Ajker Patrika

পরীক্ষার্থীর সঙ্গে রাবি অধ্যাপকের অসদাচরণ, ‘একে সাইজ করা দরকার’

রাবি প্রতিনিধি 
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে আসা শিক্ষার্থীরা। অনেকের সঙ্গে অভিভাবক ছিলেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে আসা শিক্ষার্থীরা। অনেকের সঙ্গে অভিভাবক ছিলেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) এক অধ্যাপকের বিরুদ্ধে পরীক্ষাকেন্দ্রে ভর্তি-ইচ্ছুক এক নারী শিক্ষার্থীর সঙ্গে অসদাচরণ করার অভিযোগ উঠেছে।

আজ শনিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একাডেমিক ভবনের ৪০৮ নম্বর কক্ষে প্রথম শিফটের ভর্তি পরীক্ষা চলাকালে এ ঘটনা ঘটে। পরীক্ষা শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ওই পরীক্ষার্থী। তবে তিনি লিখিত অভিযোগে অভিযুক্ত শিক্ষকের নাম উল্লেখ করেননি। অন্যদিকে অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন ওই পরীক্ষা কক্ষে পরিদর্শক হিসেবে দায়িত্ব পালন করা তিন অধ্যাপক।

লিখিত অভিযোগে ওই পরীক্ষার্থী বলেন, ‘পরীক্ষা শুরুর প্রায় আধা ঘণ্টা পর দায়িত্বরত শিক্ষক স্বাক্ষর দেওয়ার জন্য আমার নিকট আসেন। আমার মাথায় ওড়না থাকায় এবং প্রবেশপত্রের ছবিতে মাথায় ওড়না না থাকায় তিনি আমাকে ধমক দেন এবং বলেন, “তুমি যেভাবে ছবি উঠিয়েছ, সেভাবে যেহেতু আসোনি, সেহেতু এই ক্যাম্পাসে প্রবেশের অধিকার নেই।” এ ছাড়া তিনি অকথ্য ভাষা ব্যবহার করেন। আমাকে চোর বলে সম্বোধন করেন এবং বলেন “একে সাইজ করা দরকার।”’

অভিযোগে ওই শিক্ষার্থী আরও বলেন, ‘একপর্যায়ে তিনি আমার খাতা কেড়ে নেন এবং প্রায় ১০ মিনিট পর ফেরত দেন। তাঁর ধমক এবং ভাষা শুনে আমি মানসিকভাবে ভেঙে পড়ি। ফলে ভালোভাবে পরীক্ষা শেষ করতে পারিনি। তিনি যদি দুর্ব্যবহার না করতেন, আমি আরও কয়েক নম্বর বেশি পেতাম। বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো একটি উচ্চ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকের নিকট থেকে এমন দুর্ব্যবহার পরীক্ষার হলে আমি আশা করিনি। তাই আমি এর যথাযথ বিচার চাই।’

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ওই পরীক্ষার্থী বলেন, ‘একজন দায়িত্বরত শিক্ষককের আচরণ কখনোই এমন হতে পারে না। আমার পোশাক নিয়ে তিনি কেন কথা বলবেন? বর্তমান সময়ে এসেও নারীদের পোশাক নিয়ে কথা শুনতে হয়।’

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একাডেমিক ভবনের ৪০৮ নম্বর কক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনজন শিক্ষক দায়িত্বে ছিলেন। তাঁরা হলেন মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক শুভ্রা রানী চন্দ, অধ্যাপক ওমর ফারুক সরকার ও লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ফারাহা নওয়াজ। পরীক্ষা কক্ষে এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি বলে তিনজনই দাবি করেছেন।

অধ্যাপক শুভ্রা বলেন, ‘এ রকম কোনো ঘটনা ওই কক্ষে ঘটেনি। পরীক্ষা কক্ষে আমি তো অচেতন হয়ে যাইনি। এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটলে নিশ্চয় জানতাম। তবে নিয়ম অনুযায়ী পরীক্ষা শুরুর সময় কান খোলা রেখে পরীক্ষা দেওয়ার জন্য সবাইকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল।’

অধ্যাপক ফারাহা বলেন, ‘পরীক্ষা কক্ষে আমি আমার কাজে অনেক ব্যস্ত ছিলাম। এ রকম কিছু ঘটে থাকলেও আমি শুনি নাই। কেউ কারও কাছে গিয়ে বলে থাকলেও সেটি আমি শুনিনি।’

অন্যদিকে অধ্যাপক ওমর বলেন, ‘যাদের মুখ ঢাকা ছিল, তাদের চেক করে স্বাক্ষর করার জন্য সহকর্মীকে নির্দেশ দিয়েছিলাম। একটা উদাহরণ দিয়েছি, যদি চেক না করা হয় তাহলে গত বছরের মতো “মিথ্যা প্রার্থী” প্রথম হয়ে যেতে পারে। আর কোনো কথাই হয়নি।’

অভিযোগের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান বলেন, ‘এক ভর্তি-ইচ্ছুক পরীক্ষার্থী ও তাঁর মা এসে অভিযোগ দিয়েছেন। তবে অভিযুক্তের নাম লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়নি। এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পদোন্নতি দিয়ে ৬৫ হাজার সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগের পরিকল্পনা: ডিজি

দিনাজপুরে হিন্দু নেতাকে অপহরণ করে হত্যা: ভারত সরকার ও বিরোধী দল কংগ্রেসের উদ্বেগ

সমালোচনার মুখে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের নিয়োগ বাতিল

আজ থেকে ৫০০ টাকায় মিলবে ১০ এমবিপিএস গতির ইন্টারনেট

যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৫ হাজার শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল, বেশির ভাগই ভারতীয়, আছে বাংলাদেশিও

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত