Ajker Patrika

কালবৈশাখীতে ঘর তছনছ, প্রাণে বাঁচলেও উদ্বাস্তু হলেন ভূমিহীন বৃদ্ধা

চিলমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি
কালবৈশাখীতে ঘর তছনছ, প্রাণে বাঁচলেও উদ্বাস্তু হলেন ভূমিহীন বৃদ্ধা

‘অল্পের জন্যে মুই বাচি গেইছং, কতবার কনু গাচ কাটবের, শুনিলনে ওমরা। সেই গাচ মোর ঘরটা ভাঙ্গি দিলে, অল্পের জন্য জীবনটা বাচিল মোর’, কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলছিলেন জয়গুন বেওয়া। চিলমারী উপজেলার রানীগঞ্জ ইউনিয়নের কাঁচকোল নৃশিংভাজ এলাকার বাসিন্দা জয়গুন বেওয়া (৮০)। 

ভিক্ষাবৃত্তি করে দিন চলে স্বামীহারা বৃদ্ধা জয়গুনের। নিজের জায়গাজমি না থাকায় ওই এলাকার আবুল বাশারতের বাড়িতে আশ্রয় নেন। আবুল বাশারত নিজ খরচে জয়গুনের জন্য একটি ঘর নির্মাণ করে দিয়েছেন। গতকাল বুধবার রাতের কালবৈশাখী ঝড়ে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে জয়গুন বেওয়ার সেই একমাত্র আশ্রয়। 

জয়গুনের অভিযোগ, তাঁর পাশের বাড়ির শিমুল গাছের কারণেই ঘরটি ভেঙে গেছে। এমন অভিযোগ করে চিলমারী মডেল থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছেন আবুল বাশারত। 

প্রতিবেশী মমতাজ বেগমের বাড়ির একটি শিমুল গাছের কারণে এত বড় ক্ষতি হলো বৃদ্ধার। দীর্ঘদিন থেকে গাছটি কাটতে বলে আসছিলেন জয়গুন। শিমুল গাছটির শিকরে জয়গুনের ঘর জড়িয়ে গিয়েছিল। গতকাল বুধবার রাতে ঝড়ে শিমুল গাছটির ডাল জয়গুনের ঘরে পড়ে। এতে ঘরটি গুঁড়িয়ে যায়। প্রাণে রক্ষা পেয়ে জয়গুন এখন খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছেন। 

এ বিষয়ে বাড়ির মালিক আবুল বাশারত বলেন, ‘আমি বৃদ্ধাকে ঠাঁই দিয়েছি। ঝড়ে তার ঘরটি ভেঙে গেছে। তার ঘরের পাশে একটি শিমুল গাছ ছিল। সেই গাছটি ঘরের ওপর পড়েছে। আমি এর আগে শিমুল গাছটি কাটতে মালিককে অনেকবার বলেছি, তিনি আমার কথা তোয়াক্কা করেন না। এ নিয়ে এলাকায় কয়েকবার মিটিং সালিস করা হয়। কিন্তু তাতেও কোনো সমাধান হয়নি। বাধ্য হয়ে আমি চিলমারী মডেল থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছি।’ 

গাছের মালিক মমতাজ বেগমে ছেলে মাজহারুল ইসলাম মিলন বলেন, জায়গার সমস্যার কারণে শিমুল গাছটি কাটা হয়নি। 

এ বিষয়ে রানীগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মঞ্জুরুল ইসলাম (মঞ্জু) বলেন, ‘মমতাজ বেগমের পরিবারকে গাছটি কাটতে বলেছিলাম। কিন্তু কেন যে সে গাছটি কাটেনি তা আমি জানি না।’ 

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে চিলমারী মডেল থানার ওসি আতিকুর রহমান বলেন, ‘আমি অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত