Ajker Patrika

‘আশ্বিন মাসে এত পানি আর কখনো দেখেনি’

ধর্মপাশা ও মধ্যনগর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি
‘আশ্বিন মাসে এত পানি আর কখনো দেখেনি’

আশ্বিন মাসে এত পানি দেখেনি মধ্যনগরবাসী। পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে ঘর-বাড়ি। তিন দিনের ভারী বৃষ্টি ও ভারতের মেঘালয়ের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জের মধ্যনগর উপজেলার বংশীকুন্ডা উত্তর ইউনিয়নে প্রায় ৩০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। তলিয়ে গেছে আমন ধানের খেত। পানিবন্দী কয়েক হাজার মানুষ। বন্ধ হয়ে গেছে উপজেলাকেন্দ্রিক যোগাযোগের সড়কগুলো। অন্যদিকে উপজেলার সব কটি নদ-নদীর পানি বেড়ে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। 

বংশীকুণ্ডা উত্তর ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে করে সীমান্তের বাড়ি-ঘর পানির নিচে তলিয়ে গেছে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন কয়েক হাজার মানুষ। উপজেলার মহিষখলা ছড়া ও রুপশ্রী ছড়া নদীর বিপৎসীমার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়ে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। 

ট্রাইব্যাল ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান অজিত হাজং বলেন, ‘আমি আশ্বিন মাসে এত পানি এর আগে কখনো দেখিনি। এই বন্যার পানি বেশি দিন থাকলে আমাদের আমনের ফলন একেবারে নষ্ট হয়ে যাবে।’ 

উপজেলার বংশীকুন্ডা উত্তর ইউনিয়নের বাকাতলা, কাইটাকোনা, বাঙ্গালভিতা, রুপনগর, ইছামারী, গোলগাও, শ্রীপুর এই কয়েকটি গ্রামের ফসলি জমি, রাস্তাঘাট, পুকুর ও মাছের ফিশারিজ পানিতে তলিয়ে গেছে। গ্রামের বাড়িগুলোতেও উঠেছে পানি। অপরদিকে উপজেলার সোমেশ্বরী নদী ও উব্দাখালী নদীর পানিও বিপদ সীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। 

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ও স্থানীয় জন প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল শনিবার থেকে অতিবৃষ্টি ও উজানের পাহাড়ি ঢলে উপজেলার মহিষখলা নদী ও সোমেশ্বরী নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। নদীর পানি উপচে সীমান্তের নিম্নাঞ্চলের ২৫-৩০টি গ্রাম প্লাবিত হয়। 

বংশীকুন্ডা উত্তর ইউনিয়নের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ছাত্রনেতা দুবরাজ বানাই বলেন, পাহাড়ি ঢলে আমাদের বাড়িঘর ভেঙে নিয়ে যাচ্ছে। গবাদি পশুসহ অন্যান্য জিনিসপত্র অন্যত্র সরিয়া নেওয়ার চেষ্টা করছি। স্রোত বেশি থাকায় উদ্ধার কাজ চালানো যাচ্ছে না। 

মহিষখলা বাজারের ব্যবসায়ী গোপাল চন্দ্র ঘোষ বলেন, সকালে হঠাৎ করেই ঢলের পানি উপচে লোকালয়ে প্রবেশ করে। মহিষখলা বাজার পুরোটাই প্লাবিত হয়েছে। অনেকের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে পানি ঢুকে মালামাল নষ্ট হয়ে গেছে। 

বংশীকুন্ডা উত্তর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান নূর নবী তালুকদার বলেন, বন্যা পরিস্থিতি মারাত্মক অবনতি হয়েছে। মহিষখলা বাজারের ওপর দিয়ে পানি গড়াচ্ছে, রাস্তাঘাট ডুবে গেছে। পাহাড়ি ঢলে বাড়ি ঘরে পানি উঠছে। মানুষ পানিবন্দী অবস্থায় আছে। আমনের জমি সব তলিয়ে গেছে। ইউএনওকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। পাহাড়ি ঢল কমে গেলে বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। 

মধ্যনগরে অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দীন আজকের পত্রিকাকে বলেন, আমি খোঁজ নিয়েছি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের কাছ থেকে। এটি ঢলের পানি কমে যাবে। রাস্তা-ঘাটের কিছু ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, এতে মানুষের চলাচলের বিঘ্ন হচ্ছে। উদ্ধার কাজ চালানোর মতো প্রয়োজনীয়তা এখনো দেখা দেয়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তৃতীয় বিশ্বের নেতা হওয়ার পথে দিল্লির বাধা চীনের উত্থান: ভারতীয় সেনাপ্রধান

আসামির জবানবন্দি: মাগুরার শিশুটির গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ধর্ষণ করা হয়

ইউএনওর ফেসবুক পেজ হ্যাক করে পোস্ট, ‘করলাম না এই প্রশাসনের চাকরি’

রেমিট্যান্সের নামে ৭৩০ কোটি টাকার কর ফাঁকি দিয়েছেন একজন, কার কথা বললেন এনবিআর চেয়ারম্যান

মামলা করতে যাওয়া নারীর কাছ থেকে টাকা ‘কেড়ে নিলেন’ এসআই

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত