Ajker Patrika

নাসার মহাকাশচারীদের খাবার চাষ হচ্ছে কিশোরগঞ্জে

কিশোরগঞ্জ (নীলফামারী) প্রতিনিধি
আপডেট : ১৬ জানুয়ারি ২০২২, ১৪: ০৯
নাসার মহাকাশচারীদের খাবার চাষ হচ্ছে কিশোরগঞ্জে

সারা বিশ্বে সুপার ফুড হিসেবে পরিচিত ‘কিনোয়া’। প্রচুর অ্যামিনো অ্যাসিড, ফাইবার, ভিটামিন, মিনারেল, পটাশিয়াম ও আয়রন থাকায় নাসার মহাকাশচারীরা এই খাবার খেয়ে থাকেন। সম্প্রতি বাংলাদেশের দুই কৃষক এই দানাদার ফসল আবাদে পথ দেখাচ্ছেন। 

নীলফামারীর কিশোরগঞ্জের মাগুরা ইউনিয়নের দুই কৃষক এবার এক বিঘা জমিতে কিনোয়া চাষ করেছেন। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা তুষার কান্তি রায় এই ফসল আবাদে কৃষকদের পথ দেখাচ্ছেন। 

উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্র জানায়, ‘কিনোয়া’ দানাদার খাদ্যশস্য। এতে প্রচুর অ্যামিনো অ্যাসিড, ফাইবার, ভিটামিন, মিনারেল, পটাশিয়াম ও আয়রন থাকায় নাসার মহাকাশচারীরা এটি খেয়ে থাকেন। গ্লাইসেন ইনডেক্স কম থাকায় ডায়াবেটিস রোগীদের জন্যও এটি উপকারী। এতে ১৪ থেকে ১৮ শতাংশ প্রোটিন আছে। ওজন কমাতেও এটি সহযোগিতা করে। সবজি হিসেবেও কিনোয়া বেশ সুস্বাদু। পোলাও, খিচুড়ি হিসেবে খাওয়া যায়; আবার সালাদ, স্যান্ডউইচেও ব্যবহার করা যায়। রান্না করলে এই খাবার পরিমাণে চার গুণ বৃদ্ধি পায়। পেটে দীর্ঘ সময় থাকে। স্থানীয়ভাবে চাষ হওয়া কাউনের বিকল্প হিসেবে কিনোয়া বেশ গুরুত্বপূর্ণ। 

কিনোয়ার বীজ শস্য হিসেবে খাওয়া হয়। দক্ষিণ আমেরিকা থেকে এর চাষাবাদ ছড়িয়ে পড়েছে। ১৯৮৩ সাল থেকে এটি যুক্তরাষ্ট্রে চাষ হচ্ছে। ইউরোপের কয়েকটি দেশেও এর বাণিজ্যিক চাষ হয়। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে অনেক উঁচুতে পাহাড়ি অঞ্চলে এটি চাষ হলেও বাংলাদেশের জলবায়ুর উপযোগী জাত তৈরি করেছেন স্থানীয় গবেষকেরা। 

গবেষণা করে শের-ই-বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. পরিমল কান্তি বিশ্বাস এই কিনোয়ার দেশে চাষযোগ্য প্রকরণ উদ্ভাবন করেছেন, যা কৃষকদের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। এরই মধ্যে নীলফামারীর কিশোরগঞ্জসহ কয়েকটি উপজেলায় এর আবাদ শুরু হয়েছে। মাগুরা ইউনিয়নের মাস্টারপাড়া গ্রামের কৃষক শাহজাহান আলী ১২ শতক এবং পাশের গ্রামের কৃষক বিহারি রায় ২০ শতক জমিতে কিনোয়া আবাদ করেছেন। 

কিনোয়াকৃষক শাহজাহান আলী বলেন, ‘এটা অনেক দামি ফসল। এর আগে কখনো এদিকে চাষ হয়নি। এক বিঘা জমিতে আবাদ শেষে লাখ টাকারও বেশি লাভ পাওয়া যাবে আশা করি।’ 

আরেক কৃষক বিহারি রায় বলেন, কৃষি অফিসার উৎসাহ দিয়েছেন এই ফসল আবাদের জন্য। বীজ এনে দিয়েছেন। সেটি লাগিয়েছি। দামি ফসল এটি। বিঘাপ্রতি অন্তত পাঁচ মণ ফলন হতে পারে কিনোয়ার। ৭৫ থেকে ৮০ দিনের মধ্যে ঘরে ফসল তোলা যাবে। আবাদে এখন পর্যন্ত কোনো অর্থ খরচ করতে হয়নি বলেও তিনি উল্লেখ করেন। 

কিশোরগঞ্জ উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা তুষার কান্তি রায় জানান, এই ফসল উদ্ভাবনের পর যে চার-পাঁচটি উপজেলায় আবাদ হচ্ছে, তার মধ্যে কিশোরগঞ্জ একটি। বীজ এনে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করে এখানে দুই কৃষককে দিয়ে আবাদ শুরু করা হয়েছে। 

তুষার কান্তি রায় বলেন, ‘এটি পুরোপুরি নতুন শস্য। চাহিদা রয়েছে অনেক। সুপারশপে ১ হাজার ২০০ টাকা পর্যন্ত কেজিতে বিক্রি হয়। আগামী দিনে এক একর জমিতে কিনোয়া আবাদের লক্ষ্য রয়েছে।’ 

শের-ই-বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. পরিমল কান্তি বিশ্বাস জানান, ধনী-গরিব সবার জন্য এই ফসল উদ্ভাবন করা হয়েছে, যাতে পুষ্টির চাহিদা পূরণে সহায়ক হয়। এই ফসল উৎপাদনের পর বাজারজাত করা নিয়ে প্রস্তাব তৈরি করা হচ্ছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘আমরা মরে গেলাম ঋণের দায়ে আর খাওয়ার অভাবে’, চিরকুটে লেখা

বাংলাদেশ শুল্কমুক্ত আমদানির ঘোষণা দিতেই ভারতে হু হু করে বাড়ছে চালের দাম

ফেসবুকে ছাত্রলীগ নেতার ‘হুমকি’, রাবিতে ১৫ আগস্টের কনসার্টে যাচ্ছে না আর্টসেল

জ্যেষ্ঠ সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তে উচ্চপদস্থ বোর্ড গঠন: আইএসপিআর

পাবনায় প্রবাসীর স্ত্রীকে নিয়ে এএসআই উধাও, থানায় শ্বশুরের জিডি

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত