Ajker Patrika

পাথর উত্তোলনে ক্ষতির পরিমাণ জানতে গবেষণা প্রয়োজন: বেলার মতবিনিময় সভায় বক্তারা

নিজস্ব প্রতিবেদক সিলেট 
Thumbnail image
সিলেটে বেলা আয়োজিত মতবিনিময় সভায় অংশ নেওয়া বক্তারা। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর সিলেটের টিলা, নদী ও পর্যটনস্থল থেকে পাথর উত্তোলন আরও বেড়েছে। যান্ত্রিকভাবে এসব পাথর উত্তোলনের কারণে পরিবেশের সুরক্ষার কথা ভাবছেন না অসাধু ব্যবসায়ীরা। এতে ভূ-প্রকৃতি বড় ধরনের ঝুঁকিতে পড়বে। প্রশাসনের তৎপরতা নেই। অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনে আর্থিক ক্ষয়ক্ষতির দিক গবেষণার মাধ্যমে নিরূপণ করা প্রয়োজন বলে অভিমত দেন সিলেটে বেলার আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় অংশ নেওয়া বক্তারা।

‘সিলেটে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন ও বর্তমান অবস্থা পর্যালোচনা’ শীর্ষক গণমাধ্যম কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। আজ বুধবার দুপুরে নগরের এক অভিজাত হোটেলে এই সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা)। এতে বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির সিলেট বিভাগীয় প্রধান সৈয়দা শিরিন আক্তারের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য দেন বেলার সিলেট বিভাগীয় সমন্বয়ক শাহ শাহেদা আখতার।

অনুষ্ঠানে বিশেষজ্ঞ আলোচক হিসেবে ছিলেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পুর ও পরিবেশ প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মো. মিছবাহ উদ্দিন, পেট্রোলিয়াম ও খনি প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম। আরও বক্তব্য দেন সিলেট প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ইকবাল সিদ্দীকি, বর্তমান সভাপতি ইকরামুল কবীর ও বেলার নেটওয়ার্ক সদস্য ইরফানুজ্জামান চৌধুরী।

অনুষ্ঠানে অধ্যাপক মো. মিছবাহ উদ্দিন বলেন, ১৯৯৩ সালে যখন জাফলংয়ে গিয়েছিলাম তখন সেখানে পরিবেশগত একটি বৈচিত্র্য ছিল, কিন্তু তা এখন আর নেই। সনাতন পদ্ধতিতে পাথর উত্তোলনের বিষয়ে যে আলোচনা হচ্ছে তা তখনই সম্ভব যখন সেখানকার পরিবেশ পূর্বের অবস্থায় ফিরে যাবে। পূর্বের অবস্থায় ফিরে যাওয়ার জন্য সরকারকে কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে হবে। পূর্বের অবস্থায় ফিরলে তখন সনাতন পদ্ধতিতে পাথর উত্তোলন করা যেতে পারে। পাশাপাশি পাথর কোয়ারিগুলো থেকে যন্ত্র ব্যবহার করে (ড্রেজার মেশিন) অবৈধভাবে লাগামহীন পাথর উত্তোলনে কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে-তা গবেষণা করা প্রয়োজন। তিনি আরও বলেন, পাথর কোয়ারিকেন্দ্রিক পর্যটনশিল্প ও পাথর উত্তোলনের রাজস্ব কেমন-এ দুটি বিষয়ে তুলনামূলক গবেষণা ও জরিপ প্রয়োজন। কোনটা থেকে সরকার রাজস্ব বেশি পাচ্ছে। পর্যটন খাতে বেশি রাজস্ব আয় হলে তা সমৃদ্ধ করার জন্য সরকারকে সেই খাতে গুরুত্ব দিতে হবে।

অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম বলেন, সনাতন পদ্ধতিতে পাথর উত্তোলনে কয়েকটি সুবিধা আছে। এ জন্য অনেক জনবলের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে। তবে এর পাশ কাটিয়ে ব্যবসায়ী মালিকেরা ভিন্ন পথ অবলম্বন করেন। তাঁরা যন্ত্রের ব্যবহার করে পাথর উত্তোলন করছেন। তাঁরা যুক্তি দেন যে পাথর উত্তোলন না করলে পানির প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়। কিন্তু বাস্তবে এটি চরম অজুহাত। জাফলংয়ের নদীতে পাথর জমে থাকার কারণে পানি প্রবাহ স্বাভাবিক রয়েছে। তিনি আরও বলেন, বর্তমান প্রশাসন খুব দুর্বল। অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হলেও তাঁরা কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছেন না। এ বিষয়ে মানুষের মানবিক বোধ জাগ্রত করতে হবে। প্রশাসনকে জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে।

সাংবাদিক ইকরামুল কবীর বলেন, ‘পত্রিকা ও টেলিভিশনে প্রতিনিয়ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হচ্ছে। শুধু প্রতিবেদন হলেই হবে না, প্রশাসনকে এগিয়ে আসতে হবে।’ এ ক্ষেত্রে প্রশাসনের উদাসীনতাকে দায়ী করেন তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত