Ajker Patrika

একটি ল্যাম্পপোস্ট নিয়ে মুখোমুখি সিসিক ও কারা কর্তৃপক্ষ

সিলেট প্রতিনিধি
একটি ল্যাম্পপোস্ট নিয়ে মুখোমুখি সিসিক ও কারা কর্তৃপক্ষ

নগরীর ধোপাদিঘি পাড়ে ‘বিউটিফিকেশন অব ধোপাদিঘি’ ওয়াকওয়ের একটি ল্যাম্পপোস্ট নিয়ে মুখোমুখি অবস্থানে চলে গেছে সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) ও কারা কর্তৃপক্ষ। 

সিসিক বলেছে, আজ মঙ্গলবার দুপুরে বিউটিফিকেশন অব ধোপাদিঘি ওয়াকওয়ের ল্যাম্পপোস্ট খুলে ফেলেন কারা কর্তৃপক্ষের কর্মচারীরা। তবে কী কারণে খুলে ফেলা হয়েছে তা জানা যায়নি। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। 

কারা কর্তৃপক্ষ বলছে, কারাগারের সীমানায় একটি ল্যাম্পপোস্টের খুঁটি বসানো হয়েছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে সিসিক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তাঁরা কথা বলেছেন। কোনো খুঁটি খুলে ফেলার ঘটনা ঘটেনি। 

ধোপাদিঘি সিলেট নগরীর প্রাণকেন্দ্রে। দখল-দূষণে হারিয়ে যাওয়া ধোপাদিঘি উদ্ধার করে ভারত সরকারের অর্থায়নে নান্দনিক ওয়াকওয়ে তৈরি করেছে সিটি করপোরেশন। এটি গত মাসে দুই মন্ত্রী ও ভারতীয় হাইকমিশনার উদ্বোধন করেন। পরিত্যক্ত দিঘির পাড়ে দৃষ্টিনন্দন ওয়াকওয়ে করতে একাধিক ঘাট নির্মাণ ও দৃষ্টিনন্দন ল্যাম্পপোস্ট স্থাপন করা হয়েছে। 

মঙ্গলবার দুপুরে ধোপাদিঘি ওয়াকওয়ের ল্যাম্পপোস্ট খুলে ফেলেন কারা কর্তৃপক্ষের কর্মচারীরা।আজ দুপুরে হঠাৎ করেই ল্যাম্পপোস্ট খুলে ফেলে কারা কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি হয় ওয়াকওয়েতে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন সিসিক মেয়র ও কাউন্সিলরেরা। পরবর্তীতে স্থানীয় এমপি পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন, জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্টদের বিষয়টি জানান সিসিক মেয়র। 

ওয়াকওয়ে পরিদর্শন শেষে সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ‘সকালে হঠাৎ করে কারা পুলিশ এসে ওয়াকওয়ের ল্যাম্পপোস্ট ভাঙচুর করে। এখানে কাজে থাকা শ্রমিকেরা বিষয়টি আমাদের জানালে দ্রুত চলে আসি। আমি বিষয়টি সিলেটের জেলা প্রশাসক, পুলিশ কমিশনার ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে জানিয়েছি।’ এক প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, ‘প্রকল্পের বাইরে আমরা কোনো জায়গায় যাইনি। প্রকল্পে যা আছে তাই। প্রকল্প তো আজ হয়নি।’ 

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মুহাম্মদ মঞ্জুর হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা কোনো খুঁটি খুলে ফেলিনি। তাঁদের সঙ্গে কথা বলেছি। মেয়র মহোদয়ের সঙ্গেও কথা বলেছি। তাঁরা আর এখানে কোনো স্থাপনা করবেন না। প্রয়োজনে আমাদের অবগত করবেন।’ 

মঙ্গলবার দুপুরে ধোপাদিঘি ওয়াকওয়ের ল্যাম্পপোস্ট খুলে ফেলেন কারা কর্তৃপক্ষের কর্মচারীরা। সিলেটের ডিআইজি (প্রিজন) মো. কামাল হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ধোপাদিঘি পাড় সংলগ্ন কিছু জায়গা কারা কর্তৃপক্ষের আওতাধীন। কোনো সরকারি প্রতিষ্ঠানের জায়গা অন্য সরকারি প্রতিষ্ঠান যদি নিয়ে নেয় তবে আলোচনার মাধ্যমে নিতে হয়। সিলেট সিটি করপোরেশন যদি কারা কর্তৃপক্ষের কোনো জায়গা নিতে চায় তবে অনুমতি নিতে হবে। এখানে আমাদের সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগার-২-এ এখনো কিছু আসামি কারাগারে আছে। কারাগারের কার্যক্রম চলমান। আর এখানে কোনো স্থাপনা তৈরি করতে হলে অবশ্যই সরকারে অনুমতি তো লাগবে।’

সিসিক সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ২৩ এপ্রিল সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রকৌশল শাখা থেকে এই প্রকল্পের পরিকল্পনা করা হয়। সিসিক ধোপাদিঘিকে নতুন রূপ দেওয়ার ঘোষণা দেওয়ার পর ভারত সরকার এগিয়ে আসে এর অর্থায়নে। ‘ধোপাদিঘি এরিয়া ফর বেটার এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড বিউটিফিকেশন’ নামে প্রকল্প গ্রহণ করে সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ শুরু হয়।

সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগার সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগার-২ (পুরাতন কারাগার)-এর ধোপাদিঘির পাড় অংশের সীমানা দেয়াল নির্মাণের জন্য ৭০ লাখ ১ হাজার ২৮৩ টাকার প্রকল্প অনুমোদন করেছে কারা অধিদপ্তর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত