Ajker Patrika

পাবনায় বিএনপির ১৪ বছরের দ্বন্দ্ব নিরসনের সভা পেছাল

ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি
পাবনায় বিএনপির ১৪ বছরের দ্বন্দ্ব নিরসনের সভা পেছাল

পাবনার ঈশ্বরদীতে বিএনপির দুই পক্ষকে এক করবার জন্য আজ বুধবার এক সমন্বয় সভা হওয়ার কথা ছিল। এ সভা পুলিশের অনুরোধে স্থগিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে উপজেলা বিএনপি। তবে ঈশ্বরদী থানা-পুলিশ বলেছে, তাঁদের পক্ষ থেকে সভা স্থগিতের জন্য কাউকে অনুরোধ করা হয়নি।

আজ বুধবার বিকেলে শহরের উপজেলা সড়কের গ্রিন জুয়েলস কিন্ডারগার্টেন স্কুলমাঠে এ সভা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বেলা চারটার দিকে ঈশ্বরদী শহরের রেলগেটে সাবেক উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া পিন্টুর ব্যক্তিগত কার্যালয়ে সামনে উপজেলা বিএনপির পক্ষ থেকে সমন্বয় সভা স্থগিতের ঘোষণা দেওয়া হয়।

এ সময় উপজেলা বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়, আগামী ২৯ জানুয়ারি রাজশাহীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কর্মসূচির নিরাপত্তার জন্য বেলা তিনটার দিকে পুলিশ সভাস্থলে এসে আপাতত এ কর্মসূচি বন্ধ রাখার জন্য অনুরোধ করে। ফলে এ অনুরোধ মেনে নেন তাঁরা। এ সময় ভবিষ্যতে আরও বড় করে এ সমন্বয় সভা করা হবে বলেও জানান বিএনপি নেতারা।

ঈশ্বরদী পৌর ও উপজেলা বিএনপিসহ অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের সমন্বয় সভার ব্যানারে এই সভার আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ও পাবনা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান হাবিবকে।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০০৯ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচন, স্থানীয় বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের কমিটি গঠন ও দলীয় কর্তৃত্বসহ নানা বিষয় নিয়ে দীর্ঘ ১৪ বছর ধরে বিএনপি নেতা হাবিবুর রহমান হাবিবের সমর্থকদের সঙ্গে ঈশ্বরদী উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া পিন্টুর মধ্যে কোন্দল চলে আসছে।

বর্তমানে জাকারিয়া পিন্টু ১৯৯৪ সালে ঈশ্বরদীতে শেখ হাসিনার ট্রেনে হামলা ও গুলিবর্ষণ মামলায় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত হয়ে কারাগারে রয়েছেন। তিনি কারাগারে থাকলেও ঈশ্বরদীতে দুই পক্ষের দ্বন্দ্ব থেমে নেই। এ অবস্থায় তারেক রহমানের নির্দেশে দুই পক্ষকে এক করবার জন্য এ সমন্বয় সভার উদ্যোগ নিয়েছিল জেলা বিএনপি।

বিএনপি ও অঙ্গসংগঠন সংগঠনের কয়েকজন নেতা–কর্মী আজকের পত্রিকাকে জানান, সমন্বয় প্রস্তুতি হিসেবে তাঁরা সমস্ত আয়োজন সম্পন্ন করেন। কিন্তু দুপুর সাড়ে তিনটার আগেই অনুষ্ঠানস্থলে পুলিশের পক্ষ থেকে সভা স্থগিতের জন্য অনুরোধ করা হয়। কারণ হিসেবে পুলিশ আগামী ২৯ জানুয়ারি রাজশাহীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কর্মসূচির নিরাপত্তার কথা জানায়।

ঈশ্বরদীতে বিএনপির সমন্বয় সভাকে ঘিরে নিরাপত্তার জন্য পুলিশের অবস্থান।ঈশ্বরদী পৌর যুবদলের আহ্বায়ক জাকির হোসেন জুয়েল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন ছিল। যেহেতু পুলিশের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার কথাটি আমাদের বলেছে। এ জন্য আমরা পুলিশকে সম্মান দেখিয়েছি।’

এদিকে কর্মসূচি স্থগিত করার পর শহরের রেলগেটে পথসভায় বক্তব্য দেওয়ার সময় হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, ‘পুলিশের কারণে আমরা কর্মসূচি স্থগিত করেছি। তবে ভবিষ্যতে বৃহৎ পরিসরে ঈশ্বরদীতে বিএনপির সমন্বয় সভা হবে। কোনো শক্তি ঈশ্বরদীতে বিএনপিকে পরাজিত করতে পারবে না। আমরা এই লক্ষ্য নিয়ে আগামী দিনের আন্দোলন সংগ্রাম আরও জোরদার করব।’

এ সময় পৌর বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এস এম ফজলুর, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্যসচিব মেহেদি হাসান বিএনপি নেতা শামসুজ্জোহা পিপ্পুসহ দলের বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন।

ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অরবিন্দ সরকার বলেন, ‘কোনো কর্মসূচি বন্ধ বা স্থগিত রাখার জন্য আমরা কাউকে অনুরোধ করিনি। শহরের নিয়মিত টহলের অংশ হিসেবে আমরা স্কুলমাঠে দায়িত্ব পালন করছি।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত