Ajker Patrika

রপ্তানিতে আরও মজবুত অবস্থান বাংলাদেশের

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
রপ্তানিতে আরও মজবুত অবস্থান বাংলাদেশের

ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) বাজারে চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে দেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০ দশমিক ২৯ বিলিয়ন ইউরোতে। ইউরোস্ট্যাটের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, জানুয়ারি থেকে জুন সময়ে এই রপ্তানি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৭ দশমিক ৯ শতাংশ, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ৮ দশমিক ৭৩ বিলিয়ন ইউরো।

সামগ্রিকভাবে ইইউ এ সময়ে ৪৩ দশমিক ৩৯ বিলিয়ন ইউরোর পোশাক আমদানি করেছে, যা আগের বছরের তুলনায় ১২ দশমিক ৩ শতাংশ বেশি। অর্থাৎ ইইউর গড় প্রবৃদ্ধির চেয়ে বাংলাদেশের অগ্রগতি বেশি। এই বর্ধিত প্রবৃদ্ধি ইইউর বাজারে দ্বিতীয় বৃহত্তম পোশাক সরবরাহকারী হিসেবে বাংলাদেশের অবস্থানকে আরও সুদৃঢ় করেছে। তবে সেটি এখনো প্রতিযোগিতার শীর্ষে নিয়ে যেতে পারেনি। এই বাজারে অন্যতম প্রতিযোগী চীন ও কম্বোডিয়ার তুলনায় বাংলাদেশ এখনো পিছিয়ে রয়েছে।

ইউরোস্ট্যাটের তথ্য বলছে, চীন এখনো ইইউর সর্ববৃহৎ সরবরাহকারী। দেশটির রপ্তানি বেড়েছে ২২ দশমিক ৩ শতাংশ, মোট আয় দাঁড়িয়েছে ১১ দশমিক ২৬ বিলিয়ন ইউরোতে। তবে প্রবৃদ্ধির হারে সবার ওপরে রয়েছে কম্বোডিয়া। দেশটি ৩০ দশমিক ৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করে রপ্তানি আনে ২ দশমিক শূন্য ৭ বিলিয়ন ইউরো।

চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য ও শুল্ক উত্তেজনার কারণে চীন তার আমেরিকান বাজারের অংশ হারাচ্ছে এবং এতে মরিয়া হয়ে ইইউ বাজারে মনোযোগ বাড়াচ্ছে। বাংলাদেশকে এই সুযোগ কাজে লাগাতে আরও সক্ষম হতে হবে, এমনটাই মনে করছেন বিকেএমইএর সাবেক সভাপতি ফজলুল হক। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাজারে সামগ্রিক প্রবৃদ্ধি বাড়ছে; কারণ, ইইউ আমদানি বাড়িয়েছে। তবে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে অভ্যন্তরীণ সমস্যাগুলো—কারখানা বন্ধ, ব্যাংকিং জটিলতা ও অন্যান্য প্রতিবন্ধকতা সেই প্রবৃদ্ধিকে সীমিত করছে।

অন্যদিকে টিম গ্রুপের সহকারী এমডি আবদুল্লাহ হিল নকিব মনে করছেন, বাংলাদেশের জন্য ইউরোপের বাজারে চীন ও কম্বোডিয়ার তুলনায় বেশি সম্ভাবনা রয়েছে। কোভিড-পরবর্তী সময়ে ইউরোপের ক্রেতারা বাংলাদেশের দিকে ঝুঁকেছে। তারা পরিবেশগত মান, মূল্য এবং অন্যান্য রিকয়ারমেন্টের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের পণ্যে বেশি ভরসা রাখে। তিনি বলছেন, চীন থেকে আসা ক্রেতাদের মাত্র ৭-১০ শতাংশকে ধরতে পারলে বাংলাদেশের রপ্তানি আরও বৃদ্ধি পাবে। তবে এ জন্য দেশকে নিজের সক্ষমতা আরও বাড়াতে হবে।

আঞ্চলিক প্রতিযোগীদের মধ্যে ভারত ছয় মাসে ১৫ দশমিক ৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি নিয়ে রপ্তানি করেছে ২ দশমিক ৭০ বিলিয়ন ইউরো। পাকিস্তানের প্রবৃদ্ধি ১৬ দশমিক ৬ শতাংশ, রপ্তানি আয় ১ দশমিক ৮৬ বিলিয়ন ইউরো। ভিয়েতনামও প্রবৃদ্ধি ধরে রেখেছে—রপ্তানি বেড়ে হয়েছে ২ দশমিক শূন্য ২ বিলিয়ন ইউরো, প্রবৃদ্ধি ১৭ দশমিক ৩ শতাংশ। তুলনায় বাংলাদেশ প্রবৃদ্ধিতে সবার ওপরে না থাকলেও পরিমাণে এখনো দ্বিতীয় বৃহত্তম অবস্থান ধরে রেখেছে।

অন্যদিকে ইইউতে তুরস্কের রপ্তানি কমেছে। দেশটির আয় দাঁড়িয়েছে ৪ দশমিক ২৭ বিলিয়ন ইউরো, যা আগের বছরের তুলনায় ৭ শতাংশ কম।

বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, বাংলাদেশের বাজার অংশীদারত্ব সুদৃঢ় হলেও প্রবৃদ্ধিতে প্রতিযোগীদের পেছনে পড়া একটি সতর্কসংকেত। ইউরোপে ক্রমবর্ধমান প্রতিযোগিতায় এগিয়ে থাকতে এবং চীন থেকে সরে আসা ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে বাংলাদেশের অবকাঠামোগত দুর্বলতা দ্রুত কাটিয়ে ওঠা জরুরি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গভর্নর আমাকে বাধ্যতামূলক ছুটি দেওয়ার কে: বিএফআইইউর প্রধান শাহীনুল

সেই রুহুল আমিনের বসুন্ধরা, বনানী ও উত্তরার জমিসহ ৫০০ কোটি টাকার সম্পত্তি ক্রোক

ঠাকুরগাঁওয়ের ৩টি আসনেই জয়ী হবে জামায়াত: মাওলানা হালিম

ছাত্রীকে তিন দিন আটকে রেখে ধর্ষণ, গ্রাম্য সালিসের মাধ্যমে বিয়ে

কেশবপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় স্বর্ণের কারিগরসহ দুই ব্যক্তি নিহত

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত