Ajker Patrika

গারো পাহাড়ে বন্য হাতি আর মানুষের লড়াই শেষ হবে কবে

প্রতিনিধি
গারো পাহাড়ে বন্য হাতি আর মানুষের লড়াই শেষ হবে কবে

হালুয়াঘাট (ময়মনসিংহ): দেশের উত্তর–পূর্ব অঞ্চল ময়মনসিংহ ও শেরপুরের সীমান্তবর্তী গারো পাহাড়ের লোকালয়ে বন্য হাতির আক্রমণ বেড়েই চলছে। কখন হাতি গ্রামে প্রবেশ করে সে আতঙ্কে দিন কাটছে সীমান্তবর্তী হালুয়াঘাট ও পার্শ্ববর্তী নালিতাবাড়ী উপজেলার প্রায় ৪০ হাজার মানুষের।

অন্তত ২০ দিন ধরে হালুয়াঘাট উপজেলার জখমকুড়া, ধোপাজুড়ি, মহিষলেটি, বানাইচিরিঙ্গিপাড়া, গোবরাকুড়া গ্রাম এবং পার্শ্ববর্তী নালিতাবাড়ী উপজেলার পাহাড়ি সীমান্তে নাকুগাঁও, পানিহাটা গ্রামে ৫০–৬০টি বন্য হাতির আনাগোনা চলছে। ফসলের খেত তছনছ করছে।

গত বৃহস্পতিবার রাতে হালুয়াঘাট ও নালিতাবাড়ীর সীমান্তে দলছুট বন্য হাতির আছাড়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে। মারা যাওয়া ব্যক্তির নাম অপূর্ব চাম্বুগং (৪৫)। তিনি বাড়ি ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার নড়াইল ইউনিয়নের বড়কুমুরিয়া গ্রামের সুকেন ঘ্রাগরার ছেলে।

সীমান্তবর্তী দুই উপজেলার পাহাড়িদের সঙ্গে কথা বলে ও বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, প্রায় ২৫ বছর ধরে ময়মনসিংহের গারো পাহাড়ে বন্য হাতি ও মানুষের লড়াই চলছে। ধান ও কাঁঠাল পাকার মৌসুমে প্রায় প্রতিরাতে বন্য হাতি খাবারের সন্ধানে গ্রামে ঢুকে পড়ে।

১৯৯৫ সালে ২০-২৫টি হাতির একটি দল ভারতের পিক পাহাড় থেকে দলছুট হয়ে ময়মনসিংহ ও শেরপুরে সীমান্তবর্তী গারো পাহাড়ে চলে আসে। হাতির দলটি তাদের পুরোনো আবাস্থলে ফিরে যেতে পারেনি। বংশবৃদ্ধি হয়ে বর্তমানে হাতির সংখ্যা ৭০ ছাড়িয়েছে। প্রতিবছর এই দিনে সীমান্তবর্তী দুই উপজেলার পাহাড়ের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে চষে বেড়ায় তারা।

হাতিরা বিশেষ করে এই মৌসুমে খাবারের সন্ধানে ছুটে আসে লোকালয়ে, হানা দেয় সীমান্তবর্তী ফসলি জমিতে, আম, কাঁঠাল বাগান এবং ঘরবাড়িতে। পাহাড়ের বাসিন্দাদের এই সমস্যাটি নতুন নয়, গত এক যুগের বেশি সময় ধরে হাতির সঙ্গে লড়াই করে বাঁচতে হচ্ছে তাঁদের।

এক যুগ ধরে কোনো ফসলই পুরোপুরি ঘরে তুলতে পারেন না স্থানীয়রা। ফসল কাটার মৌসুমে সীমান্তে ৩০-৪০ জনের দল নিয়মিত পাহারা দিতে হয়। হাতে মশাল, ফটকা ও টর্চলাইট নিয়ে নির্ঘুম রাত কাটান তাঁরা।

হালুয়াঘাট উপজেলার মহিষলেটি গ্রামের কাজীম উদ্দিন বলেন, প্রত্যেক বছর এই সময়ে বন্য হাতি গুলাইন বেশি অত্যাচার করে। এহন আমরা অসহায়। সরকারের কাছে এর সমাধান চাই আমরা।

এই উপজেলার পার্শ্ববর্তী মায়াঘাসি পানিহাটা গ্রামের পলাশ রিছিল ও সালগারা মারাক বলেন, এই গ্রামের চারদিকে বন আর টিলা। কোন দিক দিয়ে কখন হাতি আসবে বোঝা কঠিন। আমার মনে আছে এক রাতে একবার এই গ্রামে প্রায় ৩০টি বাড়িতে আক্রমণ করেছিল বন্য হাতিরা।

পানিহাটা এলাকার ইউপি চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম খোকা জানান, এ নিয়ে গত কয়েক বছরে পাঁচজন পাহাড়ির মৃত্যু হয়েছে। এটার একটা স্থায়ী সমাধান দরকার।

এ বিষয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো উদ্যোগ নেওয়া যায় কি–না জানতে চাইলে হালুয়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রেজাউল করিম বলেন, ভারতীয় বন্য হাতির দল বাংলাদেশের প্রবেশ করার বিষয়টি উপজেলা ও জেলা প্রশাসন অবগত আছে। আর কাঁটাতারের বেড়া না থাকার বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনা এলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মসজিদে আমির হামজাকে রাজনৈতিক আলোচনা করতে নিষেধ করায় লাঞ্ছিত বিএনপি নেতা

বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে পথচারীর মৃত্যু, মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ

বিমানবন্দর রেলস্টেশনে ট্রেন থেকে আগ্নেয়াস্ত্রভর্তি ট্রলি ব্যাগ উদ্ধার

তিন ঘণ্টা পর আংশিক চালু মেট্রোরেল

ঘুষ হিসেবে পাকা কলা নেওয়ার কথা স্বীকার, দুদকের গণশুনানিতে তাৎক্ষণিক বদলির আদেশ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পুলিশের চাঁদাবাজি ও হয়রানির অভিযোগ তুলে মহাসড়কে অটোরিকশাচালকদের বিক্ষোভ

কালিয়াকৈর (গাজীপুর) সংবাদদাতা
পল্লী বিদ্যুৎ জোড়াপাম্প ও চন্দ্রা এলাকায় অটোরিকশাচালকেরা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
পল্লী বিদ্যুৎ জোড়াপাম্প ও চন্দ্রা এলাকায় অটোরিকশাচালকেরা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

গাজীপুরের কালিয়াকৈরে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের সার্ভিস রোড দখল এবং পুলিশের চাঁদাবাজি ও মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ করেছেন অটোরিকশাচালকেরা। আজ রোববার দুপুরে উপজেলার পল্লী বিদ্যুৎ জোড়াপাম্প ও চন্দ্রা এলাকায় বিক্ষুব্ধ চালকেরা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন।

এতে মহাসড়কে প্রায় এক ঘণ্টা যানবাহন আটকে পড়ে। ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা।

এলাকাবাসী, অটোরিকশাচালক ও পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতিদিন ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক দিয়ে উত্তরবঙ্গমুখী হাজারো যানবাহন চলাচল করে। কিন্তু ওই মহাসড়কে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে অটোরিকশা। এসব অটোরিকশার কারণে বাড়ছে মহাসড়কে প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা। এদিকে মহাসড়কের সার্ভিস রোড ও ফুটপাত দখল করে অবৈধভাবে হাটবাজার বসছে। উপজেলার মৌচাক, সফিপুর, পল্লী বিদ্যুৎ, জোড়াপাম্প, চন্দ্রা ত্রিমোড় এলাকায় সবচেয়ে বেশি হাটবাজার বসছে। অটোরিকশাচালকদের অভিযোগ, অবৈধ হাটবাজারে কারণে সার্ভিস রোড বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বাধ্য হয়ে অটোরিকশা নিয়ে মহাসড়কে উঠছেন তাঁরা। আর মহাসড়কে অটোরিকশা চালাতে গিয়ে হয়রানির মুখে পড়ছেন তাঁরা। বিভিন্ন স্থানে পুলিশ অটোরিকশা আটকে মামলা দিচ্ছে। অটোরিকশা থামিয়ে চাঁদাবাজিও করছেন পুলিশের অসাধু কিছু সদস্য।

অটোরিকশাচালক আলমগীর হোসেন, বিল্লাল হোসেন, আরমান মিয়া, নুরু মিয়া, বাবুল হোসেনসহ অনেকে বলেন, ‘মহাসড়কে অটোরিকশা চলাচল নিষিদ্ধ, এটা আমরা জানি। কিন্তু আমরা চলব কীভাবে? পেটের দায়ে অটোরিকশা চালাই। আমরা সার্ভিস রোড দিয়ে অটোরিকশা চলাচলের সুযোগ চাই। আর মহাসড়কে পুলিশ অটোরিকশা ধরলেই ২ হাজার ৬০০ টাকার মামলা দিচ্ছে। ওই মামলার টাকা পরিশোধে অক্ষম হয়ে অনেকেই পুলিশকে চাঁদা দিতে বাধ্য হন। চাঁদা না দিয়ে চলতে গেলেও নানাভাবে হয়রানির শিকার হতে হয়। অটোরিকশা চলার জন্য সার্ভিস রোড আছে। কিন্তু সেটা দখল করে হাটবাজার বসায় বাধ্য হয়ে অটোরিকশা মহাসড়কে ওঠাতে হচ্ছে।

এ বিষয়ে নাওজোড় হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাওগাত উল আলম বলেন, ‘কয়েকজন অটোরিকশাচালক মহাসড়ক অবরোধের চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের সরিয়ে দেয়। এ ছাড়া সার্ভিস রোড ও ফুটপাত দখল করে যাঁরা আছেন, তাঁরাও অবৈধভাবে আছেন। খুব তাড়াতাড়ি দখলকারীদের উচ্ছেদ করে সার্ভিস রোড ও ফুটপাত দখলমুক্ত করা হবে। কিন্তু ওই সার্ভিস রোডেও অটোরিকশা ওঠার নিয়ম নেই।’ অটোরিকশা আটকে পুলিশের টাকা আদায়ের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের কেউ এভাবে টাকা নিলে তার তথ্যপ্রমাণ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মসজিদে আমির হামজাকে রাজনৈতিক আলোচনা করতে নিষেধ করায় লাঞ্ছিত বিএনপি নেতা

বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে পথচারীর মৃত্যু, মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ

বিমানবন্দর রেলস্টেশনে ট্রেন থেকে আগ্নেয়াস্ত্রভর্তি ট্রলি ব্যাগ উদ্ধার

তিন ঘণ্টা পর আংশিক চালু মেট্রোরেল

ঘুষ হিসেবে পাকা কলা নেওয়ার কথা স্বীকার, দুদকের গণশুনানিতে তাৎক্ষণিক বদলির আদেশ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শ্রমিক দল নেতার বিরুদ্ধে জেলের নৌকা আটকে চাঁদা দাবির অভিযোগ

নেত্রকোনা প্রতিনিধি
খালিয়াজুরী থানা। ছবি: আজকের পত্রিকা
খালিয়াজুরী থানা। ছবি: আজকের পত্রিকা

নেত্রকোনার খালিয়াজুরীতে ধনু নদে মাছ ধরতে যাওয়া জেলের নৌকা আটকিয়ে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় শ্রমিক দল নেতা কামরুল মিয়ার বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী জেলে মো. মামুন মিয়া গতকাল শনিবার খালিয়াজুরী থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। এতে শ্রমিক দল নেতা কামরুলসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন তিনি।

অভিযুক্ত কামরুল মিয়া উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়ন শ্রমিক দলের সভাপতি। তিনি উপজেলার পাঁচহাট গ্রামের বাসিন্দা। অন্য অভিযুক্তরাও একই গ্রামের বাসিন্দা। অভিযোগকারী জেলে মামুন মিয়াও একই গ্রামের আব্দুল আওয়ালের ছেলে।

থানায় অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, মামুন মিয়া ধনু নদে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন। পাঁচহাট গ্রামে ধনু নদে কামরুল মিয়াসহ কয়েক ব্যক্তি অবৈধভাবে বাঁশের ঘের দিয়ে মিম (মাছের আবাসস্থল) তৈরি করে রেখেছেন। স্থানীয় জেলেরা সেখানে মাছ ধরতে গেলে তাঁরা বাধা দেন। গতকাল দুপুরে মামুন নৌকা, জাল ও বড়শি নিয়ে নদীতে মাছ ধরতে গেলে অভিযুক্তরা তাঁকে বাধা দিয়ে ঘের থেকে ৩০০ মিটার দূরে গিয়ে মাছ ধরতে বলেন। তিনি এতে আপত্তি জানালে অভিযুক্তরা ক্ষিপ্ত হয়ে তাঁর ইঞ্জিনচালিত নৌকা, জাল ও বড়শি জোর করে নিয়ে যান এবং নিজেদের ঘাটে আটক রাখেন। এ সময় তাঁরা পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। টাকা না দিলে নৌকা ফেরত দেওয়া হবে না বলে হুমকি দেন। এ ছাড়া, ঘটনার আগের দিন একই এলাকায় মামুন মিয়ার সহযোগী এক বড়শিওয়ালাকেও মারধর করে তাঁর কাছ থেকে নগদ ১০ হাজার টাকা ও বড়শি ছিনিয়ে নেন কামরুল ও সহযোগীরা।

এ ব্যাপারে জানতে অভিযুক্ত কামরুল মিয়ার মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।

এদিকে উপজেলা শ্রমিক দলের সভাপতি আলী উসমান বলেন, ‘অভিযোগ পুরোপুরি মিথ্যা। মামুন আওয়ামী লীগের রাজনীতি করেন। অনেক বছর তিনি ধনু নদে চাঁদাবাজিসহ আমাদের দলের নেতা-কর্মীদের হয়রানি করেছেন। মামুনের কাছে এক ব্যক্তি টাকা পান, সেই কারণে ওই ব্যক্তি তাঁর নৌকা আটক করেছিলেন। এখন তিনি প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে আমাদের শ্রমিক দলের নেতাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করেছেন। এই মিথ্যা অভিযোগের বিষয়ে স্থানীয় সবাই অবগত রয়েছেন।’

অভিযোগ তদন্তের দায়িত্বে রয়েছেন খালিয়াজুরী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ফেরদৌস রহমান। আজ রোববার তিনি বলেন, ‘অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মসজিদে আমির হামজাকে রাজনৈতিক আলোচনা করতে নিষেধ করায় লাঞ্ছিত বিএনপি নেতা

বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে পথচারীর মৃত্যু, মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ

বিমানবন্দর রেলস্টেশনে ট্রেন থেকে আগ্নেয়াস্ত্রভর্তি ট্রলি ব্যাগ উদ্ধার

তিন ঘণ্টা পর আংশিক চালু মেট্রোরেল

ঘুষ হিসেবে পাকা কলা নেওয়ার কথা স্বীকার, দুদকের গণশুনানিতে তাৎক্ষণিক বদলির আদেশ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মিয়ানমার থেকে আবারও গুলি এসে পড়ল টেকনাফের বসতঘরে

 টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি
: মিয়ানমার থেকে আজ রোববার মিয়ানমার থেকে এসে সীমান্তবর্তী টেকনাফের একটি বসতঘরে পড়া গুলি। ছবি: আজকের পত্রিকা
: মিয়ানমার থেকে আজ রোববার মিয়ানমার থেকে এসে সীমান্তবর্তী টেকনাফের একটি বসতঘরে পড়া গুলি। ছবি: আজকের পত্রিকা

মিয়ানমার থেকে আবারও একটি গুলি এসে সীমান্তবর্তী কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নে বসতঘরে পড়েছে। আজ রোববার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে আমতলী এলাকার বাসিন্দা আইয়ুব ইসলামের বসতঘরের টিনের চালা ভেদ করে গুলিটি। তবে এতে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

এর আগে গতকাল শনিবার বিকেলে মিয়ানমার থেকে আসা দুটি গুলি একই ইউনিয়নের তেচ্ছি ব্রিজ সীমান্তসংলগ্ন এলাকায় পড়ে। এতে ছেনুয়ারা (২৭) নামের এক নারী গুলিবিদ্ধ হন। তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে তীব্র সংঘর্ষ চলছে। সীমান্তবর্তী এলাকায় চলমান ওই সংঘর্ষে গুলি ছোড়া হয়, যা বাংলাদেশে এসে পড়ছে।

সর্বশেষ গুলির বিষয়ে হোয়াইক্যং ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ নুর আহমেদ আনোয়ারী বলেন, ‘মিয়ানমার সীমান্তের ওপার থেকে ছোড়া একটি গুলি স্থানীয় একটি বাড়িতে এসে পড়েছে। ভাগ্যক্রমে কেউ হতাহত হননি। তবে সীমান্তের মানুষজন আতঙ্কে রয়েছেন।’

ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য মো. রাব্বি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সকালে সীমান্তের দিক থেকে গোলাগুলির শব্দ শুনতে পাই। কিছুক্ষণ পর ঘরের টিনের চালে কিছু একটা পড়ার শব্দ পাই। বাইরে গিয়ে দেখি, টিন ছিদ্র হয়ে গেছে। পরে ঘরের দেয়াল থেকে গুলিটি উদ্ধার করি। আমাদের বাড়ি সীমান্ত থেকে প্রায় আড়াই কিলোমিটার দূরে। এত দূর থেকেও গুলি এসে লাগায় আমরা ভয়ে আছি।’

হোয়াইক্যং ইউপির ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য সিরাজুল মোস্তফা লালু বলেন, ‘আমতলী গ্রামের আইয়ুব ইসলামের বাড়িতে গুলি এসে পড়েছে বলে জেনেছি। ভাগ্যক্রমে কেউ আহত হননি। সীমান্তে প্রায়ই এমন গোলাগুলির ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দেয়। এ ধরনের ঘটনায় আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। সীমান্তবাসীকে আতঙ্কিত না হয়ে সতর্ক থাকতে হবে। পাশাপাশি প্রশাসনের পক্ষ থেকে নজরদারি ও নিরাপত্তা জোরদার করা প্রয়োজন।’

গতকালের ঘটনার বিষয়ে জানা গেছে, ওই দিন বিকেলে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে ব্যাপক গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়। কিছু সময় পর ওপার থেকে ছোড়া দুটি গুলি হোয়াইক্যং ইউনিয়নের তেচ্ছি ব্রিজ এলাকার বসতবাড়ি ও কম্পিউটারের দোকানে এসে পড়ে। এতে ঘরের টিন ও দেয়াল ছিদ্র হয়ে যায়। এর মধ্যে একটি গুলিতে ছেনুয়ারা নামের এক নারী আহত হন। ঘটনার পর সীমান্ত এলাকায় চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় অনেক পরিবার শিশু ও বৃদ্ধদের নিয়ে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিতে শুরু করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মসজিদে আমির হামজাকে রাজনৈতিক আলোচনা করতে নিষেধ করায় লাঞ্ছিত বিএনপি নেতা

বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে পথচারীর মৃত্যু, মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ

বিমানবন্দর রেলস্টেশনে ট্রেন থেকে আগ্নেয়াস্ত্রভর্তি ট্রলি ব্যাগ উদ্ধার

তিন ঘণ্টা পর আংশিক চালু মেট্রোরেল

ঘুষ হিসেবে পাকা কলা নেওয়ার কথা স্বীকার, দুদকের গণশুনানিতে তাৎক্ষণিক বদলির আদেশ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভারতীয় খাসিয়াদের গুলিতে সিলেটের যুবকের মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট  
শাকিল আহমদ। ছবি: সংগৃহীত
শাকিল আহমদ। ছবি: সংগৃহীত

সিলেটের কানাইঘাট সীমান্তে ভারতীয় খাসিয়াদের গুলিতে শাকিল আহমদ (২১) নামের এক বাংলাদেশি যুবক নিহত হয়েছেন। আজ রোববার উপজেলার লক্ষ্মীপ্রসাদ পূর্ব ইউনিয়নের ডোনা সীমান্তবর্তী ১৩৩৪ নম্বর মেইন পিলারসংলগ্ন ভারতের অভ্যন্তরে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত শাকিল ডোনা পাত্তিছড়া গ্রামের আব্দুর রহিমের ছেলে। তিনি গত সপ্তাহে বিয়ে করেছেন বলে জানা গেছে।

স্থানীয়রা জানান, শাকিলসহ দুজন আজ রোববার দুপুরে ডোনা সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের ডোনা খাসিয়াপুঞ্জিতে প্রবেশ করে সুপারি পাড়তে যান। এ সময় অস্ত্রধারী খাসিয়ারা তাঁদের ওপর গুলি করলে শাকিল গুলিবিদ্ধ হন। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাঁকে সহযোগীরা বাংলাদেশের অভ্যন্তরে নিয়ে আসেন। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে ১৯ বিজিবির অধিনায়ক মো. জুবায়ের আনোয়ার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ভারতের অভ্যন্তরে ৫০০ গজ ভেতরে খাসিয়াদের গুলিতে আহত হয়ে শাকিল নামের এক যুবক মারা গেছে। ওখানে পাহারাদার ছিল, তাদের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি করতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়। আহত অবস্থায় বর্ডারে ঢোকে। পরে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় মারা যায়।’

এ বিষয়ে কানাইঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানিয়া আক্তার বলেন, ‘আজ দুপুরে শাকিলসহ আরও দুজন ডোনা সীমান্তে ১৩৩৪ পিলারের কাছাকাছি জায়গায় ভারতীয় সুপারি আনতে গেলে খাসিয়ারা তাদের লক্ষ করে গুলি চালায়। এতে শাকিল গুলিবিদ্ধ হয়ে বাংলাদেশ সীমানায় এসে মাটিতে পড়ে। পরে তার সহযোগীরা সিলেটে ওসমানী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে মৃত্যু বরণ করে। বর্তমানে তার মরদেহ ওসমানী হাসপাতালের মর্গে আছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মসজিদে আমির হামজাকে রাজনৈতিক আলোচনা করতে নিষেধ করায় লাঞ্ছিত বিএনপি নেতা

বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে পথচারীর মৃত্যু, মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ

বিমানবন্দর রেলস্টেশনে ট্রেন থেকে আগ্নেয়াস্ত্রভর্তি ট্রলি ব্যাগ উদ্ধার

তিন ঘণ্টা পর আংশিক চালু মেট্রোরেল

ঘুষ হিসেবে পাকা কলা নেওয়ার কথা স্বীকার, দুদকের গণশুনানিতে তাৎক্ষণিক বদলির আদেশ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত