Ajker Patrika

পাখির গ্রাম ভাবিচা

সিরাজুল ইসলাম, নিয়ামতপুর (নওগাঁ) 
আপডেট : ০৫ জুলাই ২০২১, ১২: ০৩
পাখির গ্রাম ভাবিচা

সবুজ পাতার ওপর পাখা গুটিয়ে বসে আছে সাদা-কালো বাহারি পাখি। দূর থেকে দেখে মনে হবে, যেন সাদা ফুল ফুটেছে। বাতাসের দোলায় তাদের পাখা ঝাপটানো মোহনীয় এক তাল তৈরি করে। আশপাশের প্রায় প্রতিটি গাছেই রয়েছে এমন পাখির ঝাঁক। ঝাঁকে ঝাঁকে পাখি দেখে মনে হয় যেন এক পাখিরাজ্য। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে সারা বছর পাখিদের আসা-যাওয়া এই গ্রামে। কোনো উৎপাত নেই, কেউ বিরক্ত করে না। তাই দূরদেশ থেকে আসে পরিযায়ী পাখিও।

পাখিদের অবিরাম কিচিরমিচির শব্দ কানে আসবে নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার ভাবিচা গ্রামে। নিয়ামতপুর সদর থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে ভাবিচা গ্রাম। অনেক পাখিপ্রেমী দূরদূরান্ত থেকে এসব পাখি দেখতে ভিড় জমাচ্ছেন। সবচেয়ে বেশি দেখা মেলে শামুকখোল পাখির। পাঁচ বছর ধরে এই গ্রামে আসছে শামুকখোল। সাধারণত জ্যৈষ্ঠের মাঝামাঝি তারা আসে এবং অগ্রহায়ণের প্রথম সপ্তাহে চলে যায়। পাড়ি দেয় অন্য কোনো দেশে।  

একসময় ভাবিচা গ্রামের শ্যামল ডাক্তারের বাড়ির পাঁচ–ছয়টি কড়ইগাছে বাসা করে বসবাস করত শামুকখোল। কিন্তু ২০১৯ সালে গাছগুলো কেটে ফেলা হলে পাখিগুলো অসহায় হয়ে পড়ে। তবু তারা স্থান ত্যাগ করেনি। গ্রামের নিয়ামতপুর-মান্দা রোডের ধারে নিম, কড়ই, তেঁতুলগাছে বাসা বানিয়ে বাস করতে শুরু করে। তাদের সেই যাত্রার পর এখন ভাবিচা গ্রামজুড়ে বিভিন্ন পাখির বাস। পাখির অভয়ারণ্য তৈরির জন্য গাছে মাটির হাঁড়ি বেঁধে রাখেন গ্রামবাসী।

গ্রামের এক বাসিন্দা সুশান্ত কুমার মণ্ডল বলেন, ভাবিচায় বড় বড় গাছ থাকার ফলে এখানে অভয়ারণ্য তৈরি হয়েছে। গ্রামের সবাই মিলে পাখি শিকারিদের বাধা দেয়। তাই পাখিগুলো এখানে স্বচ্ছন্দবোধ করে। অতিথি পাখি আসার ফলে গ্রামবাসী অনেক খুশি। রাস্তার ধারে তাদের বসবাস। তাই মলত্যাগ করলে অনেক মানুষের শরীরে পড়ে। তবু পরিযায়ী পাখি গ্রামে এসেছে বলে সবাই মেনে নেয়। ভাবিচা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ওবায়দুল হক বলেন, বিভিন্ন গাছে এক হাজার হাঁড়ি টাঙানো হয়েছে। করোনার কারণে আরও হাঁড়ি টাঙানো বন্ধ রয়েছে।

ভাবিচা গ্রামের পাখিপ্রেমী সবুজ সরকার বলেন, ‘আমরা পাখি রক্ষার জন্য গ্রামের বিভিন্ন জায়গায় ব্যানার দিয়ে রেখেছি, যেন কেউ শিকার করতে না পারে। আমরা চাই পরিযায়ী পাখি এখানে নিরাপদে থাকুক। কেননা, শামুকখোল বিষাক্ত পোকামাকড় খেয়ে কৃষকের অনেক উপকার করে।’

সবুজ আরও বলেন, শামুকখোল সাধারণত এখানে প্রজননের জন্য আসে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়া মারিয়া পেরেরা বলেন, ভাবিচায় শামুকখোল জাতের পাখি এসে বাস করছে এটা সত্যিই খুশির খবর। পাখিগুলো যেন কেউ শিকার করতে না পারে, সে জন্য সবাইকে সচেষ্ট থাকতে হবে। অতিথি পাখি যেভাবে আসছে, এটা অব্যাহত থাকলে গ্রামটি সারা দেশে পাখির গ্রাম হিসেবে পরিচিতি পাবে, যা উপজেলার গৌরব বয়ে আনবে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মিয়ানমারে নিযুক্ত প্রতিরক্ষা উপদেষ্টাকে দেশে ফেরার নির্দেশ

সরকারি কর্মচারীদের পদ-পদবি-বেতন কাঠামো নিয়ে পাল্টা অবস্থানে দুই পক্ষ

আওয়ামী লীগের কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ প্রসঙ্গে যা বলল পাকিস্তানের পত্রিকা দ্য ডন

বাংলাদেশ এড়িয়ে সমুদ্রপথে সেভেন সিস্টার্সকে যুক্ত করতে নতুন প্রকল্প ভারতের

মোহাম্মদপুরে আলোকচিত্রী ও জিগাতলায় শিক্ষার্থী খুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত