Ajker Patrika

সুদের টাকার জন্য যুবককে মারধর, ভিডিও করায় সাংবাদিকের ওপর হামলা 

হাতীবান্ধা (লালমনিরহাট) প্রতিনিধি
আপডেট : ১৭ মার্চ ২০২৩, ১৯: ৫৪
Thumbnail image

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় সুদের পাওনা টাকার জন্য জাকির হোসেন (২৫) নামে এক মাইক্রোবাসের চালককে আটক করে মারধর করেন সিরাজুল ও তাঁর লোকজন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ভিডিও করলে সাংবাদিকদের ওপর চড়াও হয়ে অতর্কিতভাবে হামলা করেন সিরাজুল ও তাঁর লোকজন। 

পরে স্থানীয় থানায় খবর দেওয়া হলে পুলিশ এসে ভুক্তভোগী জাকির হোসেনকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়। এখন তিনি হাতীবান্ধা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন। এ ঘটনার ভিডিও ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। 

এ ঘটনায় গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে হাতীবান্ধায় থানায় সিরাজুলের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী জাকির হোসেন। এর আগে ওই দিন বিকেলে সিরাজুলের বিরুদ্ধে থানায় আরও একটি লিখিত অভিযোগ করেন সাংবাদিক মাহমুদ হাসান। 

ভুক্তভোগীরা হলেন, উপজেলার টংভাঙ্গা এলাকার আবদার হোসেনের ছেলে জাকির হোসেন ও দৈনিক কালের কণ্ঠ পত্রিকার হাতীবান্ধা উপজেলা প্রতিনিধি মাহমুদ হাসান। 

সুদের টাকার জন্য জাকির হোসেনকে মারধরঅভিযুক্ত সিরাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে থানায় একাধিক মামলা আছে। এ ছাড়া নিজেকে তিনি পুলিশের সোর্স পরিচয়ও দিয়ে থাকেন। 

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী জাকির বলেন, ‘আমি সিরাজুলের কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা সুদের ওপর নিয়ে দিই সাফিউল সর্দারকে। সাফিউল সর্দার এখন কোথায় আছে জানি না। কিন্তু আমি সেই টাকার মধ্যে ৫ হাজার টাকা ইতিমধ্যে সিরাজুলকে দিয়েছি। আর বাকি ৫ হাজার টাকা ২৫ মার্চ পরিশোধ করব বলে সময় নেই। কিন্তু বৃহস্পতিবার ১৬ মার্চ সিরাজুল আমাকে সেই টাকার জন্য আটক করে মারধর করে। খবর পেয়ে সাংবাদিকেরা এসে সিরাজুলকে প্রশ্ন করেন টাকার জন্য কাউকে আটক করা কি ঠিক? আপনি যদি টাকা পান, আর সে যদি না দেয়, তাহলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেন।’

জাকির আরও বলেন, ‘এই কথা বলা মাত্র সিরাজুল ও তার লোকজন আরও বেশি ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে মারধর করে টেনে নিয়ে যেতে থাকে। এ সময় সাংবাদিকেরা ভিডিও করলে সিরাজুল ও তার লোকজন সাংবাদিকদের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে তাঁদের ওপরেও হামলা চালায়। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে আমাকে উদ্ধার করে। তারা টাকার জন্য আমাকে প্রচুর মারধর করেছে। পুলিশ আমাকে উদ্ধার না করলে তারা হয়তো আমাকে মেরে ফেলত। আমি থানায় অভিযোগ করেছি। এর সুষ্ঠু বিচার চাই।’

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী সাংবাদিক মাহমুদ হাসান বলেন, ‘আমাদের কাজই হলো ছবি তোলা ও ভিডিও করা। জাকিরকে মারধর করার ভিডিও করলে সিরাজুল ও তার লোকজন আমাদের ওপর অতর্কিতভাবে হামলা করে। বিষয়টি পুলিশকে অবগত করা হলে। পুলিশ এসে জাকিরকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়।’ 

এ বিষয়ে অভিযুক্ত সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা তাদের কোনো মারধর করি নাই। তারাই আমাদের মারধর করেছে।’ আপনি ও আপনার লোকজন সাংবাদিক ও জাকিরের ওপর হামলা করেছেন সেই ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে বলা হলে কোনো সদুত্তর দিতে পারেনি তিনি। 

এ বিষয়ে হাতীবান্ধা প্রেসক্লাবের সভাপতি ইলিয়াস বসুনিয়া পবন বলেন, ‘সাংবাদিকের ওপর হামলা কোনোভাবে মেনে নেওয়া যায় না। সাংবাদিকের কাজ ছবি তোলা ও ভিডিও করা। এ বিষয়ে প্রেসক্লাবে আলোচনা করে সাংগঠনিকভাবে কর্মসূচি ঘোষণা দেওয়া হবে।’ 

এ বিষয়ে হাতীবান্ধা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ আলম বলেন, অভিযোগ পেয়েছেন। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত