রিমন রহমান, রাজশাহী
ট্রাকের পেছনের দিকে দাঁড়িয়ে থাকেন এক ব্যক্তি। নিচ থেকে আরেক ব্যক্তি তাঁকে ছাগলের একটি পা ধরিয়ে দেন। এক পা ধরেই ট্রাকে থাকা ব্যক্তি ছাগলটিকে শূন্যে ছুড়ে মারেন। ছাগলটি উড়ে উড়ে গিয়ে পড়ে ট্রাকের ওপর। কখনো কান, কখনো গলা ধরেও ছাগলকে এভাবে ট্রাকে তোলা হয়। এই নিষ্ঠুরতার শিকার ছাগলগুলো তখন ভ্যা ভ্যা করে চিৎকার করে। ভয়ে জিহ্বা ও চোখ বের করে দেয়।
সপ্তাহের ছয় দিন বিকেলে রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার বেলপুকুর মোড়ে এমন দৃশ্য চোখে পড়ে। ছাগলের প্রতি এই ‘নিষ্ঠুরতা’ বন্ধের দাবি জানিয়েছেন প্রাণীপ্রেমীরা। তাঁরা বলছেন, কাঠের সিঁড়ি দিয়েও সহজে ছাগলকে ট্রাকে তোলা যায়। প্রাণীর প্রতি নিষ্ঠুরতা বন্ধে আইন আছে। সেটি প্রয়োগ করা দরকার।
সপ্তাহের ছয় দিন রাজশাহীর বিভিন্ন উপজেলায় ছাগলের হাট বসে। এর মধ্যে শনিবার ও মঙ্গলবার হাট বসে বানেশ্বরে। সপ্তাহের রোববার বাদ দিয়ে সোমবার নওহাটা, মুণ্ডুমালা, তাহেরপুর, ভবানীগঞ্জ ও পুঠিয়ার নন্দনগাছিতে হাট বসে। এ ছাড়া বুধবার রুস্তমপুর, দুর্গাপুর ও কেশরহাট, বৃহস্পতিবার নওহাটা, মোহনগঞ্জ, কাঁকনহাট ও বাঘা এবং শুক্রবার তাহেরপুর, নন্দনগাছি ও ভবানীগঞ্জে পশুহাট বসে।
কোরবানির ঈদ সামনে রেখে ব্যাপারীদের আনাগোনা এখন আরও বেড়ে গেছে। তাঁরা হাট থেকে ছাগল কিনে এনে বেলপুকুর বাইপাসে ট্রাকে তুলছেন। ট্রাকের চালক ও তাঁর সহকারী এবং দুজন শ্রমিক ছাগলগুলো আড়তে পৌঁছে দিয়ে আসেন। ব্যাপারীরা বেলপুকুর কিংবা আশপাশের গ্রামেই ভাড়া নেওয়া বাড়িতে থাকেন। সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় তাঁদের বাড়ি। শুধু ছাগল কেনার জন্য বেলপুকুর এলাকায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকেন অন্তত ৩০ জন ব্যাপারী। সকালে তাঁরা হাটে যান, বিকেলে ফেরেন। বেলপুকুর থেকে সপ্তাহের ছয় দিন বিকেলে কমপক্ষে তিনটি ট্রাক ছাগল ভর্তি করে রাজধানীতে যায়। প্রতিটি ট্রাকে থাকে ১৫০ থেকে ২০০টি ছাগল।
বৃহস্পতিবার বিকেলে বেলপুকুরে ট্রাকে ছাগল তোলা হচ্ছিল। তখন দেখা যায়, ট্রাকের পেছনে দাঁড়িয়ে থাকা এক ব্যক্তির হাত পর্যন্ত ছাগল তুলে ধরছেন ব্যাপারী। ট্রাকে থাকা ব্যক্তি ছাগলের একটি পা ধরে সজোরে ছুড়ে মারছেন ট্রাকের দিকে।
নিজের সুবিধামতো ট্রাকে থাকা ব্যক্তি কখনো ধরছেন ছাগলের কান, আবার কখনো ধরছেন গলা। ছাগলকে ছুড়ে মারছেন। আরেকটি ট্রাকের ওপর লোহার খাঁচা তৈরি করা ছিল। ছাগলগুলোকে সেই খাঁচার ভেতর ছুড়ে মারতেও দেখা গেছে। এতে ছাগল আহত হয়। ভয়াবহ চিৎকার করে। এভাবে আহত অবস্থায় ছাগলগুলোকে ঢাকায় আড়তে পাঠানো হচ্ছে।
কিছু ছাগল কোরবানির হাটে উঠবে। কিছু আড়ত থেকে চলে যাবে কসাইখানায়।
ব্যাপারী সিরাজুল ইসলাম স্বীকার করে বলেন, ট্রাকে তোলার সময় অনেক ছাগলের পা পর্যন্ত ভেঙে যায়। জখম হয়। কিন্তু এগুলোর আর চিকিৎসা করান না। ঢাকায় পৌঁছানোর পরই জবাই হয়ে যায়।
সিরাজগঞ্জ থেকে আসা এই ব্যবসায়ী বলেন, ‘এগুলান তো কসাই মাল। শেষবেলায় এত কিছু দেখলে হবে না। ঢাকায় যাওয়ামাত্রই তো গলায় ছুরি বসবে। যদি পালার (পালনের) হতো, তাহলে ভিন্ন কথা। কোরবানি দিলেও তো বেশি দিন নাই।’
বাংলাদেশের প্রাণিকল্যাণ আইন-২০১৯ অনুযায়ী, কোনো কাজ করা কিংবা না করা প্রাণীর অসুস্থতার কারণ হলে তা প্রাণীর প্রতি নিষ্ঠুর আচরণ হিসাবে গণ্য হবে। অর্থাৎ ছাগলগুলোকে এভাবে ট্রাকে তোলা নিষ্ঠুরতার মধ্যেই পড়ে। প্রাণিকল্যাণ আইনে এই অপরাধের অনধিক ছয় মাসের বিনা শ্রম কারাদণ্ড বা অনধিক ১০ হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করার বিধান আছে।
এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে ছাগলের ব্যাপারী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আমরা অতো আইনকানুন জানি না। আর ছাগলকে নিয়েও যে আইন থাকতে পারে, সেটাও তো জানা নাই।’
ট্রাকচালক মো. মমিনের বাড়ি বেলপুকুর এলাকাতেই। মমিন জানালেন, তিনি আগে ট্রাকের চালকের সহকারী বা হেলপার ছিলেন। বছর পাঁচেক আগে চালক হয়েছেন। তখন থেকেই ঢাকার যাত্রাবাড়ী আড়তে ছাগল নিয়ে যান। বিশেষ কায়দায় এভাবেই ট্রাকে ছাগল তোলা হয়। তাঁর ট্রাকে গাদাগাদি করে ২০০ থেকে ২৫০টি ছাগল তোলা হয়। প্রত্যেকটি ছাগলকে ঢাকায় নেওয়ার ভাড়া ১০০ টাকা।
জামিয়া ইসলামীয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মুফতি শাহাদাত আলী বলেন, কোরবানির পশুকে এমনভাবে পরিবহন করতে হবে যেন স্বাচ্ছন্দ্যে থাকে। কষ্ট দেওয়া যাবে না। এটাই ইসলামের বিধান।
জেলা জজ আদালতের আইনজীবী এন্তাজুল হক বাবু বলেন, প্রাণীর প্রতি নিষ্ঠুরতা বন্ধে প্রাণিকল্যাণ আইন-২০১৯ প্রণয়ন হয়েছে। এই আইনের অধীন সংঘটিত অপরাধের জন্য নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোবাইল কোর্ট আইন-২০০৯ এর ৫৯ নম্বর আইন অনুযায়ী তাৎক্ষণিক শাস্তি দিতে পারেন।
ট্রাকের পেছনের দিকে দাঁড়িয়ে থাকেন এক ব্যক্তি। নিচ থেকে আরেক ব্যক্তি তাঁকে ছাগলের একটি পা ধরিয়ে দেন। এক পা ধরেই ট্রাকে থাকা ব্যক্তি ছাগলটিকে শূন্যে ছুড়ে মারেন। ছাগলটি উড়ে উড়ে গিয়ে পড়ে ট্রাকের ওপর। কখনো কান, কখনো গলা ধরেও ছাগলকে এভাবে ট্রাকে তোলা হয়। এই নিষ্ঠুরতার শিকার ছাগলগুলো তখন ভ্যা ভ্যা করে চিৎকার করে। ভয়ে জিহ্বা ও চোখ বের করে দেয়।
সপ্তাহের ছয় দিন বিকেলে রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার বেলপুকুর মোড়ে এমন দৃশ্য চোখে পড়ে। ছাগলের প্রতি এই ‘নিষ্ঠুরতা’ বন্ধের দাবি জানিয়েছেন প্রাণীপ্রেমীরা। তাঁরা বলছেন, কাঠের সিঁড়ি দিয়েও সহজে ছাগলকে ট্রাকে তোলা যায়। প্রাণীর প্রতি নিষ্ঠুরতা বন্ধে আইন আছে। সেটি প্রয়োগ করা দরকার।
সপ্তাহের ছয় দিন রাজশাহীর বিভিন্ন উপজেলায় ছাগলের হাট বসে। এর মধ্যে শনিবার ও মঙ্গলবার হাট বসে বানেশ্বরে। সপ্তাহের রোববার বাদ দিয়ে সোমবার নওহাটা, মুণ্ডুমালা, তাহেরপুর, ভবানীগঞ্জ ও পুঠিয়ার নন্দনগাছিতে হাট বসে। এ ছাড়া বুধবার রুস্তমপুর, দুর্গাপুর ও কেশরহাট, বৃহস্পতিবার নওহাটা, মোহনগঞ্জ, কাঁকনহাট ও বাঘা এবং শুক্রবার তাহেরপুর, নন্দনগাছি ও ভবানীগঞ্জে পশুহাট বসে।
কোরবানির ঈদ সামনে রেখে ব্যাপারীদের আনাগোনা এখন আরও বেড়ে গেছে। তাঁরা হাট থেকে ছাগল কিনে এনে বেলপুকুর বাইপাসে ট্রাকে তুলছেন। ট্রাকের চালক ও তাঁর সহকারী এবং দুজন শ্রমিক ছাগলগুলো আড়তে পৌঁছে দিয়ে আসেন। ব্যাপারীরা বেলপুকুর কিংবা আশপাশের গ্রামেই ভাড়া নেওয়া বাড়িতে থাকেন। সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় তাঁদের বাড়ি। শুধু ছাগল কেনার জন্য বেলপুকুর এলাকায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকেন অন্তত ৩০ জন ব্যাপারী। সকালে তাঁরা হাটে যান, বিকেলে ফেরেন। বেলপুকুর থেকে সপ্তাহের ছয় দিন বিকেলে কমপক্ষে তিনটি ট্রাক ছাগল ভর্তি করে রাজধানীতে যায়। প্রতিটি ট্রাকে থাকে ১৫০ থেকে ২০০টি ছাগল।
বৃহস্পতিবার বিকেলে বেলপুকুরে ট্রাকে ছাগল তোলা হচ্ছিল। তখন দেখা যায়, ট্রাকের পেছনে দাঁড়িয়ে থাকা এক ব্যক্তির হাত পর্যন্ত ছাগল তুলে ধরছেন ব্যাপারী। ট্রাকে থাকা ব্যক্তি ছাগলের একটি পা ধরে সজোরে ছুড়ে মারছেন ট্রাকের দিকে।
নিজের সুবিধামতো ট্রাকে থাকা ব্যক্তি কখনো ধরছেন ছাগলের কান, আবার কখনো ধরছেন গলা। ছাগলকে ছুড়ে মারছেন। আরেকটি ট্রাকের ওপর লোহার খাঁচা তৈরি করা ছিল। ছাগলগুলোকে সেই খাঁচার ভেতর ছুড়ে মারতেও দেখা গেছে। এতে ছাগল আহত হয়। ভয়াবহ চিৎকার করে। এভাবে আহত অবস্থায় ছাগলগুলোকে ঢাকায় আড়তে পাঠানো হচ্ছে।
কিছু ছাগল কোরবানির হাটে উঠবে। কিছু আড়ত থেকে চলে যাবে কসাইখানায়।
ব্যাপারী সিরাজুল ইসলাম স্বীকার করে বলেন, ট্রাকে তোলার সময় অনেক ছাগলের পা পর্যন্ত ভেঙে যায়। জখম হয়। কিন্তু এগুলোর আর চিকিৎসা করান না। ঢাকায় পৌঁছানোর পরই জবাই হয়ে যায়।
সিরাজগঞ্জ থেকে আসা এই ব্যবসায়ী বলেন, ‘এগুলান তো কসাই মাল। শেষবেলায় এত কিছু দেখলে হবে না। ঢাকায় যাওয়ামাত্রই তো গলায় ছুরি বসবে। যদি পালার (পালনের) হতো, তাহলে ভিন্ন কথা। কোরবানি দিলেও তো বেশি দিন নাই।’
বাংলাদেশের প্রাণিকল্যাণ আইন-২০১৯ অনুযায়ী, কোনো কাজ করা কিংবা না করা প্রাণীর অসুস্থতার কারণ হলে তা প্রাণীর প্রতি নিষ্ঠুর আচরণ হিসাবে গণ্য হবে। অর্থাৎ ছাগলগুলোকে এভাবে ট্রাকে তোলা নিষ্ঠুরতার মধ্যেই পড়ে। প্রাণিকল্যাণ আইনে এই অপরাধের অনধিক ছয় মাসের বিনা শ্রম কারাদণ্ড বা অনধিক ১০ হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করার বিধান আছে।
এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে ছাগলের ব্যাপারী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আমরা অতো আইনকানুন জানি না। আর ছাগলকে নিয়েও যে আইন থাকতে পারে, সেটাও তো জানা নাই।’
ট্রাকচালক মো. মমিনের বাড়ি বেলপুকুর এলাকাতেই। মমিন জানালেন, তিনি আগে ট্রাকের চালকের সহকারী বা হেলপার ছিলেন। বছর পাঁচেক আগে চালক হয়েছেন। তখন থেকেই ঢাকার যাত্রাবাড়ী আড়তে ছাগল নিয়ে যান। বিশেষ কায়দায় এভাবেই ট্রাকে ছাগল তোলা হয়। তাঁর ট্রাকে গাদাগাদি করে ২০০ থেকে ২৫০টি ছাগল তোলা হয়। প্রত্যেকটি ছাগলকে ঢাকায় নেওয়ার ভাড়া ১০০ টাকা।
জামিয়া ইসলামীয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মুফতি শাহাদাত আলী বলেন, কোরবানির পশুকে এমনভাবে পরিবহন করতে হবে যেন স্বাচ্ছন্দ্যে থাকে। কষ্ট দেওয়া যাবে না। এটাই ইসলামের বিধান।
জেলা জজ আদালতের আইনজীবী এন্তাজুল হক বাবু বলেন, প্রাণীর প্রতি নিষ্ঠুরতা বন্ধে প্রাণিকল্যাণ আইন-২০১৯ প্রণয়ন হয়েছে। এই আইনের অধীন সংঘটিত অপরাধের জন্য নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোবাইল কোর্ট আইন-২০০৯ এর ৫৯ নম্বর আইন অনুযায়ী তাৎক্ষণিক শাস্তি দিতে পারেন।
গাইবান্ধা পৌরসভার উপসহকারী প্রকৌশলী (সিভিল) শফিউল ইসলামের ঘুষ চাওয়ার একটি অডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম (ফেসবুকে) ছড়িয়ে পড়েছে। এতে ওই প্রকৌশলীকে প্রকল্পের টাকা ছাড়ে এক ঠিকাদারের কাছে ৬ শতাংশ ঘুষ দাবি করতে শোনা যায়।
৪ ঘণ্টা আগেযশোরের মনিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ের অ্যাকাউন্ট্যান্ট ক্লার্ক শাহীন আলমকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মোতাহারুল ইসলাম রিয়াদের বিরুদ্ধে।
৪ ঘণ্টা আগেজামালপুরের ইসলামপুরে শহীদ মেজর জেনারেল খালেদ মোশাররফ (বীর উত্তম) সেতুর জন্য অধিগ্রহণ করা জমি দখলের মহোৎসব চলছে। ১০৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ৫৬০ মিটার সেতুর দুই পাড়ের অধিকাংশ জমি এরই মধ্যে দখলে নিয়ে গড়ে তোলা হয়েছে ঘর ও দোকান। সেসব ভাড়া দিয়ে টাকা নিচ্ছে স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী।
৪ ঘণ্টা আগে‘তিন ঘণ্টা ঘোরাঘুরি কইরা একটা স্কার্ফ ছাড়া তো কিছুই কিনলা না। সকাল সকাল মার্কেটে আইসা কী লাভ হইলো?’ মা তাসলিমা আক্তারকে অনুযোগ করে বলছিল বছর দশেকের মেয়ে সানজিদা ইসলাম। জবাবে মা বললেন, ‘দোকানে আইসাই সাথে সাথে কিন্না ফেলন যায়? আগে তো দেখতে হইবো। দামদর বুঝতে হইবো।’
৫ ঘণ্টা আগে