Ajker Patrika

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণই বাজেটের মূল চ্যালেঞ্জ

ফারুক মেহেদী
আপডেট : ০৯ জুন ২০২২, ১৭: ৪৪
মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণই বাজেটের মূল চ্যালেঞ্জ

বাজেটের মূল চ্যালেঞ্জ কী কী? 

ড. এম মশরুর রিয়াজ: কোভিডের কারণে সারা বিশ্বের মতো আমাদের অর্থনীতিও চাপে আছে। এবারের বাজেটটা যে পরিপ্রেক্ষিতে দেওয়া হচ্ছে, তার অন্যতম লক্ষ্য হওয়া উচিত মুদ্রাস্ফীতি ব্যবস্থাপনা করা। বৈশ্বিক মুদ্রাস্ফীতির কারণে আমাদেরও এই ধাক্কা সামলাতে হচ্ছে। আগামী ছয় থেকে আট মাস মুদ্রাস্ফীতি বিশ্বব্যাপী বেশ ঊর্ধ্বমুখী থাকবে। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অবস্থার কারণে খাদ্যপণ্য, বিশেষ করে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রী এবং জ্বালানি আমাদের চলতি বছরজুড়ে ভোগাবে। শিল্প খাতেও এই মূল্যস্ফীতির ঢেউ আছড়ে পড়বে। ফলে কাঁচামালের দাম বাড়বে, সেই সঙ্গে বাড়বে উৎপাদন খরচ। এই বিষয়গুলো ব্যবস্থাপনা করাই সরকারের জন্য অনেক চ্যালেঞ্জিং বিষয় হবে। 
স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য বাজেটে কী ব্যবস্থা চাইছেন?

ড. এম মশরুর রিয়াজ: মূল্যস্ফীতি বেড়ে যাওয়ার কারণে নিম্ন আয়ের মানুষ এমনিতেই চাপে আছে। এই বাজেটে নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য খাদ্যপণ্যে আর্থিক সহায়তামূলক প্যাকেজ থাকতে হবে। সরকার ভর্তুকি মূল্যে যে খাদ্যসামগ্রী দিচ্ছে, তার আকার আরও বাড়াতে হবে এবং একই সঙ্গে আর্থিক সাহায্য প্রকল্প স্বল্প সময়ের জন্য হলেও চলমান রাখতে হবে। 
জ্বালানি পণ্যে ভর্তুকি নিয়ে আপনার পরামর্শ কী?

ড. এম মশরুর রিয়াজ: কোভিড-পরবর্তী বিশ্ব অর্থনীতি একসঙ্গে সচল হওয়ার কারণে জ্বালানি তেলের মূল্য আন্তর্জাতিক বাজারে বেড়েই চলেছে। ভবিষ্যতে আরও বাড়তে পারে। বর্তমান বাস্তবতায় জ্বালানি তেল আমদানিতে সরকারের ব্যয় কয়েক গুণ বাড়বে। তবে সরকারের উচিত হবে না জ্বালানির মূল্য আগামী ছয় মাসে বাড়ানো। জ্বালানি পণ্যের দাম বাড়ালে এর প্রভাব পড়বে কৃষিজে পণ্য উৎপাদনে। কৃষি উৎপাদনে খরচ বেড়ে গেলে মূল্যস্ফীতি আরও বাড়বে। এই বাজেটে জ্বালানির জন্য বাড়তি ভর্তুকি সরকারকে দিতেই হবে। একই সঙ্গে সার, ডিজেলের ভর্তুকিও অব্যাহত থাকতে হবে। কৃষিপণ্যের সঙ্গে যুক্ত সংশ্লিষ্ট খাতগুলোর যাতে দাম না বাড়ে, এ বিষয়ে বিশেষ নজর দিতে হবে। 
ডলারের সংকট কাটানোর উপায় কী?

ড. এম মশরুর রিয়াজ: ডলারের দাম বাড়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে আমাদের শিল্পকারখানায় ব্যবহৃত কাঁচামালের প্রায় সবই আমদানি করতে হয়। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বড় একটা অংশ আমাদের আমদানি করতে হয়। পেট্রোলিয়াম পণ্য আমদানি করতে হয়। এই পণ্যগুলোর আমদানি ব্যয় বেড়ে যাওয়ার কারণে এবং করোনা-পরবর্তী অর্থনীতি সব জায়গায় একযোগে চালু হওয়ার কারণে আমাদের আমদানি ব্যয় বেড়ে গেছে। আমদানি ব্যয় যা বেড়েছে, তা আমাদের রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয় দিয়ে পেরে উঠছে না। তাই ডলারের দাম বাড়ছে। ডলারের চাহিদা কমাতে হলে সরকারকে বিলাসবহুল অপ্রচলিত পণ্যের ওপর আরও বেশি হারে ভ্যাট আরোপ করতে হবে। 
টাকার মান বাড়াতে ব্যাংকের সুদের হারে কি পরিবর্তন আনা দরকার?

ড. এম মশরুর রিয়াজ: টাকার মান ধরে রাখতে সরকারকে ব্যাংকের সুদের হার বাড়াতে হবে। বর্তমান ৯ শতাংশ সুদের হারের কারণে ডলারের বিপরীতে আমরা টাকার মান হারাচ্ছি। সুদের হার বাড়লে আন্তর্জাতিক বাজারে টাকা আরও বেশি আকর্ষণীয় হবে। এবারের বাজেটে রেমিট্যান্সের ওপর ২.৫ শতাংশ হারে দেওয়া প্রণোদনা কমিয়ে বরং ডলারের বিপরীতে টাকার মান বাড়ালে সুফল বেশি আসবে। রেমিট্যান্সে ভর্তুকি না দিয়ে নিম্ন আয়ের মানুষকে দিলে আরও বেশি ফলপ্রসূ হবে। রেমিট্যান্স পাঠানোর প্রক্রিয়া আরও বেশি সহজলভ্য করতে হবে, যাতে আমাদের ডলারের প্রবাহটা বাড়ে। 
রপ্তানি বাড়াতে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে?

ড. এম মশরুর রিয়াজ: আগামীতে উৎপাদন খরচ আরও বাড়তে পারে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে ইউরোপের অর্থনীতিতে মন্দা আসার আশঙ্কা আছে। ইউরোপে মন্দা দেখা দিলে আমাদের রপ্তানি আয় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা আছে। রপ্তানিশিল্পে জড়িত খাতকে আরও বেশি প্রণোদনা দিতে হবে। পোশাক রপ্তানির ওপর যেমন ১২ শতাংশ ট্যাক্স আরোপ করা হচ্ছে, তা সব রপ্তানি পণ্যের ক্ষেত্রে সমান করতে হবে। আমাদের রপ্তানি খাতকে সব দিক দিয়ে সাহায্য করতে হবে।

কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে কী পদক্ষেপ নেওয়া যায়?

ড. এম মশরুর রিয়াজ: কোভিডের কারণে অনেকের চাকরি চলে গেছে। আমরা কোভিড-পরবর্তী ভালোই করছিলাম। এর মধ্যে চলে এসেছে বৈশ্বিক টালমাটাল অবস্থা। কোভিডের কারণে যেসব জায়গায় কর্মসংস্থান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাদের সহায়তা দিতে হবে, যাতে তারা আবারও কর্মসংস্থান তৈরি করতে পারে।

জাতীয় বাজেট সম্পর্কে জানতে: এখানে ক্লিক করুন

এই সম্পর্কিত পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১৬ ডিসেম্বরের পর পুরোনো ও নতুন মোবাইল ফোনের রেজিস্ট্রেশন হবে যেভাবে

১৪ বছরের মেয়ে যেন নির্বিঘ্নে ভিডিও বানাতে পারে, তাই দেশ ছাড়ল ইনফ্লুয়েন্সার পরিবার

প্রতিদ্বন্দ্বীর ক্ষতি করতে বিদেশ থেকে সাইবার হামলা, কিছু আইএসপিকে শনাক্ত করেছে সরকার

সাপের ছোবল খেয়ে সাপসহ হাসপাতালে নারী

গাংনীতে কাঠমিস্ত্রির মরদেহ উদ্ধার

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

টিসিবির ফ্যামিলি কার্ড: স্বল্পমূল্যের পণ্যবঞ্চিত দেড় কোটির বেশি দরিদ্র মানুষ

  • এক বছরেও বিতরণ করা হয়নি বাতিল হওয়া সাড়ে ৩৮ লাখ ফ্যামিলি কার্ড
  • বেড়েছে পণ্যমূল্য ও দারিদ্র্যের হার, কমেছে উপকারভোগীর সংখ্যা
  • বাতিল কার্ড প্রতিস্থাপনে ধীরগতির কারণ স্থানীয় সরকার থেকে তথ্য পেতে দেরি হওয়া
রোকন উদ্দীন, ঢাকা
আপডেট : ৩১ অক্টোবর ২০২৫, ০৮: ১০
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলার বাসিন্দা আইয়ুব আলী একসময় রিকশা চালাতেন। শারীরিক সমস্যার কারণে এখন আর তা পারছেন না। বাড়ির কাছে বাজারে হকারি করে কিছু আয়-রোজগারের চেষ্টা করছেন; কিন্তু এতে তাঁর সংসার চলে না। বাধ্য হয়ে অন্যের বাড়িতে কাজ করেন তাঁর স্ত্রী। এমন অভাব-অনটনে থাকা পরিবার বারবার চেয়েও পায়নি স্বল্পমূল্য পণ্য ক্রয়ের ফ্যামিলি কার্ড। শুধু আইয়ুব আলীই নন, তাঁর মতো প্রায় দেড় কোটি দরিদ্র মানুষ স্বল্পমূল্যের পণ্য সুবিধা থেকে বঞ্চিত সাড়ে ৩৮ লাখ ফ্যামিলি কার্ড এখনো বিতরণ না হওয়ায়।

আইয়ুব আলী জানান, ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) প্রথম যখন ফ্যামিলি কার্ড বিতরণ শুরু করে তখন একটা কার্ড চেয়েছিলেন; কিন্তু পাননি। এখনো পাচ্ছেন না। তিনি বলেন, ‘আগের সরকারের সময় নেতাদের পিছে পিছে অনেক ঘুরেছি, মেম্বার-চেয়ারম্যানের কাছে গেছি, কার্ড পাইনি। এখন মেম্বার-চেয়ারম্যান নাই, কার কাছে যামু? নেতারা তাঁদের দলীয় লোকদের নামে কার্ড করতেই ব্যস্ত।’

পণ্য বিক্রিতে শৃঙ্খলা ফেরানো এবং প্রকৃত উপকারভোগী চিহ্নিত করে তাদের কাছে পণ্য পৌঁছানোর লক্ষ্যে ২০২২ সালে চালু করা হয় ‘ফ্যামিলি কার্ড’ ব্যবস্থা। লক্ষ্য ছিল ১ কোটি পরিবারকে এ কার্ডের আওতায় নিয়ে আসা। সে অনুযায়ী এক বছরের মধ্যে সরাসরি উপকারভোগী হিসেবে ১ কোটি পরিবারকে কার্ডও দেওয়া হয়। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় প্রতিটি কার্ডের বিপরীতে ৪ জন করে উপকারভোগী হিসাব করেছিল তখন। সে হিসাবে মোট ৪ কোটি দরিদ্র মানুষ এ কার্ডের আওতায় ছিল।

গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে এসব কার্ড বিতরণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। এই অভিযোগের ভিত্তিতে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর ফ্যামিলি কার্ড বিতরণে অনিয়ম খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নেয়। নানা যাচাই-বাছাই শেষে গত বছরের নভেম্বরের শুরুতে ৫৭ লাখ কার্ডকে স্মার্টকার্ডে রূপান্তর করা হয়। বাকি ৪৩ লাখ কার্ড বাতিল করে নতুন করে তথ্য চাওয়া হয় স্থানীয় সরকারের কাছে। চলতি বছরের জানুয়ারি মাস থেকে ৫৭ লাখ কার্ডের বিপরীতে পণ্য বিতরণ শুরু করে টিসিবি। টিসিবির সর্বশেষ হিসাবমতে, বর্তমানে ১ কোটি ফ্যামিলি কার্ডের মধ্যে সচল হয়েছে ৬১ লাখ ৫১ হাজার ২৩২টি। বাকি ৩৮ লাখ ৪৯ হাজার কার্ড এখনো অকার্যকর রয়েছে। প্রতিটি কার্ডের বিপরীতে ৪ জন করে হিসাবে করলে দেড় কোটি দরিদ্র মানুষ ফ্যামিলি কার্ডের সুবিধা থেকে বঞ্চিত।

বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টারের (পিপিআরসি) এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, ২০২২ সালে দেশে দারিদ্র্যের হার ছিল ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ। সে হিসাবে তখন দেশে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা ছিল ৩ কোটি ১৭ লাখ (জনসংখ্যা ১৭.৯৮ কোটি)।

গত চার বছরে দারিদ্র্যের হার বেড়ে ২৭ দশমিক ৯৩ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। দেশে বর্তমানে ৫ কোটি দরিদ্র মানুষ রয়েছে। বিপরীতে টিসিবির পণ্য পাচ্ছে ২ কোটি ৪৭ লাখ দরিদ্র মানুষ।

৪ কোটির মধ্যে বাকি ১ কোটি ৫৩ লাখ মানুষ সরকারের এ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

টিসিবির কর্মকর্তারা বলছেন, একই ফ্যামিলিতে দুটি কার্ড থাকা, একই ফোন নম্বরে একাধিক কার্ড থাকা, কার্ডধারীর ফোন নম্বর সচল না থাকা, কার্ডধারীর মৃত্যুসহ বিভিন্ন কারণে বাতিল করা হয়। এসব সমস্যা না থাকলে আগের তালিকা অনুসারেই হাতে লেখা কার্ডের পরিবর্তে স্মার্টকার্ড বিতরণ করা হয়েছে। পরে স্মার্টকার্ড বিতরণের পরও অনেকে কার্ড সংগ্রহ ও অ্যাকটিভ করেনি। সে কার্ডগুলোও বাতিল করা হয়।

টিসিবির মুখপাত্র ও উপপরিচালক (বাণিজ্যিক) মো. শাহাদত হোসেন বলেন, ‘বাতিল হওয়া কার্ডগুলো প্রতিস্থাপনে গতিধীর হওয়ার মূল কারণ স্থানীয় সরকার থেকে তথ্য পাওয়ায় ধীরগতি। উপজেলা, জেলা কিংবা সিটি করপোরেশন থেকে কার্ডধারীদের নাম, ফোন নম্বর ও বিস্তারিত তথ্য দিলে আমাদের কাজ কার্ড প্রিন্ট করে বিতরণ করছি এবং পরে এসব কার্ডের বিপরীতে পণ্য বরাদ্দ দিচ্ছি।

’আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে বাকি কার্ডগুলো প্রতিস্থাপন হবে করা বলে আশা করছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। তাঁরা বলছেন, ডিসি ও সিটি করপোরেশনের প্রশাসকদের সঙ্গে বাণিজ্য উপদেষ্টা এ বিষয়ে বৈঠক করে করে দ্রুত তথ্য দিতে নির্দেশনা দিয়েছেন উপদেষ্টা।

কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি এস এম নাজের হোসাইন মনে করছেন, টিসিবি দায়সারা কাজ করছে। তিনি বলেন, এটা ঠিক যে, অনেক জায়গায় চেয়ারম্যান-মেম্বার না থাকায় কিছু সমস্যা হচ্ছে। তাই বলে এক বছরেও ৩৮ লাখ কার্ড বিতরণ করতে পারেননি তাঁরা, তা হলে তাঁরা কী কাজ করেন? তাঁরা সঠিকভাবে মনিটরিং করলে, স্থানীয় সরকারকে চাপ দিলে এত দিনে কার্ড হয়ে যেত। এ কার্ডগুলো বিতরণ করা হলে এই দুর্মূল্যের বাজারে দেড় কোটি মানুষ স্বস্তি পেত।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১৬ ডিসেম্বরের পর পুরোনো ও নতুন মোবাইল ফোনের রেজিস্ট্রেশন হবে যেভাবে

১৪ বছরের মেয়ে যেন নির্বিঘ্নে ভিডিও বানাতে পারে, তাই দেশ ছাড়ল ইনফ্লুয়েন্সার পরিবার

প্রতিদ্বন্দ্বীর ক্ষতি করতে বিদেশ থেকে সাইবার হামলা, কিছু আইএসপিকে শনাক্ত করেছে সরকার

সাপের ছোবল খেয়ে সাপসহ হাসপাতালে নারী

গাংনীতে কাঠমিস্ত্রির মরদেহ উদ্ধার

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বিএসটিআইয়ের ল্যাব: আন্তর্জাতিক মানের অত্যাধুনিক পরীক্ষাগার বানাচ্ছে সরকার

  • প্রকল্পের ব্যয় ৮৫১ কোটি ৯৩ লাখ টাকা
  • রাসায়নিক ও খাদ্যপণ্যের পরীক্ষণ বাড়বে ৩৩ শতাংশ
  • ইলেকট্রিক্যাল ও টেক্সটাইল পণ্যের পরীক্ষণ বাড়বে ৫০%
মাহফুজুল ইসলাম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

দেশে উৎপাদিত ও আমদানি করা পণ্যের মান আন্তর্জাতিক স্তরে উন্নীত করতে অত্যাধুনিক পরীক্ষাগার তৈরি করছে সরকার। শিল্প মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে নেওয়া এ প্রকল্পের নাম ‘বিএসটিআইর পদার্থ (ফিজিক্যাল) ও রসায়ন (কেমিক্যাল) পরীক্ষণ ল্যাবরেটরির সম্প্রসারণ ও আধুনিকায়ন’।

শিল্প মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্পের মোট ব্যয় ৮৫১ কোটি ৯৩ লাখ, যার মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ৮০১ কোটি ৯৩ লাখ এবং বাকি ৫০ কোটি টাকা দেবে বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই)। ইতিমধ্যে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) প্রকল্পটি অনুমোদন দিয়েছে।

রাজধানীর তেজগাঁওয়ে স্থাপন করা হবে এই ল্যাব। তিন বছর মেয়াদি প্রকল্পটি চলতি বছরের জুলাইয়ে শুরু হয়েছে, শেষ হবে ২০২৮ সালের জুনে। ল্যাবটিতে আন্তর্জাতিক মান অনুসরণে পণ্যের মান পরীক্ষা করা হবে। প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে দেশীয় শিল্পে মানসম্মত পণ্য উৎপাদন বাড়বে, রপ্তানিযোগ্য পণ্যের পরিধিও বাড়বে। একই সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্যে ওজন ও পরিমাপের যথার্থতা নিশ্চিত করা যাবে।

শিল্প মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, প্রকল্পের আওতায় বেসমেন্টসহ ১৩ তলার একটি ভবন নির্মাণ করা হবে, আয়তন ১২ হাজার ৫১৯ বর্গমিটার। সেখানে নতুন করে ২০টি রসায়ন পরীক্ষাগার গড়ে তোলা হবে এবং বিদ্যমান ১৮টি আধুনিকায়ন করা হবে। একইভাবে ১৫টি নতুন পদার্থ পরীক্ষাগার স্থাপন ও ১৪টি পুরোনো ল্যাব সম্প্রসারণ করা হবে। মোট ৭৮১টি আধুনিক যন্ত্রপাতি কেনা হবে, যার মধ্যে রয়েছে ৫৪১টি রসায়ন ও ২৪০টি পদার্থ পরীক্ষার সরঞ্জাম। প্রকল্পের আওতায় পাঁচটি বিশেষ সিস্টেম ল্যাব (এসি, ফ্রিজ, ট্রান্সফরমার, এলইডি ল্যাম্প ও সোলার মডিউল) স্থাপন করা হবে। পাশাপাশি ১৫৭টি কম্পিউটার, ৩৩ ধরনের অফিস সরঞ্জাম ও ৭৩৬টি আসবাব কেনা হবে।

জানতে চাইলে শিল্পসচিব ওবায়দুর রহমান বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে দেশে উৎপাদিত ও আমদানি করা পণ্যের পরীক্ষণ সক্ষমতা বহুলাংশে বাড়বে। রাসায়নিক ও খাদ্যপণ্যের পরীক্ষণ সুবিধা ৩৩ শতাংশ এবং পদার্থ, ইলেকট্রিক্যাল ও টেক্সটাইল পণ্যের পরীক্ষণ সুবিধা ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পাবে।

বিএসটিআইয়ের মহাপরিচালক এস এম ফেরদৌস আলম বলেন, নতুন ল্যাব চালু হলে বছরে ২০ হাজারের বেশি রাসায়নিক ও খাদ্যপণ্যের এবং ১২ হাজারের বেশি পদার্থ ও টেক্সটাইল পণ্যের পরীক্ষণ রিপোর্ট দেওয়া সম্ভব হবে।

বর্তমানে বিএসটিআই ২৯৯টি বাধ্যতামূলক পণ্য পরীক্ষণ করে। এ ছাড়া বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আমদানি নীতি আদেশে থাকা ৭৯টি পণ্যও বিএসটিআই ল্যাবে পরীক্ষা করা হয়। ঢাকাসহ সাতটি বিভাগে সংস্থাটির কার্যালয় থাকলেও স্বল্পসংখ্যক কার্যালয় ও সীমিত সাংগঠনিক কাঠামোর মাধ্যমে সারা দেশে কার্যক্রম পরিচালনা কঠিন হয়ে পড়ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১৬ ডিসেম্বরের পর পুরোনো ও নতুন মোবাইল ফোনের রেজিস্ট্রেশন হবে যেভাবে

১৪ বছরের মেয়ে যেন নির্বিঘ্নে ভিডিও বানাতে পারে, তাই দেশ ছাড়ল ইনফ্লুয়েন্সার পরিবার

প্রতিদ্বন্দ্বীর ক্ষতি করতে বিদেশ থেকে সাইবার হামলা, কিছু আইএসপিকে শনাক্ত করেছে সরকার

সাপের ছোবল খেয়ে সাপসহ হাসপাতালে নারী

গাংনীতে কাঠমিস্ত্রির মরদেহ উদ্ধার

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

রাজধানীর কাঁচাবাজার: সবজির সঙ্গে কমেছে ডিম ও চিনির দাম

  • নিষেধাজ্ঞা উঠলেও বাজারে ইলিশ মিলছে কম
  • ডাল, তেলের বাজার স্থির বাড়তি দামেই
‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
রাজধানীর কাঁচাবাজারগুলোতে মিলছে শীতের আগাম সবজি। গতকাল মতিঝিল এজিবি কলোনি কাঁচাবাজারে। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাজধানীর কাঁচাবাজারগুলোতে মিলছে শীতের আগাম সবজি। গতকাল মতিঝিল এজিবি কলোনি কাঁচাবাজারে। ছবি: আজকের পত্রিকা

তিন থেকে চার মাস ভোগান্তির পর দুই সপ্তাহ ধরে কমছে সবজির দাম। চলতি সপ্তাহে সবজির সঙ্গে ক্রেতা-ভোক্তার জন্য স্বস্তি রয়েছে ডিম ও চিনির ক্ষেত্রেও। প্রতি ডজন ডিমের দাম ১০-১৫ টাকা কমেছে। চিনির দাম কমেছে কেজিপ্রতি আরও ৫ টাকা।

অন্যদিকে আহরণের নিষেধাজ্ঞা উঠে গেলেও বাজারে ইলিশের তেমন দেখা নেই, দামও কমেনি। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর সেগুনবাগিচা, রামপুরা, মানিকনগর ও মুগদাসহ কয়েকটি কাঁচাবাজার ঘুরে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

বিক্রেতারা বলছেন, একদিকে আবহাওয়া ভালো থাকায় ডিমের উৎপাদন বাড়ছে, অন্যদিকে সবজির দাম কমতে থাকায় ডিমের চাহিদাও কমছে। এ দুটি মিলিয়ে ডিমের দাম কমে এসেছে।

গতকাল বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি ডজন ফার্মের মুরগির বাদামি ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৩০-১৪০ টাকায়। সাদা ডিমের দাম ছিল ডজনপ্রতি আরও ৫ টাকা কম। গত সপ্তাহ পর্যন্ত বাদামি ডিম বিক্রি হয়েছে ১৪৫-১৫০ টাকা ডজন। সাদা ডিমের ডজন তখনো ৫ টাকা কম ছিল। পাড়ামহল্লার দোকানে খুচরায় প্রতি হালি ডিম বিক্রি হচ্ছে ৪৫-৪৬ টাকায়, সে হিসাবে দাম প্রতি ডজন ১৩৮ টাকা।

সেগুনবাগিচা বাজারের ডিম ব্যবসায়ী নুর এ আলম সিদ্দিকী বলেন, ‘যখন শাকসবজির দাম বেশি থাকে তখন নিম্ন আয়ের মানুষ ডিম দিয়েই একবেলার খাবার চালিয়ে নেন। এখন শাকসবজি ও আলুর দাম কম হওয়ায় ডিমের চাহিদা কমেছে। আবার বৃষ্টি-বাদল না থাকায় ও গরম কমে আসায় ডিমের উৎপাদনও বাড়ছে। এটাও দাম কমার আরেকটি কারণ।’

ডিমের দাম কম থাকলেও ফার্মের মুরগির দাম আগের মতোই ১৭০-১৮০ টাকা কেজিতে স্থির রয়েছে। এ ছাড়া গরু ও খাসির মাংসও বিক্রি হচ্ছে আগের দাম ৭০০-৭৫০ ও ১০০০-১১০০ টাকা কেজি করে।

এদিকে ইলিশ শিকারের ওপর নিষেধাজ্ঞা কয়েকদিন আগেই উঠে গেলেও বাজারে মহার্ঘ্য মাছটির প্রত্যাশামতো সরবরাহ নেই। অনেক ক্রেতাই ইলিশের আশায় মাছের বাজারে ঢুঁ মেরে হতাশ হয়েছেন। মালিবাগ বাজারে আসা কামাল উদ্দীন তাঁদেরই একজন। তিনি বললেন, ‘ভেবেছিলাম নিষেধাজ্ঞা শেষে ইলিশের সরবরাহ বাড়বে। কিন্তু বাজারে ইলিশের দেখা মিলছে না বললেই চলে, যা পাওয়া যাচ্ছে তা খুবই ছোট আকারের। বড় আকারের মাছ নেই।’

মালিবাগ বাজার ঘুরে দেখা গেল, মাছের ১০টি দোকানের মধ্যে মাত্র দুজন বিক্রেতা ছোট আকারের ইলিশ বিক্রি করছেন। তাঁরা ২৫০-৩০০ গ্রাম ওজনের এ মাছেরই দাম চাইলেন ৮০০-৯০০ টাকা কেজি। একই অবস্থা সেগুনবাগিচা বাজারে। সেখানে ৮ জন মাছ বিক্রেতার মধ্যে মাত্র একজনের কাছে ইলিশ পাওয়া গেল। তিনি ২০০-৩০০ গ্রাম ওজনের এসব মাছের দাম চাইলেন ৮০০ টাকা কেজি। জানা গেল, এই বাজারের একজন বিক্রেতা ৬০০-৭০০ গ্রাম ওজনের অল্প কিছু ইলিশ এনেছিলেন। তবে সকালেই সেগুলো শেষ হয়ে গেছে।

এ নিয়ে জানতে চাইলে সেগুনবাগিচা বাজারের ইলিশ বিক্রেতা জসিম উদ্দীন বলেন, ‘পাঁচ দিন হয়ে গেছে ইলিশ ধরা শুরু হয়েছে। এক দিনও পাইকারি বাজারে গিয়ে ভালো মাছ পাই নাই। ইলিশ ধরা পড়ছে কম। তাই সাপ্লাই কম, দাম এখনো বেশি।’

মুদিপণ্যের মধ্যে মসুর ডালের দাম সপ্তাহতিনেক আগে বাড়ার পর থেকে এখনো সেখানেই আছে। তবে কমেছে চিনির দাম। এখন চিনি পাওয়া যাচ্ছে ১০০-১১০ টাকা কেজিতে। দুই সপ্তাহ আগেও ১০৫-১১৫ টাকা ছিল। মাসদেড়েক আগে ছিল ১১৫-১২০ টাকা। ভোজ্যতেল, আটা, ময়দাসহ বাকি প্রায় সব মুদিপণ্য আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে।

বাজারে গত দুই সপ্তাহ সবজির দাম দ্রুত কমলেও এখন কমার গতি কিছুটা ধীর। শিম, বেগুন, টমেটোসহ ৩-৪ ধরনের সবজির দাম কমেছে। বাকিগুলো গত সপ্তাহের দামই বিক্রি হচ্ছে।

গতকাল বাজার ঘুরে দেখা যায়, আগাম শীতের শিমের দাম গত সপ্তাহের তুলনায় ঠিক অর্ধেকে নেমে বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজি করে। কেজিপ্রতি ২০ টাকা কমে বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়। বাজারে উঠেছে নতুন কাঁচা টমেটো, দাম ৭০ টাকা। তবে পাকা টমেটোর দাম আগের মতোই ১২০ টাকা কেজি।

এ ছাড়া করলা, শসা, ঢ্যাঁড়স, পটোল, বরবটি, কচুর মুখীসহ অধিকাংশ সবজির দাম গত সপ্তাহের মতোই ৫০-৬০ টাকা কেজির মধ্যে রয়েছে। লাউ, ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকা প্রতিটি। লালশাক, মুলাশাক, লাউশাক, পুঁইশাকের আঁটি বিক্রি হচ্ছে ২৫-৩০ টাকায়।

মুগদা বাজারের সবজি বিক্রেতা আনোয়ার জানালেন, গত দুই সপ্তাহে সবজির দাম অনেকটাই কমেছে। আপাতত আর খুব বেশি কমার সম্ভাবনা নেই। আবার ডিসেম্বরের দিকে দাম কমবে। তখন টমেটো, ফুলকপি, বাঁধাকপিসহ সব শীতের সবজির ভরা মৌসুম শুরু হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১৬ ডিসেম্বরের পর পুরোনো ও নতুন মোবাইল ফোনের রেজিস্ট্রেশন হবে যেভাবে

১৪ বছরের মেয়ে যেন নির্বিঘ্নে ভিডিও বানাতে পারে, তাই দেশ ছাড়ল ইনফ্লুয়েন্সার পরিবার

প্রতিদ্বন্দ্বীর ক্ষতি করতে বিদেশ থেকে সাইবার হামলা, কিছু আইএসপিকে শনাক্ত করেছে সরকার

সাপের ছোবল খেয়ে সাপসহ হাসপাতালে নারী

গাংনীতে কাঠমিস্ত্রির মরদেহ উদ্ধার

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বিএসসির বহরে নতুন জাহাজ: বাংলার প্রগতির বাণিজ্যিক যাত্রা

মো. আবু বকর ছিদ্দিক, চট্টগ্রাম 
আপডেট : ৩১ অক্টোবর ২০২৫, ১২: ৩০
বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের (বিএসসি) বহরে সম্প্রতি যুক্ত হওয়া জাহাজ এমভি বাংলার প্রগতি। ছবি: আজকের পত্রিকা
বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের (বিএসসি) বহরে সম্প্রতি যুক্ত হওয়া জাহাজ এমভি বাংলার প্রগতি। ছবি: আজকের পত্রিকা

সমুদ্রপথে আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের আধুনিক প্রযুক্তি নিয়ে এসেছে এমভি বাংলার প্রগতি। পরিবেশবান্ধব নকশা, জ্বালানিসাশ্রয়ী ইঞ্জিন এবং অসাধারণ অপারেশনাল দক্ষতার এ জাহাজটি ৬৫ হাজার টন পণ্য বহন করতে সক্ষম। সম্প্রতি রাষ্ট্রায়ত্ত বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের (বিএসসি) বহরে যুক্ত হয়ে দেশের জ্বালানি পরিবহনকে দিয়েছে নতুন গতি। সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে কেনা এ জাহাজটি শুধু বহরের শক্তি বাড়ায়নি; সংস্থার আত্মনির্ভরতার প্রতীকও হয়ে উঠেছে।

বিএসসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) কমোডর মাহমুদুল মালেক বহরে যুক্ত এমভি বাংলার প্রগতিকে সংস্থার ‘৫০ বছরের ইতিহাসে সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলেন, ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে এমভি বাংলার নবযাত্রা নামে আরও একটি আধুনিক জাহাজ বহরে যোগ দিচ্ছে, যা বিএসসির সক্ষমতার ধারাকে আরও একধাপ এগিয়ে নেবে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২৭ অক্টোবর বহরে যুক্ত হওয়া বাংলার প্রগতি ইতিমধ্যে বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু করেছে। হংকংভিত্তিক এক প্রতিষ্ঠানের কাছে এটি ভাড়া দেওয়া হয়েছে প্রতিদিন ২০ হাজার মার্কিন ডলারে, যা টাকায় প্রায় ২৪ লাখ ৪০ হাজার। গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত এটি চতুর্থ দিনের মতো সমুদ্রপথে যাত্রায় রয়েছে। চীনের জিংজিয়াং ইন্টারন্যাশনাল বাথ থেকে ঝুশানে যাচ্ছে জাহাজটি, সেখান থেকে রসদ ও তেল সংগ্রহ শেষে আরেক বন্দরে পণ্যবোঝাইয়ের উদ্দেশে রওনা দেবে।

বিএসসির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এমভি বাংলার প্রগতি প্রায় ১৯৯ মিটার দৈর্ঘ্য, ৩৩ মিটার প্রস্থ ও ১৮ মিটার গভীরতার, ৬৫ হাজার টন পণ্য বহনের সক্ষমতাসম্পন্ন আধুনিক বাল্ক ক্যারিয়ার। এর প্রধান ইঞ্জিন এমএএন-বিঅ্যান্ডডব্লিউ, জার্মান লাইসেন্সে তৈরি ও চীনে সংযোজিত; পাম্প এসেছে স্পেন থেকে, কম্প্রেসর নরওয়ে থেকে। পুরো কাঠামো ‘গ্রিন শিপ কনসেপ্ট’-এ তৈরি, যা আন্তর্জাতিক মানদণ্ড (আইএমও) পূরণ করে। নকশা জ্বালানিসাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব; নাইট্রোজেন অক্সাইড নির্গমন নিয়ন্ত্রণ করে, হাইড্রোডাইনামিক ড্রাগ কমিয়ে গতি ও জ্বালানিসাশ্রয় নিশ্চিত করে—বিশেষ করে দীর্ঘ রুটে কার্যকর।

এই দুটি জাহাজ কেনার জন্য বিএসসি গত ২১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের হেলেনিক ড্রাই বাল্ক ভেঞ্চারস এলএলসির সঙ্গে চুক্তি করেছে। প্রতিটি জাহাজের দাম ৩৮.৩৪৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, মোট ব্যয় প্রায় ৭৬.৬৯৮ মিলিয়ন ডলার বা আনুমানিক ৯৩৫ কোটি টাকা। বিএসসির নিজস্ব তহবিল থেকে পুরো অর্থ জোগান দেওয়া হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমোদন পাওয়ার পর জাহাজ দুটির নাম পরিবর্তন করা হয়েছে—আগের এক্সসিএল জেমিনি এখন এমভি বাংলার প্রগতি, আর এক্সসিএল লায়ন পেয়েছে নতুন নাম এমভি বাংলার নবযাত্রা।

বিএসসির ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বিদেশি সহায়তা ছাড়া এমন বড় বিনিয়োগ সম্ভব হয়েছে। এর আগে ২০১৮ ও ২০১৯ সালে চীনা সরকারের আর্থিক সহায়তায় ১৮৪৩ কোটি টাকার প্রকল্পে ছয়টি জাহাজ কেনা হয়েছিল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১৬ ডিসেম্বরের পর পুরোনো ও নতুন মোবাইল ফোনের রেজিস্ট্রেশন হবে যেভাবে

১৪ বছরের মেয়ে যেন নির্বিঘ্নে ভিডিও বানাতে পারে, তাই দেশ ছাড়ল ইনফ্লুয়েন্সার পরিবার

প্রতিদ্বন্দ্বীর ক্ষতি করতে বিদেশ থেকে সাইবার হামলা, কিছু আইএসপিকে শনাক্ত করেছে সরকার

সাপের ছোবল খেয়ে সাপসহ হাসপাতালে নারী

গাংনীতে কাঠমিস্ত্রির মরদেহ উদ্ধার

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত