Ajker Patrika

রংপুরে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় ৩ সাংবাদিকের বিচার শুরু

রংপুর প্রতিনিধি
Thumbnail image

রংপুরে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় তিন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালত। 

গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে রংপুর সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক আবদুল মজিদ এ আদেশ দেন। এর মাধ্যমে মামলার বিচারকাজ শুরু হলো।

ওই তিন সাংবাদিকেরা হলেন—মানবকণ্ঠ ও স্থানীয় দৈনিক যুগের আলো পত্রিকার সাংবাদিক মহিউদ্দিন মখদুমী, দেশ রূপান্তরের সাংবাদিক মামুন রশিদ, অনলাইন রংপুরের কণ্ঠ ও ঢাকা পোস্টের নীলফামারীর সাংবাদিক শরিফুল ইসলাম। 

আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) রুহুল আমিন। 

মামলার এজাহার ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, মানবকণ্ঠ ও স্থানীয় দৈনিক যুগের আলো পত্রিকায় ২০২১ সালের ২৪ মে ‘ভিজিডির কার্ডে চাল নেন সদ্যপুস্করনী ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের শাশুড়ি’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেন সাংবাদিক মহিউদ্দিন মখদুমী। একই দিনে অনলাইন নিউজ পোর্টাল রংপুরের কণ্ঠের একই শিরোনামে সংবাদটি প্রকাশ করেন সাংবাদিক শরিফুল ইসলাম। দেশ রূপান্তর পত্রিকাতেও একই খবর প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনের মাধ্যমে সদ্যপুস্করনী ইউপির চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন ও ভুয়া সংবাদ প্রকাশ করে সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করা এবং বাদীর স্ত্রী ও জামাতার সুনাম ক্ষুণ্নের অভিযোগ করা হয়। কোতোয়ালি থানার উপরিদর্শক (এসআই) শাহ আলম ২০২১ সালের ৫ নভেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। 

সরকারি কৌঁসুলি রুহুল আমিন জানান, সদর উপজেলার সদ্যপুস্করনী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সোহেল রানার বিরুদ্ধে ভিজিডির চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগে সংবাদ প্রকাশ করেন সাংবাদিক মহিউদ্দিন মখদুমী, মামুন রশিদ ও শরিফুল ইসলাম। ওই সংবাদ প্রকাশের কারণে ইউপি চেয়ারম্যানের মানহানির অভিযোগে তাঁর শ্বশুর মোস্তাফিজার রাহমান বাদী হয়ে ২০২১ সালের ১৪ জুন রংপুর সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেন। পুলিশ তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করার পর দীর্ঘদিনের শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে বিচারকাজ শুরু হয়। 

এ বিষয়ে সাংবাদিক মহিউদ্দিন মখদুমী আজকের পত্রিকাকে বলেন, সদ্যপুস্করনী ইউপি চেয়ারম্যান সোহেল রানার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতি নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করায় চেয়ারম্যান ক্ষুব্ধ হয়ে স্বজনকে দিয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেছেন। 

মহিউদ্দিন মখদুমী আরও বলেন, ‘চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ওঠা অনিয়ম-দুর্নীতির সত্যতা পেয়েছে উপজেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটি। আমাদের সঙ্গে অন্যায় করা হয়েছে। আমরা এ আদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাব।’

মামলার আসামিপক্ষের আইনজীবী পলাশ কান্তি নাগ শুক্রবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, মামলায় তিন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন হওয়ার পরও তাঁরা ন্যায়বিচার পাওয়ার আশা করছেন। 

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে রংপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মেরিনা লাভলী বলেন, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করার কথা থাকলেও এখনো সেই আইনের কার্যক্রম চলছে। সেই আইনে রংপুরের তিন সাংবাদিকের বিচার কার্য শুরু হলো। রংপুরের সাংবাদিক সমাজের পক্ষে থেকে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলার তীব্র নিন্দা জানাই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত