Ajker Patrika

বকেয়া বেতনের দাবিতে আন্দোলনে তারাপুর চা–শ্রমিকেরা

সিলেট প্রতিনিধি
আপডেট : ১৪ জানুয়ারি ২০২৪, ১৮: ২৫
Thumbnail image

বকেয়া বেতনসহ সাত দফা দাবিতে আজ রোববার দ্বিতীয়দিনের মতো কর্মবিরতি পালন করছে সিলেটের তারাপুর চা বাগানের শ্রমিকেরা। দ্রুত দাবি মানা না হলে মঙ্গলবার থেকে কর্মবিরতির পাশাপাশি অবস্থান ও বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে চা বাগান শ্রমিক ও পঞ্চায়েত কমিটি। এর আগে গতকাল শনিবার থেকে কর্মবিরতি শুরু করে শ্রমিকেরা। 

পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি চৈতন্য মোদী ও সাধারণ সম্পাদক সুনীল মোদী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কর্তৃপক্ষের খামখেয়ালির কারণে বারবার বেতন আটকে যাচ্ছে। এত দিন তারা একদিনের বেতন অন্যদিন দিলেও এখন টানা দুই সপ্তাহ ধরে বেতন বন্ধ। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত বকেয়া বেতনের তৃতীয় কিস্তিও পাইনি। দাবি আদায়ে মঙ্গলবার থেকে কঠোর আন্দোলন শুরু করব।’ 

তারা আরও বলেন, ‘বেতন না পাওয়ার কারণে শ্রমিক পরিবারে সংকট বাড়ছে, পানসে হয়ে গেছে সংক্রান্তি উৎসব। আমরা অচলাবস্থার অবসান চাই। বারবার বাগান বন্ধ থাকাটা আমরাও চাই না। বাধ্য হয়ে অভাবের তাড়নায় আন্দোলন করছি।’ 

এ দিকে তারাপুর চা–বাগান শ্রমিকদের কর্মবিরতির কারণে শুকনো মৌসুমের কলম বন্ধ থাকায় উৎপাদন কমে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বেতন না পাওয়ায় শ্রমিকদের ঘরে অভাব ও হাহাকার দেখা দিয়েছে। স্কুলে সন্তানদের ভর্তি করতে পারছেন না শ্রমিকেরা। 

বকেয়া বেতনের দাবিতে কর্মবিরতি পালন করছে তারাপুর চা বাগানের শ্রমিকেরাতারাপুর চা–বাগানের শ্রমিক মমতা রায় আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘চা বাগানই আমাদের জীবন। আমরা চা–বাগান বন্ধ থাকুক এটা চাই না। দুই সপ্তাহ ধরে কোনো বেতন ভাতা পাচ্ছি না। ঘরে ঘরে খাদ্যাভাব দেখা দিয়েছে। বাধ্য হয়ে পেটের তাগিদে আন্দোলন শুরু করেছি।’ 

গীতা হালদার নামে আরেক শ্রমিক বলেন, ‘জানুয়ারি মাসে কোনো বেতন–ভাতা নাই। সন্তানদের স্কুলে ভর্তি যেমন করতে পারিনি, তেমনি নতুন ক্লাসের বইও কিনে দিতে পারছি না। আমরা আমাদের ন্যায্য পাওনাটা চাই।’ 

তারাপুর চা-বাগানের ব্যবস্থাপক (ম্যানেজার) রিংকু চক্রবর্তী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘শ্রমিক বকেয়াসহ আমাদের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আট মাসের বেতন বাকি। মালিকপক্ষ লোকসানে থাকায় শ্রমিকসহ কারও বেতন দিতে পারছে না। যার কারণে, শ্রমিকদের দুই সপ্তাহের বেতন বকেয়া রয়েছে। আজ (রোববার) ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা (মিটিং) আছে। সেখানে বিষয়গুলো আলোচনা হবে এবং মালিকপক্ষ উপস্থিত থাকবেন।’ 

তারাপুর চা-বাগানের ব্যবস্থাপনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিক্রম কর সম্রাট বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে আমরা লোকসানের মধ্যে আছি। যারাই মালিকপক্ষ আছি, সবাই নিজের পকেট থেকে শ্রমিকদের বেতন দিচ্ছি। ব্যাংক থেকে সব চা-বাগান মালিকপক্ষ কোটি টাকা লোন পায়, কিন্তু এ ক্ষেত্রে আমরা পাচ্ছি না। প্রশাসনিক সহযোগিতাও পাচ্ছি না। 

তারপরও আমরা নিজেদের পকেট থেকে শ্রমিকদের বেতন দিচ্ছি, যাতে তাদের অসহায় অবস্থা কাটাতে না হয়। আজ (রোববার) সন্ধ্যায় আমাদের সভা (মিটিং) আছে। সেখানে বিষয়গুলো আলোচনা হবে এবং এর একটা সমাধান করব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত