নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
রাজশাহী মহানগর বিএনপির কতিপয় নেতা আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা-কর্মীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছেন। চাঁদাবাজি, মাদক কারবার, সন্ত্রাসী কার্যকলাপ এমনকি জুলাই বিপ্লবে ছাত্র-জনতার ওপর হামলার সঙ্গে সম্পৃক্ত ফ্যাসিবাদের দোসরদের পুনর্বাসনের জন্য সরাসরি মদদ দিচ্ছেন। ফলে রাজশাহী মহানগর বিএনপিতে এখন ‘হাইব্রিডের বাম্পার ফলন’ হচ্ছে। আজ রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেছেন রাজশাহী বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা।
সকালে নগরের একটি কমিউনিটি সেন্টারে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নগরের বোয়ালিয়া থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি সাইদুর রহমান পিন্টু। সংবাদ সম্মেলনে নগর যুবদলের সাবেক সভাপতি ও বিএনপি নেতা আবুল কালাম আজাদসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা বেশ কিছু অভিযোগ তুলে ধরে এসব বিষয়ে দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চান। সংবাদ সম্মেলনে কয়েক নেতার দখলদারির অভিযোগও তুলে ধরা হয়।
লিখিত বক্তব্যে সাইদুর রহমান পিন্টু বলেন, ‘বিএনপির ত্যাগী ও নির্যাতিত নেতা-কর্মীদের বাদ দিয়ে থানা ও ওয়ার্ডে পকেট কমিটি গঠন করা হচ্ছে। বিগত দিনে যেসব আওয়ামী সন্ত্রাসীদের দ্বারা বিএনপির নেতা-কর্মীরা হামলা, মামলা, জুলুম-নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, তাদেরই নগর বিএনপির কিছু নেতা নিজের ব্যক্তিগত স্বার্থে ব্যবহার করছেন, শিষ্য বানাচ্ছেন।’ তিনি দাবি করেন, নগরের রাজপাড়া থানা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক ও বর্তমান সভাপতি মিজানুর রহমান মিজান, সাবেক সদস্যসচিব ও বর্তমান সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক শাহীন আহমেদ, মাহমুদুল হক রুবেল, হারুনুর আব্দুর রাজ্জাক, কমিটির সাবেক সদস্য বদরুদ্দোজা বদর বিগত সময়ে আওয়ামী লীগ, জাসদ, জাতীয় পার্টির রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত ছিলেন। আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্কসহ বিভিন্ন অপকর্মের সঙ্গে জড়িত ছিলেন তাঁরা।
সাইদুর রহমান পিন্টু বলেন, ‘মিজানুর রহমান মিজান ও আমিনুল ইসলাম বিগত আওয়ামী লীগের শাসনামলে বিভিন্ন নির্বাচনে সরাসরি ফ্যাসিস্ট সরকারের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণা চালানোসহ দলীয় ভূমিকা পালন করেছেন।’ বিএনপির এই নেতা দাবি করেন, আমিনুল ইসলাম রাজশাহীতে ছাত্র-জনতার ওপর সরাসরি গুলিবর্ষণ করা সন্ত্রাসী রনির ঘনিষ্ঠ সহযোগী ও পৃষ্ঠপোষক। রাজশাহী সিটি নির্বাচনেও তাঁকে আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি আসাদুজ্জামানের ভাই নুরুজ্জামান টুকুর (রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক কাউন্সিলর) নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় দেখা গেছে। আর গত ৫ আগস্টের পর রাজশাহী পুলিশ লাইনস স্কুল থেকে বিতাড়িত হওয়া অধ্যক্ষ গোলাম মাওলাকে তাঁর চেয়ারে বসাতে সেখানে পেশিশক্তি দেখাতে গিয়েছিলেন মিজান। তাঁদের ইন্ধনে মহানগর যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক রুহুল আমিন বাবলুর বাসায় হামলার ঘটনাও ঘটেছে।
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, গত ২২ জুলাই বোয়ালিয়া থানা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক রবিউল আলম মিলুর বাসায় ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আব্দুল মমিনের নেতৃত্বে হামলা হয়। পরে তাঁকে পুলিশে তুলে দেওয়া হয়। মিলুর বাসায় হামলাকারী যুবলীগের সন্ত্রাসীরা বর্তমানে ভোল পরিবর্তন করে নগর বিএনপির সদস্যসচিব মামুনুর রশিদ মামুনের সঙ্গে চলাফেরা করছেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, ‘মহানগর বিএনপিতে একটি অনুপ্রবেশকারী সক্রিয় সন্ত্রাসী বলয়ের কারণে তিনটি প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। এই সন্ত্রাসী বলয় নগর বিএনপির সদস্যসচিব মামুনুর রশিদ মামুনের সরাসরি নেতৃত্ব-আশ্রয়-প্রশ্রয়ে বহাল তবিয়তে আছে। কিছুদিন আগে নগরের উপকণ্ঠে ভুগরইলে নওহাটা যুবদলের সাবেক সদস্য সালাহউদ্দিন মিন্টুর বাড়িতে গুলিবর্ষণ করা হয়। এতে তাঁর বাবা আলাউদ্দিন গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। হামলার নেপথ্যে সাঈদ, শিপলু, সোহাগ, আব্দুল্লাহ, ওবায়দুল্লাহ, শান্ত, শিমুল, ইমনের নাম উঠে এসেছে। কয়েক বছর আগেও রাজশাহী নিউমার্কেট এলাকার ব্যবসায়ী ও ওয়ার্ড যুবদল কর্মী রিয়াজকে চাঁদা না দেওয়ার কারণে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এই হত্যার পেছনে তৎকালীন মহানগর তাঁতী লীগের অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী নাঈম, রানা, রনি, অভির সম্পৃক্ততা উঠে আসে। সম্প্রতি কাদিরগঞ্জ এলাকায় স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতাকে জিম্মি করে টাকা আদায়কে কেন্দ্র করে নিরীহ রিকশাচালক গোলাম হোসেনকে খুন করা হয়। এ খুনে নাঈম, সোহেল রানা, তারেক, ফাইজুল হক ফাহি, সুমন সরদার, রনির নাম আলোচিত হয়েছে। এই তিনটি খুনের অধিকাংশ প্রধান অভিযুক্ত বিগত সময়ে ছাত্রলীগ, যুবলীগ, তাঁতী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। বর্তমানে তাঁরা নগর বিএনপির একটি শক্তিশালী বলয়ের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে লালিত-পালিত হয়ে একের পর এক অপকর্ম ও বিতর্কের জন্ম দিচ্ছেন।’
সংবাদ সম্মেলনে রাজশাহী সড়ক পরিবহন সমিতি দখলের অভিযোগও করা হয়। এতে বলা হয়, নগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক নজরুল হুদা, সদস্যসচিব মামুনুর রশিদ মামুন ও বিএনপি নেতা মনিরুজ্জামান শরীফের নেতৃত্বে রাজশাহী সড়ক পরিবহন সমিতি ৯ আগস্ট বলপূর্বক দখল নেওয়া হয়। এর আগে বিনা নির্বাচনে অবৈধভাবে নজরুল ইসলাম হেলালকে সমিতির সাধারণ সম্পাদক করে একটি কমিটিও ঘোষণা দেওয়া হয়। মামুন এর আগে নগর বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক থাকাকালীন সময়ে বাস মালিক সমিতির নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক মরহুম আনোয়ার হোসেন আনুকে পেশিশক্তি প্রয়োগ করে তাড়িয়ে দিয়ে নিজের ভাই শহিদুর রশিদ মন্টুকে বাস মালিক সমিতির দায়িত্ব দিয়েছিলেন। সেই একই সড়ক পরিবহন মালিক কমিটির তৎকালীন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন মামুনের আজ্ঞাবহ নজরুল ইসলাম হেলাল। এসব কারণে তিনি র্যাবের এর হাতে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন।
সাইদুর রহমান পিন্টু দাবি করেন, নগর বিএনপি সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক নজরুল হুদা মালোপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির সামনে অবস্থিত ব্রিটিশ কাউন্সিল অফিসের জায়গাটি অবৈধভাবে দখল করেছেন। এই বিষয়ে ইতিমধ্যে একটি মামলাও হয়েছে। তিনি বলেন, ‘উচ্ছেদ মামলা হওয়ায় আদালত এই সম্পত্তিতে “স্থিতাবস্থা” জারি করলেও নজরুল হুদা কিসের বলে কিসের জোরে, কোন আইনে এখন পর্যন্ত ওই জমির ভবনটি ব্যবহার করছেন ও ভাড়া দিয়েছেন, আমরা জানতে চাই।’
সাইদুর রহমান পিন্টু বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি যে বিপুল পরিমাণ টাকা লেনদেনের বিনিময়ে নগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ আলী ইশা, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক নজরুল হুদা ও সদস্যসচিব মামুনুর রশিদ মামুন রাজশাহীতে জুলাই বিপ্লবে হামলা, খুন এবং বিএনপি অফিস ও নেতা-কর্মীদের ওপর হামলায় জড়িত এজাহারভুক্ত বিভিন্ন আসামিকে আটক না করতে পুলিশ-প্রশাসনসহ বিভিন্ন মহলে তদবির করছেন। আবার মামলার ভয় দেখিয়ে তাদের নেতৃত্বে অনেক অরাজনৈতিক নিরপরাধ ব্যক্তি ও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকেও টাকা আদায় করা হচ্ছে।’
বিভিন্ন ওয়ার্ড কমিটি গঠনেও লেনদেন ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ তুলে ধরা হয় সংবাদ সম্মেলনে। বলা হয়, রাজপাড়া থানার ৬ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হায়দার আলী ও মাহমুদুল হক রুবেল অভিযোগ করেছিলেন যে তাঁদের না জানিয়ে কমিটিতে রাখা হয়েছে এবং তাঁরা কোনো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নন। তাই কমিটি গঠনের পরপরই তাঁরা পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছিলেন। ১১ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয়েছে রাসেল হোসেন নামের এক যুবলীগ নেতাকে। ওই যুবলীগ নেতা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকারের ঘনিষ্ঠ হওয়া সত্ত্বেও বিপুল অঙ্কের বিনিময়ে তাঁকে বিএনপিতে নেওয়া হয়।
নেতাদের অভিযোগ, নগর বিএনপির সদস্যসচিব মামুনুর রশিদ মামুন ২০১৩ ও ২০১৮ সালের সিটি নির্বাচনে ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নগরের সাবেক সভাপতি আব্দুল মমিনকে প্রত্যক্ষভাবে শুধু সহযোগিতাই করেননি বরং সরাসরি নির্বাচনী প্রচার প্রচারণায় অংশ নিয়েছিলেন। নির্বাচন-পরবর্তী ফলাফল ঘোষণার পরে ফুলের মালা দিয়ে তাঁকে বরণ করেছেন। মামুন ও ঈসা এত দিন আওয়ামী লীগের সঙ্গে আঁতাত করে ছিলেন। তাই আওয়ামী আমলে তাঁদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা হয়নি বলে তাঁরা মনে করেন।
সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্য নগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ আলী ঈসা ও সদস্যসচিব মামুন-অর-রশিদের কাছে হোয়াটসঅ্যাপে পাঠিয়ে তাঁদের বক্তব্য জানতে চাওয়া হয়। সেটি পড়ে দেখার পর মামুন বলেন, ‘আমাদের বিরুদ্ধে তোলা সব অভিযোগ ভিত্তিহীন। যারা সংবাদ সম্মেলন করেছে, তাদের প্রতি অনুরোধ করব, তারা যেন নিজের স্বার্থ ত্যাগ করে দল, দেশ এবং জনগণের জন্য কাজ করে। এই বিষয়ে এটাই আমার বক্তব্য।’
এরশাদ আলী ঈসা বলেন, ‘সাবেক যুবদল নেতা আবুল কালাম আজাদ সুইট তাঁর ব্যক্তিস্বার্থে ৫ আগস্টের পর মাউশির একজন কর্মকর্তাকে চেয়ার থেকে টেনে বের করে দেন। এ কারণে তাঁকে বহিষ্কার করেছিলাম। পরে সাবেক একজন ছাত্রনেতা হিসেবে বহিষ্কারের আদেশ প্রত্যাহার করি। কিন্তু তারপর থেকে তিনি আবার খেয়ালখুশি মতো যা খুশি করছেন। কখনো বিক্ষোভ করছেন, কখনো সংবাদ সম্মেলন করছেন। সবই মিথ্যা অভিযোগ।’
রাজশাহী মহানগর বিএনপির কতিপয় নেতা আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা-কর্মীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছেন। চাঁদাবাজি, মাদক কারবার, সন্ত্রাসী কার্যকলাপ এমনকি জুলাই বিপ্লবে ছাত্র-জনতার ওপর হামলার সঙ্গে সম্পৃক্ত ফ্যাসিবাদের দোসরদের পুনর্বাসনের জন্য সরাসরি মদদ দিচ্ছেন। ফলে রাজশাহী মহানগর বিএনপিতে এখন ‘হাইব্রিডের বাম্পার ফলন’ হচ্ছে। আজ রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেছেন রাজশাহী বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা।
সকালে নগরের একটি কমিউনিটি সেন্টারে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নগরের বোয়ালিয়া থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি সাইদুর রহমান পিন্টু। সংবাদ সম্মেলনে নগর যুবদলের সাবেক সভাপতি ও বিএনপি নেতা আবুল কালাম আজাদসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা বেশ কিছু অভিযোগ তুলে ধরে এসব বিষয়ে দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চান। সংবাদ সম্মেলনে কয়েক নেতার দখলদারির অভিযোগও তুলে ধরা হয়।
লিখিত বক্তব্যে সাইদুর রহমান পিন্টু বলেন, ‘বিএনপির ত্যাগী ও নির্যাতিত নেতা-কর্মীদের বাদ দিয়ে থানা ও ওয়ার্ডে পকেট কমিটি গঠন করা হচ্ছে। বিগত দিনে যেসব আওয়ামী সন্ত্রাসীদের দ্বারা বিএনপির নেতা-কর্মীরা হামলা, মামলা, জুলুম-নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, তাদেরই নগর বিএনপির কিছু নেতা নিজের ব্যক্তিগত স্বার্থে ব্যবহার করছেন, শিষ্য বানাচ্ছেন।’ তিনি দাবি করেন, নগরের রাজপাড়া থানা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক ও বর্তমান সভাপতি মিজানুর রহমান মিজান, সাবেক সদস্যসচিব ও বর্তমান সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক শাহীন আহমেদ, মাহমুদুল হক রুবেল, হারুনুর আব্দুর রাজ্জাক, কমিটির সাবেক সদস্য বদরুদ্দোজা বদর বিগত সময়ে আওয়ামী লীগ, জাসদ, জাতীয় পার্টির রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত ছিলেন। আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্কসহ বিভিন্ন অপকর্মের সঙ্গে জড়িত ছিলেন তাঁরা।
সাইদুর রহমান পিন্টু বলেন, ‘মিজানুর রহমান মিজান ও আমিনুল ইসলাম বিগত আওয়ামী লীগের শাসনামলে বিভিন্ন নির্বাচনে সরাসরি ফ্যাসিস্ট সরকারের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণা চালানোসহ দলীয় ভূমিকা পালন করেছেন।’ বিএনপির এই নেতা দাবি করেন, আমিনুল ইসলাম রাজশাহীতে ছাত্র-জনতার ওপর সরাসরি গুলিবর্ষণ করা সন্ত্রাসী রনির ঘনিষ্ঠ সহযোগী ও পৃষ্ঠপোষক। রাজশাহী সিটি নির্বাচনেও তাঁকে আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি আসাদুজ্জামানের ভাই নুরুজ্জামান টুকুর (রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক কাউন্সিলর) নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় দেখা গেছে। আর গত ৫ আগস্টের পর রাজশাহী পুলিশ লাইনস স্কুল থেকে বিতাড়িত হওয়া অধ্যক্ষ গোলাম মাওলাকে তাঁর চেয়ারে বসাতে সেখানে পেশিশক্তি দেখাতে গিয়েছিলেন মিজান। তাঁদের ইন্ধনে মহানগর যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক রুহুল আমিন বাবলুর বাসায় হামলার ঘটনাও ঘটেছে।
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, গত ২২ জুলাই বোয়ালিয়া থানা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক রবিউল আলম মিলুর বাসায় ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আব্দুল মমিনের নেতৃত্বে হামলা হয়। পরে তাঁকে পুলিশে তুলে দেওয়া হয়। মিলুর বাসায় হামলাকারী যুবলীগের সন্ত্রাসীরা বর্তমানে ভোল পরিবর্তন করে নগর বিএনপির সদস্যসচিব মামুনুর রশিদ মামুনের সঙ্গে চলাফেরা করছেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, ‘মহানগর বিএনপিতে একটি অনুপ্রবেশকারী সক্রিয় সন্ত্রাসী বলয়ের কারণে তিনটি প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। এই সন্ত্রাসী বলয় নগর বিএনপির সদস্যসচিব মামুনুর রশিদ মামুনের সরাসরি নেতৃত্ব-আশ্রয়-প্রশ্রয়ে বহাল তবিয়তে আছে। কিছুদিন আগে নগরের উপকণ্ঠে ভুগরইলে নওহাটা যুবদলের সাবেক সদস্য সালাহউদ্দিন মিন্টুর বাড়িতে গুলিবর্ষণ করা হয়। এতে তাঁর বাবা আলাউদ্দিন গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। হামলার নেপথ্যে সাঈদ, শিপলু, সোহাগ, আব্দুল্লাহ, ওবায়দুল্লাহ, শান্ত, শিমুল, ইমনের নাম উঠে এসেছে। কয়েক বছর আগেও রাজশাহী নিউমার্কেট এলাকার ব্যবসায়ী ও ওয়ার্ড যুবদল কর্মী রিয়াজকে চাঁদা না দেওয়ার কারণে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এই হত্যার পেছনে তৎকালীন মহানগর তাঁতী লীগের অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী নাঈম, রানা, রনি, অভির সম্পৃক্ততা উঠে আসে। সম্প্রতি কাদিরগঞ্জ এলাকায় স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতাকে জিম্মি করে টাকা আদায়কে কেন্দ্র করে নিরীহ রিকশাচালক গোলাম হোসেনকে খুন করা হয়। এ খুনে নাঈম, সোহেল রানা, তারেক, ফাইজুল হক ফাহি, সুমন সরদার, রনির নাম আলোচিত হয়েছে। এই তিনটি খুনের অধিকাংশ প্রধান অভিযুক্ত বিগত সময়ে ছাত্রলীগ, যুবলীগ, তাঁতী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। বর্তমানে তাঁরা নগর বিএনপির একটি শক্তিশালী বলয়ের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে লালিত-পালিত হয়ে একের পর এক অপকর্ম ও বিতর্কের জন্ম দিচ্ছেন।’
সংবাদ সম্মেলনে রাজশাহী সড়ক পরিবহন সমিতি দখলের অভিযোগও করা হয়। এতে বলা হয়, নগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক নজরুল হুদা, সদস্যসচিব মামুনুর রশিদ মামুন ও বিএনপি নেতা মনিরুজ্জামান শরীফের নেতৃত্বে রাজশাহী সড়ক পরিবহন সমিতি ৯ আগস্ট বলপূর্বক দখল নেওয়া হয়। এর আগে বিনা নির্বাচনে অবৈধভাবে নজরুল ইসলাম হেলালকে সমিতির সাধারণ সম্পাদক করে একটি কমিটিও ঘোষণা দেওয়া হয়। মামুন এর আগে নগর বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক থাকাকালীন সময়ে বাস মালিক সমিতির নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক মরহুম আনোয়ার হোসেন আনুকে পেশিশক্তি প্রয়োগ করে তাড়িয়ে দিয়ে নিজের ভাই শহিদুর রশিদ মন্টুকে বাস মালিক সমিতির দায়িত্ব দিয়েছিলেন। সেই একই সড়ক পরিবহন মালিক কমিটির তৎকালীন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন মামুনের আজ্ঞাবহ নজরুল ইসলাম হেলাল। এসব কারণে তিনি র্যাবের এর হাতে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন।
সাইদুর রহমান পিন্টু দাবি করেন, নগর বিএনপি সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক নজরুল হুদা মালোপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির সামনে অবস্থিত ব্রিটিশ কাউন্সিল অফিসের জায়গাটি অবৈধভাবে দখল করেছেন। এই বিষয়ে ইতিমধ্যে একটি মামলাও হয়েছে। তিনি বলেন, ‘উচ্ছেদ মামলা হওয়ায় আদালত এই সম্পত্তিতে “স্থিতাবস্থা” জারি করলেও নজরুল হুদা কিসের বলে কিসের জোরে, কোন আইনে এখন পর্যন্ত ওই জমির ভবনটি ব্যবহার করছেন ও ভাড়া দিয়েছেন, আমরা জানতে চাই।’
সাইদুর রহমান পিন্টু বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি যে বিপুল পরিমাণ টাকা লেনদেনের বিনিময়ে নগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ আলী ইশা, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক নজরুল হুদা ও সদস্যসচিব মামুনুর রশিদ মামুন রাজশাহীতে জুলাই বিপ্লবে হামলা, খুন এবং বিএনপি অফিস ও নেতা-কর্মীদের ওপর হামলায় জড়িত এজাহারভুক্ত বিভিন্ন আসামিকে আটক না করতে পুলিশ-প্রশাসনসহ বিভিন্ন মহলে তদবির করছেন। আবার মামলার ভয় দেখিয়ে তাদের নেতৃত্বে অনেক অরাজনৈতিক নিরপরাধ ব্যক্তি ও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকেও টাকা আদায় করা হচ্ছে।’
বিভিন্ন ওয়ার্ড কমিটি গঠনেও লেনদেন ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ তুলে ধরা হয় সংবাদ সম্মেলনে। বলা হয়, রাজপাড়া থানার ৬ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হায়দার আলী ও মাহমুদুল হক রুবেল অভিযোগ করেছিলেন যে তাঁদের না জানিয়ে কমিটিতে রাখা হয়েছে এবং তাঁরা কোনো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নন। তাই কমিটি গঠনের পরপরই তাঁরা পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছিলেন। ১১ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয়েছে রাসেল হোসেন নামের এক যুবলীগ নেতাকে। ওই যুবলীগ নেতা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকারের ঘনিষ্ঠ হওয়া সত্ত্বেও বিপুল অঙ্কের বিনিময়ে তাঁকে বিএনপিতে নেওয়া হয়।
নেতাদের অভিযোগ, নগর বিএনপির সদস্যসচিব মামুনুর রশিদ মামুন ২০১৩ ও ২০১৮ সালের সিটি নির্বাচনে ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নগরের সাবেক সভাপতি আব্দুল মমিনকে প্রত্যক্ষভাবে শুধু সহযোগিতাই করেননি বরং সরাসরি নির্বাচনী প্রচার প্রচারণায় অংশ নিয়েছিলেন। নির্বাচন-পরবর্তী ফলাফল ঘোষণার পরে ফুলের মালা দিয়ে তাঁকে বরণ করেছেন। মামুন ও ঈসা এত দিন আওয়ামী লীগের সঙ্গে আঁতাত করে ছিলেন। তাই আওয়ামী আমলে তাঁদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা হয়নি বলে তাঁরা মনে করেন।
সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্য নগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ আলী ঈসা ও সদস্যসচিব মামুন-অর-রশিদের কাছে হোয়াটসঅ্যাপে পাঠিয়ে তাঁদের বক্তব্য জানতে চাওয়া হয়। সেটি পড়ে দেখার পর মামুন বলেন, ‘আমাদের বিরুদ্ধে তোলা সব অভিযোগ ভিত্তিহীন। যারা সংবাদ সম্মেলন করেছে, তাদের প্রতি অনুরোধ করব, তারা যেন নিজের স্বার্থ ত্যাগ করে দল, দেশ এবং জনগণের জন্য কাজ করে। এই বিষয়ে এটাই আমার বক্তব্য।’
এরশাদ আলী ঈসা বলেন, ‘সাবেক যুবদল নেতা আবুল কালাম আজাদ সুইট তাঁর ব্যক্তিস্বার্থে ৫ আগস্টের পর মাউশির একজন কর্মকর্তাকে চেয়ার থেকে টেনে বের করে দেন। এ কারণে তাঁকে বহিষ্কার করেছিলাম। পরে সাবেক একজন ছাত্রনেতা হিসেবে বহিষ্কারের আদেশ প্রত্যাহার করি। কিন্তু তারপর থেকে তিনি আবার খেয়ালখুশি মতো যা খুশি করছেন। কখনো বিক্ষোভ করছেন, কখনো সংবাদ সম্মেলন করছেন। সবই মিথ্যা অভিযোগ।’
জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) কামাল আকবর এবং কোষাধ্যক্ষ ওয়াকার আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে শহীদ ও আহতদের পরিবারের সদস্যরা।
৫ মিনিট আগেকুড়িগ্রামের উলিপুরে আগুনে পুড়ে যাওয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় দখল করে নিয়েছেন বিএনপির নেতারা। তাঁরা সেখানে ‘চর উন্নয়ন কমিটি, উলিপুর উপজেলা শাখা’ লেখা সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দিয়েছেন। গতকাল রোববার বিকেলে সাইনবোর্ডটি লাগানো হয়। আজ সোমবার সকালেও এটি সেখানে ছিল।
১ ঘণ্টা আগেপ্রাথমিক শিক্ষা পদক ২০২৪-এর শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক হয়েছেন শিউলি সুলতানা। গর্বের এই পদকটি বাবার হাতে তুলে দিতে চেয়েছিলেন তিনি। আর এ আনন্দ নিয়ে গতকাল রোববার রাতে ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়ি নওগাঁর আত্রাই উপজেলার শাহাগোলায় ফিরছিলেন। কিন্তু রাত ১০টার দিকে খবর পান তাঁর ৮৫ বছর বয়সী বাবা আব্বাস আলী আর বেঁচে নেই।
১ ঘণ্টা আগেবিভিন্ন দাবি-দাওয়া আদায়, প্রতিবাদ কর্মসূচি ইত্যাদির নামে রাজধানীতে সম্প্রতি যখন-তখন সড়ক অবরোধের কারণে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। এতে করে স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী ও অফিসগামী যাত্রীরা নানা বিড়ম্বনার সম্মুখীন হচ্ছেন। বিদেশগামী যাত্রী ও জরুরি প্রয়োজনে অসুস্থ রোগী পরিবহনে সৃষ্টি হচ্ছে...
১ ঘণ্টা আগে