোগ বিভাগের প্রধান বলেন, ‘৫ আগস্টের পর থেকে চেয়ারম্যান ও পরিচালক স্যার নিয়মিত আসছেন না। তাই সব কাজ করা যাচ্ছে না।’
পরে ফোনে কথা হলে সিইও আব্দুল খালেক মিয়া বলেন, ‘চেয়ারম্যান পলাতক। তিনি জুমে (অনলাইনে) পর্ষদের সভা করেন। কোম্পানি নিয়ন্ত্রণ করছেন ভাইস চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ। আর কিছু বলতে পারব না।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক কর্মকর্তা বলেন, কোম্পানিতে এখন দুটি গ্রুপ হয়েছে। পৃথক গ্রুপ দুটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন ভাইস চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ ও সিইও আব্দুল খালেক মিয়া। দুর্নীতির অভিযোগে সম্প্রতি সিইওকে চাকরিচ্যুত করেছেন ভাইস চেয়ারম্যান। তবে নিয়মবহির্ভূতভাবে হওয়ায় এই চাকরিচ্যুতির আবেদন নামঞ্জুর করেছে বিমার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)।
রূপালী লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানির চেয়ারম্যান চট্টগ্রামের সন্দ্বীপের সাবেক এমপি মাহফুজুর রহমান। তিনি পলাতক থাকায় সিইও গোলাম কিবরিয়া কয়েকজন পরিচালকের সঙ্গে মিলে বিপুল অঙ্কের অর্থ আত্মসাৎ করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ছাড়া কোম্পানিটিতে একাধিক গ্রুপ তৈরি হয়েছে।
এ বিষয়ে রূপালী লাইফ ইনস্যুরেন্সের সচিব আমিরুল ইসলাম বলেন, ‘চেয়ারম্যান নিয়মিত অফিস করেন না, প্রয়োজনে আসেন, আবার চলে যান।’ তবে ডিএমডি জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘চেয়ারম্যান পলাতক। তিনি পর্ষদ সভা করেন জুমে। মিটিংয়ের নামে টাকা নিচ্ছেন। তিনি অফিসে না আসায় মিটিংয়ের নামে গ্রাহকদের অর্থ লোপাট চলছে।’
ন্যাশনাল লাইফ ইনস্যুরেন্সের সিইও কাজিম উদ্দিন পরিস্থিতি নিয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, দৈনন্দিন কাজ চলছে। এক বছর ধরে চেয়ারম্যান অনুপস্থিত থাকায় গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে না।
পলাতক পরিচালকেরা পলাতক হিসেবে বিবেচিত পরিচালকদের মধ্যে রয়েছেন ইসলামী ইনস্যুরেন্সের চেয়ারম্যান সাঈদ খোকনের স্ত্রী ফারহানা সাঈদ, মা শাহানা হানিফ, মেয়ে রাইফা নানজিবা সাঈদ, আয়েশা নিভরাশ সাঈদ এবং ফাতিমা নওশিন মাইয়া সাঈদ অরোরা ও শ্যালিকা রিজওয়ানা হোসেন।
সন্ধানী লাইফ ইনস্যুরেন্স ও পূরবী জেনারেল ইনস্যুরেন্স এই দুই বিমা কোম্পানি আওয়ামী লীগ নেতা হাজী মকবুল হোসেনের। তাঁর মৃত্যুর পর সন্ধানী লাইফ ইনস্যুরেন্সের উপদেষ্টা হন সাবেক বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু। পরিচালক হিসেবে রয়েছেন তাঁর মা গোলাম ফাতেমা তাহেরা খানম। এ ছাড়া পূরবী জেনারেলের উদ্যোক্তা পরিচালক হিসেবে রয়েছেন সাবেক এমপি নজরুল ইসলাম চৌধুরী। তাঁরা সবাই পলাতক।
পলাতক রয়েছেন আলফা লাইফের পরিচালক ইন্তেখাবুল হামিদ অপুসহ আরও তিনজন। অপু সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুর ভাই।
সাবেক দুই মন্ত্রী গাজী গোলাম দস্তগীর ও ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের কোম্পানি যমুনা লাইফ ইনস্যুরেন্স। তাঁরা উভয়ে কারাগারে। কোম্পানির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন গাজী গ্রুপের সাবেক কর্মকর্তা বদরুল আলম খান। পলাতক পরিচালকদের মধ্যে রয়েছেন মোশাররফ হোসেনের স্ত্রী আয়েশা সুলতানা, মেয়ে মেহেনাজ তাবাসসুম, ছেলের বউ ফারহানা ফেরদৌসি ইমতিয়াজ।
পলাতক রয়েছেন বেস্ট লাইফ ইনস্যুরেন্সের চেয়ারম্যান সাবেক এমপি আব্দুল হাফিজ মল্লিক ও পরিচালক ড. নাদিয়া বিনতে আমিন, ট্রাস্ট ইসলামী লাইফ ইনস্যুরেন্সের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান ভূঁইয়া মানিক।
পলাতক রয়েছেন সাবেক এমপি ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুনের এশিয়া ইনস্যুরেন্স পিএলসির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মোস্তফা হায়দার। সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামালের কোম্পানি এশিয়া প্যাসিফিক জেনারেল ইনস্যুরেন্স। তাঁর স্ত্রী কাশমেরী কামাল এর চেয়ারম্যান এবং মেয়ে নাফিসা কামাল পরিচালক ছিলেন। তাঁরা সবাই পলাতক।
সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের প্রতিষ্ঠান জনতা ইনস্যুরেন্স। এই কোম্পানির চেয়ারম্যান মন্ত্রীর মামা জাফরুল ইসলাম চৌধুরী, ভাইস প্রেসিডেন্ট তাঁর আত্মীয় ফারহানা জামান এবং তাঁর মেয়ে জেবা জামান পলাতক রয়েছেন। লক্ষ্মীপুরের সাবেক এমপি তাকাফুল ইসলামী লাইফের পরিচালক ড. আনোয়ার হোসেন খানও পলাতক।
ট্রাস্ট ইসলামী লাইফের সিইও মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন বলেন, ৫ আগস্টের পর থেকে চেয়ারম্যান দেশের বাইরে রয়েছেন। কিছুদিন ভার্চুয়াল মিটিং হয়েছে। কোম্পানির স্বার্থে সর্বশেষ সভায় নতুন চেয়ারম্যান নির্বাচন করা হয়েছে।
পলাতক রয়েছেন সাবেক এমপি নিটল ইনস্যুরেন্সের চেয়ারম্যান সেলিমা আহমাদ। সেলিমার পদে বসেছেন তাঁর ভাই এ কে এম মনিরুল হক। পলাতক রয়েছেন বেঙ্গল ইসলামী লাইফের পরিচালক সাবেক এমপি জেসমিন আখতার।
সব মিলিয়ে ১৯টি জীবনবিমা এবং ১৭টি সাধারণ বিমাসহ ৩৬টি প্রতিষ্ঠানের শতাধিক পরিচালক পলাতক রয়েছেন।
বিশেষজ্ঞ ও নিয়ন্ত্রক যা বলেন
বিমা বিশেষজ্ঞ ও চার্টার্ড লাইফ ইনস্যুরেন্সের সাবেক মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) এস এম জিয়াউল হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইডিআরএ রেগুলেটরি দুর্বলতার সুযোগ নিচ্ছে কোম্পানিগুলো। এর ফলে গ্রাহকেরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। আর বিমা খাত রুগ্ণ হচ্ছে।’
নিয়ন্ত্রক সংস্থা বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) পরামর্শক সাইফুন্নাহার সুমি বলেন, ‘জুমে পর্ষদ সভা করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ, এটা করা যাবে না। এখন পর্যন্ত কোনো কোম্পানির বিষয়ে অভিযোগ আসেনি, তাই বিষয়টি খতিয়ে দেখা হয়নি। নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে আমাদের কাজ বিমা কোম্পানির ওপর নজরদারি করা। কিন্তু লোকবলের অভাবে তা যথাযথভাবে করা সম্ভব হচ্ছে না। আবার অনিয়ম পেলেও কোম্পানির পর্ষদ পুনর্গঠন করা কিংবা নতুন বোর্ড গঠনের ক্ষমতা আইডিআরএর নেই।
মাহফুজুল ইসলাম, ঢাকা
অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে বিমা খাতের অবস্থা এমনিতেই বেহাল। সেই সংকটের মাত্রা আরও গভীর হয়েছে দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পরে বিমা খাতের প্রায় অর্ধেক কোম্পানির শতাধিক পরিচালক পলাতক কিংবা জেলে। তাঁদের অনুপস্থিতিতে অনিয়ম-নৈরাজ্যের জেরে প্রতিষ্ঠানগুলোর আর্থিক মেরুদণ্ড ভেঙে পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।
বিমা খাতের পলাতক ও কারাবন্দী কর্তাব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন ২৭ জন সাবেক মন্ত্রী, মেয়র ও সংসদ সদস্য (এমপি)। সশরীর উপস্থিত হতে না পারায় তাঁদের অনেকে নিয়মবহির্ভূতভাবে ভার্চুয়ালভাবে (অনলাইনে) পর্ষদ সভায় অংশগ্রহণ করছেন। নিয়মিত নিচ্ছেন বেতন-ভাতা ও বিভিন্ন খরচের অর্থ।
বিমা বিশ্লেষক ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, চেয়ারম্যান ও পরিচালকেরা মাসের পর মাস অনুপস্থিত থাকায় কোম্পানি ও গ্রাহকেরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। কোম্পানির কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। অনিয়ম ও দলাদলি জেঁকে বসেছে। বর্তমান পরিচালক, নির্বাহীসহ প্রভাবশালী ব্যক্তিরা বিভিন্ন খাতে খরচের নামে অর্থ লোপাটের ছক কষছেন। এতে গ্রাহকদের বিমার অর্থের দাবি পূরণ না হওয়ার শঙ্কা বাড়ছে। শেয়ারহোল্ডাররা বঞ্চিত হচ্ছেন মুনাফা থেকে।
বিমা খাতের পর্যবেক্ষকেরা বলছেন, সংশ্লিষ্ট কোম্পানির নিরীক্ষকেরা এসব অসংগতি তুলে ধরছেন না। নিয়ন্ত্রক সংস্থাও দায়িত্বশীল আচরণ করছে না। যথাযথ নজরদারি না থাকায় কোম্পানিগুলোর শীর্ষ নির্বাহীরা লাগামছাড়া হয়ে উঠছেন।
সরকারি দুটিসহ দেশে ৮২টি বিমা কোম্পানি রয়েছে। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেই ৬০টি বিমা কোম্পানিকে লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, এর একটি বড় অংশ অনুমোদন পেয়েছিল রাজনৈতিক বিবেচনায়। ৫ আগস্টের পটপরিবর্তনের আগে ৭০টি কোম্পানির নিয়ন্ত্রণ ছিল আওয়ামী লীগের নেতাদের হাতে। এসব কোম্পানির পরিচালক ও চেয়ারম্যান পদে ছিলেন তাঁরা। পটপরিবর্তনের পর এর মধ্যে ৬০টি কোম্পানির পরিচালক বা চেয়ারম্যানরা পদ ছেড়ে দিয়ে আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব বা ব্যবসায়িক অংশীদারদের বসিয়ে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ ঠিক রেখেছেন। তবে ১০ কোম্পানির চেয়ারম্যানসহ ৩৬টি কোম্পানির ১১২ জন পরিচালক এখনো পদ ছাড়েননি। তাঁরা দেশ-বিদেশে পলাতক বা কারাগারে থাকলেও পদে বহাল রয়েছেন।
পলাতক চেয়ারম্যান সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সূত্রে জানা গেছে, এক বছরের বেশি সময় ধরে পলাতক রয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ইসলামী ইনস্যুরেন্স বাংলাদেশের চেয়ারম্যান সাঈদ খোকন। একইভাবে পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চাচা সোনার বাংলা ইনস্যুরেন্সের চেয়ারম্যান শেখ কবির হোসেন। আরও পলাতক রয়েছেন সাবেক এমপি ও রূপালী লাইফের মাহফুজুর রহমান, আলফা ইসলামী লাইফের আলমগীর শামসুল আলামিন, এনআরবি ইসলামী লাইফের কিবরিয়া গোলাম মোহাম্মদ, ট্রাস্ট ইসলামী লাইফের আতাউর রহমান ভূঁইয়া মানিক এবং সন্ধানী লাইফ ইনস্যুরেন্স ও পূরবী জেনারেল ইনস্যুরেন্স লিমিটেডের চেয়ারম্যান মজিবুল ইসলাম পান্না। সাবেক এমপি ও ন্যাশনাল লাইফ ইনস্যুরেন্সের চেয়ারম্যান মোরশেদ আলম কারাগারে।
কর্মকর্তারা বলছেন, কোম্পানিগুলোতে চেয়ারম্যানরা সশরীর উপস্থিত না হলেও তাঁদের গাড়ির খরচ, জ্বালানি খরচ এমনকি চালকের বেতন দেওয়া হচ্ছে প্রতিষ্ঠান থেকে। নেওয়া হচ্ছে মোবাইল ফোনের বিলও। একই অবস্থা পরিচালকদের ক্ষেত্রেও।
সম্প্রতি রাজধানীর পুরানা পল্টনের ডিআর টাওয়ারে সাঈদ খোকনের ইসলামী ইনস্যুরেন্সের প্রধান কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, অভ্যর্থনা কক্ষে একের পর এক আসছেন বিমার দাবি না মেটা গ্রাহক। তাঁদের কাউকে বলা হচ্ছে, কাগজপত্র দিয়ে যেতে, কর্মকর্তাদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে। কাউকে বলা হচ্ছে, এখন কোম্পানির অবস্থা ভালো নেই, টাকা পেতে দেরি হবে। এসব কথা শুনে গ্রাহকেরা ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।
সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে এ বিষয়ে জানতে ইসলামী ইনস্যুরেন্সের সিইওর সঙ্গে দেখা করতে চাইলে অভ্যর্থনা কক্ষ থেকে বলা হয়, ‘স্যার কারও সঙ্গে কথা বলেন না।’ জনসংযোগ বিভাগের প্রধান বলেন, ‘৫ আগস্টের পর থেকে চেয়ারম্যান ও পরিচালক স্যার নিয়মিত আসছেন না। তাই সব কাজ করা যাচ্ছে না।’
পরে ফোনে কথা হলে সিইও আব্দুল খালেক মিয়া বলেন, ‘চেয়ারম্যান পলাতক। তিনি জুমে (অনলাইনে) পর্ষদের সভা করেন। কোম্পানি নিয়ন্ত্রণ করছেন ভাইস চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ। আর কিছু বলতে পারব না।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক কর্মকর্তা বলেন, কোম্পানিতে এখন দুটি গ্রুপ হয়েছে। পৃথক গ্রুপ দুটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন ভাইস চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ ও সিইও আব্দুল খালেক মিয়া। দুর্নীতির অভিযোগে সম্প্রতি সিইওকে চাকরিচ্যুত করেছেন ভাইস চেয়ারম্যান। তবে নিয়মবহির্ভূতভাবে হওয়ায় এই চাকরিচ্যুতির আবেদন নামঞ্জুর করেছে বিমার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)।
রূপালী লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানির চেয়ারম্যান চট্টগ্রামের সন্দ্বীপের সাবেক এমপি মাহফুজুর রহমান। তিনি পলাতক থাকায় সিইও গোলাম কিবরিয়া কয়েকজন পরিচালকের সঙ্গে মিলে বিপুল অঙ্কের অর্থ আত্মসাৎ করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ছাড়া কোম্পানিটিতে একাধিক গ্রুপ তৈরি হয়েছে।
এ বিষয়ে রূপালী লাইফ ইনস্যুরেন্সের সচিব আমিরুল ইসলাম বলেন, ‘চেয়ারম্যান নিয়মিত অফিস করেন না, প্রয়োজনে আসেন, আবার চলে যান।’ তবে ডিএমডি জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘চেয়ারম্যান পলাতক। তিনি পর্ষদ সভা করেন জুমে। মিটিংয়ের নামে টাকা নিচ্ছেন। তিনি অফিসে না আসায় মিটিংয়ের নামে গ্রাহকদের অর্থ লোপাট চলছে।’
ন্যাশনাল লাইফ ইনস্যুরেন্সের সিইও কাজিম উদ্দিন পরিস্থিতি নিয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, দৈনন্দিন কাজ চলছে। এক বছর ধরে চেয়ারম্যান অনুপস্থিত থাকায় গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে না।
পলাতক পরিচালকেরা পলাতক হিসেবে বিবেচিত পরিচালকদের মধ্যে রয়েছেন ইসলামী ইনস্যুরেন্সের চেয়ারম্যান সাঈদ খোকনের স্ত্রী ফারহানা সাঈদ, মা শাহানা হানিফ, মেয়ে রাইফা নানজিবা সাঈদ, আয়েশা নিভরাশ সাঈদ এবং ফাতিমা নওশিন মাইয়া সাঈদ অরোরা ও শ্যালিকা রিজওয়ানা হোসেন।
সন্ধানী লাইফ ইনস্যুরেন্স ও পূরবী জেনারেল ইনস্যুরেন্স এই দুই বিমা কোম্পানি আওয়ামী লীগ নেতা হাজী মকবুল হোসেনের। তাঁর মৃত্যুর পর সন্ধানী লাইফ ইনস্যুরেন্সের উপদেষ্টা হন সাবেক বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু। পরিচালক হিসেবে রয়েছেন তাঁর মা গোলাম ফাতেমা তাহেরা খানম। এ ছাড়া পূরবী জেনারেলের উদ্যোক্তা পরিচালক হিসেবে রয়েছেন সাবেক এমপি নজরুল ইসলাম চৌধুরী। তাঁরা সবাই পলাতক।
পলাতক রয়েছেন আলফা লাইফের পরিচালক ইন্তেখাবুল হামিদ অপুসহ আরও তিনজন। অপু সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুর ভাই।
সাবেক দুই মন্ত্রী গাজী গোলাম দস্তগীর ও ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের কোম্পানি যমুনা লাইফ ইনস্যুরেন্স। তাঁরা উভয়ে কারাগারে। কোম্পানির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন গাজী গ্রুপের সাবেক কর্মকর্তা বদরুল আলম খান। পলাতক পরিচালকদের মধ্যে রয়েছেন মোশাররফ হোসেনের স্ত্রী আয়েশা সুলতানা, মেয়ে মেহেনাজ তাবাসসুম, ছেলের বউ ফারহানা ফেরদৌসি ইমতিয়াজ।
পলাতক রয়েছেন বেস্ট লাইফ ইনস্যুরেন্সের চেয়ারম্যান সাবেক এমপি আব্দুল হাফিজ মল্লিক ও পরিচালক ড. নাদিয়া বিনতে আমিন, ট্রাস্ট ইসলামী লাইফ ইনস্যুরেন্সের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান ভূঁইয়া মানিক।
পলাতক রয়েছেন সাবেক এমপি ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুনের এশিয়া ইনস্যুরেন্স পিএলসির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মোস্তফা হায়দার। সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামালের কোম্পানি এশিয়া প্যাসিফিক জেনারেল ইনস্যুরেন্স। তাঁর স্ত্রী কাশমেরী কামাল এর চেয়ারম্যান এবং মেয়ে নাফিসা কামাল পরিচালক ছিলেন। তাঁরা সবাই পলাতক।
সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের প্রতিষ্ঠান জনতা ইনস্যুরেন্স। এই কোম্পানির চেয়ারম্যান মন্ত্রীর মামা জাফরুল ইসলাম চৌধুরী, ভাইস প্রেসিডেন্ট তাঁর আত্মীয় ফারহানা জামান এবং তাঁর মেয়ে জেবা জামান পলাতক রয়েছেন। লক্ষ্মীপুরের সাবেক এমপি তাকাফুল ইসলামী লাইফের পরিচালক ড. আনোয়ার হোসেন খানও পলাতক।
ট্রাস্ট ইসলামী লাইফের সিইও মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন বলেন, ৫ আগস্টের পর থেকে চেয়ারম্যান দেশের বাইরে রয়েছেন। কিছুদিন ভার্চুয়াল মিটিং হয়েছে। কোম্পানির স্বার্থে সর্বশেষ সভায় নতুন চেয়ারম্যান নির্বাচন করা হয়েছে।
পলাতক রয়েছেন সাবেক এমপি নিটল ইনস্যুরেন্সের চেয়ারম্যান সেলিমা আহমাদ। সেলিমার পদে বসেছেন তাঁর ভাই এ কে এম মনিরুল হক। পলাতক রয়েছেন বেঙ্গল ইসলামী লাইফের পরিচালক সাবেক এমপি জেসমিন আখতার।
সব মিলিয়ে ১৯টি জীবনবিমা এবং ১৭টি সাধারণ বিমাসহ ৩৬টি প্রতিষ্ঠানের শতাধিক পরিচালক পলাতক রয়েছেন।
বিশেষজ্ঞ ও নিয়ন্ত্রক যা বলেন
বিমা বিশেষজ্ঞ ও চার্টার্ড লাইফ ইনস্যুরেন্সের সাবেক মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) এস এম জিয়াউল হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইডিআরএ রেগুলেটরি দুর্বলতার সুযোগ নিচ্ছে কোম্পানিগুলো। এর ফলে গ্রাহকেরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। আর বিমা খাত রুগ্ণ হচ্ছে।’
নিয়ন্ত্রক সংস্থা বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) পরামর্শক সাইফুন্নাহার সুমি বলেন, ‘জুমে পর্ষদ সভা করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ, এটা করা যাবে না। এখন পর্যন্ত কোনো কোম্পানির বিষয়ে অভিযোগ আসেনি, তাই বিষয়টি খতিয়ে দেখা হয়নি। নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে আমাদের কাজ বিমা কোম্পানির ওপর নজরদারি করা। কিন্তু লোকবলের অভাবে তা যথাযথভাবে করা সম্ভব হচ্ছে না। আবার অনিয়ম পেলেও কোম্পানির পর্ষদ পুনর্গঠন করা কিংবা নতুন বোর্ড গঠনের ক্ষমতা আইডিআরএর নেই।
অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে বিমা খাতের অবস্থা এমনিতেই বেহাল। সেই সংকটের মাত্রা আরও গভীর হয়েছে দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পরে বিমা খাতের প্রায় অর্ধেক কোম্পানির শতাধিক পরিচালক পলাতক কিংবা জেলে। তাঁদের অনুপস্থিতিতে অনিয়ম-নৈরাজ্যের জেরে প্রতিষ্ঠানগুলোর আর্থিক মেরুদণ্ড ভেঙে পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।
বিমা খাতের পলাতক ও কারাবন্দী কর্তাব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন ২৭ জন সাবেক মন্ত্রী, মেয়র ও সংসদ সদস্য (এমপি)। সশরীর উপস্থিত হতে না পারায় তাঁদের অনেকে নিয়মবহির্ভূতভাবে ভার্চুয়ালভাবে (অনলাইনে) পর্ষদ সভায় অংশগ্রহণ করছেন। নিয়মিত নিচ্ছেন বেতন-ভাতা ও বিভিন্ন খরচের অর্থ।
বিমা বিশ্লেষক ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, চেয়ারম্যান ও পরিচালকেরা মাসের পর মাস অনুপস্থিত থাকায় কোম্পানি ও গ্রাহকেরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। কোম্পানির কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। অনিয়ম ও দলাদলি জেঁকে বসেছে। বর্তমান পরিচালক, নির্বাহীসহ প্রভাবশালী ব্যক্তিরা বিভিন্ন খাতে খরচের নামে অর্থ লোপাটের ছক কষছেন। এতে গ্রাহকদের বিমার অর্থের দাবি পূরণ না হওয়ার শঙ্কা বাড়ছে। শেয়ারহোল্ডাররা বঞ্চিত হচ্ছেন মুনাফা থেকে।
বিমা খাতের পর্যবেক্ষকেরা বলছেন, সংশ্লিষ্ট কোম্পানির নিরীক্ষকেরা এসব অসংগতি তুলে ধরছেন না। নিয়ন্ত্রক সংস্থাও দায়িত্বশীল আচরণ করছে না। যথাযথ নজরদারি না থাকায় কোম্পানিগুলোর শীর্ষ নির্বাহীরা লাগামছাড়া হয়ে উঠছেন।
সরকারি দুটিসহ দেশে ৮২টি বিমা কোম্পানি রয়েছে। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেই ৬০টি বিমা কোম্পানিকে লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, এর একটি বড় অংশ অনুমোদন পেয়েছিল রাজনৈতিক বিবেচনায়। ৫ আগস্টের পটপরিবর্তনের আগে ৭০টি কোম্পানির নিয়ন্ত্রণ ছিল আওয়ামী লীগের নেতাদের হাতে। এসব কোম্পানির পরিচালক ও চেয়ারম্যান পদে ছিলেন তাঁরা। পটপরিবর্তনের পর এর মধ্যে ৬০টি কোম্পানির পরিচালক বা চেয়ারম্যানরা পদ ছেড়ে দিয়ে আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব বা ব্যবসায়িক অংশীদারদের বসিয়ে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ ঠিক রেখেছেন। তবে ১০ কোম্পানির চেয়ারম্যানসহ ৩৬টি কোম্পানির ১১২ জন পরিচালক এখনো পদ ছাড়েননি। তাঁরা দেশ-বিদেশে পলাতক বা কারাগারে থাকলেও পদে বহাল রয়েছেন।
পলাতক চেয়ারম্যান সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সূত্রে জানা গেছে, এক বছরের বেশি সময় ধরে পলাতক রয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ইসলামী ইনস্যুরেন্স বাংলাদেশের চেয়ারম্যান সাঈদ খোকন। একইভাবে পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চাচা সোনার বাংলা ইনস্যুরেন্সের চেয়ারম্যান শেখ কবির হোসেন। আরও পলাতক রয়েছেন সাবেক এমপি ও রূপালী লাইফের মাহফুজুর রহমান, আলফা ইসলামী লাইফের আলমগীর শামসুল আলামিন, এনআরবি ইসলামী লাইফের কিবরিয়া গোলাম মোহাম্মদ, ট্রাস্ট ইসলামী লাইফের আতাউর রহমান ভূঁইয়া মানিক এবং সন্ধানী লাইফ ইনস্যুরেন্স ও পূরবী জেনারেল ইনস্যুরেন্স লিমিটেডের চেয়ারম্যান মজিবুল ইসলাম পান্না। সাবেক এমপি ও ন্যাশনাল লাইফ ইনস্যুরেন্সের চেয়ারম্যান মোরশেদ আলম কারাগারে।
কর্মকর্তারা বলছেন, কোম্পানিগুলোতে চেয়ারম্যানরা সশরীর উপস্থিত না হলেও তাঁদের গাড়ির খরচ, জ্বালানি খরচ এমনকি চালকের বেতন দেওয়া হচ্ছে প্রতিষ্ঠান থেকে। নেওয়া হচ্ছে মোবাইল ফোনের বিলও। একই অবস্থা পরিচালকদের ক্ষেত্রেও।
সম্প্রতি রাজধানীর পুরানা পল্টনের ডিআর টাওয়ারে সাঈদ খোকনের ইসলামী ইনস্যুরেন্সের প্রধান কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, অভ্যর্থনা কক্ষে একের পর এক আসছেন বিমার দাবি না মেটা গ্রাহক। তাঁদের কাউকে বলা হচ্ছে, কাগজপত্র দিয়ে যেতে, কর্মকর্তাদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে। কাউকে বলা হচ্ছে, এখন কোম্পানির অবস্থা ভালো নেই, টাকা পেতে দেরি হবে। এসব কথা শুনে গ্রাহকেরা ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।
সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে এ বিষয়ে জানতে ইসলামী ইনস্যুরেন্সের সিইওর সঙ্গে দেখা করতে চাইলে অভ্যর্থনা কক্ষ থেকে বলা হয়, ‘স্যার কারও সঙ্গে কথা বলেন না।’ জনসংযোগ বিভাগের প্রধান বলেন, ‘৫ আগস্টের পর থেকে চেয়ারম্যান ও পরিচালক স্যার নিয়মিত আসছেন না। তাই সব কাজ করা যাচ্ছে না।’
পরে ফোনে কথা হলে সিইও আব্দুল খালেক মিয়া বলেন, ‘চেয়ারম্যান পলাতক। তিনি জুমে (অনলাইনে) পর্ষদের সভা করেন। কোম্পানি নিয়ন্ত্রণ করছেন ভাইস চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ। আর কিছু বলতে পারব না।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক কর্মকর্তা বলেন, কোম্পানিতে এখন দুটি গ্রুপ হয়েছে। পৃথক গ্রুপ দুটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন ভাইস চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ ও সিইও আব্দুল খালেক মিয়া। দুর্নীতির অভিযোগে সম্প্রতি সিইওকে চাকরিচ্যুত করেছেন ভাইস চেয়ারম্যান। তবে নিয়মবহির্ভূতভাবে হওয়ায় এই চাকরিচ্যুতির আবেদন নামঞ্জুর করেছে বিমার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)।
রূপালী লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানির চেয়ারম্যান চট্টগ্রামের সন্দ্বীপের সাবেক এমপি মাহফুজুর রহমান। তিনি পলাতক থাকায় সিইও গোলাম কিবরিয়া কয়েকজন পরিচালকের সঙ্গে মিলে বিপুল অঙ্কের অর্থ আত্মসাৎ করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ছাড়া কোম্পানিটিতে একাধিক গ্রুপ তৈরি হয়েছে।
এ বিষয়ে রূপালী লাইফ ইনস্যুরেন্সের সচিব আমিরুল ইসলাম বলেন, ‘চেয়ারম্যান নিয়মিত অফিস করেন না, প্রয়োজনে আসেন, আবার চলে যান।’ তবে ডিএমডি জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘চেয়ারম্যান পলাতক। তিনি পর্ষদ সভা করেন জুমে। মিটিংয়ের নামে টাকা নিচ্ছেন। তিনি অফিসে না আসায় মিটিংয়ের নামে গ্রাহকদের অর্থ লোপাট চলছে।’
ন্যাশনাল লাইফ ইনস্যুরেন্সের সিইও কাজিম উদ্দিন পরিস্থিতি নিয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, দৈনন্দিন কাজ চলছে। এক বছর ধরে চেয়ারম্যান অনুপস্থিত থাকায় গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে না।
পলাতক পরিচালকেরা পলাতক হিসেবে বিবেচিত পরিচালকদের মধ্যে রয়েছেন ইসলামী ইনস্যুরেন্সের চেয়ারম্যান সাঈদ খোকনের স্ত্রী ফারহানা সাঈদ, মা শাহানা হানিফ, মেয়ে রাইফা নানজিবা সাঈদ, আয়েশা নিভরাশ সাঈদ এবং ফাতিমা নওশিন মাইয়া সাঈদ অরোরা ও শ্যালিকা রিজওয়ানা হোসেন।
সন্ধানী লাইফ ইনস্যুরেন্স ও পূরবী জেনারেল ইনস্যুরেন্স এই দুই বিমা কোম্পানি আওয়ামী লীগ নেতা হাজী মকবুল হোসেনের। তাঁর মৃত্যুর পর সন্ধানী লাইফ ইনস্যুরেন্সের উপদেষ্টা হন সাবেক বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু। পরিচালক হিসেবে রয়েছেন তাঁর মা গোলাম ফাতেমা তাহেরা খানম। এ ছাড়া পূরবী জেনারেলের উদ্যোক্তা পরিচালক হিসেবে রয়েছেন সাবেক এমপি নজরুল ইসলাম চৌধুরী। তাঁরা সবাই পলাতক।
পলাতক রয়েছেন আলফা লাইফের পরিচালক ইন্তেখাবুল হামিদ অপুসহ আরও তিনজন। অপু সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুর ভাই।
সাবেক দুই মন্ত্রী গাজী গোলাম দস্তগীর ও ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের কোম্পানি যমুনা লাইফ ইনস্যুরেন্স। তাঁরা উভয়ে কারাগারে। কোম্পানির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন গাজী গ্রুপের সাবেক কর্মকর্তা বদরুল আলম খান। পলাতক পরিচালকদের মধ্যে রয়েছেন মোশাররফ হোসেনের স্ত্রী আয়েশা সুলতানা, মেয়ে মেহেনাজ তাবাসসুম, ছেলের বউ ফারহানা ফেরদৌসি ইমতিয়াজ।
পলাতক রয়েছেন বেস্ট লাইফ ইনস্যুরেন্সের চেয়ারম্যান সাবেক এমপি আব্দুল হাফিজ মল্লিক ও পরিচালক ড. নাদিয়া বিনতে আমিন, ট্রাস্ট ইসলামী লাইফ ইনস্যুরেন্সের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান ভূঁইয়া মানিক।
পলাতক রয়েছেন সাবেক এমপি ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুনের এশিয়া ইনস্যুরেন্স পিএলসির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মোস্তফা হায়দার। সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামালের কোম্পানি এশিয়া প্যাসিফিক জেনারেল ইনস্যুরেন্স। তাঁর স্ত্রী কাশমেরী কামাল এর চেয়ারম্যান এবং মেয়ে নাফিসা কামাল পরিচালক ছিলেন। তাঁরা সবাই পলাতক।
সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের প্রতিষ্ঠান জনতা ইনস্যুরেন্স। এই কোম্পানির চেয়ারম্যান মন্ত্রীর মামা জাফরুল ইসলাম চৌধুরী, ভাইস প্রেসিডেন্ট তাঁর আত্মীয় ফারহানা জামান এবং তাঁর মেয়ে জেবা জামান পলাতক রয়েছেন। লক্ষ্মীপুরের সাবেক এমপি তাকাফুল ইসলামী লাইফের পরিচালক ড. আনোয়ার হোসেন খানও পলাতক।
ট্রাস্ট ইসলামী লাইফের সিইও মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন বলেন, ৫ আগস্টের পর থেকে চেয়ারম্যান দেশের বাইরে রয়েছেন। কিছুদিন ভার্চুয়াল মিটিং হয়েছে। কোম্পানির স্বার্থে সর্বশেষ সভায় নতুন চেয়ারম্যান নির্বাচন করা হয়েছে।
পলাতক রয়েছেন সাবেক এমপি নিটল ইনস্যুরেন্সের চেয়ারম্যান সেলিমা আহমাদ। সেলিমার পদে বসেছেন তাঁর ভাই এ কে এম মনিরুল হক। পলাতক রয়েছেন বেঙ্গল ইসলামী লাইফের পরিচালক সাবেক এমপি জেসমিন আখতার।
সব মিলিয়ে ১৯টি জীবনবিমা এবং ১৭টি সাধারণ বিমাসহ ৩৬টি প্রতিষ্ঠানের শতাধিক পরিচালক পলাতক রয়েছেন।
বিশেষজ্ঞ ও নিয়ন্ত্রক যা বলেন
বিমা বিশেষজ্ঞ ও চার্টার্ড লাইফ ইনস্যুরেন্সের সাবেক মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) এস এম জিয়াউল হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইডিআরএ রেগুলেটরি দুর্বলতার সুযোগ নিচ্ছে কোম্পানিগুলো। এর ফলে গ্রাহকেরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। আর বিমা খাত রুগ্ণ হচ্ছে।’
নিয়ন্ত্রক সংস্থা বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) পরামর্শক সাইফুন্নাহার সুমি বলেন, ‘জুমে পর্ষদ সভা করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ, এটা করা যাবে না। এখন পর্যন্ত কোনো কোম্পানির বিষয়ে অভিযোগ আসেনি, তাই বিষয়টি খতিয়ে দেখা হয়নি। নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে আমাদের কাজ বিমা কোম্পানির ওপর নজরদারি করা। কিন্তু লোকবলের অভাবে তা যথাযথভাবে করা সম্ভব হচ্ছে না। আবার অনিয়ম পেলেও কোম্পানির পর্ষদ পুনর্গঠন করা কিংবা নতুন বোর্ড গঠনের ক্ষমতা আইডিআরএর নেই।
প্রথম প্রস্তাবে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ জিটুজি চুক্তির মাধ্যমে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে ২০২৬ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত পরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানির জন্য নীতিগত অনুমোদন চায়। সরকার থেকে সরকার (জিটুজি) পদ্ধতিতে ২০২৬ সালের জন্য পরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি করা হবে।
৩ ঘণ্টা আগেসংশ্লিষ্ট ইউনিটগুলোতে সহকারী কমিশনার ও উপকমিশনার পর্যায়ের কর্মকর্তারা প্রভাতি, দিবা ও নৈশ—এই তিন শিফটে দায়িত্ব পালন করবেন। পাশাপাশি, পর্যাপ্ত সংখ্যক রাজস্ব কর্মকর্তা, সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা, সাব-ইন্সপেক্টর ও সিপাই নিয়োজিত রেখে শুল্ক কার্যক্রম নির্বিঘ্ন রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
৭ ঘণ্টা আগেশিক্ষার খরচ মেটাতে কিংবা একটু একটু করে নিজের টাকায় কিছু করার স্বপ্নে খুদে শিক্ষার্থীরা এখন ব্যাংকের সঙ্গী। আগে যেখানে সঞ্চয়ের মানে ছিল মাটির ব্যাংকে কয়েন জমানো, এখন সেটি ডিজিটাল পর্দায় ব্যালেন্স হিসাবে দেখা যায়। দেশের ব্যাংকগুলো এখন শিশু-কিশোরদের সেই হাতেখড়ির জায়গা হয়ে উঠেছে।
১৫ ঘণ্টা আগেস্কুল ব্যাংকিং মূলত শিক্ষার্থীদের ছোটবেলা থেকে সঞ্চয়ী করে তোলার একটি উদ্যোগ। এটি প্রথম শুরু হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রে, ১৮৭০ সালের শেষ দিকে। বাংলাদেশে আনুষ্ঠানিকভাবে ২০১১ সালে এটি চালু হয়।
১৫ ঘণ্টা আগেবাসস, ঢাকা
সরকার থেকে সরকার (জিটুজি) পদ্ধতিতে ২০২৬ সালের জন্য পরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি করা হবে।
অর্থনৈতিক বিষয়-সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদের কমিটি আজ বুধবার দুটি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব নীতিগতভাবে অনুমোদনের জন্য সুপারিশ করেছে। এর মধ্যে আরেকটি হলো স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন ই-পাসপোর্ট প্রকল্পের উপকরণ সংগ্রহ।
চলতি বছরের ৩৪তম অর্থনৈতিকবিষয়ক কমিটির সভায় এসব সুপারিশ করা হয়। আজ অনুষ্ঠিত এ সভায় ভার্চুয়ালি সভাপতিত্ব করেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
প্রথম প্রস্তাবে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ জিটুজি চুক্তির মাধ্যমে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে ২০২৬ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত পরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানির জন্য নীতিগত অনুমোদন চায়।
কমিটি প্রস্তাবটি পর্যালোচনা করার পর নীতিগতভাবে অনুমোদনের জন্য সুপারিশ করে। দেশে জ্বালানি তেলের চাহিদা মেটাতে স্থিতিশীল সরবরাহ নিশ্চিত করার গুরুত্ব বিবেচনায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
দ্বিতীয় প্রস্তাবটি আসে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে। এটি ‘বাংলাদেশে ই-পাসপোর্ট ও স্বয়ংক্রিয় সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপনা প্রবর্তন’ প্রকল্পের আওতায়।
প্রস্তাব অনুযায়ী ১ কোটি ই-পাসপোর্ট কাঁচামাল সংগ্রহ করা হবে। এর মধ্যে জরুরি প্রয়োজনে ৫০ লাখ কাঁচামাল বইয়ে রূপান্তর করা যাবে। এ ছাড়া ৫৭ লাখ ই-পাসপোর্ট বই ও সংশ্লিষ্ট প্রশিক্ষণ প্যাকেজ সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে সংগ্রহ করা হবে।
বিস্তারিত আলোচনার পর কমিটি প্রস্তাবটি নীতিগত অনুমোদনের জন্য সুপারিশ করেছে। কমিটি উল্লেখ করে, ই-পাসপোর্ট বিতরণ অব্যাহত রাখা এবং সীমান্ত ব্যবস্থাপনার দক্ষতা বাড়ানোর জন্য এই প্রকল্প কৌশলগতভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
সরকার থেকে সরকার (জিটুজি) পদ্ধতিতে ২০২৬ সালের জন্য পরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি করা হবে।
অর্থনৈতিক বিষয়-সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদের কমিটি আজ বুধবার দুটি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব নীতিগতভাবে অনুমোদনের জন্য সুপারিশ করেছে। এর মধ্যে আরেকটি হলো স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন ই-পাসপোর্ট প্রকল্পের উপকরণ সংগ্রহ।
চলতি বছরের ৩৪তম অর্থনৈতিকবিষয়ক কমিটির সভায় এসব সুপারিশ করা হয়। আজ অনুষ্ঠিত এ সভায় ভার্চুয়ালি সভাপতিত্ব করেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
প্রথম প্রস্তাবে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ জিটুজি চুক্তির মাধ্যমে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে ২০২৬ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত পরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানির জন্য নীতিগত অনুমোদন চায়।
কমিটি প্রস্তাবটি পর্যালোচনা করার পর নীতিগতভাবে অনুমোদনের জন্য সুপারিশ করে। দেশে জ্বালানি তেলের চাহিদা মেটাতে স্থিতিশীল সরবরাহ নিশ্চিত করার গুরুত্ব বিবেচনায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
দ্বিতীয় প্রস্তাবটি আসে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে। এটি ‘বাংলাদেশে ই-পাসপোর্ট ও স্বয়ংক্রিয় সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপনা প্রবর্তন’ প্রকল্পের আওতায়।
প্রস্তাব অনুযায়ী ১ কোটি ই-পাসপোর্ট কাঁচামাল সংগ্রহ করা হবে। এর মধ্যে জরুরি প্রয়োজনে ৫০ লাখ কাঁচামাল বইয়ে রূপান্তর করা যাবে। এ ছাড়া ৫৭ লাখ ই-পাসপোর্ট বই ও সংশ্লিষ্ট প্রশিক্ষণ প্যাকেজ সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে সংগ্রহ করা হবে।
বিস্তারিত আলোচনার পর কমিটি প্রস্তাবটি নীতিগত অনুমোদনের জন্য সুপারিশ করেছে। কমিটি উল্লেখ করে, ই-পাসপোর্ট বিতরণ অব্যাহত রাখা এবং সীমান্ত ব্যবস্থাপনার দক্ষতা বাড়ানোর জন্য এই প্রকল্প কৌশলগতভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে বিমা খাতের অবস্থা এমনিতেই বেহাল। সেই সংকটের মাত্রা আরও গভীর হয়েছে দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পরে বিমা খাতের প্রায় অর্ধেক কোম্পানির শতাধিক পরিচালক পলাতক কিংবা জেলে। তাঁদের অনুপস্থিতিতে অনিয়ম-নৈরাজ্যের জেরে প্রতিষ্ঠানগুলোর আর্থিক মেরুদণ্ড ভেঙে পড়ার ঝ
০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫সংশ্লিষ্ট ইউনিটগুলোতে সহকারী কমিশনার ও উপকমিশনার পর্যায়ের কর্মকর্তারা প্রভাতি, দিবা ও নৈশ—এই তিন শিফটে দায়িত্ব পালন করবেন। পাশাপাশি, পর্যাপ্ত সংখ্যক রাজস্ব কর্মকর্তা, সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা, সাব-ইন্সপেক্টর ও সিপাই নিয়োজিত রেখে শুল্ক কার্যক্রম নির্বিঘ্ন রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
৭ ঘণ্টা আগেশিক্ষার খরচ মেটাতে কিংবা একটু একটু করে নিজের টাকায় কিছু করার স্বপ্নে খুদে শিক্ষার্থীরা এখন ব্যাংকের সঙ্গী। আগে যেখানে সঞ্চয়ের মানে ছিল মাটির ব্যাংকে কয়েন জমানো, এখন সেটি ডিজিটাল পর্দায় ব্যালেন্স হিসাবে দেখা যায়। দেশের ব্যাংকগুলো এখন শিশু-কিশোরদের সেই হাতেখড়ির জায়গা হয়ে উঠেছে।
১৫ ঘণ্টা আগেস্কুল ব্যাংকিং মূলত শিক্ষার্থীদের ছোটবেলা থেকে সঞ্চয়ী করে তোলার একটি উদ্যোগ। এটি প্রথম শুরু হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রে, ১৮৭০ সালের শেষ দিকে। বাংলাদেশে আনুষ্ঠানিকভাবে ২০১১ সালে এটি চালু হয়।
১৫ ঘণ্টা আগেবিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা
হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো কমপ্লেক্সে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পর আমদানি, রপ্তানি ও ব্যবসায়িক কার্যক্রম সচল রাখতে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে ঢাকা কাস্টম হাউস। দুর্যোগ-পরবর্তী সময়ে বাণিজ্য স্বাভাবিক রাখতে বিমানবন্দরের অধিক্ষেত্রাধীন এয়ারফ্রেইট ইউনিট ও এক্সপ্রেস সার্ভিস ইউনিটে ২৪ ঘণ্টা তিন শিফটে কার্যক্রম পরিচালনার জন্য নির্দেশ জারি করা হয়েছে।
ঢাকা কাস্টম হাউসের কমিশনারের নির্দেশক্রমে জয়েন্ট কমিশনার সুমন দাশ স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট ইউনিটগুলোতে সহকারী কমিশনার ও উপকমিশনার পর্যায়ের কর্মকর্তারা প্রভাতি, দিবা ও নৈশ—এই তিন শিফটে দায়িত্ব পালন করবেন। পাশাপাশি, পর্যাপ্ত সংখ্যক রাজস্ব কর্মকর্তা, সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা, সাব-ইন্সপেক্টর ও সিপাই নিয়োজিত রেখে শুল্ক কার্যক্রম নির্বিঘ্ন রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ঢাকা কাস্টম হাউসের একটি সূত্র জানায়, ২৪ ঘণ্টা কার্যক্রম চালুর ফলে বিমানবন্দর এলাকায় পণ্য খালাস, পরীক্ষা ও ছাড়পত্র প্রক্রিয়া আরও সহজ ও দ্রুততর হবে। এতে আমদানিকারক, রপ্তানিকারক ও সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টদের জন্যও বাড়তি সুবিধা তৈরি হবে।
ঢাকা কাস্টম হাউস সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি খায়রুল আলম ভুইয়া মিঠু বলেন, ‘এই উদ্যোগকে আমরা স্বাগত জানিয়েছি। এতে সবাই উপকৃত হবে এবং পণ্য খালাসের প্রক্রিয়া আরও গতিশীল হবে।’
হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো কমপ্লেক্সে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পর আমদানি, রপ্তানি ও ব্যবসায়িক কার্যক্রম সচল রাখতে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে ঢাকা কাস্টম হাউস। দুর্যোগ-পরবর্তী সময়ে বাণিজ্য স্বাভাবিক রাখতে বিমানবন্দরের অধিক্ষেত্রাধীন এয়ারফ্রেইট ইউনিট ও এক্সপ্রেস সার্ভিস ইউনিটে ২৪ ঘণ্টা তিন শিফটে কার্যক্রম পরিচালনার জন্য নির্দেশ জারি করা হয়েছে।
ঢাকা কাস্টম হাউসের কমিশনারের নির্দেশক্রমে জয়েন্ট কমিশনার সুমন দাশ স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট ইউনিটগুলোতে সহকারী কমিশনার ও উপকমিশনার পর্যায়ের কর্মকর্তারা প্রভাতি, দিবা ও নৈশ—এই তিন শিফটে দায়িত্ব পালন করবেন। পাশাপাশি, পর্যাপ্ত সংখ্যক রাজস্ব কর্মকর্তা, সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা, সাব-ইন্সপেক্টর ও সিপাই নিয়োজিত রেখে শুল্ক কার্যক্রম নির্বিঘ্ন রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ঢাকা কাস্টম হাউসের একটি সূত্র জানায়, ২৪ ঘণ্টা কার্যক্রম চালুর ফলে বিমানবন্দর এলাকায় পণ্য খালাস, পরীক্ষা ও ছাড়পত্র প্রক্রিয়া আরও সহজ ও দ্রুততর হবে। এতে আমদানিকারক, রপ্তানিকারক ও সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টদের জন্যও বাড়তি সুবিধা তৈরি হবে।
ঢাকা কাস্টম হাউস সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি খায়রুল আলম ভুইয়া মিঠু বলেন, ‘এই উদ্যোগকে আমরা স্বাগত জানিয়েছি। এতে সবাই উপকৃত হবে এবং পণ্য খালাসের প্রক্রিয়া আরও গতিশীল হবে।’
অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে বিমা খাতের অবস্থা এমনিতেই বেহাল। সেই সংকটের মাত্রা আরও গভীর হয়েছে দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পরে বিমা খাতের প্রায় অর্ধেক কোম্পানির শতাধিক পরিচালক পলাতক কিংবা জেলে। তাঁদের অনুপস্থিতিতে অনিয়ম-নৈরাজ্যের জেরে প্রতিষ্ঠানগুলোর আর্থিক মেরুদণ্ড ভেঙে পড়ার ঝ
০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫প্রথম প্রস্তাবে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ জিটুজি চুক্তির মাধ্যমে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে ২০২৬ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত পরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানির জন্য নীতিগত অনুমোদন চায়। সরকার থেকে সরকার (জিটুজি) পদ্ধতিতে ২০২৬ সালের জন্য পরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি করা হবে।
৩ ঘণ্টা আগেশিক্ষার খরচ মেটাতে কিংবা একটু একটু করে নিজের টাকায় কিছু করার স্বপ্নে খুদে শিক্ষার্থীরা এখন ব্যাংকের সঙ্গী। আগে যেখানে সঞ্চয়ের মানে ছিল মাটির ব্যাংকে কয়েন জমানো, এখন সেটি ডিজিটাল পর্দায় ব্যালেন্স হিসাবে দেখা যায়। দেশের ব্যাংকগুলো এখন শিশু-কিশোরদের সেই হাতেখড়ির জায়গা হয়ে উঠেছে।
১৫ ঘণ্টা আগেস্কুল ব্যাংকিং মূলত শিক্ষার্থীদের ছোটবেলা থেকে সঞ্চয়ী করে তোলার একটি উদ্যোগ। এটি প্রথম শুরু হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রে, ১৮৭০ সালের শেষ দিকে। বাংলাদেশে আনুষ্ঠানিকভাবে ২০১১ সালে এটি চালু হয়।
১৫ ঘণ্টা আগেজয়নাল আবেদীন খান, ঢাকা
শিক্ষার খরচ মেটাতে কিংবা একটু একটু করে নিজের টাকায় কিছু করার স্বপ্নে খুদে শিক্ষার্থীরা এখন ব্যাংকের সঙ্গী। আগে যেখানে সঞ্চয়ের মানে ছিল মাটির ব্যাংকে কয়েন জমানো, এখন সেটি ডিজিটাল পর্দায় ব্যালেন্স হিসাবে দেখা যায়। দেশের ব্যাংকগুলো এখন শিশু-কিশোরদের সেই হাতেখড়ির জায়গা হয়ে উঠেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্যে দেখা যায়, চলতি বছরের জুলাই পর্যন্ত স্কুল ব্যাংকিংয়ের আওতায় হিসাবের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৫ লাখ ১৫ হাজার ২৫টি। এর মধ্যে ২৩ লাখ ছেলে, আর ২২ লাখের বেশি মেয়ে শিক্ষার্থীর নামে হিসাব খোলা হয়েছে। গ্রামে এই উদ্যোগের বিস্তার আরও বড়—২৩ লাখ ৯১ হাজার শিক্ষার্থীর হিসাব গ্রামাঞ্চলে, শহরে ২১ লাখ ২৩ হাজার।
এখন পর্যন্ত এসব খুদে সঞ্চয়কারীর ব্যাংকে জমা স্থিতি দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ১০৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে শহরের শিক্ষার্থীদের ১ হাজার ৪৪৫ কোটি, গ্রামের শিক্ষার্থীদের ৬৬৩ কোটি টাকা। অর্থাৎ সংখ্যা অনুযায়ী গ্রাম এগিয়ে থাকলেও সঞ্চয়ের অঙ্কে পিছিয়ে তারা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, এই পুরো উদ্যোগই মূলত আর্থিক অন্তর্ভুক্তির একটি নতুন দরজা খুলে দিয়েছে। করোনাকালে কিছুটা ভাটা পড়লেও এখন আবার উল্টো স্রোত—স্কুল ব্যাংকিং দ্রুত জনপ্রিয় হচ্ছে। এর পেছনে বড় কারণ, ব্যাংকগুলোর ডিজিটাল সেবা। এখন অনেক স্কুলেই ব্যাংক প্রতিনিধি গিয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ সঞ্চয় হিসাব খুলে দেন। তাতে স্কুলের ফি, বৃত্তি বা উপবৃত্তির টাকা সহজে জমা বা উত্তোলন করা যায়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর এ বিষয়ে বলেন, ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনীতির কোনো জাদুকরি যন্ত্র নেই। প্রত্যেক স্কুলশিক্ষার্থীর ব্যাংক হিসাব নিশ্চিত করা গেলে সেটাই হবে শিক্ষায় অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনীতি গড়ার ভিত্তি।’
২০১১ সালে মাত্র ১০০ টাকা জমা দিয়ে ১১ থেকে ১৭ বছর বয়সীদের জন্য শুরু হয় স্কুল ব্যাংকিং কার্যক্রম। সে সময় কয়েকটি ব্যাংকে সীমিতভাবে হিসাব খোলা হতো। এখন দেশের ৬১ ব্যাংকের মধ্যে ৫৯টিতেই রয়েছে স্কুল ব্যাংকিং এবং এর ৭১ শতাংশ হিসাব বেসরকারি ব্যাংকে। শুধু বেসরকারি ব্যাংকগুলোতেই শিক্ষার্থীদের আমানত পৌঁছেছে ১ হাজার ৭২৮ কোটিতে। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর ভাগে এসেছে ৩৮০ কোটি টাকা।
সবচেয়ে সক্রিয় ব্যাংকগুলোর তালিকায় রয়েছে ডাচ্-বাংলা, ইসলামী, অগ্রণী, সোনালী ও রূপালী ব্যাংক। বিশেষ করে ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের ডিজিটাল স্কুল ব্যাংকিং সেবা সবচেয়ে বেশি শিক্ষার্থীর নাগাল পেয়েছে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. মইনুল ইসলাম বলেন, ‘এই উদ্যোগ শুধু সঞ্চয় নয়, শিক্ষার্থীদের অর্থনীতির ধারায় যুক্ত করছে। এতে অভিভাবকের ওপর চাপ কমে, আর ব্যাংকও দীর্ঘমেয়াদি আমানতের ভিত্তি পায়। এই খুদে আমানতই পরোক্ষভাবে জাতীয় বিনিয়োগের জ্বালানি।’
অন্যদিকে, জনতা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মজিবর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘স্কুল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে শিশুরা এখন থেকেই টাকা ব্যবস্থাপনার কৌশল শিখছে। এতে সঞ্চয়ের সঙ্গে শিক্ষাবিমা, বৃত্তি গ্রহণ বা স্কুল ফি পরিশোধের সুবিধাও পাচ্ছে তারা।’
মতিঝিল সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয়ের ছাত্র আইমান জানায়, ‘উৎসবে পাওয়া টাকা আর টিফিনের কিছু অংশ ব্যাংকে রাখি। পরীক্ষার সময় সেই টাকা তুলে খরচ করেছি। ভালো লাগছে; কারণ, বাবার ওপর চাপ পড়েনি।’
বাংলাদেশ ব্যাংক এখন এই উদ্যোগকে আরও বিস্তৃত করতে মাঠে নেমেছে। চলতি বছরের মার্চে একটি নির্দেশনা জারি করে বলা হয়, প্রতিটি ব্যাংকের শাখা অন্তত একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্কুল ব্যাংকিং চালু করবে। এতে একদিকে শিক্ষার্থীরা ব্যাংকিং জগতে হাতে-কলমে অভিজ্ঞতা পাবে, অন্যদিকে দেশের চার লাখের বেশি স্কুল হয়ে উঠবে আর্থিক শিক্ষার মাঠ।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বলেন, ‘এই উদ্যোগে সবাই লাভবান হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা সঞ্চয় করছে, অভিভাবকেরা স্বস্তি পাচ্ছেন, ব্যাংকও আমানত বাড়াচ্ছে। সব মিলিয়ে অর্থনীতিতে খুদে শিক্ষার্থীরাও এখন অবদান রাখছে।’
শিক্ষার খরচ মেটাতে কিংবা একটু একটু করে নিজের টাকায় কিছু করার স্বপ্নে খুদে শিক্ষার্থীরা এখন ব্যাংকের সঙ্গী। আগে যেখানে সঞ্চয়ের মানে ছিল মাটির ব্যাংকে কয়েন জমানো, এখন সেটি ডিজিটাল পর্দায় ব্যালেন্স হিসাবে দেখা যায়। দেশের ব্যাংকগুলো এখন শিশু-কিশোরদের সেই হাতেখড়ির জায়গা হয়ে উঠেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্যে দেখা যায়, চলতি বছরের জুলাই পর্যন্ত স্কুল ব্যাংকিংয়ের আওতায় হিসাবের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৫ লাখ ১৫ হাজার ২৫টি। এর মধ্যে ২৩ লাখ ছেলে, আর ২২ লাখের বেশি মেয়ে শিক্ষার্থীর নামে হিসাব খোলা হয়েছে। গ্রামে এই উদ্যোগের বিস্তার আরও বড়—২৩ লাখ ৯১ হাজার শিক্ষার্থীর হিসাব গ্রামাঞ্চলে, শহরে ২১ লাখ ২৩ হাজার।
এখন পর্যন্ত এসব খুদে সঞ্চয়কারীর ব্যাংকে জমা স্থিতি দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ১০৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে শহরের শিক্ষার্থীদের ১ হাজার ৪৪৫ কোটি, গ্রামের শিক্ষার্থীদের ৬৬৩ কোটি টাকা। অর্থাৎ সংখ্যা অনুযায়ী গ্রাম এগিয়ে থাকলেও সঞ্চয়ের অঙ্কে পিছিয়ে তারা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, এই পুরো উদ্যোগই মূলত আর্থিক অন্তর্ভুক্তির একটি নতুন দরজা খুলে দিয়েছে। করোনাকালে কিছুটা ভাটা পড়লেও এখন আবার উল্টো স্রোত—স্কুল ব্যাংকিং দ্রুত জনপ্রিয় হচ্ছে। এর পেছনে বড় কারণ, ব্যাংকগুলোর ডিজিটাল সেবা। এখন অনেক স্কুলেই ব্যাংক প্রতিনিধি গিয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ সঞ্চয় হিসাব খুলে দেন। তাতে স্কুলের ফি, বৃত্তি বা উপবৃত্তির টাকা সহজে জমা বা উত্তোলন করা যায়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর এ বিষয়ে বলেন, ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনীতির কোনো জাদুকরি যন্ত্র নেই। প্রত্যেক স্কুলশিক্ষার্থীর ব্যাংক হিসাব নিশ্চিত করা গেলে সেটাই হবে শিক্ষায় অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনীতি গড়ার ভিত্তি।’
২০১১ সালে মাত্র ১০০ টাকা জমা দিয়ে ১১ থেকে ১৭ বছর বয়সীদের জন্য শুরু হয় স্কুল ব্যাংকিং কার্যক্রম। সে সময় কয়েকটি ব্যাংকে সীমিতভাবে হিসাব খোলা হতো। এখন দেশের ৬১ ব্যাংকের মধ্যে ৫৯টিতেই রয়েছে স্কুল ব্যাংকিং এবং এর ৭১ শতাংশ হিসাব বেসরকারি ব্যাংকে। শুধু বেসরকারি ব্যাংকগুলোতেই শিক্ষার্থীদের আমানত পৌঁছেছে ১ হাজার ৭২৮ কোটিতে। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর ভাগে এসেছে ৩৮০ কোটি টাকা।
সবচেয়ে সক্রিয় ব্যাংকগুলোর তালিকায় রয়েছে ডাচ্-বাংলা, ইসলামী, অগ্রণী, সোনালী ও রূপালী ব্যাংক। বিশেষ করে ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের ডিজিটাল স্কুল ব্যাংকিং সেবা সবচেয়ে বেশি শিক্ষার্থীর নাগাল পেয়েছে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. মইনুল ইসলাম বলেন, ‘এই উদ্যোগ শুধু সঞ্চয় নয়, শিক্ষার্থীদের অর্থনীতির ধারায় যুক্ত করছে। এতে অভিভাবকের ওপর চাপ কমে, আর ব্যাংকও দীর্ঘমেয়াদি আমানতের ভিত্তি পায়। এই খুদে আমানতই পরোক্ষভাবে জাতীয় বিনিয়োগের জ্বালানি।’
অন্যদিকে, জনতা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মজিবর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘স্কুল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে শিশুরা এখন থেকেই টাকা ব্যবস্থাপনার কৌশল শিখছে। এতে সঞ্চয়ের সঙ্গে শিক্ষাবিমা, বৃত্তি গ্রহণ বা স্কুল ফি পরিশোধের সুবিধাও পাচ্ছে তারা।’
মতিঝিল সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয়ের ছাত্র আইমান জানায়, ‘উৎসবে পাওয়া টাকা আর টিফিনের কিছু অংশ ব্যাংকে রাখি। পরীক্ষার সময় সেই টাকা তুলে খরচ করেছি। ভালো লাগছে; কারণ, বাবার ওপর চাপ পড়েনি।’
বাংলাদেশ ব্যাংক এখন এই উদ্যোগকে আরও বিস্তৃত করতে মাঠে নেমেছে। চলতি বছরের মার্চে একটি নির্দেশনা জারি করে বলা হয়, প্রতিটি ব্যাংকের শাখা অন্তত একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্কুল ব্যাংকিং চালু করবে। এতে একদিকে শিক্ষার্থীরা ব্যাংকিং জগতে হাতে-কলমে অভিজ্ঞতা পাবে, অন্যদিকে দেশের চার লাখের বেশি স্কুল হয়ে উঠবে আর্থিক শিক্ষার মাঠ।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বলেন, ‘এই উদ্যোগে সবাই লাভবান হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা সঞ্চয় করছে, অভিভাবকেরা স্বস্তি পাচ্ছেন, ব্যাংকও আমানত বাড়াচ্ছে। সব মিলিয়ে অর্থনীতিতে খুদে শিক্ষার্থীরাও এখন অবদান রাখছে।’
অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে বিমা খাতের অবস্থা এমনিতেই বেহাল। সেই সংকটের মাত্রা আরও গভীর হয়েছে দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পরে বিমা খাতের প্রায় অর্ধেক কোম্পানির শতাধিক পরিচালক পলাতক কিংবা জেলে। তাঁদের অনুপস্থিতিতে অনিয়ম-নৈরাজ্যের জেরে প্রতিষ্ঠানগুলোর আর্থিক মেরুদণ্ড ভেঙে পড়ার ঝ
০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫প্রথম প্রস্তাবে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ জিটুজি চুক্তির মাধ্যমে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে ২০২৬ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত পরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানির জন্য নীতিগত অনুমোদন চায়। সরকার থেকে সরকার (জিটুজি) পদ্ধতিতে ২০২৬ সালের জন্য পরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি করা হবে।
৩ ঘণ্টা আগেসংশ্লিষ্ট ইউনিটগুলোতে সহকারী কমিশনার ও উপকমিশনার পর্যায়ের কর্মকর্তারা প্রভাতি, দিবা ও নৈশ—এই তিন শিফটে দায়িত্ব পালন করবেন। পাশাপাশি, পর্যাপ্ত সংখ্যক রাজস্ব কর্মকর্তা, সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা, সাব-ইন্সপেক্টর ও সিপাই নিয়োজিত রেখে শুল্ক কার্যক্রম নির্বিঘ্ন রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
৭ ঘণ্টা আগেস্কুল ব্যাংকিং মূলত শিক্ষার্থীদের ছোটবেলা থেকে সঞ্চয়ী করে তোলার একটি উদ্যোগ। এটি প্রথম শুরু হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রে, ১৮৭০ সালের শেষ দিকে। বাংলাদেশে আনুষ্ঠানিকভাবে ২০১১ সালে এটি চালু হয়।
১৫ ঘণ্টা আগেসাক্ষাৎকার: এম. শামসুল আরেফিন
আজকের পত্রিকা ডেস্ক
আজকের পত্রিকা: স্কুল ব্যাংকিংয়ের অগ্রযাত্রা কীভাবে শুরু হয়?
এম. শামসুল আরেফিন: স্কুল ব্যাংকিং মূলত শিক্ষার্থীদের ছোটবেলা থেকে সঞ্চয়ী করে তোলার একটি উদ্যোগ। এটি প্রথম শুরু হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রে, ১৮৭০ সালের শেষ দিকে। বাংলাদেশে আনুষ্ঠানিকভাবে ২০১১ সালে এটি চালু হয়।
আজকের পত্রিকা: স্কুল ব্যাংকিংয়ে এনসিসি ব্যাংকের শেয়ার কত?
এম. শামসুল আরেফিন: চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এনসিসি ব্যাংকে প্রায় ৩০ হাজার স্কুল ব্যাংকিং হিসাব রয়েছে। প্রতিনিয়ত এ সংখ্যা বেড়ে চলেছে।
আজকের পত্রিকা: বয়সের সীমা কি কোনো অন্তরায়?
এম. শামসুল আরেফিন: মোটেও না। এটা বরং বাড়তি সুযোগ। ১৮ বছরের কম বয়সী শিক্ষার্থীরা অভিভাবকদের সহায়তা নিয়ে হিসাব খুলতে পারছে। বড়দের অ্যাকাউন্টে যেসব বাধ্যবাধকতা রয়েছে, তার কোনোটাই এখানে নেই।
আজকের পত্রিকা: স্কুল ব্যাংকিংয়ের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে জানতে চাই।
এম. শামসুল আরেফিন: প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৪ কোটি। আর দেশে মোট স্কুল ব্যাংকিং হিসাবের সংখ্যা সব মিলিয়ে ৪৪ লাখের বেশি। স্কুল ব্যাংকিং হিসাবে জমা আছে ২ হাজার কোটি টাকার বেশি। এর সবই ছোট ছোট পকেটমানি কিংবা নাশতার টাকা কিংবা উপহারের টাকা। এটিএম কার্ড, ইন্টারনেট ব্যাংকিং এবং মোবাইল ব্যাংকিংয়ের সুবিধা নিয়ে শিক্ষার্থীরা শুধু নিজেদের নয়, দেশের অর্থনীতিতেও সরাসরি ভূমিকা রাখার সুযোগ পাচ্ছে।
আজকের পত্রিকা: শিক্ষার্থীদের জন্য আগামীতে আর কী কী সুবিধা থাকছে?
এম. শামসুল আরেফিন: এনসিসি ব্যাংক ভবিষ্যতে ‘ইয়ংস্টার ম্যাক্সিমাস’ বা শিক্ষার্থীদের স্থায়ী আমানতকে (এফডিআর) আরও নমনীয় ও বৈচিত্র্যময় মেয়াদে রাখার সুযোগ দেবে। এ ছাড়া অ্যাপের মাধ্যমে ঘরে বসেই হিসাব খোলা যাবে।
আজকের পত্রিকা: স্কুল ব্যাংকিং নিয়ে আপনার ভাবনা কী?
এম. শামসুল আরেফিন: স্কুল ব্যাংকিং শুধু আর্থিক পণ্য বা সেবা নয়, এটা ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করে তোলার অন্যতম হাতিয়ার। অর্থ ব্যবস্থাপনা, সঞ্চয়, বিনিয়োগ আর আধুনিক ব্যাংকিংয়ে অভ্যস্ততা এই শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ আর্থিক নিরাপত্তা ও সফলতা নিশ্চিত করবে। বাংলাদেশের জন্য একটি টেকসই এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনীতি নির্মাণে যার কোনো বিকল্প নেই।
ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, এনসিসি ব্যাংক পিএলসি
আজকের পত্রিকা: স্কুল ব্যাংকিংয়ের অগ্রযাত্রা কীভাবে শুরু হয়?
এম. শামসুল আরেফিন: স্কুল ব্যাংকিং মূলত শিক্ষার্থীদের ছোটবেলা থেকে সঞ্চয়ী করে তোলার একটি উদ্যোগ। এটি প্রথম শুরু হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রে, ১৮৭০ সালের শেষ দিকে। বাংলাদেশে আনুষ্ঠানিকভাবে ২০১১ সালে এটি চালু হয়।
আজকের পত্রিকা: স্কুল ব্যাংকিংয়ে এনসিসি ব্যাংকের শেয়ার কত?
এম. শামসুল আরেফিন: চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এনসিসি ব্যাংকে প্রায় ৩০ হাজার স্কুল ব্যাংকিং হিসাব রয়েছে। প্রতিনিয়ত এ সংখ্যা বেড়ে চলেছে।
আজকের পত্রিকা: বয়সের সীমা কি কোনো অন্তরায়?
এম. শামসুল আরেফিন: মোটেও না। এটা বরং বাড়তি সুযোগ। ১৮ বছরের কম বয়সী শিক্ষার্থীরা অভিভাবকদের সহায়তা নিয়ে হিসাব খুলতে পারছে। বড়দের অ্যাকাউন্টে যেসব বাধ্যবাধকতা রয়েছে, তার কোনোটাই এখানে নেই।
আজকের পত্রিকা: স্কুল ব্যাংকিংয়ের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে জানতে চাই।
এম. শামসুল আরেফিন: প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৪ কোটি। আর দেশে মোট স্কুল ব্যাংকিং হিসাবের সংখ্যা সব মিলিয়ে ৪৪ লাখের বেশি। স্কুল ব্যাংকিং হিসাবে জমা আছে ২ হাজার কোটি টাকার বেশি। এর সবই ছোট ছোট পকেটমানি কিংবা নাশতার টাকা কিংবা উপহারের টাকা। এটিএম কার্ড, ইন্টারনেট ব্যাংকিং এবং মোবাইল ব্যাংকিংয়ের সুবিধা নিয়ে শিক্ষার্থীরা শুধু নিজেদের নয়, দেশের অর্থনীতিতেও সরাসরি ভূমিকা রাখার সুযোগ পাচ্ছে।
আজকের পত্রিকা: শিক্ষার্থীদের জন্য আগামীতে আর কী কী সুবিধা থাকছে?
এম. শামসুল আরেফিন: এনসিসি ব্যাংক ভবিষ্যতে ‘ইয়ংস্টার ম্যাক্সিমাস’ বা শিক্ষার্থীদের স্থায়ী আমানতকে (এফডিআর) আরও নমনীয় ও বৈচিত্র্যময় মেয়াদে রাখার সুযোগ দেবে। এ ছাড়া অ্যাপের মাধ্যমে ঘরে বসেই হিসাব খোলা যাবে।
আজকের পত্রিকা: স্কুল ব্যাংকিং নিয়ে আপনার ভাবনা কী?
এম. শামসুল আরেফিন: স্কুল ব্যাংকিং শুধু আর্থিক পণ্য বা সেবা নয়, এটা ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করে তোলার অন্যতম হাতিয়ার। অর্থ ব্যবস্থাপনা, সঞ্চয়, বিনিয়োগ আর আধুনিক ব্যাংকিংয়ে অভ্যস্ততা এই শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ আর্থিক নিরাপত্তা ও সফলতা নিশ্চিত করবে। বাংলাদেশের জন্য একটি টেকসই এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনীতি নির্মাণে যার কোনো বিকল্প নেই।
ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, এনসিসি ব্যাংক পিএলসি
অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে বিমা খাতের অবস্থা এমনিতেই বেহাল। সেই সংকটের মাত্রা আরও গভীর হয়েছে দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পরে বিমা খাতের প্রায় অর্ধেক কোম্পানির শতাধিক পরিচালক পলাতক কিংবা জেলে। তাঁদের অনুপস্থিতিতে অনিয়ম-নৈরাজ্যের জেরে প্রতিষ্ঠানগুলোর আর্থিক মেরুদণ্ড ভেঙে পড়ার ঝ
০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫প্রথম প্রস্তাবে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ জিটুজি চুক্তির মাধ্যমে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে ২০২৬ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত পরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানির জন্য নীতিগত অনুমোদন চায়। সরকার থেকে সরকার (জিটুজি) পদ্ধতিতে ২০২৬ সালের জন্য পরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি করা হবে।
৩ ঘণ্টা আগেসংশ্লিষ্ট ইউনিটগুলোতে সহকারী কমিশনার ও উপকমিশনার পর্যায়ের কর্মকর্তারা প্রভাতি, দিবা ও নৈশ—এই তিন শিফটে দায়িত্ব পালন করবেন। পাশাপাশি, পর্যাপ্ত সংখ্যক রাজস্ব কর্মকর্তা, সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা, সাব-ইন্সপেক্টর ও সিপাই নিয়োজিত রেখে শুল্ক কার্যক্রম নির্বিঘ্ন রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
৭ ঘণ্টা আগেশিক্ষার খরচ মেটাতে কিংবা একটু একটু করে নিজের টাকায় কিছু করার স্বপ্নে খুদে শিক্ষার্থীরা এখন ব্যাংকের সঙ্গী। আগে যেখানে সঞ্চয়ের মানে ছিল মাটির ব্যাংকে কয়েন জমানো, এখন সেটি ডিজিটাল পর্দায় ব্যালেন্স হিসাবে দেখা যায়। দেশের ব্যাংকগুলো এখন শিশু-কিশোরদের সেই হাতেখড়ির জায়গা হয়ে উঠেছে।
১৫ ঘণ্টা আগে