Ajker Patrika

করোনাকালে অনন্য উদ্যোগ

প্রদীপ কুমার গোস্বামী, মিঠাপুকুর
আপডেট : ২৪ আগস্ট ২০২১, ১৩: ৩৫
করোনাকালে অনন্য উদ্যোগ

করোনা মহামারির এই সংকটময় সময়ে মিঠাপুকুর উপজেলায় অনন্য সহায় হিসেবে দাঁড়িয়েছে ‘চলো করোনা জয় করি’ তহবিল। এই তহবিলের অর্থায়নে হতদরিদ্র পরিবারের শিশুদের পাশাপাশি গর্ভবতী ও প্রসূতি মায়েদের খাবার দেওয়া হচ্ছে। বাড়িসংলগ্ন পতিত জমিতে গড়ে দেওয়া হয়েছে সবজির খেত। আর করোনা রোগীদের চিকিৎসায় বিতরণ করা হচ্ছে নানা সহায়তা।

স্থানীয় সাংসদ এইচ এন আশিকুর রহমানের উদ্যোগে গঠিত চলো করোনা জয় করি তহবিলের অর্থায়নে এসব নাগরিকবান্ধব কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে উপজেলা প্রশাসন।

খাদ্যসহায়তা দিতে শিশুদের তালিকা করছে উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগ। এই দপ্তরের পরিদর্শক মমিনুল হক জানান, অসচ্ছল পরিবারের শিশুদের বয়স ছয় মাস হলেই তাকে খাবার দেওয়া হয় এবং ১২ মাস বয়স পর্যন্ত এই সুবিধা বহাল থাকছে।

প্রকল্পের সুবিধাভোগী শাবানা বেগম জানান, তাঁর স্বামী অটোচালক। লকডাউনের সময় রোজগার ছিল না বললেই চলে। তখন নয় মাস বয়সী মেয়ে ছোঁয়া মণির জন্য বিনা মূল্যে দুধ, চিনি ও সুজি পাওয়ায় খুব উপকার হয়েছে।

আরেক মা তানজিনা জানান, তিনি মেয়ে মালিহার জন্য পাওয়া খাবার তিন বছর বয়সী ছেলেকেও খাওয়াচ্ছেন।

এদিকে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন জানান, চলো করোনা জয় করি তহবিলের টাকায় ১৭ ইউনিয়নে ৩৪ হাজার পরিবারের বসতবাড়িতে গড়ে তোলা হয়েছে সবজির খেত। সাংসদ আশিকুর রহমান এসব খেতের নাম রেখেছেন ‘কিচেন গার্ডেন’। এই খেতে পেঁপেসহ সাত ধরনের সবজি চাষ করা হচ্ছে।

তহবিলের অর্থায়নে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য ছয়টি অক্সিজেন কনসেনট্রেটর সরবরাহ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোশফিকুর রহমান। এর আগে করোনা থেকে সুরক্ষার জন্য বিতরণ করা হয় পিপিই।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফাতেমাতুজ জোহরা বলেন, চলো করোনা জয় করি তহবিলের অর্থায়নে করোনা পরিস্থিতিতে কর্মহীন হয়ে পড়া অসচ্ছল পরিবারের ছয় থেকে ১২ মাস বয়সী শিশুদের পুষ্টিকর খাবার দেওয়া হচ্ছে। ১৭ ইউনিয়নে এই কর্মসূচি চালু রয়েছে। হতদরিদ্র পরিবারের গর্ভবতী ও প্রসূতি মায়েদেরও খাবার দেওয়া হয়েছে।

সব কমিউনিটি ক্লিনিকে পালস অক্সিমিটার এবং হাসপাতালে চিকিৎসাধীন করোনা রোগীদের জন্য ওষুধ সরবরাহের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বলে ইউএনও জানান।

তহবিলের উদ্যোক্তা সাংসদ আশিকুর বলেন, ‘শিশুরা পরিবারের স্বপ্ন, জাতির ভবিষ্যৎ। তারা যদি পুষ্টিহীন হয়ে বেড়ে ওঠে তাহলে তো পরিবার ও জাতির অপূরণীয় ক্ষতি হবে। এ কারণে প্রতি মাসে শিশুদের জন্য পুষ্টিকর খাবার যেমন দুধ, চিনি ও সুজি সরবরাহের ব্যবস্থা করেছি। আর পরিবারের পুষ্টি চাহিদা পূরণে প্রতিটি ইউনিয়নে দুই হাজার পরিবারের বাড়িসংলগ্ন পতিত জমিতে গড়ে তোলা হয়েছে কিচেন গার্ডেন। পরিবারগুলো এসব বাগানের সবজি নিজেরা খাবে এবং বেশি হলে বাজারে বিক্রি করে কিছুটা হলেও বাড়তি আয় করতে পারবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত