Ajker Patrika

যাঁর বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ, তাঁকে পাশে নিয়ে তদন্ত কর্মকর্তার ইফতার

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
আপডেট : ৩১ মার্চ ২০২৪, ১৭: ৩৭
যাঁর বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ, তাঁকে পাশে নিয়ে তদন্ত কর্মকর্তার ইফতার

রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার ঝিকড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম একটি হত্যা মামলার আসামি। সেই মামলার তদন্ত চলছে। এর মধ্যেই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক নয়ন হোসেন অভিযুক্ত ব্যক্তিকে পাশে বসিয়ে ইফতার করেছেন। এ অবস্থায় বাদীপক্ষের লোকজন হত্যা মামলার সুষ্ঠু তদন্ত নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। 

গতকাল শনিবার বাগমারার যোগীপাড়া পুলিশ ফাঁড়িতে আয়োজন করা হয় এই ইফতার অনুষ্ঠান। সেখানে চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামসহ আরও অনেককে দাওয়াত করা হয়। পুলিশ পরিদর্শক নয়ন হোসেন এই ফাঁড়ির ইনচার্জ ছিলেন। গত ২৮ মার্চ তাঁকে জয়পুরহাটের আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হিসেবে বদলি করা হয়েছে। আজ রোববার তিনি জয়পুরহাট চলে গেছেন। 

ঝিকড়া ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে সোহাগ হোসেন (২২) নামের এক তরুণকে খুনের অভিযোগ রয়েছে। সোহাগের বাবা শরিফুল ইসলাম গত ১৯ ফেব্রুয়ারি রাজশাহীর বাগমারা থানার আমলি আদালতে একটি হত্যা মামলার আবেদন করেন। তাঁর আবেদনে প্রধান আসামি হিসেবে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের (৫০) নাম লেখা হয়। 

২ নম্বর আসামি করা হয় চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের ছোট ভাই আসাদুল ইসলামকে (৪৫)। মোট ২৯ জনের বিরুদ্ধে এই মামলা করা হয়। তাঁর বাড়ি যশোরের মনিরামপুর উপজেলার আড়শিংগাড়ি গ্রামে। 

শরিফুল ইসলামের ছেলে সোহাগ হোসেন ঢাকায় থাকতেন। সেখানে বাগমারার মরুগ্রাম ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের আনিসুর রহমানের ছেলে মনাহার ইসলামের (২৬) সঙ্গে তাঁর বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। মনাহারের চাচা উপজেলা কৃষক লীগের সদস্য নজরুল ইসলামের সঙ্গে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদের মধ্যে আগে থেকেই বিরোধ ছিল। 

গেল জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নজরুল ‘স্বতন্ত্র’ প্রার্থী এনামুল হক এবং আসাদুল দলীয় প্রার্থী আবুল কালাম আজাদের পক্ষে কাজ করেন। ভোটে এনামুল পরাজিত হন। এ নিয়ে তাঁদের মধ্যে দ্বন্দ্ব আরও প্রকট হয়। 

গত ২ ফেব্রুয়ারি সকালে নজরুলের লিজ নেওয়া পুকুরপাড়ে নিজেদের সরিষা খেতে যান মনাহার। এ নিয়ে প্রতিপক্ষ আসাদুলের লোকজন মনাহারের সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। একপর্যায়ে তাঁরা মনাহারকে পিটিয়ে হাত ভেঙে দেন। 

বন্ধুর আহত হওয়ার খবর পেয়ে ঢাকা থেকে সোহাগ তাঁর আরও দুই বন্ধুকে নিয়ে মনাহারকে দেখতে আসেন। এ সময় গ্রামে ‘ভাড়াটে সন্ত্রাসী’ আনা হয়েছে অভিযোগ তুলে আসাদের লোকজন ওই তিন তরুণের ওপর হামলা চালায়। এ সময় দুজন পালিয়ে প্রাণে বাঁচলেও মাঠের মধ্যে পিটিয়ে ও কুপিয়ে সোহাগকে হত্যা করা হয়। পরে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে। 

এ ঘটনার পর রাতেই নিহত সোহাগের চাচাতো ভাই সাইফুল ইসলাম সাগর বাগমারায় আসেন। সেদিন পুলিশ অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে তাঁকে দিয়ে একটি হত্যা মামলা করায়। ওই মামলায় আসামি হিসেবে কারও নাম উল্লেখ না করে জড়িত অনেককে বাঁচানোর চেষ্টার অভিযোগ তোলেন সোহাগের বাবা শরিফুল ইসলাম। পরে ১৯ ফেব্রুয়ারি তিনি ২৯ জনের নাম উল্লেখ করে আদালতে হত্যা মামলা করার আরজি জমা দেন। 

আদালত তাঁর আরজি গ্রহণ করেছেন। তবে একই ঘটনায় দুজন বাদী হয়ে আলাদা মামলা করা যায় না বলে আদালত আগের মামলাটির সঙ্গেই নতুন মামলাটির তদন্ত করে একসঙ্গেই প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য পুলিশকে নির্দেশ দেন। মামলাটি তদন্ত করছিলেন যোগীপাড়া পুলিশ ফাঁড়ি থেকে সদ্য বদলি হওয়া ইনচার্জ নয়ন হোসেন। আর তিনিই নিহত সোহাগের বাবার দায়ের করা মামলার প্রধান আসামির সঙ্গে ইফতার করেছেন। 

এই খুনের ঘটনায় পুলিশ দুজন এবং র‍্যাব দুজন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তার এই চার আসামিই নিহত সোহাগের বাবার দায়ের করা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। তবে এই মামলার প্রধান আসামি রফিকুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করেনি পুলিশ। উল্টো তাঁকে দাওয়াত দিয়ে এনে পাশে বসিয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ইফতার করার কারণে হতাশ সোহাগের পরিবার। 

প্রথম মামলার বাদী ও নিহত সোহাগের চাচাতো ভাই সাইফুল ইসলাম সাগর বলেন, ‘প্রথম মামলায়ও আমি আসামিদের নাম দিতে চেয়েছিলাম। চেয়ারম্যান রফিকুলসহ অন্য আসামিদের নাম লিখে নিয়ে গিয়েছিলাম। পুলিশ সেটা ছিঁড়ে ফেলে। এরপর সাদা কাগজে সই নিয়ে পুলিশ নিজেদের মতো করে এজাহার লেখে। সেখানে কাউকে আসামি করা হয়নি। তাই আমার চাচা আসামিদের নামসহ আদালতে একটা মামলা করেছেন। আদালত দুই মামলার তদন্ত প্রতিবেদন একসঙ্গে দিতে বলেছেন।’ 

সোহাগের চাচাতো ভাই সাইফুল ইসলাম সাগর আরও বলেন, ‘আমাদের চোখে এই হত্যাকাণ্ডের প্রধান অভিযুক্ত ব্যক্তি রফিকুল চেয়ারম্যান। তাঁর সঙ্গে তদন্ত কর্মকর্তার ইফতার দুঃখজনক।’ 

তিনি বলেন, ‘আমাদের বাড়ি অনেক দূরে। সব সময় তদন্ত কর্মকর্তার কাছে যেতে পারি না। প্রথম প্রথম তিনি আমাদের ফোন ধরতেন। কথা শুনতেন। পরে ফোন দিলে কেটে দেন। আমরা শুনেছি, আসামিরা পুলিশকে ৩০ লাখ টাকা দিয়েছে। তারপর থেকে আমাদের কল ধরে না। এখন ন্যায়বিচার পাব কি না, জানি না। আমরা ভাই হত্যার বিচার চাই।’ 

যাঁর বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ, তাঁকে নিয়েই তদন্ত কর্মকর্তার ইফতারের বিষয়ে জানতে চাইলে বাগমারা থানার ওসি অরবিন্দ সরকার বলেন, ‘রফিকুল ইসলাম জনপ্রতিনিধি বলে হয়তো তাঁকে ইফতারে দাওয়াত দেওয়া হয়েছিল। তিনি সত্যিই হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকলে গ্রেপ্তার করা যাবে। আসামিপক্ষের কাছ থেকে পুলিশ কোনো ঘুষ নেয়নি। সঠিকভাবেই তদন্ত চলছে।’ 

পুলিশ পরিদর্শক নয়ন হোসেন বলেন, ‘দ্বিতীয় মামলাটা আলাদা করে এজাহার হিসেবে রেকর্ড করা হয়নি। আদালত বলেছেন, প্রথম মামলার সঙ্গেই যেন এটার প্রতিবেদন দেওয়া হয়। সেভাবেই তদন্ত করছিলাম। ইতিমধ্যে আমার বদলি হয়ে গেছে। চলে যাওয়ার আগে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সঙ্গে ইফতার করেছি। চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামকেও দাওয়াত দেওয়া হয়েছিল। আমি চলে এসেছি। এখন হত্যাকাণ্ডে তাঁর সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলে পরবর্তী তদন্ত কর্মকর্তা তাঁকে গ্রেপ্তার করবেন। এটা কোনো সমস্যা না।’ 

ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমাকে ষড়যন্ত্রমূলক হুকুমের আসামি করা হয়েছে। সেই মামলা তদন্তাধীন। আমি তো ঘটনার সঙ্গে জড়িত নই। তাহলে তদন্ত কর্মকর্তার সঙ্গে ইফতার তো করতেই পারি।’ 

রাজশাহী জেলা পুলিশের মুখপাত্র বিশেষ শাখার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘যাঁর বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ আছে, তাঁর সঙ্গে ইফতার করে তদন্ত কর্মকর্তা ঠিক করেনননি। তদন্ত কর্মকর্তা বদলি হয়ে গেলেও বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া যাবে। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আদালত চত্বরে বাদীপক্ষকে মারধরের অভিযোগ বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালত চত্বরে আজ রোববার মামলার বাদীপক্ষকে মারধর করা হয়। ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া
নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালত চত্বরে আজ রোববার মামলার বাদীপক্ষকে মারধর করা হয়। ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া

নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালত চত্বরে একটি মামলার বাদীপক্ষের ওপর আসামিপক্ষের আইনজীবীদের হামলার অভিযোগ উঠেছে। সন্তানদের সামনে এক নারী ও তাঁর স্বামীকে মারধরের ওই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় আসামিপক্ষের আইনজীবী মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সাখাওয়াত হোসেনসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।

আজ রোববার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ আদালত প্রাঙ্গণে এ ঘটনা ঘটে। এতে আহত ব্যক্তিরা হলেন রাজিয়া সুলতানা (৩৮), তাঁর স্বামী মো. ইরফান মিয়া (৪২) ও তাঁদের দুই শিশু-কিশোর সন্তান। এ ঘটনায় রাজিয়া সুলতানা বাদী হয়ে ফতুল্লা মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।

অভিযোগে সাখাওয়াত হোসেন খান (৫০), ইসমাইল (৪৬), হিরণ (৩৮), শাহালম (৪৮), টিটু (৫০), রাসেল ব্যাপারী (৩৫), খোরশেদ আলম (৪০), আলামিন শাহ (৩৯) ও বিল্লাল হোসেনকে (৩৮) বিবাদী করা হয়েছে।

রাজিয়া সুলতানা বলেন, ‘একটি মামলায় আদালতে হাজিরা দিতে গেলে অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেনের নির্দেশে তাঁর জুনিয়ররা ও মুহুরি মিলে আমাদের ওপর হামলা করেন। তাঁরা আমার স্বামীকে ও আমাকে বেধড়ক মারধর করেন। এ সময় আমার শ্লীলতাহানি করা হয়।’

রাজিয়া সুলতানা আরও বলেন, ‘আমাদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে হামলাকারীরা সরে যান। হামলার সময় আমার দুই শিশু-কিশোর ছেলেসন্তান এগিয়ে এলে তাদের আঘাত করা হয়। আমার এক শিশুসন্তান মেরুদণ্ডে আঘাত পেয়েছে।’

হামলার কারণ সম্পর্কে রাজিয়া সুলতানা বলেন, ‘আমরা আমাদের পাওনা টাকা আদায়ের জন্য আদালতে মামলা করেছিলাম। অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান ওই মামলার বিবাদীপক্ষের আইনজীবী হিসেবে রয়েছেন। তিনি এই মামলা তুলে নেওয়ার জন্য আমাদের হুমকি দিয়ে আসছিলেন। মামলা তুলে না নিলে আমাকে ও আমার স্বামীকে খুন করে বুড়িগঙ্গা নদীতে লাশ ভাসিয়ে দেওয়ার হুমকি দেন। আজকে আদালতে হাজিরা দিতে গেলে আমাদের ওপর তাঁর জুনিয়ররা ও মুহুরি হামলা চালান।’

ঘটনার বিষয়ে সাখাওয়াত হোসেন খানের জুনিয়র আইনজীবী খোরশেদ আলম বলেন, ‘মূলত বাদী ও বিবাদীপক্ষের মধ্যে এই ঝামেলার সৃষ্টি হয়। বিষয়টি মিটমাটের চেষ্টা করতে গেলে তাঁরা আমাদের মুহুরির ওপর হামলা করেন। সমস্যা সমাধান করতে গিয়ে আমরা নিজেরাই ফেঁসে গিয়েছি।’

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সাখাওয়াত হোসেন খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এ ঘটনা সম্পর্কে আমি কিছুই জানি না। আমি ঘটনার এক ঘণ্টা পর আদালতে যাই। আর আমি যে তখন আদালতে ছিলাম না, তা ভিডিও দেখলেই স্পষ্ট বোঝা যায়। আমি মনে করি, কোনো একজন এমপি প্রার্থী আমার গায়ে কালিমা লেপন করতে এই কাজ করাচ্ছেন।’

নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারা প্রধান বলেন, ‘বাদী ও বিবাদীপক্ষ উভয়ই দুষ্টু প্রকৃতির। তারা এর আগেও ঝামেলায় জড়িয়ে ছিল। আমরা মিটমাট করে দিয়েছিলাম। শুনেছি, আজও আবার একই ঘটনা ঘটেছে; যা আমাদের জন্য বিব্রতকর। আজকের ঘটনা সম্পর্কে আমি এখনো বিস্তারিত জানি না। বিষয়টির বিস্তারিত খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।’

ফতুল্লা থানার পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আদালত চত্বরে হামলার বিষয়ে কিছুক্ষণ আগে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। বিষয়টি আমরা গুরুত্বসহকারে তদন্ত করছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নীলফামারী ইপিজেডের ৪টি কারখানা বন্ধ ঘোষণা

নীলফামারী প্রতিনিধি
নীলফামারী ইপিজেড
নীলফামারী ইপিজেড

শ্রমিক বিশৃঙ্খলার অভিযোগে নীলফামারীর উত্তরা ইপিজেডে চারটি কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। আজ রোববার ওই চারটি কারখানা কর্তৃপক্ষের জারি করা নোটিশে এ তথ্য জানানো হয়। নোটিশে অবৈধ ও অঘোষিত শ্রমিক ধর্মঘট, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি, কর্মবিরতি এবং উৎপাদন ব্যাহতের কথা উল্লেখ করা হয়।

উত্তরা ইপিজেডের অতিরিক্ত নির্বাহী পরিচালক নাজমুল আলম ওই চার কারখানা বন্ধের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

কারখানাগুলো হলো দেশবন্ধু টেক্সটাইল মিলস লিমিটেড, মেইগো বাংলাদেশ লিমিটেড, ইপিএফ প্রিন্টিং লিমিটেড ও সেকশন সেভেন ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড।

নোটিশে বলা হয়, ২৫ অক্টোবর থেকে কারখানার শ্রমিকেরা অবৈধ ও অঘোষিত ধর্মঘট, কর্মবিরতি এবং উৎপাদন ব্যাহতসহ বিভিন্ন বিশৃঙ্খল কর্মকাণ্ডে জড়িত হন। শ্রমিকদের সঙ্গে একাধিকবার আলোচনার চেষ্টা করেও কোনো সমাধানে না আসায় কর্তৃপক্ষ কারখানা আইন ১৯৬৫-এর ধারা ১৩(১) অনুযায়ী ২৬ অক্টোবর থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে।

এতে আরও বলা হয়, কারখানা বন্ধ থাকা অবস্থায় শ্রমিকদের বেতন, ওভারটাইম, ছুটি, বোনাসসহ অন্য পাওনা আইন অনুযায়ী প্রদান করা হবে। তবে এই সময়ে কোনো শ্রমিক বা কর্মকর্তা কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া কারখানায় প্রবেশ করতে পারবেন না।

পরিস্থিতি অনুকূলে এলে এবং উৎপাদনের পরিবেশ সৃষ্টি হলে কারখানা পুনরায় খোলার তারিখ জানানো হবে। ওই চার কারখানা কর্তৃপক্ষের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা নোটিশে স্বাক্ষর করেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হককে কেন জামিন দেওয়া হবে না, হাইকোর্টের রুল

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৬ অক্টোবর ২০২৫, ১৯: ১৬
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

হত্যা, দুর্নীতিসহ পৃথক পাঁচ মামলায় সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হককে কেন জামিন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। আজ রোববার বিচারপতি এ এস এম আবদুল মোবিন ও বিচারপতি মো. সগীর হোসেনের বেঞ্চ এই রুল জারি করেন।

আগামী ১০ দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্টদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।

শুনানিতে আইনজীবী মনসুরুল হক বলেন, তাঁর (খায়রুল হক) স্বাস্থ্যগত বিষয় ও বয়স বিবেচনায় জামিন আবেদন করা হয়েছে। তাঁরা এখন শুধু শর্ট রুল চাইছেন। অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, রুল দেওয়াটা আদালতের বিষয়। তবে শর্ট রুল ও অন্তর্বর্তী আদেশের বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আপত্তি আছে।

হাইকোর্ট বলেন, ‘আমরা দুই সপ্তাহের রুল দিচ্ছি।’ মনসুরুল হক বলেন, তিনি (খায়রুল হক) খুব অসুস্থ। হার্ট অ্যাটাক হয়েছে কারাগারে। তিনি ১০ দিনের রুল চান। পরে আদালত ১০ দিন মঞ্জুর করেন।

২০ অক্টোবর আবেদনগুলো শুনানির জন্য উত্থাপন করা হয়। আদালত ২৬ অক্টোবর দিন ধার্য করেছিলেন।

গত ২৪ জুলাই ধানমন্ডির বাসা থেকে খায়রুল হককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাঁকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে যাত্রাবাড়ীতে যুবদলের কর্মী আবদুল কাইয়ুম আহাদ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। পরে বেআইনি রায় দেওয়া ও জাল রায় তৈরির অভিযোগে করা মামলা, তত্ত্বাবধায়ক সরকার-সংক্রান্ত রায় জালিয়াতির অভিযোগে করা দুই মামলা ও বিধিবহির্ভূতভাবে প্লট নেওয়ার অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

উখিয়ায় নিখোঁজের ১৯ ঘণ্টা পর স্কুলছাত্রের লাশ উদ্ধার

 টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি
মোহাম্মদ শাহীন সারোয়ার ফরহাদ। ছবি: আজকের পত্রিকা
মোহাম্মদ শাহীন সারোয়ার ফরহাদ। ছবি: আজকের পত্রিকা

কক্সবাজারের উখিয়ায় রেজুখাল নদী থেকে মোহাম্মদ শাহীন সারোয়ার ফরহাদ (১৪) নামে এক স্কুলছাত্রের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ রোববার (২৬ অক্টোবর) সকালে উখিয়ার জালিয়াপালং ইউনিয়নের সোনারপাড়া রেজুব্রিজসংলগ্ন এলাকায় নদীতে ভাসমান অবস্থায় লাশটি পাওয়া যায়। উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ জিয়াউল হক এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

ফরহাদ সোনারপাড়া বাজার এলাকার আব্দুল করিমের ছেলে। সে স্থানীয় সোনারপাড়া উচ্চবিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র ছিল।

স্থানীয় সূত্রে পুলিশ জানায়, গতকাল শনিবার বেলা ৩টার দিকে বাবা আব্দুল করিমের সঙ্গে বড়শি দিয়ে মাছ ধরতে যায় ফরহাদ। হঠাৎ নৌকা থেকে পড়ে গিয়ে নদীর স্রোতে ভেসে যায় সে। খবর পেয়ে স্থানীয়রা তাৎক্ষণিকভাবে উদ্ধার চেষ্টা চালায়। পরে উখিয়া ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযান চালায়। আজ সকাল ১০টার দিকে রেজুব্রিজসংলগ্ন এলাকা থেকে নদীতে ভাসমান অবস্থায় লাশটি উদ্ধার করা হয়।

ওসি জিয়াউল হক জানান, আইনগত প্রক্রিয়া শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত