Ajker Patrika

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসেও বন্ধ ফটক, শ্রদ্ধা জানাতে ভাঙা হলো তালা 

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর ২০২২, ২০: ২৭
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসেও বন্ধ ফটক, শ্রদ্ধা জানাতে ভাঙা হলো তালা 

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসেও আজ খোলা হয়নি রাজশাহীর বাবলা বন বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধের প্রধান ফটকের তালা। শ্রদ্ধা জানাতে আসা লোকজন তাই প্রধান ফটকের তালা ভেঙে ভেতরে ঢুকেছেন। তাঁদের অভিযোগ, বুদ্ধিজীবী দিবসেও বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধের প্রধান ফটকে তালা থাকাটা স্থানীয় প্রশাসনের চরম গাফিলতি। এ ব্যাপারে যথাযথ তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। 

আজ সকালে জনমানব উন্নয়ন সংস্থা নামের একটি সংগঠনের সদস্যরা প্রধান ফটকটি তালাবদ্ধ দেখেন। এ সময় তাঁরা এটির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বপ্রাপ্তকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করেন। ফোন করা হয় সিটি করপোরেশনের স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলরকেও। কিন্তু তিনিও কিছু জানাতে পারেননি। পরে কাউন্সিলরের পরামর্শে প্রধান ফটকের তালা ভেঙে ফেলা হয়। এরপর ভেতরে ঢুকে তারা শ্রদ্ধা জানান। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনও এই স্মৃতিসৌধে গিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। 

রাজশাহীতে ২৫ নভেম্বর বাবলা বন গণহত্যা দিবস হিসেবে পালিত হয়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সেদিনও তালাবদ্ধ ছিল এই বধ্যভূমির প্রধান ফটক। সেদিন যারা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করতে গিয়েছিলেন তাঁদেরও সীমানা প্রাচীর টপকে ভেতরে ঢুকতে হয়েছিল। 

জনমানব উন্নয়ন সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা ও জেলা আওয়ামী লীগের নেতা শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসেও বধ্যভূমির ফটকে তালাবদ্ধ থাকাটা অত্যন্ত লজ্জাজনক। এই লজ্জা কোনভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। যারা এটির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে আছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।’ 

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসেও ফটকে তালা থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে এলজিইডির রাজশাহীর নির্বাহী প্রকৌশলী মোহা. নাশির উদ্দিন বলেন, ‘আমরা শুধু নির্মাণ কাজটা করেছিলাম। এরপর এটি জেলা প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এটির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব জেলা প্রশাসনের।’ 

এনিয়ে জানতে মোবাইল ফোনে জেলা প্রশাসক আবদুল জলিলকে একাধিক বার কল করা হয়। কিন্তু ফোন না ধরায় তাঁর কোনো মন্তব্য জানা যায়নি। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) কল্যাণ চৌধুরীও ফোন ধরেননি। 

মুক্তিযুদ্ধের গবেষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পরাজয় নিশ্চিত জেনে বিজয়ের আগে ১৯৭১ সালের ২৫ নভেম্বর রাজশাহীর শিক্ষক, আইনজীবী, ব্যবসায়ী ও সরকারি কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন পেশার বুদ্ধিজীবীদের ধরে নেয়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। এরপর তাঁদের হত্যা করে গণকবর দেওয়া হয় রাজশাহী নগরীর শ্রীরামপুর এলাকায় পদ্মা নদীর পাড়ের বাবলা বনে। স্বাধীনতা অর্জনের পর ৩০ ডিসেম্বর এই বধ্যভূমির সন্ধান পাওয়া যায়। অনেকে মনে করেন, যে ১৭ জন শহীদের মরদেহ এখানে পাওয়া যায়, তাঁদের জীবন্ত মাটিচাপা দিয়ে হত্যা করা হয়েছিল। কারণ, তাঁদের একই রশিতে ফাঁস লাগানো অবস্থায় পাওয়া যায়, কিন্তু শরীরে বুলেটের বা কোনো আঘাতের চিহ্ন ছিল না। এই স্থানটিই বাবলা বন বধ্যভূমি হিসেবে পরিচিত। 

এই বধ্যভূমিতে যাদের মরদেহ পাওয়া গেছে তাঁরা হলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক মীর আব্দুল কাইয়ুম, পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সদস্য নাজমুল হক সরকার, সরকারি কর্মকর্তা আবদুল হক সরকার, ব্যবসায়ী আজিজুল হক চৌধুরী, শামসুল ইসলাম ঝাটু, অ্যাডভোকেট সুরেশ, বীরেন সরকার, মকবুল হক চৌধুরী, আলতাফ হোসেন, মির্জা সুলতান, মির্জা আজিজুর রহমান, নওরোজ দৌল্লাহ খান, আমিনুল হক, তৈয়ব আলী, আলাউদ্দিন চেয়ারম্যান, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহম্মদ মুক্তা।

পরনের পোশাক ও হাতের আংটি দেখে স্বজনেরা তাদের মরদেহ শনাক্ত করেন। 

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বধ্যভূমিটি দীর্ঘ দিন অনাদরেই পড়ে ছিল। ১৯৯৫ সালের ২৫ নভেম্বর এই শহীদদের স্মরণে একটি স্মৃতিফলক বসানো হয়। এর উদ্বোধন করেন শহীদ মীর আব্দুল কাইয়ুমের স্ত্রী অধ্যাপক মাসতুরা খানম। সেদিন অভিনেতা আসাদুজ্জামান নূর ঢাকার মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের জন্য এখানকার মাটি সংগ্রহ করে নিয়ে যান। ওই স্মৃতিফলক স্থাপনের পরও কেটে যায় অনেক দিন। ২০২০ সালে বধ্যভূমিতে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হয়। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে ‘মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহাসিক স্থানসমূহ সংরক্ষণ ও মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি জাদুঘর নির্মাণ’ প্রকল্পের আওতায় বধ্যভূমি মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণকাজ বাস্তবায়ন করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মসজিদে আমির হামজাকে রাজনৈতিক আলোচনা করতে নিষেধ করায় লাঞ্ছিত বিএনপি নেতা

বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে পথচারীর মৃত্যু, মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ

বিমানবন্দর রেলস্টেশনে ট্রেন থেকে আগ্নেয়াস্ত্রভর্তি ট্রলি ব্যাগ উদ্ধার

তিন ঘণ্টা পর আংশিক চালু মেট্রোরেল

ঘুষ হিসেবে পাকা কলা নেওয়ার কথা স্বীকার, দুদকের গণশুনানিতে তাৎক্ষণিক বদলির আদেশ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ফরিদপুরে ট্রাকচাপায় আইনজীবী নিহত

ফরিদপুর প্রতিনিধি
মোসাদ্দেক আলী বশির। ছবি: সংগৃহীত
মোসাদ্দেক আলী বশির। ছবি: সংগৃহীত

ফরিদপুর সদর উপজেলায় ট্রাকচাপায় মোসাদ্দেক আলী বশির (৪০) নামের এক আইনজীবী নিহত হয়েছেন। আজ রোববার রাত পৌনে ৮টার দিকে ফরিদপুর শহরের ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের বদরপুর এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

মোসাদ্দেক আলী বশির সদর উপজেলার চরমাধবদিয়া ইউনিয়নের মমিনখারহাটের ইছাহাক কাজীর ছেলে। তিনি ফরিদপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের আইনজীবী ছিলেন।

করিমপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সালাউদ্দিন চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে জানান, নিহত ব্যক্তি মোটরসাইকেল চালিয়ে কানাইপুর থেকে শহরের দিকে যাচ্ছিলেন। বদরপুর এলাকায় পৌঁছালে একটি ট্রাক তাঁকে চাপা দেয়। স্থানীয় লোকজন তাঁকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, তিনি মারা গেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মসজিদে আমির হামজাকে রাজনৈতিক আলোচনা করতে নিষেধ করায় লাঞ্ছিত বিএনপি নেতা

বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে পথচারীর মৃত্যু, মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ

বিমানবন্দর রেলস্টেশনে ট্রেন থেকে আগ্নেয়াস্ত্রভর্তি ট্রলি ব্যাগ উদ্ধার

তিন ঘণ্টা পর আংশিক চালু মেট্রোরেল

ঘুষ হিসেবে পাকা কলা নেওয়ার কথা স্বীকার, দুদকের গণশুনানিতে তাৎক্ষণিক বদলির আদেশ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পুলিশের চাঁদাবাজি ও হয়রানির অভিযোগ তুলে মহাসড়কে অটোরিকশাচালকদের বিক্ষোভ

কালিয়াকৈর (গাজীপুর) সংবাদদাতা
পল্লী বিদ্যুৎ জোড়াপাম্প ও চন্দ্রা এলাকায় অটোরিকশাচালকেরা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
পল্লী বিদ্যুৎ জোড়াপাম্প ও চন্দ্রা এলাকায় অটোরিকশাচালকেরা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

গাজীপুরের কালিয়াকৈরে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের সার্ভিস রোড দখল এবং পুলিশের চাঁদাবাজি ও মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ করেছেন অটোরিকশাচালকেরা। আজ রোববার দুপুরে উপজেলার পল্লী বিদ্যুৎ জোড়াপাম্প ও চন্দ্রা এলাকায় বিক্ষুব্ধ চালকেরা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন।

এতে মহাসড়কে প্রায় এক ঘণ্টা যানবাহন আটকে পড়ে। ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা।

এলাকাবাসী, অটোরিকশাচালক ও পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতিদিন ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক দিয়ে উত্তরবঙ্গমুখী হাজারো যানবাহন চলাচল করে। কিন্তু ওই মহাসড়কে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে অটোরিকশা। এসব অটোরিকশার কারণে বাড়ছে মহাসড়কে প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা। এদিকে মহাসড়কের সার্ভিস রোড ও ফুটপাত দখল করে অবৈধভাবে হাটবাজার বসছে। উপজেলার মৌচাক, সফিপুর, পল্লী বিদ্যুৎ, জোড়াপাম্প, চন্দ্রা ত্রিমোড় এলাকায় সবচেয়ে বেশি হাটবাজার বসছে। অটোরিকশাচালকদের অভিযোগ, অবৈধ হাটবাজারে কারণে সার্ভিস রোড বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বাধ্য হয়ে অটোরিকশা নিয়ে মহাসড়কে উঠছেন তাঁরা। আর মহাসড়কে অটোরিকশা চালাতে গিয়ে হয়রানির মুখে পড়ছেন তাঁরা। বিভিন্ন স্থানে পুলিশ অটোরিকশা আটকে মামলা দিচ্ছে। অটোরিকশা থামিয়ে চাঁদাবাজিও করছেন পুলিশের অসাধু কিছু সদস্য।

অটোরিকশাচালক আলমগীর হোসেন, বিল্লাল হোসেন, আরমান মিয়া, নুরু মিয়া, বাবুল হোসেনসহ অনেকে বলেন, ‘মহাসড়কে অটোরিকশা চলাচল নিষিদ্ধ, এটা আমরা জানি। কিন্তু আমরা চলব কীভাবে? পেটের দায়ে অটোরিকশা চালাই। আমরা সার্ভিস রোড দিয়ে অটোরিকশা চলাচলের সুযোগ চাই। আর মহাসড়কে পুলিশ অটোরিকশা ধরলেই ২ হাজার ৬০০ টাকার মামলা দিচ্ছে। ওই মামলার টাকা পরিশোধে অক্ষম হয়ে অনেকেই পুলিশকে চাঁদা দিতে বাধ্য হন। চাঁদা না দিয়ে চলতে গেলেও নানাভাবে হয়রানির শিকার হতে হয়। অটোরিকশা চলার জন্য সার্ভিস রোড আছে। কিন্তু সেটা দখল করে হাটবাজার বসায় বাধ্য হয়ে অটোরিকশা মহাসড়কে ওঠাতে হচ্ছে।

এ বিষয়ে নাওজোড় হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাওগাত উল আলম বলেন, ‘কয়েকজন অটোরিকশাচালক মহাসড়ক অবরোধের চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের সরিয়ে দেয়। এ ছাড়া সার্ভিস রোড ও ফুটপাত দখল করে যাঁরা আছেন, তাঁরাও অবৈধভাবে আছেন। খুব তাড়াতাড়ি দখলকারীদের উচ্ছেদ করে সার্ভিস রোড ও ফুটপাত দখলমুক্ত করা হবে। কিন্তু ওই সার্ভিস রোডেও অটোরিকশা ওঠার নিয়ম নেই।’ অটোরিকশা আটকে পুলিশের টাকা আদায়ের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের কেউ এভাবে টাকা নিলে তার তথ্যপ্রমাণ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মসজিদে আমির হামজাকে রাজনৈতিক আলোচনা করতে নিষেধ করায় লাঞ্ছিত বিএনপি নেতা

বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে পথচারীর মৃত্যু, মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ

বিমানবন্দর রেলস্টেশনে ট্রেন থেকে আগ্নেয়াস্ত্রভর্তি ট্রলি ব্যাগ উদ্ধার

তিন ঘণ্টা পর আংশিক চালু মেট্রোরেল

ঘুষ হিসেবে পাকা কলা নেওয়ার কথা স্বীকার, দুদকের গণশুনানিতে তাৎক্ষণিক বদলির আদেশ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শ্রমিক দল নেতার বিরুদ্ধে জেলের নৌকা আটকে চাঁদা দাবির অভিযোগ

নেত্রকোনা প্রতিনিধি
খালিয়াজুরী থানা। ছবি: আজকের পত্রিকা
খালিয়াজুরী থানা। ছবি: আজকের পত্রিকা

নেত্রকোনার খালিয়াজুরীতে ধনু নদে মাছ ধরতে যাওয়া জেলের নৌকা আটকিয়ে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় শ্রমিক দল নেতা কামরুল মিয়ার বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী জেলে মো. মামুন মিয়া গতকাল শনিবার খালিয়াজুরী থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। এতে শ্রমিক দল নেতা কামরুলসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন তিনি।

অভিযুক্ত কামরুল মিয়া উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়ন শ্রমিক দলের সভাপতি। তিনি উপজেলার পাঁচহাট গ্রামের বাসিন্দা। অন্য অভিযুক্তরাও একই গ্রামের বাসিন্দা। অভিযোগকারী জেলে মামুন মিয়াও একই গ্রামের আব্দুল আওয়ালের ছেলে।

থানায় অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, মামুন মিয়া ধনু নদে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন। পাঁচহাট গ্রামে ধনু নদে কামরুল মিয়াসহ কয়েক ব্যক্তি অবৈধভাবে বাঁশের ঘের দিয়ে মিম (মাছের আবাসস্থল) তৈরি করে রেখেছেন। স্থানীয় জেলেরা সেখানে মাছ ধরতে গেলে তাঁরা বাধা দেন। গতকাল দুপুরে মামুন নৌকা, জাল ও বড়শি নিয়ে নদীতে মাছ ধরতে গেলে অভিযুক্তরা তাঁকে বাধা দিয়ে ঘের থেকে ৩০০ মিটার দূরে গিয়ে মাছ ধরতে বলেন। তিনি এতে আপত্তি জানালে অভিযুক্তরা ক্ষিপ্ত হয়ে তাঁর ইঞ্জিনচালিত নৌকা, জাল ও বড়শি জোর করে নিয়ে যান এবং নিজেদের ঘাটে আটক রাখেন। এ সময় তাঁরা পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। টাকা না দিলে নৌকা ফেরত দেওয়া হবে না বলে হুমকি দেন। এ ছাড়া, ঘটনার আগের দিন একই এলাকায় মামুন মিয়ার সহযোগী এক বড়শিওয়ালাকেও মারধর করে তাঁর কাছ থেকে নগদ ১০ হাজার টাকা ও বড়শি ছিনিয়ে নেন কামরুল ও সহযোগীরা।

এ ব্যাপারে জানতে অভিযুক্ত কামরুল মিয়ার মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।

এদিকে উপজেলা শ্রমিক দলের সভাপতি আলী উসমান বলেন, ‘অভিযোগ পুরোপুরি মিথ্যা। মামুন আওয়ামী লীগের রাজনীতি করেন। অনেক বছর তিনি ধনু নদে চাঁদাবাজিসহ আমাদের দলের নেতা-কর্মীদের হয়রানি করেছেন। মামুনের কাছে এক ব্যক্তি টাকা পান, সেই কারণে ওই ব্যক্তি তাঁর নৌকা আটক করেছিলেন। এখন তিনি প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে আমাদের শ্রমিক দলের নেতাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করেছেন। এই মিথ্যা অভিযোগের বিষয়ে স্থানীয় সবাই অবগত রয়েছেন।’

অভিযোগ তদন্তের দায়িত্বে রয়েছেন খালিয়াজুরী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ফেরদৌস রহমান। আজ রোববার তিনি বলেন, ‘অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মসজিদে আমির হামজাকে রাজনৈতিক আলোচনা করতে নিষেধ করায় লাঞ্ছিত বিএনপি নেতা

বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে পথচারীর মৃত্যু, মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ

বিমানবন্দর রেলস্টেশনে ট্রেন থেকে আগ্নেয়াস্ত্রভর্তি ট্রলি ব্যাগ উদ্ধার

তিন ঘণ্টা পর আংশিক চালু মেট্রোরেল

ঘুষ হিসেবে পাকা কলা নেওয়ার কথা স্বীকার, দুদকের গণশুনানিতে তাৎক্ষণিক বদলির আদেশ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মিয়ানমার থেকে আবারও গুলি এসে পড়ল টেকনাফের বসতঘরে

 টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি
: মিয়ানমার থেকে আজ রোববার মিয়ানমার থেকে এসে সীমান্তবর্তী টেকনাফের একটি বসতঘরে পড়া গুলি। ছবি: আজকের পত্রিকা
: মিয়ানমার থেকে আজ রোববার মিয়ানমার থেকে এসে সীমান্তবর্তী টেকনাফের একটি বসতঘরে পড়া গুলি। ছবি: আজকের পত্রিকা

মিয়ানমার থেকে আবারও একটি গুলি এসে সীমান্তবর্তী কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নে বসতঘরে পড়েছে। আজ রোববার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে আমতলী এলাকার বাসিন্দা আইয়ুব ইসলামের বসতঘরের টিনের চালা ভেদ করে গুলিটি। তবে এতে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

এর আগে গতকাল শনিবার বিকেলে মিয়ানমার থেকে আসা দুটি গুলি একই ইউনিয়নের তেচ্ছি ব্রিজ সীমান্তসংলগ্ন এলাকায় পড়ে। এতে ছেনুয়ারা (২৭) নামের এক নারী গুলিবিদ্ধ হন। তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে তীব্র সংঘর্ষ চলছে। সীমান্তবর্তী এলাকায় চলমান ওই সংঘর্ষে গুলি ছোড়া হয়, যা বাংলাদেশে এসে পড়ছে।

সর্বশেষ গুলির বিষয়ে হোয়াইক্যং ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ নুর আহমেদ আনোয়ারী বলেন, ‘মিয়ানমার সীমান্তের ওপার থেকে ছোড়া একটি গুলি স্থানীয় একটি বাড়িতে এসে পড়েছে। ভাগ্যক্রমে কেউ হতাহত হননি। তবে সীমান্তের মানুষজন আতঙ্কে রয়েছেন।’

ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য মো. রাব্বি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সকালে সীমান্তের দিক থেকে গোলাগুলির শব্দ শুনতে পাই। কিছুক্ষণ পর ঘরের টিনের চালে কিছু একটা পড়ার শব্দ পাই। বাইরে গিয়ে দেখি, টিন ছিদ্র হয়ে গেছে। পরে ঘরের দেয়াল থেকে গুলিটি উদ্ধার করি। আমাদের বাড়ি সীমান্ত থেকে প্রায় আড়াই কিলোমিটার দূরে। এত দূর থেকেও গুলি এসে লাগায় আমরা ভয়ে আছি।’

হোয়াইক্যং ইউপির ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য সিরাজুল মোস্তফা লালু বলেন, ‘আমতলী গ্রামের আইয়ুব ইসলামের বাড়িতে গুলি এসে পড়েছে বলে জেনেছি। ভাগ্যক্রমে কেউ আহত হননি। সীমান্তে প্রায়ই এমন গোলাগুলির ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দেয়। এ ধরনের ঘটনায় আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। সীমান্তবাসীকে আতঙ্কিত না হয়ে সতর্ক থাকতে হবে। পাশাপাশি প্রশাসনের পক্ষ থেকে নজরদারি ও নিরাপত্তা জোরদার করা প্রয়োজন।’

গতকালের ঘটনার বিষয়ে জানা গেছে, ওই দিন বিকেলে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে ব্যাপক গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়। কিছু সময় পর ওপার থেকে ছোড়া দুটি গুলি হোয়াইক্যং ইউনিয়নের তেচ্ছি ব্রিজ এলাকার বসতবাড়ি ও কম্পিউটারের দোকানে এসে পড়ে। এতে ঘরের টিন ও দেয়াল ছিদ্র হয়ে যায়। এর মধ্যে একটি গুলিতে ছেনুয়ারা নামের এক নারী আহত হন। ঘটনার পর সীমান্ত এলাকায় চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় অনেক পরিবার শিশু ও বৃদ্ধদের নিয়ে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিতে শুরু করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মসজিদে আমির হামজাকে রাজনৈতিক আলোচনা করতে নিষেধ করায় লাঞ্ছিত বিএনপি নেতা

বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে পথচারীর মৃত্যু, মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ

বিমানবন্দর রেলস্টেশনে ট্রেন থেকে আগ্নেয়াস্ত্রভর্তি ট্রলি ব্যাগ উদ্ধার

তিন ঘণ্টা পর আংশিক চালু মেট্রোরেল

ঘুষ হিসেবে পাকা কলা নেওয়ার কথা স্বীকার, দুদকের গণশুনানিতে তাৎক্ষণিক বদলির আদেশ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত