Ajker Patrika

দিনাজপুরে আ.লীগের নির্বাচনী গান বাজিয়ে ইকবালুর রহিমের বাড়ি ভাঙচুর

দিনাজপুর প্রতিনিধিখানসামা (দিনাজপুর) প্রতিনিধি 
আপডেট : ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২: ১৮
আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে বিক্ষুব্ধ ছাত্র–জনতা। ছবি: আজকের পত্রিকা
আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে বিক্ষুব্ধ ছাত্র–জনতা। ছবি: আজকের পত্রিকা

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভার্চুয়াল বক্তব্যের প্রতিবাদে দিনাজপুরে আওয়ামী লীগের কয়েকটি দলীয় কার্যালয় ও বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে ছাত্র-জনতা। এ ছাড়া শহরের হাসপাতাল মোড় এলাকায় দিনাজপুর সদর আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক হুইপ ইকবালুর রহিমের বাড়ি ভাঙা হয়।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে পাকেরহাট শাপলা চত্বর জড়ো হন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা। সেখান থেকে বিক্ষোভ মিছিলসহ বিক্ষুব্ধ ছাত্ররা পাকেরহাটস্থ উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে পৌঁছান। এ সময় তাঁরা শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগবিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়, বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন। তখন সাউন্ড বক্সে বিভিন্ন গান বাজিয়ে আনন্দে মাতেন। সড়কে এ সময় উৎসুক জনতার ভিড় ছিল।

এরপর রাত ১০টার দিকে শহরের হাসপাতাল মোড় এলাকায় ইকবালুর রহিমের বাড়ি এক্সকাভেটর দিয়ে ভাঙা হয়। পরে রাত পৌনে ১২টার দিকে শহরের বাসুনিয়াপট্টি এলাকায় জেলা আওয়ামী লীগ ও শহর আওয়ামী লীগের কার্যালয়ও একই এক্সকাভেটর দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।

‘জয় বাংলা, জিতবে এবার নৌকা’ গানের তালেতালে ইকবালুর রহিমের ভবনের দেয়ালে এক্সকাভেটর দিয়ে আঘাত করে। দুমড়ে-মুচড়ে ভেঙে পড়ে প্রাচীর, ভবনের খুঁটি ও দেয়াল। উৎসুক জনতা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখেন।

ভবন ভাঙার সঙ্গে সঙ্গে ইট, লোহার গ্রিল, দরজা–জানালা, প্রাচী‌রের ওপ‌রে তারকাঁটা যে যার মতো ভ্যা‌নে তু‌লে নি‌য়ে যে‌তে দেখা গে‌ছে স্থানীয়‌দের। 

আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে বিক্ষুব্ধ ছাত্র–জনতা। ছবি: আজকের পত্রিকা
আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে বিক্ষুব্ধ ছাত্র–জনতা। ছবি: আজকের পত্রিকা

এর আ‌গে গত ৪ আগস্ট বি‌কে‌লে ইকবালুর রহিমের বাসায় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়ে‌ছিল। প‌রের‌ দিন অর্থাৎ সরকার পতনের দিন বি‌কে‌লে আওয়ামী লীগ দলীয় কার্যাল‌য় ভাঙচুর ও অ‌গ্নিসং‌যোগ করা হয়ে। দলীয় দু‌টি কার্যালয় প‌রিত্যক্ত অবস্থায় প‌ড়ে থাক‌লেও মাস দু‌–এক আ‌গে ইকবালুর র‌হি‌মের বা‌ড়ি‌র জায়গায় তারকাঁটাসহ সুউচ্চ প্রাচীর দিয়ে জায়গাটি ঘিরে রাখা হয়। সেই প্রাচীর‌টি গুঁড়ি‌য়ে দি‌য়ে দ্বিতীয়বা‌রের মতো ইটসহ অন্যান্য সামগ্রী নি‌য়ে যায় স্থানীয়রা।

গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর পরিবার নিয়ে আত্মগোপনে চলে যান সাবেক হুইপ ইকবালুর রহিম। যাওয়ার পর থেকে স্থানীয় নেতা–কর্মীদের সঙ্গে তিনি কোনো যোগাযোগ করেননি বলে জানা গেছে।

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত ৫ আগস্ট প্রথম দফায় উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় ও বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা। দ্বিতীয় দফায় ৬ ফেব্রুয়ারি রাতে এই স্থাপনাগুলো গুঁড়িয়ে দেন তাঁরা।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের খানসামা উপজেলার অন্যতম ছাত্র প্রতিনিধি রহিদুল ইসলাম রাফি আজকের পত্রিকাকে বলেন, স্বৈরাচার হাসিনা এত ছাত্র–জনতাকে হত্যার পরেও ভারতে বসে ষড়যন্ত্র করছেন। এটা ছাত্র-জনতা মেনে নেবে না, তাই ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগের সব চিহ্ন মুছে দিতেই বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা এমন প্রতিবাদ করেছে।

বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার ভাবকী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কার্যালয়ও গুঁড়িয়ে দিয়েছেন বিক্ষুব্ধ ছাত্ররা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত