Ajker Patrika

পাটের আবাদে ফিরেছে সুদিন, স্বপ্ন দেখছেন চাটমোহরের কৃষকেরা

শুভাশীষ ভট্টাচার্য্য তুষার, চাটমোহর (পাবনা)
আপডেট : ১২ জুলাই ২০২৫, ০৮: ৪৮
সোনালি আঁশ—পাট। ছবিগুলো চাটমোহরের ডিবিগ্রাম ইউনিয়নের সাঙ্কিভাঙ্গা বিল থেকে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা
সোনালি আঁশ—পাট। ছবিগুলো চাটমোহরের ডিবিগ্রাম ইউনিয়নের সাঙ্কিভাঙ্গা বিল থেকে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

সোনালি আঁশ খ্যাত পাট চাষে একসময় ভাটা পড়েছিল চাটমোহরে। দাম কমে যাওয়ায় আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছিলেন অনেক কৃষক। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভালো দাম পাওয়ায় আবারও আগ্রহ তৈরি হয়েছে কৃষকদের মধ্যে। চলতি বছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে চাটমোহরের ১১টি ইউনিয়নের বিভিন্ন বিলে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার বাম্পার ফলনের আশা করছেন চাষিরা। ফলে নতুন করে স্বপ্ন বুনতে শুরু করেছেন তাঁরা।

চাটমোহর উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, চলতি খরিপ-১ মৌসুমে উপজেলার ৮ হাজার ৯৬০ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে, যা নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৮০ হেক্টর বেশি। পাট চাষে উৎসাহ দিতে সরকারের পক্ষ থেকে ১ হাজার ১০০ কৃষকের মধ্যে বিনা মূল্যে সার ও বীজ বিতরণ করেছে কৃষি বিভাগ। পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত হওয়ায় সেচখরচও বাড়েনি এবং অনুকূল আবহাওয়ার কারণে রোগ-পোকার আক্রমণ তুলনামূলক কম হয়েছে। কৃষি বিভাগ মনে করছে, বাজারে ভালো দাম পেলে লাভবান হবেন কৃষকেরা, যা ভবিষ্যতে পাটের চাষ আরও বাড়াতে সহায়ক হবে।

ডিবিগ্রাম ইউনিয়নের বালুদিয়ার গ্রামের চাষি জিয়ারুল হক বলেন, ‘গত বছর পাঁচ বিঘা জমিতে পাটের চাষ করেছিলাম। মোটামুটি দাম পাওয়ায় লোকসান হয়নি। এবার ৮ বিঘা জমিতে আবাদ করেছি। ফলন ভালো হয়েছে। ন্যায্য দাম পেলে ভালো লাভ হবে।’

মথুরাপুর ইউনিয়নের ভাদড়া গ্রামের চাষি তোজাম্মেল হোসেন বলেন, ‘পাট চাষে সবচেয়ে বড় সমস্যা হয় জাগ দেওয়ার জায়গা পাওয়া। অনেক সময় দূরে জাগ দিতে গিয়ে খরচ বেড়ে যায়। তবে এবার বর্ষা আগেই শুরু হওয়ায় সেই সমস্যাও হয়নি। আশা করছি এবার দাম ভালো পাব। আমরা স্বপ্ন দেখছি, পাট চাষে আমাদের মতো কৃষকদের সুদিন ফিরবে।’

চাটমোহর উপজেলা কৃষি অফিসের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সাইদুর রহমান সাঈদ বলেন, ‘পাট চাষে চাটমোহরের কৃষকদের মধ্যে সুদিন ফিরেছে। সরকার প্রণোদনা দেওয়ায় কৃষকেরা উপকৃত হয়েছেন। পাটজাত পণ্যের ব্যবহার উৎসাহিত হওয়ায় এর কদরও বেড়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে বাজারমূল্যও। তবে কৃষক যাতে কাঙ্ক্ষিত দাম পায়, সে জন্য বাজার সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কুন্তলা ঘোষ বলেন, ‘চাটমোহরে দিনে দিনে পাটের চাষ বাড়ছে। এ বছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে আবাদ হয়েছে। কৃষি বিভাগ উন্নত জাতের পাট চাষে কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে। কৃষকেরা ভালো ফলন পাচ্ছেন। এখন ভালো দাম নিশ্চিত করা গেলে তাঁদের আগ্রহ আরও বাড়বে এবং তাঁরা লাভবান হবেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত