Ajker Patrika

দিনাজপুরের খানসামায় বাড়ছে ডায়রিয়া-জ্বর-হিট স্ট্রোক

  • ৫০ শয্যার হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে ৬৯ জন রোগী।
  • ডায়রিয়ায় ১৫, জ্বরে ৩ ও হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত ১ জন রোগী চিকিৎসাধীন।
  • প্রতিদিন আসছে ২৫-৩০ জন ডায়রিয়ার রোগী।
খানসামা (দিনাজপুর) প্রতিনিধি 
খানসামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিচ্ছে রোগীরা। ছবিটি গতকাল দুপুরে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা
খানসামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিচ্ছে রোগীরা। ছবিটি গতকাল দুপুরে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

গত কয়েক দিনের তীব্র দাবদাহে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে উত্তরের জেলা দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার জনজীবন। এতে উপজেলায় ডায়রিয়া, জ্বরসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছে শিশু ও শ্রমজীবী মানুষ।

গতকাল বুধবার দুপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পুরুষ, মহিলা ও শিশু ওয়ার্ড ঘুরে দেখা যায়, ৫০ শয্যার এই হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে ৬৯ জন রোগী। এর মধ্যে ডায়রিয়া আক্রান্ত ১৫, জ্বরে আক্রান্ত ৩ জন ও হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত ১ জন রোগী চিকিৎসাধীন। অতিরিক্ত রোগীর তুলনায় জনবল কম থাকলেও চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরা আন্তরিকতার সঙ্গে চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন। শয্যার চেয়ে রোগী বেশি হওয়ায় অনেকে বারান্দায় থেকে চিকিৎসা নিচ্ছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, এক সপ্তাহ ধরে উপজেলায় ডায়রিয়া, জ্বর ও হিট স্ট্রোকের প্রকোপ বেড়েছে। প্রতিদিন জরুরি বিভাগে গড়ে ২৫-৩০ জন ডায়রিয়া, ৫৫-৬০ জন জ্বর এবং ৫-৭ জন হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত রোগী চিকিৎসা নিতে আসছে। ঈদের পরের দিন থেকে প্রতিদিন গড়ে ১৫ জন ডায়রিয়া রোগী হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে।

দিনাজপুর আঞ্চলিক আবহাওয়া অফিস জানায়, ১১ জুন দিনাজপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং দুপুর ১২টায় তাপমাত্রা দাঁড়ায় ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৫৭ শতাংশ।

উপজেলার ছাতিয়ানগড় এলাকা থেকে আসা দেলোয়ার ইসলাম বলেন, ‘ভ্যাপসা গরমে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছি। আমার আট বছরের ভাতিজার হঠাৎ করে বমি ও পাতলা পায়খানা শুরু হলে হাসপাতালে ভর্তি করি। এখন সে অনেকটা সুস্থ।’

পাকেরহাট এলাকার ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগী শামসুল হক (৪২) বলেন, ‘আমি দিনমজুর, গরমে কাজ করতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ি। পরে জরুরি বিভাগে এলে চিকিৎসকের পরামর্শে ভর্তি হই।’

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ওয়ার্ড ইনচার্জ বৃষ্টি রায় আজকের পত্রিকাকে জানান, বর্তমানে ওয়ার্ডে গড়ে প্রতিদিন ১৫ জনের বেশি ডায়রিয়া রোগী ভর্তি থাকছে। রোগীদের চাপ বাড়লেও সেবা নিশ্চিত করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন তাঁরা।

এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা শামসুদ্দোহা মুকুল বলেন, ‘আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে ডায়রিয়া, জ্বর, বমি ও হিট স্ট্রোকের রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের প্রতি সতর্ক থাকতে হবে। পাতলা পায়খানা শুরু হলে শিশুকে বারবার খাবার স্যালাইন ও বুকের দুধ খাওয়াতে হবে। প্রয়োজনে দ্রুত হাসপাতালে আনার পরামর্শ দিচ্ছি।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুজ্জামান সরকার বলেন, তীব্র তাপপ্রবাহে হিট স্ট্রোক ও পানিশূন্যতা থেকে শুরু করে ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ছে। এ জন্য স্বাস্থ্য বিভাগ, উপজেলা প্রশাসন ও ইউনিয়ন পরিষদ সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত