Ajker Patrika

বিএসসির বহরে নতুন জাহাজ: বাংলার প্রগতির বাণিজ্যিক যাত্রা

মো. আবু বকর ছিদ্দিক, চট্টগ্রাম 
বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের (বিএসসি) বহরে সম্প্রতি যুক্ত হওয়া জাহাজ এমভি বাংলার প্রগতি। ছবি: আজকের পত্রিকা
বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের (বিএসসি) বহরে সম্প্রতি যুক্ত হওয়া জাহাজ এমভি বাংলার প্রগতি। ছবি: আজকের পত্রিকা

সমুদ্রপথে আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের আধুনিক প্রযুক্তি নিয়ে এসেছে এমভি বাংলার প্রগতি। পরিবেশবান্ধব নকশা, জ্বালানিসাশ্রয়ী ইঞ্জিন এবং অসাধারণ অপারেশনাল দক্ষতার এ জাহাজটি ৬৫ হাজার টন পণ্য বহন করতে সক্ষম। সম্প্রতি রাষ্ট্রায়ত্ত বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের (বিএসসি) বহরে যুক্ত হয়ে দেশের জ্বালানি পরিবহনকে দিয়েছে নতুন গতি। সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে কেনা এ জাহাজটি শুধু বহরের শক্তি বাড়ায়নি; সংস্থার আত্মনির্ভরতার প্রতীকও হয়ে উঠেছে।

বিএসসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) কমোডর মাহমুদুল মালেক বহরে যুক্ত এমভি বাংলার প্রগতিকে সংস্থার ‘৫০ বছরের ইতিহাসে সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলেন, ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে এমভি বাংলার নবযাত্রা নামে আরও একটি আধুনিক জাহাজ বহরে যোগ দিচ্ছে, যা বিএসসির সক্ষমতার ধারাকে আরও একধাপ এগিয়ে নেবে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২৭ অক্টোবর বহরে যুক্ত হওয়া বাংলার প্রগতি ইতিমধ্যে বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু করেছে। হংকংভিত্তিক এক প্রতিষ্ঠানের কাছে এটি ভাড়া দেওয়া হয়েছে প্রতিদিন ২০ হাজার মার্কিন ডলারে, যা টাকায় প্রায় ২৪ লাখ ৪০ হাজার। গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত এটি চতুর্থ দিনের মতো সমুদ্রপথে যাত্রায় রয়েছে। চীনের জিংজিয়াং ইন্টারন্যাশনাল বাথ থেকে ঝুশানে যাচ্ছে জাহাজটি, সেখান থেকে রসদ ও তেল সংগ্রহ শেষে আরেক বন্দরে পণ্যবোঝাইয়ের উদ্দেশে রওনা দেবে।

বিএসসির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এমভি বাংলার প্রগতি প্রায় ১৯৯ মিটার দৈর্ঘ্য, ৩৩ মিটার প্রস্থ ও ১৮ মিটার গভীরতার, ৬৫ হাজার টন পণ্য বহনের সক্ষমতাসম্পন্ন আধুনিক বাল্ক ক্যারিয়ার। এর প্রধান ইঞ্জিন এমএএন-বিঅ্যান্ডডব্লিউ, জার্মান লাইসেন্সে তৈরি ও চীনে সংযোজিত; পাম্প এসেছে স্পেন থেকে, কম্প্রেসর নরওয়ে থেকে। পুরো কাঠামো ‘গ্রিন শিপ কনসেপ্ট’-এ তৈরি, যা আন্তর্জাতিক মানদণ্ড (আইএমও) পূরণ করে। নকশা জ্বালানিসাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব; নাইট্রোজেন অক্সাইড নির্গমন নিয়ন্ত্রণ করে, হাইড্রোডাইনামিক ড্রাগ কমিয়ে গতি ও জ্বালানিসাশ্রয় নিশ্চিত করে—বিশেষ করে দীর্ঘ রুটে কার্যকর।

এই দুটি জাহাজ কেনার জন্য বিএসসি গত ২১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের হেলেনিক ড্রাই বাল্ক ভেঞ্চারস এলএলসির সঙ্গে চুক্তি করেছে। প্রতিটি জাহাজের দাম ৩৮.৩৪৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, মোট ব্যয় প্রায় ৭৬.৬৯৮ মিলিয়ন ডলার বা আনুমানিক ৯৩৫ কোটি টাকা। বিএসসির নিজস্ব তহবিল থেকে পুরো অর্থ জোগান দেওয়া হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমোদন পাওয়ার পর জাহাজ দুটির নাম পরিবর্তন করা হয়েছে—আগের এক্সসিএল জেমিনি এখন এমভি বাংলার প্রগতি, আর এক্সসিএল লায়ন পেয়েছে নতুন নাম এমভি বাংলার নবযাত্রা।

বিএসসির ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বিদেশি সহায়তা ছাড়া এমন বড় বিনিয়োগ সম্ভব হয়েছে। এর আগে ২০১৮ ও ২০১৯ সালে চীনা সরকারের আর্থিক সহায়তায় ১৮৪৩ কোটি টাকার প্রকল্পে ছয়টি জাহাজ কেনা হয়েছিল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিএনপি আমলের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মিলনকে বিমানবন্দর থেকে ফিরিয়ে দিল ইমিগ্রেশন পুলিশ

বিদ্যুতের লাইন ঠিক করার কথা বলে ঘরে ঢুকে কিশোরীকে ধর্ষণ, যুবক গ্রেপ্তার

প্রতারণার জন্য কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে গেছে এই সরকার: মান্না

শেখ মুজিবের ছবি টাঙানোর বিধান বিলুপ্তির প্রস্তাব নেই জুলাই সনদে, ক্ষোভ বিএনপির

বদলি-পদায়ন নিয়ে জটিলতার পর জনপ্রশাসনবিষয়ক কমিটি বাতিল

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ