Ajker Patrika

ঘন ঘন ভূমিকম্প ভালো লক্ষণ নয়, সতর্ক করছেন বিশেষজ্ঞরা

প্রতিনিধি
আপডেট : ১০ জুন ২০২১, ২৩: ৪৯
ঘন ঘন ভূমিকম্প ভালো লক্ষণ নয়, সতর্ক করছেন বিশেষজ্ঞরা

সিলেট: সিলেটে আজ শনিবার এক ঘণ্টার ব্যবধানে চারবার ভূ-কম্পন অনুভূত হয়েছে। সকাল ১০টা ৩৬ মিনিটে প্রথম ভূ-কম্পনটির মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৩। এরপর সকাল ১০টা ৫০ মিনিট ৫৩ সেকেন্ডে ৪ দশমিক ১ মাত্রা, ১১টা ৩০ মিনিটে ২ দশমিক ৮ মাত্রা এবং ১১টা ৩৪ মিনিটে ২ মাত্রার ভূকম্পন অনুভূত হয়। তবে বেলা ২টার দিকে পঞ্চমবারের মতো ভূমিকম্প অনুভূত হলেও সিলেট আবহাওয়া অধিদপ্তর চারবারই বলছে। এই ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল সিলেট অঞ্চলের বাংলাদেশ–ভারত সীমান্তের জৈন্তাপুর এলাকায়।

এত কম সময়ের ব্যবধানে পাঁচটি ভূমিকম্পকে অশনিসংকেত বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। আবহাওয়া অধিদপ্তরের সিলেট কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ সাঈদ আহমেদ চৌধুরী এক ঘণ্টার ব্যবধানে চারবার ভূ-কম্পন ভালো লক্ষণ নয়। ঘন ঘন ছোট ভূ-কম্পন বড় ধরনের ভূমিকম্পেরই পূর্বাভাস। একই আশঙ্কার কথা বলেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. জহির বিন আলম।

এই দুই বিশেষজ্ঞের মতে, ভূমিকম্পের ডেঞ্জারজোনে আছে সিলেট। ফরাসি ইঞ্জিনিয়ারিং কনসোর্টিয়াম ১৯৯৮-এর জরিপ অনুযায়ী, সিলেট অঞ্চল ১০০ বছরের বেশি সময় ধরে সক্রিয় ভূ-কম্পন এলাকা হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আসছে। ফলে এক ঘণ্টার মধ্যে চারটি ছোট ভূমিকম্প বড় ভূমিকম্পের আশঙ্কা আরও বাড়িয়েছে।

এদিকে, অপরিকল্পিত নগরায়ণ, নীতিমালা না মেনে ভবন নির্মাণসহ নানা কারণে বড় ভূমিকম্প হলে এখানে বড় ধরনের বিপর্যয়ের আশঙ্কা এই বিশেষজ্ঞদের। তাঁদের মতে, রিখটার স্কেলে পাঁচ মাত্রার ভূমিকম্প হলে সিলেটের ৮০ ভাগ ভবনই ধসে পড়বে। সাত মাত্রার ভূমিকম্প হলে এ অঞ্চলের প্রায় ৯৫ ভাগ স্থাপনা ধ্বংস হয়ে যাবে। প্রাণ হারাবে ১২ লাখ মানুষ। টাকার অঙ্কে ক্ষতি হবে ১৭ হাজার কোটি।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের সিলেট কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ সাঈদ আহমেদ চৌধুরী বলেন, ছোট ছোট ভূমিকম্পের পর যেমন বড় ভূমিকম্পের আশঙ্কা থাকে তেমনি বড় ভূমিকম্পের পরও অনেকগুলো ছোট ভূমিকম্প হয়। তবে এ ক্ষেত্রে বিষয়টি উৎপত্তিস্থলের ওপর নির্ভর করে। যদি একই জায়গায় বারবার ভূমিকম্প হয় তাহলে বড় ভূমিকম্পের আশঙ্কা থাকে। তবে সিলেটের প্রেক্ষাপটে এই আশঙ্কা সুনির্দিষ্টভাবে বলা যাচ্ছে না। কারণ আজকের দুটি ভূমিকম্প অনেক ছোট ছিল। যার ফলে সিলেট স্টেশন ছাড়া অন্য কোনো স্টেশনে এই কম্পন ধরা পড়েনি।

তিনি বলেন, সাধারণত ভূমিকম্পের গভীরতা যদি কম থাকে তাহলে ব্যাপ্তি কম হয়। এর আগেও ২৮ এপ্রিল সিলেটসহ সারা দেশে ৬ মাত্রার ভূ-কম্পন অনুভূত হয়েছে। আসামের ধেকিয়াজুলি থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার উত্তর-উত্তর পশ্চিমে ওই ভূমিকম্পের উৎপত্তি হয়। ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল রাজ্যের রাজধানী গুয়াহাটি থেকে ১৪০ কিলোমিটার দূরত্বে ছিল। রিখটার স্কেলে ৬ মাত্রার ভূমিকম্পের গভীরতা ছিল ৩৪ কিলোমিটার।

প্রবাসী অধ্যুষিত সিলেটে বাড়ছে আকাশছোঁয়া ভবন নির্মাণের প্রতিযোগিতা। আর এই মনোভাবের কারণে নির্বিচারে ভরাট করা হচ্ছে জলাধার, কেটে ফেলা হচ্ছে পাহাড়–টিলা। এতে বাড়ছে ভূমিকম্পে বেশি ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কাও। গবেষকদের মতে, সিলেটের অধিকাংশ বাণিজ্যিক ভবনই অপরিকল্পিত এবং ঝুঁকিপূর্ণ। রিখটার স্কেলে সাত বা এর বেশি মাত্রার ভূমিকম্প হলে অধিকাংশ ভবনই ভেঙে পড়বে।

সিলেটে ভূমিকম্পে কোন এলাকায় কী পরিমাণ ক্ষতি হতে পারে এ নিয়ে কয়েক বছর আগে বাংলাদেশ, জাপান ও শ্রীলঙ্কার একটি বিশেষজ্ঞ দল নগরীর ছয় হাজার ভবনের ওপর জরিপ চালায়। এই গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অপরিকল্পিত ভবন নির্মাণের কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হবে নগরীর শাহজালাল উপশহর, আখালিয়া, বাগবাড়ি, মদিনা মার্কেটসহ বেশ কয়েকটি এলাকা। বাণিজ্যিক ভবন ও ইমারতের পাশাপাশি নগরীতে অপরিকল্পিত ও ঝুঁকিপূর্ণ অনেকগুলো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও রয়েছে। গবেষণার তথ্য মতে, সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বহু বেসরকারি হাসপাতাল রয়েছে যেগুলো ভূমিকম্পের সময় ধসে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। আর এসব সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল ধসে পড়লে প্রাণহানিও বাড়বে।

শ্রীলঙ্কার গবেষক অধ্যাপক আরঙ্গা পোলা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. হুমায়ূন আখতার, অধ্যাপক ড. আপ্তাব আহমেদ, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. জহির বিন আলম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাকসুদ কামাল ও ড. জাহাঙ্গীর আলম এবং দুজন জাপানি বিশেষজ্ঞ এই গবেষণাটি করেন।

এ প্রসঙ্গে ড. জহির বিন আলম বলেন, সিলেট মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে থাকলেও তাৎক্ষণিক ক্ষতি-হ্রাস ও উদ্ধার কাজ চালানোর জন্য এখানে আধুনিক কোনো যন্ত্রপাতি নেই। তাই ভূমিকম্পের ঝুঁকি মাথায় রেখে এখনই প্রস্তুতি নিতে হবে।

গবেষণার কথা উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, রিপোর্টে ভূমিকম্পের বিভিন্ন দিক গবেষণা-পর্যালোচনা করে এমন আশঙ্কা ব্যক্ত করা হয়েছে। সিলেটে নতুন ভবন নির্মাণসহ সার্বিক নগরায়ণে ভূমিকম্প ঝুঁকির কথা বিবেচনায় রাখা হচ্ছে না। এ ছাড়া পুরোনো অসংখ্য দুর্বল ভবনও রয়েছে।

ভূমিকম্প বিষয়ক বিভিন্ন প্রকাশনা থেকে জানা যায়, ভূমিকম্পের মাত্রা অনুসারে বাংলাদেশ তিনটি ভূ-কম্পন বলয়ে অবস্থিত। এর মধ্যে এক নম্বর বলয়ে রিখটার স্কেলে ৭ থেকে ৯ বা তার অধিক মাত্রার ভূমিকম্প হতে পারে। আর এই এক নম্বর বলয়েই সিলেটের অবস্থান। এই বলয়ে আরও রয়েছে ময়মনসিংহ ও রংপুর।

অধ্যাপক ড. জহির বিন আলম বলেন, ভিন্ন ভিন্ন স্থান থেকে ঘনঘন ভূমিকম্পের উৎপত্তি হলে দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই। তবে যদি একই জায়গা থেকে ভূমিকম্পের উৎপত্তি হয় তাহলে অবশ্যই চিন্তার বিষয়। এমন হলে আমাদের একটু সতর্ক থাকতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

যৌতুকের জন্য গৃহবধূর চোখে মরিচের গুঁড়ো দিয়ে নির্যাতনের অভিযোগ

আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি 
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

বরগুনার আমতলীতে যৌতুক দিতে রাজি না হওয়ায় শাহিনুর বেগম (৪০) নামে এক গৃহবধূকে তাঁর স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন বেধড়ক পিটিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলার ছোট নীলগঞ্জ গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আজ শুক্রবার দুপুরে পুলিশ ওই গৃহবধূকে উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে।

ভুক্তভোগী গৃহবধূ নীলগঞ্জ গ্রামের কালু হাওলাদারের স্ত্রী।

জানা গেছে, আট দিন আগে কালু হাওলাদার জমি ক্রয় করতে বায়না করেন। জমি কিনার জন্য স্ত্রী শাহিনুরের কাছে তিন লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন তিনি। কিন্তু শাহিনুর বাবার বাড়ি থেকে টাকা আনতে অস্বীকৃতি জানান। এ নিয়ে গতকাল বিকেলে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকের সঙ্গে শাহিনুরের কলহ বাধে। স্বামী কালু হাওলাদার, ননদ রেবেকা বেগম ও ননদের স্বামী হানিফ মুসল্লি তাঁকে বেধড়ক মারধর করেন। তাঁরা শাহিনুরের চোখে মরিচের গুঁড়ো ছিটিয়ে দেন। মারধর শেষে তাঁকে ঘরের মধ্যে আটকে রাখেন। গৃহবধূর স্বজনেরা খবর পেয়ে আজ পুলিশে খবর দেন। পরে দুপুরে পুলিশ গিয়ে শাহিনুরকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়।

গৃহবধূর বাবা হানিফ হাওলাদার বলেন, ‘জমি কিনতে আমার মেয়ের কাছে জামাতা তিন লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে। টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় মারধর করে মেয়েকে মেরে ঘরে আটকে রাখে। পরে পুলিশ গিয়ে আমার মেয়েকে উদ্ধার করেছে। আমি এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শাস্তি দাবি করছি।’

ভুক্তভোগী গৃহবধূ শাহিনুর বেগম বলেন, ‘২০১১ সালে আমার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে নানা অজুহাতে যৌতুক দাবি করে আসছেন স্বামী। টাকা না দিলেই আমার ওপর নির্যাতন চালায়। গত এক সপ্তাহ আগে জমি কিনবে বলে আমার কাছে তিন লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। আমি টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় আমার চোখে মরিচের গুঁড়ো দিয়ে আমার স্বামী, নুনুন্দা (ননদের জামাই) হানিফ মুসুল্লি ও ননদ রেবেকা বেধড়ক মারধর করেছে। আমি এ ঘটনায় জড়িতদের শাস্তি দাবি করছি।’

এদিকে যৌতুক দাবির কথা অস্বীকার করে কালু হাওলাদার বলেন, ‘পারিবারিক বিষয় নিয়ে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে কয়েকটি চর-থাপ্পড় দিয়েছি।’

আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. মিনহাজ উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, ‘আহত নারীর চোখে যে সমস্যা হয়েছে, ওষুধ খেলে ভালো হয়ে যাবে, তবে সময় লাগবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘ওই নারীর শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখমের চিহ্ন রয়েছে। তাকে যথাযথ চিকিৎসা দিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।’

আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেওয়ান জগলুল হাসান বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ পাঠিয়ে ওই নারীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বাল্যবিবাহের অতিথি ইউএনও, জানতে পেরে খাবার না খেয়ে চলে গেলেন

নেছারাবাদ (পিরোজপুর) প্রতিনিধি 
মো. জাহিদুল ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত
মো. জাহিদুল ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত

পিরোজপুরের নেছারাবাদে সপরিবারে বিয়ের দাওয়াতে গিয়ে জানতে পারেন কনের বয়স ১৮ বছরের নিচে; এরপর খাবার না খেয়ে ফিরে গেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. জাহিদুল ইসলাম। পরে কাজিও বিয়ে না পড়িয়ে চলে যান।

ঘটনাটি ঘটে আজ শুক্রবার দুপুরে উপজেলার দৈহারী গ্রামে।

জানা যায়, বর শেখ মো. অনিক (২৩) জগন্নাথকাঠি গ্রামের মো. জাকির হোসেনের ছেলে এবং কনে মোসাম্মৎ মুন্নি আখতার (১৬) দৈহারী গ্রামের বাবুল হাওলাদারের মেয়ে। শুক্রবার তাদের বিয়ের আয়োজন করে উভয় পরিবার। বিয়ে অনুষ্ঠানে পরিবারসহ ইউএনও অতিথি হিসেবে যোগ দেন।

জানতে চাইলে বিয়ে পড়াতে আসা কাজি মো. ইসহাক আলী বলেন, ‘প্রথমে আমাকে জানানো হয় মেয়ের বয়স ১৮ বছর। পরে কনের প্রকৃত বয়স ১৬ জেনে আমি বিয়ে পড়াইনি। ইউএনও সাহেবও বিষয়টি জানার পর সপরিবারে না খেয়েই চলে যান।’

স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. আল আমীন জানান, ‘বিয়েবাড়িতে উৎসবমুখর পরিবেশ ছিল। ইউএনও সাহেব সপরিবারে এসেছিলেন। কনের বয়স কম শুনেই তিনি এবং কাজি চলে গেলে আমি নিজেও ফিরে এসেছি। আমরা কোনো খাওয়াদাওয়া করিনি।’

এ বিষয়ে ইউএনও মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগত অনুরোধে দাওয়াতে গিয়েছিলাম। কনের বয়স কম জেনে আইনগত ও নৈতিক দিক বিবেচনায় দাওয়াত না খেয়েই ফিরে এসেছি। পরে জানতে পেরেছি বিয়েটি আর হয়নি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কমলাপুর রেলস্টেশনে চাপাতি দেখিয়ে ভাইরাল যুবক গ্রেপ্তার

উত্তরা-বিমানবন্দর (ঢাকা) প্রতিনিধি 
আপডেট : ২৪ অক্টোবর ২০২৫, ২২: ৩৬
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

কমলাপুর রেলস্টেশনে প্রকাশ্যে চাপাতি বের করে ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া যুবক শাহ আলী শিকদারকে (৩৫) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারের পর পুলিশ তাঁর দেখানো স্থান থেকে ধারালো চাপাতিটি উদ্ধার করেছে।

ঢাকা জেলা রেলওয়ে পুলিশের পুলিশ সুপার (এসপি) আনোয়ার হোসেন আজকের পত্রিকাকে নিশ্চিত করেন, আজ শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) দুপুরে বিমানবন্দরের কাওলা রেলগেট এলাকা থেকে ধারালো চাপাতিটি উদ্ধার করা হয়।

এসপি জানান, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে গাজীপুরের শ্রীপুর থেকে ১৯ অক্টোবর রাতে শাহ আলীকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারের পর পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে শাহ আলী জানিয়েছেন, তিনি দীর্ঘদিন ধরে মাদকাসক্ত। বিভিন্ন সময় তিনি জনমনে ভয়ভীতি ও ত্রাস সৃষ্টি করে আসছিলেন, যার কারণে জেলও খেটেছেন।

এসপি জানান, গ্রেপ্তারের পর রিমান্ডে এসে শাহ আলী যে তথ্য দেন, তার ভিত্তিতেই কাওলা রেলগেট এলাকা থেকে চাপাতিটি উদ্ধার করা হয়।

উল্লেখ্য, ১৫ অক্টোবর রাতে শাহ আলী শিকদার কমলাপুর রেলস্টেশনের ৭ নম্বর প্ল্যাটফর্মে চাপাতি বের করে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করেন। সে ঘটনার ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে এবং ভাইরাল হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

২২ বস্তা সরকারি চাল জব্দ, আসামি হলেন অটোরিকশাচালক

নকলা (শেরপুর) প্রতিনিধি 
চালসহ জব্দ অটোরিকশা।
চালসহ জব্দ অটোরিকশা।

শেরপুরের নকলায় খাদ্য অধিদপ্তরের ২২ বস্তা সরকারি চাল জব্দের ঘটনায় অটোরিকশাচালক রানা মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। স্থানীয় খাদ্য বিভাগের খাদ্য পরিদর্শক মো. আফতাব উদ্দিন বাদী হয়ে আজ শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) সকালে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করেন।

গ্রেপ্তার অটোরিকশাচালক রানার বাড়ি নকলা পৌর শহরের জালালপুর মহল্লায়।

গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাদিয়া আফরিন এ্যানির নেতৃত্বে স্থানীয় খাদ্য বিভাগ ও থানা-পুলিশ অভিযান চালিয়ে নকলা পৌর শহর থেকে চালসহ রানার অটোরিকশাটি জব্দ করে।

পুলিশ, মামলার আসামি ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পাঠাকাটা ইউনিয়নের পাঁচকাহনীয়া গাদুর মোড় এলাকা থেকে খাদ্য অধিদপ্তরের ২২ বস্তা সরকারি চাল কেনেন জালালপুর মহল্লার মিলমালিক আশরাফ মিয়া ওরফে বুড়া আশরাফ। বিকেলে তিনি ওই চাল তাঁর মিলে নেওয়ার জন্য অটোরিকশাচালক রানাকে ভাড়া করেন। চাল স্থানান্তরের খবর পেয়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাদিয়া আফরিন এ্যানির নেতৃত্বে স্থানীয় খাদ্য বিভাগ ও থানা-পুলিশ অভিযানে নামেন। পরে সন্ধ্যার দিকে নকলা পৌর শহর থেকে অটোরিকশাসহ ওই ২২ বস্তা চাল জব্দ করে পুলিশ। আটক করা হয় অটোচালক রানা মিয়াকে। এ ব্যাপারে মিলমালিক আশরাফের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।

নকলা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবুল কাশেম বলেন, খাদ্য অধিদপ্তরের সরকারি চাল উদ্ধারের ঘটনায় নকলা থানায় মামলা হয়েছে। একজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। তদন্তের মাধ্যমে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের খুঁজে বের করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত