মারধরের ঘটনায় উপজেলা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মামলা, আইসিইউতে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা

নাটোরের নলডাঙ্গায় সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও তাঁর বাবাকে মারধরের ঘটনায় ঘটেছে। এ ঘটনায় উপজেলা চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান আসাদ এবং তাঁর দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, ফেসবুক লাইভে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে কথা বলায় নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক এস এম ফিরোজের ভাতিজা ও ছাত্রলীগের সাবেক নেতা জামিউল আলম জীবন এবং তাঁর বাবা ফরহাদ হোসেনকে পিটিয়ে জখমের করেন তাঁরা। এ ঘটনায় আহত সাবেক ছাত্রলীগ নেতা রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন আছেন।

মারধরের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় গতকাল বুধবার সকালে উপজেলা চেয়ারম্যানের এক ভাই আলীম আল রাজি শাহকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তবে চেয়ারম্যান ও তাঁর আরেক ভাই ফয়সাল শাহ পলাতক আছেন। উপজেলা চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান আসাদ নলডাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য।

এর আগে সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৭টার দিকে নলডাঙ্গা উপজেলার রামশাকাজিপুর আমতলী বাজারে মারধরের ঘটনা ঘটে। আহত জামিউল আলম জীবন উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহসম্পাদক।

এদিকে ঘটনার পরের দিন থেকে জামিউল আলম জীবন রাজশাহী মেডিকেল হাসপাতালের আইসিইউতে মারা গেছেন, এমন খবরের ঘটনার দিন রাত ৯টার দিকে নলডাঙ্গা বাজারে উপজেলা চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান আসাদকে গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করে আওয়ামী লীগের একাংশ। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন ও রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ছাত্রলীগ নেতা জামিউল আলম জীবন বেঁচে আছেন।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী বলেন, জামিউল আলম অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁকে আইসিইউতে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, জীবন বেঁচে আছেন। আইসিইউতে ৫০ ভাগ বাঁচার সুযোগ রয়েছে তাঁর।

নলডাঙ্গা থানা-পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, গত সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৭টার দিকে নলডাঙ্গা উপজেলার রামশাকাজিপুর আমতলী বাজারে জামিউল আলম জীবনকে লোহার রড ও লাঠি দিয়ে পেটান চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান আসাদ, তাঁর দুই ভাই ও অজ্ঞাত পরিচয়ের আরও ৪-৫ জন। এ সময় বাধা দেওয়ায় জীবনের বাবা ফরহাদ হোসেনকেও পেটানো হয়। স্থানীয়রা গুরুতর আহত অবস্থায় বাবা ও ছেলেকে উদ্ধার করে প্রথমে নাটোর সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে রাতেই রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। জীবনের আহত বাবা ফরহাদ হোসেন চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে এসেছে। আর জামিউল আলম জীবন সংকটাপন্ন অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আইসিইউতে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে।

আহত জীবনের চাচা এবং নলডাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক এস এম ফিরোজ জানান, জীবন এখন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন। তাঁর বাবা ফরহাদ হোসেন চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ আছেন।

মামলার বরাত দিয়ে নলডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, এ ঘটনায় মঙ্গলবার বিকেলে জীবনের মা জাহানারা বেগম বাদী হয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান আসাদসহ তাঁর দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।

এসব বিষয়ে পলাতক থাকায় উপজেলা চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান আসাদ ও তাঁর আরেক ভাইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।