Ajker Patrika

কমলা চাষে ভাগ্যবদলের আশা দম্পতির

আক্কেলপুর (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি
Thumbnail image

জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে বাড়ির পাশের এক বিঘা জমিতে কমলার বাগান করেছেন দম্পতি ইমরান-সুমিয়া। স্বামী-স্ত্রী দুজনে মিলেই কমলার বাগানের পরিচর্যা করেন। দু’বছর আগে লাগানো বারি-২ জাতের ১৩০টি কমলার গাছে এবার প্রথম ফল ধরেছে। আগামী ডিসেম্বর মাসে কমলা বিক্রির আশা করছেন তাঁরা। 

সরেজমিনে উপজেলার গোপীনাথপুর ইউনিয়নের ভিকনী গ্রামের ওই কমলার বাগানে গিয়ে দেখা গেছে, ওই বাগানের গাছগুলোর ডালে-ডালে ঝুলছে কমলা। কমলার গাছ পরিচর্যা করছিলেন ইমরান হোসেন ও তাঁর স্ত্রী সুমিয়া আখতার। গাছে ঝুলে থাকা কমলার খোসায় সূর্যের আভার মতো রং আসতে শুরু করেছে। এটি উপজেলার প্রথম কামলার বাগান বলে জানিয়েছেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা। তাই প্রতিদিন আশপাশের এলাকা থেকে লোকজন বাগান দেখতে আসেন। 

এ বিষয়ে ইমরান হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি ঢাকার সাভারে ইলেকট্রনিকস দোকানের ব্যবসা করতাম। সেখানে আমার ব্যবসা মন্দা যাচ্ছিল। তাই ২০২০ সালে ব্যবসা গুটিয়ে নিয়ে গ্রামের বাড়িতে ফিরে আসি। পরে জমিজমা চাষাবাদের পরিকল্পনা করি। তাই ধান, গম ও আলু বাদে কী চাষ করা যায় তা নিয়ে ভাবছিলাম। হঠাৎ করেই একদিন অনলাইনের কৃষি বিষয়ক একটি সাইটে ঢুকে কমলা বাগানের বিষয়টি দেখতে পাই। পরে ওই সাইট থেকে কমলা বাগান করা নিয়ে ধারণা নিয়েছিলাম। একই বছরই কয়েকটি কমলার গাছ কিনে রোপণ করি। শুরুতে কমলার গাছের চারা কিনে নার্সারি মালিকের প্রতারণার শিকার হই। কারণ প্রথমের গাছগুলো ভালো ছিল না। তাই কিছুদিন পর গাছগুলো মরে যায়। এভাবে দেড় লাখ টাকার মতো লোকসান গুনলেও কমলা বাগান করার হাল ছাড়িনি।’ 

 কৃষি বিভাগের লোকজন নিয়মিত বাগানে এসে পরামর্শ দিচ্ছেনইমরান হোসেন আরও বলেন, ‘লোকসানের পর একজন পরিচিত কৃষি কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলাম। তিনি বারি-২ কমলার গাছের চারার রোপণের পরামর্শ দেন। তাঁর দেওয়া পরামর্শ অনুযায়ী বারি-২ জাতের ১৩০টি কমলার চারা রোপণ করেছিলাম। প্রতিটি চারার দাম ৬০০ টাকা করে দাম পড়েছিল। আমরা স্বামী-স্ত্রী মিলে গত দু’বছর ধরে কমলা বাগানের পরিচর্যা করেছি। এবারই প্রথম কমলা ধরেছে। প্রতিটি কমলার গাছে গড়ে ২৫-৩০ কেজি কামলা রয়েছে। আগামী ডিসেম্বর মাসে কমলাগুলো পরিপক্ব হবে।’ 

কৃষি বিভাগের লোকজন নিয়মিত বাগানে এসে পরামর্শ দিচ্ছেন। এমনকি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এসএম হাবিবুল হাসান, কৃষি কর্মকর্তা ইমরান হোসেন কমলার বাগান পরিদর্শন করেছেন। এ ছাড়া প্রতিদিনই লোকজন কমলার বাগান দেখতে আসছেন বলেও জানিয়েছেন ইমরান হোসেন। 

ইমরান হোসেনের স্ত্রী সুমিয়া আখতার বলেন, ‘আমরা স্বামী-স্ত্রী নিজেরাই কমলা বাগানের পরিচর্যা করছি। প্রতিটি গাছকে সন্তানের মতো করে ভালোবেসে বেড়ে তুলেছি। রোপণের দু’বছর পর এবার গাছে কমলা ধরেছে। গাছে-গাছে ঝুলে থাকা কমলা দেখে খুব ভালো লাগে। তখন এতদিনের কষ্টের কথা ভুলে যাই।’ 

এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইমরান হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ভিকনী গ্রামের ইমরান হোসেন ব্যবসা ছেড়ে দিয়ে নিজ বাড়িতে এসে কমলার বাগান করেছেন। এবারই প্রথম তাঁর বাগানে কমলা ধরেছে। কমলাগুলো কিছুদিনের মধ্যে পরিপক্ব হবে। এটি উপজেলার প্রথম কমলার বাগান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত