Ajker Patrika

বাঘায় ইঁদুরচাটা, বিশ্বসুন্দরী, বাজে কলসসহ ১৪৫ জাতের আমের প্রদর্শনী

বাঘা (রাজশাহী) প্রতিনিধি 
আপডেট : ৩০ মে ২০২৪, ১৮: ৪১
বাঘায় ইঁদুরচাটা, বিশ্বসুন্দরী, বাজে কলসসহ ১৪৫ জাতের আমের প্রদর্শনী

কৃষিপ্রযুক্তি মেলায় মাটির পাত্রে থরে থরে সাজানো বিভিন্ন জাতের আম। গতবার ১০৫ জাতের আম মেলায় ঠাঁই পেয়েছিল। তবে এবার তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪৫টিতে। 

রাজশাহী বিভাগের কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় বাঘা উপজেলায় তিন দিনব্যাপী এ মেলার উদ্বোধন করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার চত্বরে এ মেলার উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম। 

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আয়োজনে এই মেলায় ১৫টি স্টল দেওয়া হয়েছে। অন্যান্য কৃষিপণ্য প্রদর্শনীর পাশাপাশি একটি স্টলে বাঘায় উৎপাদিত ১৪৫ জাতের আম প্রদর্শন করা হয়। 

উপজেলার বিভিন্ন বাগান থেকে এসব আম সংগ্রহ করে দর্শনার্থীদের পরিচিতির জন্য প্রদর্শনী স্টল স্থাপন করা হয়েছে। এত জাতের আম দেখতে স্টলটিতে মানুষের ভিড় দেখা গেছে। দর্শনার্থীরা বলছেন, এত জাতের আম আগে কখন দেখেননি তাঁরা। 

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম বলেন, বাঘা উপজেলা হবে কৃষকদের জন্য মডেল। কৃষি খাতে যারা ভালো করেছে, তাদের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ। আর দেশের মধ্যে অন্যতম কৃষিনির্ভর বাঘা উপজেলা। কৃষি খাতে এই উপজেলায় বিপ্লব ঘটেছে। কৃষি যাদের সার্বক্ষণিক পেশা ছিল না, তাঁরা এখন কৃষিতে আসছেন। 

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিউল্লাহ সুলতান বলেন, দেশের গণ্ডি পেরিয়ে কয়েক বছর ধরে বাঘার আম বিদেশে রপ্তানি করা হচ্ছে। এ ছাড়া পেঁপে, বরই, পেয়ারা পরীক্ষামূলকভাবে বিদেশে রপ্তানি করা হয়েছে। এতে লাভবান হওয়ায় কৃষি খাতে কৃষকদের আগ্রহ অনেকাংশে বেড়েছে। আগামী মৌসুমে মিষ্টি আলু, ওল কচু ও হলুদ বিদেশে রপ্তানি করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। 

মেলায় বাঘায় উৎপাদিত ১৪৫ জাতের আম প্রদর্শন করা হয়। এগুলো হলো লক্ষণভোগ, দুধ কোমর, খালসি ফজলি, আপেল গুটি, হাইব্রিড লকনা, ক্ষীরশাপাত, ভাদরী, মধুখালসি, হিমসাগর, সুমাসী, পেঁপে ল্যাংড়া, জগৎমহনী, কাকড়ি, আড়াজাম, হাতিঝোল, দুধসাগর, আম্রপালি, আনারসী, মধু চুষকা, মল্লিকা, জাওনী, কালীভোগ আশ্বিনা, পাগাড়ে ও মধুমতী। 

কৃষি মেলায় প্রদর্শন করা বিভিন্ন জাতের আম। ছবি: আজকের পত্রিকাআরও রয়েছে—মিয়াজাকি (সূর্যডিম), ঝিনুক, আশ্বিনা, জামাইভোগ, চেংমাই, বড় গুটি, রানিপছন্দ, চোষা, চরুষা, ক্ষীরেস্বর, তোতাপুরী, ঠুটি, জসেরের গুটি, অনামিকা, বৈশাখী, জামরুলের গুটি, ফনিয়া, আড়াজাম, কৃষাণভোগ, জোহুরা, কালুয়া গুটি, কাদুমা, বারি আম-৪, আনারকলি, চাপা গুটি, ব্যানানা ম্যাঙ্গো, বউ-ভুলানো, বিশ্বসুন্দরী, কিং অব চাকাপাত, ইঁদুরচাটা, চান্দু গুটি বোম্বাই, বাবুইঝুকি, নেঙার গুটি, লাখে এক, গুটি (বড়), মিসরিভোগ, খাজাগুটি, গুটি (ছোট), বাউ গুটি, চিনি খোরা, সুরমা ফজলি, ধলা গুটি, চুঙ্গাভোগ, বাঘাশাহী, মায়াবতি, মহনভোগ, বঙ্গবাসী, সাগর ভাষা, হাড়িভাঙ্গা, আষাঢ়ী ও বালেনী। 

মকসেদ গুটি, ছাতুভিজালী, খোদা দাদা, নন্দাফ্রাম, কালীভোগ, জাইতুন, কুয়াপাহাড়ী, গোল্লা বেলী, বারি আম-১১, বাতাসী, সেনরী, গৌড়মতি, ধমীয়া, ভুজাহারী, কাটিমন (বারমাসী), সেঁদুরি, চাপাতি, গোপালভোগ, মোহন ঠাকুর, মধু রাণী, বেলী, মিছরিছানা, কইতর গুটি, দুধস্বর, সালাম ভোগ, জিলাপী কাড়া, কুমড়া জালি, শ্যামলতা, গোল কাচামিঠা, দারোগা ভোগ, গোপাল খাস, মালদহ, লেট আনারসী, রং বিলাস, বিন্দাবন গুটি, রহিমুন, দিলসা, মিসরিকান্ত, মুলতানি, চন্দনভোগ, কাজী পছন্দ, মোহনবাসী, কালী ভোগ, সুরসী গুটি, মিছরি দমদম, ঝুমকা গুটি, বেকে বৈশাখী, বাজে কলস, রাশিদা সুন্দরী, খাগড়াই, বাদল, সুরুজ আটি, ঠাকুরের ভিটা, রঘুনাথা গুটি, সিলেটি গুটি, সবেদা, সিঙ্গাপুরী ল্যাংড়া, আতা খালসী, আবুল গুটি, শাওনী আটি, রূপ সুন্দরী, চন্দনসুরী, আদরী, পেতা ও মধুমতী গুটি। 

মেলায় ঘুরতে আসা উপজেলার পীরগাছা গ্রামের কলেজশিক্ষক নবাব আলী বলেন, ‘বাঘা আমের জন্য বিখ্যাত। কিন্তু এত জাতের আম একসঙ্গে কখনো দেখি নাই।’ 

কলেজ পড়ুয়া আমিনা খাতুন বলেন, ‘১৪৫ জাতের আমের উদ্বোধনের কথা শুনে দেখতে এসেছি। কাছ থেকে এত আম দেখে খুব ভালো লাগল।’

বাঘা শাহদৌলা সরকারি কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক আবদুল হানিফ মিঞা বলেন, কৃষিপ্রযুক্তি মেলাটা অসাধারণ।

উপজেলা সফল কৃষক শফিকুল ইসলাম ছানা বলেন, তিনি কয়েক বছর ধরে বিদেশে আম পাঠাচ্ছেন। আম রপ্তানির ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারলে একদিকে কৃষক লাভবান হবে, অন্যদিকে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব হবে। 

কৃষি মেলায় প্রদর্শন করা বিভিন্ন জাতের আম। ছবি: আজকের পত্রিকাউপজেলা কৃষি অফিসারের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, কৃষি প্রযুক্তি মেলায় প্রবেশের ডান পাশে ১৪৫ প্রজাতির আমের প্রদর্শনীসহ ১৫টি স্টল দেওয়া হয়েছে। গত মেলায় ১০৫টি প্রদর্শন করা হয়েছিল। এর সংখ্যা বাড়িয়ে ১৪৫ জাতের আম প্রদর্শন করা হয়েছে। আরও অনেক আমের সন্ধান খুঁজে বের করে ভবিষ্যতে মেলার প্রদর্শনীতে আনার চেষ্টা করা হবে। 

মেলা উদ্বোধনের আগে আলোচনা সভা শেষে একটি বর্ণাঢ্য র‍্যালি অনুষ্ঠিত হয়। র‍্যালিটি উপজেলা বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। পরে ফিতা কেটে ও বেলুন উড়িয়ে মেলার উদ্বোধন করা হয়। এতে অংশগ্রহণ করেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সামসুল ইসলাম, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আশাদুজ্জামান, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিউল্লাহ সুলতান, বাঘা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সোয়েব খান প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আগামীকাল শেষ হচ্ছে নিষেধাজ্ঞা, মাছ শিকারের প্রস্তুতি নিচ্ছেন জেলেরা

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
জাল ও নৌকা মেরামতে ব্যস্ত সময় পার করছেন জেলেরা। লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার মজুচৌধুরীরহাট থেকে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা
জাল ও নৌকা মেরামতে ব্যস্ত সময় পার করছেন জেলেরা। লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার মজুচৌধুরীরহাট থেকে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

মা ইলিশ সংরক্ষণের জন্য ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হচ্ছে আগামীকাল শনিবার (২৫ অক্টোবর) মধ্যরাতে। এ কারণে লক্ষ্মীপুরের মেঘনা নদীতে মাছ শিকারে নামার জন্য পুরোদমে প্রস্তুতি নিচ্ছেন জেলেরা। জাল ও নৌকাসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম গোছাতে মাছঘাটগুলোতে এখন তাদের ব্যস্ততা চোখে পড়ার মতো। এদিকে, নিষেধাজ্ঞা চলাকালে অভিযান সফল দাবি করে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আশা করছেন, এবার ইলিশের উৎপাদন গত বছরের চেয়ে ৫০০ মেট্রিক টন বেশি হবে।

জাটকা সংরক্ষণ ও মা ইলিশ রক্ষার জন্য ৪ অক্টোবর মধ্যরাত থেকে ২৫ অক্টোবর মধ্যরাত পর্যন্ত ২২ দিন লক্ষ্মীপুরের রামগতি আলেকজান্ডার থেকে চাঁদপুরের ষাটনল এলাকার ১০০ কিলোমিটার পর্যন্ত মেঘনা নদীতে সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ ছিল।

জেলা মৎস্য অফিসের তথ্য অনুযায়ী, এই সময়ে দুই শতাধিক মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে অর্ধশতাধিক জেলেকে জেল-জরিমানা করা হয়।

অভিযানকালে প্রায় ১০ লাখ মিটার কারেন্ট জাল, ১০টি নৌকা ও প্রায় ১ হাজার কেজি ইলিশ জব্দ করা হয়। জব্দকৃত ইলিশ এতিমখানায় বিতরণ করা হয়েছে।

নিষেধাজ্ঞা শেষে নদীতে নামার জন্য জেলেরা এখন নৌকা ও জাল মেরামতের কাজ করছেন। জেলেরা জানান, এবারের অভিযান কঠোর ছিল এবং তারা সরকারের আইন মেনেই মাছ ধরা থেকে বিরত ছিলেন। তবে তাদের অভিযোগ, নিষেধাজ্ঞার সময় বরাদ্দকৃত চাল (৪৪ হাজার জেলেকে ২৫ কেজি হারে মোট ১ হাজার ১৪ মেট্রিক টন) কিছু ক্ষেত্রে অন্য পেশার লোকজনকে দেওয়া হয়েছে। নিষেধাজ্ঞা উঠে গেলে তারা পুরোদমে আবার মাছ ধরা শুরু করবেন।

লক্ষীপুর-২
লক্ষীপুর-২

এবারের অভিযান সফল হয়েছে জানিয়ে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, "গতবারের চেয়ে এবার ইলিশের উৎপাদন আরও বৃদ্ধি পাবে। " তিনি আশা করেন, এ বছর লক্ষ্মীপুরে ইলিশ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ২৩ হাজার মেট্রিক টন হবে, যা গত বছরের চেয়ে ৫০০ মেট্রিক টন বেশি। তিনি আরও জানান, ভবিষ্যতে এই ধরনের কঠোর অভিযান অব্যাহত ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

লালমনিরহাটে বৈষম্যবিরোধী ও আওয়ামী লীগের ২ শতাধিক নেতা-কর্মীর বিএনপিতে যোগদান

লালমনিরহাট প্রতিনিধি 
রোকন উদ্দিন বাবুলের হাতে ফুল দিয়ে বিএনপিতে যোগদান করেন নেত-কর্মীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
রোকন উদ্দিন বাবুলের হাতে ফুল দিয়ে বিএনপিতে যোগদান করেন নেত-কর্মীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের লালমনিরহাট জেলার মুখপাত্র সদস্য রাশেদুল ইসলাম রাশেদের নেতৃত্বে শতাধিক নেতাকর্মী বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলে (বিএনপি) যোগদান করেছেন। বৃহস্পতিবার রাতে কালীগঞ্জ কেইউপি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত বিএনপির জনসভায় জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি রোকন উদ্দিন বাবুলের হাতে ফুল দিয়ে তারা আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপিতে যোগ দেন। এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীদের পাশাপাশি স্থানীয় সনাতন ধর্মাবলম্বী শতাধিক আওয়ামী লীগ সমর্থকও বিএনপিতে যোগদান করেন।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ঘোষিত ‘রাষ্ট্র মেরামত’র ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কালীগঞ্জ উপজেলা বিএনপি এই জনসভার আয়োজন করে। জনসভার প্রধান অতিথি জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ও লালমনিরহাট-২ আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশী রোকন উদ্দিন বাবুলের হাতে ফুল দিয়ে তারা আনুষ্ঠানিকভাবে দলে যোগ দেন।

কালীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক বিধান চন্দ্র রায়ের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জনসভায় আরও বক্তব্য রাখেন আদিতমারী উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মোস্তাফিজুর রহমান, কালীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক সামছুজ্জামান সবুজ, আদিতমারী উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক এইচএম ইদ্রীস আলী, স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক শাহারিয়ার আলম রনি, কৃষক দলের আহ্বায়ক শরিফুল ইসলাম মিঠু, ছাত্রদলের আহ্বায়ক আব্দুল হালিম এবং কালীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মতিনুর রহমান মতিন প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নালিতাবাড়ীতে ইসলামি সম্মেলনে চার যুগলের যৌতুকবিহীন বিয়ে

নালিতাবাড়ী (শেরপুর) প্রতিনিধি 
বিয়ের খুতবা ও আকদ পরিচালনা করেন খতমে নবুওয়াত সংরক্ষণ কমিটির আমির আল্লামা আবদুল হামিদ। ছবি: আজকের পত্রিকা
বিয়ের খুতবা ও আকদ পরিচালনা করেন খতমে নবুওয়াত সংরক্ষণ কমিটির আমির আল্লামা আবদুল হামিদ। ছবি: আজকের পত্রিকা

শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে ইসলামি সম্মেলনে চারটি যৌতুকবিহীন বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) রাত সাড়ে ১১টার দিকে স্থানীয় শহীদ মিনার মঞ্চে মানবকল্যাণ সংস্থা ‘ইনসাফ’-এর আয়োজনে এই বিয়ে চারটি অনুষ্ঠিত হয়।

সম্পূর্ণ বিনা যৌতুকে ও নামমাত্র খরচে আয়োজিত এই বিয়ের আয়োজন স্থানীয়ভাবে ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছে। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ইত্তেফাকুল উলামা নালিতাবাড়ী শাখার সভাপতি মাওলানা উবায়দুর রহমান। বিয়ের খুতবা ও আকদ পরিচালনা করেন খতমে নবুওয়াত সংরক্ষণ কমিটির আমির আল্লামা আবদুল হামিদ।

ইনসাফ সূত্রে জানা গেছে, বর্তমান সময়ে বিয়েতে অযথা আড়ম্বর ও ব্যয়বহুল আয়োজনের কারণে অনেক যুবক বিয়ে করতে সাহস পান না। এই পরিস্থিতিতে ইসলামি রীতি মেনে, স্বল্প খরচে ও সম্পূর্ণ যৌতুকবিহীন বিয়ের আয়োজন শুরু করেছে সংস্থাটি।

যৌতুকবিহীন বিয়েতে অংশ নেন চার যুগল। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন,

প্রথম যুগল—পশ্চিম শিমুলতলা গ্রামের সিরাজ আলীর ছেলে ও ইনসাফের চেয়ারম্যান মাওলানা হাবিবুল্লাহ পাহাড়ী এবং বাগিচাপুর গ্রামের বজলুর রশিদের মেয়ে আলেমা মোছাম্মদ হাবিবা।

দ্বিতীয় যুগল—নাকশী গ্রামের সাইফুল আলমের ছেলে ও ইনসাফের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. সাব্বির হাসান এবং ফুলপুর বান্দেরবাজার গ্রামের রূপচাঁদ মিয়ার মেয়ে মোছা. ইভা ইসলাম।

তৃতীয় যুগল—বাইপাস দক্ষিণ কালিনগর গ্রামের আবদুর রশিদের ছেলে মোহাম্মদ আবু সাঈদ এবং গাজির খামার গ্রামের রফিকুল ইসলামের মেয়ে মোছা. রেশমা।

চতুর্থ যুগল—ফকিরপাড়া গ্রামের আব্বাস আলীর ছেলে আলি আহসান মোজাহিদ এবং ফুলপুর গ্রামের জয়নাল আবেদীনের মেয়ে জাকিয়া খাতুন।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন খতমে নবুওয়াত সংরক্ষণ কমিটির সভাপতি আল্লামা মুফতি ওয়াহিদুল আলম, মুফতি শহীদুল্লাহ মাহমুদ এবং নালিতাবাড়ী নূর মসজিদের ইমাম ও খতিব মাওলানা আরিফুর রহমান।

ইনসাফের চেয়ারম্যান মাওলানা হাবিবুল্লাহ পাহাড়ী বলেন, ‘যৌতুক প্রথা ইসলামের দৃষ্টিতে অন্যায় ও সমাজের জন্য অভিশাপ। সমাজ থেকে এই প্রথার অবসান ঘটাতে ইনসাফ যৌতুকবিহীন বিবাহের এই উদ্যোগ নিয়মিতভাবে চালিয়ে যাবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আমনখেতে পোকার আক্রমণে দিশেহারা ফুলবাড়ীর কৃষক

ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি 
পোকার আক্রমণে নষ্ট হচ্ছে খেতের ফসল। এতে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে কৃষকের কপালে। ছবি: আজকের পত্রিকা
পোকার আক্রমণে নষ্ট হচ্ছে খেতের ফসল। এতে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে কৃষকের কপালে। ছবি: আজকের পত্রিকা

সপ্তাহ দুয়েক পর শুরু হবে পুরোদমে আম ধান কাটা-মাড়াই। কৃষকের গোলায় উঠবে নতুন আমন ধান। এর মধ্যে মাজরা ও কারেন্ট পোকা নিয়ে বিপাকে পড়েছেন দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার আমনচাষিরা। মৌসুমের শেষ সময়ে এসে পোকার আক্রমণে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তাঁরা।

উপজেলার অধিকাংশ মাঠে পোকার আক্রমণ বেড়েছে। বেশ কিছু জমিতে ধানগাছ শুকিয়ে গেছে। কৃষকেরা ফসলের মাঠে ওষুধ স্প্রে করছেন; কিন্তু কিছুতেই কিছু হচ্ছে না। ফলে কৃষকের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। বুধবার (২২ অক্টোবর) সকালে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

দিনাজপুর-২
দিনাজপুর-২

কৃষকেরা বলছেন, কারেন্ট পোকা ধানগাছের নিচের অংশ কেটে দিচ্ছে। ফলে পাতা শুকিয়ে ধানের গাছ মরে যাচ্ছে। অপর দিকে মাজরা পোকার আক্রমণে পরিপক্ব হওয়ার আগেই ধানের শিষ চিটা হয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া কিছু ধানগাছের গোড়া পচে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এমন অবস্থায় চরম হতাশায় দিন কাটছে তাদের।

মাদিলা হাট এলাকার কৃষক আবু সালেহ ও আলাদীপুর এলাকার কৃষক মকবুল হোসেন বলেন, ‘জমিতে পোকার আক্রমণে চরম সমস্যায় পড়েছি। ধানের শিষ বের হয়েছে, অথচ জমিতে এখন কীটনাশক ছিটানোর কাজে ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে। প্রতিদিন বিভিন্ন ধরনের কীটনাশক ছিটানো হচ্ছে, তবু পোকার হাত থাকে রেহাই মিলছে না। ফলে কাঙ্ক্ষিত ফসল ঘরে তোলা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছি।’

দিনাজপুর-৩
দিনাজপুর-৩

কৃষকেরা অভিযোগ করে বলেন, তালিকাভুক্ত কিছু নির্দিষ্ট কৃষক ছাড়া কৃষি কর্মকর্তা কিংবা মাঠকর্মীরা তাঁদের কোনো খোঁজ রাখেন না। ফলে কীটনাশকের দোকানদারেরা যে ওষুধ দেন, তা জমিতে স্প্রে করা হয়।

উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এবার উপজেলায় ১৮ হাজার ১৪৮ হেক্টর জমিতে আমন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে হাইব্রিড ও উফশী জাতের তেজগোল্ড, ব্রি-৯০, বিনা-১৭, সম্পাকাটারি, জাঁপাড়ি, ধানিগোল্ডসহ বিভিন্ন আগাম জাতের ধান ৩ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে চাষ করা হয়েছে। আগাম জাতের এসব আমন ধান কাটা-মাড়াই প্রায় শেষ।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. সাইফ আব্দুল্লাহ বলেন, ‘আবওহাওয়ার কারণে এবার একটু বেশি পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে। তবে মাঠপর্যায়ে উঠান বৈঠকসহ কৃষকদের সচেতন করতে আমরা কাজ করছি।’ তিনি আরও বলেন, ইতিমধ্যে আমন ধান কাটা শুরু হয়েছে। তবে (৩৪) সুগন্ধি ধান যেহেতু শেষে পাকে, তা নিয়ে একটু বেশি চিন্তিত।

কৃষকদের অভিযোগ অস্বীকার করে এ কৃষি কর্মকর্তা বলেন, ‘কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে মাঠকর্মীরা সার্বক্ষণিক মাঠপর্যায়ে কৃষকদের নিয়ে কাজ করছে। আমি নিজেও বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে খোঁজখবর নিয়েছি। কৃষকদের ভালো মানের কীটনাশক ব্যবহার করতে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।’ তিনি বলেন, কৃষকদের বাড়ি বাড়ি যাওয়া সম্ভব নয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত