Ajker Patrika

বিমানে ওঠার স্বপ্ন পূরণে ১৫০ টাকা নিয়ে বাড়ি থেকে যাত্রা শিশুর

শিপুল ইসলাম, রংপুর ও জসিম উদ্দিন, নীলফামারী
আপডেট : ১৪ নভেম্বর ২০২৩, ০১: ৫৪
বিমানে ওঠার স্বপ্ন পূরণে ১৫০ টাকা নিয়ে বাড়ি থেকে যাত্রা শিশুর

বিমান আকাশে ওড়ে, মানুষ বিমানে চড়ে। মানুষও আকাশে ওড়ে। এমন চিন্তা ১০ বছর বয়সী এক শিশুর মনে। তাই সে বিমানে উঠে আকাশে ওড়ার স্বপ্ন দেখে। স্বপ্নপূরণের জন্য জমায় ১৫০ টাকা। সেই টাকা খরচ করে রংপুর থেকে নীলফামারীর সৈয়দপুর বিমানবন্দরে যায়। নিরাপত্তা বেষ্টনী ভেদ করে ঢুকে পড়ে ভিআইপি লাউঞ্জে। কিন্তু বিমানে আর ওঠা হয়নি তার। ভিআইপি লাউঞ্জে আটকে দেয় সিভিল অ্যাভিয়েশন কর্তৃপক্ষ। গতকাল রোববার সন্ধ্যা ৭টার দিকে সৈয়দপুর বিমানবন্দরে এ ঘটনা ঘটে।

ওই শিশুর বাড়ি রংপুর সিটি করপোরেশনের ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের দেওডোবা এলাকায়। সে নগরীর হাজি তমিজ উদ্দিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী। বিদ্যালয়ের পাশের একটি ফার্নিচার দোকানে বিদ্যালয় ছুটির পর কাজ করে সে। গতকাল স্কুল বন্ধ থাকায় বাড়িতে ছিল। এরপর সে বিকেল ৪টার দিকে সৈয়দপুর বিমানবন্দরের উদ্দেশে রওনা হয়।

আজ সোমবার ওই শিশুর বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, তিন শতক জমির ওপর একটি টিনের ঘর। ঘরের সামনের চুলায় রান্না বসিয়েছেন তার দাদি। সেখানে বসে আছে ওই শিশু। তাকে ঘিরে প্রতিবেশীদের জটলা। সে তাদের শোনাচ্ছিল বিমানবন্দরে ভিআইপি লাউঞ্জে পৌঁছানোর গল্প।

ওই শিশু জানায়, গতকাল আসরের আজানের পর বাড়ি থেকে বের হয় সে। ১০ টাকা অটো ভাড়া দিয়ে কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে আসে। এরপর সেখানে বাস না পাওয়ায় আরও ১০ টাকা দিয়ে মেডিকেল মোড়ে পৌঁছায়। সেখানে ৫০ টাকা ভাড়া দিয়ে বাসে করে সৈয়দপুর বাস টার্মিনালে যায়। সেখান থেকে ৫০ টাকায় একটি রিকশা ভাড়া করে বিমানবন্দরে যায়। সেখানে দুজন যাত্রীর পেছন নিয়ে ভিআইপি লাউঞ্জে পৌঁছায় সে।

শিশুটি আজকের পত্রিকাকে বলে, ‘আমার অনেক দিনের শখ বিমানে ওঠার। মানুষ নিয়ে বিমান কীভাবে আকাশে উড়ে তা দেখার। সে জন্য বিমানবন্দরে গেছি। বাইর থেকে ঘুরে দেখছি ভেতরে ঢোকা যাবে না। এরপর ভিআইপি গেট দিয়া ভেতরে ঢুকছি। আমাকে কোনো সিকিউরিটি গার্ড আনসার কেউ বাধা দেয়নি। ভেতরে ঢুকে বসেছিলাম। এরপর একজন অফিসার আমাকে জিজ্ঞাসাবা করে। আমি ঠিকানা বলি, তাঁরা কাউন্সিলরকে ফোন দেন, কাউন্সিলর মা-বাবাকে বললে আমাকে নিয়ে আসে। আমি বিমানে উঠতে পারিনি। আমার স্বপ্ন আমি বিমানের পাইলট হব।’

প্রতিবেশী ও পরিবারের লোকজন জানান, তিন ভাইবোনের মধ্যে বিমানবন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জে যাওয়া শিশুটি ছোট। পাঁচ মাস বয়সে তাকে রেখে মা অন্যত্র চলে যায়। বাবা মিঠু মিয়া পেশায় অটোরিকশার চালক। বাবার আয়ে পাঁচ সদস্যের সংসার চালাতে হিমশিম খাওয়ায় সে শহরের একটি ফার্নিচারের দোকানে কাজ করে। সেই দোকানমালিক তাকে বিদ্যালয়ে ভর্তি করিয়েছেন। শিশুটি ছোটবেলা থেকেই চঞ্চলপ্রকৃতির।

শিশুটির বাবা মিঠু মিয়া জানান, আকাশে বিমান উড়লে তা দেখতে ছোটবেলা থেকেই ঘর থেকে বাইরে ছুটে যায় সে। তার খুব ইচ্ছে বিমানে চড়ার। সে প্রায় রাতে বাবাকে বলে একদিন বিমানে উঠবে। বিমান চালাবে।

মিঠু মিয়া বলেন, ‘অভাবের তকনে ছাওয়াটাক মাইনসের দোকানোত থুছু। তায় স্কুলোত ভর্তি করি দিছে। কাল সেই মহাজনের সঙ্গে ঢাকা যাওয়ার কথা কয় বাড়ি থাকি বের হয়। রাইতোত শুনি ঢাকা নোয়ায় বিমান ওঠার জন্যে সৈয়দপুর গেইছে। পরে রাত ১১টার সময় বাড়ি নিয়া আসি।’

শিশুটির মহাজন স্থানীয় এ অ্যান্ড জেড ডোরস সিস্টেমের মালিক জিয়াউর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘শিশুটি অত্যন্ত ভালো ছেলে। তার মা নেই। আমিও নিজে এতিম। তাই তাকে আমার কাছে রেখে লেখাপড়া করাচ্ছি। সে বিদ্যালয় ছুটির পর আমার ফার্নিচারের দোকান দেখাশোনা করে। প্রায় আমাকে বিমানে ওঠার কথা বলত সে।’

হাজি তমিজ উদ্দিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহানারা বেগম বলেন, ‘শিশুটি আমার বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী। স্কুলে আসার পর বিমানবন্দরে যাওয়ার ঘটনাটি শুনেছি। তার মা নেই, কেয়ার করার মতো কেউ নেই। তাকে অনুকূল পরিবেশ ও আর্থিক সহায়তা করলেও সে ভালো কিছু করবে।’

সৈয়দপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গতকাল স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীকে প্রটোকলে এয়ারপোর্ট পৌঁছে দিতে নিরাপত্তা বেষ্টনীভেদ করে ভিআইপি লাউঞ্জে ওই শিশুর অনুপ্রবেশের বিষয়টি জেনেছি। এটা সিভিল অ্যাভিয়েশনের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। এ বিষয়ে তারা যে সিদ্ধান্ত নেবে তাই হবে।’ 

এর আগে ১১ সেপ্টেম্বর রাতে ১২ বছরের এক শিশু ভিসা-পাসপোর্ট ছাড়াই হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের একটি বিমানের ফ্লাইটে উঠে পড়ে। পরে তাকে জিম্মায় নিয়ে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে কর্তৃপক্ষ। সারা দেশে ব্যাপক আলোচিত ছিল ওই ঘটনা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বন্ধুদের সঙ্গে বান্দরবান যাওয়ার পথে প্রাণ গেল যুবকের

চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধি 
দুর্ঘটনায় আহত একজনকে অ্যাম্বুলেন্সে তোলা হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
দুর্ঘটনায় আহত একজনকে অ্যাম্বুলেন্সে তোলা হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে মিনি ড্রাম ট্রাকের সঙ্গে সংঘর্ষে ইব্রাহিম (৪১) নামের এক মোটরসাইকেলচালক নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন সালাউদ্দিন নামের মোটরসাইকেলের আরেক আরোহী।

আজ মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সকালে কালিকাপুর ইউনিয়ন মিরশ্বানী এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে এই দুর্ঘটনা ঘটে। মিয়াবাজার হাইওয়ে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) তোফায়েল আহমেদ এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

নিহত ইব্রাহিম ঢাকার ডেমরার সারুলিয়া এলাকার ডগার পশ্চিম পাড়ার আবু তালেবের ছেলে। নিহত ব্যক্তির বন্ধু সোহেল জানান, ছয়টি মোটরসাইকেলে ঢাকার ডেমরা থেকে আট বন্ধু বান্দরবানে যাওয়ার জন্য রওনা হয়েছিলেন। উপজেলার মিরশ্বানী এলাকায় পৌঁছালে পূর্ব দিক থেকে আসা একটি মিনি ড্রাম ট্রাক মহাসড়কে উঠতে গেলে একটি মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দেয়। এতে ইব্রাহিম ও সালাউদ্দিন গুরুতর আহত হন। তাঁদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখানে ইব্রাহিমের মৃত্যু হয়। আহত সালাউদ্দিনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

চৌদ্দগ্রাম স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক রবিউল হক বলেন, চিকিৎসাধীন অবস্থায় মোটরসাইকেলচালকের মৃত্যু হয়। আহত আরেকজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

মিয়াবাজার হাইওয়ে থানার এসআই তোফায়েল আহমেদ জানান, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে লাশ উদ্ধার করে পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে আসা হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষ করে স্বজনদের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হবে। মহাসড়কের অবস্থা স্বাভাবিক রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পিরোজপুরে মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন

পিরোজপুর প্রতিনিধি
শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

বিজয় দিবসে মহান মুক্তিযুদ্ধে বীর শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানিয়েছেন পিরোজপুরবাসী। আজ মঙ্গলবার সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় বলেশ্বর ঘাটের শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে ৩১ বার তোপধ্বনির মধ্য দিয়ে দিবসের কর্মসূচি শুরু হয়। শহরের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান ও সড়কে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়।

শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন পিরোজপুরের জেলা প্রশাসক আবু সাঈদ, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনজুর আহমেদ সিদ্দিকী, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক নজরুল ইসলাম খান, জেলা বিএনপির সদস্যসচিব সাইদুল ইসলাম কিসমত, পিরোজপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এস এম তানভীর আহম্মেদ, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম সমন্বয়ক আলামিন হোসেন প্রমুখ।

জেলা পরিষদ, স্বাস্থ্য বিভাগ, সরকারি সোহরাওয়ার্দী কলেজ, সড়ক বিভাগ, স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর, পিরোজপুর প্রেসক্লাবসহ জেলার বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন ফুল দিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।

সকাল ৯টায় জেলা স্টেডিয়ামে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়। আজ দিনব্যাপী বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও প্রতিযোগিতার আয়োজন করছে জেলা প্রশাসন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বিজয় দিবস উদ্‌যাপনে মুছে ফেলা হলো জুলাই আন্দোলনের গ্রাফিতি

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
স্মৃতিস্তম্ভে চুনকাম করায় গ্রাফিতিগুলো মুছে গেছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
স্মৃতিস্তম্ভে চুনকাম করায় গ্রাফিতিগুলো মুছে গেছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

ময়মনসিংহের ফুলপুরে বিজয় দিবস উদ্‌যাপনে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ থেকে মুছে ফেলা হয়েছে জুলাই আন্দোলনের গ্রাফিতি। এ নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছেন বৈষমবিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা।

সারা দেশের মতো চব্বিশের জুলাই আন্দোলনে যোগ দেন ফুলপুরের শিক্ষার্থীরাও। রাস্তা ব্যারিকেড দিয়ে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলেন তাঁরা। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে সাইফুল ইসলাম নামের এক কৃষক শহীদ হন।

আন্দোলনের শক্তি সঞ্চার করতে ফুলপুর গোলচত্বরে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভের বেদিতে ‘পানি লাগবে কারও পানি, স্বাধীনতা এনেছি সংস্কারও আনব, এক সাঈদ লোকান্তরে লক্ষ সাঈদ ঘরে ঘরে’ এমন নানা উক্তি লেখেন শিক্ষার্থীরা। বিজয় দিবস উপলক্ষে স্মৃতিস্তম্ভের দেয়ালে লেখা এসব উক্তি মুছে ফেলায় ক্ষোভ জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

জুলাই যোদ্ধা সামাদ খান নাঈম বলেন, ‘দু-তিন দিন ধরে দেখছি, আমাদের অঙ্কিত গ্রাফিতি মুছে ফেলা হয়েছে। কারা এ কাজটি করেছে জানি না; তবে তা খুব খারাপ হয়েছে। এটা আশা করিনি। আমরা আন্দোলনের ফাঁকে ফাঁকে এগুলো এঁকেছিলাম। এখন ইচ্ছে করলেই তা আঁকা সম্ভব নয়।’

এ বিষয়ে গতকাল সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে ফুলপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাদিয়া ইসলাম সীমা বলেন, জুলাই আন্দোলনের কোনো গ্রাফিতি মুছে ফেলা হয়নি। তবে প্যানা পোস্টার ছিল, সেগুলো অপসারণ করা হয়েছে। উপজেলা শহরের গোলচত্বরে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভের দেয়ালে কোনো গ্রাফিতি ছিল না বলেও দাবি করেন তিনি। পরে রাত ১২টার দিকে ফুলপুর উপজেলা প্রশাসনের ফেসবুক আইডি থেকে একটি পোস্ট করা হয়। সেখানে বলা হয়, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ অনুযায়ী গোলচত্বরে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভে রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের পোস্টার অপসারণ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে জুলাই আন্দোলনে অঙ্কিত গ্রাফিতি ফ্যাকাশে ও বিবর্ণ হয়ে স্থানীয় জুলাই যোদ্ধা ও ছাত্র প্রতিনিধিদের পরামর্শক্রমে নতুনভাবে গ্রাফিতি অঙ্কনের উদ্দেশ্যে চুন দিয়ে সাদা করা হয়। ১৬ ডিসেম্বর এই গ্রাফিতি ছাত্র-ছাত্রী ও জুলাই যোদ্ধাদের সমন্বয়ে নতুন করে আঁকা হবে বলে জানায় উপজেলা প্রশাসন। এ নিয়ে কাউকে বিভ্রান্তি না ছড়াতে অনুরোধ জানায় উপজেলা প্রশাসন।

ময়মনসিংহ সমাজ রূপান্তর সাংস্কৃতিক সংঘের সভাপতি ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, ‘কোনো কিছু মুছে দিয়ে লিখে দেওয়া প্রকৃত চেতনাকে ধারণ করে না। আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা নিজেদের অঙ্কিত লেখার মাধ্যমে সাহস সঞ্চার করেছিলেন। তাই ইতিহাস মুছে দেওয়া কোনোভাবেই কাম্য নয়।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সর্বসাধারণের শ্রদ্ধার জন্য উন্মুক্ত স্মৃতিসৌধের ফটক, আশপাশের সড়কে যান চলাচল শুরু

সাভার (ঢাকা) প্রতিনিধি
সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে বিভিন্ন সংগঠন। ছবি: আজকের পত্রিকা
সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে বিভিন্ন সংগঠন। ছবি: আজকের পত্রিকা

মহান বিজয় দিবসে সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধের ফটক। প্রায় এক মাস ধরে প্রস্তুতির পর গত চার দিন সর্বসাধারণের প্রবেশ পুরোপুরি বন্ধ ছিল স্মৃতিসৌধ এলাকায়।

আজ মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সকালে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টা জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর পর এটি সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। এর আগে স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানাতে ভোররাত থেকে আশপাশ এলাকায় ভিড় জমাতে শুরু করে সাধারণ মানুষ।

এদিকে মহান বিজয় দিবসকে কেন্দ্র করে চার স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। নিয়মিত পোশাকের বাইরে সাদাপোশাকেও দায়িত্ব পালন করছে তারা।

ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি রেজাউল করিম মল্লিক বলেন, ‘যাঁদের আত্মত্যাগের মাধ্যমে আমরা একটি স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ পেয়েছি, তাঁদের স্মরণে ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে জাতীয় স্মৃতিসৌধে দর্শনার্থীদের জন্য চার স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। এ ছাড়া সাভারের আমিনবাজার থেকে শুরু করে জাতীয় স্মৃতিসৌধ পর্যন্ত আমাদের ট্রাফিক ব্যবস্থা উন্নত করার পাশাপাশি পোশাকে এবং সাদাপোশাকে ৪ হাজারের বেশি ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে। তারা জনগণের জানমাল রক্ষাসহ সার্বিক নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকবে।’

এর আগে গতকাল ১৫ ডিসেম্বর ঢাকা জেলা পুলিশ সুপারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে রাত ৩টা থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত ঢাকা-আশুলিয়া ও ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের গাবতলী, বাইপাইল পয়েন্টে ডাইভারশন চলবে। এ সময় বিকল্প রাস্তা ব্যবহারের জন্য সকল যানবাহনের চালককে অনুরোধ করা হয়।

প্রধান উপদেষ্টার গাড়িবহর স্মৃতিসৌধ থেকে সকাল ৭টা ৫ মিনিটের দিকে ঢাকার উদ্দেশে বের হয়ে যায়। এর কিছুক্ষণ পরেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী স্মৃতিসৌধ-সংলগ্ন সড়কে যান চলাচলের অনুমতি দেয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত