Ajker Patrika

থানায় প্রশ্নপত্রের প্যাকেট খোলার ঘটনায় শিক্ষা বোর্ডেরও তদন্ত কমিটি

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, রাজশাহী। ছবি: সংগৃহীত
মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, রাজশাহী। ছবি: সংগৃহীত

নওগাঁর ধামইরহাট থানায় এইচএসসির প্রশ্নপত্রের ট্রাংক খুলে প্রশ্ন বের করার ঘটনা তদন্তে রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পক্ষ থেকেও একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। শনিবার বিকেলে বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আ ন ম মোফাখখারুল ইসলাম বিষয়টি জানিয়েছেন।

চেয়ারম্যান জানান, বোর্ডের কলেজ পরিদর্শককে আহ্বায়ক করে তিনি তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি করে দিয়েছেন। কমিটিতে একজন উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও ধামইরহাট উপজেলার এম এম সরকারি ডিগ্রি কলেজের একজন শিক্ষককে রাখা হয়েছে। আগামী রোববারের মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে বলেও জানান বোর্ডের চেয়ারম্যান।

এদিকে এ ঘটনায় জেলা প্রশাসন এবং জেলা পুলিশের পক্ষ থেকেও আলাদা দুটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। এর আগেই থানাহাজতে প্রশ্নপত্রের ট্রাংক খোলার ঘটনায় একজন উপপরিদর্শক (এসআই) ও একজন পুলিশ কনস্টেবলকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি ১৭টি ট্রাংকে এইচএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ধামইরহাট থানায় পাঠায় বোর্ড কর্তৃপক্ষ। মালখানা হিসেবে ব্যবহৃত ট্রাংক রাখা হয়েছিল নারী হাজতখানায়। ওই রাতে একটি হত্যা মামলার তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে তথ্য উদ্‌ঘাটনের কৌশলগত কারণে তাঁদের আলাদা স্থানে রাখা হয়। এক আসামিকে রাখা হয়েছিল নারী হাজতখানায়।

সেখানে প্রশ্নপত্রের ট্রাংকে দুটি তালা থাকলেও চাবি ছিল তালার সঙ্গে। তারপর সিলগালা করা ছিল। আর ওই আসামির হাতে হ্যান্ডকাফ থাকলেও এক হাত খোলা ছিল। তিনি সিলগালার সিল তুলে চাবি দিয়ে তালা খোলেন। এরপর একটি প্রশ্নের প্যাকেট বের করে কাটেন। প্রশ্নপত্র দেখার পর তিনি কয়েকটি প্রশ্ন ছিঁড়েও ফেলেন। পরে সকালে পুলিশ গিয়ে এগুলো দেখতে পায়। এ ঘটনায় সরকারি সম্পদ বিনষ্টের অভিযোগে ওই আসামির বিরুদ্ধে পুলিশ একটি মামলা করে।

এদিকে এ ঘটনায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে ওসিসহ জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীরা। শনিবার দুপুরে উপজেলা পরিষদের সামনে নওগাঁ-জয়পুরহাট আঞ্চলিক মহাসড়কে আয়োজিত এই মানববন্ধনে উপজেলা, পৌর ও কলেজ শাখা ছাত্রদল, ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের উপজেলা শাখা, উপজেলা শাখা ছাত্র অধিকার পরিষদসহ বিভিন্ন পর্যায়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।

এদিন বিকেলে শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও বোর্ডের গঠন করা তদন্ত কমিটির সদস্যরা থানা পরিদর্শন করেন। পরিদর্শন শেষে অধ্যাপক আ ন ম মোফাখখারুল ইসলাম বলেন, ‘১৭ জুন দিনগত রাত ৪টা ৪০ মিনিটে ওই আসামিকে থানাহাজতে ঢোকানো হয়। বের করা হয় ১৮ জুন দুপুর ১২টায়। এই সময়ের মধ্যেই সে এ কাণ্ড ঘটায়।’

তিনি বলেন, ‘আসলে অবকাঠামোগত দুর্বলতা আছে তো। সে জন্যই হাজতখানা ব্যবহৃত হয় মালখানা হিসেবে। এটা একটা দুর্ঘটনা। আবার এটা পরীক্ষা এবং সরকারকে বিতর্কের মুখে ফেলার ষড়যন্ত্রও হতে পারে। আসামির মনোজগতের কোনো ত্রুটিও থাকতে পারে। আসলেই কী ঘটনা ঘটেছে, সেটা তদন্ত কমিটিগুলোর প্রতিবেদনেই আসবে। আমরা সেভাবে ব্যবস্থা নেব।’

এদিকে ঘটনাটি নিয়ে বাংলাদেশ আন্তশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. খন্দোকার এহসানুল কবির শনিবার বিকেলে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলেছেন, ‘ধামইরহাটের সরকারি এম এম ডিগ্রি কলেজের জন্য বরাদ্দ করা এইচএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের তিনটি ট্রাংক থানার লকার রুমে সংরক্ষণ করা হয়। প্রশ্ন সর্টিংয়ের সময় একটি ট্রাংক তালা খোলা অবস্থায় পাওয়া যায় এবং ইতিহাস দ্বিতীয় পত্রের এক প্যাকেট প্রশ্ন লকার রুমের এক কর্নারে পাওয়া যায়। ওই প্যাকেটের কিছু প্রশ্নপত্র ছেঁড়া থাকলেও প্রশ্নপত্রের সংখ্যা সঠিক পাওয়া যায় বলে নওগাঁর জেলা প্রশাসক নিশ্চিত করেছেন।’

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘এ বিষয়ে প্রকৃত ঘটনা উদ্‌ঘাটনে এবং দায়ী ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গ চিহ্নিতকরণের জন্য জেলা প্রশাসন তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। ইতিহাস দ্বিতীয় পত্রের (বিষয় কোড-৩০৫) যে সেটের প্রশ্ন খোলা অবস্থায় পাওয়া যায়, সকল কেন্দ্রের সেই সেটের প্রশ্ন বাতিল করা হয়েছে। একই বিষয়ের প্রশ্নপত্রের ভিন্ন কয়েকটি সেট বোর্ডের কাছে সংরক্ষিত থাকায় পরীক্ষা গ্রহণে কোনো জটিলতা তৈরি হবে না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

একই বংশের দুই নেতা দুই দল থেকে এমপি প্রার্থী

কোটালীপাড়া (গোপালগঞ্জ) প্রতিনিধি 
আবুল বশার দাড়িয়া বাসু ও মো. আরিফুল দাড়িয়া। ছবি: সংগৃহীত
আবুল বশার দাড়িয়া বাসু ও মো. আরিফুল দাড়িয়া। ছবি: সংগৃহীত

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গোপালগঞ্জ-৩ (কোটালীপাড়া-টুঙ্গিপাড়া) আসনে কোটালীপাড়া উপজেলায় একই গ্রামের একই বংশের দুই নেতা দুটি রাজনৈতিক দল থেকে সংসদ সদস্য প্রার্থী হয়েছেন। ইতিমধ্যে রাজনৈতিক দল দুটি তাঁদের দুজনকে প্রার্থী হিসেবে নাম ঘোষণা করেছে। এ নিয়ে এলাকায় নির্বাচনী আলোচনা বেশ জমে উঠেছে।

প্রার্থী দুজনই গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার ঐতিহ্যবাহী মাঝবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা। তাঁদের মধ্যে একজন মৃত দলিল উদ্দিন দাড়িয়ার ছেলে আবুল বশার দাড়িয়া বাসু। তিনি গণঅধিকার পরিষদ কোটালীপাড়া উপজেলা শাখার আহ্বায়ক। অন্যজন মো. সিদ্দিক দাড়িয়ার ছেলে ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মো. আরিফুল দাড়িয়া।

জানা যায়, সম্প্রতি গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটি আবুল বশার দাড়িয়া বাসুকে গোপালগঞ্জ-৩ আসনে তাদের প্রার্থী ঘোষণা করে। ঘোষণার পর থেকেই তিনি দলীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে এলাকায় গণসংযোগে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

অপর দিকে গতকাল বুধবার (১০ ডিসেম্বর) এনসিপির কেন্দ্রীয় কমিটি একই আসনে প্রার্থী হিসেবে মো. আরিফুল দাড়িয়ার নাম ঘোষণা করে। এরপরই বিষয়টি উপজেলাজুড়ে আলোচনার জন্ম দেয়।

মাঝবাড়ি গ্রামের সমাজসেবক রেয়াজুল দাড়িয়া বলেন, ‘একই বংশের দুইজন এমপি প্রার্থী—এটা আমাদের জন্য সৌভাগ্যের বিষয়। আমার জানামতে, দাড়িয়া বংশ থেকে এই প্রথম কেউ এমপি পদে দাঁড়াল। তবে একজন হলে ভালো হতো।’

গ্রামের বাসিন্দা নার্গিস বেগম বলেন, ‘আমাগো গ্রাম থাইকা দুইজন নাকি নির্বাচন করবে। আমরা যারে ভালো ও যোগ্য মনে করমু, তারেই ভোট দিমু।’

গণঅধিকার পরিষদের প্রার্থী আবুল বশার দাড়িয়া বাসু বলেন, ‘যেকোনো দলের প্রার্থী হয়ে যে কেউ নির্বাচন করতে পারে—এটা নাগরিকের গণতান্ত্রিক অধিকার। একই গ্রাম থেকে দুজন নয়, পাঁচজনও প্রার্থী হতে পারে। আমার দল আমাকে মনোনয়ন দিয়েছে, আমি দীর্ঘদিন ধরে গণসংযোগ করছি। আশা করি, ভালো ফল হবে।’

এনসিপির প্রার্থী মো. আরিফুল দাড়িয়া বলেন, ‘দল আমাকে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রার্থী ঘোষণা করেছে। আমি এলাকায় প্রচারণা শুরু করেছি। একই গ্রামের আরেকজন প্রার্থী থাকায় আমার নির্বাচনী প্রচারণায় কোনো প্রভাব পড়বে না।’

উল্লেখ্য: গোপালগঞ্জ-৩ (কোটালীপাড়া -টুঙ্গিপাড়া) আসনে এই দুই প্রার্থী ছাড়াও বিএনপির মনোনীত প্রার্থী ও স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি এসএম জিলানী, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর মনোনীত প্রার্থী ও গোপালগঞ্জ জামায়াতে ইসলামীর জেলা আমির এম এম রেজাউল করিম, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত প্রার্থী আলহাজ্ব ইঞ্জিনিয়ার মারুফ শেখকে গণসংযোগ করতে দেখা গেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সখীপুরে অবৈধভাবে মাটি কাটায় এক মাসের কারাদণ্ড, ২ লাখ টাকা জরিমানা

সখীপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
গতকাল রাত সাড়ে ১০টার দিকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শামসুন নাহার শিলা ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
গতকাল রাত সাড়ে ১০টার দিকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শামসুন নাহার শিলা ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

টাঙ্গাইলের সখীপুরে অবৈধভাবে মাটি কাটায় আতোয়ার রহমান (৩৮) নামের এক ব্যবসায়ীকে দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। একই সঙ্গে এক মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। গতকাল বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শামসুন নাহার শিলা উপজেলার দাড়িয়াপুর গ্রামে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে এ দণ্ডাদেশ দেন। আজ বৃহস্পতিবার সকালে তাঁকে টাঙ্গাইল কারাগারে পাঠানো হয়েছে। দণ্ডপ্রাপ্ত আতোয়ার ওই গ্রামের আব্দুস সামাদ মিয়ার ছেলে।

ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা গেছে, আতোয়ার রহমান নামের ওই ব্যবসায়ী দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে মাটি বিক্রি করে আসছিলেন। খবর পেয়ে গতকাল রাতে দাড়িয়াপুর গ্রামে খননযন্ত্র দিয়ে মাটি কাটার সময় তাঁকে আটক করা হয়। পরে ঘটনাস্থলেই ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে আতোয়ারকে দুই লাখ টাকা জরিমানা ও এক মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়। এ সময় একটি মাটি খননযন্ত্রও জব্দ করা হয়েছে।

সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শামসুন নাহার শিলা আজকের পত্রিকাকে জানান, ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন অনুযায়ী এক ব্যবসায়ীকে অর্থদণ্ড ও এক মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বাবা-মায়ের মাঝখানে ঘুমিয়ে থাকা শিশুর মৃত্যু নিয়ে ধূম্রজাল

 দুর্গাপুর (রাজশাহী) প্রতিনিধি
দুর্গাপুর উপজেলার শ্যামপুর গ্রামে ভুক্তভোগীর বাড়িতে প্রতিবেশীদের ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা
দুর্গাপুর উপজেলার শ্যামপুর গ্রামে ভুক্তভোগীর বাড়িতে প্রতিবেশীদের ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজশাহীর দুর্গাপুরে বাবা-মায়ের মাঝখানে ঘুমিয়ে থাকা শাকিল খান (৪ মাস) নামের এক শিশুর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে এলাকায় ধূম্রজালের সৃষ্টি হয়েছে। তবে মারা যাওয়া শিশুর বাবা-মা দুজনই বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী বলে জানা গেছে। গতকাল বুধবার রাতে উপজেলার নওপাড়া ইউনিয়নের শ্যামপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। শিশু শাকিল ওই গ্রামের শুকুর আলীর ছেলে।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার শ্যামপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, একটি টংঘরের বারান্দায় শিশু শাকিলের মরদেহ রাখা আছে। তার পাশেই তার মা কাঁদছেন। আর মানুষেরা তাকে ঘিরে রেখেছে। এ সময় কথা হয় মৃত শাকিলের মা শাকিলা খাতুনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘বাচ্চা কীভাবে মইরা গেল বলতে পারব না। রাতে আমার আর ওর বাবার মাঝখানে শাকিল ঘুমিয়েছিল। রাত ৪টার দিকে দেখি শাকিলের কোনো সাড়াশব্দ নেই। শাকিল মারা গেছে।’

এদিকে শাকিলের বাবা শুকুর আলী দেন ভিন্ন তথ্য। শুকুর আলী বলেন, ‘আমি কিছু বলতে পারব না। রাত ৩টার দিকে দেখি ছেলের লিকেশ (নিশ্বাস) বন্ধ হয়ে গেছে। হাত-পা ঠান্ডা।’

স্থানীয় প্রতিবেশী কয়েকজন নারী-পুরুষ জানালেন, ভোররাতে শাকিল মারা যাওয়ার পর শাকিলের মা তার বাবাকে বলেন, ‘তুই আমার ছেলেকে মেরে ফেলছু।’ এ সময় শাকিলের বাবা উল্টো তার মাকে বলেন, ‘তুই আমার ছেলেকে মেরে ফেলছু।’ এ নিয়ে ওই রাতে দুজনের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডা বাধে। পরে স্থানীয় লোকজন ছুটে আসেন। এলাকায় এ নিয়ে ধূম্রজালের সৃষ্টি হয়।

ওই মহল্লার বাসিন্দা বিএনপি নেতা দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘দুজনেরই (বাবা-মা) বুদ্ধিসুদ্ধি কম। পাড়ার সবাই তাদের পাগল বলে ডাকে। কখন কী বলে ঠিক নাই। খুবই দরিদ্র তারা। এলাকার সাহায্য-সহযোগিতায় খেয়ে-পরে বাঁচে। একটি টংঘরে থাকে। চার মাসের বাচ্চার যাতে ময়নাতদন্ত না হয়, এ বিষয়ে পরিবার ও আমরা এলাকাবাসী আবেদন করেছি।’

এ বিষয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত দুর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) রফিকুল ইসলাম বলেন, মৃত শিশুটির শরীরে আঘাতের কোনো চিহ্ন নেই। কীভাবে মারা গেছে, এ বিষয়ে তাঁদের কোনো ধারণা নেই। পরিবার বা এলাকাবাসীর কোনো অভিযোগ নেই। কোনো অভিযোগ না থাকায় ময়নাতদন্ত ছাড়া লাশ দাফনের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ডিজির সঙ্গে তর্কে জড়ানো সেই চিকিৎসককে আগের পদে বহাল

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিদর্শনে আসা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) মো. আবু জাফরের সঙ্গে তর্কে জড়ানো চিকিৎসক ধনদেব চন্দ্র বর্মণ শোকজের সন্তোষজনক জবাব দেওয়ায় তাঁকে ক্ষমা করে আগের পদে বহাল করা হয়েছে। গতকাল বুধবার ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল গোলাম ফেরদৌস স্বাক্ষরিত একটি আদেশ জারির মাধ্যমে তাঁকে বহাল করা হয়।

আদেশে বলা হয়, ৬ ডিসেম্বর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিদর্শনকালে হাসপাতালের আবাসিক সার্জন (ক্যাজুয়ালটি) ও সহকারী অধ্যাপক (সার্জারি) ইনসিটু ধনদেব চন্দ্র বর্মণ মহাপরিচালকের সঙ্গে ঔদ্ধত্যপূর্ণ ও অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। পরে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়, সেই সঙ্গে ক্যাজুয়ালটি ওটি ইনচার্জের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। তিনি তাঁর অনাকাঙ্ক্ষিত আচরণের কারণে ক্ষমা চেয়ে এবং ভবিষ্যতে এরূপ অনাকাঙ্ক্ষিত আচরণ করবেন না বলে অঙ্গীকার করে যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে লিখিত জবাব দাখিল করেছেন। পরে তাঁর দাখিল করা জবাব স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে পাঠানো হয়।

এতে আরও বলা হয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মহোদয় বরাবর পাঠানো প্রতিবেদন সন্তোষজনক হওয়ায় মহাপরিচালক ধনদেব চন্দ্র বর্মণকে ক্ষমা প্রদর্শন করেন এবং তাঁকে আগের কর্মস্থল ক্যাজুয়ালটি ওটি ইনচার্জ পদে পুনর্বহাল রাখার জন্য নির্দেশ দেন। সে মোতাবেক তাঁকে ক্যাজুয়ালটি ওটি ইনচার্জের দায়িত্বে পুনর্বহাল করা হলো।

চিঠি জারির বিষয়টি নিশ্চিত করে মমেক হাসপাতালের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) মুহাম্মদ মাইনউদ্দিন খান বলেন, এই আদেশ গতকাল থেকে কার্যকর হয়েছে।

ধনদেব চন্দ্র বর্মণ বলেন, ‘কর্তৃপক্ষ আমাকে আগের পদে বহাল করেছে। আমি কাজ শুরু করেছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত